এখনো আমার কাছে প্রেম বললে সেই একই নারী


আমার কোনো অভিযোগ নেই, দাবি নেই
ছিলও না কোনো কালে।

একবারই প্রেমে পড়েছিলাম- অশীতিপর এক বৃদ্ধার, শ্যামল রঙ।
আমার পথ চেয়ে যে বসে থাকতো
খাবারটা এগিয়ে দেয়ার জন্য উদগ্রীব হতো
আদর-আশ্রয়ে ঢেকে রাখতো আমার পুরোটা সময়।।

কী সম্মোহনী শক্তি তার,  চাহনিতে কী মায়া-প্রেম-ভালোবাসা।

এমন দ্বিতীয় একজন মানুষ খুঁজিনি; আমি কখনোই।
বয়স তখন কত আমার? নয় কী দশ।

এখনো আমার কাছে প্রেম বললে সেই একই নারী
ভালোবাসা মানে আমার ছেলেদের হাসি
কষ্ট বললে আমার ছেলেদের চোখের জল
 অন্যায় বললে বাবা মা থেকে দূরে থাকা

আমার কোনো অভিযোগ নেই, কারো প্রতি
থাকার কথাও নয়।

দায়িত্ব আছে অনেক, তার কিছুটা হয়ত আমি পালন করি
অনেকটা পারি না। মানুষ সব পারে না।
অতিমানব আমি নই; হতেও চাইনি কখনো।

তোমার চোখ, মায়াবী পাখির ছানা আর শাপলা পাতার ওপর ঘাস ফড়িং

তোমার চোখ, মায়াবী পাখির ছানা আর শাপলা পাতার ওপর ঘাস ফড়িং

দখিনা বাতাস উড়িয়ে নিচ্ছে মরা পাতা
দিয়ে যাচ্ছি স্বস্তি

এমনই কোনো এক দুপুর
মেঠোপথে-তুমি আমি মুখোমুখি
চারিদিকে নির্জন


দূরে উড়ে যাচ্ছে ধানশালিক
আধো ভেজা মাঠের কোনো বসে জিরিয়ে নিচ্ছে ব্যাঙ


কী সরল সে সময়টা, কোনো ঝামেলা নেই
শঙ্কাও ছিল না।

এখন-
অস্থির সময়।
আমি হাসতে চাই, প্রাণ খুলে
হল্লা করে নিশুতি রাতে  ঘুম ভাঙিয়ে দিতে চাই
উড়ে যেতে চাই তোমার কাছে।

কী এক অদ্ভূত অসম্ভব চাওয়া

তোমার চোখ, মায়াবী পাখির ছানা আর শাপলা পাতার ওপর ঘাস ফড়িং
আমার দেখা পৃথিবীর সবচেয় বিস্ময়কর আনন্দময় ঘটনা।।

প্রিয় পুত্র; প্রিয় বাবা; প্রিয়তম আমার


প্রিয় পুত্র; প্রিয় বাবা; প্রিয়তম আমার

অনন্তকাল ধরে তোমার-তোমাদের চোখে চেয়ে আনন্দ । 

বৃদ্ধাশ্রমের ভয় নেই আমার। 
জানি নিষ্ঠুর বাস্তবতা তোমাকে আমাকে দূরে রাখবে।

দূষিত নগরে বাতাসে সীসার আস্তরণের মতই-
জানি এ ছোট্ট বিষয়টা দূরে ঠেলতে পারলে 
অসীম আকাশ

প্রভুর সান্নিধ্য-
পিতা পুত্র একসাথে আমরা
অনাবিল জোছনায় ভিজবো
তোমার হাসিতে মোহিত আমার পৃথিবী

ভালোবাসি বাবা, ভালোবাসি পুত্র; ভালবাসি প্রিয়তম আমার।

যাচ্ছি খাগড়াছড়ি :: সোনামুখ মেয়েটার গাল উজ্বল!

খাড়া রাস্তা, ঝুঁকিপূর্ণ বাঁক, সন্ধ্যা নামার আগেই ঘরে। লণ্ঠন জ্বলছে। সোনামুখ মেয়েটার গাল উজ্বল। দিনের ক্লান্তি ভুলে- কাটছে বুনো শাক। রাতের খাবারের আয়োজন। এর ভেতর দিয়ে ছুটবে গাড়ি।

ফেণী নদীর তীর ছুঁয়ে রাম গড় হয়ে গাড়িটা ঢুকে যাবে খাগড়াছড়ি।  অনেক ইতিহাস আর বাংলাদেশের  বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলনের বাঁক ঘিরে আছে এই একটি জেলা। যেখানে জনসংহতির নেতা এমএন লারমার জন্ম। যাকে জুম্মু জণগণের অধিকার আদায়ের মহান নেতা মনে করা হয়। একই জেলায় ইউপিডিএফ নেতা প্রসীত বিকাশ খীশারও জন্ম-বেড়ে ওঠা।
এমএন লারমা এমন একজন লোক যিনি বঙ্গবন্ধু সরকারের সময় সংসদে বলেছিলেন, আমরা বাঙালি নই। আসলে জাতি বৈচিত্রের অনন্য এক  জেলা খাগড়াছড়ি। এখানকার মানুষের মন প্রকৃতির মতই নরম এবং আনন্দময়। আবার দ্রোহ বিদ্রোহের আগুনে পোড়া।

তবে প্রকৃতি অসাধারণ, অচেনা ফুলের শোভা, রমণীয়  ভঙ্গিমায় নেমে আসা ঝরণা ধারা, আর আলুটিলা গুহার গা ছম ছম করা অভিযান, যে কোনো মুহুর্তে উন্মাদনায় অস্থির করার মত।

আলু টিলা এলাকাকে থেকে পাখির চোখে দেখা যায় খাগড়াছড়ি পুরো শহর।  সেখান থেকে শহরটা দেখতে নাকি সিঙ্গাপুরের মত। সেনখানকার লোকের মত এটা।

তবে আমার কাছে বাঁশের কঞ্চির ওপর কেরোসিন ঢেলে আগুন জ্বালিয়ে গুহাটা ঘুরে আসার মধ্যেই আনন্দ।  সে রকম আনন্দ। প্রথমবার যখন ঢুকেছিলাম, ভেবেছিলাম এই শেষ। আর বের হতে পারবো না। পরে দেখি আমি বাইরে। কী দারুণ, আনন্দময়।  

শহরের শাপলা চত্বরে গাড়িটা থামার কথা। তারই আগে চেঙ্গি নদী। পকেটে টাকার পরিমাণ যদি ভালো  থাকে আমরা নেমে পড়বো পর্যটন মোটেলে। অবশ্য সিটট থাকাও লাগবে। সেখানে গেলে রাতের ক্লান্তিকর ভ্রমণের কষ্টটা  মুছে যাবে। চেঙ্গি নদীর মৃদু স্বরে বয়ে যাওয়া জলের ধ্বনি আর  ঘানফুলের সুবাস মোহিত সকালটা এভাবেই কাটতে পারে।


যাচ্ছি খাগড়াছড়ি... কে কে যােবে?

বিস্তারিত পরে।