আতিউরকে বিচারের মুখোমুখি করা উচিৎ

ড. আতিউরের প্রতি প্রচণ্ড সহানুভূতি লক্ষ্য করছি । হয়ত এটা ঠিক আছে । তবে আমার ভাবনা এবং জানার সীমাবদ্ধতার কারণে আমি তাকে সমর্থন করতে পারিনি ।

১. কারো মতে মালের কাছে ৪ হাজার কোটি টাকা কিছুই না। ৮ শ কোটি টাকা কেন আমল পেলো।
এটার জবাবটা সোজা , সাইবার এটাকে একসাথে এত টাকা চলে যাওয়ার চে , ডিজিটাল বাংলাদেশের সাইবার সিকিউরিটি কতটা ভঙ্গুর এবং এটা ঠিক করতে ড. আতিউর কতটা অসফল তারই প্রমাণ হলো এই হ্যাকিং!
প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত না  ব্যাংকিং ভাবনায় প্রযুক্তির তড়িৎ সংযুক্তি-সম্প্রসারণ অবশ্যই ভুল ছিল, যেটি হ্যাংকিংয়ের পর তার নেয়া পদক্ষপের বলে খবর থেকে পড়ে সহজেই বোঝা যায়।

২. ড. আতিউর মোটেও মাস্টর নন । তিনি এনজিও ব্যবসায়ী। বিম্পি-জমাত সরকারের শেষ দিকে ঢাকা বিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগে তিনজন অধ্যাপক নিয়োগ করা হয় , সে সময় 'সুশীল' হিসাবে তিনি নিয়োগপ্রাপ্ত ।।

৩. আম্লীগের উনি বিরাট কিছু নন । বিরাট কোন অবদান তার নেই । তবে তিনি মেধাবী চতুর । তিনি রবীন্দ্রনাথ ও বঙ্গবন্ধু নিয়ে একটা মোটা বই লিখেছেন , যারা পড়ে থাকবেন তারা জেনেছেন, নিশ্চিতভাবে গ্রন্থটি আনুকল্য প্রত্যাশায় রচিত ।

৪. ড. আতিউর বলছেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ তার সন্তানের মত । সত্য । তবে সন্তান তিনি সঠিকভাবে লালন করতে পারেননি । তাই তিনি সন্তান বিপদে পড়ার পর একটি বাহিনীকে বলেছেন, যাকে সন্দেহ তুলে নিন । অনুমতি লাগবে না । এটা একটি বে আইনি প্রক্রিয়া ।

৫. বিদেশ থেকে টাকা আসার কোড বলেন আর আইটি সার্ভারের সিকিউরিটি নিশ্চিত করার জন্য ঘটনার পরে তিনি প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ ডেকে কথা বলেছেন বলে জানালেন । আসলে এটা আগে করলে এ রকম ড্যামেজ নাও হতে পারতো ।

৫. রিজার্ভ বৃদ্ধি সাধারণ এবং অতি সাধারণ একটি ঘটনা । রাজনৈতিক ঘটনাপ্রবাহ ভালো গেলে এটা আরো বাডতে। আমার জানা মতে, রিজার্ভের মুল টাকা আমাদের প্রবাসীদের আয়। যারা তাদের জীবনেকে বেঁচে দিয়েছে অল্প দামে। তাদের শ্রমের টাকা । এখানে কারো কোন বাহাদুরের ফলানোর কিছু মাই ।

৬. বাংলাদেশ ব্যাংক ড. আতিউরের সময় দৃশ্যমান বিপ্লবী কিছু করেছে হলে মনে পড়ে না ।

৮. অনেকে বলছেন , সরকারের অপছন্দের কারণ হলো তিনি দলের কথা শোনেন নি । আপনাদের নিশ্চয় মনে থাকে ড. ইউনুসকে সরকার ন্যাংটা করার কাজটা  ড. আতিউরকে দিয়েই করিয়েছেন ।


৯. পদত্যাগই যথেষ্ট নয়, তাকে বিচারের মুখামুখি করা দরকার ।


১০. মালের অপরাধও সরকার আমলে নিবে ; এটাও আমরা আশা করি । তবে মাল যেহেতু কোর রাজনৈতিক টিমের কোর মেম্বার, তাই তার রক্ষা পেয়ে যাওয়া বঙ্গীয় রাজনৈতিক সংস্কৃতি বলেই সম্ভব । তবুও সরকার কিছু একটা করে দেখাতে পারেন । আশায় আছি ।।

ভারাইট্টা :: নগর তোর লাইগা না!



নগরে ভারাইট্টাদের বিপক্ষে  কেবল বাড়িঅলা একা নন; এখন বিচারায়লও যুক্ত হৈলো। পুলিশ এখতিয়ারে বাইরে তথ্য চাইতে পারে!  আজ রোববার আদালত খুইলা কৈছে। 'নিরাপত্তার স্বার্থে' এটা পারে। কার নিরাপত্তা? রাষ্ট্রের ! হতে পারে। রাষ্ট্র এখন ডিজিটাল এবং এনালগ দু'দিক থেকেই  অনিরাপদ অবস্থায় আছে।

বঙ্গীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হরিলুট ডিজিটাল উপাখ্যানের পরে এ নিরাপত্তার বিষয়টি বেশি আলোচিত হবে--- এটাই স্বাভাবিক।  একই ভাবে আইএস নাই কিন্তু জঙ্গী-জিএমবি আছে--- সরকারের এ অবস্থান নিয়ে  মোড়ল-বনাম বঙ্গীয়  সক্কার বাহাদুরের বক্তব্য বৈপরিত্যও  এ ধরণের তথ্য লওয়াকে জায়েজ করবে।

বিদেশ গেলে আমরা কোনো তথ্য-সহায়তা দরকার হৈলে পুলিশের কাছে যাই। দেশে আমরা পুলিশকে সে রকম সহযোগি দেখি না; কিছু ব্যতিক্রম অবশ্যই আছে। ব্যতিক্রম কখনো উদাহরণ হতে পারে, তবে সেটি যৌক্তিক বিচেনায় নিশ্চিত কিছু না। কিন্তু পুলিশ তথ্য নিয়ে সন্ত্রাস দমন করবে নাকি হয়রানি করবে সে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।  আমি এ প্রশ্নটা করছি না! কারণ এখানে প্রশ্ন করলে কেউ আবার বিশেষ কোনো  পক্ষীয় হিসাবে আমাকে সিল দিতে পানে! সে আশঙ্কা থেকে  চুপ থাকাই উত্তম।

নগরে ভারাইট্টা নাগরিকরা যে এখনো  গোনায় আছে, সেটা হঠাৎ করে আমার মনে হলো, জ্যেতির্ময় বড়ুয়ার রিটের পর।  তিনি রিট করে এ তথ্য চাইবার অধিকারকে চ্যালেঞ্জ করেছেন। আদালত রুলও দিয়েছে। দিয়ে এটাকে রোববার হালাল বলে ঘোষণা করেছে।

জ্যেতির্ময় বড়ুয়াকে উদ্ধৃত করে বিডিনিউজ জানাচ্ছে,  “ডিএমপি রুলস-২০০৬ অনুসারে সন্ত্রাস দমনে ডিএমপি যে কোনো পদক্ষেপ নিতে পারে। এর আলোকে তারা তথ্য সংগ্রহ করছে বলে রিট আবেদনটি আদালত খারিজ করে দিয়েছে।”

'যে কোনো' শব্দটা খুবই মরাত্মক একটা শব্দ। যদিও্ এ নগরে মারত্মক আরো অনেক কিছু ঘটে গেছে, সামনেও ঘটবে সে সবের প্রতিকার আশা করাটাও অনুচিৎ এবং সন্ত্রাস দমনের স্বার্থে বললে-- 'অন্যায়'।

নগরে আসলে মানুষ শখ করে আসে না! শিক্ষা, চিকিৎসা, ব্যবসা, চাকুরী, ক্ষমতা, ডাকাতি, চুরি, রিকশা টানা--- সব কিছুরই কেন্দ্র এ রা্জধানী । এ শহরকে কখনো বিকেন্দ্রীকরণ করা যায়নি, অন্য অর্থে কারো এমন ক্ষমতা হয়নি; এটাকে বিকেন্দ্রীকরণ করবে!  তাই এখানে লোকে আসে, আসতে হয়---   এই কালো ধোঁয়া, বিষাক্ত সিসা, আর বালু বুকের  ভেতর নিয়ে খক খক করে কাশি  দিতে দিতে ইনকাম করা টাকার একটা অংশ বাড়িঅলা, একটা অংশ এনবিআর আর একটা অংশ ডাক্তারে চেম্বারেন জমা করতে করতে ক্লান্ত মানূষগুলো আগামীর স্বপ্ন বোনে।

সেই স্বপ্নের ফানুস আকাশে ওড়ে না। ফুস করে ফুটে যায়। হ্যাকার বেকার চ্যাকার নানা  তরিকার লোকেরা লুটে নেয়, চেটে পুটে খেয়ে সর্বসান্ত্ব করে নেয়ার পর এ ভারাট্টারা এ নগরে মরে পঁচে যায়। তাদের তুলে নেয় একটা এম্বুল্যান্স--- গ্রামের বাড়ির পথে রওয়ানা হয় সেখানে কবর! তারপর আবার নতুন ভারাইট্টা হিসাবে তার সন্তানের জীবন চক্র শুরু। এভাবে--- দিনে দিনে প্রতিদিনে এ নষ্ট নগরে বহু ভারাইট্টার জীবন  মিশে গেলো। কেউ খবর নিলো না!

পুনশ্চ: ধারণা ছিল এ রিট খারিজ হবে। তাই আগেই ফরম পূরণ করে জমা দিয়ে দিয়েছি।  তবে একটা জিনিস খটকা লাগলো--- তিনজনের বেশি লোক বাসায় থাকার তথ্য নাই। আমার অবশ্য আমি ছাড়া ৩ জন পরিবারের সদস্য। বাকি  গরিব মানুষ যারা থাকেন একটা বাসায় বেশি লোক তাদের কী হবে? 

 ওরে কালিয়া, নগর তোর লাইগা না!