সম্বাদিকের বাড়িতে যৌথ বাহিনী!


দলীয় নিক্তিতে সম্বাদিকতাকে মাপাটাকে আমি কখনই সমীচীন মনে করিনি, এখনো করি না। সামনেও করবো না। এ আস্থা ও বিশ্বাস আমার ওপর আছে।

আম্লীগ সরকারন গঠনের পর সম্বাদিকদের গ্রেপ্তার করার বিষয়ঠা কঠিন করে একটা আইন করা হয়েছে বকলে প্রচার আছে। এতে খুশিতে পা চাটা নেতারা লাফাইয়া উঠলো- দেখছো আম্লীগের কি দয়া! 

 এখন ওরা কই

মাহমুদুর রহমান না হয় অসাংবাদিক সম্পাদক। কিন্তু আবু সালেহ আকন!   ক্যাম্পাস লাইফ থেকে সাংবাদিকতা করছেন। তার ওপর ক্রাইম রিপোর্টার। পড়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের  জার্নালিজমে।  ক্রাইম রিপোর্টারদের সংগঠন ক্র্যাবের  সাধারণ সম্পাদক। নয়া দিগন্তের স্পেশাল করেসপনডেন্ট।

বরিশালে তার গ্রামের বাড়িতে যৌথবাহিনী সন্ত্রাসমী খুঁজতে গেছে।- কী নির্মম  প্রতিশোধ পরায়ণ যৌথ বাহিনী। বিরোধি মতের পত্রিকায় কাজ করে বলে তাকেও দলীয় বিবেচনায় এনেছে  যৌথ বাহিনী। এ রকম বিবেচনা কেবল কাপুরোষিতই নয়, আত্মঘাতিও বটে।

আমি ভাবছি-  কাল যে আমার বাড়িতে হানা দেবে না- যৌথ বাহিনী!  তার নিশ্চয়তা কই। নিজের চেয়ে পডিরবারের জণ্য বেশি অনিশ্চয়তা বোধ করছি। সম্বাদিকরা যেখানে হয়রানির শিকার সেখানে আমার মত কেরানী পাবলিকের কী অবস্থা! 

যারা  চোখ বন্ধ করলে প্রলয় বন্ধ বলে ধরে নিয়ে এখন যৌথ বাহিনীর  অভিযানের পক্ষে প্রত্যক্ষ পরোক্ষভাবে দাঁড়াবেন- তারা  যে নিরাপদ সেটাও মনে হয় না। কারণ  প্রলয়  কখনো ভালো মন্দের বিচার করে না। এ এক অশুভ অসুর!

আমরা শুনে আসছি যৌথ বাহিনী নিষ্পাপ- নিষ্কলঙ্ক। কিন্তু নদীর জলে মানুষের ফুলে ওঠা লাশ, কচুরি ফেনার নিচে বনি আদমের লুকায়িত শরীর, আর সাংবাদিকের বাসায় হানার পর তাদের পক্ষে আর ওকালতি করা যায় না।

অবশ্য ক্ষমতার লোভে- অনেকেই তা করবেন। করুণ না। তাদের জন্য পেটে পড়লে পিঠে সয়। কিন্তু সম্বাদিকগো তো  সে ধান্ধা নাই।  তাই সম্বাদিক ও তাদের পরিবারের সুরক্ষায় সরকার কি করে সেটি দেখার অপেক্ষায় আছি!

লাভ ইউ সেন্টমার্টিন্স, লাভ ইউ অল

সাগরের গর্জন, আঁধার ভেদ করে ফসফরাসের ঝলকনি, জোনাকি জ্বলে ওঠা মধ্যরাত-প্রচণ্ড রকমের উপভোগ্য আমার কাছে সেন্টমার্টিন্স আইসল্যান্ড।

সেই ২০০০ সাল থেকে এখনো। বয়স হয়েছে, আগের মত ট্রলারে ছুট দেই না ঠিকই, তবুও যাই। বেড়াতে কিম্বা বাণিজিক্য ভ্রমণে। বছওের ৬ থেকে ৭ বার। তবুও মন ভরে না।

এবারের আয়োজনটা ভিন্ন। আমার দুই পুত্র নাজিব ও নাকিবকে নিয়ে সেন্টমার্টিন্স যাচ্ছি। সব ঠিকঠাক থাকলে আজ শুক্কুরবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টায় গাড়ি ছাড়বে।

এটা একটা ভিন্ন রকমের অনুভূতি- নাজিব এর আগে কক্সবাজার গেছে। সেন্টমার্টিনে তার প্রথম যাত্রা। দেশে এই একটি দ্বীপ আমার কাছে অপার বিস্ময় এবং ভালোলাগার।

যে সময় ঢাকা ইউনিভার্সিটি ট্যুরস্ট সোসাইটিতে ছিলাম, ট্যুরের দায়িত্বে থাকতাম, সে সময় দল বেঁধে যেতাম,  ঘোরঘুরিতে আমি একলা দুই চারজন নিয়া আনন্দ পাই কম, খুবই কম।  আমার  বন্ধু ও শত্রু বাবু আমার  এক সময়কার ভ্রমণসঙ্গী। সেন্টমার্টিন্সে আমি আর ও একসাথে গেছিলাম।

 তার পর বার বার অনেক বার। এ দ্বীপে যেতে আমার কখনো খারাপ লাগে না। মনে হলেই ছুটে যাই, সে রকম এক আনন্দময় এক দ্বীপ-সেন্টমার্টিন্স। পুরনো নাম নারকেল জিঞ্জিরা, দারুচিনি দ্বীপও বলা হয়্। আগে আরব্য  ব্যবসায়ীরা এ দ্বীপে বিশ্রাম করতেন, দক্ষিণ পাড়ায় অনেক নারকেল গাছ।  এক সময় কেবল নারকেলে জলপান নয়, মুখ ধোয়ার কাজেও ব্যবহার করতাম। এখন সেটা স্বপ্ন।
সেন্টমার্টিন্সের ডাবের চাহিদা মেটাতে মায়ানমার হাল ধরেছে!

সেন্টমার্টিন্সের নেক ঘটনার মধ্যে নেক স্মৃতি আছে- প্রথম আমরা যখন দল বেঁধে গেলাম, সেবার জোছনা রাত। সেকেন্ড ইয়ারে পড়ি। হুমায়ূন আহমেদের বই পড়তাম- জোছনা মানে আমার কাছে অন্য রকম একটা ব্যাপার।

এক রাতে আমরা পুরো দ্বীপ চক্কর মারলাম। সমুদ্রের মাঝখানে একটা রূপময়  দ্বীপ ভেসে থাকলো, সন্ধ্যার পরে ছেড়াদ্বীপ থেকে ফিরতে ফিরতে  আমাদের এ জোছনা দর্শন।  মানুষ আমরা গোটা চল্লিশেক। সে সময় ছেড়দ্বীপ যাবার  বাহন ছিল পা।

 ফেরার পথে  পানি বেড়ে গেছে, মানে জোয়ার। আমরা সে জোয়ারে হাবুডুবু খেয়ে ফিরছিলাম! তবুও আনন্দ, সীমাহীন সেই আনন্দ ছাড়াও সেন্টমার্টিনসের  দক্ষিণ পাড়ার যাবার পথে অনেকগুলো প্রবাল পড়ে, সেখানে এক সন্ধ্যায়  পা ডুবিয়ে সূর্যাস্ত দেখেছি, এমন মুগ্ধ আমাকে আর কিছুই করতে পারেনি, আমার ছেলেদের হাসি ছাড়া।

সেন্টমার্টিন্সের প্রেমে আমি মজনু। থাকতেও চা্ই। আজকে যখন   গোত্তা মেরে জলের  ভেতর আঁচড়ে পড়ে জাহাজের  নোঙর, মনে হয় আমার বুকটা ফেটে যাচ্ছে। লঞ্চের খট খট শব্দ, সিগালের ওড়াওড়ি দেখতে দেখতে  নৌকার নাচন আর মাঝির ভিজ্ঞতা শুনতে শুনতে যে সেন্টমার্টিনস যাত্রা করতাম, সেই আমেজ পাই না।

 তবুও

আজ যখন যাবো  তখন অনেক স্মৃতি ভিড় করছে।  আমরা যখন ট্যুর আয়োজন করতাম, ট্যুরের আগে সকালে আমি আর বাবু কেনাকটা করতে যেতাম বঙ্গবাজারে। ফিরতাম হলে, ফ্রেশ হয়ে ট্যুরিস্ট সোসাইটি অফিসে বসতাম। সবাই আসতো, গল্পে আড্ডায় আমরা ছুটতাম।

আজকের ভ্রমনটা একেবারই ভিন্ন। টিকিট করা গাড়ি একজন বয়সী-তরুণ উঠবে পরিবার পরিজন নিয়ে। সাথে ছোট ভাই, সেও বউ নিয়ে এবং বন্ধু সেও বউ-কন্যা নিয়ে। সময়ের স্রোতে কি দারুণ এক বদল।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চায়ের কাপে চুমুক দিতে দিতে, মধুর ক্যান্টিনের বাটার টোস্ট খেয়ে, মিস্টির রস চুষে নিয়ে আনোয়ারের সিগারেটে ফুঁ দেয়া ছেলেপুলো সব বড় হয়ে গেছে!

তবে এ অবকাশ যাপান আমরা কাছে একটা অনন্য ও অসাধারণ ঘটনা। আমার দুটো ছেলেই সাথে যাচ্ছে। সাথে তাদের মা। পিতা হিসাবে  নিজেকে স্বার্থক মনে হচ্ছে। ওরা যখন বড় হবে, বার বার যাবে, নিজে যাবে, বান্ধবী-বউ নিয়ে যাবে।  বুড়ো বাবা মাকেও নিয়ে যেতে পারে, যদি ততদিন তারা বেঁচে থাকে।

নাজিবের মুখের দিকে তাকালে আমার মনে হয়, পৃথিবীতে এর চেয়ে বেশি কিছু আমি চাইনি। বয়স ওর ৫ । বুদ্ধিভিত্তিক কিছু জটিলতা আছে। তবুও  এ ছেলেটার কারণে আমি আজ  অন্যরকম এক মানুষ। নাকিবকেও রাখতে হবে সে দলে, গুট গুট করে হাঁটে, টুক টুক করে কথা বলে। এত মায়াবী দুইখান পুত্র আমার।  সাথে যাচ্ছে বন্ধু শামীম ও তার কন্যা এবং স্ত্রী আসমা এবং ছোটভাই শিপু ও তার স্ত্রী রীতি।  আমাদের প্রিয় ক্যাম্পাসে আমরা একসাথে বেড়ে উঠেছি।

তবুও আমি এখানে কারো শূণ্যতা খুব  অনুভব করি, সামনেও করবো- মীর মামুন, বাবু, মাহমুদ, সাদিয়া , লিপি, মিটি, নিম্মি, খালিদ, দিলরুবা, গ্লোরিয়া- আরো অনেকে। মিস ইউ মাই ডিয়ার ফ্রেন্ডস, এনিমিজ, সিস্টারস অ্যান্ড ব্রাদারস।

 লাভ ইউ সেন্টমার্টিন্স, লাভ ইউ অল। 

তিস্তা, ক্যাটরিনা... মাল এবং আসল মাল!


মমতার বুক শুকায়া আছে, তাই তিনি তিস্তার জল চুইষা নিতাছেন। তিস্তা তিস্তা কইরা কত জনরে দেখলাম হেইলা দুইলা কলকাতা, দিল্লি ঢাক্কা করলো, কিন্তু জল আইলো না।

আমাগো দেশে সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা রক্ষার জন্য  হারাম ইলেকশন, বিম্পির পেছন দিকটা মারা, হঠাৎ কইরা মানুষ হাওয়া অন, বনি আদমের ফুলে ওঠা লাশ নিয়ে কুত্তার টানাটানি,  মৃত্যু পরওয়ানা - সব বিষয়ে ইনডিয়ার মুখের কতা মাইনা লইছি, তবুও তিস্তার জল আর আইলো না।

সানি লিওনের টপলেস বডির কী যে ইন্দ্রজাল, আহারে, যদি একবার পাইতাম..., বলতে বলতে বাঙালি যে হারে হাত কচলায়, আরো কিছু কচলায়... সেটা কওন যাইতাছে না। বাথরুমে যায়, খবরের কাগজে তার বড় ছবি, অনলাইনে তারে নিয়া মউজ মাস্তি... আহারে চেতনা!

তিস্তারে মাইরা ফালাইছে ইনডিয়া। সেটার দিকে নজর নাই, থাকব ক্যামনে, নজর তো সবার  স্টারপ্লাস, স্টার জলসার দিকে। ঐশ্বরিয়ার মাইয়ার ছব্বি দেখবার অপেক্ষা।

আলাপ আলোচনাও সেই রকম দেখছন, বাসে-ক্যাম্পাসে তরুণদের আলোচনা -'ক্যটারিনা রে ... যা  একটা মাল মাম্মা। ' এই মাল দেখতে দেখতে  আসল মালই গায়েব হয়ে যাচ্ছে, সেই দিকে আমাদের তরুণদের কোনো  চোখ নাই! আমগোরে যে  এমনই এক আফিম খাওইয়েছে, ইনডিয়া।


পাকিস্তান, হিন্দুস্তান অইবার পর পাকিরা মারছে, তাগো বিরুদ্ধে লইড়া্ দেশ স্বাধীন অইছে। ভাগ্য ভালো বঙ্গবন্ধুর মত এক অসাধারণ নেতার স্পর্শ পাইছলো বাংলাদেশ। কিন্তু  তাকে হত্যার পর ভারতের আধিপত্য বাড়ছে, পাকিস্তানও তলে তলে কাম করে। ওপেনে গোপনে।

দেশে তো ইনডিয়ান দালালে ভইরা গেছে। পানি না দিলে কি অইবো, তাগো পানি তো বিদেশ থেকে আসে, পেরি পেরি ...। আর আমগো দেশের  গরিব মাইনষে  চাপ কলে পানি পায় না।

নদীর অস্তিত্ব রাখার জন্য যেখানে ৪ হাজার কিউসেক পাওন দরকার। সেখানে আছে মাত্র ৪ থেকে ৫ শ কিউসেক। এর রকম পানি নালা নর্দমায়ও তাকে। ঢাকার শহরের নর্দমায় এর চেয়ে বেশি পানির প্রবাহ।

 হে মোর দুর্ভাগা স্বদেশ।

অভিযান:-ছেড়াদ্বীপ-সেন্টমার্টিন


২১ মার্চ, শুক্কুরবার সন্ধ্যা ৭ টা ২০ মিনিটে আরামবাগ বাস স্ট্যান্ডে রিপোর্টিং। সাড়ে ৭ টায় টেকনাফের উদ্দেশে যাত্রা। রাত দেড়টায়  কুমিল্লায় হোটেলে বিরতি।  ফ্রেশ হয়ে চা ও হালকা খাবার গ্রহণ। ভোর ৬ টার দিকে কক্সবাজারের  ইনানী হাইওয়ে ইনে ব্রেক। ফ্রেশ হয়ে, ফের যাত্রা। সকাল ৭ টা ৩০ মিনিট নাগাদ টেকনাফ দমদমিয়া ঘাট!

বাস থেকে নেমে ফ্রেশ হয়ে, সকালেরর নাশতা। খোলা রেস্তোরায়- ডিম ভাজি, পরটা, সবজি, কনডেন্সড মিল্কের চা!

ন’টার দিকে কাঠের লম্বা পথ বেয়ে জাহাজে ওঠা।  সাড়ে ন’টায় জাহাজের ওপেন ডেকে আসন খুঁজে বসে পড়া। রোদ চশমা খুলে টেকনাফ পাহাড়, স্থলবন্দর, মায়ানমার, কেওড়াবন, শাহপরীর দ্বীপ দেখতে দেখতে  নীল সমুদ্রের উত্তাল ঢেউয়ের মধ্য দিয়ে সেন্টমার্টিন পৌছানো। সাড়ে ১২ টায় জাহাজ থেকে  সিমেন্টের  সিঁড়ি বেড়ে সেন্টমার্টিনের বালি স্পর্শ।

রঙ্গিন কাপড়ে সাজানো ভ্যান গাড়ির কোনো একটাতে চেপে বসা।  গন্তব্য সেন্টমার্টিন রিসোর্ট।  পৌঁছে আধ ঘণ্টা অপেক্ষা। রুম তখন খালি হতে থাকবে। দুপুর দেড় টায় রিসোর্ট রুমে ফ্রেশ হয়ে, খাবার  রিসোর্ট রেস্তারায়, বুফে! মাছি ভন ভন আর বালি ওড়াউড়ির ভেতর সুমুদ্রের মৎস দিয়ে ভক্ষণ পর্ব সমাপ্ত করার পর ১ ঘণ্টা রেস্ট।


বিকাল ৪ টা। অবকাশের বিচে নেমে আসা। ভেজার দরকার নাই। আপাতত কেবল দেখা। পাশেই হুমায়ূন আহমেদের এক সময়কার বিলাস-ভবন। সেখানে ঝটপট ছব্বি তোলা শেষ করে। সামনে হাঁটা।  ছেড়া দ্বীপের দিকে হাঁটতে হাঁটতে  কালো পাথরে স্তুপে বসে নীলজলে পা ডুবিয়ে সূর্যাস্ত দর্শন। তার ওপর আস্তে করে উঠতে থাকা ঠাণ্ডা চাঁদের আলোয় হেঁটে ফেরা। 


রাত নেমে এলে দ্বিতল রেস্তারায় বসে আড্ডা। হালকা খানাপিনা।  অতপর হোটেলে প্রত্যার্বতন। নিশ্চিত ঘুম পাবে। রাতের খাবার ১০ টায়। বুফে। শেষ করে  অবকাশের পেছনে টিলার ওপর  চেয়ার শুইয়া পড়া।  যতক্ষন ইচ্ছা থাকার পর রুমে ফেরা। ১১ টার পর ফিরলে দেখা যাবে জোনাক বাত্তির মত বাথরুমের সামনে লাইট জ্বলছে। বাকি সব বন্ধ!

দে ঘুম।

ভোরে রিসোর্টের বারান্দা থেকেই দেখা যাবে সূর্যোদয়। নীল সমুদ্রের বুক ভেঙ্গে উঠে আসছে অসাধারণ এক সূর্য! অসাধারণ।  রুমে ফিরে সকালের নাশতা। তবে পরাটা খাবার জন্য আমাদের হাছন রেস্তোরায় বিশিষ্ট পাঁচক ছিদ্দিকের দর্শন  লাগবে।  ডিম খিচুড়ি হলে রিসোর্টেই।

সকাল ৯ টা।  এখন সময় জলে ভেজার।  ছুটো তবে  প্রাসাদের বিচে।  পাক্কা তিন ঘণ্টা।  জল ছেড়ে উঠে সেনট্টমার্টিনের  ডাবের জলপান। এটি অবশ্য পুরো তিনদিনই চলবে! সাড়ে ১২ টায় প্রসাদ বিচ থেকে ফেরা। রিসোর্টে ফিরতে ইচ্ছে না করলেও ফিরতে হবে।  দুপুর ১ টায় আবার মাছি ভন ভন রেস্তোরায় সুস্বাদু খাবার!

দুপুর দেড়টা। ছুটো এবার ঘাটে।  স্টার্ট নেবে  ট্রলার কিম্বা  স্পিড বোট। গন্তব্য ছেঁড়া দ্বীপ। চোখ জুড়িয়ে যাবে, মন খারাপ হবে, এত সুন্দর একটা জায়গা কেন বার বার দেখতে আসি না। আরো মন খারাপ হবে, মাত্র দু’ঘণ্টা থাকবো বলে।  সূর্যটা ডুবে যাবে যাবে করবে, আমরা ফিরবো ট্রলার কিম্বা স্পিড বোটে।

সন্ধ্যা ৭ টা, রিসোর্টে ফিরে ফ্রেশ হয়ে ফের অবকাশ বিচে। সেন্টমার্টিনের ডাবের স্বাদ গ্রহণ, রাতে মুরগি পোড়ানোর ! এন্তেজাম। তবে ফার্মের মুরগি!  তার সাথে হালকা খাবার। না ঘুমিয়ে বিচে। ভোরের আগে  হোটেলে ফেরা। ঘুৃম হবে ৬ ঘণ্টা।

সকালে  অবকাশ বিচে- বাবুদের সাথে জলে ভেজা। দুপুর ১২ টা পর্যন্ত বিচে। ১ টার মধ্যে রেড়ি। দেড়াটায় খাবার। আড়াইটার মধ্যে শিপে সিট বুঝে নেয়া। তিনটায় গুড বাই সেন্টমার্টিন, বাজছে ভেঁপু, মনে হবে আর একটা দিন থাকলে কী হতো। ততক্ষণে মাঝ সমুদ্রে জাহাজ। ফিরবো- টেকনাফ। নেমে চা, পুরি,কিছু একটা পেটে দিয়ে বাসে আসন গেঁড়ে বসা।

চলছে গাড়ি-যাত্রাবাড়ি। পর দিন সকাল সহিহ সালামতে ঢাকায় পৌঁছানোর ইচ্ছে। আবার সেই ব্যস্ততা, কর্মকান্ত সময়।  


পরামর্শ:

ট্যুরে যাবার সময় সঙ্গে নিবেন-
ঢিলেঢালা পোশাক, নিয়মিত খান এ রকম ওষুধ, শীতের কাপড়, টুথপেস্ট-ব্রাশ, চিরুনি, কেডস, সেন্ডেল, জিনস প্যান্ট, শর্ট প্যান্ট, টি শার্ট, ক্যামেরা, ব্যাটারি ও টর্চ লাইট ইত্যাদি।
নিরাপত্তার বিষয়টি খেয়াল রাখবেন।

দ্রষ্টব্য: এইটা facebook.com/touristplusbd বানানো একটা ফরমেট।

নির্ভার হতে চাইছি-কত শত বার

চোখের জলে তোমার হাতটা ভিজিয়ে 
নির্ভার হতে চাইছি-কত শত বার

কিছু ভুলের জন্য তোমার কাছে ক্ষমা চাইতে ইচ্ছে করে
পারিনি

তোমার ওদার্যে মুগ্ধ আমি, কৃতজ্ঞ 

আমার সাথে একবেলা খাবে বলে আগে থেকে বসে থাকো 
টেবিলে এটা ওটা নাড়াচাড়া করো
ডাক দাও, ‌'বেলা অনেক হলো, খেতে বোস।'

এভাবে কত দিন, অনেক দিন
তবুও বলা হয় না -বাবা তোমায়, ভালোবাসি।।

বঙ্গবন্ধু, সাংস্কৃতিক পরাধীনতা, আম জনতা এবং একটি কৌতুক!


একজন মানুষ পুরো উপমহাদেশের মানচিত্র বদলের তিনটি ধাপের আন্দোলন সৈনিক, তিনি আমাদের বঙ্গবন্ধু। তাকে নিয়ে রাজনীতি হয়, তার প্রশংসা করে নিজের অপরাধ ঢাকেন কেউ। কেউ তাকে ফেরি করে চান্দাবাজি টেন্ডারবাজি করেন। সে সব কথা বাদ দিয়ে আমি ভিন্ন একটা প্রসঙ্গ তুলতে চাই। সেটি প্রাসঙ্গিকও বটে। 

গত বিষুদবারে আমাদের বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম আলো আলো দুর্দান্ত এক কনসার্ট হলো। সেই কনসার্টে আমাদের শিল্পীরা ছিল অচ্যুত। এ নিয়ে এবি মঞ্চেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তার ফেসবুকে পেজে দেখলাম পরের জন্মে তার বিদেশী হয়ে জন্মানোর ইচ্ছের কথাও জানিয়েছেন।

ডিজিটাল দুনিয়াতে সে দিনের কনসার্ট নিয়ে ব্যাপক আলাপ চলছে। এ নিয়ে নানা রকমের গেম হচ্ছে। এর মধ্যে যখন লিখছি, তখন সময়ের চাকা আমাকের ১৭ মার্চে নিয়ে গেলো। শুভ জন্মদিন বঙ্গবন্ধু। আল্লাহ আপনাকে পরকালীন জীবনে শান্তিতে রাখুন।

ডিজিটাল মিডিয়াতে দেখলাম, আমাদের নাই, তাই বিদেশ থেকে হায়ার করলে কোনো দোষ নাই টাইপের কথা বার্তা। এ নিয়ে অনেক যুক্তি। তর্ক।

সাত মার্চে বঙ্গবন্ধু তার ভাষণে বলেছিলেন, তোমাদের যার যা আছে তা নিয়ে প্রস্তুত থাকো। রক্ত যখন দিয়েছি, রক্ত আরো দেবো। তবুও বাংলার মানুষকে  মুক্ত করে ছাড়বো... ইনশাল্লাহ।

এ রকম অনুপ্রেরণা দেয়া দ্বিতীয় কথাটি দ্বিতীয় কোনো রাজনীতিক বলতে পারেননি। এখানে তিনি অনন্য-সাধারণ। তার এ কথার মর্ম আমরা বুঝিনি। অথবা বুঝেও এড়িয়ে যাচ্ছি।

সংস্কৃতির আগ্রাসন আমাদের ওপর ঝেঁকে বসে নাই, আমাদের রক্তের ভেতর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ নির্মম সত্যটা উপলব্ধি করার বদলে ভারতীয় সংস্কৃতি নিয়ে কেউ সমালোচনা করলে তারে আমরা সন্দেহ করি।

স্বাধীনতার ৪৩ বছর পরের এ সময়ে আমাদের অনেক কিছু করার ছিল, আমরা করিনি। সে জ্ঞান কাউকে দিতে হবে না। এটা সবাই জানেন।

আমি কেবল বঙ্গবন্ধুর কথা ফিরে আসছি- বঙ্গবন্ধু কিন্তু একবারো বলেননি, পাকিস্তানিরা ট্যাঙ্ক, গোলাবারুদ নিয়া আসবো, জাহাজে করে অস্ত্র নিয়া আসবো, তোমরা সেই সব ঠেকানোর জন্য ততোধিক শক্তিশালী অস্ত্র সংগ্রহ করো।(গোপনেও বলেছেন বলে আমার বিশ্বাস হয় না।) তিনি আমাদের ভেতরের শক্তিতে জাগিয়ে দিয়েছেন, আমরা লড়েছি, দেশ স্বাধীন হয়েছে।

আসলে আমরা আমাদের দেশকে ভালোবাসি। আমাদের রক্তে বইছে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত একটি স্বাধীন দেশের স্বপ্ন নিয়ে জীবন বাজি রেখে যুদ্ধ যাওয়া মানুষের রক্ত। আমরা কোনোভাবেই নিজেদের সাংস্কৃতিক পরাধীনতা মেনে নিতে পারি না। সেটা যে কোনো ফরমেটেই হতে পারে। তাই প্রতিরোধের সময় এখনই।

শেষে একটা কৌতুক শুনাই-

এক ভদ্রলোক বুড়ো বয়সে অল্প বয়সি এক মাইয়া বিয়া করছে। কিন্তু কন্যার যৌবনজ্বালা মিটাইতে পারে না। কন্যার খালি গরম লাগে।

ভদ্রলোক একটা হাত পাখা নিয়ে আসলেন। কন্যার গরম কমে না।

ভদ্রলোক পাখাঅলা লোককে বললেন, কী পাখা দাও তুমার চাচীর গরম কমে না। এবার পাখাঅলার বুদ্ধিতে একটা জুয়ান ছোকরাকে ভাড়া করে আনা হলো, ছোকরা বাতাস করে ভদ্রলোক তার বউয়ের যৌবনজ্বালা মিটাইবার চেষ্টা করেন। ব্যর্থ হয়ে বাতাস করা জুয়ানপুলারে কইলো তুই চেষ্টা কর.... জুয়ান পুলা শুরু করলো....কন্যার রাগমোচন হচ্ছে। সব ঠাণ্ডা হয়ে আসছে, আর বুড়ো ভদ্রলোক বলছে দেখলে ছোকরা ক্যামনে বাতাস করতে অয়! আমাদের কি সেই অবস্থা!

আমরা কি ওই বুড়ো ভদ্রলোকের মত করবো, নাকি আমরা আমাদের মানসিকতা ঠিক করবো!