ক্ষমতার যৌনতা কীভাবে চুষে নেয় নৈতিকতা !

সমাজের দু চিত্র। একটা ইতিবাচক। আরেকটা নেতিবাচক। তেমিন মানুষেরও দুটো রূপ। মুখোশ খুলে আমরা নতুন আরেকজনকে আবিষ্কার করতে পারি!

ধারণা করি এ কারণেই বাংলার প্রথম সবাক সিনেমার নাম হয়েছিল 'মুখ ও মুখোশ'। আসলেই তো আমরা সবাই মুখোশ পরে থাকি। আড়ালের ছবিটা আমরা লুকাই। ভীষনভাবে লুকাই।

দেশে যে হারে মানুষ গুম ,খুন, নিখোঁজ  হচ্ছে সেটা হালাল করার নানা রকমের বিষয়াদি আমরা হাজির করছি। অভিযুক্তরা এ সব স্বীকার করছেন না। উল্টো তাদের ক্ষমতা আর বল প্রয়োগে সাধারণ মানুষ চিড়ে চিপ্টে।

তাতে কারো কিচ্ছু যায় আসে বলে মনে হয় না।  কারণ নানা আবরণে মানুষকে ঢেকে দিয়ে হত্যাকে এক রকম জায়েজ করে দিযেছি।  এটা কোনো ভাবেই কাম্য হতে পারে না।

যাদের বলা হয় 'সিভিল সার্ভেন্ট' তারা এ শব্দটা পাল্টে 'পলিটিক্যাল সার্ভেন্টে' রূপান্তরিত হয়েছেন। কিছু ব্যাতিক্রম অবশ্যই আছে!

সময় কীভােব বদলে যায়, অবাক লাগে। একটা সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে দেশের  প্রতিটি ঘটনার প্রতিক্রিয়া হতো। আজ হয় না। কেনো হয়না সেটি আমি জানি, অনেকেই জানেন। তবে সবচেয়ে ভালো যারা জানেন তারা সে সময়কার প্রতিক্রিয়া দেখানো লোকেরাও।

সে সময় মনে হতো তারা আসলেই কত মহান। এ রকম খারাব কাজের প্রতিবাদ করছেন। আজ মনে হচ্ছে কেবল দলীয় সঙ্কীর্ণতায় সে সব  ছিল লোক দেখানো।

একটা ঘটনা বলি- ২০০৩ সালের দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ইভনিং শিফটে বাড়তি টাকা নিয়ে কোর্স চালু করার একটা প্রবণতা দেখা দিলে সবাই মিলে এটা রোধ করেন।  দুএকটি ব্যাতিক্রম ছাড়া অন্য ডিপার্টমেনট বাধ্য হয়, আন্দোলনের কাছে মাথা নত করতে!

কিন্তু এখন প্রায় সব ডিপার্টমেন্টরই এ রকম একটা বাণিজ্য আছে। আরো অবাক করা বিষয় হলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে টিভি ও ফিল্ম নিয়ে একটা ডিপার্টমেন্ট খুলেছে, দিনে পড়ায়, তবুও যেখানে মাস্টার্স পড়তে হলে প্রায় দেড়লাখ টাকা গুনতে হচ্ছে। এ রকম নৈরাজ্যের সময় কাউকে প্রতিবাদি হতে চোখে পড়ছে না।

আনোয়ার স্যার, আরেফিন স্যার, মেসবাহউদ্দিন স্যার, সুলতানা ম্যাডাম, নাসরিন ম্যাডামরা এখন কই। কত রকমের ব্যাখ্যা নিয়েই না তারা হাজির হতেন।  রাজনীতিকে আমি রাজনীতির নিক্তিতে মাপি। কিন্তু আমার প্রিয় ক্যাম্পাসের কিছু মানুষের রাজনীতিকে আমি সেই নিক্তিতে মাপতে চাইনি।

 তবুও মনে হচ্ছে ক্ষমতার বাইরের রূপ মুখোশ। ভেতরেরটা মুখ-বা আসল রূপ! 

আবার ভিন্নভাবে দেখুন না।  সদরুল স্যাররা কি রকমের আপসকামী। ভয়ে মিইয়ে আছেন। কোনো প্রতিবাদ নেই।  ওবায়দুল স্যারকে বাধ্যতামূলক ছুটি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়। কিছুই হয়নি। তিন্তু ২০০২-২০০৩ সালের দিকে শফিক স্যারের ছুটি নিয়ে কী ক্যালেঙ্কারিই না হয়েছিল। ভাবছি, আর উন্মোচন করছি ক্ষমতার যৌনতা কীভাবে চুষে নেয় নৈতিকতা।

কোন মন্তব্য নেই: