প্রার্থনায় মোডি কাকু ---

সকাল ৮ টা ৪০ এ মোডি কাকু ঐতিহ্যবাহী ঢাকেশ্বরী মন্দিরে প্রার্থনা দিয়ে দিন বাংলাদেশে তার শেষদিনের কাজ শুরু করেছেন । 

যে সব সম্বাদিক সেখানে গেছেন তাদের কেউ-ই প্রার্থনা-নামাজ দিয়ে দিন শুরু করেন নি;এটা মোটামুটি নিশ্চিত। এমন কি সাঈদ খোকন ছাড়া অন্য রাজনৈতিক নেতারাও। 

পালন বা বর্জন ব্যাক্তিগত। কিন্তু পালন না করে উল্টো পালনকারীদের উপহাস করাটা এক বিকৃত আনন্দের বিষয়। সেই তারাই মোডি কাকুর প্রার্থণা সভায় গিয়া হাজির। তাও এত সক্কালে!

মোডি কাকু; আপনার ধর্ম পালন যদি এ দেশের অল্প কিছু ব্যাতিক্রম ছাড়া  সব জান্তা সম্বাদিক এবং রাজনীতিকদের কাছে যেনো --এ বার্তা পৌঁছায় ---ধর্ম পালনের ভার কেবল পুরোহিত, কাঠমোল্লা,যাজক আর ভান্তের নয়। সবার। 

তাহলে এ বঙ্গদেশে ধর্ম পালনকারীরা 'অসভ্য ইভ টিজার' আর 'ব্যবসায়ীদের খপ্পর' থেকে বেঁচে যেতেন । 

তারা যদি জানতেন --- ধর্ম মানে মৌলবাদ নয়-সেকেলে নয় । ধর্ম পালনকারী মানে উগ্র নয়। ধর্ম পালনকারী মানে জঙ্গী নয়। তাহলে এ বঙ্গের অনেক উপকর হতো।

আপনাকে শ্রদ্ধা ।

'ভালোবাসি ভালোবাসি এই সুরে কাছে দূরে জলে স্থলে বাজায় বাজায় বাঁশি ভালোবাসি'


ভালোবাসা এখন স্বার্থ শব্দের নাম
তোমার উপের যে শব্দটা আমি স্থির করে রেখেছিলাম
 তুলে নিলাম তা

 তিস্তার জলের মত আটকে রাখতে চাই না

 যা বলি সোজা সাপ্টা

 তুমি তো বহুবার বলেছো--- ভালোবাসা হলেই চলবে-- আর কিছু না। কোনো খাবারেরও দরকার হবে না।

 সময় বদলে বিববাহিত জীবনে শুধু  ভালোবাসা হলে চলে না; আরো কিছু চাই

দ্যাখো তোমার কথা ভুল!
মোডি কাকু কিন্তু ভালোবাসা নিয়েই এসেছেন; আমরা সেই ভালোবাসায় আপ্লুত; মুগ্ধ।
 ভালোবাসনা পেলে আমরা চাইবো না আর কিছু

 নার্গিস--- কোথাকার কোন ;'অপয়া' মেয়ে গ্যাছে ইনডিয়ায়
 'সুবোধ বালকেরা' তাকে ধর্ষণ করেছে, খুনও করেছে

 ফেলানী কাঁটাতারে ঝুলে চিতকার করেছে 'পানি' 'পানি' বলে
'জল' বলতে পারত; তা না ফুটানি! 'পানি' চায়!

 সব মনে রাখতে নেই
মনে রাখতে নেই গরু চোরাকারবারী বলে গুলি করে মেরে ফেলা মানুষের কথা
ওরা 'ছোট' লোক বেপারী। ওদের কথা মনে রেখে স্বপ্ন বাস্তবায়ন সম্ভব নয়!

 আমরা ভালোবাসা চাই; প্রেম চাই। অনেক প্রেম এবং ভালোবাসা জমা হলে আমারা আসমানে উড়বো
সেখানে খাবারের দরকার নেই।  স্বপ্নরে ঘোরে কেবল গরিবরা খাবারের স্বপ্ন দ্যাখে

বড় লোকরা রোমাঞ্চে থাকে
২০২১  কিম্বা ২০৪১
আমরা তখণ মধ্যম-উত্তম আয়ের দ্যাশ।

আসো-- স্বপ্নের জন্য কাতার বন্দী হও। যে দলই তুমি করো
 যে আদর্শই তোমার থাক

 ইনডিয়ার সামিয়ানা ক্রস করলে তুমি বিপন্ন হবে- জঙ্গি হবে
 ক্ষমতা তোমার জন্য নিষিদ্ধ হবে; ঠিক যেনো পরকীয়া প্রেম হবে।

গাও ---ভালেবাসা মোরে অশেষ করেছে
 কিম্বা ভালোবাসা আমাকে ভিখারী করেছে তােমাকে করেছে রানী।

 গান শুনলে মন ভালো থাকে। শোনো গান---
'ভালোবাসি ভালোবাসি এই সুরে কাছে দূরে জলে স্থলে বাজায় বাজায় বাঁশি  ভালোবাসি'

নমস্তে মোডি কাকু


মোডি কাকুর আগমন আমাদের জাতীয় জীবনে হিরকখচিত একটি দিন । পুরো মুন্ত্রী সভা হাজির । হাজির করপোরেট সিইওগণ এবং টিভি চ্যানেলে লাইভ।
এটা বাঙালীর একটা সার্বজনীন উৎসব । আজ কাল দু'দিন এ উৎসব আকাঙ্খা ঘিরে মেতে থাকবেন সাবালক মানুষরা। নাবালকরা কার্টুনেই সন্তুষ্ট । নমস্তে মোডি কাকু।
নার্গিস ধর্ষণ পরবর্তী খুন সীমান্ত হত্যা নিয়ে কথা বলার মত অভদ্র আমরা হবো না । আপনার পদধুলিতেই বঙ্গবাসীর জন্ম স্বার্থক । আপনি এসেছেন 'রাজদুত' এ । আমরা প্রজারা লুটিয়ে পডেছি । আমাদের লুটিয়ে পড়াত অস্বস্তি বোধ করবেন না।
লজ্জা দেবেন না। আমাদের মেরুদণ্ড লুপ্ত হয়েছে বহু যুগ আগে ।
অভিনন্দন মোডি কাকু ।

তোমাকে পেলাম মিস কলে। আহা প্রিয়তমা!


আলো ঝলমলে মঞ্চে অ্যাঙ্কর
জীবনের সবচেয় গুরুত্বপূর্ণ দিন তার আজ---

শুরু করেন মাইক হাতে

হ্যাঁ জনাব

সত্যি বলছি আপনাদের মিস কলে সাড়া দিয়ে তিনি এসেছেন

এসেছেন আপনাদের  দরজায়
তার রূপোশ্বর্যে অবগাহন করুণ

বাথরুম নোংরা করার পর তা সাফ করতে ব্যবহার করুণ হারপিকে
হাত সাফ করতে ব্যবহার করুণ লাক্স --- ফিলিংস নিন

জি জনাবা তিনি এসেছেন

আপনাকে সাজাতে
আপনার রূপ মাধুর্য জাগাতে এবং আপনার প্রিয়জনে চোখে আগুন ঝরাতে


 জি জনাব ; জি জনাবা

 এখনো মনে করতে পারছেন না
তিনি ? তিনি দীপিকা; আপনাদের  স্বপ্নের রানি---
দীপিকা

 এভাবেই জমতে থাকা মঞ্চে সাবানের স্খলনে লেফটে থাকা তোমার শরীর

 সাগরে ভাসছে কিছু কুকুর--- মানুষ বল্লে ভুল হবে--- এ জনমে ওরা আর মানুষ হলো না

 নৌকা সমৃদ্ধির কথা বলে---নৌকা সুখের কথা বলে --- নৌকা আপদ বিদায়ের কথা বলে

 শালা শুয়র গুলো সেই নৌকাকে নষ্ট করলো
 নৌকা করে পাড়ি জমালো বিদেশ

 খপ্পরে পড়লো মানব পাচার কারীদের

 শালা  অমানুষ

 খবরের কাগজে এতদ্দিন ওদের পঁচা হাজামাজা গন্ধ ভরা খবর পড়তে পড়তে অসহ্য

 এখন একটু আরাম-- আরাম চাই

 নিউজ এডিটর ডেকে বলে---  টিকিট মেলেছে বাছা
 উদ্বৃত্ত থাকলে একপিস দিও আমায়। বলো দেবে তো আমায়!

 সম্বাদিক ছোটে- ফটু সম্বাদিকও

 ক্যারিয়ারে একটা অক্ষর যুক্ত হবে--- সোনালী। নাহলেও দোষ কী।  বয়সকালে নাতি পুতিরে কাছে গল্প করা যাবে

 নিউজ এডিটর ক্লান্ত

 ছবিটা আরেকটু ভালো হতে পারতো; ডিসি না থ্রি সি দেই

 মানুষ পড়বে

 অসাধারণ---
 বলি, মরি মরি

 দীপিকা তােমায়  স্বাগতম।
তোমার ছবি টাকা খরচ করে দেখলেও  তোমাকে পেলাম মিস কলে।
আহা প্রিয়তমা!

তোমরা সাজো--- তোমাদের দেখি--- চোখ জুড়িয়ে যায়

ফেসবুকের বিস্তৃত ক্যানভাসে তোমরা সাজো--- তোমাদের দেখি--- চোখ জুড়িয়ে যায়।

ডিজিটাল জুসে আসক্তি তোমাদের মত আমারো।

কিন্তু সাগরে যারা ভাসে, জঙ্গলে পলিথিনের ঘেরে যারা ঘুমায়, এক মুঠো ভাত খায় কেবল দু বেলা তাদের খবর কি রাখো

 নাকি কেবল গুনতে থাকো রিজার্ভের রেকর্ড। রেমিটেন্স আসছে; রেমিটেন্সের পাহাড় জমছে

 এর পেছনে যে মানুষ গুলো তাদের মুখ কী কখনো ভাসে নাকি তোমরা অ্যাভাটার অ্যাভেঞ্জার  সিনামায় রোমাঞ্চ খোঁজো।

কিম্বা যে মেয়েটার দিনেকের ক্লান্তি শেষে রাস্তার পাশে অপেক্ষায় থাকে

 বাস আসবে

 বাস আসে না; আসে  মাইক্রোবাস-- ষণ্ডারা তাকে তুলে নেয়--- ধর্ষণ করে নরাধম


 কিম্বা উৎসব সেলফি তুলবে
 উৎসব আনন্দ উদযাপনে তারা যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে --- টিএসসি চত্বরে দাঁড়ায় ---অসংখ্য হাত খামছে ধরে  নারীর শরীর---

 তোমরা কি ভাবো তাদের নিয়ে

 নাকি চুন কালি পড়বে বলে লুকিয়ে যাওয় ক্ষনিকের প্রতিবাদ শেষে

 প্রচণ্ড গরমে তপ্ত নগরে তোমরা নারীর ওপর হামলে পড়া; সাগরে ভেসে থাকা মানুষের চেয়ে  খোঁজো

আহা বৃষ্টি; আহা বৃষ্টি ; বৃষ্টি নামো

 যে বৃষ্টি নামে আকাশ ফুঁড়ে--- সে বৃষ্টি যদি এসিড বৃষ্টি হয়

 সে বৃষ্টি যদি  রক্ত হয়ে নেমে আসে তোমার ঘরের বারান্দায়, রিকশার হুড়ে-- বাসের ছাদে
 তখনও কী বৃষ্টি চাইবে

 নাকি 'বিচ্ছিন্ন ঘটনা'সামনে রেখে  জঙ্গি হান্ট করবে
 চেকিংয়ের নামে পকেটে 'বাবা' ঢুকিয়ে চালান দেবে কোটে
অস্ত্র মামলায় ফাঁসিয়ে দেবার ভয় দেখিয়ে শেষ  সম্বল টুকুও বিক্রিতে বাধ্য করবে!

 আহা বৃষ্টি-- বও। বৃষ্টি। শান্তিরো বারিধারা!  

নৈতিকতা শেখার বিষয়--- এটা ন্যাচারাল না।

নৈতিক শিক্ষার কথা বললে কেউ কেউ কূপমণ্ডুক শব্দটা নিয়ে আসেন। ধর্ষণ ও যৌন হয়রানির ঘটনা ঘটলে আবার হা পেত্যেশ করেন। সরকার কি করলো, পুলিশ কি ছিঁড়লো? লইয়া হাজারো প্রশ্ন করেন।
নাগরিক হিসাবে এটা করতেই পারেন। কিন্তু গোড়ার দিকে একটু তাকান। গোড়া ঠিক করেন, ডালপালাও ঠিক অইয়া যাইবো। শতভাগ না অইলে ইম্প্রুভ করবো। চোখের পড়ার মত ইম্প্রুভ।
যে পুরুষের মুখোশের আড়ালের নৈতিকতা স্ট্রং সে কখনো নারীর শরীর খামছে ধরবে না। নিশ্চিতভাবেই ধরবে না।
নৈতিকতা শেখার বিষয়--- এটা ন্যাচারাল না।
সৎ পথে আয় উপার্জন করে সংসার পরিচালনা করা মানুষের সন্তানরা দু'একটি ব্যাতিক্রম ছাড়া খ্রাপ হয়েছে; তা আমার ৩৫ বছরের জীবনে খুবই কম দেখেছি। সততা, নৈতিকতা আর আদর্শ থাকলে অনেক কিছুই ঠেকানো সম্ভব।
সব ধর্মই অনাচারের বিপক্ষে। তাই ধর্মচর্চার ভারটা 'হুজুর'- যাকে আপনারা 'কাঠমোল্লা' ডাকেন, যাজক, পুরোহিত, আর ভান্তের হাতে তুলে না দিয়ে আমরা নিজে ও নিজের সন্তানদের ধর্ম চর্চায় উৎসাহিত করে দেখি--- আশা করি ভালো ফল পাওয়া যাবে! সমাজে এ সব অনাচার নিশ্চিতভাবে কমবে।
বিজ্ঞানমনষ্ক-- যারা ধর্মকে অপ্রয়োজন মনে করেন--- তারা এ লেখা পড়ে বিরক্ত হলে দুঃখিত!

সঙ্ঘবদ্ধ ভ্রমণ চক্র:: আহা কী দারুণ

ধরে নিয়েছিলাম আগে আগে পৌঁছে ঘুমাবো। তারপর সকালে বের হবো ঘুরতে। কিন্তু আমাদের কাডির ভাইয়ের রাস্তার অবস্থা বলে সময় নষ্ট না করে বরং মমতাজের গান হুনি--- বুকটা ফাইট্টা যায়!
তার উপ্রে কামাল ভাইয়ের ডিপারমেন্ট খুবই সফলভাবে যানজট দীর্ঘায়িত করতে সক্ষম--- এ সব দেখতে দেখতে শ্রী মঙ্গল পৌছানোর নির্ধারিত সময়ের চেয়ে ঘণ্টা তিনেকের বেশি হয়ে গেলো।
ফাঁকে উজান ভাটির দোতলায় বসে আছি খাবারের জন্য। গরুর গোশত, মাসকলাইয়ের ডাল সাথে একটা সবজি দিয়ে রাতের আহার শেষান্তে আমরা আমরা রমেশ কাগুর শ্যামলী পরিবহনে চেপে বসলাম--- ড্রাইভার খুবই ভদ্রোচিতভাবেই গাড়ি চালিয়েছেন---তার জন্য ধণ্যবাদ দেবার চে আমাদের দেরী হয়ে যাওয়া নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছিলাম।
রাত দু'টার কিছু পরে সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টায় ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা বাসটা থামলো--- মৌলভীবাজার রোড়ে। একটা সিএনজির দেখা মিলল--- ভাড়া ৫ শটাকা। দিবসে এর ভাড়া ১২৫ টাকা। কিন্তু জঙ্গলের ভিত্রে দিয়ে নিরাপত্তা সঙ্কটের কারণে রিস্ক লইয়া যাইতে হপে বলে ভাড়া বেশি দিতে হবে; এক কথায় কবুল।
ঠান্ডা বাতাস বইছে, চা বাগানের ভেতর দিয়ে সিএনজি ছুটছে; লাউয়াছড়ার সীমানায় মেছো বাঘ, দু চারটা বানর দেখতে দেখতে পৌছে গেলাম হিডের বাঙলোয়। রাত তখন তিনটা ২০ ।
উত্তম দা লোক বসিয়ে রেখেছেন; সিএনজি থামার আগেই টর্চ লাইটের আলো এসে পড়লো--- আমরা নেমে, সোজা গেলাম ঘুমুতে। বাঙলোর আগের মত থেকেছে ঠিকই তবে এখন এসি লেগেছে।
ঠাণ্ডায় জমে যাবার জোগাড়; তাই এসি বন্ধ করে লেপ জড়িয়ে ঘুমুতে গেলাম। সকাল বেলা এসে পৌছানোর কথা--- বৃষ্টি এসে ভিজিয়ে যাচ্ছে মে মাসের প্রথম দিনের সকাল।
রীতি সাড়ে ১০ টার মধ্যে দুখান ছাতা হাতে পৌছালো বাঙলোয়। বাইরে বারান্দায় বসে সিদ্ধ রুটি, আলু ভাজি আর ডিম পোস দিয়ে সকালের নাশতা করতে করতে পিঙ্ক কলারে পুরনো আমলের একখানা জিপ এসে হাজির।
শিপু জানালো এ ধরণের জিপ কাগু এরশাদরে সময় দেশে আনা হয়েছিল। আমরা সাকুল্যে ৮ জন। তার মধ্যে আমার দুই পুত্র আছে। তারা সাধারণত শান্ত থাকার বিষয়টা মাথায় রাখতে পারে না।
ঝুম বৃষ্টি নেমে এলেও আমাদের পিঙ্ক কালারের জিপ গাড়িটা ছুটে চলে ভানু গাছ থেকে কমলগঞ্জের ন্যাশনাল টি গার্ডেনের দিকে। বছর ৭-৮ আগে আমরা (লিনা এবং আমি) যখন সেখানে যেতাম--- পুরই সুনসান নীরবতা ছিল। রাস্ত ছিল কাদামাখামাখি।
এখন সায়েবি সুবিধা নিশ্চিত করা হয়েছে। বিটুমিনের ছোঁয়া পেয়েছে ব্রিটিশ আমলে গজানো চায়ের বাগান। এর মধ্যে আমাদের গাইড হবার আগ্রহ নিয়ে এগিয়ে আসলো শঙ্কর।
ঠিক আছে চলো---
এগিয়ে যেতে যেতে শঙ্কর একটা পাতা বের করে আনলো--- থাই সুপের সাথে আমারা এ ঘাসের সাক্ষাৎ পাই। সেটা রীতির হাতে দিয়ে আমরা হাঁটছি।
এক পশলা বৃষ্টি হয়ে গেলো। তারপর কড়কড়ে রোদ্দুর। শাপলপাতা বিছিয়ে থাকা মাধবপুর লেকের উপ্রে নীল রঙের শাপলা ফুল। দৃশ্যটা অসাধারণ। সবুজের আল পথে, টিলার উপর চা বাগানের ফাঁকে দাঁড়িয়ে থেকে আমরা লেকের রূপ সৌন্দর্য উপভোগ করতে করতে ছবি তোলার কাজটাও সেরে নিচ্ছিলাম।
ইশতিয়াক আর শিপুর হাতেই ছবি তোলার দায়িত্ব অর্পন করে আমরা পোস দিয়ে যাচ্ছি।
ঘন্টা দুয়েকের ভ্রমণের ফাঁকে সবাই একবার করে বলে নিলো লেকটা আসলেই সুন্দর।
বড়শি পেতে বসে থাকা কিশোরের গা ঘেঁষে লেক এলাকা ছেড়ে আসার পর ন্যাশনাল টি গার্ডেনের নিজস্ব চা পাতায় বানানো গাঢ় লিকারের চা খেয়ে ফিরছি।
অবশ্য চায়ে মন নেই রিংকির। ঠাণ্ডা কিছুর জন্য অপেক্ষা করছে লিনাও। ইশতিয়াক বরাফাচ্ছাদিত এক বোটল পানি নিয়ে আসলো!
দুপুরের খাবারের পর পিঙ্ক কালারের গাড়িতে বসার জন্য অস্থির নাকিবের ডাকে সাড়া দিয়ে আমরা ছুটলাম লাউয়াছড়া রেইন ফরেস্ট। টিকিট কাটার পর হাঁটা--- রেললাইনে এসেই ইশতিয়াক স্ত্রীর ছব্বি খিঁচা শুরু করলো। আমাদের ছবিব খিঁচার দায়িত্বটা শিপুর হাতেই ছিল।
বিকালের পড়ন্ত সূর্য়ের আলোয় লাউয়াছড়া রেইন ফরেস্ট এক কথায় অসাধারণ। রেল লাইন ধরে হাঁটা আর ছবি তোলার ফাঁকে একটা ট্রেন ছুটে এলা--- হিশ ঞিশ শব্দ তুলে বনের ভেতর ছুটে চলা ট্রেনের দৃশ্যটা বিজ্ঞাপন চিত্রে দেখাও হলেও এবারই প্রথম আমরা সবাই এক সাতৈ তা দেখলাম।
সন্ধ্যার একটু আগে আমরা চলে এলাম টি রিসার্চ ইন্সটিটিউটের কাছের টি গার্ডেনে।
সেখানে এসে আবিষ্কার হলো জোঁক চুষে নিয়েছে শিপুর রক্ত। এর ফাঁকেও আমরা ছবি তুলে, চা বাগানে খানিক সময় কাটিয়ে ছড়ার ছুটন্ত পানির শন শন আওয়াজ কানে তুলে শ্রীমঙ্গল শহরের আসলাম।
উদ্দেশ্য বৈকালিক নাশতা!
পাশে 'শশুর বাড়ি' নামীয় যে রেস্টুরেন্ট যাত্রা করেছে--- সেটা জানতাম। এর দ্বিতল ভবনের নিচে ফরেনারের সাথে দেখা। তারা নিচে বসলেন আমরা ছেলেপুলে নিয়ে দোতলায় উঠলাম--- লাচ্ছিটা দারুন, অন্থনও ছিল। দই দুটো নাজিব নাকিবের জন্য আনা হলেও একটা নষ্ট করে রেখে দিয়েছে ওরা।
সন্ধ্যার কিছু সময় পর আমরা ফের বাঙলো। একটু রেস্ট; একটু আড্ডা রাতের খাবার--- তারপর আবার ঘুমুতে যাওয়া। রাতে বৃষ্টি নেমেছিল। ভোরে ঘূম ভাঙার পর সে বৃষ্টি উপভোগের গল্প শুনলাম রিংকির কাছে।
পরিকল্পনা অনুযায়ী পরের দিন মাধবকুণ্ড যাবার কথা। সেটা রদ করে আমরা সিলেটই ফিরতে চাইলাম। লক্ষ্য রাতার গুল।
ঘুমের পর সকালে নাশতার আয়োজন। সেই রুটি , ডাল আর ডিম ভাজি। চা সেরে নিয়ে আমরা গুছিয়ে বেরুতে চাইলাম। সিএনজি ভাড়া করা হলো। যথারীতি আমরা শ্রীমঙ্গল শহরে।
হবিগঞ্জ সিলেট এক্সপ্রেস আমাদের বয়ে নিচ্ছে-- বিরতিহীন এ সার্ভিসে আমরা সিলেট শহরে এসে দাঁড়ানোর পর হেরিটেজ হোটেল আমাদের গন্তব্য!
তার আগে পানসি রেস্টুরেন্টে দুপুরের খাবার--- যদিও তখণ চার টা পার হয়ে গেছে। তাতে কি লাঞ্চ তো লাঞ্চই! চিংড়ির কারি, মুরগির রোস্ট , মাছ, ভাজি ভর্তার সমাহারে খাবার শেষে হোটেলে ফিরে ফ্রেশ হবার পর আমরা সন্ধ্যার দিকে গেলাম সার্কিট হাউসে।
রীতির সিলেটি বন্ধূদের সাথে আড্ডা হলো ঘণ্টা দুয়েক। এর মধ্যে নাকিবের রেড কালারের আমব্রেলা লাগবে--- যাবার পথে রীতি টুক করে নেমে সেটিও কিনে হাতে তুলে দিলো।
পানসি--- সেই রক্কম ভিড়। সেই ভিড় ঠেলে রাতের খাবারের সাথে সাথে হাছন রাজার যাদুঘরের দ্যাখা মিলল--- বাইরে থেকে। রাতের হোটেল ফিরে লম্বা ঘুম।
সকালে কালো মাইক্রোবাসে আমরা চড়ে বসলাম--- গন্তব্য বিছানাকান্দি। গোয়াইনঘাট--- হাদার পাড় হয়ে নৗকায় চেপে বসলাম। পানি আর নাজিব দুটোরই বন্ধুত্ব পুরনো।
নাজিব বিছানাকান্দির পথে ভিজে নেয়ে একাকার। পাহাড়ের ছায়ায় নদীর জলে পাথরের সাথে জমছে আমাদের ভ্রমণ যাত্রা।
বিছানাকন্দি পৌছে নাজিবকে একবার নামানোর পর তুলে আনাটা ছিল চ্যালেঞ্জ। ঘণ্টাখানেক ভেজার পর আমরা উঠতে চাইলাম। পাহাড়ের ওপর থেকে নেমে আসা ঠাণ্ডা জলের ধারা মিশে যাচ্ছে নদীর জলে। জলের তলে জমে থাকা পাথর তুলে নিচ্ছে ব্যবসায়ীরা। সৌন্দর্য হানি হচ্ছে --- এ নিয়ে হা পিত্যেশও করলাম।
এখানে সরকার বাহাদুরের নজর পড়লে ভালো আয় ইনকাম করাও সহজ হতো্ বলে মত দিলাম।
কিন্তু এটা তো সত্যি এ রকম একটা ছোটখাটো বিছানাকান্দি নিয়া ভাবনার মত সময় সরকারের নেই। তবে বেসরকারি উদ্যোক্তারা ভাবতে পারে। ট্যাকা থাকলে নিজেই ভাবতাম!
ফিরছি--- ফিরে যেতে হয় বলে।
সন্ধ্যায় হোটেলে এসে হতে- পা ছড়িয়ে একটু বিশ্রাম নেবার পর রাত্রিকালীন দাওয়াতে আমরা।
রীতিদের বাসায় রাতের খাবারের নেমতন্ন। সাতকড়ায় পাকানো গরুর গোশত, ছোট মাছের বড়া, গোশতের কোপ্তা, মুরগির রোস্ট, মাছ ভাজি, বড়ইর আচার--- মতিচুরের লাড্ডু, মিষ্টি --- খাদ্য গ্রহণ শেষ করে উঠে দাঁড়ানো কষ্টকর হলেও উঠতে হলো।
বাস সাড়ে ১১ টা। কিন ব্রিজের উপর দিয়ে আমরা সিএনজি করে চলে এলাম শ্যামলী বাসের কাউন্টারে। ---- ছুটলো বাস উল্কার বেগে। এটাই যেন নিয়ম--- জীবন নিয়ে জুয়া।
আনন্দঘন সময়গুলো দ্রুত ফুরিয়ে যেতে থাকে--- স্মৃতির পাতায় জমতে থাকে প্রতিটি ভ্রমণ আর বয়স ড়তে থাকে। আমরা বুড়িয়ে যেতে থাকি! কী দারুন আহা কী দারুণ । আহা কী দারুণ জীবন!

নির্বাচন করে রাষ্ট্রীয় অর্থ অপচয়ের কোনো মানে হয় না

ভাই সব
আম্লীগ অত্যন্ত গণতন্ত্র-বান্ধব দল। আপনাদের ভোটের অধিকার আদায়ের জন্যতারা এতগুলোর বছর ব্যয় করেছে--- নিশ্চয় আপনাদের সেটা মনে রাখতে হবে। 
ভাই সব ---দেশের উন্নয়ন -নেতৃত্ব দেবার জন্য আমরা তাদের বেছে নিয়েছি।
তাই তাদের দলের পেশি শক্তির ব্যবহার; ক্ষমতার অপপ্রয়োগ সহ যে সব কথা-লেখা তাদের বিরুদ্ধে যায়---এমন আলোকপাত গণতন্ত্র, দেশের স্থিতি -উন্নয়ন বিরোধী । মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিনাশী।

তাই আসেন---নিজের চরকায় তেল দিই।

তারপরেও সরকার যেহেতু এখনো নাগরিকত্ব রেখেছে---তার দাবি নিয়ে বলছি---এ সব ফালতু নির্বাচন করে রাষ্ট্রীয় অর্থ অপচয়ের কোনো মানে হয় না।

যে যেখানে থাকুন নিরাপদে থাকুন। স্রষ্টার দরবারে দুর্বলের এ আকুতি থাকলো।

আম্লীগের রাজনীতির কাছে তুমরা দুগ্ধপোষ্য অপুষ্ট শিশু



কিছু আবুল আছে ঢোলের দুই পিঠে পিটায়। আহা তুমার এত মাথা ব্যথা ক্যান। বিম্পি ৫ জানুয়ারীর নিব্বাচনে যায় নাই--- এটা চ্রম ভুল ছিল।  কানে কানে তুমরাই তো কইছো।  বিশ্বাসও করছো--- ইসি কি বাল ছিঁড়তো--- নির্বাচনে গেলে ক্ষমতায় যেতো বিম্পি।  এ সব তো তোমগো ইন্টারনাল বয়ান।
আম্লীগের রাজনীতির কাছে যে তুমরা দুগ্ধপোষ্য অপুষ্ট শিশু সেইটা বোঝনের ক্ষমতা তোমাগো নাই। একবার ক্ষমতার স্বাদ পাইছিলা--- তাই ভাবছ ক্ষমতা কী মোহনীয়--- ! খালি উপভোগ করবা। ত্যাগ করতে শিখো। ত্যাগ ছাড়া আম্লীগও এত দূর আসতে পারতো না। বহু বছর ক্ষমতার বাইরে ছিল দলটি। সেইটাও ভাবো---

নগর নির্বাচনে বিম্পিকে তাড়িয়ে নেবার জন্য একজন রাষ্ট্রবিজ্ঞানীকে দোষ দ্যায় কেউ। কেউ ডিহবাহির চরম পরম আলোচিত নেতার সমালোচনা করে। বলে সরকারের বাইরে থেকেও লোকটা সরকারেই আছে।  আরেকজন বিম্পি অফিসে বসে আম্লীগের কাজ কর্ম করে বলে অভিযোগ।

আরে ভাই তোমরা কই আছিলা। তারা এ সব জায়গায় যদি যাইতে পারে--- তুমি পারো নাই ক্যান।

আম্লীগের টোপটা বোঝ নাই ক্যান। ঢাকা ও চট্টগ্রামের বাইরের সিটি নির্বাচনের  ফল তোমাগো পক্ষে না দিলেও তারা পারত। কেন দিয়েছে--- দিয়েছে বড় ফলটা তারা খাবে। সংসদ নির্বাচনটা নিজেদের অধীনে দেয়াটা জায়েজ করবার জন্য। অকাট্য প্রমাণ তখন সবার সামনে-- তাজা।
এ সব বোঝার মত তোমাদের মাথায় মালের অভাব। তাই তোমরা ফাঁদে পা দিছো।

খরবদার জণগণকে জিম্মি কইরা আর রাজনীতির  নোংরা খেলা খেলবা না। তোমরা আগে নিজেরা ঠিক হও; রাজনীাত বোঝো; দলের ভিত্রের দালাল মুক্ত করো--- আদর্শের জন্য রাজনীতি করো--- তারপর আলাপে আইসো।

 যারা আমার এ  আওয়াজে কষ্ট পাইছেন--- তারা আমারে ত্যাগ করেন। মনে রাখা ভালো--- আমি কারো সাতেও নাই পাঁচেও নাই। শান্তি চাই। তোমরা তোমাদের  রাজনৈতিক দুরদর্শিতার অভাবে--- কৌ্শল নির্ধারণে ব্যর্থ হয়ে জণগণকে জিম্মি করবা--- তা হবে না।  তা তুমি বাবা আম্লীগ হও; বিম্পি হও, জমাত -জাতীয়পার্টি--- বাম রাম যাই--- হও!

শান্তি চাই।

আমি রকিব হবো না--- মইন--ফখর হবো না

জানি প্রিয়তমা
বন্দুকের নলের সামনে টিকে থাকা মুশকিল
চেষ্টা করতে দোষ কি বলো
মৃত্যু হবেই ; তাই বলে মওদুদের মত বাঁচবো!
সব সময় সরকারি দলে থাকা তো সম্ভব না

এ ভাবে আর কত লেয়াঁজো করে চলবো--- খোকার মত।
কতবার আমি নিজের ঘাটের টাকা খরচ করে গ্রেপ্তার হয়ে
আন্দোলন থেকে দূরে থাকবো বলো!

তার চেয়ে এই ভালো-- সব মেনে নিয়ে
আমি এমাজ--রিজভী--আইভি-- জুনায়েদ সাকী হবো

অমি কখনো অস্বীকার করবো না আমার অপরাধ
কখনোই আমি মুজাহিদ হবো না। নিজামীর মত বলবো না সব মিডিয়ার সৃষ্টি


জানি প্রিয়তমা
আনিসুলের মত আমার ভাই নেই
তার সম্মোহনী ক্ষমতা আমাকে রাতারাতি নির্বাচনি টিকিট এনে দেবে!

মাহির মত আমার পেছনে--- প্রেসিডেন্ট বাবা নেই।
রাজনৈতিক পরিবার নাই।
তাবিথের মত আমার বিত্তবান পিতা নাই---
নাই আমার মেয়র হবার বাসনা


তবে আমি সাঈদ খোকনের মত সততা নিয়ে চলতে চাই
মির্জা আব্বাসের মত স্ত্রীকেও বের করে আনতে চাই চার দেয়ালের বাইরে


হাল ছেডেনো
পোষা কুকুর হতে পারিনি বলে আমি হেরে যাবো ।
হতে পারে না; মানুষ কখনো হারে না

নির্বাচন কমিশনের দুয়ারে যাবো না
আমি রকিব হবো না---  মইন--ফখর হবো না

 মাসুদ হবো না--- রেস্টুরেন্ট খুলবো না কখনোই

মানুষ হতে এসেছি। মানুষ হবার চেষ্টা করে যাচ্ছি---
মানুষের মনের কথা শুনতে এসেছি--- মানুষের কথা শুনে মিলিয়ে যাবো

জানি বন্দুকের নলের অনেক শক্তি--- তারচে বেশি শক্তি প্রকৃতির।
খেয়াল দেখো--- ধবসে গেছে দরবার হল
টিকে আছে মানবতা--- এ মানবতা জাগ্রত করতে কোনো পয়সা খরচ হয়নি।
উঁচু করতে হয়নি বন্দুক!

জয় হোক মানুষের। জয় হোক মানবতার। জয় হোক বোধ-চিন্তা-মানবিকতার!

যৌন হয়রানির জন্য সরকার ঠেইলা ফালায়া দিবেন !

আরে ভাই আপনারা কি যৌন হয়রানির জন্য সরকার ঠেইলা ফালায়া দিবেন নাকি।   অফ যান; নইলে ---যৌন হয়রানি এ ক্যাম্পাসে নতুন না।

তবে এবারের দলিলটা  শক্ত---ছাত্র ইউনিয়নের লিটন নন্দী ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী। প্রভাবশালী পত্রিকায় খবর হয়েছে---তাই এ সবার কাছে বিশ্বাসযোগ্য মনে হয়েছে-- ঘটনা আমলে নিয়েছে পুলিশ ।

২০১০ সালে রাজু স্মৃতি ভাস্কর্যের সামনে কুড়ি জনের মত নারী চরমভাবে লাঞ্ছিত ও আরো অনেকে যৌন হয়রানির  ঘটনার পর খবরটি একামাত্র দৈনিক নয়া দিগন্ত---প্রকাশ করেছিল। সম্ভবত বিপরীত মতের পত্রিকার খবরটির উদ্দেশ্য ধরে নেয়া হয়েছিল---' নারীরা যাতে বৈশাখের উৎসবে না বের হন; তার একটা চক্রান্ত।' হিসাবে।

এবার সোস্যাল মিডিয়া, ছাত্র সংগঠনের অংশগ্রহণ এবং প্রভাবশালী মিডিয়ার নজরে আসায় বিচারের দাবিতে সোচ্চার--- আমরা সবাই । সাধারণত এ সব ঘটনা  এড়িয়ে  যেতে এবং নারীদের ওপর দোষ চাপিয়ে বিকৃত আনন্দ পেতে পছন্দ বেশির ভাগ লোকের!  তবে এবারের এ প্রতিবাদমুখরতা--- কোনো অর্থেই কম প্রাপ্তি নয়।

তবে ২০০০, ২০১০ সালের ঘটনাকে আমলে নিলে এবারের বিপর্যয় এড়ানো যেতো বলে  মনে করি।

 যে কোনো ঘটনার পর পরই তা নিয়ে তদন্ত হওয়া উচিৎ। যদি সে খবর ভিত্তিহীন হয় তাহলে সেই গণমাধ্যমকে  অভিযুক্ত করে শাস্তিও দেয়া যেতে পারে।

 কিন্তু খবর এড়িয়ে যেতে যেতে একব সময় যখন  নিজের ঘাঁড়ে এসে পড়ে তদ্দিনে ক্যান্সার আর নিয়ন্ত্রণে থাকে না।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বহিরাগত তরুণরা ডেট করে নামে যে যৌনতায় জড়িয়ে ক্যাম্পাসে সুনাম হানি করছিল--- ছাত্রীরা বিব্রত হচ্ছিল--- তারা এ নিয়ে হল প্রভোস্টদের কাছে অভিযোগ করার পর একাডেমিক কমিটি ও সিন্ডিকেট বৈঠকে আলোচনার পর একটা সিদ্ধান্তে আসে--- ক্যাম্পাসে বহিরাগত যুগলদের দেখা গেলে তুলে দেয়া হবে। এর একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিও দেয় কর্তৃপক্ষ--- সেটি  সে সময়  মানব জমিন রিপোর্ট করে। এর কাউন্টারে বিবিবি বাংলা রিপোর্ট করেছিল--- একজন ছাত্রীর মুখ দিয়ে বলিয়েছিল--- এটা মাদ্রসা না।

আসলে তো তাই এটা মাদ্রাসা না। আবার এটাও তো ঠিক এটা বহিরাগতদের  ডেটিং স্পট না। ক্যাম্পাস  তার নিজস্ব জনগোষ্ঠীর জন্য। বহিরাগতরা এখানে কেনো আড্ডা জমাবেন--- এমন আড্ডা  যা তার পরিবারও পছন্দ করছে না।

ভালো কথা--- কিন্তু স্বেচ্ছা যৌন সুখ  এবং জবর দস্তিমূলক হয়রানির মধ্যে আকাশ পাতাল তফাৎ রয়েছে--- সেটি আমরা জানি।

তাহলে আমরা কি এ যৌন হয়রানির বিরুদ্ধে কঠোর অ্যাকশনের শুরুটা ২০০০ সালের শতাব্দী বরণ উৎসবে বাঁধনের কাপড় খুলে নেবার পর করতে পারতাম না। পারতাম--- আমরা করিনি। কারণ  আমরা ধরে নিয়েছি--- একটা মেয়ে রাত ১২ টার পরে টিএসসিতে আসবে কেনো--- তাই এ পরিণতি গ্রহণযোগ্য।

তার উপর এর অভিযোগের তীর ছিল সরকার দলীয় ছাত্র সংঘটনের বিরুদ্ধে। সে সময়কার পত্রিকার খবর অনুযায়ী  এটি আমাদের বিজ্ঞানের ছাত্ররা থাকেন-- সে সব হলের ছাত্রদের কাণ্ড!

