অটিজম- এখন একটা বাণিজ্যের নাম। দেশে এ রোগের চিকিৎসার নামে, বেনামে ফান্ড এবং ব্যাঙের ছাতার মত পরামর্শক প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। আর অসহায়- বিপন্ন মা বাবার সন্তানদের ঘিরে এক ধরণের কুৎসিত নোংরা বাণিজ্য গড়ে উঠেছে। এটা নিয়ে কথা বলাটাও একটা অরুচির পর্যায়ে এখন।
যাদের অটিস্টিটিক বেবি আছে, তারাই জানেন সে সন্তান ঘিরে প্রতিদিনকার ব্যস্ততা, দু:শিচ্ন্তা এবং ভারাক্রান্ত মনের জোর খোঁজার চেষ্টা কতটা কঠিন ও দুর্বিসহ।
সেই সব বাবা মায়ের চোখের দিকে তাকালে বোঝা যায় পৃথিবী কতটা নির্মম-কঠিন এবং অন্যায্যাতায়পূর্ণ। তবুও সন্তানের সুস্থ্যতার জন্য বিচ্ছিন্নভাবে সবাই ছোটেন, এখানে সেখানে-সবখানে।
সামর্থ থাকলে দেশের বাইরে যান অনেকে। কিন্তু এর আসলে করণীয় এবং সঠিক শিক্ষা সম্পর্কে আমরা মোটেও অবগত নই।
আমার নিজেরও একটা সন্তান আছে, যার কথাটা বলাটা এখনো স্বত:স্ফূর্ত নয়। তার প্রশ্ন বা প্রত্যা্শাটা সে বডি ল্যাংয়েজে প্রকাশ করতে চায়। একজন চিকিৎসকের অধীনে তার ব্যায়াম, থেরাপি চলছে। একটি স্কুলে তার শিক্ষাজীবনের হাতে খড়ি দেয়া হচ্ছে।
আমরা শুরুটা করেছিলাম তার অল্প বয়সে, দু'বছর তখন ও। শিশু হাসপাতালের শিশু বিকাশ কেন্দ্রে তাকে নিয়ে প্রথম গেলাম, চিকিৎসকরা তার পরীক্ষা নিরীক্ষা করে বললেন, ২ বছর বয়সে তার যতটুকু বিকাশের কথা, ততটুকু হয়নি। দু চারটে ব্যায়ামের নির্দেশনা দিয়ে তারা মুক্তি চাইলেন।
ডা. নায়লা হক নামে যে ভদ্র মহিলা অনেক দয়া করে শিশু বিকাশ প্রকল্পের পরিচালকের ভার গ্রহণ করে বাংলাদেশের অটিজম শিশুদের বাবা মা কে ধন্য করেছেন, তার সাথে দেখা করার দুর্লভ সুযোগ আমি কখনো পাইনি।
শিশু বিকাশ কেন্দ্র থেকে আমাদের বলা হলো বাচ্চাকে একটি স্পেশাল স্কুলে দেবার জন্য। সে হিসাবে মোহাম্মদপুরের একটি স্কুলে দেয়া হয়। বছর দেড়েক বা দুয়েক ধরে সেখানে ৫ হাজার টাকা মাসিক বেতন এবং তিরিশ হাজার সেশন ফি এবং আরো ভালো করার জন্য স্কুলের শিক্ষিকাকে বাসায় হায়ার করে মাসে আরো ৫ হাজার টাকা গুনে কোনো ফল পাওয়া গেলো না।
তবে স্কুল প্রধানের মতে, আমার বাচ্চার অবস্থা ভালো। আলহামদুলিল্লাহ - তাকে দেখে বোঝার উপায় নেই, তার কোনো সমস্যা আছে। আমাদের মূল কনসার্ন সে হাইপার এবং তার ওয়ার্ডিংটা ঠিক নেই। অর্থাৎ তার যা বলার কথা তা না বলে অন্যকথা বার বার বলছে।
তবে পড়াশোনা ও মনে রাখার ব্যাপারে সে খুবই দক্ষতার পরিচয় দিয়ে আসছে। এর মধ্যে দুবছরের শিক্ষা সমাপন করে তৃতীয় বর্ষে যাবার আগে বঙ্গবন্ধু হসপিটালের একজন চিকিৎসকের সাথে যোগাযোগ হয়। এখন তার অধীনে আছে।
যে অভিজ্ঞতা বলতে এ লেখা, সেটি হলো শহরের মুখোশধারী মানুষগুলো সহানুভূতির আড়ালে অটিজম আক্রান্ত শিশুদের বাবা মায়ের এক ধরণের হয়রানি ও ভুল চিকিৎসা করে থাকেন। এ থেকে মুক্তির কোনো উপায় নেই।
প্রথম দিকে যে ভাবে কথা বলেন, পরে সেটি ঠিক থাকে না। বা ঠিক রাখতে পারেন না। কারণ টাকার কচকচে শব্দ আর নোংরা গন্ধটা তাদের ঘ্রাণ শক্তিকে আরো তীব্র করে, তাই আরো বেশি টাকার জন্য তারা ছুটোছুটি করতে থাকেন।
চূড়ান্ত বিচারের রাষ্ট্র এখানে বক্তৃতা বিবৃতি দিয়ে কাজটা সারে। মোহনীয় ছবি দেখা যায় খবরে। মন খারাপ করা ভাব ধরা ছবি। আর ভিজুয়াল মিডয়াতে অটিস্টিক বাচ্চাদের সহানুভূতি জাগানিয়া ছবি দিয়ে খবর করা হয়। তারপর দিবসটি চলে গেলে আবার সব আগের মত। আজ সেই দিন- বিশ্ব অটিজম দিবস।
আসলে কেউ কি খবর নিযেছেন- অটিস্টিক বাচ্চাদের বাবা মায়েদের সংগ্রাম সম্পর্কে।
অটিস্টিক বাচ্চাদের জন্য সরকারের করণীয় কি? সরকার কি ভাবছে? তাদের আগামী দিনে কী হবে? তা নিয়ে সরকারে কোনো বিষয়ই খোলাসা নয়। এখানেও রাষ্ট্র প্রতিবন্ধী। তার চরিত্র অটিস্টিক। তাই একজন অটিস্টিক হয়ে আরেকজন অটিস্টিক বাচ্চার জন্য রাষ্ট্র কিছু করতে পারে না।
সবাই আমরা চাকুার করি, সমাজ সেবা করি- প্রচার, প্রচারণা আর পুরস্কারের জন্য। কিন্তু কাজটা ভালোবাসেন কয় জনে। প্রশ্নটা এ জন্য করলাম- যে দেশে দেড় লাখেরো বেশি অটিস্টিক বাচ্চা আছে সে দেশের সরকার বা কোনো সামাজিক সংস্থা বা কেউ কি তাদের জন্য কিছু করার উদ্যোগ নিয়েছেন, বা নিচ্ছেন।
অনেকে হয়ত বলবেন, শিশু বিকাশ কেন্দ্র আছে, বঙ্গবন্ধু হসপিটালে অটিজম সেন্টার আছে, সেনাবাহিনীর স্কুল আছে, বেসরকারি অনেক প্রতিষ্ঠান আছে। যারা এ বিষয়ে উপদেশ বিলাইতে চান, তারা দয়া করে এই সব জায়গায় রোগীদের সাথে গিয়ে পরে ফিডব্যাক দিলে ভালো হয়।
যাদের অটিস্টিটিক বেবি আছে, তারাই জানেন সে সন্তান ঘিরে প্রতিদিনকার ব্যস্ততা, দু:শিচ্ন্তা এবং ভারাক্রান্ত মনের জোর খোঁজার চেষ্টা কতটা কঠিন ও দুর্বিসহ।
সেই সব বাবা মায়ের চোখের দিকে তাকালে বোঝা যায় পৃথিবী কতটা নির্মম-কঠিন এবং অন্যায্যাতায়পূর্ণ। তবুও সন্তানের সুস্থ্যতার জন্য বিচ্ছিন্নভাবে সবাই ছোটেন, এখানে সেখানে-সবখানে।
সামর্থ থাকলে দেশের বাইরে যান অনেকে। কিন্তু এর আসলে করণীয় এবং সঠিক শিক্ষা সম্পর্কে আমরা মোটেও অবগত নই।
আমার নিজেরও একটা সন্তান আছে, যার কথাটা বলাটা এখনো স্বত:স্ফূর্ত নয়। তার প্রশ্ন বা প্রত্যা্শাটা সে বডি ল্যাংয়েজে প্রকাশ করতে চায়। একজন চিকিৎসকের অধীনে তার ব্যায়াম, থেরাপি চলছে। একটি স্কুলে তার শিক্ষাজীবনের হাতে খড়ি দেয়া হচ্ছে।
আমরা শুরুটা করেছিলাম তার অল্প বয়সে, দু'বছর তখন ও। শিশু হাসপাতালের শিশু বিকাশ কেন্দ্রে তাকে নিয়ে প্রথম গেলাম, চিকিৎসকরা তার পরীক্ষা নিরীক্ষা করে বললেন, ২ বছর বয়সে তার যতটুকু বিকাশের কথা, ততটুকু হয়নি। দু চারটে ব্যায়ামের নির্দেশনা দিয়ে তারা মুক্তি চাইলেন।
ডা. নায়লা হক নামে যে ভদ্র মহিলা অনেক দয়া করে শিশু বিকাশ প্রকল্পের পরিচালকের ভার গ্রহণ করে বাংলাদেশের অটিজম শিশুদের বাবা মা কে ধন্য করেছেন, তার সাথে দেখা করার দুর্লভ সুযোগ আমি কখনো পাইনি।
শিশু বিকাশ কেন্দ্র থেকে আমাদের বলা হলো বাচ্চাকে একটি স্পেশাল স্কুলে দেবার জন্য। সে হিসাবে মোহাম্মদপুরের একটি স্কুলে দেয়া হয়। বছর দেড়েক বা দুয়েক ধরে সেখানে ৫ হাজার টাকা মাসিক বেতন এবং তিরিশ হাজার সেশন ফি এবং আরো ভালো করার জন্য স্কুলের শিক্ষিকাকে বাসায় হায়ার করে মাসে আরো ৫ হাজার টাকা গুনে কোনো ফল পাওয়া গেলো না।
তবে স্কুল প্রধানের মতে, আমার বাচ্চার অবস্থা ভালো। আলহামদুলিল্লাহ - তাকে দেখে বোঝার উপায় নেই, তার কোনো সমস্যা আছে। আমাদের মূল কনসার্ন সে হাইপার এবং তার ওয়ার্ডিংটা ঠিক নেই। অর্থাৎ তার যা বলার কথা তা না বলে অন্যকথা বার বার বলছে।
তবে পড়াশোনা ও মনে রাখার ব্যাপারে সে খুবই দক্ষতার পরিচয় দিয়ে আসছে। এর মধ্যে দুবছরের শিক্ষা সমাপন করে তৃতীয় বর্ষে যাবার আগে বঙ্গবন্ধু হসপিটালের একজন চিকিৎসকের সাথে যোগাযোগ হয়। এখন তার অধীনে আছে।
যে অভিজ্ঞতা বলতে এ লেখা, সেটি হলো শহরের মুখোশধারী মানুষগুলো সহানুভূতির আড়ালে অটিজম আক্রান্ত শিশুদের বাবা মায়ের এক ধরণের হয়রানি ও ভুল চিকিৎসা করে থাকেন। এ থেকে মুক্তির কোনো উপায় নেই।
প্রথম দিকে যে ভাবে কথা বলেন, পরে সেটি ঠিক থাকে না। বা ঠিক রাখতে পারেন না। কারণ টাকার কচকচে শব্দ আর নোংরা গন্ধটা তাদের ঘ্রাণ শক্তিকে আরো তীব্র করে, তাই আরো বেশি টাকার জন্য তারা ছুটোছুটি করতে থাকেন।
চূড়ান্ত বিচারের রাষ্ট্র এখানে বক্তৃতা বিবৃতি দিয়ে কাজটা সারে। মোহনীয় ছবি দেখা যায় খবরে। মন খারাপ করা ভাব ধরা ছবি। আর ভিজুয়াল মিডয়াতে অটিস্টিক বাচ্চাদের সহানুভূতি জাগানিয়া ছবি দিয়ে খবর করা হয়। তারপর দিবসটি চলে গেলে আবার সব আগের মত। আজ সেই দিন- বিশ্ব অটিজম দিবস।
আসলে কেউ কি খবর নিযেছেন- অটিস্টিক বাচ্চাদের বাবা মায়েদের সংগ্রাম সম্পর্কে।
অটিস্টিক বাচ্চাদের জন্য সরকারের করণীয় কি? সরকার কি ভাবছে? তাদের আগামী দিনে কী হবে? তা নিয়ে সরকারে কোনো বিষয়ই খোলাসা নয়। এখানেও রাষ্ট্র প্রতিবন্ধী। তার চরিত্র অটিস্টিক। তাই একজন অটিস্টিক হয়ে আরেকজন অটিস্টিক বাচ্চার জন্য রাষ্ট্র কিছু করতে পারে না।
সবাই আমরা চাকুার করি, সমাজ সেবা করি- প্রচার, প্রচারণা আর পুরস্কারের জন্য। কিন্তু কাজটা ভালোবাসেন কয় জনে। প্রশ্নটা এ জন্য করলাম- যে দেশে দেড় লাখেরো বেশি অটিস্টিক বাচ্চা আছে সে দেশের সরকার বা কোনো সামাজিক সংস্থা বা কেউ কি তাদের জন্য কিছু করার উদ্যোগ নিয়েছেন, বা নিচ্ছেন।
অনেকে হয়ত বলবেন, শিশু বিকাশ কেন্দ্র আছে, বঙ্গবন্ধু হসপিটালে অটিজম সেন্টার আছে, সেনাবাহিনীর স্কুল আছে, বেসরকারি অনেক প্রতিষ্ঠান আছে। যারা এ বিষয়ে উপদেশ বিলাইতে চান, তারা দয়া করে এই সব জায়গায় রোগীদের সাথে গিয়ে পরে ফিডব্যাক দিলে ভালো হয়।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন