বালিকা বয়সে যৌন নিপীড়ন এবং দেবী!




                                    ছবি জয়ার ফেসবুক পেজ থেকে নেয়া।

রানুর বয়স কত? মানে জয়া আহসান।  দেবী সিনামার কেন্দ্রীয় চরিত্র। স্ক্রিণে  তাকে তেইশের বেশি বলা যাবে না B-)। কখনো সখনো সেটি ৩৩ পর্যন্ত নেয়া যেতে পারে ;) । রানু, হুমায়ূন আহমেদের  ভৌতিক উপন্যাসের প্রথম  কেন্দ্রীয় ভাবনা, এটি এবার  বড় পর্দায়  হাজির করেছেন জয়া।

বালিকা বয়সে যৌন নিপীড়ন একটা মেয়েকে তার কল্পনা জগতে কত রকমের রহস্যময় সাইকোলজির ভেতর দিয়ে নিয়ে যায়- হুমায়ুন আহমেদ, কিংবদন্তীর কথা শিল্পী এটাই মেলে ধরেছিলেন তার দেবী উপন্যাসে। সেটিই পর্দায় হাজির করেছে সি-তে সিনেমা। 

জীবনের জটিল সমাধান সূত্র যে সব সাইকো থেরাপিস্ট বা সাইকোলজিস্টের কাছে, তারাও অনেক সময় সেটি ব্যাখ্যা করতে পারেন না।  যেমন রানুর  ট্রান্সফরমেশনটা  মিসির আলী ব্যাখ্যা করতে পারেননি।  এমন ব্যাখ্যাতীত বিষয়গুলো ধরে সিনেমা বাংলাদেশে মনে করার মত সময়ে হয়েছে বলে জানি না।

দেবী- সে অভাবটা পূরণ করেছে। তবে এখানে আরো সাসপেনশন, বক্তব্যের তীক্ষ্ণতা দরকার ছিল, যেখানে চিত্র নাট্যকারের সফলতা নিয়ে প্রশ্নবোধক চিহ্নটা দেয়া যেতেই পারে!

প্রযোজক হিসাবে দেবী-  জয়ার প্রথম প্রযোজনা।  অভিনেত্রী হিসাবে ভৌতিক সিনামায়ও তার এটা প্রথম বড় পর্দার আসা, যদি আমার স্মৃতি  বঙ্গীয় ইলেকশনের মত  আমাকে প্রতারিত না করে, তাহলে এটাই সহীহ কথা।

জয়ার পর্দার শরীরে রূপবতী নায়িকা যে ছাপ  হুমায়ুন তার ছবিতে আঁকেন তা ছিল, পুরো মাত্রায় ছিল। তাই এ দিকটা সফলভাবে চিত্রায়িত। ভৌাতিক ঘটনাটাও একইভাবে এসেছে।  তবে শেষ দিকে ক্লাইমেক্স বলতে  সিনামার ছকে যেটাকে বোঝানো হয়, সেটি হুমায়ূন আহমেদের দেবী বইতে থাকলেও সিনামায় সেটি প্রচ্ছন্নভাবে আসেনি।

মিসির আলীর ঘটনার গভীরে যাবার চেষ্টা এবং রানুর তাঁকে প্রথাগতভাবে চমকে দেয়ার ভাবনাটা ছিল এখানে উল্লেখযোগ্য।
চঞ্চল চৌধুরী মিসির আলী হিসাবে দশে ৬ দেয়া যেতে পারে। এটা আমার ব্যক্তিগত মত। কারণ  হুমায়ুন যে রকম এক মিসির আলীকে পাঠকের সামনে হাজির করেছেন, সেটি  পর্দায় তুলে আনার ক্ষেত্রে আমাদের অত্যন্ত দক্ষ এ অভিনেতা চঞ্চল  দেবীতে পুরোপুরি সফল!- এ কথা আমার মত ছোট দর্শক বলতে পারবে না।

গল্পটা বইয়ের মতই। চিত্রনাট্যকারের এখানে বাড়তি কোন কারিশমা নেই। বরং  মিসির আলী গুটগুটে অন্ধকার বাড়িতে এটা আলোর হাতছানি  ছিল। এটা হবার কথা নয়। তবুও হয়েছে।

শেষ দৃশ্যে আসলে নীলুই রানু হবার কথা ছিল। সেটি হয়নি। কারণ এখানে একটা  কাহিনীগত ট্রান্সফরমেশন ছিল মূল গল্পে।  কাহিনী ঠিক রাখলে  মানুষ বদলায়নি সিনামা।  এটা বড় ত্রুটি।  কারণ আমার মতে এ গল্পের মূল স্রোত যৌন নিপীড়ন।   সেখান থেকেই একটা অতি প্রাকৃতিক বিষয় রানুর ভেতর চলে আসে। এটার যদিও  বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই, তবুও এটা তো সমাজে আছে। সেই সমাজের গল্পটাই সমাজের মত করে  বলার ঢংটা হুমায়ূন ঠিক রাখলেও চিত্রনাট্য সে সাক্ষ্য দিচ্ছে না।

তবুও একথা সঠিক এবং সত্য জয়ার  প্রথম প্রযোজনার সিনামাটি দেখলে টাকা উশুল হবে। যদিও সিনামায় তার স্বামী চরিত্র আনিসের অভিনয় অত্যন্ত  ম্যারমেরা। তারপরেও।  ভালো লাগবে। অন্তত যারা হুমায়ূন পড়ে বড় হয়েছেন, তাদের জন্য জয়ার সি-তে সিনামার প্রযোজনা ভালো লাগবে। পরিচালনা করেছে অনম বিশ্বাস। অভিনয় করেছে জয়া, চঞ্চল ছাড়াও শবনম ফারিয়া, অনিমেষ আইচ এবং আরো  অনেকে। সিনামাটির জনসংযোগ কনটেন্ট সহযোগি ছিল ইম্প্যাক্ট পিআর।   
                                                    ছবির পোস্টার, জয়ার ফেসবুক পেজ থেকে নেয়া

অভিন্ন কলরেটের অভিজ্ঞতা কেমন?




ছবি আন্তর্জাল থেকে নেয়া

বাজারে প্রতিযোগি তৈরিতে সফল হতে না পারার পর   টেলিকম রেগুলেটর  বিটিআরসি একটা জায়গায় এসে অভিন্ন কলরেট করার যে সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করেছে, এতে  অনেক গ্রাহকই আহত হয়েছেন। আবার খুশীও হয়েছেন অনেকে।

ব্যক্তিগতভাবে আমি এর প্রভাব আঁচ করতে পারিনি। কারণ আমি একটি  অপারেটরের বান্ডেল প্যাক ইউজার। ৪৯১ টাকায় ৬০০ মিনিট টক টাইম, ১০০ এসএসএম আর ৪ জিবি ইন্টারনেট পাই। এটা দিয়েই আমার মাস চলে যায়। অভিন্ন কলরেটের প্রভাব এই প্যাকেজে নাই।

তবে অসুবিধাও হয়েছে অনেকের। আমার আম্মা যেটি, বলছিলেন- তিনি গ্রামীণফোনের  ১০৯ টাকার প্যাকেজ খরিদ করতেন।  এতে বেশ সুবিধাই ছিল । এখন তার খরচা বাড়িয়েছে অপারেটরটি। তাই ১০৯ টাকায়  কাজ হচ্ছে না। এ প্যাকও নেই।

আমাদের পরিবারের অন্য সদস্যরাও  এফএনএফ সুবিধা উপভোগ করতেন, সেটি এখন আর নাই।  এতে তাদের খরচ বেড়েছে। 

রেগুলেটর  সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে  এ দিকটা মাথায়  রাখছে বলে মনে হয় না।  যদি রেগুলেটর ইন্টারকানেকশন ফি রাখতে পারে, তাহলে তার এফএনএফ সুবিধাটাও জায়েজ করে দিতে পারতো। এটা না করার কারণে কিছু সমস্যা হচ্ছে।

আমরা লক্ষ্য করেছি, তুলনামূলক বাজার ব্যবস্থায় অপারেটররা নিজেদের মধ্যে এফএনএফরে বাইরে ভিন্ন অপারেটরেও এফএনএফ সুবিধা দিচ্ছিলো। বাজারে একটা ভেতরে ভেতরে প্রতিযোগিতা তৈরি হচ্ছিল। তবে একথা সত্য  টেলিকম বাজারে একটা লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড শুরু থেকেই ছিল না। না থাকার সে দায়টা কার? সেটিও  নির্ণয় করা দরকার।

রেগুলেটরকে উদ্ধৃত করে খবরের কাগজগুলোর বয়ানে বলা হচ্ছে, বহু প্যাকেজে বিভ্রান্ত গ্রাহককে একটা সহজ সমাধানে নিয়ে এসেছে,  অভিন্ন কলরেট। এর সাথে আমার দ্বিমত নই।

তবে খরচাটা আরেকটু কমানো দরকার ছিল। এটি যদি ফ্লোর প্রাইস ৫০ পয়সা না করে আরেকটু কমানো যেত। ৩০ পয়সা বা ৪০ পয়সা তাহলে ঠিক  সুবিধা হতো।  সেটি সুবিধাটা কিন্তু রেগুলেটর এখনো নিশ্চিত করতে পারে।

রেগুলেটরের যুক্তি অবশ্য আমি নাকচ করি না। তারা বলত চাইছে, আমরা  যে বক্তব্য পাচ্ছি সেটি কেবল ২৫ পয়সা মিনিটে কথা বলা নিয়ে। কিন্তু অফনেট কল করার জন্য যে  এক টাকা বা তারো বেশি  চার্জ করা হতো, সেটি কিন্তু কেউ বলছেন না। আমরা বাজার অ্যাসেস করে এক সুষম  কলরেট ঠিক করেছি। গ্রাহকরা সহসা এর উপকার সম্পর্কে বলবেন।

অভিন্ন কলরেটর পক্ষে থাকা অপারেটরদের যুক্তি অভিন্ন কলরেট চালুর আগে  অপারেটর ভেদে অন-নেট কলের মিনিট প্রতি গড় মূল্য ৩৫ থেকে ৫৩ পয়সা। অফ-নেটের ক্ষেত্রে  মিনিট প্রতি ৮৫ পয়সা থেকে  ১ টাকা। সব অপারেটরের গড় কলরেট বিবেচনায় আনলে অন-নেটের গড় মূল্য মিনিট প্রতি ৪৯ পয়সা এবং অফ-নেটে ৯১ পয়সা।

বাজার প্রতিযোগিতায়  নিজস্ব ব্যবসায়িক কৌশলের অংশ হিসাবে প্রত্যেক অপারেটরের ভিন্ন ভিন্ন প্যাকেজ দিতো।  যেমন কোন প্যাকেজে অন-নেট কলের মিনিট প্রতি মূল্য ৫০ থেকে ৬০ পয়সার উপরে। আবার কোন প্যাকেজে অফ-নেট কলের মিনিট প্রতি মূল্য ১ টাকা ২০ পয়সা থেকে  ১ টাকা ৪০ পয়সার উপরে। অর্থ্যাৎ অন-নেট ও অফ-নেট কলের মূল্য পার্থক্য থাকার কারণেই এই রকম প্যাকেজ প্রদান করা সম্ভব হচ্ছে। এতে করে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অফ-নেট কলের মিনিট প্রতি মূল্য অন-নেট কলের মিনিট প্রতি মূল্যের প্রায় ৩ গুণ।

একজন সাধারণ গ্রাহকের জন্য এই ধরণের মোবাইলফোন সেবা ব্যবহার করা কঠিন।  এর ফলে দেখা যায়, আমরা গ্রাহকরা সব সময় অন-নেট কল করতেই স্বাচ্ছন্দবোধ করছেন। গড়ে প্রতি মিনিট কলের জন্য গ্রাহকের খরচ হচ্ছে ৬৫ থেকে ৭০ পয়সা।   অন-নেট এবং অফ-নেট নির্বিশেষে কলের একক মূল্য মিনিট প্রতি ৫০ পয়সা নির্ধারণ করায়  বর্তমান বাজারের গড় অন-নেট মূল্য থেকে কম এবং অফ-নেট কলের মূল্য থেকে আরো অনেক কম।

বিটিআরসি বলছে অভিন্ন কলরেটর চালুর আগে  একজন গ্রাহক তার ১০ টি কলের ৮ টি  করতেন অন-নেটে। বাকি ২ টি অফ-নেটে। এই অন-নেট কলের আধিক্য হওয়ার একমাত্র কারণ হল, অন-নেট ও অফ-নেট কলের মূল্য পার্থক্য। একক মূল্য নির্ধারণ করা হলে অন-নেট ও অফ-নেট উভয় ধরণের কলেরই মিনিট প্রতি মূল্য কমেছে।

 যা-ই হোক না কেন প্রযুক্তি সেবা মূল্য  নির্ধারণে  সরকারকে আরো যাচাই করা উচিৎ। যাতে করে বাজার প্রতিযোগিতার সুফল গ্রাহক পেতে পারে।

'ছেলেটা যাকে প্রেমে কিনতে চেয়েছিল, লোকটা তাকে টাকায় কিনেছে!'



ছবি সৌজন্য: magazine.kolkata24x7.com
 
এক.
'ছেলেটা মেয়েটার মনে পেতে দিনের পর দিন -নিজের পড়া, কাজ, ঘুম সব নষ্ট করে। আর লোকটা সে মেয়েটাকে কিনে নেয় টাকা দিয়ে!'--
এ উপলব্ধি হবার পর আবিদুর রহমান এস্তেমাল করলো,  সে আর প্রেম ভালোবাসার মত কিছুর সাথে জড়াবে না! এমনকি সংসারীও হবে না। এটার উপর তার কতটা স্থির থাকা সম্ভব হবে, তা নিয়ে শঙ্কা আছে। কারণে অকারণে ফেসবুকে ঢুঁ মারা আর নারীদের চকচকে পিকচারে লাভ ইমো এখনো দেয়টা সে ছাড়তে পারেনি।   

দুই
 আবিদুর রহিমের যে অনুসিদ্ধান্তটা শুরুতেই বলা হয়েছে, সেটি  নারীবাদের সাথে যায় না। এটা  বুঝতে পারলেও আবিদুর রহিম এটা তার বয়ানে স্বীকার করে না। একটু ঘুরিয়ে বলে এটা তাঁর অভিজ্ঞতা।
অভিজ্ঞতা হতেই হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষে ভর্তির প্রথম ডাগর চোখ যে মেয়েটি তার রাতের ঘুম হারাম করেছিল, তার ছবি কল্পনা করে  ফেসবুকের  ফাইন্ড ফ্রেন্ড অপশনের বোতামে মাউচ রেখে অস্থিরভাবে ঘোরাঘুরি করেছিল একটা রাত- সে মেয়েটিকে আবিদুর তার হাতের কাছেও পেয়েছিল। রাখতে পারেনি।

তিন
অভাব কিসের ছিল? আবিদুর ব্যাখ্যা করে পারে না।
তবে অভাব একটা ছিল, সেটি টাকার। ছাত্র মানুষ এত টাকা ছিল না তার। চাইলেই কোন সিদ্ধান্ত নিতে পারে না সে। তার উপর  জেন্ডার বৈষম্য নিয়ে তার একটা গবেষণা কর্ম করার ইচ্ছা। ... সেই টাকা এখন আবিদুরের  হয়েছে! মেয়েটি তার হয়নি। 
সংসার বিবাগী হবার ব্রত নিয়ে আবিদুর প্রেমহীন জীবনের সিদ্ধান্তে অটল থাকার পরেও-  তার সামেন নতুন এক দুনিয়া খুলে যায়। প্রযুক্তি খোলা মাঠ তার সামনে তুলে ধরে আরেক জগত!  সে দুনিয়ায় নারীর পেছনে সময় ব্যয় করার দরকার নেই। তার এজন্টরাই উল্টোর তার সাথে যোগাযোগ করেন।

চার
-কেমন পছন্দ স্যারের! এজেন্ট জানতে চায় ম্যাসেঞ্জারে!
 -বিস্ময়ে হতবাক আবিদুর রহিম! এটাও বাস্তব। এমনও ঘটে!
 এজেন্ট  থেকে এজেন্ট নতুন নতুন কালেকশন।
আবিদুর হাসে... আহা জীবন। যে মেয়েদের  মনের গহীনে ডুব দিতে বহু পুরুষ দিনের পর দিন স্বপ্ন বুনছে। সেই নারীই ধরা দিচ্ছে এজেন্ট মারফ তার কাছে।

পাঁচ.
-টাকা! অর্থই সকল অনর্থের মূল! কে যেন বলেছিলেন। স্কুলে ভাবসম্প্রসারণে পড়েছিল আবিদুর। রেস সময় যা লিখেছিল, সেগুলো ভুল টাকাই সব কিছু চাকা ঘুরিয়ে দেয়!
আবিদুরের মনে পড়ে ক্যাম্পাসে ভর্তি পরীক্ষা দিতে আসার দিন, কলাভবনের সামের একটা ব্যানার। যেখানে একটা কথা লেখা- 'প্রেম একটি পুঁজবাদী চক্রান্ত!' ঘটনা সঠিক - তা এতদিনে  প্রমাণিত।

ছয়
তবুও নিজের মনে শঙ্কা- প্রেমহীন জীবন; নাকি টাকায় কেনা শরীর!  ভাবে আবিদুর.. ভাবে শরীর মানে ভোঁতা একটা বিষয়। তবুও শরীর ঘিরেই অর্থনীতির চাকা ঘোরে! তাহলে জ্ঞান!
রুশোর জীবনীতে চোখে রাখে- রাজনীতির দর্শনদাতা রুশো তার জীবনীকে বলছেন ঈশ্বরের সামনে তুলে ধরার মত একটি নিপাট-নির্মোহ সত্য জবানবন্দী।  আবিদুরও  মনে করে তেমনই-  নিপাট নির্মোহ! তবে ... সময়!! 

ফেসবুক-কুরুক্ষেত্র


ফেসবুক এখন যতটা না সামাজিক যোগাযোগ তারচে বেশি সামাজিক অসুখ। এ অসুখ চারদিকে। নিরাপত্তা বলেন, আর ব্যক্তিগত গোপনীয়তা! সবই এখন সঙ্কটে ফেলছে  জাকারবার্গের  জাদুবই!

বহু আগে থেকেই আমরা সিরয়াল আর সিনামার সমালোচনা করে আসছি- একটা অসম সমাজের আকাঙ্খা বানানোর অভিযোগে। এখন সেটি হাতে হাতে- মানুষের মননে ঢুকিয়ে দিচ্ছে ফেসবুক। বিষয়টি এখন এমনটাই দাঁড়িয়েছে যে, ফেসবুকের জন্যই আমরা অানেক আবেগ  উচ্ছ্বাস, শোক প্রকাশ করি। ডিজিটাল মিলাদ মাহফিলও হয়। বিয়ে-শাদিও। কী চমৎকার!

এমন আবেগ- স্পর্শহীন জীবন এখানে নানা বিষয়ে ব্যাঘাত ঘটায়। তার মধ্যে অন্যতম-জীবনাচরণে বৈচিত্র আনতে আনতে, কিম্বা নিজেকে প্রকাশের অতি-উৎসাহে এখন শোবার ঘরের ছবিও ফেসবুকের পাতায় চলে আসে।  কিছু বিষয় থাক না গোপনে বলে আমরা যেটি আগে থেকে ইয়াদ করতাম, সেটি এখন আর নেই।

অনেক তথ্য আছে  আগে ইন্টারভিউ করে জেনে নিতাম, সেটি এখন ফেসবুকের পাতায় আগেই থেকেই থাকে।  তাহলে মানব জীবনের- আড্ডা আনন্দ আর বন্ধুত্বের মাঝখানে ভাগাভাগির সময়গুলো ডিজিটাল  যামানায় লুপ্ত হতে থাকে-এটাই এখন চরম বাস্তব অবস্থানে এসে দাঁড়িয়েছে।

আমি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে খারাপ বলছি না, মোটেও। কিন্তু অন্যের চরিত্র হনন, ঈর্ষা তৈরির একটা বড় কারখানাও এ ডিজিটাল দুনিয়া। ফেসবুক  জীবনের গোপনীয়তা সুরক্ষার নীতিমালা ও সুযোগ তৈয়ার করেছে, সেটি আমরা এনজয় করি না।

আগে বন্ধুর সঙ্গ পেতে হাহাকার থাকত, এখন লাইন কমেন্টের জন্য হাহাকার। মন খারাপ। ফেসবুকে কে কোন ছবি দিলো, কার ছবি কেমন হলো, কে কার ছবিতে কি ধরণের ইমোজি দিলো তা নিয়ে তো বিশদ আলোচনা-বিস্তর ঝগড়ার কুরুক্ষেত্র -সবখানে।

তাই বলি সুস্থ জীবন চাইলে ফেসবুকে সময় কম করে কাটান। বই পড়েন।  বেড়াতে যান। বেড়াতে যাবার সময়  ফিচার ফোন নিয়ে যান। চার্জ থাকবে ভালো, ঝগড়াটাও কমবে। সময় আনন্দময় হবে । ধন্যবাদ।

বায়তুল্লাহ





কালো গিলাফ। রোদে পুড়ে অনেকটা ধূসর। সোনালি দরজা উজ্জ্বল। পৃথিবীর সবচেয়ে সম্মানিত ঘর বায়তুল্লাহ। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতায়ালা যে ঘরকে মানুষের নামাজের জন্য কিবলা হিসেবে নির্ধারণ করেছেন।

প্রতি বছর হজের আগেই বদলে ফেলা হয় গিলাফ। নতুন গিলাফ দেখে চোখ জুড়িয়ে যায়। কালো গিলাফের ওপর সোনালি রঙের ক্যালিগ্রাফি। কালো কাপড়ে ও বুননে অসাধারণ শৈল্পিক সৌন্দর্যে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে কিছু আয়াত।

বায়তুল্লাহর গিলাফ তৈরি করার জন্য মক্কা নগরীতেই রয়েছে আলাদা কারখানা। যেখানে বছরজুড়েই গিলাফ তৈরির কাজ করেন কর্মীরা। তাদের যত্ন-ভালোবাসায় গড়ে ওঠা গিলাফ মক্কা মুকাররমায় জড়িয়ে দেন সৌদি বাদশাহ। যিনি আল্লাহর ঘরের খাদেম হিসেবে পরিচিত!
হজরত ইবরাহিম আ: তাঁর ছেলে হজরত ইসমাইল আ:কে সাথে নিয়ে ঘরটি পুনর্নির্মাণ করেছিলেন। সে ঘরটি পরে মূর্তিতে ভরে রেখেছিল মক্কার মানুষ। আল্লাহ তাঁর প্রিয়নবী হজরত মুহাম্মদ সা:কে দিয়ে সেই মূর্তির বিপক্ষে কঠোর ঘোষণা দিলেন। মক্কা মুকাররমাকে মূর্তিমুক্ত করা হলো। সেখানে আজান হলো। মুসলমানেরা নামাজে শামিল হতে থাকলেন।

মক্কা মুকাররমাকে শেষ নবীর উম্মতদের জন্য কিবলা নির্ধারণের আগে বায়তুল মুকাদ্দাস ছিল মুসলমানদের কিবলা। মাদিনাতুন নবীতে হজরত মুহাম্মাদ সা: মসজিদে নামাজরত অবস্থায় আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতায়ালা কিবলা বদল করে দেন। যে মসজিদে কিবলা পরিবর্তন করা হয়, সেটাকে বলা হয় মসজিদে জুল কিবলতাইন। হজযাত্রীরা সেই মসজিদে গিয়ে থাকেন এবং মসজিদে প্রবেশের পর সুন্নাত হিসেবে দুই রাকাত নামাজ আদায় করেন।

জীবনের যে স্বপ্নময় ইতিহাসের বর্ণনা কানে বেজেছিল বছরের পর বছর সে ইতিহাস নিজ চোখে দেখার দুর্লভ এক সুযোগ আরব দেশে। যেটি পরে বাদশাহ সাউদ তাঁর নামানুসারে সাউদি আরব করেছিলেন।

রুক্ষ মরুর দেশে আল্লাহ তাঁর রহমতের ধারা বইয়ে দিয়ে যে অসাধারণ বৈচিত্র্য সৃষ্টি করেছেন, তা এ দেশটি না দেখলে বোঝা যাবে না।

মক্কা মুকররামায় ঢুকে নামাজ আদায় করে তাওয়াফ শুরুর করার অনুভূতি অসাধারণ। তার পাশে সাফা ও মারওয়া পাহাড়। বহুবার সায়ি করেছি। মা হাজেরা ছেলে হজরত ইসমাইল আ:-এর জন্য পানির খোঁজে দুই পাহাড়ে ছুটেছিলেন। এখানে সায়ি করার সময় জানিনি দুই পাহাড়ে সাতবার যাতায়াতে কতটা পথ পাড়ি দিতে হয়, পরে জানলাম সাড়ে তিন কিলোমিটার। এ পথ এখন হজযাত্রীরা পাড়ি দেন শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ব্যবস্থায়। মা হাজেরা যখন ছুটেছিলেন সে সময় মক্কা নগরীর এ দু’টি পাহাড়ের মাটিতে পা দেয়ার অবস্থা নিশ্চয় ছিল না। যেরকম এখনো বায়তুল্লাহ চত্বরের বাইরে খালি পায়ে মাটিতে পা রাখার সাধ্য নেই। সে সময় প্রিয় সন্তানের পানির পিপাসা মেটানোর জন্য মা হাজেরার এ ছোটাছুটি কতটা কষ্টসাধ্য ছিল মনে করলেই হৃদয় ভারাক্রান্ত হয়ে যায়।

 সন্তানের প্রতি মায়ের এমন অপরিসীম টান, ভালোবাসা ও দায়িত্ববোধের এর চেয়ে বড় কোনো উদাহরণ অজানা। আল্লাহ মা হাজেরার সন্তানের জন্য নিজের জীবন বিপন্ন করে ছোটাছুটির প্রতিদান এবং তাঁর প্রিয়নবী হজরত ইসমাঈল আ:-এর জন্য বইয়ে দিলেন একটি কূপ। যে কূপের পানি জমজম হিসেবে পরিচিত। এ পানির কেবল তৃষ্ণা মেটানো নয়, খাদ্যগুণও রয়েছে। সেই হজরত ইসমাইল আ:-এর শিশুকালে যে কূপের সৃষ্টি, সেটি কেয়ামত পর্যন্ত জারি থাকবে ইনশাআল্লাহ। পৃথিবীর কোথাও যদি এক ফোঁটা পানযোগ্য পানিও না থাকে, এখানে থাকবে, যা আল্লাহর অশেষ এক নিয়ামত।

জীবনে বিশ্বের বহু দেশে বিভিন্ন ধর্মের মানুষের এবাদতখানা দেখার সুযোগ হয়েছে, মক্কাতুল মুকাররমা দেখার পর মনে হয়েছে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ ও অসাধারণ যে ঘর এবং কাঠামো পর্যটন করলাম সেটি মক্কা মুকাররমা।

ঘরের চাকচিক্য নেই ঠিকই কিন্তু এ ঘর এমন একটা বাঁধন তৈরি করেছে, যে বাঁধন কেবল তার দিকে টানে। আল্লাহর প্রেমে মানুষকে অসাধারণ এক জীবনের খোঁজে টানে। সে টান পৃথিবীর সব আবেগ, ভালোবাসা, ক্ষমতার এবং সম্পদের টানের চেয়েও অসাধারণ।

আল্লাহর নির্দেশে ইবরাহিম আ: তাঁর প্রিয় ছেলে ইসমাঈল আ:কে তাঁর মা বিবি হাজেরার সাথে এ ঘরের কাছেই রেখে গিয়েছিলেন। সে সময় এই স্থাপনা দৃশ্যমান ছিল না। আল্লাহ হজরত ইবরাহিম আ:, হজরত ইসমাঈল আ: এবং বিবি হাজেরার আনুগত্যটাকে এতটাই পছন্দ করেছেন, যাদের স্মৃতিকে হজের আয়োজনে প্রধান করা হয়েছে।

মক্কা মুকাররমায় তাওয়াফের সময় কখনো ক্লান্তি আসে না, অনেকটা পথ হাঁটলে যেমন বুক শুকিয়ে আসে, কষ্ট হয়, পা ধরে আসে, পানির তৃষ্ণা হয় এমন অনুভূতি হয়নি কখনো। মনে হবে জীবনের এ তাওয়াফে যদি অনন্তকাল ধরে আমরা সঙ্গী হতে পারতাম, তাহলে দুনিয়াতে আর অন্য কিছু চাইবার থাকত না।

মক্কা মুকাররমার আঙিনায় যাওয়ার পর পৃথিবীর কোনো ভাবনা-চিন্তা আর মাথায় থাকে না। শরীরে কোনো ধরনের প্রাকৃতিক সঙ্কটও দেখা যায় না। জীবনে এ রকম বাস্তবতা দ্বিতীয়টি উপলব্ধি করার ঘটনা কখনো ঘটেনি। এমন জীবন, যে জীবনে মক্কা আল মুকররমার কাছে দাঁড়িয়ে আল্লাহর দরবারের কিছু চাইবার যে সামর্থ্য, সেটি যেকোনো বিবেচনায় বিশেষ নিয়ামত ছাড়া আর কিছু নয়।

ইসলামে মানুষের পূজাকে হারাম করেছে, শিরককে কঠিনভাবে হারাম করা হয়েছে। সব গুনাহ মাফ করা হলেও শিরককে মাফের আওতায় আনা হয়েছে তখন, যখন বান্দাহ তাওবা করবে। কিন্তু না বুঝে আমরা অনেক শিরক করছি। যার জন্য হাদিস শরিফে বলা হয়েছে, যে ঘরে কোনো জন্তু কিংবা প্রাণির ছবি থাকে, সে ঘরে রহমতের ফেরেশতা প্রবেশ করে না।

মক্কা মুকাররমার আঙিনাজুড়েই আল্লাহর নবী আ:দের স্মৃতি। মহানবী হজরত মুহাম্মাদ সা:-এর জন্মভিটে, আবার ইসলামবিরোধীদেরও আঙিনা ছিল এখানে। আবু জাহেলের বাড়ি ছিল বায়তুল্লাহর কাছে। রাসূল সা:-এর জন্মভিটে লাইব্রেরি বানানো হয়েছে। আবু জাহেলের ভিটেকে করা হয়েছে ওয়াশরুম।

রাসূল সা:-এর প্রথম স্ত্রী উম্মুল মুমেনিন খাদিজাতুল কুবরা রা:-এর কবর রয়েছে এ মক্কা নগরীতে। এ নগরীতেই রাসূল সা: জাবালে নূর পাহাড়ের হেরা গুহায় ধ্যান করেছেন। বিস্ময়কর একটা বিষয়। স্থলভূমি থেকে প্রায় ১ ঘণ্টা হেঁটে পাহাড়ের উপরে উঠলে হেরা গুহা। এ রকম এক জীবন রাসূল সা: বেছে নিয়েছিলেন, তাঁর উম্মাতের হেদায়াতের বার্তা বয়ে আনার জন্য, আর সে উম্মত এখন ধর্মের ব্যাখ্যা করে নিজের মতো আর পালন করে সুবিধা মতো। এর চেয়ে কষ্টের কিছু হতে পারে না।

রাসূল সা: বিদায় হজের ভাষণ দিয়েছিলেন জাবালে রহমতে দাঁড়িয়ে। মানব ইতিহাসে এ ভাষণের সাথে কোনো ভাষণের তুলনা চলে না। এটি এমন এক ভাষণ, যেটি মানব ইতিহাসে মানুষের অধিকার আর ইনসাফের সমাজ গঠনের অনন্যসাধারণ দৃষ্টান্তমূলক নির্দেশনা হয়ে আছে।
শেষ।।
প্রথম প্রকাশ, ডিসেম্বর, ২০১৪ ।।

কিশোরদের আন্দোলন || সবল হৃদয়ের মানুষরাই আমাদের প্রেরণা

অভূতপূর্ব কোন ঘটনা এখন আর আমাদের আলোড়িত করে না। একটা ভয় চেপে ধরে। কালো 'ত্যানা'  দিয়ে চোখ পেছানো লোকের ভয়। ভয় 'রাজাকার' তকমার। এ সব উপেক্ষা করে কিশোররা রাস্তায় যে নেমেছে, তাদের  সাহসের  কাছে মাথা নুয়ে আসে। তাদের বাবা মায়েদের প্রতি শ্রদ্ধা। কারণ সন্তান সবার কাছেই শ্রেষ্ঠ প্রাপ্তি। সেই শ্রেষ্ঠ প্রাপ্তি-সন্তানদের  অন্যায় নীরবে সয়ে যাওয়ার বদলে প্রতিবাদে ফেটে পড়ায়  বাধা দেননি। এমন সবল হৃদয়ের মানুষরাই আমাদের এখন প্রেরণা।

দুর্ভোগে অনেকে পড়েছেন। আমিও পড়েছি। আমার সন্তানরাও। তারপরে এ আন্দোলন মাসের পর মাস চললেও কসম, আমি বিরক্ত হবো না।   অন্যায্য দাবি তো তারা করছে না। সবার জন্য, সব দলে মতের মানুষের জন্যই তারা বলছে-  রাস্তা নিরাপদ হোক। সেটি চালকদের জন্যও দরকার।  যারা মানুষ পিষে মারে।  সে সব পিশাচ নরকের কীটদের জন্যও নিরাপদ রাস্তা দরকার, যারা মানুষ মেরে ফেলা কীটদের সুরক্ষা করে- তাদের জন্যও। 

আমার  বছর আঠারোর নগরজীবনে দেখা সবচেয়ে সুশৃঙ্খল,  পরিচ্ছন্ন  আন্দোলন যদি বলি, তাহলে এ কিশোরদের আন্দোলন। সিরাতুল মুসতাকিমে কোন চালকের  ভয় নাই। মানে লাইসেন্স আছে, গাড়ি চালান।  উল্টো রাস্তায় যাচ্ছেন না। তাহলে আপনাকে কেউ ঠেকাবে না।  এ রকম নিয়ম তো সরকারই বাস্তবায়ন করতে পারেনি। অথচ সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য রাষ্ট্র কি-না করেছে।  

দু'টো  কিশোর-কিশোরীকে 'জাবালে নূর' বাস পিষে মেরে ফেলার পর বহু কুৎসিত মানুষের মন্তব্য আমরা শুনেছি।  সন্তানসম বাচ্চারা রাস্তায় নেমে আসার পর কোন কোন ইশকুল কলেজ   অভিভাবকদের চাপে রেখেছে এমন খবরও পড়েছি।  তবুও এসব বাচ্চারা রাস্তায় আছে।  একেবারেই ভিন্ন এক মডেলে। অনন্য সে মডেল।  আমাদের প্রিয় বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৪৭ বছরের সবচেয়ে বড় যে সব অর্জন,  তার মধ্যে এ সব  কিশোরের আন্দোলন অনন্য।  ইতিহাস যদি পেশি শক্তির  তল্পিবাহক না হয়, তাহলে এ আন্দোলন তার নিজ মহিমায় উজ্জ্বল থাকবে।  

এ কিশোর-কিশোরীরা, যারা প্রতিদিন মায়ের হাতে বানানো টিফিন আর বাসার  ফুটানো পানি বোতল ভরে ইশকুল-কলেজে আসে- সে সব বাচ্চারা রাস্তায়, বৃষ্টিতে ভিজে  'নিরাপদ সড়ক' আন্দোলন করছে। এর বাইরে কিছু না। তবুও লাঠিঅলারা তাদের উপর লাঠি চার্জ করেছে।  বাচ্চাদের রক্তমাখা শার্টে  আর মুখের ছবিও  সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘুরেছে। 

অথচ এ বাচ্চারা  একটি স্থায়ী সঙ্কট সমাধানের জন্য রাষ্ট্রের প্রতি তাদের নিবেদন জানাচ্ছে।  এখানে সক্ষম রাজনীতি, অক্ষম রাজনীতির কোনটাই নাই।  এ সব বাচ্চারা কোন দলেরও নয়।  তবুও এরা কটাক্ষের মধ্যে পড়ছে। 

তবুও অক্ষম এই যুবাদের ক্ষমা করো তোমরা। নিরাপদ সড়কের আন্দোলন থেকে পেছনে ফিরো না। তোমাদের জয় হোক বা না হোক  ইতিহাস তোমাদের স্মরণ করবে ভালোবাসায়। শুভ হোক নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলন।

BTRC finds evasion of Tk 11,530cr by GP | theindependentbd.com

BTRC finds evasion of Tk 11,530cr by GP | theindependentbd.com


BTRC finds evasion of Tk 11,530cr by GP
Bangladesh Telecommunication Regulatory Commission (BTRC) in its latest audit has traced financial discrepancies worth Tk 11,530 crore in Grameenphone (GP) balance sheet ranging between 1996 and 2017. The telecom regulator commissioned a third-party firm to conduct an information system audit of the GP records for the said period.
In the 215th meeting of the BTRC held at its headquarters in the capital on July 19, the regulator was formally made aware of the evasions of the large sum in VAT and taxes by the largest telecom operator in the country.
When approached for comments,  Grameenphone sent an e-mail communiqué saying, “As a general principle, we do not comment on rumors and speculations. The System Audit by a BTRC appointed auditor is a long pending issue, and we expect that there would be dialogue with the operators before arriving at a conclusion.”
We can only comment further on conclusion of any further discussions, added the e-mail. During a first set of audit conducted earlier in 2011, financial discrepancies worth Tk 3,034 crore by the GP were also identified. GP, instead of paying the amount to the state coffers, went to the court claiming that the audit conducted on their records was not of international standard.
The BTRC, taking the GP complaint in consideration, later made it mandatory to engage a foreign partner in the auditing process.
During a second phase of the GP audit, the BTRC appointed audit firm Toha Khan Zaman & Co. as the lead auditor on October 6, 2015, while India’s CNK &
Associates LLP was brought in as the associate auditor. They started proceedings on October 20 the same year. However, the audit process was delayed due to GP’s non-cooperation.
According to the BTRC documents, Toha Khan Zaman & Co. informed the telecom regulator through a letter that it was able to on-spot auditing at GP from July 19 the next year. The firm finally submitted its report to the BTRC on May 3 this year.
According to the report prepared by the two audit firms, the GP dues to the government stands at Tk 11,530.15 crore out of which the BTRC will get Tk 7,444.21 crore in taxes and the rest— Tk 4,085.94 crore—will go to the National Board of Revenue (NBR) in VAT.
The minutes of the 215th meeting, a copy of which is with the Independent, say the commission has accepted the audit report.
According to the meeting minutes, signed by the BTRC Secretary Md Jahirul Islam on July 23, the telecom regulator has decided to send GP a letter through its Legal and Licensing Division, asking the telco to pay the dues to the commission. The commission also plans to send a letter to the NBR chairman, informing him about the GP dues to the revenue board.
It was also decided that the minutes be sent to all the BTRC commissioners and director generals informing them about the decisions taken in the meeting.
However, none of the BTRC officials agreed to speak on record on the audit report conducted on GP.
One senior official of the regulator, preferring anonymity, told The Independent on Monday that the audit was conducted engaging an international firm and the whole process was completed in line with the telecom operator’s prescribed format.
The audit report was finalised after four sets of revision, said the official, adding “Whether you consider it as a large tax evasion or large financial discrepancy, it will remain as an exemplary regulatory work.”
When asked whether the commission will be able to realise the amount from the GP, the official quipped, “You will know that once we issue the demand note.” GP ownership structure
GP is a joint venture between Telenor (55.8%), the largest telecommunications service provider in Norway having mobile phone operations in 12 other countries, and Grameen Telecom Corporation (34.2%), a non-profit organisation of Bangladesh. The other 10 per cent shares belong to retail and institutional investors.

Recall doesn’t affect Valsartan brands

Novartis (Bangladesh) Limited has announced that its valsartan brands - Diovan®, CoDiovan®, Entresto® and Exforge® - are not affected by the recent Valsartan recall, says a statement.
Novartis wants to assure general public, healthcare professionals and other concerned stakeholders that the four valsartan brands, marketed in Bangladesh, are produced using its own research-based 'innovator valsartan' API, which is not affected.
The statement said Novartis produces its research based API for Valsartan only at its own manufacturing plants based in Switzerland and England, maintaining the highest level of quality.
Recent recall of valsartan is being done in 23 countries because an impurity was found during qualification tests of generic valsartan API (Active Pharmaceutical Ingredient) were manufactured by a certain Chinese third party manufacturer, it said.
The impurity was identified as N-Nitrosodimethylamine (NDMA).
Novartis wants to reassure its stakeholders that the physicians and patients can use the mentioned medicines confidently, it added.
Source: http://today.thefinancialexpress.com.bd/trade-market/recall-doesnt-affect-valsartan-brands-1532457395

A ready market to tap into | theindependentbd.com Mohammed Adnan Imam, MD of Genex,told The Independent : considering the availability of accounts graduates in the country among which only 15–20 per cent take up jobs based on their education qualifications.

A ready market to tap into | theindependentbd.com



Mohammed Adnan Imam, managing director of #Genex, another large outsourcing company, told The Independent that the prospect of accounting BPO in Bangladesh is huge, considering the availability of accounts graduates in the country among which only 15–20 per cent take up jobs based on their education qualifications.

“About 80 per cent of these graduates are doing something which has minimum or no connection with their educational qualifications. Some freelancing unstructured accounting work is already being done for foreign firms from here. Taken together, they can make great case studies and success stories, which will enable Bangladesh to make a foray into global accounting BPO,” said Imam.

About his company, Imam said: “In Genex, we have a ready infrastructure and resources. We are now looking for opportunities. We plan to start outsourcing accounting services soon.”
Lauding the government, Imam said the ICT Division has been very supportive of the BPO industry. “We hope that some governance framework will be set up sooner or later to standardise the solution, quality and commercial framework of the BPO firms. This will provide a rationalised solution proposal and service delivery,” he added.





এমবিএস ভাইরাসে আক্রান্ত ফিলিস্তিন

গণতন্ত্রের লড়াকু বিশ্ব আচমকা এক যুবরাজের প্রেমে মগ্ন। তার নাম মোহাম্মদ বিন সালমান। পশ্চিমা দুনিয়ায় তার আদুরে নাম এমবিএস। ব্ল্যাক প্যান্থার দিয়ে হলিউড সিনেমা সৌদি আরবে উন্মুক্ত করার আগে রুপার্ড মারডুকের অতিথি হয়েছেন কয়েকদিন আগে।
৩০ বছর বয়সী  যুবরাজ সৌদি আরবের ভেতরে-বাইরে অনেক পরিবর্তনের আভাস দিচ্ছেন, সেটি শুনে ও জেনে ভালো লাগছে। তবে সে সব পরিবর্তন মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতি, সমাজ এবং সংস্কৃতিতে ঠিক কী ধরণের পরিবর্তন আনবে, সেটি এ মুহূর্তে নিশ্চিত করে বলা খুবই কঠিন বলে, আমাদের কিছু সময় অপেক্ষা করতে হবে।
কঠিন বলছি এ কারণে যে, এখানে স্বার্থ সব সময় সমান্তরালে হাঁটে না, নড়াচড়া করে। নড়াচড়া করলে এখানে মুসলমানদের জন্য সন্ত্রাসবাদী, সন্ত্রাসবাদে মদদ দেওয়া কিংবা জঙ্গি শব্দ সহজে বিপণন ও বিক্রয়যোগ্য হওয়ায় এমবিএস বা তাদের ভাই বেরাদাররা সব সময়ই একটা ঝুঁকি বা সহজ বাংলায় চাপের মুখে থাকেন, থাকতে হবে।  এ সব চাপ কমানোর জন্য নানা কিসিমের সঙ্কট লেগে থাকে, সে সব সঙ্কট যুদ্ধ পর্যন্ত গড়ায়! যেমন ইয়ামেনে মানুষ খুন করছে সৌদি আরব। সিরিয়ায় আমেরিকার সাথে গলা মিলিয়ে, হাত লাগাচ্ছে রাসায়নিক অস্ত্রে।
শিয়া ও সুন্নি বিরোধ, তুর্কি-কুর্দি বিরোধে হাল আমলে মুখরোচক আলাপ। তবে এর থেকেও সুস্বাদু রাজনৈতিক চর্চা মারাত্মক আকার ধারণ করেছে বিশ্বজুড়ে।
বিবিসি বাংলার অনলাইনে এপ্রিল ৩, ২০১৮ প্রকাশিত খবরের একটা অংশ এ রকম —  ‘যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাগাজিন আটলান্টিককে দেয়া সাক্ষাৎকারে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মেদ বিন সালমান বলেছেন, ইসরায়েলি এবং ফিলিস্তিনি উভয় জনগোষ্ঠীরই নিজস্ব ভূমির পূর্ণ অধিকার আছে।’
অত্যন্ত উচিৎ কথা। এর সাথে দ্বিমত করবেন এমন মানুষ নাই।  তবে ইসরাইলের  অধিকার যদি ফিলিস্তিনিরা বা অন্য কোন পক্ষ খর্ব করতো, তাহলে এমবিএসের কথা যুতসই।  সে রকম কোনও প্রেক্ষাপট এটা না ।  কৌশলী এমবিএস অবশ্য একই সাথে ফিলিস্তিনের কথা উল্লেখ করে নিজেকে ‘সাধু’ প্রমাণ করতে চেয়েছেন ! কিন্তু তিনি যে  নির্যাতক ও নির্যাতিতকে সমানভাবে বিবেচনায় আনলেন, সেটি  অন্যায্য ।
এমবিএসের কথার প্রেক্ষাপটই দ্বিমত করার জায়গা।  ইসরাইলের ভূমির পূর্ণ অধিকার আছে। কথাটা তিনি যখন বলছেন,  সে সময় তিনটি বিষয় ইসরাইল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে দাবানল ছড়িয়ে রেখেছে-
(১) ইসরাইলের ভূমি আগ্রাসন। ইসরাইল ফিলিস্তিনের ভূমি দখল করেই যাচ্ছে। প্রতিদিন ইসরাইলি হত্যা করছে তারা।
(২) জেরুসালেমকে ইসরাইলের রাজধানী ঘোষণা করা হয়েছে। আমেরিকা এতে মদদ দিচ্ছে।
(৩)  ইসরাইলি বর্ববরতায় বিপন্ন ফিলিস্তিনিদের সহায়তার অভিযোগে কাতারের উপর আরব দেশেগুলোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ। যদি এটা প্রত্যক্ষভাবে বলা হয়নি । তবে এটাই পরোক্ষ এবং অন্যতম প্রধান কারণ ।
এ রকম প্রেক্ষাপটে এমবিএসের বক্তব্য  ইসরাইলিদের বর্বরতার আগুনে ঘি ঢালবে। এতদিন ইসরাইল প্রকাশ্যভাবে আমেরিকা ও তাদের সহযোগিদের সহায়তা ও সমর্থন পেয়ে আসছিলো, সন্ত্রাসবাদের ঘৃণ্যতম চর্চার জন্য এবার এমবিএস ভাইরাসও  ফিলিস্তিনিদের বিপন্ন করার বহরে যুক্ত হলো।  এ সংযুক্তি ফিলিস্তিনের বিরুদ্ধে ক্রমাগত সঙ্ঘাতকে জায়েজে সহযোগিতা করবে এমবিএস ভাইরাস।  তাই এর প্রতিবাদ হওয়াটা জরুরি।
তবে প্রতিবাদ হচ্ছে না। তারও কারণ আছে। সাধারণত সৌদি বাদশারা মুসলমানদের মোড়ল হিসাবে পরিচিত। এর কারণটা এ সব ভ্রষ্ট মানুষ নয়। এখানে  মুসলমানদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সা:) এর রওজা মুবারক এবং মহান আল্লাহ তায়ালার ঘর কাবা শরীফ অবস্থিত। এ কারণে এর গুরুত্ব, মর্যাদা এবং তাৎপর্য মুসলমান মাত্রই কবুল করে থাকেন।
আল্লাহ ও তাঁর নবী (সা:) এর প্রতি মুসলিমদের  অনিঃশেষ ভালোবাসাকে পুঁজি করে সৌদি রাষ্ট্র পরিচালকরা  মধ্যপ্রাচ্যে নানা অপকর্ম করে যাচ্ছে। এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদের সময় এখনই।
সৌদি  ইয়ামেনে মুসলমানদের হত্যা করছে। আমেরিকার সাথে জোট বেঁধে মানুষ খুনকে জায়েজ করছে।  মুসলমানদের মধ্যে বিভেদ বর্ণ বিভেদ  তৈরি করছে।  তাই হত্যা, খুন আর সন্ত্রাসের আঞ্চলিক রাজনীতিতে আমেরিকার তল্পিবাহক হিসাবে এতদিনে গোপনে কাজ করলেও এখন প্রকাশ্যে এসেছে সৌদি।
সৌদি আরবের প্রতি মুসলিমদের অকুণ্ঠ সমর্থনের সুযোগে এ মোড়লিপনা  মধ্যপ্রাচ্যে মানুষ হত্যাকে উৎসাহ দিয়ে যাচ্ছে।  এর প্রতিবাদ হোক বা না-্ই হোক, এটা নিশ্চিত যে,  নির্যাতিত মানুষের জয় হবেই হবে।

সমাজে অটিজম আক্রান্ত শিশুদের সহজভাবে গ্রহণ করার মানসিকতা জরুরি

 ছবি: ওয়েবসাইট থেকে সংগৃহিত। 


অটিজম-উন্নয়নশীল বাংলাদেশের সামনে একটি নতুন চ্যালেঞ্জ। দীর্ঘ সময় ধরে অজিম সমস্যা জগতজুড়েই আছে। দেশেও এটি আলোচনায়।

সরকারের হিসাব বলছে, প্রতি ৫০০ শিশুর মধ্যে ১টি শিশু অটিজমে আক্রান্ত। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, দেশে বর্তমানে অটিজম স্পেকট্রাম ডিজঅর্ডারে আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা ১৪ লাখ।

আন্তর্জাতিক উদারাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশের (আইসিডিডিআর,বি) অটিজম দিবস ২০১৮ সালের একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য তুলে ধরে বলছে,  পরিবার ও চিকিৎসকদের জ্ঞানের অভাবে অটিজম আক্রান্ত রোগীর সঠিকসংখ্যা নিরূপিত নয়।   

এ রকম একটা প্রেক্ষাপটে অটিজম নির্ণয়ের জন্য সীমিত সুযোগেরও সঠিক প্রচারণা নেই।  জানিয়ে রাখি সরকারি হাসপাালগুলোতে অটিজম নির্ণয় ও এটি থেকে উত্তরণের জন্য 'শিশু বিকাশ কেন্দ্র' রয়েছে। দু'একটি বাদে অন্য সব হাসপাতালে প্রয়োজনীয় সুবিধা নেই।  

এটি আসলে আমার আলোচনার মূল বিষয় নয়, যে বিষয়টির প্রতি অটিজম দিবস ঘিরে আমি  বিষয়টির অবতারণা করেছি, সেটি হলো আপনার-আমার আচরণগত পরিবর্তনটা খুব জরুরি। অটিজম আক্রান্ত শিশু, ব্যক্তির প্রতি আপনার-আমার আচরণটা বদলাতে হবে। আপনি-আমি-আমাদের মনে হতে পারে - সঠিক আচরণই আমরা করছি। এ ধরণের শিশুদের প্রতি সহানুভূতিশীল।

যদি তা হয়, তাহলে এটা খুবই আনন্দের খবর। তবে বাস্তবতার নিরিখে আমি কিছু বিষয় এখানে বলতে চাই--- অটিজম আক্রান্ত ব্যক্তি সঠিক সময়ে সঠিক চিকিৎসার দরকার আছে ।  আছে অন্যসব মানুষের মতই তার প্রয়োজনীয় এবং দিনযাপনের অনুষঙ্গগুলোও। কিন্তু সেটি করতে আমরা তাদের উৎসাহিত করি না।

 আমি আবারো বলছি- আমরা তাদের উৎসাহিত করি না।  এ না-করাটা অপরাধ। এ অপরাধ দু'পক্ষ করছেন, এক পক্ষ হলেন- মা বাবা- আত্মীয় স্বজন। আরেক পক্ষ হলো সমাজ।

 পরিবার পরিজন চাইলেও  সমাজ এমন একটা চাপ তৈরি করে রাখে।পরিবারের অন্য সদস্যদের অনেকটা করুণাকাঙ্খি হিসাবে সমাজ বিবেচনা  করে থাকে। বিষয়টি এমন নয় বাচ্চাটার হার্টে ফুটো আছে, সেটি আপনি কার্ডিয়াক সার্জনের কাছে গিয়ে মেরামত করতে পারছেন। এটি এমন একটা সঙ্কট- একটা শিশুকে নিয়ন্ত্রণে আনতে অনেক সময়ের দরকার হয়।

 প্রথমে যদি শিক্ষার কথা বলি- সরকারি বা বেসরকারি স্কুলের ভর্তির ওয়েবসাইটে গেলে আপনি দেখেতে পাবেন অটিজম বাচ্চাদের পড়ার অপশন আছে।  আমি এটি বলছি  দেশের সবচেয়ে অগ্রসর শহর রাজধানী ঢাকাকে ধরে। কিন্তু অত্যন্ত বেদনার বিষয় হলো , এখানে অটিজম শিক্ষার্থী নেওয়া হয় না।

এখানে সরকারি বেসরকারি কোন প্রতিষ্ঠানই মূলধারার শিক্ষায় অটিজম আক্রান্ত শিশুকে নিতে চায় না। সরাসরি বললে, না নেয়ার জন্য যত রকমের ছুঁতো আছে, তার সবই তারা  ধরে রাখেন। আর আপনাকে মিথ্যা সান্ত্বনা দিয়ে থাকেন।

এ সুযোগকে সামনে রেখে রাজধানীকে অটিজম বাচ্চাদের জন্য 'বিশেষ স্কুল' প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে অতিরিক্ত টাকা খরচ করে অভিভাবকরা পড়িয়ে থাকেন, আর যেহেতু কোন একজন ব্যবসায়ী  দয়া করে স্কুল চালান, তাই  রাষ্ট্রের এখানে কিছুই করণীয় নেই। করণীয় আছে একটা অবশ্যই - সেটি সুন্দর বক্তৃতা মালা।

 বিশেষ স্কুলগুলোর ফি কমপক্ষে মাসে ৪ হাজার টাকা থেকে ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত। সেশন ফি' তো আছেই।  একটি স্কুল  প্রশিক্ষিত শিক্ষক ছাড়াই দিনের পর দিন স্পেশাল স্কুল চালাচ্ছে, কিন্তু এর কোন প্রশ্ন অভিভাবক করে পারবেন না। করলে তাকে বোঝানো হয়, আপনার বাচ্চার বহু সমস্যা , তবুও দয়া করে যে তাঁরা রাখছেন, এটা একটা বিশাল মাহানুভবতা। আপনি সেটাকে সেলাম না করে উল্টো অভিযোগ অপরাধ করছেন!  

একজন অটিজম আক্রান্ত বাচ্চার জন্য চার  রকমের থেরাপি দরকার হয়ে থাকে-- কারো ক্ষেত্রে ২ বা এক রকমের।
থেরাপিগুলো হলো--১. ফিজিও  থেরাপি, ২. অকুপেশনাল থেরাপি ৩. স্পিচ থেরাপি ৪. বেহেইভিয়ারাল থেরাপি।

সরকারিভাবে প্রতিবন্ধী ফাউন্ডেশন বিনামূল্যে থেরাপি দেয়। রাজধানী ডাকা ছাড়াও ঢাকার বাইরে অনেক জেলায় তাদের কার্যক্রম রয়েছে।  তবে সিআরপি প্রতি ৪৫ মিনিটের থেরাপির জন্য ৩৪৫ টাকা। অন্য সব বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ৪৫০ টাকা থেকে ৫৫০ টাকা নিয়ে থাকে।  তার উপর সিরিয়াল পাওয়া  খুবই কষ্টের।  কিন্তু এ কষ্ট, সমস্যা এবং থেরাপিস্টের অবহেলার কথা আপনি জানাতে পারবেন না, কারণ অভিযোগ করলে ওরা আপনাকে বাচ্চা নিয়ে সেখানে যেতে ডিসকারেজ করবে।  

 আপনি বাচ্চাকে নিয়ে রেস্টুরেন্টে খেতে গেলে আশপাশের লোকেরা বিরক্ত হয়। কারণ আপনার বাচ্চাটি হয়ত হঠাৎ করে হেসে উঠলো, বা কেঁদে ফেললো বা তার অনুভূতি প্রকাশ করতে ব্যর্থ হয়ে সে চিৎকার করলো, লাফালাফি করলো--- এ সব সবার কাছে অস্বাভাবিক।  তারপর ফিসফিস করে বলবে-- এমন বাচ্চা নিয়ে রেস্টুরেন্টে কেউ আসে! ওদের দেখি কাণ্ডজ্ঞানও নেই।

 ঢাকায় গণিত শেখানোর  কোচিং ব্যবসা করে আলোহা।  তারা বিশেষ বাচ্চাদের নেয় না। কারণ তাদের সে রকম ক্যাপাসিটি নেই! এটা বলেই তারা বিদায় করেন অভিভাবকদের।

অনেকে আছেন হয়ত আপনার কথা শুনে খবু মন খারাপ করলেন, তারপর ভুলে যাবেন। যখন কোন রেগুলার স্কুলে বাচ্চাকে ভর্তি করতে চাইবেন স্কুলে সবারই এমন একটা ভাব আপনি একটা  উটকো ঝামেলা ঘাঁড়ে চাপাতে এসেছেন। এখানে বাচ্চা নিয়ে ঢুকে পরিবেশটা নষ্ট করেছেন।

স্কুলে যাবেন, মাদরাসায় নিয়ে যাবেন--- সবখানে ও তো বসে না। আমরা ওকে নিয়ে কি করবো? খুবই  বাস্তবভিত্তিক প্রশ্ন। কিন্তু এটাকে কেউ চ্যালেঞ্জ হিসাবে নিতে চান না। এমনকি বাবা মা যদি বিশেষ শিশুর জন্য একজন শিক্ষকের বাড়তি বেতনও দিতে চান, তারপরও স্কুল এতে আগ্রহি হয়না।

 আমার নিজেরও একজন অটিজম আক্রান্ত বাচ্চা আছে, সে অভিজ্ঞতা থেকে আমি এটা লিখছি।

তবে সহযোগিতার হাত বাড়ানোর দিক থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সুইমিং পুল অনন্য। বাতিঘর সাংস্কৃতিক স্কুল, নালন্দা অন্যতম। অটিজম আক্রান্ত বাচ্চাদের জন্য সুইমিং দারুণ কাজ দেয়, বিশেষ করে হাইপার একটিভ বাচ্চার ক্ষেত্রে।

হতাশা নয়, কষ্ট। যারা মুখোশ পরে কথা বলেন, তাদের জন্য কষ্ট।  কথার চেয়ে  বিশেষ শিশুদের জন্য কিছু করার সময় এখন। সে করাটা -তাদের সহজভাবে গ্রহণ করার মানসিকতা। সেই মানসিকতাই পারে সমাজের বিশেষ শিশুদের জন্য স্বস্তি এনে দিতে।

 

ফালানী হত্যাকাণ্ডের বিচার সাত বছরেও হয়নি



সাত বছরেও বিচার হয়নি ফালানী হত্যাকাণ্ডের।  হবে বলেও মনে হচ্ছে না। বিএসএফের জেনারেল সিকিউরিটি ফোর্স আদালতে দুই দফা বিচারে ফেলানীকে গুলি করে হত্যায় অভিযুক্ত বিএসএফ সদস্য অমিয় ঘোষকে খালাস দেয়।

এরপর 'ন্যায়বিচার' চেয়ে ভারতের সুপ্রিম কোর্টে পরপর দুটি রিট করা হলেও আজও শুনানি হয়নি। এ অবস্থায় আসছে ১৮ জানুয়ারি একই সাথে ওই দুই রিটের শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে।

ভারতের মানবাধিকার সুরক্ষা মঞ্চ-মাসুম-এর কর্মকর্তা কিরিট রায়কে উদ্ধৃত করে বিবিসি বাংলা বলছে "এই মামলা ঝুলে থাকার সুর্নিষ্টি কোন কারণ নেই। এটা পড়ে আছে। যে কোন দিন এটা তালিকায় আসবে। সেই সময় আবার মামলা হবে"।

কিরিট বলেন, "সীমান্তে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। কিন্তু সেই অভিযোগ হয় পাচারের নয়তবা গরু পাচারের, অভিযোগ হয় ফেনসিডিল পাচারের কিন্তু সব ক্ষেত্রে তারা (আইন শৃঙ্খলা বাহিনী) আত্ম রক্ষার্থে গুলি চালায় বলে অভিযোগ রয়েছে ।এবং সেই রকম ভাবেই তারা থানায় অভিযোগ দায়ের করে যে তারা আক্রান্ত হয়েছ। কিন্তু ফেলানীর ব্যাপারটা সম্পূর্ণ আলাদা। সে নিরস্ত্র ছিল সে একটা মেয়ে ছিল, সেই মেয়েকে গুলি করে হত্যা করা হয়"।

২০১১ সালের ৭ জানুয়ারী ফালানীকে হত্যার পর  কুড়িগ্রামের নাগেশ্বর উপজেলা সীমান্তে গিয়েছিলাম। সেই সময় সেখানকার মানুষের সাথে কথা বলার সুযোগ হয়েছিল।

লেখাটি সে সময় লেখা-- ফের  শেয়ার করলাম, কারো বিরক্তির উদ্রেক করলে, দুঃখিত।

-------

ফেলানীকে ভারতের সীমান্তরক্ষীরা খুন করে ঝুলিয়ে রাখার দু'দিন পর ৯ জানুয়ারী ২০১১, সেই সীমান্তে গেছিলাম। এখনো মনে আছে ধূ ধূ বালুর নদী পার হয়ে নৌকায় চড়ে মোটর বাইকে করে সীমান্ত ঘেঁষা কাঁটাতারের বেড়ার কাছে পৌছানোর কথা! সেখানকার বহু মানুষের সাথে কথা হয়েছিল। স্থানীয় মানুষের কাছে সীমান্তে বিএসএফ'র নিপীড়নের যে বর্ণনা শুনছিলাম তা কতটা ভয়ঙ্কর---ঢাকায় বসে তার কষ্ট বোঝা অসম্ভব। ০

কুড়িগ্রাম জেলার নাগেশ্বর উপজেলা সীমান্ত। মধ্যরাত। ২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি। বিএসএফের গুলিতে যে কিশোরী মেয়েটা ঝুলে থাকল কাঁটাতারে নাম তার ফেলানী। হবু স্বামীর জন্য ভালোবাসার কথা লিখেছিল সে। সুঁই সুতোয় সেটি ফুটিয়ে তোলার চেষ্টাও চলছিল। সাথে একটি ফুল। হাত রুমালে নকশা করে নিজের মনের ভেতর লুকিয়ে রাখা আবেগটা জানাতে চেয়েছে সে। সেটি আর হয়ে ওঠেনি। কুড়িগ্রামের ঘন কুয়াশায় ঢাকা রাতের আঁধারে কাঁটাতারের বেড়ায় আটকে গেলো তার স্বপ্ন। সেই সাথে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বিএসএফের গুলিতে গেলো জীবন। ডান বুকে বিঁধে যাওয়া গুলির সাথে বেরিয়ে আসা রক্তের দাগটা স্পষ্ট ছিল। সাদা কাফনে জড়ানো কচি মুখের দিকে তাকিয়ে হতবিহ্বল হয়ে পড়েছিল কুড়িগ্রাম জেলার নাগেশ্বর উপজেলা দক্ষিণ রামখানা গ্রামের মানুষ। এমন বর্বরতা তারা আগে দেখেনি। তাই অনেকেই ছিলেন বিস্ময়ে বিমূঢ়।

দেশে ফেরার দু’দিন পর ৯ জানুয়ারি ২০১১---স্বামীর ঘরে যাওয়ার কথা ছিল ফেলানীর। নানী হাজেরা জানান, ছোটবেলায় দুই বোনের ছেলে মেয়েতে বিয়ের পাকা কথা। তার দুই ছেলে ও চার মেয়ের সংসারে ফেলানীর মা তৃতীয়। বড় মেয়ে আনজুমা বেগমের ছেলে আমজাদের কাছে ফেলানীর বিয়ের পাকা কথা ছিল। বাড়িতে সে হিসাবে সব প্রস্তুতি চলছিল। ফেলানী এলেই বিয়ে। যে দিন তার শশুরবাড়ি যাওয়ার কথা, সে দিন তাকে অন্তিম শয়ানে শুইয়ে দেয়া হলো দাদার পাশেই। রামখানায়, গাছের ছায়ায়।

২০১১ সালের ৯ জানুয়ারী সকালে ফেলানীর বাড়িতে গিয়ে দেখা গেল--ফোলানীদের ভাঙাচোরা ঘর। চারপাশে বাঁশের বেড়া। তারা দেশে  থাকতেন না বলে,মেরামত করা হয়নি।

ফেলানীর ব্যবহৃত সালোয়ার কামিজ, জুতো, পারফিউম জড়ো করে রাখা ছিল মাটিতে পাতা বিছানার এক কোনায়। এ সব কিছুর মধ্যে প্রিয়তম হবু স্বামীর জন্য নিজ হাতে তৈরি করা একটি হালকা গোলাপী রঙের সুতি রুমাল। রুমালের মাঝখানে ফুল আঁকা হয়েছে নীল রঙের কলমে। সুঁই সুতোয় তার অর্ধেক তুলেছিল ফেলানী। হৃদয় চিহ্ন আঁকা হয়েছে। তার মধ্যে কোনাকুনি করে দেয়া তীর। উপরের অংশে লেখা ইংরেজিতে ‘লাভ’। ভালোবাসার সেই আকাঙ্খা অপূর্ণই থেকে গেলো ফেলানীর মর্মান্তিক মৃত্যুতে।

ভারতের আসামে ক্ষুদ্র ব্যবসা করতেন ফেলানীর বাবা নুরুল ইসলাম। সেখানে স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে থাকতেন। ফেলানীর বাবা বলেছিলেন ভারতীয় দালালের সহায়তায় কিতাবের কুঠি অনন্ততপুর সীমান্তের ৯৪৭ নম্বর মূল পিলারের কাছে ৩ ও ৪ এস পিলারের মধ্যবর্তী স্থানে তারা দেশে ফিরছিলেন। সে জন্য মই দিয়ে ভোরের দিকে তাদের পার করার ব্যবস্থা করা হয়। এ সময় তিনি পার হতে পারলেও মেয়ের জামা আটকে যায়। ফেলানী ভয়ে চিৎকার করায় টহলরত বিএসএফ তাকে লক্ষ্য করে গুলি করে। এরপর সে  মারা যায়!

ফেলানীর মামা মোহাম্মদ হানিফ আলী বলেন, সকাল ৭টার দিকে তাকে বোন জামাই নুরুল ইসলাম জানান, বর্ডারে ভাগনীর লাশ ঝুলছে। বর্ডারের লোকজন তাকে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ-বিজিবির সদস্যদের কাছে না গিয়ে লাইনম্যানদের বলতে বললো। লাইনম্যান হলো বিজিবির সহযোগী সাধারণ মানুষ। তাদের সাথে আলাপ করে তিনি তাদের ইউনিয়নের গত নির্বাচনের চেয়ারম্যান প্রার্থী আলীম এবং মেম্বার রশিদকে নিয়ে বিজিবির সাথে আলাপ করেন। সে দিন সন্ধ্যা হয়ে যাওয়ায় বিএসএফ লাশ ফেরত দিলো না। পরের দিন লাশ হস্তান্তর এবং ৯ জানুয়ারি তারা লাশ পান এবং দাফন করেন।

তিনি বলেন, বোন জামাই মেয়ের গায়ে গুলি লেগেছিল কি না বলতে পারেননি। আমি গিয়ে ঝুলানো লাশ দেখলাম। সেখানকার লোকজন আমাকে বলল, ফেলানীকে মেরে লাশ ঝুলিয়ে রেখেছে বিএসএফ। গুলি হতে শুনেছেন পশ্চিম রামখানার  মিস্ত্রিটারির বাসিন্দা মো: জমির হোসেন। তার বাড়ি থেকে সীমান্ত ৫০ গজের মতো হবে।

তিনি বলেন, ভোরেই গুলির শব্দ পাই। চিল্লাচিল্লি শুনলাম। বেরিয়ে কিছু দেখিনি। কুয়াশার কারণে কিছুই দেখা যাচ্ছিল না। সকালে ৯টার দিকেও দেখলাম লাশ ঝুলে আছে।

যেখানে ফেলানীর লাশ ঝুলে ছিল তার ঠিক পাশেই বাড়ি আজিরনের। তিনি আমাকে বললেন,  ফজরের একটু আগে গুলির শব্দ শুনলাম। সকালে দেখি লাশ ঝুলছে। ১১টা থেকে সাড়ে ১১টার দিকে দেখলাম বিএসএফ লাশ নামিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।

ফেলানীর বড় চাচী লাইলী বেগম বলেন, ফেলানীর মতো কেউ যেন এ ভাবে মারা না যায়। ওরা (বিএসএফ) তাকে খুব কষ্ট দিয়েছে। ফেলানী নেই। এটা ভাবতেই খুব খারাপ লাগে।

তিনি বলেন, ভারত সরকার এটা কী বিচার করলো! আমরা এর সঠিক বিচার ও দোষীদের শাস্তি চাই। তার অভিযোগ ‘অত্যাচার করে’ হত্যা করা হয়েছে ফেলানীকে। একই রকম মনে করেন এলাকার অনেকে। যেমনটা বলেছেন, কাশীপুর ইউনিয়নের মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের সেক্রেটারি আবদুল জলিলও। তিনি বলেন, তাকে ‘নির্যাতন’ করে হত্যা করা হয়েছে। তবে ‘নির্যাতন’ নয় গুলিতেই তার মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন, ফেলানীর লাশের ময়না তদন্তের তিন সদস্যের অন্যতম ডা: অজয় কুমার রায়।

জীবনের দাম কম একটা আমরা জানি। বিশ্বজুড়েই স্বীকৃত এটা। কিন্তু গরিব মানুষের জীবন যেনো পাপ। অসুখ--- ক্যান্সার। কেটে ফেললে--- ছেঁটে ফেললেই মুক্তি। ফালানীর লাশ-রক্ত আর কষ্ট নিয়ে অনেক কথা হয়েছে। একজন মানুষ তার কন্যাকে হারালেন। তারা কষ্ট পেলেন। বহু রথি মহারথী তার কাছে গেলেন-- তিনি তার সন্তান হত্যার বিচার পেলেন না।
 বিচার হয়নি সাত বছরেও। এটাই বাস্তবতা।

ব্যস্ততা ... বৃত্তে বন্দী জীবন--- হচ্ছে না কিছুই!






 মেঠো পথ


১.
পুরনো দিনের কথা ভাল্লাগে না অার। সময়টা কেবলই বদলে যেতে থাকে। বিত্তের পেছনে বৃত্তাকার ঘোরাঘুরির হিসাব মিলাতে, নিজেকেই হারিয়ে ফেলি।
 
জীবন এত কঠিন কেন?
নিজেকেই প্রশ্ন করি!
কতগুলো বছর কেটে গেছে, নেশার মত, টেরই পাইনি।

২.
কথা ছিল পকেটে টাকা জমলে, নিমিষেই এখানে ওখানে ঘুরে বেড়াবো! হয়নি তার অনেক কিছুই!
সংসার, স্ত্রী, সন্তান--- সব কিছু নিয়েই ভাবনা ছিল! তবুও সব মিলে যায় না।
কৈশোর-- তারুণ্যের মত যৌবনের দিনগুলো মসৃন হয় না।

৩.
নিজেকে দোষারোপ করি না! যা পেয়েছি? কম কিসে! নিজেকে বলি।
তবুও নগর জীবনের এক অনিবার্য ব্যস্ততা কেড়ে নেয়, জীবনের অনেকগুলো সময়! বিত্তের পেছনে ছুটতে ছুটতে ক্লান্তি... নিজের ভেতর নিজেকে খুঁজে ফিরি! নিজের সেই সব স্বপ্ন, ইচ্ছাগুলো! 

৪.
চাইলেই এখন আর রোদ্দুরে বিকালের হঠাৎ করেই ট্রেনে চেপে বসা যায় না! গ্রামের মেঠো পথে কাদামাখামাখি করে ফেরা হয় না, নিজের গ্রামের বাড়ি।  টেম্পুর ভেতর সস্তা সুগন্ধি মাখা গ্রামীণ মধ্যবিত্ত নারী; পাউডারের গন্ধে আকুল করে যাওয়া পোশাক শ্রমিকের মুখ--- ভালো লাগতো। ভালো লাগতো--- বাংলা সিনেমা- --মান্নার প্রতিবাদকণ্ঠের সাথে হল ভর্তি দর্শকের উল্লাস।  

৫.
সমাজ-জীবন থেকে ছিন্ন হতে হতে, নিজেকে এখন ভীষণ একা লাগে! মনে হয়, এ নগরে ভিন্ন গ্রহের কেউ। বিদেশের মতই জীবন। প্রয়োজন ছাড়া কারো সাথে আলাপ নেই! খোঁজ নেয় হয় না কারো! এত্ত ব্যস্ততা? চাইনি।  তবুও বিত্ত বৃত্তের জীবনে বন্দী জীবন। 

৬.
এখনো আকাশে পাখি উড়ে গেলে, সূর্যটা ডুবে যেতে থাকলে পশ্চিমের  কংক্রিটের জঞ্জালে, তখনো  মন ছুটে যায় লঙ্গদুর গহীন বনে, কাপ্তাই লেকের জলে চোখ রেখে এক লম্বা নিঃশ্বাস--- সেনটমার্টিনের দক্ষিণপাড়ায় প্রবালের উপর শরীর এগিয়ে লোনা হাওয়ায় ভেসে যাওয়া সন্ধ্যার আলো-- এটুকই চেয়েছি ।

৭.
 ব্যস্ততা ...  বৃত্তে বন্দী জীবন--- হচ্ছে না কিছুই!!

BTRC to fix guidelines on ‘active sharing’ to ensure quality of service | theindependentbd.com

BTRC to fix guidelines on ‘active sharing’ to ensure quality of service | theindependentbd.comThe Bangladesh Telecommunication Regulatory Commission (BTRC) has decided to prepare a set of guidelines on ‘active sharing’ in the telecommunications sector to ensure quality of service (QoS).