২০০০ সালের সেই রাতের প্রত্যক্ষদর্শী  আমরা কয়েক বন্ধু। আমার এখনো মনে আছে নিউ ইয়ারের এ সব আয়োজনে নারী দেখলে শুকুনের মত কিভাবে  'প্রগতিশীল' পুরুষেরা হামলে পড়ে---আমরা বন্ধুরা মিলে রোকেয়া হলের এক ছাত্রীকে উদ্ধার করতে গিয়ে সেটা টের পেয়েছিলাম।

রাত সাড়ে আটটার দিকে রিকশায় করে এক ছাত্রী ক্যাম্পাসে ফিরছিলো--- উৎসব উচ্ছ্বাস সবে জমতে শুরু করেছে। মেয়েটির পেছনে ছুটছে অনেকে। রিকশার উপর দাঁড়িয়ে মেয়েটি সাহসের সাথে বলল-- 'কেউ গায়ে হাত দিবি না। আমি এ ক্যঅম্পাসের মেয়ে। আমি  রোকেয়া হলে থাকি।' ততক্ষণে তার ওড়না উড়ে গেছে।
 তার পরেও কে কার কথা শোনে--- আমরা চেলা কাঠ নিয়ে রিকশা আটকানো যুবকদের পিটাচ্ছিলাম। আমাদের সাথে আরো কয়েকজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী যোগ দিয়েছিলেন-- বলে সেই ছাত্রীর রক্ষা।

এরপর আজাদ চৌধূরী স্যার বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সব ধরণের নারীর  ইংরেজি বর্ষবরণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলেন।  সে রেওয়াজ এখনো আছে। নারীরা রাতে ক্যাম্পাসে বের হতে পারে না। অথচ এর বছর দুয়েকের মাথায় বিশ্ববিদ্যালয় উইমেন স্টাডিজ ডিাপর্টমেসন্ট খুললো--- নারী নিয়ে পড়ার জন্য।


 জেন্ডার নামে একটা কোর্স সোস্যাল সায়েন্স ফ্যাকালটির সবগুলো ডিপার্টমেন্টে পড়ায়--- তারপরেও এ হাল!

২০০২ সাল থেকে ক্যাম্পাসের বাইরের কেউ  ইংরেজি নববর্ষে ঢুকতে পারে না।

২০০১ সালের নারী মুক্ত থাকা ক্যাম্পাসে থার্টি ফাস্টে আমরা আড্ডা দিচ্ছি। অনেক বন্ধু মিলে। সোহরাওয়ার্দীউদ্যানের গেটে হঠাৎ মোটর বাইকে এক তরুণের দেখা মিলল--- তার লম্বা চুল- জুটি। শীত কাল মুখ ঢাকা । ছেলেরা মনে করলো---  মেয়ে। টেনে নামানো হলো। ছেলেটা চিক্কুর মেরে কইলো ভাই আমি ছেলে!

বিশ্বাস হচ্ছিলোনা বলে তার সুয়াটার টেনে খোলা হলো--- পুলিশ হাসছিল এখনো মনে আছে।

২০০২ সালে  ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে  ব্যাপক পুলিশ--- তখন আমি ক্যাম্পাস রিপোর্টার।  স্বোপার্জিত স্বাধীনতা চত্বরের সামনে বসে আড্ডা দিচ্ছি।

রাত বারেটার দিকে জনা বিশেক নারী এসে দাঁড়ালেন স্বোপার্জিত স্বাধীনতা চত্বরের উল্টো দিকে-- টিএসসির সামনে।

 হুড় মুড় করে ছেলেরা ছুটে আসলো--- ছেলে পুলিশ তাদের আগলে ধরে জানালো এরাও পুলিশ--- মহিলা পুলিশ। সিভিল ড্রেসে বলে চিন্তে অসুবিধা হচ্ছিলো।

মহিলা পুলশেরা পরে এসেছিল ট্র্যাকশূট।  আমরা হেসে গড়াগড়ি--- পরে মানবজমিনে এর একটা নাতিদীর্ঘ রচনা লিখেছিলাম।

দেখুন--- ২০০০ সালে নির্মম ঘটনা এবং পরের বছর সরকার বদল হবার পরেও নারীর প্রতি কোনো রকমের হয়রানির আগ্রহ কমেনি।

 পরের বছরগুলোতে আর এমন ঘটনা দেখিনি--- পয়লা বৈশাখ উৎসবটা সব সময় নারীদের ঘিরের ধরে কিছু তরুণ--- তবে বৈশাখি কনসার্টগুলোতে যৌন হয়রানির কিছু ঘটনা পরবর্তী বছরগুলোতেও ছিল; তবে সেটা সংখ্যায় কম।

২০১০ সালে এটা বড় আকারে হবার পর  বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা এর প্রতিরোধ করেছিলন--- তাই এটা কেউ  আমলে নেয়নি। না পলিটিক্যাল পার্টি; না বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন--- না সরকার-- মিডিয়া!

 আমরা সাধারণত শক্তির পুজা করি--- ভালো কাজ বড় কাজ বড়রা করবে ধরে নিই। তাই এবার অন্তত সবাই নড়ে উঠেছেন--- এটাই শান্তি।

রাষ্ট্রবিজ্ঞানে পড়েছিলাম-- ক্ষমতা, ক্ষমতার কাছাকাছি এবং ক্ষমতাবানদের কাছাকাছি থাকতে সবাই পছন্দ করে। এটা চরম সত্য!

আপনারা যারা মাঠে-- ফেসবুকে--- ঘরে বসে---- এর প্রতিবাদ করছেন--- সবার প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই বলছি---

সাময়িক উত্তেজিত না হয়ে--- ঘটনার বিচারে সরকারকে যদি বাধ্য করতে পারেন তাহলেই সামনে এ ধরণের ঘটনা  কমবে। যারা এ সব করে তারা  সুস্থ্য হবার সুযোগ পাবে।

যৌন হয়রানির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলুন--- ঢাবি ক্যাম্পাস তুলে কথা শুনতে চাই না

বিস্ময়ের সাথে দেখছি- কিছু লোক সুযোগ বুঝে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে আক্রমণ করছে--- তাদের আসলে হিংসা-কষ্ট-না পাওয়ার বেদনার প্রকাশ বলে আমি এটাকে ক্ষমা করতে চাই।
এ ক্যাম্পাসে যৌন হয়রানি নতুন কোনো ঘটনা নয়; এ বিশ্ববিদ্যালয় সমাজের বিচ্ছিন্ন কোনো  কিছু নয়। সমাজের ক্রমহ্রাসমান ক্ষয়িষ্ণু সঙ্কট এখানে এসেও লাগে- এতে আমি কারো দ্বিমত আছে বলে মনে করি না।

পরিবার-অভিভাবক- সমাজ-সরকার, প্রশাসন এবং বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালকদের দায়িত্ব  সমাজের অনাচর বইবার ক্ষমতা কমিয়ে আনার মত নৈতিক শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলা।

 এমসিসিআইয়ের ১১০ বছর পূর্তি উপলক্ষে  ঢাকায় এসেছিলেন ভারতীয় সাবেক প্রেসিডেন্ট আবদুল কালাম। তার বক্তৃতায় শুনেছিলাম আগামীর বিশ্বের সামনে নৈতিক শিক্ষা একটা বড় চ্যালঞ্জে। আমি নিজেও তা মনে করি।

যারা না বুঝে, সাময়িক উত্তেজনার কবলে পড়ে পুরো বিশ্ববিদ্যালয় তলে কথা বলছেন- - - তাদের বলছি এবার অফ যান। অনেক হয়েছে। যৌন হয়রানির বিচারে সরকারকে বাধ্য করেন--- সেটা না করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এ সব হয়, চিপায়, কানায় কোনায় এ সব আগেও ছিল বলে; যারা বৈশাখি উৎসবে  নারীদের  শরীর খামছে ধরাকে জায়েজ করার চেষ্টা করছেন--- তাদের মানসিকতা কোনোভাবে সুস্থ্য এ কথা আমি বিশ্বাস করতে পারছি না।

 বিশ্বাস করেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কেনো আজ এ অবস্থা--- সেটিও আপনাদের রিয়ালাইজ করতে হবে। আপনাদের রাজনীতি, ক্ষমতার নোংরা বাসনা আর দাপুটে জীবনের জন্য আপনার অল্প দামে এখানে নিয়ে এসেছেন অস্ত্র, মাদক আর  বহু ভাষা বৈচিত্রের ভেতর বেড়ে ওঠা মানব সন্তানদের ভেতর জাগিয়ে তুলছেন আদিমতা পশুত্ব।

হিন্দি সিনামা, ইংরেজি নীল সিনোমা, রসময়গুপ্ত সিরিজ, কিম্বা সবিতাভাবি কমিক  সিরিজ দিয়ে তাদের উস্কাচ্ছেন। গুলিস্তান থেকে নীলক্ষেত , ফার্মগেট থেকে টঙ্গী, গাবতলী থেকে সায়েদাবাদ সবখানে এর প্রকাশ্য পসরা।

