মনের আয়নায়


তোমার সাথে আমার দেখা হওয়াটা জরুরী  ছিল না
তবুও হয়েছে; এটা খুব যে ইচ্ছে করে তাও নয়! তবুও হয়েছে।

চিরচেনা এই কাঁশফুলের বাগান;
যেখানে কাশের ডগায় হাত কেটে যাবার ভয়; আবার নরম ছোঁয়া ফুলের!
যেনো আমার ছেলের গাল; এখনো যে সব কিছুতেই 'ত' উচ্চারণ করতে পছন্দ করে

আমি বিস্ময় ভরে মনের আয়নায় দেখি-
সেই সময়; বছর কুড়ি কিম্বা তারো আগে-
ইটের ভাঙাচোরা রাস্তায় যখন ভট ভট শব্দ তুলে ছুটতো  অটোরিক্সা
আর পেছনে ছুটটো গাঁয়ের ছেলে মেয়েরা

এ ছোটাছুটির কোনো মানে নেই; তবুও ছোটায় আনন্দ

ছুটোছুটির যে আনন্দ আমরা পেয়েছি ছোট বেলায়- সে আনন্দ এখন নেই

সব দিকে নষ্ট হবার ভয়! তাই মা হাত চেপে ধরে  নিয়ে যান তার সন্তানকে
হাত চেপে নিয়ে আসেন বাসায়।  পাড়াগাঁর ছেলে ছোকরাদের সাথে মিশলে গোল্লায় যাবে! সে কী ভয়।

নিজেরাই নিজের খাঁচা বন্ধি করছি।

খাবার দবার বলতে কেএফসি'র চিকেন; বিএফসির ফ্রাইড রাইস
সময় পেলে চলো ফ্যান্টাসি; নন্দন

শিক্ষক চোখ রাঙিয়ে বসে থাকেন; মাস শেষে বেতন আসবে ঠিকই; কিন্তু  শিক্ষার্থী হতে হবে ক্লাশে নাম্বার ওয়ান

সবারই একই চেষ্টা -
কিন্তু নাম্বার ওয়ান তো একজনই হয়!

জীবনে কেউ কি নাম্বার ওয়ান হতে চান: চান না।
বলেন জীবন এমনই! হতে পারে।

ভট ভট শব্দ তুলে ছুটে চলা অটোরিক্সার পর সবুজ রঙ্গের সিএনজি এসেছে সবখানে; পাকা হয়ে গেছে রাস্তা।

তবুও বাসের কালো ধোঁয়া; ইমারত নির্মাণের জন্য বালুর ছড়া ছড়ি আর উন্নয়ন কাজে মগ্ন নগরে কেবলই রোগ বালাই

শ্বাসকষ্ট; গিটে ব্যাথা; চোখ কচকচ করে; আরো কত্ত কী

তাতে কি? আমরা সভ্য হয়ে উঠছি দিনে দিনে-

সেই সাথে মরে যাচ্ছে আমাদের মনুষ্যত্ব-সেদিকে খেয়ালের দরকার কি

মোটা অংকের বেতন; এসি গাড়ি আর  মাস্তিই এখন জীবনের লক্ষ্য।

গাঁয়ের রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা বুড়ো পথিক-
থালা হাতে গরিব মানুষটির দিকে এগিয়ে যাওয়া
হোঁচট খেয়ে পড়ে যাওয়া মানুষটির হাত ধরে থাকার মধ্যে এখন আর আনন্দ খুঁজি না আমরা।
 তবুও আছি
এই বেশ আছি; ভালো আছি। ভালোবাসি।

কোন মন্তব্য নেই: