শার্টের ভাঁজে; রমণীর চোখে বাণিজ্য

বহু নক্ষত্রের মরে যাবার পর আমিও
বলেছি

টিকবেনা কিছুই
চটকল বন্ধ
প্লাস্টিক !

সেটিও হয়তো টিকবে কিছু কাল!
তারপর আবার নিমপাতা ভেজানো জলে
গা ধুতে হবে তোমার। আমারো

জমে যাওয়া জমে থাকা আবর্জনা সরাতে
এগিয়ে আসতে হবে তোমাকে। আমাকে।

ইস্ট ইন্ডিয়া তাডিয়েছো; হে পুর্ব পুরুষ
রক্তের ভেতর ঠিকই রেখে গেছো গোলামি

কেবল ধরণটা বদলেছে। তবু সভ্য হাসি ঠোঁটে
শার্টের ভাঁজে; রমণীর চোখে বাণিজ্য

ভাবনা একটাই
কীভাবে ভালো থাকা যায়
ভালো রাখার ভাবনা; সে তো সুদুরে

পর্যটন নয়; বঙ্গ লুটছে দস্যু।
সেই লুটেরাদের পক্ষে নেমেছে
রাষ্ট্র... রাম বাম সেকুলার জাতীয়তাবাদী-
মুসলিম হিন্দু বৌদ্ধ ক্রিশ্চান- আস্তিক নাস্তিক
সব

তবুও কিছু মানুষ চাইছে প্রিয় স্বদেশ ।

এক ফোঁটা বৃষ্টি জমে গেলো তোমার ঠোঁটে; চোখের পাতায়

এক ফোঁটা বৃষ্টি
জমে গেলো তোমার ঠোঁটে; চোখের পাতায়
ধুয়ে নিলো কাজল

এক ফোঁটা বৃষ্টি জানিয়ে গেলো-
মেঘ করে যাওয়া আকাশের; বাঁধ ভেঙ্গেছে
অসুখ করবে; শিশু-বৃদ্ধার


এক ফোঁটা বৃষ্টি
নিমিষেই মিলিয়ে গেলো
রিছংয়ের স্রোতে

এক ফোঁটা বৃষ্টি
হুট করেই নামলো শান্ত দিঘীর জলে
জানিয়ে গেলো- এসেছিল সে

এক ফোঁটা বৃষ্টি
জমে থাকলো বাটফুলে
মিশে গেলো পাহাড়ের চূড়ায়।

এক ফোঁটা বৃষ্টি
জমে থাকলো
তােমার নাকের ডগায়
ফাল্গুনী দুপুরে-একাকী।

অনিকেত-স্পর্শিয়ার আলাপ-৬: মাঠের আবার হাল কি? খেলাধূলা



- 'ওগো বৃষ্টি  তুমি... চোখের পাতা ছুঁয়ো না' ... গুন গুন করে গাইছে স্পর্শিয়া।
- সকাল থেকে বৃষ্টি। বারান্দায় দাঁড়ালে বৃষ্টি ধরা যায়, স্পর্শিয়া ধরবে ভাবে। তবে ধরা হয় না। আলসেমি; উঠতে ইচ্ছে করছে না। শূয়ে শুয়ে গুন গুনিয়ে গাইছে। কেউ শুনলে পাগল বলবে! নিশ্চিত!

- ফোনটা বাজছে- কার ফোন!

ঘুম ঘুম চোখে ফোনের দিকে তাকায়
-ও, অনিকেত! কেমন আছো। অনেকদিন পর- মনে পড়লো।
- না এম্নি। মন ভালো নেই, তাই। ঝামেলাও যাচ্ছে।

-আচ্ছা বাইরে কি বৃষ্টি?
- হুমম বৃষ্টিই তো।
-বাইরে কি অবস্থা। কিসের কি?
- না আলিয়া মাদরাসা মাঠের মঞ্চের কি হাল।
-মাঠের আবার হাল কি? খেলাধূলা
-মানে? কিসের খেলাধূলা।
-মাঠে কি হয়। হয় অনুষ্ঠান;  না হয় খেলাধূলা। নগরে যে হারে  খেলার জায়গা কমে যাচ্ছে; সেখানে দু'একটা যা মাঠ আছে- সেখানে তো খেলাধূলা হওয়ার কথা।
-আরে গাধু , সেটা না। বলছি  খালেদা জিয়া কি গেছে।

- ও, সেখানে একটা কোর্ট চলে।
-তাই তো।

- দেখি নিউজ সাইটে
কম্পুটারে উঁকি মেরে অনিকেত বলল-না যায়নি।

হুমমম।


 আচ্ছা  তুমি কেমন আছে।
-আছি ভালো।
-ব্লগার অভিজিৎকে খুন করছে কে? বলতে পারো।
-ফেসবুকে পড়েছি ধর্মান্ধ, ধর্ম ব্যবসায়ীরা খুন করেছে।
- কি বলো। ধর্মান্ধরা এত শক্তিশালী। আম্লীগ না  মৌলবাদী ও জঙ্গি বিনাশে কাজ করছে। সেই ১৯৯৬ থেকে ২০১৫। এর পরেও।
-মজার ব্যাপার কি জানো জঙ্গি ফাঁসি হয়েছে ২০০৭ এ। তাদের ধরেছে বিম্পি-জমাত সরকার। যে দলের নেত্রীকে এখন আম্লীগ নেতাদের কেউ কেউ 'জঙ্গি' নেত্রী বলে।

- সব কথা শুনতে হয় না।
-তা ঠিক বটে!
-কালো বিড়ালের ঘটনা জানো না।  সংবিধান যখন বিম্পি মানতে চাইলো; তখন বলতো 'ডকটিন অব নেসেসিটি'। আর এখন এটা 'বাইবেল'। গণতন্ত্র  রক্ষা করতে হাঙ্গামা।

তা ঠিক।

-ক্ষমতা তো এমনই; স্লিম ফিগারের তরুণীর মত!
-অনিকেত; দুষ্টুমি করছো। আমার ওজন কিন্তু বেশি বাড়েনি!
- ওহ নো! আমি তো তোমার কথা বলিনি।
- না; কম ওজনের তরুণী লোভনীয় সে কথা তো বলেছো।

হা  হা হা হাসবে না।

- শোনো প্রিয় ডট কমে দেখলাম, মোটা নারী বেডে আর চিকন নারী মঞ্চে ভালো।


হা হা হা

- আচ্ছা অভিজিৎ হত্যার ঘটনায়  চৈনিক ও রাশায়নিক কোনো বাম মন্ত্রীর প্রতিরোধমূলক বক্তব্য দেখলাম না।
-চৈনিকটা না হয় বুঝলাম- চীন, রাশায়নিকটা কি
- আরে রাশিয়ান আর কি!
- দেখবা কেমনে। অভিজিৎ তো আমরিকান।
-এইটা কে বললো। কেনো ওয়াশিংটন পোস্ট ও গার্ডিয়ানের নিউজ দেখো নাই।  ওরা হেড লাইন করছে আমেরিকান ব্লগার অভিজিৎ খুন।
- এইটা দেইখাই উনাদের প্রগতির গতি আটকায়া গেছে।
-হুমমম
-উনারা সময় সময় গতি পায়, আবার সময় সময় পায় না।

তা ঠিক।

 -স্পর্শ রাখি
-কেনো। না একটা মিটিংয়ে ঢুকবো।
-ঠিক আছে। দুষ্টু বাবু রাখ্খাে। ভোলো থেকো।

এখন অভিজিৎ!

হত্যা- যে কোনো বিচারেই অগ্রহণযোগ্য এবং এর বিচার হবার কথা। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখ ভারক্রান্ত হৃদয়ে আমরা এর কোনো বিচার দেখিনা। খুব ব্যাতিক্রম ছাড়া।

এটা আমি আম্লীগ সরকারকে ধরে বলছি না। সব সরকারের সময়ই একই কথা।

কয়টা উদাহরণ দেই বাংলাদেশে সবচেয়ে  আলোচিত হত্যাকাণ্ডের তালিকায় যে সব লোকের নাম আসে তাদের চেয়েও আলোচিত অনেক ব্যাক্তি খুন হয়েছেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অধ্যাপক আফতাব আহমদ খুন হয়েছেন। তার হত্যার বিচার কি হয়েছে?

বিএনপি ক্ষমতায় থাকার সময় তার দলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুল ইসলাম মামুন খুন হয়েছে? তার কি বিচার হয়েছে?

খুলনায় সাংবাদিক মানিক, বালূ ,যশোরের সাংবাদিক শামসুর রহমান এবং রানা'র  সম্পাদক খুন হয়েছে- বিচার কি হয়েছে?

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু বকর খুন হয়েছে, সে মামলার কি কোনো অগ্রগতি আছে?

সম্বাদিক দম্পত্তি সাগর রুনি এই নগরে খুন হয়েছেন? বিচার কি হয়েছে।

'দ্বিতীয় প্রজন্মের মুক্তিযোদ্ধা' থাবা বাবা ওরপে রাজিব খুন হয়েছেন, বিচার কি হয়েছে?

চ্যানেল আইয়ের ইসলামিক অনুষ্ঠান হজ্ব কাফেলা অনুষ্ঠানের উপস্থাপক কাজী ফারুকীকে খুন হয়েছে। বিচারের কি হাল?

কেউ কেউ বলবেন- বিচার চলমান! আমিও জানি। তবে আর কতকাল চলবে - সেটা আল্লাহ মালুম।


এখন অভিজিৎ!



যে খুন হলো বা যারা খুন করেছে, তাদের মত পথ বিশ্বাসের  ভিন্নতা থাকতে পারে- কিন্তু আইনের রং  একটাই হওয়ার কথা। সেটি আমরা দেখিনা। একই সাথে গণমাধ্যমের ভূমিকাও দায়িত্বশীল হবার কথাও সেটিও এখন লুপ্তপ্রায়।


আর কিছু শব্দ- ধর্মান্ধ, ধর্ম ব্যবসায়ী, চেতনা, মুক্তমত, সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী, মুক্ত চিন্তা; এখন এতটাই ব্যবহৃতও ও প্রচলিত যে- যে কোনো ঘটনার অপরাধীরা ধরা ছোঁয়ার বাইরে থেকে যায়!

আগে পুলিশ আসামী ধরলে - পুলিশ বলতেন; আমরা দেখছি। তদন্তের স্বার্থে এখন কিছু বলা যাচ্ছে না। আসলে তদন্ত ফদন্ত কিছুই না।  একটা জিনিসের সাময়িক উত্তেজনা প্রশমনের চেষ্টা।

এখন পুলিশ কোনো একটা দিকে আঙুল তোলে, তারপর তদন্ত করার নামে তাই প্রতিষ্ঠত করার চেষ্টা করে- যদিও চূড়ান্ত বিচারে  সব সময় তা সত্য হয় না। তবুও 'চাকুরী রক্ষা'  বলে একটা সহজ  ফর্মুলা প্রয়োগ করে তার টিকে যাওয়া।


কিন্তু মিডিয়ার দায়!  সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না। এখন মিডিয়া কোনো একটা ঘটনা প্রবাহ কোনদিকে নেবে তা বিশেষ বিশেষ জায়গা থেকে আরোপনের আলোকেই করা হয় বলে অনেকে আন্দাজ করেন। তবে এ সব আন্দাজ সব সময় সঠিক সেটাও আমি বলতে চাচ্ছি না।

ফেসবুক ব্লগের আবেগি কারখানায় তো পুরো তদন্ত রিপোর্ট ঘটনার সাথে সাথেই প্রকাশ হয়ে যায়। মনে হয় এ টা নিয়ে আগে থেকেই রিসার্চ ফাইন্ডিংস ছিল- জাস্ট আপলোড মারা আর কি!

মজার ব্যাপার হলো  ঘটনার সাথে দিন গড়ায়; সেই দিন গড়ানোর সাথে সাথে সবাই এ সব ভুলে যেতে থাকে। এবং এ সব ঘটনার কোনো বিচার হয় না।

আর ফেসবুক ব্লগ কাঁপানো লোকেরা হলুদ বসন্ত, রক্তিম ভালোবাসার গোলাপের ছবি নিয়ে আলাপ জোড়েন এবং কখনো তারা  কোনো ঘটনা টানা ফলোআপে রাখার মত ধৈর্যশীল নন।  এটা আমার ব্যাক্তিগত  উপলব্ধি!

এ ধৈর্য্য আমরা দেখেছি- গণমাধ্যমের। ক্রমাগত ফালোআপের কারণে নারী নির্যাতক মনি'র ফাঁসি হয়েছিল, এ বাংলাদেশেই।  কুখ্যাত এরশাদ শিকদারের  ফাঁসিও হয়েছিল,  এ দেশেই। জঙ্গি শায়খ রহমান, বাংলা ভাইয়ের ফাঁসিও হয়েছিল এ দেশে।   এ জন্য ধৈর্য্যটা খুব জরুরী।


নোট: আমার কাছে প্রতিটি মানুষের জীবন আমার নিজের জীবনের মতই গুরুত্বপূর্ণ। আমি সে জন্য সব ধরণের হত্যা, হত্যার উস্কানি, গুম, খুন, অপহরণের বিপক্ষে ছিলাম, আছি এবং সামনেও থাকবো। এ কথা শত বার বলছি, কারণ যতদিন হত্যা চলবে- ততদিন আমি এর বিপক্ষে বলবোই!