সামনে বলছেন--- অপরাধ। পেছনে বলছেন-- গেলো কেন। কোন ফ্যামিলি মেয়ে রে বাবা।  আপনারা মুখোশের আড়ালে পশুত্ব লালন করেন।  আপনারা সুবিধা মত সব কিছু পেতে চান--- জানবেন অনেক ত্যাগ আর জীবনের বিনিময়ে বিশ্বজুড়ে মানবিকতার আহবান।

 অনেক সম্ভ্রমের বিনিময়ে এই বাংলাদেশ।  এ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা  এই বাংলাভাষার প্রতিষ্ঠার জন্য একটা বিশ্ববিদ্যালয় একাই লড়াই করেছে--- সেটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

 আফসোস রাজনৈতিক গৃহপালিত  পশুত্বের কারণে আজ আমার প্রিয় ক্যাম্পাস আক্রান্ত।

  যে যেই দলই করুন না কেনো--- যে আদর্শই হোক না কেন--- নারীর প্রতি সহিংসতা রোধ করা আপনার আমার সবারই কাজ।

 তাই নারীকে অসম্মান করে আবার আস্ফালন করা জঘন্য। আর এটাকে উপলক্ষ্য করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে আক্রমণের স্পর্ধা যারা দেখান --- তারা নিজের সাথেই প্রতারণা করেন।

 আমি আমরা সবাই জানি--- এ সমাজ রাষ্ট্র জানে--- পঁচন সমাজের সব স্তরেই ছিল। এখন বেড়েছে। সামনে হয়ত আবার বাড়বে। সে পঁচন রোধেরও তরিকা আসবে--- সেটিও এ ক্যাম্পাস থেকে।

 আসেন আমরা অপরাধীদের শনাক্ত  করে শাস্তির আওয়াজ তুলি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসকে ঘিরে যারা নোংরা কথা বলছেন--- ধরে নিলাম তারা আসলে অবুঝ---উত্তেজিত। তাই ক্ষমা করি এবং নারীর সম্ভ্রম রক্ষা ও নৈতিক শিক্ষায় আপনার সন্তানকে ছোট বেলা থেকে শেকান--- তাহলে সামনে আর এ রকম  নোংরামি দেখতে হবে।

 হোন আপনি বিম্পি, আম্লীগ, জমাত, জাতীয় পার্টি, বাম-রাম-মুসলিম-হিন্দু-খ্রিস্টান-বৌদ্ধ। সব কিছু চাপিয়ে আপনি-আমি যৌক্তিক মানুষ হই। সে প্রার্থনা।

যৌন হয়রানির ক্যাম্পাসটি আমার!

এ আমার ক্যাম্পাস! তব্দ হয়ে গেলাম। নিঃস্ব হয়ে গেলাম। এ ক্যাম্পাসে নোংরা মনোবৃত্তির লোকরা আসে; নির্বিঘ্নে কুকর্ম করে সরে যায়। কখনোই তারা বিচারের আওতায় আসে না।
এর দোষ--- ওর দোষ করে শেষ পর্যন্ত শুয়রের বাচ্চাগুলোর চেহারা সিনহা বাবুর এজলাসে ওঠে না। আফসোস আরেফিস স্যার- - এখন এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি।
এ আমার বিশ্ববিদ্যালয়- এ আমার অহঙ্কারের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়!
আরেফিন স্যারের আমলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দু’টো নোংরা ঘটনা বিশালাকারে হয়েছে। ২০১০ রাজু স্মৃতি ভাস্কর্যের সামনে লাঞ্ছিত হয়েছিলেন কুড়িজন নারী। ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে এর অভিযোগও উঠেছিল- কিন্তু আরেফিন স্যার এখানেও ব্যর্থ। ক্ষমতা আঁকড়ে থাকতে এক সময়কার নৈতিকভাবে স্ট্রং শিক্ষককে দেখলাম--- কেমন যেনো মিইয়ে যাচ্ছেন।লুটিয়ে পড়ছেন ক্ষমতার পদতলে। ক্ষমতা তুমি এত মোহনীয় কেনো!
চূড়ান্তভাবে ব্যর্থ আরেফিন স্যার যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে কাণ্ডারি; তখন ২০১৫ সালের বৈশাখেও সেই একই কলঙ্ক। সেই একই স্থানে ঘটলো- নারীর প্রতি সহিংসতা। ঠেকাতে গিয়ে আহত ছাত্রইউনিয়ন নেতা লিটন। কুড়ি জন নারী আবারো লাঞ্ছিত হলে পশুত্বের আদিমতার নোংরা উল্লাসের কাছে।
অথচ ক্যাম্পাসে রেকর্ড পরিমান নারীর প্রতি সহিংসতার পরেও প্রগতিশীলতার দাবিদার কিছু শিক্ষক আরেফিন স্যারের রেফারেন্স লাগিয়ে সিভি বানিয়ে নারীর প্রতি সহিংসতার মন্ত্র বেচেন, এখানে ও খানে কতখানে সেমিনারে গিয়ে আলাপ করেন; টেকি দুনিয়াতেও তাদের ব্যাপক দেখা মেলে- কিন্তু নিজের ক্যাম্পাসে নারীর সুরক্ষায় এদের কোনো ভূমিকা নেই।
এরা আসলে মানুষ নয়; পা দুটো ঠিকই আছে। জবানও আছে। বাট এ সব বিক্রি হয়ে গ্যাছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নারীর প্রতি সহিংসতার খবর নতুন নয়। যৌন হয়রানি এখানে নিত্যকার ঘটনা।
ভাবলেই ঘেন্ন লাগে। কিন্তু সেই ঘেণ্নার কথা কাউকে বলতে পারি না। এতো আমারই ক্যাম্পাস। আমার রক্তে শিরা উপশিরায় এ ক্যাম্পাসের অনুভূতি। তাই এটাকে আমি অস্বীকার করতে পারি না। আমি এটা স্বীকার করে নিয়েই বলছি এ সব শুয়রের বাচ্চাদের বিচারের আওতায় আনতে হবে--- যারা নারী দেখলেই হামলে পড়ে তাদের পক্ষে কারো অবস্থান থাকতে পারে না।
নিজেকে খুব অসহায় মনে হয়--- এখানে নারীর পণ্য হিসাবে ভোগের সামগ্র বিবেচনা করে কিছু মানুষ নামের পশূ তাদের পশূত্ব ক্ষমতাকে উপভোগ করছে। আবার তারায় নাকি নারী স্বাধীনতা ঘোষণা করেছে। তবে একটা প্রশ্ন মনে আসে এ রকম ভোগের জন্যই কি এমন স্বাধীনতার ঘোষনা।
তাহলে আমি সেই স্বাধীনতার বিরোধী।
আমার দেখা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয ক্যাম্পাসে প্রথম নারী নিপীড়নের প্রকাশ্য ঘটনা--- টিএসটি চত্বরে। একুশ শতক বরণ করে নেবার প্রথম প্রহরে বাধনকে ন্যাংটা করা হলো। কারা করেছে---স সেটা নিশ্চয় কারো অজানা নয়।
বিচার?
হয়নি। হবেও না। এটা তামাদি। সে সময়কার ভিসি আজাদ চৌধূরী স্যার এখন মঞ্জুরী কমিশনের চেয়ারম্যান।
বিম্পির আমলে শামসুন্নাহার হলে পুলিশ ঢুকেছে- সে ঘটনায় শাস্তি হয়েছে । তবে সেটা আমার মনে হয়- আরো বেশি হতে পারতো। ভিসি, প্রক্টরের বিদায় নয়--- তাদের আরো দণ্ড দেয়া উচিৎ ছিল। কিন্তু মামলা হয়নি; তাই ট্রায়ালাও হয়নি। শাস্তি বলতে বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজস্ব যে গণ্ডি --- সেটুকু।
সেনা সমর্থিত মইন ফখরের সময়ও ক্যাম্পাসে যৌন হয়রানি হয়েছে।
তবে আম্লীগের আমলে এটা এতটা বেড়েছে- বলে বোঝানোর উপায় নেই। আম্লীগের সহযোগি সংগঠন ছাত্রলীগের একজন নেত্রী নিজেও নিপীড়নের স্বীকার হয়েছিলেন বলে খবরে পড়েছি।
বিবিসি বাংলা গত বছরের রিপোর্ট
এক বছরে অন্তত ২০ জন নারী ক্যাম্পাসে যৌন হয়রানির স্বীকার হয়েছেন।
২০১৫ সালের বৈশাখেও একই হাল।
এ সব যৌনে হয়রানি 'অপরাধ' হতো যদি বিপরীত মতের সরকার ক্ষমতায় থাকতো। যেহেতু এখন সমমনা সরকার ক্ষমতায় তাই তা অপরাধ নয়। এটা নিশ্চিতভাবে বিশ্বাস করি।

আসলে আমরা নিজেরা আক্রান্ত হবার আগ পর্য ন্ত বুঝিনা কত খ্রাপ অবস্থা।
এ লেখা কারো সংশোধনের জন্য নয়--। কয়লা ধুইলে যায় না ময়লা। এটা একজন বিক্ষুব্ধ মানুষের আওয়াজ মাত্র!

গুন্টার গ্রাসের জন্য শোক-শ্রদ্ধা



'আমার দেশ অপরাধী– কাঠগড়ায় দাঁড়িয়েছে সে
বহু বহুবার– অপরাধ তার তুলনাবিহীন।
আর আজ ভাগ্যের ফেরে– হয়তো নিছক ব্যবসাজ্ঞানে
অথচ মুখে বলছে ক্ষতিপূরণ হিসাবে– ঘোষণা করেছে
ইসরায়েলকে আরো এক ডুবোজাহাজ বেচবে সে
দুনিয়া ধ্বংস করতে পারে এমন ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া যায়
জাহাজ থেকে, ছোড়া যাবে সে দেশপানে
যে দেশে প্রমাণ নাই পরমাণু বোমা আছে
শুদ্ধ আছে ভয় আর ভয়ই তো অকাট্য প্রমাণ।
তাই আমাকে বলতে হবে যে কথা না বললেই নয়।'

 গুন্টার গ্রাসের কবিতা --- যে কথা না বললেই নয়

তরজমা--সলিমুল্লাহ খান


জার্মানির বিশিষ্ট ঔপন্যাসিক গুন্টার গ্রাস জার্মানির উত্তরাঞ্চলের শহর লুইবেকের এক হাসপাতালে আজ মারা গেছেন। তার বয়স হয়েছিল ৮৭ বছর।
সাহিত্যে বিশেষ অবদানের জন্য ১৯৯৯ সালে তাকে নোবেল পুরস্কার দেয়া হয়।
যুদ্ধ-পরবর্তী জার্মানিতে নীত-আদর্শের প্রশ্নে তার অবস্থানকে অনুসরনযোগ্য বলে ব্যাপকভাবে গ্রহণ করা হতো।
অন্যান্য সৃষ্টির মতোই তার অমর উপন্যাস ডি ব্লেশট্রোমেল (টিনের ঢোল) লেখা হয়েছিল পোল্যান্ডে তার ছেলেবেলার শহর ড্যানসিগকে ঘিরে।
এই উপন্যাসটি পরে যে ছায়াছবিতে রূপান্তর করা হয় সেটি অস্কার এবং পাম ড'অর পুরস্কার জিতেছিল।
তবে সর্বস্প্রতি তাকে নিয়ে বেশ বিতর্ক দেখা যায় যখন তিনি এই কথা বলে সবাইকে চমকে দিয়েছিলেন যে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় তিনি নাৎসী বাফেন এসএস বাহিনীর সদস্য ছিলেন।


সূত্র বিবিসি। 

হায় হোসেন; হায় হোসেন

বিম্পি - জমাতের সব্বাই যে এখন হায় হোসেন; হায় হোসেন করতেছেন তাদের এর ভিত্তি নিয়ে ভাবতে হবে।  এভাবে বিম্পি-জমাত জোটের ক্ষমতার বাইরে থাকা, ৫ শতাংশ ভোট পাওয়ার পরেও আম্লীগের ক্ষমতায় টিকে থাকা  এবং তাদের বন্দনা করা লোকের সংখ্যা কম না।

তাই একলা নব প্রজন্মকে  দোষারোপ করে, ব্লগারদের নাস্তিক ঘোষনা করে আর  আম্লীগকে দোষ দিলে চলবে না।

সময় অনেক বদলেছে- কিন্তু বিএনপি আর সহ রাজনৈতিক জোট সঙ্গী জামায়াত  জগদ্দল পাথরের মত ভাবনা নিয়ে বসে আছে ।  সময়ের সাথে যে অগ্রসর হবার দরকার আছে সেটা হয়ত তাদের ভাবনায় আছে--- কিন্তু তার জন্য যে পড়াশোনা এবং  বাস্তবায়নের করণীয় ঠিক করা দরকার- সেটি তারা করেননি।

তাই এক তরফাভাবে কাউরে দোষারোপ বিবেচনা প্রসূত নয়।

নিয়তই আমরা শুনি এবং অনলাইনের কল্যাণে জমাতের নেতাদের সাথে আম্লীগ নেতাদের ছবিও এর প্রমান করে- আম্লীগ জামাত সখ্যতা।

 কিন্তু সময় বুঝে তারা সে কাদা মুছে ফেলে সাফ সুতরো হতে পেরেছে।সেটাও একটা রাজনীতির দুরদর্শিতা। আপনারা কি তা করতে পেরেছেন বা করার চেষ্টা করেছেন।

ভেবে দেখুন এবং এর জবাব দিন। আত্ম সমালোচনা করুণ- উপকার পাবেন।

সময়ের সাথে মানুষের ভাবনা -আবেগ জাগিয়ে রাজনীতির চূড়ান্ত ফায়দা তুলে নিতে পেরেছে আম্লীগ। বিম্পি তা পারেনি। পারার কথাও নয়। কারণ জগদ্দল পাথরের মত বিম্পির বুকে উপ্রে চেপে থাকা  কিছু স্থবির চিন্তার মানুষ- ।

তাদের অগ্রসর চিন্তা করতে পারেন না। তারা কোনো কিছুকেই আমলে নেন না। সুবিধাবাদী, ধান্ধবাজরা দলের ভিত্রে বাইরে ঘুরছে--- আর তাদের হাত ধরেই সরকার হটানোর দুঃস্বপ্ন দেখেন তারা। এ দুঃস্বপ্ন সফল হবার কথা নয়। সব কিছুই এটা সিস্টেমে চলে-- সেই সিস্টেম ব্রেক করার মত সাহস লাগে। আম্লীগের সে সাহস ছিল বলে ৯৬ সালে বিম্পিকে তারা টেনে নামিয়েছে। সঙ্গী ছিল জমাত।

বিম্পি ভেবেছিল- তারা আম্লীগের জোট সঙ্গীকে জমাতকে নিয়ে--- সরকার হটাবে। এ হটানো শব্দটা অবৈধ। আম্লীগ একটা অবৈধ কাজ করেছিল বলে বিম্পিও তা করবে তা হতে পারে না। তবে খালেদা জিয়ার কথাটা ঠিক- একটা যৌক্তিক পরিণতি দরকার। আর এ রকম ভাবনার মানুষ দলটি হাল ধরে আছে বলে এখনো এ দলটি টিকে আছে।

জিয়াউর রহমান এ রকম দলের জন্য জীবন দিয়ে যাননি। তার ১৯ দফা আরেকবার পড়েন। ভাবেন এবং দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবার কারিশমা সমেত নেতৃত্ব নির্বাচন করেন। তারপর কাউরে দোষারোপ কইরেন।

আল মাহমুদ :: অনলাইন এক্টিভিজম এবং তার জৈবিক চাহিদা!


এনিমেলিটি ও রেশনালিটি মিলেই মানুষ বলে পড়েছিলাম এনথনেসিটি কোর্সে- এতদিন পরে এসে এর উদহারণ দেখছি ।

রাষ্ট্রবিজ্ঞানে আমাদের এ কোর্সটি পড়াতেন - আফতাব স্যার; অধ্যাপক আফতাব আহমদ।  যিনি নানা কারণে তর্কে- বিতর্কে ছিলেন । পরে তাকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে গুলি করে হত্যা করা হয়।

আর যাকে ঘিরে এ লেখার সূত্রপাত তিনি কবি আল মাহমুদ। তিনিও তর্কে বিতর্কে আছেন।

আফতাব স্যার আর আল মাহমুদ দু'জনেই স্বাধীনতা উত্তরকালে গণকণ্ঠের সে সময়কার আলোচিত মানূষ যাদের সম্পাদনায় কাগজটি বের হতো।

এরা দু'জনেই বামপন্থি রাজনীতির সাথে যুক্ত ছিলেন- পরে তারা ডান  এবং কেউ কেউ তারে মূল পরিচয় ঢেকে তাদের জামায়াতের রুকন হিসাবে আলোচনা করে থাকেন।

 তবে আফতাব স্যার এবং আল মাহমুদ দু'জনই রাজনৈতিক দল হিসাবে জাায়াতের সাথে জড়িত থাকার বিষয়টি সরাসরি নাকচ করে দিয়েছেন।

 সেটিরও সম্ভবত যুক্তি আছে-

আল মাহমুদকে  জামায়াতি লেখক হিসাবে পরিচয় করিয়ে দেয়ার পর তিনি সাপ্তাহিক  যায়া যায় দিনের ভালবাসা দিবস সংখ্যায়-- আদম হাওয়া-- কবিতা লিখে ব্যাপক কথিতক ইসলঅমিস্টদের রোষে পড়েছিলেন। তার লেখায় শরীর, রমন-রমণীর প্রথাগত জৈবিক দিকের তুমুল আলোচনা ও শৈল্পিক বর্ণণা  সাহিত্যের  সমঝদারদের মুগ্ধ করেছে। সাধারণ পাঠককেও আলোড়িত করেছে।

 জামায়াতি লেখক হিসাবে তাকে পরিচয় করিয়ে দেবার পরেও--কাবিলের বোন--- উপন্যাসে আল মাহমুদ  বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে ব্যাপক ভিত্তিক আলোচনা করেছেন; যেটাকে তিনি বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর প্রতি দায় শোধের চেষ্টা হিসাবে।

 তবুও তিনি জামায়াতি লেখক-
 কারণ লোকটা দাড়ি রেখেছে, নমাজ পড়ে আর  স্রষ্টা সান্নিধ্য লাভের অভিপ্রায় জানায়। তাই তিনি জমায়াত।  সেটাও  তর্কের খাতিরে মেনে নিলাম!

 কিন্তু তার সাহিত্য ক্ষমতাকে অস্বীকার হয়তো এখনই করা সম্ভব- তবে দীর্ঘ মেয়াদে সেটি করা সম্ভব হবে বলে মনে হয় না।
 দেখার বিষয় হলো প্রগতিশীল নামে কিছু লোক এবং জামায়াতিদের মধ্যে বিশেষ কোনো তফাৎ নেই। যেমন জামায়াতিরা সমম্বরে চিক্কুর মেরে বলে আহমদ শরিফ নাস্তিক। তার লেখা সমাজের কোনো কাজে আসেনি।  আবার প্রগতিশীল নামের কিছু পতঙ্গ আল মাহমুদকে চিক্কুর মেরে বলে জমায়াত। তাই তার লেখার মূল্য নেই।

তবে এ সব পতঙ্গ সূর্যের রশ্মীর নিচে পুড়ে ক্ষয়ে যাবে---আল মাহমুদরাই টিকে থাকবেন; কালের বিচারে। সাহিত্যের গুণে।

সেটিও বলা আমার উদ্দেশ্য নয়--- আমার ভ্রিতে অফুরান কৌতুহল  আল মাহমুদের বিয়ে দিয়ে--  ফেসবুকে ব্লগে আলোড়ন তোলা সে সব নিম্নমানের দায়িত্বজ্ঞানহীন প্রচারকদের  পরবর্তী কার্যক্রমের প্রতি---

যেমন আল মাহমুদের নেতিয়ে পড়া দণ্ড খাড়া করার জণ্য তিনি কি বদি ভাইয়ের  সরবরাহ করা ইয়াবা, নাকি হুমো এরশাদের পছন্দের ভায়াগ্রা নাকি হামদরদের  উত্তেজক হালুয়া সেবন করছেন-- সে সব জানানোও তাদের দায়িত্ব।

অথবা তিনি কোন  কোন ব্রান্ডের কনডম ব্যবহার করছেন; তাও জানানো তাদের কর্তব্য। যাতের করে দেশের তাবৎ 'প্রগতিশীল' সেই ব্রান্ড এড়িয়ে চলেন।

ব্যয় সাশ্রয়ের জন্য আল মাহমুদ  সরকারি রাজা কনডম ব্যবহার করছেন কিনা সে সব তথ্য জানা দরকার। তার মত একটা জামায়াতি লোক কেন সরকারের রাষ্ট্রীয় সাবসিডিতে আনা কনডম ব্যাবহার করবেন-- তা হতে পারে না। এ  বিষয়ে অনলাইন এক্টিভিস্টদের রুখে দাঁড়াতে হবে।

 যে ফেসবুকের মহান প্রচারকরা আপনারা নিশ্চয় সামনে  আল মাহমুদের বীর্যের শুক্রের উপস্থিতি, আশি বছরের একজন লোকের  দণ্ডের স্থায়ীত্ব সম্পর্কে জানাবেন।

 জাতি জানতে চায়। জাতি নাহলে আমরা আল মাহমুদের সাহিত্যের ভক্তকুল জানতে চাই!

 শুরুতেই যেটা বলেছিলাম- আফতাব স্যার ক্লাসে পড়িয়েছেন এথনেসিটি -- সেখানে রেফারেন্স জার্নালে পড়েছিলাম--- এনেমিলিটি ও রেশনালিটি মিলে মানূষ।  পশূত্ব জয় এখনো করতে পারেনি অনেক মানুষ- বহু মানূষ এবং স্বঘোষিত জাতির বিবেক--- ।  

Team Abhijatrik excels with BD-71

BD-71, a car developed by Team Abhijatrik of Bangladesh, competed with 129 teams from 16 countries. The competition was held in Manila, Philippines, during February 26 to March 1. The teams that went all the way to the finals, could book their berth only after overcoming steep hurdles in the qualification rounds throughout the year.
Though Bangladesh took part in this competition for the first time, BD-71 managed to secure seventh position in the gasoline category, which is highly commendable for a maiden participant from a developing country.




http://www.eindependentbd.com/home/displaypage/news_2015-04-12_9_14_b

‌ঢাকায় সব স্যাটেলার ইলেকশন করতাছে :(


‌'আদিবাসী' আন্দোলন ও আর গবেষণার নামে হরিলুটের মহাজনরা কই। ঢাকায় সব স্যাটেলার ইলেকশন করতাছে। একসেপ্ট সাঈদ খোকন। খালি পাহাড়ে গেলে বাঙালি স্যাটেলার অয়। ঢাকায় অয় না।

ঢাকার আদিবাসী বাসিন্দাদের আলাদা ভাষা-সংস্কৃতি-উৎসব-খাদ্য-পরিবহন-- সবই ছিল। স্যাটেলাররা সে সব ধ্বংশ করেছে। কোনো চুদির বাই গবেষক এইডা লইয়া কতা কয় না। খালি নগরে চাপ বাড়াও। আর স্যাটেলার  পুনর্বাসন করো। সব শালা ধান্ধাবাজ।

এইখানে ইউএনডিপির ফাইনান্স নাই, অ্যাকশন এইড মাথা নিচু করে থাকে। অক্সফামের গলা বন্ধ। আইএলও ১৬৯ অনুচ্ছেদ বাতিল। মানবাধিকার কশিন চেয়ারম্যান কিচ্ছু খুঁইজা পাইতাছে না।

কারণ একটাই এখানে কোনো ধান্ধা, ফিকির প্রভুদের এজন্ডা নাই। শালার গবেষণা। থু। 

ইহারা রাজনীতি করেন!

অফিস খোলার আনন্দেই বিম্পি যে হারে লম্পঝম্প মারতাছে। তাতে মনে লয় দেশোদ্ধার অইয়া গ্যালো। সালাউদ্দিন, ইলিয়াসরা যে নিখোঁজ সেইটা ভাবনের সময়ও নাই। পেট্রোল বোমার পুরা অভিযোগ যে তাদের ঘাঁড়ে সেইডাও ভুইলা গ্যাছে। দলের নিখোঁজ, ক্রসফায়ার, 'দুর্ঘটনা'য়  নিহত স্বজনের মূখ তাদের চোখের সামনে নাই।  আফসোসস। ইহারা রাজনীতি  করেন। 

ঝরণার জলে শীতল চোতমাস



মধ্য দুপুরে খাঁখাঁ রোদ্দুরে চান্দের গাড়িটা থামলো- এশা দেওয়ানের দোকান ঘেঁষে। ভারতের আগরতলায় পড়ে মেয়েটা। বান্দরবানের ফারুক পাড়ায় তাদের বাড়ি- ২০০২ সালে আমরা যখন  ফারুক পাড়ায় বিকালে এমটিভি শো দেখে বিব্রত - সে সময় এশার অনেক ছোট্ট। ফুটফুটে একটা মেয়ে। মানিক বাবুর ডেরায় বসে চা পান করতে করতে আমি আর শামীম এশার সাথে কথা বলছিলাম। এখন সে কলেজে পড়ে।

ভেতরে প্রায় মাইলখানে পথ পাড়ি  দিয়ে নেমে আসা ঝরণাটার নাম শৈল প্রপাত। এখানকার  একটা বৈশিস্ট্য হলো ১২ মাস পানি মিলে। ফারুক পাড়া ও এর আশপাশের মানুষ এখানে জড়ো হন। তখনো আমাদের নাফাখুম যাওয়া হয়নি- যাওয়া হয়নি বলতে সাহসে কুলায়নি। তাই শৈল প্রপাতেই বসে কাটাতাম বিকাল- দুপ্পুন কিম্বা সকাল।


 পাহাড়ে আমার বর্ষাকালেই বেশি ভালো লাগে। ছুটে চলা দুরন্ত কিশোরীর মতই চঞ্চল থাকে জলের ধারা। কৈশোরে স্কুল পালানোর কিশোরের মতই  নেমে যাওয়া জলের সাথেই ভরতে থাকে খাল- সেখান থেকে ছুটে যায় দূর গ্রাম বেয়ে নদীতে। সাধারণত কিছু পাহাড়ি ঝরণা বরষায় ঘোলা জলে মোহ ভাঙ্গে। শৈল প্রপাত তার ব্যাতিক্রম।

২০০৫ সালের চোত মাসের এক দুপুরের আমরা সেখানে। অররা ক'জন। খাঁ খাঁ রোদ্দুরেও শৈলপ্রাতের  ঠান্ডা জলে ভিজে যাচ্ছিলাম- পুরোটা দুপুর। জলে ভেজা,  জল গড়িয়ে পড়ার স্থান ধরে নিচে নেমে  ফারুক পাড়ার মাথা পর্যন্ত ঘুরে এসে ক্লান্ত আমরা। পাহাড়ি কলা- আর পেপে খেয়ে সবাই এনার্জির  ফিরে পেতে শুর হলো কেনাকাটা। সে সময় বাঁশের বানানো ব্যবহার্য জিনিসপত্র বিক্রি হতো সেখানে- বান্দরবান শহরে এর দাম ছিল বেশি। শৈল প্রাতের পাশে মালিক দেওয়ানের বাড়ির আঙিনায় বেশ কয়েকটি দোকানে এর দাম তুলনামূলক কম। এশার মায়ের সাথে চা খাচ্ছি। মানিক বাবু বিশাল এক শূকুরের মাথা নিয়ে আসলেন- চর্বি চক চক করছে।  বললেন- 'তারক দা' আজকে কিন্তু খেয়ে যেতে হবে।  আমি হেসে বল্লাম চান্দের গাড়ি টাইম শেষ। আমরা ছুটবো।
চা বিস্কুট খেয়েই ফিরছি। চান্দের গাড়ি চোত মাসের রোদে পুড়ে চলা পাহাড়ের খাঁজে কিম্বা ভাজে ঘুরছে।  বিকালের দিকে শহরের এসে মনে হলো- একটু রিস্ট চাই। আবার চাই না। তাই দু মুঠো পেটে দিয়ে সবাই গেলাম স্বর্ণ মন্দির।  তখনো এর নির্মান কাজ চলছিল।  মন্দিরে উপরে একটা বিশাল ঘণ্টি- সে ঘণ্টি বাজিয়ে দিলো আমাদের একজন। ভান্তে ছুটে আসেন- 'আরে তারেক ভাই পোলপাইন সামলান।' ভান্তেরা সাধারণত খিটখিটে মেজাজের হন। তবে অজানা কোনো এক কারণে স্বর্ণ মন্দিরে ভান্তে অধম বান্দাকে পছন্দ করেন জানি না।

নিজেদের সামলে নেমে এসে দেবতার পুকুরে বসে আছি। সন্ধ্যা নেমে এল পাহােড়েরর চূড়া থেকে নামতে নামতে হলো- এ জীবন পূর্ণ হলো- এ জীবন ধন্য হলো এ জীবন অনন্ত আনন্দ জড়িয়ে নিলো-

এখন সে সব স্মৃতি! ব্যস্ততা কেড়ে নিয়েছে সময়- আর রাজনীতি কেড়ে নিয়েছে নিরাপত্তা।