জল থামাতে জলের আয়োজন!


                              পাঞ্জাবী ট্রডিশনাল ড্রিংকস! সবাই জলের মত খায়!

প্রতিদিনকার খাবার, তবে একটু আয়েশি।  খাবারের সাথে ঘি, ভাজা জিরা, কাঁচা মরিচ আর পেঁয়াজের টুকরো সামনে আনলে জিভে জল না আসে পারে। সে জল থামানোর জন্য আবার জলের আয়োজন।   ছাতু আর লাচ্ছি। হেলদি লাচ্ছি, অল্প মিষ্টিতে ঘুঁটে দেয়া হবে আপনার সামনে। কাঁচামরিচের চায়ের মত কাঁচা মরিচ ডোবানো ছাতু। এ সব পাঞ্জাবী খাবারে আলাপ। 

ভারতের পাঞ্জাব নগরের রমণীদের সুনাম আছে। শেষ বিকালে অস্তমায়ন সূর্যের রঙ নাকি ছুঁয়ে থাকে কিশোরী-তরুণীর মুখ। সে  নগরের খাবারের সুনাম ছড়িয়েছে ইনডিয়ায়। বিশেষত সাউথ ইনডিয়াজুড়েই তো এর সুনাম। বঙ্গেও এর সুনাম আছে। পর্যটক হিসাবে আমরা যারা সিমলায়-মানালী ঢুকি, তাদের একবার  পাঞ্জাব থামতে হয়। ডাল মাখানিতে নান ডুবিয়ে খেতে খেতে অনেকেরই মনে হয়েছে- আহা! অমৃত! 

সে খবার এবার রাজধানি ঢাকায়ও আসলো।  তবে সায়েবি কায়দায়। লা মেরিডিয়ানে  গেছিলাম, সোমবার।  লিফটের ১৬ নম্বর বোতাম টিপলে চোখের সামনে একটা পাঞ্জাবী যুগল-ট্রাকের উপর! সেটা থেকে একটু সামনে এগোলে সাদা কুর্তা আর লাল ট্রাউজার পরা, মাথায় পাগড়ি দেয়া  তরুণ, এগিয়ে ধরে কাঁচা মরিচ চুবানো মাঠা জাতীয় পানীয়ের গ্লাস।



পানীয় পরিবেশন প্রস্তুতি!

হাঁটতে হাঁটতে চোখে পড়ছিলো সাজানো সব পাঞ্জাবী খাবার। তবে এত খাবার পাঞ্জাবে একসাথে দেখিনি। রেস্টুরেন্টে আমার মত কাল্লুর কাছে খাবারের অর্ডার নিতে ২০০২ সালে বিকালে যে তরুণি এসেছিল, চোখ কচলে তাকে দেখেছি আগে! তারপর খাবারের অর্ডার করে একগ্লাস পানি খেলাম! 
সেই খাবার অনেকদিন পর আবার খেলাম পাঁচতারকা হোটেলের রেস্টুরেন্টে! 
খাবারের টেবিলটা সাজানো- একটা বাটিতে চামচ তিন ঘি, তিন পিস পোড়ানো মুরগি, একবাটি ভেড়ার খুরার সুপ! এক বাটি ডাল মাখানি। দু চামচের মত পোড়ানো জিরা গুঁড়া, পেঁয়াজ, লেবু আর কাঁচামরিচ জমা করা একটা বাটি। আনা হলো- তিন পদের রুটি। 

                                        খাবার সাজানো হলো টেবিলে!

জিভের জল সামলানো কঠিন। 
সে কঠিনকে আরো কঠিন করে দিলে ফুডলাউঞ্জে গুর্দে কাপুরি নাল কিমা কলিজা। সে রকম খাবার। গরুর কলিজার সাথে গুর্দার কিমা মিক্সড করে রান্না করা খাবারের সাথে নান- আহ! কত দিনপর গালে পুরলাম। 
                                         নাল কিমা কলিজা, জল আটকাতে পারছি না!
খাবারের ফাঁকে ইনডিয়ান শেফ শমসের সাথে কথা। বললেন, মুরগি, ভেড়ার খুরার সুপ, রুটি আর ঘি মাখিয়ে খেযে নেওয়ায় তাদের রেওয়াজ। 
ভেড়ার খুরার সুপটাকে তার অর্গানিক বলে। কারণ এর সাথে দেয়া সব কিছুই লোকাল। 
একটা রেসিপিও জেনে নেয়া গেলো তার কাছ থেকে--KHARODEY DA RAS (এটার উচ্চারণ কি হবে? খারুদি দা রাস!) সে নাম যাই হোক খাবারটা সিরাম! 

ল্যাম্ব ট্রটার্স নিয়ে সিদ্ধ করে পানির সাথে আদা, রসুন, ধইন্নার গোটা, কুচি করে কাটা পেঁয়াজ দিয়ে রান্না শুরু করে দিলেই হলো। 
এটার নিয়ম নাকি এ রকম---একটি পাতিলে তেল দিয়ে পেঁয়াজ কুচি লাল হওয়া পর্যন্ত আগুনে পোড়াতে হবে। ভেড়ার পা এবং আদা রসুন বাটা দই ঝাঁটা এবং পেঁয়াজ পেস্ট ভেড়ার গোশতের সাথে যোগ করতে হবে। লিগানের সাথে শুকনো মসলা মিশিয়ে রান্না চলাকালেই ভেড়ার গোশত ঢেকে দিতে হবে। রান্না হয়ে গেলে সস মিশিয়ে আদার কুচি দিয়ে পরিবেশন। 
                                      ঢোকার আগেই!!

কোন মন্তব্য নেই: