তেতে ওঠা রোদ্দুরের দুপুরেও মরু দুলালের রওজার ওপর মাথা তুলে থাকা সবুজ গম্বুজের দিকে তাকালে অসাধারণ প্রশান্তিতে মন ভরে যায়। সৌদি আরব যখন তুরস্কের শাসনে ছিল সে সময় রাসূল (সাঃ)-এর রওজা মুবারকের ওপর এ সবুজ গম্বুজ তৈরি করা হয়। পরে মসজিদুন নবীর স্থাপত্য নকশায় খানিকটা পরিবর্তন আনা হলেও এটি ঠিক রাখা হয়েছে।
অক্টোবরের শেষ সপ্তাহের এক দুপুরে হাজির হলাম মসজিদুন নবীতে। সারা জীবন কেবল এ মসজিদের ইতিহাস পড়েছি, প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ (সাঃ) এখানে তাঁর জীবনের একটা বড় অংশ কাটিয়েছেন। মদিনাতুন নবীকে শান্ত শহর বলা হয়, এখানকার মানুষ নবী করিম সা:কে সাদর সম্ভাষণ জানিয়ে গ্রহণ করেছিলেন।
যে বড় পথ পাড়ি দিয়ে আমরা বাসে চড়ে এসেছি সেখানে নবী (সাঃ) তাঁর সাথীদের নিয়ে হিজরত করেছেন উটের পিঠে চড়ে। মরুর বুকে সূর্যের তপ্ত রোদ; নাক দিয়ে রক্ত পড়ার উপক্রম; সে সময় আল্লাহর নবী তাঁর প্রিয় সৃষ্টিকর্তার নির্দেশ মেনে ছুটে এলেন মদিনায়।
মদিনাতুন নবীতে রাতে পৌঁছার কারণে তাহাজ্জুদ ও ফজর নামাজ পড়ে হোটেলে ফিরে গিয়েছিলাম। দুপুরের দিকে নবী করিম (সাঃ)-এর রওজা মুবারক জিয়ারত করার জন্য ছুটলাম। সে অনুভূতি আর আকুতির কোনো বিবরণ দেয়ার সক্ষমতা কারো নেই। তামাম দুনিয়া থেকে মুসলমানরা হজ পালনের জন্য মক্কা মুয়াজ্জমায় আসেন। হজের বাধ্যবাধকতা না থাকলেও কেউ মদিনাতুন নবী (সাঃ) না গিয়ে ফেরেন না। এত কাছাকাছি এসে নিজের চোখে নবী করিম (সাঃ)-এর রওজা মুবারক দেখার সুযোগ হাতছাড়া করার ভাবনা কারো মাথায় আসতে পারে না। আসেও না বলে সবাই ছুটে আসেন সেখানে।
উম্মতের জন্য জীবন বিপন্ন করা এবং সব সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য ত্যাগ করে নিজ দায়িত্ব পালনের যে অসাধারণ দৃষ্টান্ত নবী করিম (সাঃ) স্থাপন করেছেন, সেটি বিশ্বের ইতিহাসে অনন্য উদাহরণ হয়ে আছে।
তপ্ত পথ পাড়ি দিয়ে মসজিদুন নবী নববী চত্বরে পা রাখলে প্রশান্তি। বাবুস সালাম দিয়ে আমরা ঢুকতে লাইনে দাঁড়ালাম। এত মানুষ তবুও কোনো রকমের হুড়াহুড়ি নেই। প্রথমবার যাচ্ছি। তাই সব কিছু চিনতে পারছি না। সামনে এগোলে রওজাতুম মির রিয়াজুল জান্নাহ। নবী করিম (সাঃ)-এর সময় খুৎবা দেয়ার মিম্বর। একটু এগোলেই প্রথমে নবী করিম (সাঃ)-এর রওজা মুবারক।
দেয়াল দিয়ে ঢেকে রাখা নবী করিম (সাঃ)-এর রওজা; কিন্তু বাইরে থেকে দেখা যায়। সবুজ রঙে ঢেকে রাখা রওজার উপরিভাগ লাল রঙের আবরণ। কবরের গায়ে ক্যালিগ্রাফি। প্রথম দর্শনে এত বিমোহিত জীবনে আর কিছুই করতে পারে বলে মনে হয় না।
আল্লাহর রাসূল (সাঃ)-এর রওজার সামনে দাঁড়ানোর পর মনে হবে, ‘এ জীবন আল্লাহর গোলামির বাইরে আর কিছু চাইতে পারে না।’
শত সহ¯্র মানুষ পেছন থেকে এগিয়ে আসছে। পুলিশ সদস্যরা হাত বাড়িয়ে সামনে এগিয়ে দিচ্ছেন। রাসূল (সাঃ)-এর রওজা মুবারকের পাশেই হজরত আবুবকর রা:-এর রওজা, তাঁর পাশেই হজরত ওমর ফারুক রা:-এর রওজা। কবর তিনটি রাসূল (সাঃ)-এর স্ত্রী আম্মাজান আয়েশা রা:-এর ঘরের জায়গায় হয়েছে। রাসূল (সাঃ)-কে এখানেই দাফন করা হয়। তারপর তাঁর প্রিয় দুই সাহাবীকে।
বাবুস সালাম দিয়ে বের হয়ে আল্লাহর দরবারে হাত তুলে মুসলমানরা সবাই নিজের বিচ্যুতির জন্য ক্ষমা চাইছেন। তার পেছনেই বাবে জিবরাঈল আ:। এ দরজা দিয়ে ফেরেশতা হজরত জিবরাঈল আ: নবী (সাঃ)-এর কাছে ওহি নিয়ে আসতেন। আল্লাহর পক্ষ থেকে মানবজাতির জন্য পথ নির্দেশনা আসার সেই গেটের দিকে তাকালে যে কারো মনটা ভালো হয়ে যাবে। তার পাশেই আসহাবে সুফফার। স্থান নবী করিম (সাঃ)-এর ধর্মীয় জ্ঞান দেয়ার এ অঙ্গনটি সারা বিশ্বের মানুষের কাছে পরিচিত। মুসলমানদের ধর্মচর্চা এবং জীবন পরিচালনা শুরু হয়েছিল জ্ঞানচর্চার মাধ্যমে।
।। হজ শুরু হয়েছে। গত বছর এ সময়টায় সেখানেই ছিলাম। এর একটা স্মৃতিকথা।।
অক্টোবরের শেষ সপ্তাহের এক দুপুরে হাজির হলাম মসজিদুন নবীতে। সারা জীবন কেবল এ মসজিদের ইতিহাস পড়েছি, প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ (সাঃ) এখানে তাঁর জীবনের একটা বড় অংশ কাটিয়েছেন। মদিনাতুন নবীকে শান্ত শহর বলা হয়, এখানকার মানুষ নবী করিম সা:কে সাদর সম্ভাষণ জানিয়ে গ্রহণ করেছিলেন।
যে বড় পথ পাড়ি দিয়ে আমরা বাসে চড়ে এসেছি সেখানে নবী (সাঃ) তাঁর সাথীদের নিয়ে হিজরত করেছেন উটের পিঠে চড়ে। মরুর বুকে সূর্যের তপ্ত রোদ; নাক দিয়ে রক্ত পড়ার উপক্রম; সে সময় আল্লাহর নবী তাঁর প্রিয় সৃষ্টিকর্তার নির্দেশ মেনে ছুটে এলেন মদিনায়।
মদিনাতুন নবীতে রাতে পৌঁছার কারণে তাহাজ্জুদ ও ফজর নামাজ পড়ে হোটেলে ফিরে গিয়েছিলাম। দুপুরের দিকে নবী করিম (সাঃ)-এর রওজা মুবারক জিয়ারত করার জন্য ছুটলাম। সে অনুভূতি আর আকুতির কোনো বিবরণ দেয়ার সক্ষমতা কারো নেই। তামাম দুনিয়া থেকে মুসলমানরা হজ পালনের জন্য মক্কা মুয়াজ্জমায় আসেন। হজের বাধ্যবাধকতা না থাকলেও কেউ মদিনাতুন নবী (সাঃ) না গিয়ে ফেরেন না। এত কাছাকাছি এসে নিজের চোখে নবী করিম (সাঃ)-এর রওজা মুবারক দেখার সুযোগ হাতছাড়া করার ভাবনা কারো মাথায় আসতে পারে না। আসেও না বলে সবাই ছুটে আসেন সেখানে।
উম্মতের জন্য জীবন বিপন্ন করা এবং সব সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য ত্যাগ করে নিজ দায়িত্ব পালনের যে অসাধারণ দৃষ্টান্ত নবী করিম (সাঃ) স্থাপন করেছেন, সেটি বিশ্বের ইতিহাসে অনন্য উদাহরণ হয়ে আছে।
তপ্ত পথ পাড়ি দিয়ে মসজিদুন নবী নববী চত্বরে পা রাখলে প্রশান্তি। বাবুস সালাম দিয়ে আমরা ঢুকতে লাইনে দাঁড়ালাম। এত মানুষ তবুও কোনো রকমের হুড়াহুড়ি নেই। প্রথমবার যাচ্ছি। তাই সব কিছু চিনতে পারছি না। সামনে এগোলে রওজাতুম মির রিয়াজুল জান্নাহ। নবী করিম (সাঃ)-এর সময় খুৎবা দেয়ার মিম্বর। একটু এগোলেই প্রথমে নবী করিম (সাঃ)-এর রওজা মুবারক।
দেয়াল দিয়ে ঢেকে রাখা নবী করিম (সাঃ)-এর রওজা; কিন্তু বাইরে থেকে দেখা যায়। সবুজ রঙে ঢেকে রাখা রওজার উপরিভাগ লাল রঙের আবরণ। কবরের গায়ে ক্যালিগ্রাফি। প্রথম দর্শনে এত বিমোহিত জীবনে আর কিছুই করতে পারে বলে মনে হয় না।
আল্লাহর রাসূল (সাঃ)-এর রওজার সামনে দাঁড়ানোর পর মনে হবে, ‘এ জীবন আল্লাহর গোলামির বাইরে আর কিছু চাইতে পারে না।’
শত সহ¯্র মানুষ পেছন থেকে এগিয়ে আসছে। পুলিশ সদস্যরা হাত বাড়িয়ে সামনে এগিয়ে দিচ্ছেন। রাসূল (সাঃ)-এর রওজা মুবারকের পাশেই হজরত আবুবকর রা:-এর রওজা, তাঁর পাশেই হজরত ওমর ফারুক রা:-এর রওজা। কবর তিনটি রাসূল (সাঃ)-এর স্ত্রী আম্মাজান আয়েশা রা:-এর ঘরের জায়গায় হয়েছে। রাসূল (সাঃ)-কে এখানেই দাফন করা হয়। তারপর তাঁর প্রিয় দুই সাহাবীকে।
বাবুস সালাম দিয়ে বের হয়ে আল্লাহর দরবারে হাত তুলে মুসলমানরা সবাই নিজের বিচ্যুতির জন্য ক্ষমা চাইছেন। তার পেছনেই বাবে জিবরাঈল আ:। এ দরজা দিয়ে ফেরেশতা হজরত জিবরাঈল আ: নবী (সাঃ)-এর কাছে ওহি নিয়ে আসতেন। আল্লাহর পক্ষ থেকে মানবজাতির জন্য পথ নির্দেশনা আসার সেই গেটের দিকে তাকালে যে কারো মনটা ভালো হয়ে যাবে। তার পাশেই আসহাবে সুফফার। স্থান নবী করিম (সাঃ)-এর ধর্মীয় জ্ঞান দেয়ার এ অঙ্গনটি সারা বিশ্বের মানুষের কাছে পরিচিত। মুসলমানদের ধর্মচর্চা এবং জীবন পরিচালনা শুরু হয়েছিল জ্ঞানচর্চার মাধ্যমে।
।। হজ শুরু হয়েছে। গত বছর এ সময়টায় সেখানেই ছিলাম। এর একটা স্মৃতিকথা।।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন