তেতুল: দ্রুত স্খলন এবং রাজনীতি


তেতুল লইয়া অনেক আলাপ অইছে। এখন আর অইবো না। হুজুরের পদতলে এখন জান্নাত দৌড়া দৌড়ি করতাছে। আর সেই জান্নাত লাভের উদ্দেশে আপারা সবাই কাতারবন্দী!

ছোটবেলায় ব্যাপক ওয়াজ মহফিলে যাইতাম। তার কোনো একটাতে শুনেছিলাম তেতুল খাইলে জেহান (মেধা) কইমা যায়।এইডা খুব কমজানা কোনো মওলানার কাছ থেকে শোনা।

আমার দাদী (বাবার মামী) কইতো পুরুষ মাইনষের তেতুল খাইতে নাই।কিন্তু তাদের জন্য তেতুল গাছ থেকে পেড়ে দিতাম। চান্সে দুচারটা গাছে বইসা মাইরা দিতাম।

শহরে আইসা দেখলাম তেতুল সবাই খায়, আমিও খাই। বিশেষ করে রাঙামাটির তেতুল খুব মজা। মিষ্টিও।

বঙ্গবর্ষ 1420 সালে তেতুল লইয়া ব্যাপক আলোচনা ছিল।  শফি হুজুরের তেতুল তত্ব লইয়া ফেসবুক আর ব্লগে লম্বা বয়ান। ফেমিনিস্ট হিসাবে নিজেদের জাহির করবার নানা রকমের তরিকাও দেখলাম। হুজুরের বক্তৃা শর্টকার্ট কইরা সেটি সবাই বিলাইয়া ব্যাপক মজা লইছে।

আমি এ ধরণের টুইস্টিং এর বিরুদ্ধে বলেছি, এখনো বলি। আমার লেখা যারা পড়েন- তারা দেখে থাকবেন তেতুল  এবং মন্ত্রীর বিড়ি ও ক্যাশ লইয়া আমার অবস্থান ভাসমান স্রোতের বিপরীত ছিল।

তেতুল সম্পর্কে আমার একজন চিকিৎসক বন্ধু জানাইছে, এইটা নাকি ‌'বীর্য তরল কইরা ফালায়। দ্রুত স্খলন ঘটায়।'এর সত্যাসত্য যাচাই করন যায় নাই, কারণ এ সব আলাপ সবার সাথে করা মুশকিল। তবে এটাকে সইত্য মনে লইতাছে-কারণ

আমাদের রাজনীতিতেও 'তেতুল চরিত্র' খুবই বাস্তব অইয়া দেখা দিছে।

শফি হুজুর এখন আর 'আদাবত' বলতে আম্লীগ ও তাদের চ্যালা চামুণ্ডাদের বোঝেন না।' আদাবত' শব্দ আমার প্রথম শোনা। এর অর্থ নাকি শত্রুতা। যৌথবাহিনীর অপারেশন শাপলার পরও।

হুজুরের তেতুল লইয়া অনেক রসের আলাপ হইছে, সংসদে ও বাইরে। খালেদা জিয়ার ছবির লগে হুজুরে ছবি জুইড়া দিয়া ফেসবুকে অনেক রঙ্গ অইছে। এইডা লইয়া কইবার কিছু নাই।

কিন্তু তেতুলে যে তরল করে এবং দ্রুত স্খলন ঘটায় সেটি আমরা হেফাজত ও আম্লীগ দুই তরফে দেখলাম।  তলে তলে দুপক্ষ ঠিক অইয়া গেছে। এটা দেইখা পরাণ জুড়াইয়া গেছে।

আহা কী চমৎকার দোস্তি। ভালোই লাগছে। এখন এটাকে হালাল করবার জন্য অনলাইনে আম্লীগ ও হেফাজতিরা নানা রকমের  যুক্তি তর্ক বিলাইবেন। আমরা শুনবো- আর বিম্পি জমাত এখন হায় হোসেন হায় হোসেন করবে- আহা কারবালা। আহা রাজনীতি!

আম্লীগ  ও কওমী মাদ্রসার দোস্তি পুরানা। কওমী মাদরাসার পরিচালনা পর্ষদের প্রায় নব্বুই ভাগ আওয়ামি ঘরানার লোকদের হাতে। তবুও মাঝখানে ক্যান যে তারা নাস্তি ফাস্তিক লইয়া লাফাইলো এটাই একটা বড় প্রশ্ন! মনে লয়, নিজেদের অস্তিত্ব লইয়া সঙ্কটে পড়ছিলো।

ব্যাক্তিগতভাবে আমি কোনো শত্রুতার পক্ষপাতি নই। ক্ষমতার রাজনীতিতে আমি কারো বলি হওয়ার পেছনে যুক্তি খুঁজে পাই না। তাই এখানে এ সব আলাপ বাতুলতা মাত্র। আমি হেফাজতের আদাবত নাই-ঘোষনায় খুবই আনন্দিত।

খালি আমার একটা ভাঙ্গা বাঁশি আছে সেইটা বাজাই- দয়া কইরা নিখোঁজ মানুষের তালিকা খাটো করেন, বন্দুকযুদ্ধ বন্ধ করেন, ক্রসফায়ারের নামে বনি আদমের খুন করা থেকে বিরত থাকেন। এরপর আপ্নেরা আপনাগো কল্লা খান- আমার কিচ্ছু যায় আসে না।

তবে হেফাজত ও গণজাগরণমঞ্চ 'ব্যবহৃত' একটি প্লাটফর্ম।  এটাকে 'ইউজ' কইরা প্রধান দুই দল নিজেদের সব 'পাপ' মোচনের চেষ্টা করেছে। ফাঁকেতালে পড়ে মরেছে কিছু বনি আদম। তাতে কি জনগনের 'বদ রক্ত' উনাদের ক্ষমতা ও রাজনীতিকে পাকা পোক্ত করছে।

এ নিয়ে বিস্তর রাজনীতি অইছে, অইবো। কিন্তু গরিব মাইনষের এতিম পুলাপাইন আর  ঘর ছেড়ে বড় মানুষ অইয়া বাবা মায়ের মুখে হাসি ফুটাইবার জন্য যারা ঢাকায় এসেছেন তাদের  ভিন্ন আবরণে রাজনীতিক ব্যবহার আমি সমর্থন করি না।

     

কোন মন্তব্য নেই: