পেট্রোল বোমায় মানুষ পোড়ানো :১৯৯৬ থেকে ২০১৫


আমার খুব জানার ইচ্ছা, কারা পেট্রোল বোমা বানায়, মারে; তারা ধরা পড়ে না। আইনের আওতায় আসে না। তার মানে কি ! তারা অতিমানব। অতি ক্ষমতাবান এবং অতি শক্তিমান।    

১৯৯৬ থেকে ২০১৫ পর্যন্ত যতগুলো  পেট্রোল বোমা, গাড পাউডার দিয়ে বাসভর্তি মানুষ পুড়িয়ে মারা হয়েছে; সে সব ঘটনাগুলো যারা প্রত্যক্ষ করেছেন, তাদেরও নিশ্চয় এ প্রশ্নটা মনে জাগে। কিন্তু দলদাস বা দলান্ধ হবার কারণে সময় সময় কৌশলে এরা এ সব নিয়ে কথা বলেন। 

আমি সব সময় সব সরকারের সময় সব ধরণের মৃত্যু, হত্যা, গুপ্ত হত্যার বিরোধী। - এ মৃত্যুখেলা বন্ধ করুন। 

২০০৪ সালের ৪ জুন তৎকালীন শেরাটন হোটেলের (রূপসী বাংলা) উল্টো দিকে বিআরটিসির একটি দোতলা বাসে আগুন দিয়ে ১১ জনকে পুড়িয়ে মারা হয়। তখন ক্ষমতায় ছিল বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় সরকার। ৪ জুন হরতাল ডেকেছিল তৎকালীন বিরোধী দল আওয়ামী লীগ।(সূত্র প্রথম আলো)

১৯৯৬ সালের  ১৭ মার্চ অসহযোগ আন্দোলনের ৯ম দিনে রাজধানীতে বাসে পেট্রোল বোমায় ২ জন নিহত, চট্টগ্রাম ও সিরাজগঞ্জে আরো ২ জন নিহত হয়েছে বলে সে সময়কার পত্রিকার খবর।

তার মানে পেট্রোল বোমা হঠাৎ আবিষ্কৃত হয়নি। ক্ষমতা টিকিয়ে রাখা কিম্বা আরোহনের এটা একটা বড় অস্ত্র। মানুষের রক্ত মাংস পুড়িয়ে ক্ষমতা- আহা জীবন; নিয়মিত। 

২০১৩ , ২০১৪ এবং ২০১৫ এর শুরুতেই যে পরিমাণ মানুষ পেট্রোল বোমায় দগ্ধ হয়ে কাতরাচ্ছেন, জীবন দিচ্ছেন; তাদের প্রতি সহানুভূতি। তাদের পরিবারের ব্যাথা অনুভব করার মত সক্ষমতা সরকার কিম্বা বিরোধী দলের নেই। 

তাই পেট্রোল বোমবাজদের ধরেই একইভাবে তাদেরও পুড়িয়ে মারা পক্ষে আমার ন্যায় বিচারের পূর্ব দাবি আবারো থাকছে।  

ঘটনা হলো- এত পুরনো একটা সঙ্কট কাটাতে  কোনো রাজনৈতিক দলই সক্ষমতা প্রমাণ করতে পারলেন না।  সত্যিক অবাক লাগছে। 

বড় কষ্ট লাগে। 

কারণ আমি, আপনি যে কেউ যে কোনো সময় এ ধরণের বোমার শিকার হতে পারি। আল্লাহ আমাদের সবাইকে দলমত নির্বিশেষে- অপমৃত্যু-অনাকাঙ্খিত হত্যাকাণ্ড থেকে রক্ষা করুণ। 



সৌদি বাশ্শার জন্য আইজকা শোক

 frown emoticon
রাজনীতিকদের নষ্টামীর কবলে পড়ে দেশের এত মানুষ-মরে,পুড়ে,গুম,নিঁখোজ হয়ে শশ্মান- কব্বর হয়ে গেলো; তার জন্য শোক নাই।
ক্ষমতা আকডে থাকা আর আরোহনের জন্য মানুষের রক্ত চুষে নেবার লড়াইয়ে কোনো মানব সন্তানের প্রতি রাজনীতিকদের সহানুভূমি দেখানোর ফুরস নাই। সেখানে সৌদি বাশ্শার জন্য শোক। আহারে পীরিত।
সৌদি বাশ্শার জন্য আইজকা শোক। একটা দেশের সরকার সে দেশের মানুষকে কতটা মানবিক ভাবে বিবেচনা করে তা বোঝার জন্য আর কোনা উদাহরণের দরকার পডেনা।
আমাদের বঙ্গ সন্তানদের জীবন যে মুল্যহীন; তা এতটা আঙুল দিয়ে না দেখালেও হতো।

শেষ পর্যন্ত মুক্তি পা্ইছে হিন্দি ফিলিম ওয়ানটেড!


শেষ পর্যন্ত মেদহীন নায়িকার বাঁকানো শরীরের উপ্রে সেন্সর বোর্ডের ছাপ্পর মারা পোস্টারে পোস্টারে নগরি রঙিন করে আজ ২৩ জানুয়ারী শুক্কুরবার মুক্তি পা্ইছে হিন্দি ফিলিম ওয়ানটেড।

আর ৭ দিন বাদে আসছে আমাদের ভাষার মাস । একুশে ফেব্রুয়ারি পালন করবো আমরা। সে জন্য প্রস্তুতি চলছে। বক্তৃতার খই ফুটবে, সংস্কৃতি মুন্ত্রীর বয়ানও শোনা যাবে। আমরা  গাইবো-'আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি আমি কি ভুলিতে পারি।'
শেষে ছুটে যাবো পূর্ণিমা, মধূমিতা, আনন্দ সিনামা হলের কোনো একটাতে। একটা হিন্দি কিম্বা উর্দু  ফিলিম দেখে সব ভুলে যাবো। আহা।

বয়সের ভারে মোট কাঁচের চশমা সরিয়ে তিনি আবেগে কাইন্দা ফালায়া টিভি ক্যামেরার সামনে চোখ মুছবেন- আর বলবেন, বরকত, সালাম , জব্বর তাদের রক্তের বিনিময়ে আমরা মায়ের ভাষায় কথা বলতে পারছি।

আহা জীবন-অভিনয় কীভাবে একটা রাষ্ট্র ব্যবস্থার ভিত্রে ঢুইকা পড়ছে ভাবলে কষ্ট লাগে। বাণিজ্য যদি চূড়া্ন্ত লক্ষ্য হয় তাহলে সব কিছুরই তো বাণিজ্যিকীকরণ হতে পারে।  যদি বাংলাদেশের সিনামা দিয়া সিনামা হল ব্যবসা টিকায়া রাখা মুশকিল বলে  উর্দু-হিন্দি সিনামা মুক্তি দেওন যায়; তাহলে নষ্ট রাজনীতির কবলে পড়ে বিপন্ন মানুষের জীবন বাঁচাতে তো আমরা রাজনীতিক, আমলা, নিরাপত্তা রক্ষীও আমদানি করতে পারি।

এ যুক্তিটা একেবারেই শিশুসুলভ জানি; তবুও দিলাম।

স্বাধীনতার ৪৩ বর্ষপূর্তির মাথায়  বাংলাদেশের রাজধাণী ঢাকায় আজকে মুক্তি পেলো প্রভুদেবার সিনামা ওয়ানটেড। ঢাকার বাইরেও মুক্তি পেয়েছে। সব মিলিয়ে ৬০ টি হলে।

আজকের এ দিনটাকে কেউ কালো বললেন, কেউ সাদা বলবেন।রাজনৈতিক , ব্যবসায়িক এবং কূটনৈতিকভাবে অনেকের কাছে অনেক ব্যাখ্যা থাকবে; সে সব মেনে নিয়েই বলছি এমন বাংলাদেশের জন্য তিরিশ লাখ মানুষ তার অমুল্য জীবন বিলিয়ে দেননি।

বঙ্গবন্ধু, জেনারেল জিয়া, সি আর দত্ত কিম্বা জেনারেল ওসমানীরা লড়াই করেননি। ভাসানী তার জীবনটা উৎসর্গ করেননি ভিনদেশি  বাণিজ্য প্রসারের জন্য।   নিজের যা আছে তা ঘিরে বিস্তৃত হবার লড়াই ছিলো তাদের। আমাদের হাতে সেটিই তারা তুলে দিয়ে গেছেন।  বঙ্গবন্ধুর বক্তৃতাতেই আছে অর্থনৈতিক মুক্তির কথা। কিন্তু সে মুক্তির বদলে আমরা ভিনদেশের অর্থণৈতিক গোলামে রূপান্তর হবার জন্য প্রস্তুত হয়ে আছি।

হাল আমলে  গিনিজ বুকে নাম তোলার যে হিড়িক পড়েছে তাকে আমলে নিয়ে বলছি বাণিজ্য প্রসারে  হিন্দি সিনামার এমন মুক্তি যদি আমরা মেনে নেই তবে তা গিনিস বুকে উঠতে পারে। যে জাতি একটি ভাষা, রাষ্ট্র, সংস্কৃতি এবং টিকে থাকার লড়াইয়ে জয়ী হযেছিল, কেবল রবীন্দ্র সঙ্গীতের অবহেলার প্রতিবাদে পয়লা বৈশাখের মত জাতীয় আয়োজন করে দশকের পর দশক তা ধরে রাখতে পেরেছে;; সে জাতি তার সিনামা শিল্পকে ধ্বসিয়ে দেবার আয়োজন প্রত্যক্ষ করলো আনন্দে; সেটিই  সেলুকাস!

 অনেকেই বলছেন- টিকে থাকতে হবে প্রতিযোগিতা করে। বলি বাপু , তোমার কথা শুনলাম, কিন্তু তুমি টিকতে পারছো। তোমাদের কাউকে কাউকে তো এখনো চাকুরী, পড়াশোনায় টিকিয়ে রাখার জন্য মহান সংসদে কোটা নিয়ে আলাপ করতে হয়।  তা নিয়ে আমার আপত্তি নাই। পিছিয়ে পড়া মানুষকে সামনে এগিয়ে দিতে এটা লাগে। কিন্তু নিজের সংস্কৃতির ভিত তৈরির জন্য তুমি সে সবের কিছু করেছো, নাকি রাস্তার বেশ্যাদের মত কাপড় খুলে বসে আছো;)

মজার ব্যাপার হলো- একজনের হাতের বন্দুক থেকে  গুলি বের হয়। আরেকজনের বন্দুক থেকে কেবল আওয়াজ।  গুলি আর আওয়াজঅলা বন্দুক যোদ্ধা যদি প্রতিযোগিতায় নামে তাহলে কে টিকবে?  সে উত্তর সবার জানা।


একজন বললেন, বাংলা সিনামা ৪৩ বছরেও পারেনি; সামনেও পারবে না। হতে পারে। আবার নাও হতে পারে। কিন্তু বলিউড যে পরিমাণ মেধা, শ্রম,প্রযুক্তি ও অর্থের উপ্রে দাঁড়িয়ে আছে বাংলদেশে কি তা ছিল, আছে কিম্বা হবে।  সে প্রশ্নের উত্তর নেই।


 তবুও এ দেশে ভারতীয় সিনামা এসেছে। বাল কাটার ব্লেড থেকে, পিরিয়ডের রক্ত চোষার ত্যানা, ডিম ভাজার পেঁয়াজ থেকে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকের ডিগ্রি সবই আমরা্উপমহাদেশ থেকে আমদানি করি। তাতে কি তাদের ভালোটা আমরা নিতে পারি না; সেইটা বললে আবার উন্রারা  উপরের দিকে চাইয়া থাকেন বড় ভাই, সাহেবরা কি বলেন, সে অপেক্ষা আর কি!


বিম্পির এককালের তথ্য মুন্ত্রী নাজমুল হুদা আকাশ ওপেন করে ভারতীয়  পণ্যের বাজার তৈরি করে গেছেন। আম্লীগের মুন্ত্রী স্পর্শ পেয়ে বলেছেন ধন্যি বাবা, চলো হিন্দি সিনামা দেখাই। যারা এ বিরোধীতা করে তারা মুক্তবাজার অর্থনীতি বোঝেনা, শিল্প বোঝেনা, সংস্কৃতি বোঝে না।

এ দেশে কিছু বলতে গেলে 'রাজাকার', 'তুই অযোগ্য', 'তুই পারিস না; তাই বলে আমি খাবো না', '--- এ সব টাইপের কথা শুনতে শুনতে অনেকেই চুপসে থাকেন।


তবুও আশাহীন নই আমি। সক্কার বাহাদুরের নিশ্চিতভাবে সুমতি হবে। সে আশায় আছি। শোকে আছি। আনন্দ আসবে।

নির্মম-দুর্ভাগা এ দেশের সিনামা শিল্প

যখন প্রণোদনায় টিকে থাকা গার্মেন্ট ব্যবসা খ্রাপ করে; তখন সক্কার বাহাদুরের মন খ্রাপ হয়। সুশীলরা বলে সমাজে বেশ্যা; হতাশাগ্রস্থ মানুষ আর চুরি;ছিনতাই বাড়বে।

কিন্তু প্রণোদনার টাকার ভাগ গার্মেন্ট কর্মীরা পায় না। পায় মালিকরা। যারা  ফরেন বায়ারের সাথে ডিল করার নামে থাই কন্যাদের সাথে মউজে মজতে  ব্যাংকক-পাতায়া আর ফুকেটের স্টার; থ্রিস্টার-ফাইভ স্টার হোটেলের কক্ষ গরম করে তোলেন।

বিচের  আধো উষ্ণবালিতে পা ঠেকান।  জানালা খুলে দিয়ে থাই কন্যার উড়ন্ত চুলের ভিত্রে খুঁজেন ব্যবসা পাকা করার সন্ধি।  আহারে দুইন্নাই।

সেই দেশের একই সক্কার যারা প্রণোদনাহীণ  সিনামা শিল্প কে হত্যা করার চেষ্টা করছে। একবারো ভাবছে না  সিনামা শিল্প ধ্বসে পড়েছে; এখন কব্বর হয়ে গেলে গুটি কতক লোক ছাড়া বাকি সবার কি হাল হবে? তাদের জীবন-জীবিকা-সংসার কীভাবে চলবে।

কীভাবে নির্মিত হবে আগামীর বিনুদন শিল্প।নিজের সংস্কৃতি-পরিবারের টানাপড়েনের চিত্রায়ান কি করে সম্ভব।  কি করে গড়ে উঠবে সংস্কৃতির ভিত।

কেবল সাময়িক লাভ আর উত্তেজনার আফিস বিক্রি কি দীর্ঘ মেয়াদি সমাধান। হতে পারে না। তবুও হতে যাচ্ছে।  শুক্কুরবার মুক্তি পাচ্ছে বঙ্গ দেশে হিন্দি সিনামা।

বড়ই নির্মম-দুর্ভাগা এ দেশের সিনামা শিল্প! আহা সিনামা।

বাংলা সিনেমা যখন ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য চেষ্টা করছে সে সময় ঠাডা পড়লো


বাংলা সিনেমা যখন ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য চেষ্টা করছে সে সময় ঠাডা পড়লো-বাংলাদেশের হলে মুক্তি পাইতে যাচ্ছে হিন্দি সিনামা। মনে বড় কষ্ট নিয়ে এ লেখা লিখছি।-

বাংলা সিনেমার প্রতি আমার প্রচণ্ড টান ছিল এবং এখনো আছে; এটা কারো কাছে হাস্য রসের বিষয় হতে পারে; কারণ তাদের মত হিন্দি ও ইংরাজি সিনেমা দেখে জাতে ওঠার ভাবনা আমার কোনো কালেই ছিল না। এখনো নাই।

বাংলাদেশের সিনেমার প্রতি আমার এ ভীষণ রকমের টানের বড় কারণ আমাদের পরিচালকরা আমাদের সময়কার ঘটনা এবং ভাবনার পরিধি নিয়ে কাজ করেন।

 নিম্ন আয়ের দেশ হিসাবে আমাদের চাওয়া দু মুঠো ভাত, মোটা নারী, আর  বৈকালিক বিনুদন হিসাবে চা সিগারেট কিম্বা ছোলাই মদ। আর আমার নিজের চেয়ে খারাপ অবস্থায় থাকা মানুষকে ফাঁপর দেয়া। এ সবই সিনেমার অনুষঙ্গ।

তাই এখানে যখন নায়ক মান্না ওই খামোস বলে হাত মুঠো করেন; তার ভয়ে  গডফাদার চুপসে যায়; তখন করতালিতে মুখর হয়ে ওঠে  সিনেমা হলঘর।

 অথবা চটুলগানের সাথে যখন পপি তার বিশলাকায় রানের দুলুনি তে সনিমোর পর্দা কাঁপিয়ে তোলেন তখন সবাই হিসহাস করেন।


 সেই সিনেমা হলে নিশ্চিতভাবেই কখনো কখনো ময়ুরীর উদোম রানের  গোশতের থর থর কাঁপন, মুনমুনের মধ্যম আকৃতির বুকের দুলুনি, স্লো মোশনে খল নায়িকা নাগমার  ফুলে ওঠা বুকের ওপর অ্যাকশন কারো কারো কাছে অশ্লীল-চোখ বন্ধ হয়ে আসে।

কারো কাছে  বমির ভাব হয় আজাদ খানের সিনেমা দেখলে। কারো সোহেল-শাপলা  শারিরীক বিত্তবলয় খ্রাপ লাগে। আমি অস্বীকার করছি না।

ভালো সিনামাও  এ বঙ্গে হয়েছে; হয়ে আসছে এবং সামনেও হবে। হয়ত আমাদের  ধুম থ্রি'র মত সিনেমা বানানো কিম্বা  গুণ্ডের মত তর্ক সৃষ্টি করে টিকে থাকার মত শক্তি এ দেশের নির্মাতাদের নেই।

তবে এ টুকু তো আছে যে গেরিলা,  ব্যাচেলর কিম্বা অগ্নির মত সিনেমার জয় হয়েছে। ওরা ১১ জনের মত সিনেমা কেবল আমাদের ইতিহাসকে সমৃদ্ধ করেনি চলচ্চিত্র ইিতিহাসে বিষয় বৈচিত্রে এক অনন্য সংযোজন নিয়ে এসেছে।

বেদের মেয়ে জোছনা কিম্বা হাঙর নদীর গ্রেনেড, অথবা মাটির ময়না কি আমাদের সম্মান বাড়ায় নি।

সিনেমা হলগুলোতে আমরা খুবই খ্রাপ পরিস্থিতির কথা বলি। বলি ভালো সিনেমা হচ্ছে না। ইনডিয়ার ভালো সিনামা বানায়; আমি দ্বিমত করি না।  আবার পুরোপুরি একমতও হই না।

কারণ ইনডিয়ার বহু সিনেমা আছে যে গুলো হলিউডের  সিনেমার কাহিনী নকল। আমরা নকল করি হিন্দি সিনামা কিন্তু মৌলিক কাহিনী চলমান  সঙ্কট নিয়ে সিনামা হচ্ছে। সবশেষে পিপড়াবিদ্যার কথাই ধরুন। নাটক কিম্বা সিনামা হয়েছে কিনা তা নিয়ে তর্ক হতে পারে; কিন্তু সিনামার গল্পটা একেবারেই সমসাময়িক এবং প্রাসঙ্গিক।

ইনডিয়া সিনামার বাণিজ্যিক প্রসারে যে পরিমাণ বিনিয়োগ ও প্রচার যন্ত্র ব্যবহার করে বাংলাদেশে তা হয় না। বাংরাদেশের প্রচার মাধ্যমের সাপ্তাহিক দু পৃষ্ঠার এক পৃষ্ঠা ইনডিয়ার জন্য বরাদ্দ থাকে।

ডিজিটাল সরকারের ৭ বছরেও ডিজিটাল ইকুইপমেন্ট আসেনি এফডিসিতে। হলফ করে বলছি আমরা এখানে সিনামা শিল্পকে গলা টিপে হত্যা করতে চাই। সে জন্য আজকের এ হাল।

এখানে সসিনেমা নিয়ে পড়াশোনা করার জন্য  ইন্সটিটিউট ও ইউনিভার্সিটির ডিপার্টমেন্ট খোলা শুরু হয়েছে; মাত্র। এখানকার পরিচালকরা অন্যের সহকারি থেকে শিখেছে। কয়েকজন ইনডিয়া ও আম্রিকা থেকে পড়ে এসেছেন।

নায়ক-নায়িকারা তাদের সুরত ভাল- সেটি কাজে লাগিয়ে সিনেমায় নেমেছেন।

এত সব প্রতিকূলতায়  দেশে অন্তত ২০/২৫ টি ভালো সিনেমা হয়, সে জন্য  নির্মাতাদের  সম্মান জানানো  উচিৎ।


আমাদের নায়িকারা যখন সিনেমায় পা রাখেন-তখন প্রযোজকরা তাকে বেডে ডাকেন, নায়ক তার জন্য উতলা থাকেন।  এটা হয়তো সবখানেই হয়। হতে পারে; তাতে কি।  কিন্তু  সানি লিওনের মত পর্ন স্টারকেও  ইনডিয়া বাজারজাত করতে পেরেছে। ক্যাটরিনা, দীপিকা কিম্বা রানীর কথা ভাবুন না। ঐশ্বরিয়ার কথা বাদই দিলাম।  তাকে নিয়ে আমাদের  তরুণদের আগ্রহ নিশ্চিতভাবেই সবই বুঝতে পারে না।

 এমনকি ভারতীয় নায়ক শাহরুখ, সালমান, জন, ইমরান, হৃতিক- বা আরো যারা আছেন।  তাতেদর জন্য আমাদের অনেতক তরুণীর জীবন যায় যৌবন ভেসে যায়। এ জন্য আমি আমাদের তরুণ-তরুণীদের দোষ দিই না; কারণ আমরা আমাদের চেনাতে পারিনি।


 ববিতার মত নায়িক এ দেশের পর্দা কাঁপাননি  বিশ্ব দরবারে বাংলা সিনামার সমৃদ্ধির কথা জানিয়ে দিয়েছেন। সে  সব নায়িকাকেও এ দেশের ক্ষমতাবানদের হুমকির মুখে পড়তে হয়েছিল।


 সিনামা কি কেবলই বাণিজ্য? মনে হয় না। কিন্তু বাংলাদেশের ব্যবসায়িকভাবে সফলতা অর্জনের জণ্য লড়াইটা বেশি। কারণ এখাতে সরকারের সহযোগিতা কিছু আর্ট ফিলিফেমের জন্য। বাণিজ্যিক সিনেমায় সরকার পৃষ্ঠপোষকতা করে না। উল্টো সুন্দরী নায়িকার ডাক পড়ে সেন্সর বোর্ড সদস্যের বেড রুমে-এ গুলো ওপেন সিক্রেট।

একটা বড় রকমের গুণ্ডামি ঘিরে রেখেছে সিনামা। সেই সুযোগটা নিয়েছে প্রদর্শকরা। যে সব প্রদর্শক তাদের হলগুলোতে  অশ্লীল কাটপিস দেখিয়ে পরিবেশ নষ্ট করেছেন, সিনেমা দেখার জন্য সঙ্গীনীর সহায়তার নামে বেশ্যার বাজার তৈরি করেছেন; ধীর লয়ে তারাই বলছেন হল টিকিয়ে রাখতে হলে এখন হিন্দি সিনেমার বিকল্প নেই।


বড় আফসোস-বঙ্গবন্দূ কন্যা এখন ক্ষমতায়। অথচ বঙ্গবন্ধু নিজ হাতেই এ দেশে  উপমহাদেশীয় সিনেমা আমদানি প্রদর্শণ নিষিদ্ধ করেছিলন। সেটি রক্ষা হলো না। শুক্কুরবার হিন্দি সিনামা ওয়াটডেট মুক্তি পাচ্ছে।

যারা আমাদের সংস্কৃতি থেকে দূরে সরে গিয়ে ভারতীয় বাণিজ্যিক অশ্লীলতাকে শিল্প বলে চালাতে চান তাদের সাথে বাৎচিৎ করার মত ইচ্ছে আমার নেই।

তবে দেশের সনেমা শিল্পকে টিকিয়ে রাখার  স্বার্থে একসাথে একমত  হয়ে একই আওয়াজ তুলতে হবে। সময় এখন নিজের সিনেমাকে প্রটেক্ট করার।  জয় হোক সবার। জয় হোক বাংলাদেশের সিনেমার।