প্রিয় পাঠকের লেখা : প্রশান্তিময় সবুজ গম্বুজ

প্রিয় পাঠকের লেখা : প্রশান্তিময় সবুজ গম্বুজ



তেতে ওঠা রোদ্দুরের দুপুরেও মরু দুলালের রওজার ওপর মাথা তুলে থাকা সবুজ গম্বুজের দিকে তাকালে প্রশান্তিতে মন ভরে যায়। সৌদি আরব যখন তুরস্কের শাসনে ছিল সে সময় রাসূল (সাঃ)-এর রওজা মুবারকের ওপর এ সবুজ গম্বুজ তৈরি করা হয়। পরে মসজিদুন নবীর স্থাপত্য নকশায় খানিকটা পরিবর্তন আনা হলেও গম্বুজটি ঠিক রাখা হয়েছে।
২০১৪ সালের অক্টোবরের শেষ সপ্তাহের এক দুপুরে হাজির হলাম মসজিদুন নবীতে। সারা জীবন কেবল এ মসজিদের ইতিহাস পড়েছি, প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এখানে তাঁর জীবনের একটা বড় অংশ কাটিয়েছেন। মদিনাতুন নবীকে শান্ত শহর বলা হয়, এখানকার মানুষ নবী করিম (সাঃ) কে সাদর সম্ভাষণ জানিয়ে গ্রহণ করেছিলেন। যে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে আমরা বাসে চড়ে মক্কা নগরী থেকে মদিনায় এসেছি, সেখানে নবী (সাঃ) তাঁর সাথীদের নিয়ে হিজরত করেছেন উটের পিঠে চড়ে। মরুর বুকে সূর্যের তপ্ত রোদ, নাক দিয়ে রক্ত পড়ার উপক্রম, সে সময় আল্লাহর নবী তাঁর প্রিয় সৃষ্টিকর্তার নির্দেশ মেনে ছুটে এলেন মদিনায়।
মদিনাতুন নবীতে রাতে পৌঁছার কারণে তাহাজ্জুদ ও ফজর নামাজ পড়ে হোটেলে ফিরে গিয়েছিলাম। দুপুরের দিকে নবী করিম (সাঃ)-এর রওজা মুবারক জিয়ারত করার জন্য ছুটলাম। সে অনুভূতি আর আকুতির কোনো বিবরণ দেয়ার সক্ষমতা কারো নেই। তামাম দুনিয়া থেকে মুসলমানরা হজ পালনের জন্য মক্কা মুয়াজ্জমায় আসেন। হজের বাধ্যবাধকতা না থাকলেও কেউ মদিনাতুন নবী (সাঃ) না গিয়ে ফেরেন না। এত কাছাকাছি এসে নিজের চোখে নবী করিম (সাঃ)-এর রওজা মুবারক দেখার সুযোগ হাতছাড়া করার ভাবনা কারো মাথায় আসতেই পারে না, আসেও না। তাই হজযাত্রীরা সবাই ছুটে যান মদিনায়। উম্মতের জন্য নিজের জীবন উৎসর্গ করা এবং সব সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য ত্যাগ করে নিজ দায়িত্ব পালনের যে অসাধারণ দৃষ্টান্ত নবী করিম (সাঃ) স্থাপন করেছেন, সেটি বিশ্বের ইতিহাসে অনন্য উদাহরণ হয়ে আছে।
তপ্ত পথ পাড়ি দিয়ে মসজিদুন নবী চত্বরে পা রাখতেই অনন্ত প্রশান্তি। বাবুস সালাম দিয়ে আমরা ঢুকতে লাইনে দাঁড়ালাম। এত মানুষ তবুও কোনো রকমের হুড়াহুড়ি নেই। প্রথমবার যাচ্ছি। তাই সব কিছু চিনতে পারছি না। সামনে এগোলে রওজাতুম মির রিয়াজুল জান্নাহ। নবী করিম (সাঃ)-এর সময় খুৎবা দেয়ার মিম্বর। একটু এগোলেই প্রথমে নবী করিম (সাঃ)-এর রওজা মুবারক। দেয়াল দিয়ে ঢেকে রাখা নবী করিম (সাঃ)-এর রওজা বাইরে থেকেই দেখা যায়। সবুজ রঙে ঢেকে রাখা রওজার উপরিভাগে লাল রঙের আবরণ। কবরের গায়ে ক্যালিগ্রাফি। প্রথম দর্শনে এত বিমোহিত জীবনে আর কিছুই করতে পারে বলে মনে হয় না। আল্লাহর রাসূল (সাঃ)-এর রওজার সামনে দাঁড়ানোর পর মনে হবে, "এ জীবন আল্লাহর গোলামির বাইরে আর কিছু চাইতে পারে না।"
শত সহস্র মানুষ পেছন থেকে এগিয়ে আসছেন। পুলিশ সদস্যরা হাত বাড়িয়ে সামনে এগিয়ে দিচ্ছেন। রাসূল (সাঃ)-এর রওজা মুবারকের পাশেই হজরত আবুবকর (রাঃ)-এর রওজা, তাঁর পাশেই হজরত ওমর ফারুক (রাঃ)-এর রওজা। কবর তিনটি রাসূল (সাঃ)-এর স্ত্রী আয়েশা (রাঃ)-এর ঘরের জায়গায় হয়েছে। বাবুস সালাম দিয়ে বের হয়ে আল্লাহর দরবারে হাত তুলে মুসলমানরা সবাই নিজের বিচ্যুতির জন্য ক্ষমা চাইছেন।
বাবুস সালামের পেছনেই বাবে জিবরাঈল (আঃ)। এ দরজা দিয়ে ফেরেশতা হজরত জিবরাঈল (আঃ) নবী (সাঃ)-এর কাছে ওহি নিয়ে আসতেন। আল্লাহর পক্ষ থেকে মানবজাতির জন্য পথ নির্দেশনা আসার সেই গেটের দিকে তাকালে যে কারো মনটা ভালো হয়ে যাবে। তার পাশেই আসহাবে সুফফা। সেখানে নবী করিম (সাঃ) ধর্মীয় জ্ঞান প্রদান করতেন। এ অঙ্গনটি সারা বিশ্বের মানুষের কাছে পরিচিত। এখানেই মুসলমানদের ধর্মচর্চা এবং জীবন পরিচালনা শুরু হয়েছিল জ্ঞানচর্চার মাধ্যমে।

Increasing footfall may spell doom for St. Martin’s Island



Rise in tourism could take its toll on Saint Martin’s, the only coral reef island of the country. Faced with an environmental crisis, efforts were made to construct brick structures on the initiative of the government.  However, the plan did not succeed.

"The beauty of the island could diminish forever if steps are not taken immediately", Prof. Syed Rashidul Hasan, tourism researcher and expert, told The Independent recently.

Hasan, quoting a study on tourism of Dhaka University Department of Trouism and Hospitality, said the arrival and departure of tourists, that is,  the "tourism-carrying capacity" of the island, have to be calculated.

According to government data, around 7,000 people stay on the 8 square kilometre long St. Martin’s Island. However, local 6 No. St. Martin's Union chairman, Nur Ahmed, claims the population exceeds 10,000.  

Under the present circumstances, the island has the capacity to tolerate a maximum of 2,000 tourists a day. Hasan said tourists exceeding this capacity could bring disaster to the tourist destination.  

The Bangladesh environment department is thinking about controlling the number of tourists visiting the island.

Mohammad Solaiman Haider, director (planning) of the Department of Environment (DoE) and in charge of the island, told The Independent: "It would have been good if we could put a stop to tourism there, but that is not possible at the moment. So, the next best option is to limit tourism activities to protect the island. The government is working on this aspect."  

The land area of the island measures 8 square km during low-tide and 5 square km during high-tide. It has three parts—the north, south and the centre, which is known as Golachipa as it resembles a throat. The North side is the most populated.

"Tourism-carrying capacity" is defined by the World Tourism Organisation as “the maximum number of people that may visit a tourist destination at the same time, without causing destruction of the physical, economic, socio-cultural environment and an unacceptable decrease in the quality of visitors' satisfaction”.
Most of the tourist accommodation units, shopping centre and port are located on the north side.

There are some cottages in Golachipa built by the Navy. Only a few people live on this side. Most of the coconut trees and cultivable land are here too. The south side is still a "Restricted Access Zone".  

During a visit to the island, this correspondent saw banners of real-estate developers everywhere. Even the land of limited access zone have been sold. Experts have called it "a bad omen".

The Youth Environment Society (YES), a local voluntary organisation of Cox’s Bazar, conducted a survey on hotel and resorts on St. Martin's Island. That report has published a list of 160 resorts including ones that are under construction.

During trouism season, six ships carry tourists to the island. Although each of these has the capacity to carry about 1,000 passenger, they take on board around 9,000 to 10,000 tourists in every single trip during the peak season.

The large number of tourists, which is more than the capacity of St. Martin's Island, is affecting the island’s ecology. Slowly but surely the overload is destroying the coral island.

Rashed-Un-Nabi, professor at the Institute of Marine Sciences and Fisheries, Chittagong University, said in some places of St Martin's stones can be found only 10 to 12 feet below. Thus, if so many buildings are constructed on the island, it may develop cracks. Even the layer of stone can be broken, he cautioned.

The DoE declared Saint Martin's Island as an "Ecologically Critical Area (ECA)" in 1995. A gazette notification of the government was published on June 29, 1999 in this regard. As a result, the government directed that no construction could be carried out on Saint Martin's without approval of the authorities.
Although experts have urged the government to take stern measures to protect the island. But the DoE has said that it is not possible because of the demand of tourists.

Dr Md Nasir Uddin, chief executive officer of the Bangladesh Tourism Board (BTB), told The Independent that they were trying to ensure facilities for the visitors after preserving the natural beauty of the island.

Author : Tareque Moretaza

অপহরণ, খুন এবং হয়রানি-- বাঙালি পাহাড়ি নির্বিশেষে সমানভাবে আমলে নিন


খুন এবং হামলা দু'টোরই বিপক্ষে  আমি। লংগদু আমি গেছি। আমি জানি এ জুম ঘর, পাহাড়ের ভাঁজে বহু বাঙালির রক্ত। বহু পাহাড়ির জীবন গেছে এখানে। বহু ঘরে আগুন পড়েছে।  এখানে দৃবৃত্তের উচ্ছ্বাস আছে। অস্বীকার করার উপায় নেই!  সত্যি করেই বলছি- পাহাড়ি বাঙালি দুবৃত্তরা মিলে লংগদুর বাতাস বিষাক্ত করে তুলছে।

অপহরণ, খুন এবং হয়রানি-- বাঙালি পাহাড়ি নির্বিশেষে সমানভাবে আমলে নিন। বাঙালি-পাহাড়ি হিসাবে বিবেচনা না করে সবাইকে মানুষ ভাবুন। পাহাড়িরাও এ দেশের নাগরিক। তাদের নাগরিক অধিকার নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের জন্য জরুরী।

আর যারা এ সব ঘটনা নিয়ে রস করেন, ফায়দা তোলার চেষ্টা করেন, উদ্বেগের নামে রাষ্ট্রের সুনাম ক্ষুন্ন করার চেষ্ট করেন; তারা সে সব না করে- আন্তঃসম্প্রীতি প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করেন। উপকার হবে। ক্ষতিগ্রস্থ পাহাড়ি এবং খুন হওয়া বাঙালি দুটো পক্ষেরই কষ্ট উপলব্ধ করছি। ভালোবাসায় পূর্ণ করি- পাহাড় ও অরণ্য। অনন্য মেল বন্ধনে শান্তিতে থাকুন পাহাড়ের মানুষ।

কী সুনিপুন, অনিন্দ্য কর-উৎসব জগতে-

আমার শ্রদ্ধা স্থানীয়দের একজন মাননীয় অর্থমন্ত্রী। আমার জানা মতে, উনি প্রথম আম্লীগার যিনি ডিজিটালাইজেশনের গল্প গণমাধ্যমে বলেছিলেন, সম্ভবত ১৯৯৬ সালে। ভোরের কাগজের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর সংখ্যায়।

এমন দুরদর্শি একজন মানুষ ব্যাংক লুট, দিনের দিনের পর বৃদ্ধি পাওয়া নির্মাণ খরচের যোগানের ভার কীভাবে  নিরীহ বাঙালদের ঘাঁড়ে চাপিয়ে দেয়ার কাজটি বাহাদুরের মত করেছেন, এটা ভেবে আমি অবাক হই। অবাক এ জন্য যে, তাকে একজন জ্ঞানী ও সমব্যাথী, মানব দরদী মানুষ বলেই জানি।

আম্লীগে যখন এত মধু পিয়াসী ছিল না, অনেক লোক কম, তখনো বাংলা একাডেমি চত্বরে- অমর একুশে গ্রন্থ মেলায় আমি তার পাশে একা হেঁটেছি। কখনো সঙ্গী ছিলেন পারভেজ ভাই (কালের কণ্ঠ)।  তাঁর সাথে মিশলে মনে হতো- অত্যন্ত সরল মানুষ। তাঁর সাথে আমি  হাঙ্গার প্রজেক্টের  ইউনিয়ন বাজেট করতে কুমিল্লা গেছিলাম, ২০০২ কিম্বা ২০০৩ সালে। পথ চলতে চলতে তাঁর কাছে অনেক গল্প শুনেছি।

সে সময় তিনি মধু পিয়াসী পিঁপড়ার দলের ভিড়ের বাইরে ছিলেন। কেবলই একজন রাজনৈতিক নেতা, তবে একটু বনেদী শ্রেণীর। রাস্তায় হাউ কা্উ করা লোক নন।

'ব্যাপক ভোটে নির্বাচিত' বর্তমান সরকারের অর্থমন্ত্রী হিসাবে তাঁকে বাজেটের টেবিলে দেখি। আর শুনি তার বক্তব্য- আমরা যারা আম বাঙাল- তাদের 'পাপে'র  জন্য  হয়ত; কর, আবগারি শুল্ক, সম্পূরক শুল্ক , মূল্য সংযোজন কর- এ রকম ভিন্ন ভিন্ন নামে টেক্স বসিয়ে ঢাউস আকৃতির বাজেটের যোগান চাইছেন।  কী ভয়ঙ্কর একটা সময় পার করছি আমরা, আর ভাবছি এ রকম একটা নষ্ট সময়েও দেশ প্রেমিক শক্তি জনাব মালের সাথে আছেন।

আম্লীগ লুট করছে, এটা বলা যাবে না। তারা সবচেয়ে দেশ প্রেমিক দল। এ দেশকে তাদের মত করে কেউ ভালোবাসেনি। বাসবেও না। কিন্তু তাদের সর্বশেষ সময়ে যে পরিমাণ টাকা বিদেশ চলে গেছে, বা বিদেশে স্থানান্তর হয়েছে, ৫৭ ধারা থেকে মুক্তির জন্য এটাকে আরেকটু হালকা করে কী বলা যায়, মানে  ধরেন,  হাত খরচ হিসাবে বিদেশ চলে গেছে, এটা আমার সক্ষমতার প্রমাণ।  কিন্তু প্রত্যেক সক্ষমতাই কিন্তু কিছু অক্ষমতা  তৈরি করে।

 বাংলাদেশের প্রচণ্ড ধনবান  রিকশা শ্রমিক, প্রবাসী শ্রমজীবি থেকে শুরু করেে ছোট খাটো কাজ করা বৃত্তবানরা চেষ্টা করে যাচ্ছেন, তার এ মহত বাজেটের মহত্ত্ব ধরে রেখে চাহিদা মত যোগান দিতে। বেসরকারি চাকুরে, মুদির দোকানদার, চটে ঢাকা রেস্টুরেন্টের মালিক- সবাই স্যারের মনবাসনা পূর্ণ করতে চেষ্টা করছেন।

ট্যাক্সনেটটা এমনভাবে বানানো , মোড়ের যে ভিখারী সেও এ থেকে মুক্তি পায়নি, কী সুনিপুন, কী অনিন্দ্য কর-উৎসব জগতে- আহা।

কর, শুল্ক, আবগারি শুল্ক, সম্পূরক শুল্ক আর  মূল্য সংযোজন করের ভার পিঠের উপর চড়িয়ে  একটা সোনালী উন্নয়নের চাবুকের সামনে দৌড়াচ্ছে সাধারণ বাঙাল।

মুহিত সাব তার  ১৯৯৬ সালের ডিজিটালাইজেশনের  প্রবন্ধে বলেছিলে, ডিজিটালাইরেজশনের কারণে আমরা গ্লোবাল ভিলেজের বাসিন্দা হবো। আমরা হয়ে গেছি, এখন ডিজিটাল জুস আর  উন্নয়ন রসদ তর্ক করে পার হয়ে যাচ্ছে সময়।

ক্ষমতায় আসা যাওয়ার অংকে মশগুল সবাই। গেলেআম বাঙালের টা যাচ্ছে, আমার কি। মজা বোঝ!  আসলে মজা বোঝাচ্ছেন সবাই তা মুহিত, তা আম্লীগ তা অন্য যে কেউ! আমরা কেউ অসহায়, বলি-'করুণায় ধারায় সিক্ত করো প্রভু'।

সুস্থ স্বাস্থ্য সেবা বাণিজ্য চাই!




কার্টুন: প্রথম আলো


বিষয়টি খুবই পরিষ্কার- ডাক্তার কারো শত্রু নয়। আবার মিত্রও নয়। অন্য দশটা পেশার মতই তারা টাকা নেন, সেবা দেন। এখানে পার্থক্য হলো- তারা মানব শরীর নিয়ে কাজ করেন। যেটি একবার 'মৃত' হলে ফেরৎ আনা যায় না। তাই সংবেদনশীল এ শরীর ঘিরে যারা নিজেদের জীবিকা নিশ্চিত করেন, তাদের 'দায়' থাকে কাজটি পেশাদারিত্বের সঙ্গে করার। 

পেশাদারিত্ব মানে  নথিতে পেশা- চিকিৎসক লেখা নয়। 

চিকিৎসকরা এতটাই ব্যস্ত থাকেন এবং নিজেদের এমনই লোক মনে করেন যে, তারা যাচ্ছে তাই আচরণ করেন। এটা কোনভাবেই কাম্য নয়। কিছু ব্যতিক্রম অবশ্যই আছে। এবং ব্যতিক্রম চিকিৎসকের দপ্তরে যাওয়ার আমি নিজেও মাসের পর মাস অপেক্ষা করি অথবা অনেক বেশি টাকা গুনি। কারণ পেশাদার ডাক্তারকে আমার লাগবে। আমি একজন ভোক্তা হিসাবে সেটিই চাই। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের হল জীবন কাটিয়েছি। সেখানে কিছু ষণ্ডা টাইপ পলিটিক্যাল পোলাপাইন থাকে। নিজেরে ওরা মনে করে, ওর উপ্রে আর কেউ নাই। ধরাকে সরা জ্ঞান করা যাকে বলে আরকি। একই রকম ডাক্তারদের ক্ষেত্রেও (কিছু ব্যতিক্রম অবশ্যই আছেন)। তাদের মাস্তানি অপ্রতিরোধ্য। তারা যদি ভুল করেন, তা তদন্ত করা যাবে না। তাহলে তারা মগজে গিঁট মেরে বসে থাকবেন। তাদের তেল দিবেন, সরকার নমনীয় হবেন, মানুষ বলবে, নাহ আপনি তো সমগ্র বাংলাদেশ পাঁচটন , তাই আপনি আমাগো ক্ষমা করেন। চিকিৎসা কাজে ফিরে আসেন। 

সর্বশেষ নজির হলো সেন্ট্রাল হসপিটাল। এখানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থী মারা গেছেন। এটা হয়েছে, এটাই সত্য। এর জন্য ন্যুনতম 'দায়বদ্ধ'তা থাকলে হসপিটাল একটা তদন্ত কমিটি করতো। না, তারা তা করেনি। উল্টো-' আমরা কোন ভুল করিনি, যা করেছি বেশ করেছি। তুমি কি ডাক্তার! তুমি কোন ...টা বোঝ। এ ধরণের আচরণ-!' -এ সব অগ্রহণযোগ্য।

তদন্ত করেন, আপনারা ডাক্তাররাই বসেন, বসে বলেন, এটা সঠিক ছিল। তাহলে পরিস্থিতি এতটা ঘোলাটে হয় না। প্রতিদিন দেশের আনাচে কানাচে হাসপাতাল, ক্লিনিকে বহুলোক মারা যা্য়। এর কোন তদন্ত হয় না।

মিডিয়া নিয়ে অনেক ডাক্তার সাবের কষ্ট দেখছি- ' এ যে উনারা বিখ্যাত, উনারা ফেরেশতা , উনারা জাতিকে উদ্ধার করছেন- এ সব খবর ছাপানোর জন্য উনারাই মিডিয়ার কাছে আসেন। কী বৈপরিত্য উনাদের।' 

বলছিনা, ডাক্তার মাত্রই খারাপ। কিন্তু ডাক্তার মাত্রেরই  সমালোচনা সহ্য করার ক্ষমতা প্রায় জিরো। রোগীর বক্তব্য শোনার আগ্রহ নেই বললেই চলে।  মনে করিয়ে দেই, কিছু ব্যতিক্রম আছেন। 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সেন্ট্রালের বিরুদ্ধে মামলা করেছে, এর সিদ্ধান্ত আদালতে নিতে দেন। অনেক ডাক্তারকে দেখছি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মান নিয়ে প্রশ্ন করছেন। করতে পারেন, এটা আপনার নাগরিক অধিকার। 

কিন্তু মেডিকেল কলেজের মান নিয়েও প্রশ্ন আছে। আপনাদের মধ্যেই আছে। আপনারা ডিমএসি, এসএমসি'র বাইরে অন্য কলেজের ডাক্তারদের সেভাবে কাছে টানেন না। যেভাবে নিজেরা নিজেদের টানেন। 

আবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মান নিয়ে যারা প্রশ্ন করছেন, তারা কিন্তু ঢাকা বিশবিদ্যালয়ের অধিভূক্ত মেডিকেল কলেজেরই শিক্ষার্থী। 
আপনি যদি মনে করেন এ বিশ্ববিদ্যালয় খারাপ, তাহলে  এ বিশ্ববিদ্যালয়ের সনদ ফেরৎ দিন। 

সরকারকে বলেন, মেডিকেল কাউন্সিল করে আপনাকে সনদ দিতে। সরকার দেবে, নিশ্চিতভাবে দেবে। কারণ এ দেশে মানুষের জীবন জিম্মি করে একামাত্র আপনারাই মগজে গিঁট মেরে চা -সিগ্রেট ফুঁকতে পারেন! বহু হসপিটালে আপনারা তা করে দেখিয়েছেন, আপনাদের ধর্মঘটের কারণে বহু রোগীর ভোগান্তি হয়েছে। 

তবে একটা কথা বলি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হয়েছে বলে- আপনারা এই যে চিকিৎসার নামে সন্ত্রাস করছেন, মানুষ মারছেন, মানুষকে স্যার বলতে বাধ্য করতে পারছেন এটা সম্ভব হয়েছে। 
ইনডিয়ান মেডিকেল কাউন্সলের খবর নিয়েন, কী পরিমাণ ডাক্তার সনদ হারায়, জেলে যায়। 

ডাক্তাররা, নিজেদের যারা নীতি নৈতিকতার খৈ ফোটান তাদের বলি- নিজের নৈতিকতা-সততা নিয়ে নিজেই একটু যাচাই কইরেন। ওষুধ কোম্পানির উপহার, বিদেশ ট্রিপ, নোট প্যাড, কলম খাতা, স্যাম্পল ওষুধ যে নেন, সেটা হালাল কি-না। 

ডায়াগনস্টিকের  কমিশন যারা নেন-  এটা হালাল কি-না। 
আরেকটা কথা, আমার বেশ কয়েকজন বন্ধু বলছিলেন, ইনডিয়াতে যাতে বেশি রোগী যায়, সে জন্য এ গোলমাল হতে পারে। 

আপনাদের শঙ্কা আমি উড়িয়ে দিচ্ছি না। আপনারা অনেকে ইনডিয়ার ট্রিটমেন্ট বাংলাদেশের চে খারাপ বলেও তথ্য সূত্র উল্লেখ করেছেন। আমি আপনাদের তথ্য সূত্রকেও সম্মান করি। 

কিন্তু যে দেশে ডাক্তার রোগীর বক্তব্য শেষ হওয়ার আগেই ওষুধ লেখেন, যে দেশের ডাক্তার তার প্রাইভেট চেম্বারে ১০০০ টাকার টিকেট কাটার পরেও  ৩ মিনিট সময় দিতে কষ্ট হয়, সে দেশের ডাক্তারদের শোধরানোর জন্য আমাদের কথা বলতে হবে। 

যদি আমার দেশের ডাক্তারের দুর্বল জায়গাগুলো চিহ্নিত করে সবল করতে না পারি, তাহলে তো মানুষ বিদেশ যাবে। দেশের রাষ্ট্র প্রধানের চোখ পরীক্ষাও সিঙ্গাপুরে হয়। বুঝতেই পারছেন, আমাদের ডাক্তারদের কতটা আস্থায় নিতে পারছি, আমরা। 

ইনডিয়ায় স্থানীয়রা ভালো চিকিৎসা পান না- আপনাদের মত আমিও শুনেছি। তবে তারা বিদেশি রোগীদের জন্য আলাদা ব্যবস্থা করেছেন। চিকিৎসা এবং ব্যয় দুটোই বাংলাদেশের সেন্ট্রাল কিম্বা ল্যাব এইডের মতই! এটা আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকেই বললাম। তাহলে মানুষ কেন তার সামর্থ থাকলে বিদেশ যাবে না! এখানে 'স্যার'দের গিনিপিগ থাকার জন্য। 

আমরা যারা ফ্রিকোয়েন্টলি বিদেশ যেতে পারি না, তাদের কথা ভাবেন। গরিব মানুষের কথা ভাবেন- যারা হাসপাতাল'র বারান্দায় ডাক্তারের 'আদরে' মরে যান, তাদের কথা ভাবেন। 

এও আপনাদের জানিয়ে রাখি-আমাদের অনেক ভালো ডাক্তার আছেন। অনেক ভালো । বিশেষত উঠতি ডাক্তারদের কথা বলছি, আমার এ রকম বহু পরিচিত ডাক্তার আছেন- যারা তার পকেটের টাকা দিয়ে রোগীর ওষুধ পর্যন্ত কিনে দেন। আমি তাদের শ্রদ্ধা করি। ভালোবাসি। আর স্বপ্ন দেখি- ফেরেশতা নয় রোগী-বান্ধব ডাক্তারে একদিন আমাদের হাসপাতালগুলো ভরে উঠবে। আমরা তাদের কাছে গিয়ে আরোগ্য লাভরে সহযোগি হিসাবে দেখবো। সে দিনের আশায় থাকলাম। 
শুভ স্বাস্থ্য-বাণিজ্য।