ফেসবুক এখন যতটা না সামাজিক যোগাযোগ তারচে বেশি সামাজিক অসুখ। এ অসুখ চারদিকে। নিরাপত্তা বলেন, আর ব্যক্তিগত গোপনীয়তা! সবই এখন সঙ্কটে ফেলছে জাকারবার্গের জাদুবই!
বহু আগে থেকেই আমরা সিরয়াল আর সিনামার সমালোচনা করে আসছি- একটা অসম সমাজের আকাঙ্খা বানানোর অভিযোগে। এখন সেটি হাতে হাতে- মানুষের মননে ঢুকিয়ে দিচ্ছে ফেসবুক। বিষয়টি এখন এমনটাই দাঁড়িয়েছে যে, ফেসবুকের জন্যই আমরা অানেক আবেগ উচ্ছ্বাস, শোক প্রকাশ করি। ডিজিটাল মিলাদ মাহফিলও হয়। বিয়ে-শাদিও। কী চমৎকার!
এমন আবেগ- স্পর্শহীন জীবন এখানে নানা বিষয়ে ব্যাঘাত ঘটায়। তার মধ্যে অন্যতম-জীবনাচরণে বৈচিত্র আনতে আনতে, কিম্বা নিজেকে প্রকাশের অতি-উৎসাহে এখন শোবার ঘরের ছবিও ফেসবুকের পাতায় চলে আসে। কিছু বিষয় থাক না গোপনে বলে আমরা যেটি আগে থেকে ইয়াদ করতাম, সেটি এখন আর নেই।
অনেক তথ্য আছে আগে ইন্টারভিউ করে জেনে নিতাম, সেটি এখন ফেসবুকের পাতায় আগেই থেকেই থাকে। তাহলে মানব জীবনের- আড্ডা আনন্দ আর বন্ধুত্বের মাঝখানে ভাগাভাগির সময়গুলো ডিজিটাল যামানায় লুপ্ত হতে থাকে-এটাই এখন চরম বাস্তব অবস্থানে এসে দাঁড়িয়েছে।
আমি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে খারাপ বলছি না, মোটেও। কিন্তু অন্যের চরিত্র হনন, ঈর্ষা তৈরির একটা বড় কারখানাও এ ডিজিটাল দুনিয়া। ফেসবুক জীবনের গোপনীয়তা সুরক্ষার নীতিমালা ও সুযোগ তৈয়ার করেছে, সেটি আমরা এনজয় করি না।
আগে বন্ধুর সঙ্গ পেতে হাহাকার থাকত, এখন লাইন কমেন্টের জন্য হাহাকার। মন খারাপ। ফেসবুকে কে কোন ছবি দিলো, কার ছবি কেমন হলো, কে কার ছবিতে কি ধরণের ইমোজি দিলো তা নিয়ে তো বিশদ আলোচনা-বিস্তর ঝগড়ার কুরুক্ষেত্র -সবখানে।
তাই বলি সুস্থ জীবন চাইলে ফেসবুকে সময় কম করে কাটান। বই পড়েন। বেড়াতে যান। বেড়াতে যাবার সময় ফিচার ফোন নিয়ে যান। চার্জ থাকবে ভালো, ঝগড়াটাও কমবে। সময় আনন্দময় হবে । ধন্যবাদ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন