জলালের গল্প :: আদি রস ও নৃশংসতা

বস্তাবন্দী করে শিশু ফেলে দেয়ার  জন্য ট্রলারে তোলার নজির বিহীন নৃশংস দৃশ্য জলালের গল্প সিনামাকে প্রশ্ন বিদ্ধ করতে বাধ্য!  এটা  সমাজে ঘটে থাকতে পারে, তবে সেটা কোটিতে ১ টা ঘটনা। কোটিতে একটা ঘটনা কোনো সিনামায় উদাহরণ হতে পারবে না, সেটা আমি বলছি না। তবে অব্যাহত শিশু নির্যাতন, খুন এবং সে খুনের ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে দেবার বিকৃত সময়ে---- এমন একটি দৃশ্য শিশুদের জন্য একটা খারাপ খবর।

পরিবারে নতুন শিশু প্রত্যাশি চেয়ারম্যানের আবেগকে পুঁজি করে ভণ্ড কবিরাজের কুকর্মের সাক্ষী জালালকে 'কুফা' ঘোষণা করে সেই কবিরাজই।  কবিরাজ তাকে বেঁধে রেখে সবার জন্য যে ধোঁয়া ওঠা পাত্র  নিয়ে মন্ত্র পাঠ করছে, সেই একই রকমের কর্ম চালিয়ে জিন তাড়ানোর নামে শিশুটিকে বেঁধে রাখে গাছের সাথে ।

পরে তাকে বস্তাবন্দী করা হয়, সেটা নিশ্চিত ভাবে অগ্রহণযোগ্য। আমরা নিশ্চিতভাবেই জানি বিবাহ বহির্ভূত যৌবনজ্বালা মেটাতে গিয়ে অনেক সন্তান রাস্তায়-ডাস্টবিনে ঠাঁয় পায়। খুন হয়।

সে  গল্পও সিনামায় আসতে পারে। সেটা জালালের  গল্পের শুরু ও শেষের দৃশ্যটা হয়ত সিনেমাটিক বিবেচনায় মেনে নেবার মত। হাঁড়িতে করে একটা শিশুকে নদীতে ভাসিয়ে দেয়া হচ্ছে।  কিন্তু এ রকম ঘটনা কোটিতে একটা বা  দুইটা। তর্কের খাতিরে আমরা এটাকে লাখে ১ টা ২ টা হিসাব করতে পরি!

গল্পটা সেকেলে, আবল তাবল বক্তৃতায় ঠাসা। সম্ভবত বিদেশের বাজারে এর কাটতি ভালো। সমাজ যে অনেক এগিয়েছে জালালের গল্প তার প্রমাণ বহন করে না। একটা স্থবির সমাজের গল্প সিনামায় ঠাসা।

আদি রস আছে। তবে সেটির উপস্থাপনা বাড়াবাড়ি ও বোকার মত।

জালালের সামনে পুরুষ মানেই নারীর শরীর ভোগ-মত্ত-উন্মাদ।
অপাপবিদ্ধ এক শিশুকে ঘিরেই যে গল্প সূচনা করেছে  নির্মাতা আবু শাহেদ ইমন; সেটির বহু শব্দ অশ্লীল। বহু শরীরি ভাষা যৌনতায় ঠাসা। বহু প্রশ্ন উত্তর নিয়ে দর্শকের দুয়ারে আসতে পারেনি।

যেমনটা জালালরা কি পরিচয়হীনভাবে বেড়ে উঠে আবার পরিচয়হীনকে বাঁচাতে নদীতে ডুবে যায়! এটাই কি সিনামার মূল বার্তা।

নাকি স্থবির সমাজ কুসংস্কারে ডুবে আছে। সে সমাজে নারীর শরীর উপভোগের আয়োজনই একমাত্র অনুষঙ্গ। এটা আসল খবর!

ভিন্ন প্রশ্নও হতে পারে কারো জন্মের জন্য কাউকে মরে যেতে হয়। এটি কি কোনো্ সমাজ বাস্তবতা। এটাই কি সিনামার বক্তব্য!

কোনোটাই পরিষ্কার হয়ে ওঠেনি!

সিনামার শুরুতে সমাজের 'পানি পড়া' জাতীয় কৌতুক কৌতুহল বাস্তবতার সফল চিত্রায়ন  আছে। নদীর পাড়ে পাওয়া একটা শিশু সন্তান ঘিরে গল্পের শুরুতেই  কৌতুহল। শিশুটির পা ধোয়া পানি খেয়ে সবাই সুস্থ হচ্ছে। যে তাকে লালন করছে সে 'সদকা' তুলছে। সে সদকার টাকা নিয়ে প্রভাবশালীদের সাথে বিরোধের পর শিশুটির ভাগ্য একই--- নদীতে ভাসিয়ে দাও। তার পর নদীর ঢেউ তাকে তাড়িয়ে নিয়ে যে ঘোটে ভেড়ায়----সেখানে সে আবার বড় হতে থাকে এক চেয়ারম্যান প্রার্থীর  বাড়িতে। চেয়ারম্যান প্রার্থীকে নির্বাচনে জিতলে হলে 'পুত্র' সন্তান দরকার।  সে সন্তান আগমনের জন্য কুফা জালালকে তাড়াতে হবে--- পরামর্শ কবিরাজের!  সে জন্য যে নোংরা এবং নৃশংস ঘটনার চিত্রায়ণ সিনামাটিতে তা  মানা অসম্ভব।

চেয়ারম্যানের স্ত্রীর জন্য 'দুধ' সরবরাহ করেন বাড়ির কাজের ছেলে। সিনামায় 'দুধ' ঘিরে অহেতুক আলাপ দীর্ঘ--- 'দুধ' শব্দটার উচ্চারণ এবং ব্যবহার যে পুরো মাত্রায় অশ্লীল এবং  যৌনতার ইঙ্গিত---তা যে সব বাণিজ্যিক সিনামা অশ্লীল বলে বঙ্গ সিনামার দর্শক মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে সেটাকেও হার মানায়!

আনমনে থাকা সদ্য ঘরে আসা চেয়ারম্যানের তৃতীয় বধূর সামনে যখন 'দুধ' শব্দটা উচ্চারণ করা হলে; 'নববধু'র মিচকা হাসি এখানে কৌতুহল জাগায়। ইঙ্গতটা এ রকম যে চেয়ারম্যানের স্ত্রী বহু পুুরুষের ডাকে সাড়া দিতে ইচ্ছুক!

চেয়ারম্যানের স্ত্রীর ঘরে  ঢুকে ঠুসঠাস দরজা বন্ধ করে এগিয়ে আসাটা অনেকটা কনডমের বিজ্ঞাপনের মতই। চেয়ারম্যানের আগের দু স্ত্রীর খবর নেই। তৃতীয় স্ত্রী নিয়ে চেয়ারম্যান ঘাটে নৌকা ভেড়ান!

সন্তান জন্মদানে অক্ষম চেয়ারম্যানের শেষ চেষ্টা হিসাবে  কবিরাজ আনা্ হলো। এ কবিরাজকেও দেখা গেছে ভণ্ড সাধুর চরিত্রে। বলা হচ্ছে কবিরাজ, কিন্তু সে ধুপ জাতীয় ধোঁয়া তুলে মন্ত্র জপে।  হাঁস রঙ করে একটা টোটকা বানায়।  এতে বেশ বিরক্ত চেয়ারম্যান স্ত্রী! তাচ্ছিল্যও তার চোখে!

 এ সবের একফাঁকে  কবিরাজকে দেখা যায়, চেয়ারম্যানের স্ত্রীর সাথে বাগানে। ধোঁয়া উঠছে পাত্র ভেদ করে। ঘটনার পূর্বাপর না দেখে গাঁজা চলে আসে। কবিরাজ  দু'টান দিয়ে তা চেয়ারম্যানের তৃতীয় স্ত্রীর হাতে দিলে সে বেশ 'আরাম' করেই ২/৩ টান দিলো। একদিকে দেখানো হচ্ছে কবিরাজের চিকিৎসায় বিরক্ত চেয়ারম্যান পত্নী। আরেক দিকে দেখানো হচ্ছে  উৎফুল্ল হয়ে গাঁজা নিচ্ছে। টানছে; হাসছে।

 
আরেকটি দৃশ্যও খুবই অসঙ্গত। সেটি হলো বাইরে  চেয়ারম্যান স্বামীকে রেখে ভিতরে কবিরাজ তার স্ত্রীকে চিকিৎসা দিচ্ছে! চেয়ারম্যানরে মুখের উপর দরজার খিল এঁটে দিলো কবিরাজ। বাইরে অপেক্ষা করছে চেয়ারম্যান স্বামী। এমন দৃশ্য হয়ত গাঁজা আসক্তি থেকে তৈরি।

 আগেকার মানুষ 'বেক্কল' ছিল; তবে এতটা না। এটা নিশ্চিত করেই বলা চলে।

সিনামাটিতে দিনের পর দিন সন্তান দেবার নাম করে কবিরাজ চেয়ারম্যান পত্নীকে ভোগ করছে। এতে আবার  অতিষ্ঠ  চেয়ারম্যান স্ত্রী।  শেষ বার গেলে সে বলে-- 'এভাবে আর কতদিন। আপনি আটকুইরা।'  প্রতি উত্তর কবিরাজের---' পুত্র সন্তান পাইবি। আরো সময় লাগবে। '
এ সব দৃশ্য জালাল জানালার ফাঁক গলিয়ে দেখে।

 লক্ষণীয় বিষয় হলো---
চেয়ারম্যান পত্নীর ও কবিরাজের নোংরামি একটা শিশুর চোখে দিয়ে দেখানো কতটা সঠিক! সেটা সম্ভব্ত পরিচালক  ভাবেননি।  উনি হয়ত শিশু সামিউলের কথা ভেবেছেন। তার মায়ের কুকীর্তি দেখার কারণে খুন হওয়া সামিউলের মত আরো অনেকের জীবন বিপন্ন হোক---এটাই সম্ভবত পরিচালকের প্রত্যাশা।

চেয়ারম্যান পত্নীর ওপর কবিরাজের নিপীড়নটা 'জায়েজ' করে দেখিয়েছে পরিচালক। সন্তান পাবার জন্য এমন নিপীড়নে চেয়ারম্যান মেনে নিচ্ছে। চেয়ারম্যান পত্নীও।

অনেকে হয়ত বলবেন---সমাজ বাস্তবতা কোনো এককালে কিংবা নব্বুই ও শূণ্যের দশকেও এমন থেকে থাকবে হয়ত। হুজুর সায়দাবাদীর মার্কেটিং করার  সিনামটা যথোপযুক্ত। হুজুর সায়দাবাদীর ডিম পড়া খেয়ে নারী মা হয়েছেন। তার একটা গল্প সে সময়কার যায়ায়দিনে পড়েছিলাম।  যে তাগড়া জোয়ান পোলাপাইন দিয়ে হুজুর ডিম থেরাপি দিতো।

সেটা ধরে আলাদা সিনামা হতে পারতো। এ সিনামায় চটুল সুড়সুড়ি দেবার জন্য এ রকম অসভ্য ঘটনার অবতারণা অসঙ্গত।

শেষ দৃশ্যে মোশরফ করিমকে আমরা ভিন্ন চরিত্রে দেখি। তবে এখানেও বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক ।  সংলাপেও একটা অশ্লীল ধারা। যাত্রার নতর্কীকে বিয়ে করাটা অসঙ্গত সে কথা  উঠে আসে মোশরফের কণ্ঠে।  একটা নারীকে আটকে রেখে দিনের পর দিন ধর্ষণ এবং সন্তান সম্ভাবনা হওয়ার পর কুৎসিত প্রশ্ন ---  বাচ্চা কার? আমার (মোশারফ করিম), জালালের না অন্য কারো।

বাস্তবতা 'নরম' না 'শক্ত' সেটায়ও একটা অশ্লীল ইঙ্গিত!

 মজার ব্যাপার হলো সিনামাটি  বিচ্ছিন্ন ঘটনাকে জোড়াতালি দিয়ে একটা কিছু দাঁড় করানোর চেষ্টা।  এ দাঁড়ানোটা অশ্লীলতা আর নৃশংসতার উপর ভর করে। এ ভর কোনোভাবেই সুস্থ সিনামার জন্য ভালো খবর নয়।

বিম্পি; জিয়ার আদর্শ এবং


দেশের গণতান্ত্রিক অভিযাত্রার শুরুটা যার হাত ধরে; যাকে ঘিরে আম্লীগ ও তাদের বৈঠা ধরে নিজেদের অবস্থান জানান দেয়া নাম সর্বস্ব খুচরা দলগুলোর বিরামহীন কুৎসা আর অন্তহীন বিকৃত অভিযোগ; সেই মানুষটি দেশের থেমে যাওয়া সময়ে গতি সঞ্চার করেছেন; একটি দলের নেতা থেকে দেশের নেতা হিসাবে রূপান্ততির হয়েছেন- তিনি জিয়াউর রহমান।
সেই মানুষটির প্রতি শ্রদ্ধা। তার রাজনীতির দুরদর্শিতা; প্রজ্ঞা এবং বিচক্ষণতা নিয়ে দুরমুখেরা নানা রকমের কথা বলবেন- কিন্তু চূড়ান্ত বিচারে- তিনি অনন্য। আজ তার প্রতিষ্ঠিত দলটির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী।
এ কথাও সত্যি বিম্পি জিয়ার আদর্শ এবং তার ভাবনার দলের চেয়ে অনেক দূরে চলে গেছে। সাধারণত বুর্জুয়া রাজনৈতিক দলে চাটুকার থাকে, আছে। এবং এ সব চাটুকররা এতটাই শক্তিশালী যে তাদের চাপার জোর; ক্ষমতার কাছে নিরীহ কর্মীরা হারিয়ে যেতে থাকে।
বিম্পিও তার ব্যাতিক্রম কোনো উদাহরণ নয়। তবে একথা সত্যি বিম্পির কোটি সমর্থক এখনো দেশের স্বার্থে বিম্পির সাথে আছে। বিম্পি তাদের আবেগ ও অনুভূতির প্রতি সম্মান জানিয়ে দেশ ও মানুষের পদতলে নিজেদের উৎসর্গ করার বদলে চাকচিক্যময় ক্ষমতার দিকে নজরবন্দী করেছে; জনগণকে উপক্ষো করছে দলটি কথিত নেতারা। আসলে এরা দলের আসল নেতা নয়; পদ ভাগিয়ে অন্যের চামচামি করা লোক। এদের থেকে যে দূরত্ব বজায় রাখার কথা বিম্পির; সেটি নানা কারণে অসম্ভব না হলও দলটির প্রতি মানুষের আস্থা কমেনি।
তবে একথা চরমভাবে সত্যি দলটির অনেক নেতাই সরকারি দলাল; সুবিধাভোগি; বিশেষ বিশেষ রাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থার অনুগতদের এজেন্ট হিসাবে কাজ করছে। অনেকে নিজের বিত্ত বৈভব রক্ষায় আবার কেউ কেউ আম্লীগের মামলার কাতুকুতুতে ক্লান্ত।
একথাও সত্যি- চূড়ান্ত বিচারে এরা ঝরে না পড়লেও নৈতিকভাবে মাথা তুলে কথা বলতে পারবে না। তাদের জন্য করুণা; ত্যাগি নেতাকর্মীদের জন্য শুভ কামনা। দেশকে এগিয়ে নেবার অভিযাত্রার নেতৃত্ব দিতে হেঁসেল থেকে বেগম জিয়া বেরিয়ে এসে দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতিতে যে নতুন মাত্র যুক্ত করেছেন ; তাকে ঘিরেই জেগে থাক আশা।

প্রেম---তুমি জাফর স্যারের আবেগের মত ;)

প্রেম 
তুমি জাফর স্যারের আবেগের মত 
সব নিজের মত চাও! 
অন্যরা কি চায়, সেটা ভাবার সময় তোমার নাই ।।

প্রেমপত্র 
তুমি জাফর স্যারের পদত্যাগ পত্রের মত 
বার বার জমা হও। কথা রাখো না ।। 

প্রেমাভিমান 
তুমি চেতনার নামে বিভক্ত
তোমার প্রিয় মানুষের হেনস্তার পর বৃষ্টিতে ভেজো।। 

অতি প্রেম
তুমি ব্যর্থ হতে ভালোবাসো
তাই গরুর রশি নিজের গলায় নিতে চাও! 

প্রেম-পরকীয়া 
তুমি জাফর স্যারের জন্য অনলাইনে শোক করো 
কষ্ট পাও। শাহবাগে দাঁড়াতে পারো না এক সাথে ।

প্রেম আত্মা 
তুমি কল্পকাহিনীর চরিত্র। রোবটিক প্রতিক্ষণ।
বাস্তবতা বোঝো না ;) 

জাফর ইকবাল স্যার!! বিবেক কাকে বলে?

জাফর ইকবাল স্যার 'লাঞ্ছিত' হওনের পর সবার ক্রিয়া প্রতিক্রয়া আমাকে মুগ্ধ করেছে। আমি অত্যন্ত আশান্বিত এ কারণে যে, এ দেশে শিক্ষক লাঞ্ছিত করলে বিচার চাওয়া হয়। 'ছি' পড়ে। এটা দেখে খুবই ভালো লেগেছে।
তবে শিক্ষক লাঞ্ছনার ঘটনা এটাই প্রথম -- তা কিন্তু নয়। গত বছরের শেষের দিকে প্রজন্ম লীগ 'অস্থিতিশীলতা' করতে পারে এমন আশঙ্কায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের পিটিয়েছে। সে সব শিক্ষককে 'সাদা' বলে বিম্পি জমাতের ঘাটে ভিড়িয়ে আমরা সবাই নিশ্চুপ ছিলাম। এবং আম্লীগ ঘরাণার 'নীল' শিক্ষকরা এটাকে 'জায়েজ' বলেই কবুল করেছেন। এর আগে বিএনপিপন্থী অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহ মার খেয়েছেন--- তখনও এটাকে 'জায়েজ' ঘোষণা করা হয়েছে।
যারা স্যার জাফর ইকবালের হেনস্তার কারণে ক্ষুব্ধ এবং বিক্ষুব্ধ--- তাদের সবার প্রতি আমার শ্রদ্ধা। একজন শিক্ষক পুত্র হিসাবে যে কোনো মতেরই শিক্ষকের ওপর নিপীড়ন আমি অত্যন্ত ঘৃণার সাথে প্রত্যাখ্যান করি।
বাস্তবতা খুবই নির্মম যে এখন শিক্ষক নয়, ব্যাক্তি বিবেচনায় আমরা শ্রদ্ধা বা ঘৃণা নির্ধারণ করে থাকি। এর জন্য আমাদের নষ্ট রাজনীতি, ভ্রস্ট নীতি আর নিত্য বেড়ে যাওয়া ভোগের যোগানও একটা কারণ হতে পারে।
মনে করার চেষ্টা করছি--- সময়টা ছিল বিম্পির। জাফর স্যার শাবিপ্রবি'র হলের নামকরণ নিয়ে রাস্তায় বসে পড়লেন। সঙ্গে তার ভাই কিংবদন্তীর কথাশিল্পী হুমায়ুন স্যার। পরিবার পরিজন তো ছিলই । বিম্পি নতি স্বীকার করলো। এ সফলতার পর জাফর স্যার শাবিপ্রবির সে সময়কার ভিসি তারেক স্যারকে হটানোর আন্দোলন শুরু করলেন। তাতেও সফল তিনি।
স্যার যে রকম কল্পকাহিনী লিখে সফল হয়েছিলেন, হুমায়ূন আহমেদের ভাই হিসাবে প্রথম ব্রেক পেয়েছিলেন এবং জনপ্রিয় একজন লেখক হিসাবে নন্দিত হয়েছিলেন, সেই স্যারই তার নিজের মতের দলটির হাতে লাঞ্ছিত হয়েছেন। বার বার হয়েছেন। অত্যন্ত বেদনার সাথে আমরা তা দেখছিও। কিন্তু অক্ষম আমরা অনলাইট ফাটিয়ে রক্ত বের দিয়েছি, বাস্তবতে স্যারের প্রিয় গণজাগরণমঞ্চকেও একটা সমাবেশ ডাকতে দেখিনি।
সম্ভবত বৃষ্টির কারণে, সিজন বদলের এ সময়ে জর জারির ভয়ে এটা করা হয়নি। যাদের জরের প্রতি সমীহ, তারা তো অনলাইনে স্যারের জন্য সহানুভূতি জানাবেন--- এটাই সম্ভবত ঠিক।
জাফর ইকবাল স্যার খুব বোকা টাইপের মানুষ। এটা আমার ব্যাক্তিগত ধারণা। কারণ আম্লীগের সময় তার নতুন নতুন কিছু কল্পনা- পরি যুক্ত করে ওড়ানোর চেষ্টা করে তার প্রিয় মন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ও নুরুল ইসলাম নাহিদের কাছ থেকেও সহায়তা পাননি। যার জন্য যবিপ্রবি ও শাবিপ্রবির যৌথ ভর্তি পরীক্ষাটি নেয়ার পর সিলেটি আবেগের কাছে হার মেনে বাতিল করতে বাধ্য হন ।
সে সময় আমি ছোট্ট একটা রচনা লিখেছিলাম। অনেকটা ধরেন গরুর রচনা আর কি। তার লিঙ্ক Click This Link
স্যার সম্ভবত যে ভুলটা করছেন, সেটি হলো আমাদের আগ্রাসী রাজনীতির কঠোর, রূঢ় এবং ভয়ঙ্কর ষণ্ডামির রূপটা তিনি ধরতে পারেননি।
নিজেকে সমাজ সংস্কারক, আদর্শ শিক্ষক গুরু হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করতে গিয়ে তিনি যে শাবিপ্রবিতে একের পর এক সমস্যা তৈরি করছেন সেটিও তিনি উপলব্ধি করেননি।
আমি নিশ্চিতভাবে তার সাথে একমত এবং মনে করি একটি বিশ্ববিদ্যালয় একাডেমিক নিয়মেই চলবে। কিন্তু রাজনীতি যেখানে পঁচন ধরেছে, আমাদের সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে রাজনীতির বিষ সেখানে কীভাবে সম্ভব। তবে চেষ্টা থাকতে পারে। সে চেষ্টার সাথে আমি দ্বিমত করি না। বরং সহমত পোষণ করি ।
স্যারকে নিয়ে অনেকে উপহাস করেন। কেউ আবার তার চরম ভক্ত। তবে আমি মনে করি স্যার এক চোখা। স্যার যে তাবিজ বিক্রি করে থাকেন, সেটির চেয়ে এ জাতিকে এগিয়ে নেয়ার চেষ্টা এখন জরুরী। সে জন্য তার নির্দেশনা, দল মত এবং কূটনীতির উপরে ওঠার সময়। সেটি তিনি করতে পারেননি।
আরো অনেকে পারেননি। যেমন আমরা সম্বাদিকরা। জাতির কাছে যারা 'বিবেক' নামে পরিচিত। অথচ এদের কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া বাকিদের দিকে তাকালে মনে হয়--- বিবেক কাকে বলে? একই কথা শ্রদ্ধেয় জাফর স্যারের জন্য প্রযোজ্য!

এ মুহুর্তে পর্যটকদের থানছি ভ্রমণ বাতিল করাটাই যুক্তিসঙ্গত

থানছি -বড় মোদক পর্যটন আকর্ষণ। এ মুহুর্তে পর্যটকরা থানছি, তিন্দু, রেমাক্রি, বড় মোদক, বড় পাথর এবং নাফাখুম ভ্রমণ বাতিল করাটাই যুক্তিসঙ্গত।


আপনার জ্ঞাতার্থে জানাচ্ছি যে, থানছি সীমান্তে বাংলাদেশী সীমান্তরক্ষীদের সাথে মায়ানমারের বৌদ্ধ বিদ্রোহী বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী  আরাকান আর্মির  সঙ্ঘাতপূর্ণ  অবস্থান বিরাজ করছে।

আরাকান আর্মি ----বৌদ্ধ বিদ্রোহী এই সংগঠনটি চীনের উত্তর-পূর্ব ও মিয়ানমারের সর্ব উত্তরে বাংলাদেশ সীমান্তের কাছে কাচিন রাজ্যের স্বাধীনতার জন্য সরকারি বাহিনীর সাথে যুদ্ধ করছে। এদের মূল অবস্থান কাচিন রাজ্যের আরাকানে।

২০০৯ সালের ১০ এপ্রিল সংগঠনটি প্রতিষ্ঠা লাভ করে। ২০১২ সালে এক ঘোষণায় আরাকান আর্মি দাবি করে আরাকানে তাদের ৪০০-৫০০ সদস্য রয়েছে। তাদের স্লোগান হলো আরাকানি মানুষের জন্য আত্মনিয়ন্ত্রণ।


চ্যানেল আইয়ের খবরে বলা হচ্ছে--- আজ বুধবার সকালে বান্দরবানের থানচির বড়মদক এলাকায় বিজিবির টহল দলের উপর আরাকান আর্মির সন্ত্রাসীরা হামলা করলে বিজিবি পাল্টা গুলি চালায়। সেসময় বিজিবির নায়েক জাকির আহত হন।

বিজিবির ১০ সদস্যের এবং সেনাবাহিনীর ১০ সদস্যের আরেকটি দল টহল দেওয়ার সময় পরস্পরকে পেরিয়ে যাওয়ার সময় মিয়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদী আরাকান আর্মির সদস্যরা অতর্কিত হামলা করে।

এর আগে মঙ্গলবার বিজিবির একটি দল সন্ত্রাসী গ্রুপের ছয়টি ঘোড়া আটক করে। আরেকটি দল আটক করে আরো চারটি ঘোড়া।

‘এর সূত্র ধরেই হামলার ঘটনা ঘটেছে,’ বলে বিজিবি মহাপরিচালক জেনারেল আজিজ ধারণা করছেন।

বান্দরবানের সীমান্ত এলাকা এতটাই দুর্গম যে, ৪৩৯ কিলোমিটার এলাকায় কিছু ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠির মানুষ বাস করলেও সরকারিভাবে কোনো স্থাপনা নেই। গতবছর পর্যন্ত এরকম অরক্ষিত সীমান্ত ছিলো ৫৩৯ কিলোমিটার। তবে এক বছরে ১০০ কিলোমিটার এলাকায় বিজিবি তার নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছে।

পাহাড়ের জিইয়ে রাখা সমস্যা ও গণমাধ্যম

 পাহাড়ে সঙ্কট নিয়ে  সবচেয়ে সরব যে সব গণমাধ্যম --তারা দু'ভাগে বিভক্ত। একভাগ  পাহাড়িদের 'আদিবাসী' হিসাবে চেনে। তারা মনে করে, সেখানকার বাঙালিদের 'কুত্তাপেটা' করে বের করে দেয়া উচিৎ।

আরেকভাগ মনে করে, পাহাড়ে বাঙালিরা থাকবে। পারলে কিছু করিস।

এ দু'ভাগের মাঝামাঝি কোনো ভাগ থাকতে পারে।  তবে তারা খুবই সীমিত। সেটা হয়ত আমার অজ্ঞতার কারণে জানা হয়নি।

তবে কিছু ব্যক্তি সম্বাদিক আছেন যারা মনে করেন, পাহাড়ের জিইয়ে রাখা সমস্যার একটা আশু সমাধান জরুরী। তাদের মধ্যে আমি কয়েকজনকে চিনি। এর মধ্যে একজনকে অত্যন্ত বিনয়ের সাথে মনে রাখি- তিনি মাসুমুর রহমান খলিলী। তার বক্তব্যটা খুব পরিষ্কার।

তিনি আমাকে বহুবার বলেছেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম রাষ্ট্রেরই অংশ। তাই এখানে  কাউকে প্রশ্রয় দেয়া বা বিতাড়ন নয়। যে যার অধিকার বুঝে নিয়ে বসবাস করবেন। সন্ত্রাসীরা তাদের জিম্মি করে কোনো খারাপ কাজ করবে না। এটাই চাওয়া ।

তার কথায়, তুমি তাদের বাদ দিয়ে পাহাড়ে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে পারবে না। সবার সম্মলিত অংশগ্রহণই পাহাড়ে শান্তি ফিরিয়ে আনতে পারে।

আরেকজনের সাথে আমার কিছুটা দ্বিমত থাকলেও তার বিশ্লেষণ মনে ভয় ধরিয়ে দেয়। তিনি ফরহাদ মজহার। তার মতে, পার্বত্য চট্টগ্রাম বাংলাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন হতে বাধ্য।  কনফেডারেশন ফরমেট বহুকাল থাকতে পারে না।

মজহার ভাই  বলছেন, রাষ্ট্র কার সাথে চুক্তি করেছে?  এ চুক্তির কারণেই কনফেডারেশনের স্বীকৃতি মিলেছে।

এ সবই  তাদের নিজস্ব মত। তবে আমি মনে করি পাহাড়ে ভূমির একটা সমাধান করা গেলে, বেকারত্ব গোছানো গেলে এবং সন্ত্রাসীদের বিদেশি ফান্ডিং বন্ধ করা গেলে সেখানে একটা শান্তি প্রতিষ্ঠা সম্ভব।

এত বড় ভূমিকা দিলাম একটা কারণে। সেটি হলো সমতলের কিছু সম্বাদিক, গবেষক, এনজিও দোকানদার---সুবিধাবঞ্চিত পলিটিক্যাল পার্টির খুচরো লিডাররা  নিজেদের খুবই মানবিক এবং নীতিনির্ধারক হিসাবে তুলে রাষ্ট্রের সাথে সাংঘর্ষিক অবস্থান নিয়ে থাকেন। আমার ব্যাক্তিগ বুঝ বিবেচনা এবং চাওয়া পাওয়া সব সময় গণমানুষের পালস অনুধাবন করতে পারবে, এটা বোঝা খুবই মুশকিল।  যদি মুশকিল না হতো, তাহলে আমরা নিশ্চিতভাবে  সুখী জাতি হতে পারতাম।

বাংলাদেশের সবচেয়ে আমলযোগ্য পত্রিকা এবং যেটি আমি আমার  কষ্টার্জিত অর্থের  বিনিময়ে খরিদ করি--- সে খবরের কাগজ আজকে (১৭ আগস্ট ২০১৫) বলছে, তারা 'আদিবাসী' বলতে নিরীহ কাউকে বোঝাননি।  তারা এও বলছেন, তারা পাহাড়ের মানুষদের আদিবাসী বলছেন, সংবিধান যাদের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী বলে থাকে।

খবরের কাগজটির বক্তব্য  অনুযায়ী সংবিধান যা বলছে, তারা তা বলছেন না। তারা  বিপরীতটা বলেছেন। যেটা রাষ্ট্র স্বীকার করে না। এবং তাদের চাহিদা মাফিক শব্দটি  যে অযৌক্তিক তা প্রধানমন্ত্রী নিজেই ব্যাখ্যা করেছেন, ২০১১ সালে। সংবাদ সম্মেলন ডেকেই তিনি বলেছিলেন, পাহাড়ি মানেই আদিবাসী নয়।

ব্যাক্তিগতভাবে আমি আম্লীগের নেতিবাচক কর্মকাণ্ডের সমালোচক এবং তাদের সমর্থকও নই। তবে কিছু জায়গা আছে যেখানে আমি আম্লীগ বিশেষ করে দলটির সভানেত্রী  শেখ হাসিনার প্রতি প্রচণ্ড রকমের অনুরক্ত। বিশেষ করে পাহাড়ে শান্তি প্রতিষ্ঠায় তার প্রচেষ্টা মনে রাখতে হবে--- সে আমরা যে দলকে সমর্থন করি না কেন।

সাধারণত  গণমাধ্যমের সম্পাদকীয় একটা নীতি থাকে।  সেটির প্রতিফলন হয়ে থাকে সম্পাদকীয় বিভাগে। এখন খবরের কাগজটির  আজকের ক্লারিফিকেশনকে সঠিক ধরলে-- তারা এর প্রকাশ রিপোর্টেও করছে।  রাষ্ট্রের নির্দেশনা এখানে উপেক্ষত।  সেটা তারা করতেই পারেন এবং তা দেখার জন্য রাষ্ট্রের লোকজন আছেন।

আমার ব্যাক্তিগত মত হলো-- আমরা বলে থাকি  তথ্য ভিত্তিক নির্মোহ ঘটনার বয়ানই সংবাদ। অন্তত আমার কাছে তাই। তাহলে  সেখানেকোনো গণমাধ্যমের স্ব-উদ্যোগে কোনো জাতি গোষ্ঠীর পরিচয় নির্ধারণ করা কতটা  সমর্থনযোগ্য এবং দায়িত্বশীলতার প্রমাণ সে বিষয়ে আমার জ্ঞান শূণ্য।

খবরের কাগজটি প্রথম দিনই  রিপোর্টে বড় গণ্ডোগোল পাকিয়েছে। বলেছে গুলিতে মারা যাওয়া 'আদিবাসী'রা  ইউপিডিএফ ও জেএসএস (এম এন লারমা) সদস্য। এ তথ্য তারা ভালো করেই জানেন, পাহাড়ে কখনোই  এ দু'টো ধারা এক সাথে মেশেনা।  মেশেনা মানে এক সাথে কোনো আস্তানা গড়ে না। দাবি অভিন্ন হতে পারে।  কিন্তু এক সাথে ট্রেনিং বা সশস্ত্র কর্মকাণ্ড্ এখনো শুরু করেনি। এটা আমি অনেকটা নিশ্চিত হয়ে বলছি।

খবরের কাগজটির  রিপোর্টারদের যে দু'জন--- তারা পাহাড়ি। তাদের সাথে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ থাকার কথা। কারণ এক দশকেরো বেশি সময় ধরে তারা সেখানে সম্বাদিকতা করছেন। কিন্তু খবরটিতে  নিরাপত্তা রক্ষীর বরাতে  ইউপিডিএফ ও জেএসএস  সদস্য মারা যাবার  তথ্য উল্লেখ করার পর--- বড়াদমের বাসিন্দা বিনয়জ্যোতি চাকমার উদ্ধৃতি দিয়ে ওই খবরেই বলা হচ্ছে ,  তারা সন্ত্রাসী। ওরা এসে  অস্ত্র দেখিয়ে বলেছিল, তাদের থাকতে দিতে হবে।

.... কিন্তু আজকের কাগজটির ব্যাখ্যা আমার কাছে খুবই শিশুসুলভ মনে হয়েছে। তাই এ লেখাটার অবতারণা করলাম।  এ সুযোগে বলে রাখি পাহাড়ে যারা সম্বাদিকতা করেন তারা খুবই দায়িত্বশীল। আমি তাদের শ্রদ্ধা করি।

হজ ফ্লাইট শুরু

হজ ফ্লাইট শুরু হলো আজকে। আল্লাহর অতিথিরা বিমানে চড়ছেন। মনোরম দৃশ্যটা দেখে চোখে পানি চলে আসলো। আবার কবে যাবো। মনটা মানছে না। আবার যেতে চাই। বাচ্চাদের নিয়ে উমরায় যাবার ইচ্ছে ছিল। কিন্তু সরকার বাহাদুর সৌদি সরকারের সাথে সমস্যার সমাধান করতে পারেনি। তাই উমরার দরজা খোলেনি সে দেশের সরকার।  আমাদেরো যাওয়া সম্ভব হয়নি।

পৃথিবীর বহু জায়গায় গেছি। বার বার গেছি।  কিন্তু হজে যাওয়ার মত এত প্রশান্তি জীবনে দ্বিতীয়বার  স্মৃতিতে জমা হয়নি। আল্লাহ যেনো আমাদের হজের জন্য আরো বহুবার কবুল করেন, আমীন।

যারা হজ যাত্রা করছেন সে সেব সৌভাগ্যবানদের জন্য শুভ কামনা। সঠিকভাবে তারা যেন হজ পালন শেষে ফিরে আসতে পারেন। আল্লাহ নিশ্চিতভাবে  হজ যাত্রীদের হজের কাজকে সহজ করে দিয়ে থাকেন।  আশা করি বাংলাদেশের হজ যাত্রীরা আল্লাহর সে নেয়ামত উপলব্ধি করতে পারবেন। 

পাহাড়ে আর একটি গুলিও নয় !

পাহাড়ে গুলি হলে আমার বুক কাঁপে। ক্যান কাঁপে জানি না। কাঁপে। স্থানীয় রাজনীতি এতটাই প্রতিশোধ পরায়ন যে, কে কারে কখন মারবে, কে মরবে সেটি এক অনিশ্চিত।
এটা খুবই দুর্ভাগ্যের বিষয় যে, সেখানে দাতা সংস্থা থেকে সরকার, কথিত গবেষক থেকে সহমর্মি সবাই কোনো না কোনো পক্ষ নিয়ে থাকেন। আর সম্বাদিকরা তো আরো এক কাঠি সরস। কে কার কাঁচা ধরবে সে নিয়ে ব্যস্ত।
বাস্তবতা খুবই নির্মম। আজ শনিবার (১৫ আগস্ট ২০১৫)খবর এলো রাঙ্গামাটিতে একটি আস্তানায় পাহাড়ি ও নিরাপত্তা রক্ষীদের মধ্যে গুলি বিনিময়ের। নিহত হয়েছেন ৫ জন। গুলিবিদ্ধ ১।
এটা খুবই উদ্বেগের খবর।
দু'টি কারণে--- ১. শান্তি চুক্তির এতগুলো বছর পরেও সেখানে ফের বিচ্ছন্নতাবাদী আস্তান।
                ---২. খুন হওয়া মানুষগুলো জনসংহতির সংস্কারপন্থী গ্রুপের।
সংস্কারপন্থী নেতাদের মধ্যে মিস্টার সুধা সিন্ধু খীসাকে চিনি। তিনি খুবই কট্টরপন্থী কিন্তু যৌক্তিক মানুষ।
মুল অংশের একক কাণ্ডারী সন্তু লারমা কৌশলী।
যেহেতু জনসংহতির মূল পতাকার মালিক সন্তু। তাই তার সহচররা খুব সুবিধা পেয়ে থাকে। রাষ্ট্র থেকে শুরু করে জাতিসঙ্ঘ তাদের বেশ গুরুত্ব দেয়।
সুধা সিন্ধু সংস্কারপন্থী বলে পরিচিতি। সন্তুর অপকর্মের বিপক্ষে তাদের অবস্থা কঠোর।
আর ইউপিডিএফ সেখানকার এলিট পলিটিক্যাল পার্টি। সাধারণত তারা বৃহত জনগোষ্ঠীর মধ্যে জনপ্রিয়। নেতৃত্বও তারা অভিজাতদের মধ্য থেকে নির্বাচন করে থাকে।
পাহাড়ে শান্তি প্রতিষ্ঠায় রাষ্ট্র যতটা না পার্ট তারচে বড় পার্ট দাতা সংস্থা গুলো। দাতা দেশ ও সংস্থার পোষ্য কিছু বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক আছেন, যাদের বেশ কিছু গবেষণা 'দোকান' আছে, যারা পাহাড়িদের মধ্যে বিরোধকে কাজে লাগিয়ে দেশ বিদেশে রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি প্রশ্নবিদ্ধ করছেন।
এর সবই সরকার জানে। কিন্তু ব্যবস্থা নিতে পারে না। কারণ এখানকার মুধুকররা নানা রকমের প্রশ্রয় পেয়ে থাকেন ---বিভিন্ন দেশ, আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং স্থানীয়দের কাছ থেকে।
তারা ইচ্ছে মত, বকে যান নিরাপত্তা বাহিনীকে। বাঙালিদের গোষ্ঠী উদ্ধার সেখানে ফ্যাশন। ক্ষুদ্র গোষ্ঠীর উন্নয়নের নামে তারা গবেষণা করেন--- যার ফল শূণ্য।
কান নিয়েছে- চিলে। কানে হাত না দিয়ে; পাহাড়ে বিরোধ টিকিয়ে রাখতে অনেকেরই অবস্থান খুবই ধোঁয়াশা। এ ধোঁয়ার মধ্যে পাহাড়ে এখন প্রতিপক্ষের হাতে খুন, বাঙালি ও পাহাড়ি সঙ্ঘাত এবং আস্তানা ঘেঁড়ে সেখানে পরিবেশ বিপন্ন করছে অল্প কিছু মানুষ। এদের সাথে পাহাড়ের গণ মানুষের সম্পর্ক নেই বল্লেই চলে ।
নিরাপত্তা রক্ষীরা পাহাড়ে খুব একটা সুবিধা করতে পারেন না। এটা ভৌগলিক কারণে। রাষ্ট্র যন্ত্রও। কারণ রাষ্ট্রকে তার গতিতে চলতে বাধা দেয় কথিত স্বঘোষিত বুদ্ধিজীবি নামের কিছু আগাছা। যারা আসল ঘটনাটা না জেনেই কাজ করছেন।
আমার ব্যক্তিগত পর্যবেক্ষন হলো--এত জানের ক্ষতি, সাধারণ পাহাড়িদের হয়রানির ভেতর সেখানে নানা রকমের বিচ্ছিন্নতাবাদী কার্যক্রম মাথা ছাড়া দিচ্ছে। সেটি কেবল রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তাকে হুমকিতে ফেলছে না; একই সাথে পাহাড়ি নিরীহ মানুষের জীবন-জীবিকা এবং সামনের আলোর দিনগুলোর সামনে অন্ধকারে পর্দা টেনে দিচ্ছে।
আমার মনে হয় পাহাড়ে আর একটি গুলিও নয়। আর একটি দাওনা যেন রক্ত ঝরানোর জন্য না ওঠে। কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সবাই কাজ করবেন নিজের জন্য, পরিবারে জন্য রাষ্ট্রের জন্য।
বিচ্ছিন্নতবাদীদের ফান্ডিং করা সংস্থা ও দেশকে বুঝতে হবে--- ক'টা টাকা আর ক'জন নিরীহ নারীর শরীরের জল ঢেলে নিজের শরীর শীতল করে রাষ্ট্রের সাথে যারা বৈরিতার সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে সহায়তা করছে তারা ঠিক কাজটি করছে না।
আশা করি এটা কারো বুঝতে অসুবিধা হবার কথা নয়। রাষ্ট্রকে আরো দায়িত্বশীল হবার সময় এসেছে। সেখানকার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম কঠিনভাবেই মনিটর করারও সময় এখন।।

জোছনায় ডুবে থাকা বিল, ধেয়ে চলা রিছং, সাজেক ভ্যালি কিম্বা তিন্দুর একটা রাত

ভরা জোছনায় সাঙ্গু ঘোলা জল 
কিম্বা চেঙ্গির বহমান ঢেউয়ের মত
বয়ে যাচ্ছে রাত্রি-দিন 

অবসর, আনন্দ -উৎসব
কবে আসবে --অপেক্ষা।।

ডিঙ্গা সাজে, চাঁন্দের গাডি, পাহাড়ের চুড়া।

অপেক্ষায় থাকে সিস্টেম--ব্যাম্বো চিকেন
লবস্টার, ফ্লাইং ফিস, চিনি চম্পা কলা।।

তোমাদের আনন্দঘন হাসির সাথে মিশে যায়
ঝর্ণার টানা সুর ।। নীরবতা ভেঙ্গে পাহাডি গান ধরে কেউ ।।

সবুজের সাথে মেঘের আডি 
মন ভালো হয়ে যাওয়া রাত্রি সকাল ।।

জোছনায় ডুবে থাকা বিল, ধেয়ে চলা রিছং, সাজেক ভ্যালি কিম্বা তিন্দুর একটা রাত ।।

অমানিশায় জ্বলে ওঠা সেন্টমারটিন্সের উচ্ছ্বল জলোৎসব
কচিখালির জঙ্গলে ফণা তোলে শঙ্খচুড।।

তবুও জীবন সুন্দর ।। ভালোবাসি
প্রিয় পুত্রদ্বয়।।


নোট--

সাঙ্গু : বান্দরবানের নদী
চেঙ্গি : খাগড়াছড়ির নদী
ডিঙ্গা : নৌকা
চান্দের গাড়ি : জিপ
সিস্টেম : খাগড়াছড়ির রেস্তোরাঁ
ব্যাম্বো চিকেন: বাঁশের ভেতর রান্না করা মুরগি
লব স্টার: সামুদ্রিক বড় চিংড়ি। এক কেজি পর্যন্ত খাওয়ার সুযোগ হৈছে।
ফ্লাইং ফিস: সমুদ্রে পাওয়া বাটা মাছের মত এক ধরণের মাছ।
রিছং: খাগড়াছড়ির ঝর্ণা।
সাজেক: দেশের সর্বোচ্চ পর্বত ভ্যালি
তিন্দু: থানছির একটি গ্রাম। 
কচিখালি: সুন্দরবনের একটি ফরেস্ট স্টেশন
শঙ্খচূড়: দেশের সবচেয়ে বিষাক্ত সাপ। সুন্দরবনেই তার বসত। 

মাই চয়েস--- হিজাবি:: দীপিকার মোহনীয় শরীর বয়ান

মাই চয়েস নিয়ে হৈ চৈ এর পর এখন হিজাব নিয়ে অনেক কথা হচ্ছে। শুনছি। শুনতে ভালো লাগে। হিজাব বলে আর খোলামেলা পোশাক বলেন --- দু বিষয়েই আলোচনায় রস আছে। আদি রস।  সে রস ওপেনে বা গােপনে 'সবাই' উপভোগ করছেন।   দীপিকার ফুলে ওঠা বুকের  দিকে তাকিয়ে অনেকে বলেছেন,' ইয়েস, মাই চয়েস।' এটাই ঠিক। ফেসবুকের টাইম লাইন ঘুরতে ঘুরতে বাথরুমে-কল্পনায়ও অনেকের কাছে পৌছে গেছিল 'মাই চয়েস'।

দীপিকার ঘোরলাগা কণ্ঠে তার শরীর, মন--- মাই চয়েস। কিম্বা সেক্স আফটার ম্যারেজ, সেক্স বিফোর ম্যারেজ-- মাই চয়েস শুনতে ভালো লাগে। হই হই করে পড়ি মরি করে ছুটি। কারণ মনের ভেতর সুপ্ত বাসনার সাথে এগুলো মিলে যায়। বিশ্ব জুড়ে পণ্য বাজারে এখন পর্যন্ত কামরসই সবচেয়ে বেশি প্রত্যাশিত!

আগে রাস্তার পাশে ক্যানভাসাররা আদি রসের বয়ানে কাস্টমার ভাগাতেন। এখন দীপিকারা। বিশ্ব সংসার তন্ন তন্ন করে ১০১ টি নীল পদ্ম জোগাড় করার সুনীলিয় চেষ্টা এখন মাই চয়েসের উত্তর আধুনিক খােলসের তলে লুটোপুটি খাচ্ছে। দারুণ। তো আপনি আপনার মাই চয়েস লইয়া থাকেন না। মানা করছে ক্যাডা। কিন্তু হিজাব আর বোরকা আপনারে এত চুলকায় ক্যান। হিজাবের ভিত্রে কি এটা নিয়ে আপনার এত কৌতুহল ক্যান রে ভাই।

কিন্তু 'মাই চয়েস 'মানে দীপিকার উত্তপ্ত নিশ্বাস ভাঙ্গ আর বুকের ওঠা নামা নয়।  সেই সাথে আরো অনেক কিছু। আসলে আমিই সিদ্ধান্ত নিবো আমি কি করতে চাই, কীভাবে চলতে চাই।  এটাই 'মাই চয়েসে'র মেইন ম্যাসেজ বলে আমি আন্দাজ করি।

বোরকা পরা মেয়েদের নিয়ে আবার এলার্জি নেই। আবার এটা নিয়ে অতি উৎসাহ নেই। আমি ব্যাক্তিগতভাবে মনে করি আপনি যদি আপনার কিছু দেখাতে চান, দেখান, যার রুচি হয় তিনি দেখবেন। যার রুচি হয় না তিনি দেখবেন না।  জগতের সব লোককে আপনি রুচিবান মনেও বা করবেন কেন। যদি তাই হতো তাহলে রাজধাণীর  পথে ঘাটে থাকা পাগলির পেটে বাচ্চা আসে ক্যামনে।

