সুখ অসুখের গল্প-১ :: বঙ্গীয় চিকিৎসকরা সবাই সুলতান সুলেমান!




' আব্বাকে চিকৎিসার জন্য ইনডিয়া নিতে চাই, কই নিমু?'
এমন প্রশ্ন বহুজনকে করেছি। ইন্টারনেটে গেঁটে অনেক তথ্য হাসিল করেছি। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে  সহায়তা করেছে দিল্লি এপোলো। তাদের চিকিৎসকের ডেটাবেস এবং  সহযোগিতা আমাকে সেখানে যেতে উদ্বুদ্ধ করেছে।

এপোলোর উপরে আস্থাহীন ছিলাম আমি। তবে চেন্নাই এপোলোর একটা মেইল আমার ধারণা বদলে দিলো। তারা আব্বার এমআরআই রিপোর্ট দেখে জানালো, এ চিকিৎসার জন্য এ মুহুর্তে তাদের ডাক্তার নেই। সত্যি অভিভুত হলাম। এ রকম রিপ্লে আর কোথা থেকে পাইনি।

সিঙ্গাপুরের ন্যাশনাল মেডিকেল,  থাইল্যান্ডের মিশনারি হসপিটালেও মেইল করেছিলাম। রিপ্লে ভালো ছিল। চেন্নাই এপোলো গিয়েছিলেন সহকর্মী সৌরভ দা' তার কিছু পরামর্শও পেলাম।  আব্বা সিঙ্গাপুর বা থাইল্যান্ড যেতে অনিচ্ছুক।  তাই বাধ্য হয়ে ইনডিয়া যাওয়ার আয়োজন।

 চিকিৎসার ব্যাপারে আব্বা একটু ভিন্ন। তার  সমস্যা, কেন তিনি এ সব ওষুধ খাবেন তা তাঁকে জানতে হবে। বাংলাদেশের ডাক্তাররা এতে প্রচণ্ড রকমের বিরক্ত হন। ল্যাব এইডের নিউরোলজির ডাক্তার সিরাজুল হক এ বিষয়ে জানতে চাইলে, তার সিরিয়ার দেয়া  'মফিজ'রকে দেখিয়ে দিলেন।

আব্বা এতে প্রচণ্ড বিরক্ত হয়েছেন।

মার্চ মাসে তাই সিদ্ধান্ত , আব্বা চিকিৎসার জন্য ভারত যাবেন। দু কারণে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হযেছে। এক. তাঁর দুজন চিকিৎসক একই এমআরআই রিপোর্ট দেখে দু রকম পরামর্শ দিয়েছেন। দুই. চিকিৎসকরা সবাই সুলতান সুলেমান।  তাদের কাজকর্ম করতে হয় আর্দালিদের। এটা আব্বা পছন্দ করেননি।

তাই খোঁজ খবর নিচ্ছিলাম। সবাই সিএমসি, ভ্যালোরের পরামর্শ দিলেন।  ইন্টারনেটে খোঁজ খবর, এসি নেইলসনের জরিপ  এসব দেখে আমরা সিমএসিকে পছন্দও করলাম। কিন্তু সিএমসি আমাদের রিপ্লে করলো কমপক্ষে  তিন সপ্তাহ সময় নিয়ে যেতে হবে। এত সময় আব্বার পক্ষে দেওয়া অসম্ভব। আমারো একই হাল।

 সুতরাং এপোলো বেস্ট অপশন।

প্রক্রিয়া শুরুর আগে সেখানে মেইল পাঠানো হলো। তারা  রিপোর্ট দেখে জানালেন, ৫ থেকে ৭ দিনের জন্য যেতে হবে। তবে আমরা হাতে আরো ২ দিন বেশি সময় নিয়ে ৯ দিনের জন্য উড়বো বলে প্রস্তুতি শুরু করলাম।

আব্বার পাসপোর্ট  করতে দাঁড়ালেন ফেব্রুয়ারিতে। হাতে পেলেন মার্চে। এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে ভিসার জন্য সব রেডি করেছি, দেখি আমার পাসপোর্টের মেয়াদ ৬ মাসের চেয়ে দিন দশেক কম আছে।  এবার নিজের পাসপোর্ট রিনিউ করতে দৌড়ালাম। ৬ হাজার  টাক সাথে ১৫ শতাংশ আবুল মাল দিয়ে  পাসপোর্ট রিনিউ করে আবেদন করতে যাবো, তখন বিভ্রান্তি শুরু।


কোন মন্তব্য নেই: