দেশের সবচেয়ে বিপদ সঙ্কুল সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার। এটি বিশ্বের দীর্ঘতম সৈকত, লম্বায় এ সৈকতটি কেবলই বড়ই নয়, আনব্রোকেন হবার কারণে এর ধারে কাছে অন্য কোনো সৈকতের অবস্থান নেই।
তবে এ বিচের কিছু পয়েন্ট রয়েছে খুবই ভয়ঙ্কর। বিশেষ করে ভাটার সময় কক্সবাজার সৈকত কোনো ভাবেই পর্যটকের জন্য নিরাপদ নয়।
কোনো সরকারই এ বিচের নিরাপত্তায় কিচ্ছু করে নাই। তবে সেনা সমর্থক মইন ফখরের সরকারের সময় সেখানে ট্যুরিস্ট পুলিশের ইন্তেজাম করা হয়েছে। এর বাইরে কিচ্ছু না।
আপনাকে এই বিচে ভাটার সময় না নামার জন্য সুগন্ধা ও লাবনী পয়েন্টে লাল পতাকার নির্দেশনা দেখাবে। যেটি দেশের আর কোথাও নেই।
কক্সবাজার বিচে দু'কারণে দুর্ঘটনা ঘটে-
১.এ বিচে চোরাবালি ফাঁদ রয়েছে।
২. ভাটার টান প্রচণ্ড, যেটি যে কারো শক্তিকে হার মানায়। যদি আপনি সিন্দাবাদ না হন!
চোরাবালি ফাঁদটা কক্সবাজার বিচের যে সব এলাকায় সবচেয়ে বেশি তার মধ্যে সুগন্ধা ও কলাতলি পয়েন্টকে ধরা হয়। তবে আমার অভিজ্ঞতা সাগরের যে সব অংশে খাল থেকে পানি নামে বা পানি খালে প্রবেশ করে এর আশে পাশে এবং বিচের যে অংশে পাহাড় রয়েছে তার সামনের অংশে চোরাবালি রয়েছে।
কারণ ওপর থেকে নেমে আসা পানির স্রোত অনেকটা সাগরে ঢেউয়ের সাথে বাড়ি খেয়ে থেমে গিয়ে এক ধরণের গোলাকৃতির গর্ত তৈরি করে, যেখানে জোয়ার ভাটার সাথে সাথে বালিতে ভরাট হয়ে যায়। তবে সেই বালি পানি সহ থাকায় এ গর্তে পড়ে যে কেউ প্রাণ হারাতে পারেন।
সঙ্কটের কথা হলো চোরাবালি প্রবণ এলাকাগুলো নিয়ে সরকার কোনো কাজ করেনি । কোন কোন এলাকায় চোরাবালির খাদ রয়েছে সেটি নির্ণয় করার প্রযুক্তি অনেক আগেই সমুদ্র বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করেছেন। দেশেও সমুদ্র বিজ্ঞান পড়ানো হয়, কিন্তু তারা তত্বে বসে আছেন, প্রাকটিক্যালে নাই।
কক্সবাজারের বিচটা হলো খাড়া বিচ। এটি সমুদ্রে বুক থেকে ফেলিন ঢেউ নিয়ে আসে, সেই সাথে পর্যটককে ভেতরে যেতে হাত ছানি দেয়। ভেতরে গেলে যেটি হয় ঢেউটি খাড়া ভাবে সমুদ্রের খাদে পড়ে যায়। সেই সাথে সলিল সমাধি ঘটে থাকে পর্যটকের।
তাই পর্যটকের করণীয়-
ভাটার সময় পানিতে নামলে সর্বোচ্চ ২ ফিট। এবং জোয়ারের সময় নামলেও সর্বোচ্চ ৪ ফিট পানিতে নামতে পারেন। সমুদ্র সাঁতারের জায়গা পর্যটকের জন্য নয়। এটি পেশাদার সাঁতারুর জন্য হতে পারে। তাই সাঁতার থেকে বিরত থাকুন।
সাঁতার না জানা থাকলে লাইফ জ্যাকেট পরে নিন। বাচ্চাদের অবশ্যই লাইফ জ্যাকেট ছাড়া সমুদ্রে নামতে দেয়া উচিৎ নয়। সমুদ্রে নামার আগে অবশ্যই আপনার ও পরিবারের নিরাপত্তার কথা ভাবুন।
রোমাঞ্চকর সমুদ্র ভ্রমণ আপনার জন্য নিরাপদ করতে কক্সবাজারের লাবণী, কলাতলী, সুগন্ধা, হিমছড়ি, ইনানীর বাইরে অন্য কোনো পয়েন্টে সমুদ্রে নামা থেকে বিরত থাকুন।
আর সরকারের কাছ আর্জি জানান- অন্তত কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে যেনো নেটিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়। তাহলে আপনার ভ্রমণ আরো নিরাপদ হবে।
চলমান
পরবর্তী লেখার জন্য খেয়াল রাখুন এবং এই লিঙ্কেও ক্লিকাইতে পারেন- https://www.facebook.com/touristplus.bangladesh
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন