'ছেলেটা যাকে প্রেমে কিনতে চেয়েছিল, লোকটা তাকে টাকায় কিনেছে!'



ছবি সৌজন্য: magazine.kolkata24x7.com
 
এক.
'ছেলেটা মেয়েটার মনে পেতে দিনের পর দিন -নিজের পড়া, কাজ, ঘুম সব নষ্ট করে। আর লোকটা সে মেয়েটাকে কিনে নেয় টাকা দিয়ে!'--
এ উপলব্ধি হবার পর আবিদুর রহমান এস্তেমাল করলো,  সে আর প্রেম ভালোবাসার মত কিছুর সাথে জড়াবে না! এমনকি সংসারীও হবে না। এটার উপর তার কতটা স্থির থাকা সম্ভব হবে, তা নিয়ে শঙ্কা আছে। কারণে অকারণে ফেসবুকে ঢুঁ মারা আর নারীদের চকচকে পিকচারে লাভ ইমো এখনো দেয়টা সে ছাড়তে পারেনি।   

দুই
 আবিদুর রহিমের যে অনুসিদ্ধান্তটা শুরুতেই বলা হয়েছে, সেটি  নারীবাদের সাথে যায় না। এটা  বুঝতে পারলেও আবিদুর রহিম এটা তার বয়ানে স্বীকার করে না। একটু ঘুরিয়ে বলে এটা তাঁর অভিজ্ঞতা।
অভিজ্ঞতা হতেই হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষে ভর্তির প্রথম ডাগর চোখ যে মেয়েটি তার রাতের ঘুম হারাম করেছিল, তার ছবি কল্পনা করে  ফেসবুকের  ফাইন্ড ফ্রেন্ড অপশনের বোতামে মাউচ রেখে অস্থিরভাবে ঘোরাঘুরি করেছিল একটা রাত- সে মেয়েটিকে আবিদুর তার হাতের কাছেও পেয়েছিল। রাখতে পারেনি।

তিন
অভাব কিসের ছিল? আবিদুর ব্যাখ্যা করে পারে না।
তবে অভাব একটা ছিল, সেটি টাকার। ছাত্র মানুষ এত টাকা ছিল না তার। চাইলেই কোন সিদ্ধান্ত নিতে পারে না সে। তার উপর  জেন্ডার বৈষম্য নিয়ে তার একটা গবেষণা কর্ম করার ইচ্ছা। ... সেই টাকা এখন আবিদুরের  হয়েছে! মেয়েটি তার হয়নি। 
সংসার বিবাগী হবার ব্রত নিয়ে আবিদুর প্রেমহীন জীবনের সিদ্ধান্তে অটল থাকার পরেও-  তার সামেন নতুন এক দুনিয়া খুলে যায়। প্রযুক্তি খোলা মাঠ তার সামনে তুলে ধরে আরেক জগত!  সে দুনিয়ায় নারীর পেছনে সময় ব্যয় করার দরকার নেই। তার এজন্টরাই উল্টোর তার সাথে যোগাযোগ করেন।

চার
-কেমন পছন্দ স্যারের! এজেন্ট জানতে চায় ম্যাসেঞ্জারে!
 -বিস্ময়ে হতবাক আবিদুর রহিম! এটাও বাস্তব। এমনও ঘটে!
 এজেন্ট  থেকে এজেন্ট নতুন নতুন কালেকশন।
আবিদুর হাসে... আহা জীবন। যে মেয়েদের  মনের গহীনে ডুব দিতে বহু পুরুষ দিনের পর দিন স্বপ্ন বুনছে। সেই নারীই ধরা দিচ্ছে এজেন্ট মারফ তার কাছে।

পাঁচ.
-টাকা! অর্থই সকল অনর্থের মূল! কে যেন বলেছিলেন। স্কুলে ভাবসম্প্রসারণে পড়েছিল আবিদুর। রেস সময় যা লিখেছিল, সেগুলো ভুল টাকাই সব কিছু চাকা ঘুরিয়ে দেয়!
আবিদুরের মনে পড়ে ক্যাম্পাসে ভর্তি পরীক্ষা দিতে আসার দিন, কলাভবনের সামের একটা ব্যানার। যেখানে একটা কথা লেখা- 'প্রেম একটি পুঁজবাদী চক্রান্ত!' ঘটনা সঠিক - তা এতদিনে  প্রমাণিত।

ছয়
তবুও নিজের মনে শঙ্কা- প্রেমহীন জীবন; নাকি টাকায় কেনা শরীর!  ভাবে আবিদুর.. ভাবে শরীর মানে ভোঁতা একটা বিষয়। তবুও শরীর ঘিরেই অর্থনীতির চাকা ঘোরে! তাহলে জ্ঞান!
রুশোর জীবনীতে চোখে রাখে- রাজনীতির দর্শনদাতা রুশো তার জীবনীকে বলছেন ঈশ্বরের সামনে তুলে ধরার মত একটি নিপাট-নির্মোহ সত্য জবানবন্দী।  আবিদুরও  মনে করে তেমনই-  নিপাট নির্মোহ! তবে ... সময়!!