ভ্যাট :: চ্যাটে নাই; মাঠে

ভ্যাট এখন চ্যাটে নাই। মাঠে গড়িয়েছে। গরমের এ মরসুমে, রাস্তায় ঠাডা রইদের মইধ্যে পুতু পুতু পোলাপাইন স্লোগান তুলছে।
বারগার, স্যান্ডুইচ, ইয়াম্মি জুস, পিৎজা, মুরগি ভাজা আর রুট বিয়ার--- যত কিছু্রই আমদানি হোক না ক্যান দেশে; বুকের উপ্রে লাত্থি লাগলে রাস্তায় আমরা খরায়া যামুই। এটা আবারো প্রমাণিত।
রাস্তায় খারাইলে, কিম্বা রাস্তায় আন্দোলন কইরলে তার দাবি মানবে ক্যাডা! উত্তর। সক্কার বাহাদুর। সক্কার ক্যাডা? তার চরিত্র কি-- রাজনীতিক।
কপ্পোরেট হাউস, টেলিকম কুম্পানি, বহুজাতিক খাইদ্য খানা আইনা দেশটারে ডিজিটাল জুস বা ডিজুস আসক্ত করা হইছে। চিন্তক ফরহাদ মজহার এটাকে কইছেন--' বিরাজনীতিকরণ প্রক্রিয়ার অংশ।' অনেকেরই মনে থাইবে--- গাঁইয়া ফোন তাদের ডিজুস প্যাকেজে রাতভর মাগনা কথা কইতে দিয়া কত পুলা মাইয়াকে মানসিক রোগী বানাইছে। সেই সাথে কাম-ক্ষুধা-যৌনতা ও বাসনার ভিত্রে ডুবায়া রাখছে। কেবল রাজনীতি বাদে সব করো থিওরি--- আর কি।
একদল রক্ষণশীল সুশীল আছে। তারা কইবো- রাজনীতি সচেতন হও। আরেক ভাগ কয়- রাজনীতি করে 'নষ্ট' হওনের কাম নাই। দুপক্ষেই দোষারোপ করনের কাম নাই । তবে রাজনীতির জ্ঞান থাকন জরুরি। নইলে যোগাযোগের ভাষাও বদলে যাইতে পারে। যেমনটা কয় দিন ধরে একটা স্লোগান নিয়ে আলোচনা হচ্ছে---' দেহ পাবি ; মন পাবি; ভ্যাট পাবি না।'
বিজ্ঞাপন--- 'এক ঢিলে মেনি পাখি' তখন প্রতিবাদ করি না। রস করি। আদি রস। 'জানু আহা' বলে চিক্কুর মারা মঠেলকে আমরা কিছু বলি না। ডায়মন্ড গলায় চড়িয়ে উদোম করা মাইয়্যা মাইনষের শরীর লইয়া আমগো কোনো বাৎ চিৎ নাই। ফর্শা না অইলে 'সফল' হওন যায় না এ থিওরি আমরা মাইনা লই! কারো মনে অয় না তখন---এটা অশ্লীল। হঠাৎ ভ্যাটের দাবিতে এ রকম একটা চিক্কুর ক্যান যে, তাতো অনেকেই বোঝেন।
এটা পুরো রাজনৈতিক।
সরকার দলীয় বন্ধুরা ফেসবুকে ব্লগে নানান জায়গা কইতাছে ভ্যাট তো দিবো ভার্সিটি; তুমার চিন্তা কি? তুমি আন্দোলনে আইছ ক্যারে। বাড়ি যাও!
রাজনীতি একটা চর্চার ব্যাপার। এইডারে এড়িয়ে যাওনের সুযোগ নাই। আমগো কিছু লোক বলে আরে, বাপু রাজনীতি করবে 'বস্তি'র পুলাপাইন। তুমি খাবে দাবে মাস্তি করবে। যা ইচ্ছা তাই করবে।
কিন্তু এইডা যে ভুল --- নিশ্চিতভাবে এ ভ্যাট প্রত্যাহারের আন্দোলন প্রমাণ কইরলো।
ভ্যাট নিয়ে অধিকতর ব্যাখ্যাও পইড়লাম। এনবিআর কইছে এটা বেতনের ভিত্রে আছে। আরে বাপ ভ্রিতে যেটা আছে হেইডা কি ভার্সিটি তার বাড়ি থেইকা আইনা দিব। ভাবখানা এমুন।
বাঙ্গবাসির ভোগের বাজারে সরকার নত অইয়া পইড়ছে। এখনো দোকানিরা প্যাকেজ ভ্যাট দেয়। সেইখানে বিশ্ববিদ্যালয়--- যেখানে পড়াশোনা হয়; সেখান থেকে কেনো ভ্যাট নেয়া হবে? তাও আবার সাড়ে পার্সেন্ট! এটার কারণ সম্ভবত দেশে এখন ইনডিয়া, মালয়শিয়া, চায়না, থাইল্যান্ড এডুকেশন ফেযার করে-- তাদের সরকারের একটা সমঝোতা থাইকতে পারে।
শিক্ষা খরচ বৃদ্ধি বড় রকমের বোকামি। প্রাইভেট ভার্সিটি মানুষ ক্যান পড়ে! পাবলিকে চান্স না পাইয়া। আর অল্প কিছু পুতু পুতু পুলাপাইন আছে তাগো মা বাপ ভার্সিটির বারান্দায় ড্রপ করতে চায় আবার পিক মারতে চায়। তারা । কিন্তু এ অল্প সংখ্যক পুলাপাইনের কথা মাথায় আইনা কি ভার্সিটি ভ্যাটের আওতায় আনন ঠিক? অবশ্যই না।
তাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজনেস ফ্যাকাল্টি কিম্বা আইবিএ অবশ্যই ভ্যাটের আওতায় আইসতে পারে। সাহস থাইকলে সক্কার সেখানে গিয়া ১০ টাকা বেতন বাড়ায় দেখুক না।
দুব্বলের উপ্রে সব--- এইডা সইত্য । এটাও তো সইত্য প্রাইভেট ভার্সিটি পড়ুয়া পুলাপাইন নিজেদের দুব্বল করে রেখেছে। তাদের কাছে হাসিনা খালেদা এরশাদ মানে কৌতুক। এ কৌতুক কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হইতে পারে না।
বিপদে পড়লে এ সব নেতা নেত্রীর অনুসারির কাছেই যেতে হয়। কারণ এরাই সমাজ চালায়। আমরা সমাজ চালানোর মত লোক পাই না বইলাই তো এরা চালায়। যাদের আমরা 'বস্তির লোক' বইলা নাক সিটকাই; হেরাই আমগো নেতা। এটার দায় কার? আমার আফনের সক্কলের!
রাজনীতি আফনে কইরবেন কিনা সিদ্ধান্ত আফনার। কিন্তু আফনাকে রাজনীতি সম্পর্কে জাইনতে হবে। সচেতন মানুষ হিসাবে আফনার একটা মতামত থাকন জরুরি।
বাঙালির রক্তে সিরাজ উদ দৌলা যেমন আছে। মীর জাফরও আছে। সুতরাং সাধু সাবধান।
ভ্যাট মুক্ত শিক্ষার দাবি যৌক্তিক। এটা সরকারকে বুইঝতে হবে। সে বোঝানোর দায়িত্বতটা 'জ্ঞানী' শিক্ষক রাজনীতিকদের নিতে হবে।

কোন মন্তব্য নেই: