অভিযান:-ছেড়াদ্বীপ-সেন্টমার্টিন


২১ মার্চ, শুক্কুরবার সন্ধ্যা ৭ টা ২০ মিনিটে আরামবাগ বাস স্ট্যান্ডে রিপোর্টিং। সাড়ে ৭ টায় টেকনাফের উদ্দেশে যাত্রা। রাত দেড়টায়  কুমিল্লায় হোটেলে বিরতি।  ফ্রেশ হয়ে চা ও হালকা খাবার গ্রহণ। ভোর ৬ টার দিকে কক্সবাজারের  ইনানী হাইওয়ে ইনে ব্রেক। ফ্রেশ হয়ে, ফের যাত্রা। সকাল ৭ টা ৩০ মিনিট নাগাদ টেকনাফ দমদমিয়া ঘাট!

বাস থেকে নেমে ফ্রেশ হয়ে, সকালেরর নাশতা। খোলা রেস্তোরায়- ডিম ভাজি, পরটা, সবজি, কনডেন্সড মিল্কের চা!

ন’টার দিকে কাঠের লম্বা পথ বেয়ে জাহাজে ওঠা।  সাড়ে ন’টায় জাহাজের ওপেন ডেকে আসন খুঁজে বসে পড়া। রোদ চশমা খুলে টেকনাফ পাহাড়, স্থলবন্দর, মায়ানমার, কেওড়াবন, শাহপরীর দ্বীপ দেখতে দেখতে  নীল সমুদ্রের উত্তাল ঢেউয়ের মধ্য দিয়ে সেন্টমার্টিন পৌছানো। সাড়ে ১২ টায় জাহাজ থেকে  সিমেন্টের  সিঁড়ি বেড়ে সেন্টমার্টিনের বালি স্পর্শ।

রঙ্গিন কাপড়ে সাজানো ভ্যান গাড়ির কোনো একটাতে চেপে বসা।  গন্তব্য সেন্টমার্টিন রিসোর্ট।  পৌঁছে আধ ঘণ্টা অপেক্ষা। রুম তখন খালি হতে থাকবে। দুপুর দেড় টায় রিসোর্ট রুমে ফ্রেশ হয়ে, খাবার  রিসোর্ট রেস্তারায়, বুফে! মাছি ভন ভন আর বালি ওড়াউড়ির ভেতর সুমুদ্রের মৎস দিয়ে ভক্ষণ পর্ব সমাপ্ত করার পর ১ ঘণ্টা রেস্ট।


বিকাল ৪ টা। অবকাশের বিচে নেমে আসা। ভেজার দরকার নাই। আপাতত কেবল দেখা। পাশেই হুমায়ূন আহমেদের এক সময়কার বিলাস-ভবন। সেখানে ঝটপট ছব্বি তোলা শেষ করে। সামনে হাঁটা।  ছেড়া দ্বীপের দিকে হাঁটতে হাঁটতে  কালো পাথরে স্তুপে বসে নীলজলে পা ডুবিয়ে সূর্যাস্ত দর্শন। তার ওপর আস্তে করে উঠতে থাকা ঠাণ্ডা চাঁদের আলোয় হেঁটে ফেরা। 


রাত নেমে এলে দ্বিতল রেস্তারায় বসে আড্ডা। হালকা খানাপিনা।  অতপর হোটেলে প্রত্যার্বতন। নিশ্চিত ঘুম পাবে। রাতের খাবার ১০ টায়। বুফে। শেষ করে  অবকাশের পেছনে টিলার ওপর  চেয়ার শুইয়া পড়া।  যতক্ষন ইচ্ছা থাকার পর রুমে ফেরা। ১১ টার পর ফিরলে দেখা যাবে জোনাক বাত্তির মত বাথরুমের সামনে লাইট জ্বলছে। বাকি সব বন্ধ!

দে ঘুম।

ভোরে রিসোর্টের বারান্দা থেকেই দেখা যাবে সূর্যোদয়। নীল সমুদ্রের বুক ভেঙ্গে উঠে আসছে অসাধারণ এক সূর্য! অসাধারণ।  রুমে ফিরে সকালের নাশতা। তবে পরাটা খাবার জন্য আমাদের হাছন রেস্তোরায় বিশিষ্ট পাঁচক ছিদ্দিকের দর্শন  লাগবে।  ডিম খিচুড়ি হলে রিসোর্টেই।

সকাল ৯ টা।  এখন সময় জলে ভেজার।  ছুটো তবে  প্রাসাদের বিচে।  পাক্কা তিন ঘণ্টা।  জল ছেড়ে উঠে সেনট্টমার্টিনের  ডাবের জলপান। এটি অবশ্য পুরো তিনদিনই চলবে! সাড়ে ১২ টায় প্রসাদ বিচ থেকে ফেরা। রিসোর্টে ফিরতে ইচ্ছে না করলেও ফিরতে হবে।  দুপুর ১ টায় আবার মাছি ভন ভন রেস্তোরায় সুস্বাদু খাবার!

দুপুর দেড়টা। ছুটো এবার ঘাটে।  স্টার্ট নেবে  ট্রলার কিম্বা  স্পিড বোট। গন্তব্য ছেঁড়া দ্বীপ। চোখ জুড়িয়ে যাবে, মন খারাপ হবে, এত সুন্দর একটা জায়গা কেন বার বার দেখতে আসি না। আরো মন খারাপ হবে, মাত্র দু’ঘণ্টা থাকবো বলে।  সূর্যটা ডুবে যাবে যাবে করবে, আমরা ফিরবো ট্রলার কিম্বা স্পিড বোটে।

সন্ধ্যা ৭ টা, রিসোর্টে ফিরে ফ্রেশ হয়ে ফের অবকাশ বিচে। সেন্টমার্টিনের ডাবের স্বাদ গ্রহণ, রাতে মুরগি পোড়ানোর ! এন্তেজাম। তবে ফার্মের মুরগি!  তার সাথে হালকা খাবার। না ঘুমিয়ে বিচে। ভোরের আগে  হোটেলে ফেরা। ঘুৃম হবে ৬ ঘণ্টা।

সকালে  অবকাশ বিচে- বাবুদের সাথে জলে ভেজা। দুপুর ১২ টা পর্যন্ত বিচে। ১ টার মধ্যে রেড়ি। দেড়াটায় খাবার। আড়াইটার মধ্যে শিপে সিট বুঝে নেয়া। তিনটায় গুড বাই সেন্টমার্টিন, বাজছে ভেঁপু, মনে হবে আর একটা দিন থাকলে কী হতো। ততক্ষণে মাঝ সমুদ্রে জাহাজ। ফিরবো- টেকনাফ। নেমে চা, পুরি,কিছু একটা পেটে দিয়ে বাসে আসন গেঁড়ে বসা।

চলছে গাড়ি-যাত্রাবাড়ি। পর দিন সকাল সহিহ সালামতে ঢাকায় পৌঁছানোর ইচ্ছে। আবার সেই ব্যস্ততা, কর্মকান্ত সময়।  


পরামর্শ:

ট্যুরে যাবার সময় সঙ্গে নিবেন-
ঢিলেঢালা পোশাক, নিয়মিত খান এ রকম ওষুধ, শীতের কাপড়, টুথপেস্ট-ব্রাশ, চিরুনি, কেডস, সেন্ডেল, জিনস প্যান্ট, শর্ট প্যান্ট, টি শার্ট, ক্যামেরা, ব্যাটারি ও টর্চ লাইট ইত্যাদি।
নিরাপত্তার বিষয়টি খেয়াল রাখবেন।

দ্রষ্টব্য: এইটা facebook.com/touristplusbd বানানো একটা ফরমেট।

কোন মন্তব্য নেই: