খুঁজতাছি বঙ্গদেশে জন্মানো মেধাবী কারা আছিলো-


সামুতে আমার ব্লগে একজন  লেখার নিচে মন্তব্য করেছে- 'ডাক্তাররা মেধাবী। আর সাংবাদিকরা এইট পাস।'

খোঁজ নিয়া জানলাম- ডাক্তাররা যে 'মেধাবী' এই শব্দটা সম্বাদিকরা বানাইছে। এখন অই সম্বাদিকগো ডাক্তাররা ঠেঙ্গাইতাছে। আমরা সবাই মজা পাইতাছি।

ক্যামনে বানাইলো? এক সম্বাদিকরে জিগাইলাম- হে কইলো 'সাধারণ  পারসেপশন' অইলো ডাক্তারি যারা পড়ে তারা মেধাবী!

তাইলে প্রশ্ন অইলো- যারা ডাক্তারি পড়েন নাই তারা মেধাহীন।!!

খুঁজতাছি বঙ্গদেশে জন্মানো মেধাবী কারা আছিলো-

যাদের পাইলাম তাগো নাম দিলাম- এরা কি কেউ ডাক্তার আছিলো? জানলে উত্তর দিয়েন-

১. অধ্যাপক সত্যেন বোস।
২. ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
৩. অধ্যাপক জামাল নজরুল ইসলাম।
৪. জ্ঞানতাপস অধ্যাপক আবদুর রাজ্জাক।
৫. অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সয়ীদ।
৬. সরদার ফজলুল করিম।
৭.শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীন
৮. আহমদ ছফা।
৯.শামসুর রাহমান।
১০. আল মাহমুদ।
১১. ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ।
১২. জহির রায়হান
১৩. রুনা লায়লা
১৪. সাবিনা ইয়াসমীন
১৫. এবিএম মূসা
১৬. অধ্যাপক নুরুদ্দীন
১৭. অধ্যাপক গোবিন্দ চন্দ দেব
১৮. হরিদাস কপালী

 আরো অনেক...

তয় একজন ডাক্তারের সাথে আমার দেখা হয়নি। ডায়াবেটিক সমিতির প্রতিষ্ঠাতা ডা. ইব্রাহিম। তার একটা কতা আমার খুব ভালো লাগে- ' আপনাদের সেবা করার সুযোগ দেয়ায় আমরা কৃতজ্ঞ। ' বারডেম হসপিটালে ঢোকার মুখে লেখাটা চোখে পড়ে।  আমরা  এ রকমই মনে করতাম ডাক্তারদের। কিন্তু এখন সেটি পারছি না বলে- দু:খিত।

ডাক্তর- প্রেম,অপ্রেম এবং অতিপ্রেম!

নোট: ডাক্তর বালিকারা আমার অতি পছন্দের।  আমার তরুণ বয়সে (আমি কি বুইড়া অইয়া গেছি!) কয়েকজন ডাক্তর আমাকে তাদের জীবনে পাইতে চাইছেন। তাদের আবেগের প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই  সত্য কয়টা ঘটনা বলছি।

ঘটনা:
ডাক্তরদের বিষয়ে আমি বছরখানেক আগে একটা লেখা সামুতে দিছিলাম। তারপর ধরেন, আমার গুষ্টি উদ্ধার। তাই বলে চুপ কইরা থাকন যায়। রাজশাহীদের সম্বাদিকগো পিটাইছে ইন্টার্ণি ডাক্তররা। ওগো কাম সম্বাদিক পিটানো! সেই তর্ক না করে কিছু অভিজ্ঞতা শেযার করি।

এর আগে দেখলাম- বারডেমে চিকিৎসকরা এক রোগীর আত্মীর বিরুদ্ধে মামলা ঢুকছে। আর রোগীর স্বজনদের মারধর এখন হসপিটালেণ একটা নৈমিত্তিক ঘটনায় রূপান্তর হয়েছে। আবার বলপ্রয়োগে শান্ত হতেও দেখা যায়।

যেমন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রের ভুল চিকিৎসার দায় শিকার করেছে ল্যাব এইড। ক্ষতিপূরণও দিয়েছে। একজন শিক্ষকের ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটেছে।  

এক.
মাস দুয়েক আগের কতা। বঙ্গবন্ধু হসপিটালে আউটডোরে গেছি, নিজের একটা সমস্যা লইয়া। তিনজন ডাক্তার বসে আছেন। দুইজন স্মার্টফোনে  ব্যস্ত। একজন নারী ডাক্তার বিরক্তির সাথে কইলেন- বলেন-কী সমস্যা। কইলাম। ডাক্তর কি লিখবো- এইডা লইয়া টেনশনে। সিরিয়াল  এন্ট্রি করা এক নার্স বললো আফা দুইডা সিল মাইরা দ্যান, আর কন স্ট্রিম বাথ লইতে!  তাই দিলো।  আমি চইলা আইলাম।

দুই.

২০০৯ সালের কতা। বারডেম হসপিটালে। শাহবাগে। সদ্য পিতা হলাম। ডাক্তর কইলো পুলা পুরাই সুস্থ। ফটো লাইটের তলে কতক্ষন থাকবো, তারপর  লইয়া যাইবো ওয়ার্ডে।  আমি  তখনো পিতা হবার পর ফেসবুকীয় উচ্ছ্বাস উপভোগ করতে পারছিলাম না। মিষ্টি আনা লাগবো- এক নার্স কইলো তারাতারি মিষ্টি আনেন।

ছোট ভাইকে পাঠাইলাম। আমার মা তার প্রথম নাতিকে  কোলে লইয়া বইসা আছেন। আমাকে ডেকে কইলেন- নাতি তো কান্দে আস্তে। একটা সমস্যা আছে। ডাক্তররে ক। আমি একজন ডাক্তরের কাছে যাই। তিনি কইলেন- এইডা ব্যাপার না।

আমার মা মানতে চাইলেন না। পরে ডাক্তর আমগো জোরাজুরি দেইখা কইলো পাশে শিশু ওয়ার্ডে লইয়া যান। দ্রুত নিলাম। ছেলেটার শরীর নীল অইয়া যাইতেছে। ডাক্তর বিপ্লব কইলো এখন লাঞ্চ আওয়ার। পরে আয়েন। আমি অনেক অনুননয় করলাম। কিন্তু ডাক্তরের মন গলাইতে ব্যর্থ। শেষে চিৎকার করলে সিনিয়র একজন এসে কইলেন- এ বাচ্চাকে এখনই আইসিইউতে দাও। তারপর স্কাবুর সামনে ১৯ দিন আমরা কাটিয়েছি।

তিন.
আমার মা অসুস্থ। তার মেয়েলি সমস্যা। আমি এই ডাক্তার ওই ডাক্তার দেখাই সবাই কয় কিচ্ছু অয় নাই।  পরে একটা টেস্টা তিনবার করানোর পর পরমাণুতে ধরা পড়লো তার সমস্যা আছে। তার আগে ল্যাব এইড, পিজি এবং ইবনে সিনায় টেস্ট হইলো। সব ভালো।


চার.
আমার আব্বা অসুস্থ। একটা বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি। তখন মোবাইলটা নতুন আইছে।  ডাক্তারে খুঁইজা পাই তো নার্সরে পাই না অবস্থা।  রাইতের কালে নার্স প্রেমালাপে মগ্ন। আমি খুবই  বিনীতভাবে তার সহায়তা চাইলে- যান, আইতাছি এইসব কইয়া পার করে। পরে আর কি!  উপরের থেকে চাপ দিয়া কাম করাইতে অইলো!

পাঁচ.
আম্মার দাঁতের সমস্যা। পিজি হসপিটালের ডেন্টাল বিভাগের দ্বারস্থ হইলাম। কইলো ফিলিং করলে চলবো। তা করাও হলো। কিন্তু নিয়ম মাননের পরে দুই ঘন্টা পরে ফিলিং হাওয়া। পরে বাইরে এক ডাক্তারকে দেখাইলাম। কইলো অপারেশন লাগবো। আসলে তাই ইনফেকশন হয়ে গেছে, মাড়িতে। অপারেশন করানো হলো। এক দশকেরো বেশি সময় ধ:রে তিনি, আলহামদুলিল্লাহ সুস্থ।

ছয়.
আমার উচ্চ রক্তচাপের বেরাম। ঢাকা মেডিকেল থেকে কইলো হার্টে প্রবলেম। ছুইটা গেলাম হার্ট ফাউন্ডেশনে। সেখানকার ডাক্তাররা টেস্ট কইরা কইলো ঢামেক ভুলি কইছে।

সাত.
আমার এলা্কার এক ভদ্র মহিলা ক্যান্সারে আক্রান্ত । লইয়া গেলাম ক্যান্সার হাসপাতালে। সেখানে ডাক্তার দেখাইতেই দিন শেষ।  পরের দিন কইলো  রেডিও থেরাপি লাগবো- তয় সিরিয়াল  পাইতে পাইলে দুই মাস। ট্যাকা দিলে দ্রুত।

এ রকম ঘটনা লিখতে লিখতে পাতা ভরে যাবে- শেষ হবে না।

এবার কিছু ভালো খবরও বলি-

এক.
 আমাদের এক ছোট ভাই এক্সিডেন্ট কইরা আহত। তারে কুমিল্লা মেডিকেলে নেয়া অইলো। ডাক্তাররা তারে ৬ ঘন্টা অপারেশন করছে। সব ডাক্তরা ছুটোছুটি, মনে অইবো তাগো। আসলেই তো তাই অওনের কতা।
 পরে ঢাকায় তার অপারেশন অইছে- ঢামেকে। ৭ ঘন্টা। ডাক্তার ফিরোজ কাদির করছে। তখন তার মুখের দিকে তাকিয়ে মনে হযেছে ডাক্তররা আসলেই মহান।

 দুই.
আমার  উচ্চ রক্তচাপ লইয়া অনেক ঘাটের পানি খাইবার পর বরেন চক্রবর্তীর দ্বারস্থ অইলাম। তার পরামর্শে ভালো আছি- আলহামদুল্লিাহ। সমস্যা হলে ফোন করা যায়, পরামর্শও দেন। বিরক্ত হন না।

তিন.
আমার এক খালা অসুস্থ। তাকে লইয়া  সলিমুল্লায় গেলাম। সেখানে আমাদের ছোট ভাই হিমু পড়তো। তার সুবাধে চিকিৎসকরা খালার অতি যত্নে অপারেশন করে  দিযেছেন।

আমার নিচের উদাহরণগুলো বেশি করে চাই। উপরের গুলো এড়িয়ে চলতে চাই।সম্বাদিক পিটাইয়া, স্যার বলতে বাইধ্য কইরা  ডাক্তররা আসলে নিজেদের অবস্থান হারাচ্ছেন। আমরা সেটি চাই না।

দল-মত- সামর্থ-ধর্ম-শ্রেণি বিবেচনা করে চিকিৎসা নয়। সবার প্রতি সমান গুরুত্ব দরকার। খুবই দরকার। একজন ডাক্তরের ক্ষণিকের ভুল সিদ্ধান্ত একজন মানুষের দৈহিক মৃত্যু ঘটাতে পারে। সচেতন হলে এটি এড়ানো সম্ভব।

আমাদের সামনে ডাক্তারের অবহেলার অনেক চিত্র আছে। অন্তত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫ থেকে ৭ জন ছাত্র শিক্ষক ডাক্তারের অবহেলায় মারা গেছেন।এমন মৃত্যু অমার্জণীয় অপরাধ হিসাবে গণ্য। টাকা দিয়ে দায় সারলেও একজন মানুষের জীবন থামিয়ে দেয়ার অধিকার কারো নেই।   

স্মৃতিতে বশির আহমেদ!

দরজা খুলে দিয়ে হাত বাড়ালেন তিনি । বললেন- আসো, ভেতরে। 'তুমি' করে বল্লাম, কিছু মনে করলে না তো। হেসে বল্লাম- 'আপনি' বললেই অস্বস্তি হতো। হাসতে হাসতে বললো- ইয়াংম্যান , পড়া শোনা কি চলছে, না শেষ। বল্লাম চলছে।

আন্তরিক ভঙ্গিতে ঘরে ডেকে নিয়ে বসিয়ে সঙ্গীতের আলাপ জুড়লেন। ডাকলে দুই সন্তান  হোমায়রা ও  রাজা বশিরকে। তিনি প্রিয় শিল্পী বশির আহমেদ। আমার  কাঁচা হাতে লেখনীর প্রথম দিকের ঘটনা। ২০০১ সালের শুরুর দিকে।

মোহাম্মদপুরের বাস স্ট্যান্ড থেকে রিকশায় সরাসরি বশির আহমেদের বাসা। সে সময় বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের  সঙ্গীতের আলাপন অনুষ্ঠানে যেতাম। সে কারণে সঙ্গীতের কিছু বেসিক বিষয়ে ধারণা ছিল। তাই আলাপটা জমে উঠছিল।

বশির আহমেদ বললেন, এই যুগেও ঠুমরি, দাদরা নিয়ে কথা- এ শুনে আমার অবাক লাগছে। আজকাল তো সাংবাদিকরা পপুলার  শিল্পীদের নিয়ে কথা বলেন, বেশি।

উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতের কথা তুললে  নাক শিটকায়, সবাই। অথচ এই ভাটি বাংলা কিন্তু সঙ্গীতের অসাধারণ জায়গা। আমাদের অনেক দূর যাবার কথা ছিল। পারিনি। এ জন্য আমরাই দায়ি!

প্রিয়মুখ- বিনোদন পত্রিকাটির রিপোর্টার হিসাবেই আমার তার বাসায় যাওয়া। সে সময় তার সম্পর্কে ব্যাপক ভিত্তিক কোনো ধারণা আমার ছিল না। বাসায় ঢুকলেই এক সঙ্গীতময় পরিবেশ। হারমোনিয়াম, তানপুরা, ঢোল, তবলা, গিটার- অনেক রকমের বাদ্য যন্ত্র।

বাসায় স্ত্রী মিনা বশির ছিলেন না।  ছেলে রাজা ও মেয়ে হোমায়রার সাথে  পরিচয় করিয়ে দিলেন। রাজার ব্যস্তা ছিল, কিছুক্ষন আড্ডা দিয়ে চলে গেলেন।

বশির আহমেদ জানালেন- সন্তানদের আসলে তিনি স্বাধীনতা দিয়েছেন। একদিকে প্রথাগত শিক্ষা আরেক দিকে সঙ্গীত। সঙ্গীতই তাদের জীবিকা নির্বাহের মাধ্যম হবে তা কিন্তু নয়। তারা সঙ্গীত চর্চা করবে-শুদ্ধ সঙ্গীতের ধারা বয়ে বেড়ানোর জন্য।

কলকাতায় বেড়ে ওঠার গল্প শোনালেন। জানালেন ওস্তাদ বড়ে গোলাম আলীর সঙ্গ পাওয়ার কথা।  বললেন সঙ্গীত মনের প্রশান্তি আনে।  জনপ্রিয়তা অর্জনের চেয়ে শুদ্ধ সঙ্গীতের প্রসারে কাজ করেছেন বড়ে গোলাম আলীরা।

বশীর আহমেদ ও  হোমায়রা বশিরের সাথে অনেকক্ষন আড্ডা হলো। বশীর আহমেদের বেড়ে ওঠা, সঙ্গীতের নানা দিক,  রাগ ঘরানার সঙ্গীত চর্চা বিষয়ে  চলমান সময়ের  শিল্পীদের অনীহা, রাতারাতি তারকা হওয়ার ধান্ধা, কম জানা লোকের সঙ্গীত পরিচালনা- এ সব  বিষয়  জানতে পারলাম।

হোমায়রা নামটা সে সময় আমার প্রথম শোনা। তাই দুবার আমাকে এটি কতার বলতে  হয়েছে। নামের অর্থটাও তিনি বলেছিলেন। এখন মনে পড়ছে না। রাজার গল্পও করলেন।

অনেক্ষণ ধরে  আলাপ-আপ্যায়ন। বশির আহমেদ সম্পর্কে হোমায়রার কাছে আরো অনেক জানা হলো। বিশেষ করে 'অনেক সাধের ময়না আমার বাঁধন ছিঁড়ে যায়'- গানটি নিয়ে বশীর আহমেদের উচ্ছ্বাস আমাকে মুগ্ধ করলো। একজন শিল্পীই বলতে পারেন তার কোন গানটি  আসলেই গান হয়ে উঠে। বশীর আহমদে খুবই আত্ম বিশ্বাসী শিল্পী।

হোমায়রা জানালেন ভারতের  খ্যাতিমান শিল্পীরা বশির আহমেদকে প্রচণ্ড শ্রদ্ধা করতেন। ভালোবাসতেন।
পরে  বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের এক আড্ডায় জেনেছিলাম-  'আয় খুকু আয়' গানটি  বাংলা সিনেমার জন্য গেয়েছিলেন হেমন্ত বাবু।

তার কাছে সিনেমার গানটি গাওয়ার অফার নিয়ে গেলে  হেমন্ত বাবু বলেছিলেন, যে দেশে বশির আছে, সে দেশে আমাকে কেনো ডাকছো তোমরা।  তবে শেষ পর্যন্ত হেমন্ত বাবু গানটি গেয়েছিলেন।

 মূলত ব্যান্ড  গানের প্রতি আমার টান ছিল প্রচণ্ড। সে কারণে এ সব গান আমার কানে নতুন মনে হচ্ছিলো।  বাসায় ফিরে পুরনো রেকর্ড নিযে বসেছিলাম। শুনছিলাম তার গান।

সম্ভবত তার বাসা থেকে ফেরার পর সঙ্গীতা বা সাউন্ডটেকের পাটুয়াটুলির হেড অফিস থেকে হোমায়রা ও বশির আহমেদের গানের ক্যাসেট পেয়েছিলাম। সেখান থেকে  অন্য রকম এক বশির আহমেদকে আবিষ্কার করি।

হোমায়রাকে নিয়ে আমার কয়েকটি রিপোর্ট ছিল- প্রিয়মুখে।  একটা ইন্সেটারভিউও ছাপা হয়েছিল।  সব রিপোর্ট তার ভালো লেগেছিল তা কিন্তু নয়।
তবে খারাপ লাগেনি বলে তার 'রহমান রহমান হকে' সিএ কোর্সের সহপাঠি শফিক ভাই মারফত জেনেছিলাম। শফিক ভাই তার বিষয়ে আমাকে বিভিন্ন বিষয় জানাতেন।

অনেক আড্ডার পর ফিরে বশির আমহেদের বাসা থেকে বেরিয়ে এলাম। বশির আহমেদ ও মেয়ে হোমায়রা বশির আমাকে  গেট পর্যন্ত এগিয়ে দিলেন। বললেন, শুধু রিপোর্ট না, এমনিতেই সময় পেলে চলে এসা। আড্ডা হবে। তোমরা তরুণরাই কিন্তু আমাদের সাংস্কৃতিক অগ্রযাত্রাকে এগিয়ে নিবে।  আমি অন্তত তাই মনে করি। ভালো থেকো।

পরে মাঝে মধ্যেই তাকে বাসার ফোনে কল করতাম।

বছর দেড়েক পরে সংস্কৃতি বিষয়ক রিপোর্ট লেখালেখি বন্ধ করে বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার হিসাবে কাজ শুরু করলে যোগাযোগটা থেমে যায়। কিন্তু বশীর আহমেদ- নামটা আমাকে আচ্ছন্ন করে রাখে।

সবচেয়ে বেশি ভালো লাগতো তিনি সব সময় গান নিয়েই আছেন। সংস্কৃতি কর্মীর নামে রাজনীতির জোয়ারে ভাসতেন না। বলতেন সঙ্গীতই তার জীবনের অভীষ্ট।  এটা নিয়েই তার জীবন কাটুক, সেটিই তার প্রত্যাশা।

এর মধ্যে আজ সকালে যখন বশির আহমেদের মৃত্যু সংবাদ পড়লাম-খুব মন খারাপ হলো। খুব। পরকালে আপনি শান্তিতে থাকুন। আপনার সঙ্গীতের সাথে আমাদের বাঁধন থাকবেই।