এই ধরণের এই তথ্য দিয়ে আপনাদের আদি রসের জগতে নিয়ে গেলাম। আপনারা ভাবতে থাকেন।  আমাদের রসময় দা সম্পর্কে অনেকেই ওয়াকিবহাল। দাদার নামে লিখেন, যাদের রুচিতে বাঁধেনা তারা্ এটা বছরের পর বছর পড়ে যাচ্ছেন।  যাদের বাধে তারা পড়েন না। আবার অনেকে 'ধারণা' নেবার জন্য  পড়েন। সে যাই হোক যে কোনো ফরমেটেই এটা চলছে।

হিজাব পরা মেয়েদের তাচ্ছিল্য করে অনেকে হিজাবি বলেন। বোরকা পরা মেয়েদের  অনেকে আবার বোরকা ওয়ালী, বোরকার নিচে শয়তানি  কিম্বা কেউ আরেকটু আগ বাড়িয়ে  বলে থাকেন যৌনকর্মীর পোশাক।  হিজাব কিম্বা বোরকা পরাদের প্রায় ৯০ শতাংশেরও বেশি নিজের পছন্দে তা  পরে থাকেন বলে জানি।  তাহলে তার পছণ্দকে  তাচ্ছিল্য করার মত 'প্রগতি' কোত্থেকে আসলো, জানবার মুনচায়।

ইদাংনি কিছু ডিজিটাল মও্লানার আবির্ভাব হয়েছে। কুরআন হাদিসের ব্যাখ্যা দিয়েও এরা  হিজাব বা বোরকা পরা  নারীদের আক্রমণ করে থাকে।  এবং সেটি দেখে আমরা দাঁত কেলিয়ে হাসি। এদের আবার অনেকের প্রেমিকা বা গার্লফ্রেন্ড বা স্ত্রীর ঝুলন্ত বুকের দিকে তাকালে  নিশ্চিতভাবে  হুমায়ূন আজাদ স্যারের ' মিসেস হামিদুল্লাহ' গল্পের কথা মনে হবে।  বমি করে নিশ্চিতভাবে হুমায়ূন আজাদ স্যারের নায়কের মত বেসিন ভরিয়ে ফেলবেন।

এরা তারাই যারা আবার 'মাই চয়েস' শেয়ার করে নিজেকে মহা 'প্রগতিশীল' হিসাবে  প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করেন।  ভাবি--- আমার পছন্দ বা মতের বাইরে গেলেই  খারাপ।  জঙ্গি। এ সব ধারণা থেকে বেরিয়ে আসার সময় হয়েছে।

অনেকেই বলে থাকেন হিজাবিরা শরীর দেখানোর কসরত করে থাকেন।  তাকে নিন্দা জানান। হিজাব কি তাকে বলেছে, তুমি আমাকে জড়াও আর বক্ষ উন্মুক্ত করে ছুটে চলো। কিম্বা ধর্ম কি আপনাকে বলেছে--- বোরকা পরে  নাচো।  এটাও তার নিজম্ব চয়েস।  যার যেটা পছন্দ সেটা তাকে করতে দিন। এক সময় সে তার আসল ভুলটা বুঝতে পারবেন।

যে সব বাবা মা প্রেম করে বিয়ে করেছেন--- তাদের কিছু ব্যাতিক্রম ছাড়া সন্তানদের চোখের বাইরে যেতে দিতে চান না। কারণ নিজের কৃতকর্ম নিয়ে তার বা তাদের অস্বস্তি। সেখানে সন্তান একই পথ যাক তারা চান না।

 যে কথা বলতে এ সব  টানছি সেটি হলো হিজাব, হিজাবি  কিম্বা বোরকা , বোরকাওয়ালী। এ শব্দ গুলো 'মাই চয়েসে'র নারীদের তাচ্ছিল্য করে। তার স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করে। একজন মানুষ কি খাবে, কি পরবে, কি করবে তার রুচি কেমন হবে সেটি ঠিক করে দেবার দায়িত্ব আমার  বা আপনার নয়। সবার সব কিছু আপনার ভালো লাগতে হবে, ভালো লাগা উচিৎও নয়।

তবে আপনি এমন একটা শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারেন, যার মাধ্যমে আপনি চাহিদাগুলো সমাজে ঢুকিয়ে দিতে পারেন।  ধীরে ধীরে ।

যেমন ধরেন, আমরা এক সময় রাসায়নিক সার , বিষ এ সব ব্যবহার না করে চাষাবাদ করতাম। এখন সেটি বদলে আমরা এর ব্যবহার করছি। এর শুরু হয় আরো দশক  তিনেক আগে। এখন আমরা হসপিটালগুলোতে ক্যান্সার  বিভাগ খুলেছি। ক্যান্সার-কিডনির জন্য আলাদা ইন্সটিটিউট খুলেছি। তারপরেও রােগ সারানো যাচ্ছে না।

তো সহজ কথা হলো ওই প্রবাদের মত--- যেমন কর্ম তেমন ফল। সেটা হিজাব পরা না পরা সবার জন্যই!ল। সেটা হিজাব পরা না পরা সবার জন্যই!

ম্যাকআপের নিচে ঢাকা থাকে কিছু অসুখের গল্প, সুখের তীব্র অত্যাচারের অভিনয়!

'প্রেম'ই সব 'অপ্রেম' বানায়
প্রেমিকের হাত ধরে 'বেশ্যালয়' থেকে
'রাজনীতি'---
রাজনীতি থেকে বেশ্যালয়!!

পুরনো প্রেম, নতুন করে ফিরে আসে
শরীরে গন্ধে--- চোখের চাহনিতে।
লোলুপ শীরের ঘাম ধেয়ে আসে,
দরদরে ঘাম---নোনতা জলে খিস্তি!

বৃষ্টি ভেঝা চোখের উপর আলতো করে ছুুঁয়ে থাকা কাজল

লেফটে যায়, লেফটে থাকে লিপস্টিক--- প্রেমই অপ্রেম বানায়!
অমানুষ বানায়, চরম অমানুষ।

ক্ষমতা, লুটেরা সমাজের বিত্তবাসনা, আর প্রতিদিনকার  অসংখ্য কষ্ট ঢাকতে পেয়ালায় লাল নীল খয়েরি জল গড়ায়---
উপচে পড়ে সমাজতন্ত্র,গণতন্ত্র আর ধর্ম তন্ত্র। সব ককটেল হয়ে ফুটে ওঠে মগজে

মুখ ফুটে বেরিয়ে আসে সবই তো সেই!

ম্যাকআপের নিচে ঢাকা থাকে কিছু অসুখের গল্প, সুখের তীব্র অত্যাচারের অভিনয়!
আহা জীবন এত নীচে নেমে আসো ক্যানো, ভুলিয়ে দিয়ে যাও প্রেম বলে কিছু নেই।

ফাঁদ আর কষ্ট ধুয়ে নোনা বালির উপর পুড়তে থাকতা শরীরটা তামাটে থেকে কালচে হোক

 জীবনটা নয়।
প্রেম, সে তো অপ্রেমের আরেক নাম।

নেড়ি কুত্তা থেকে একশ হাত দূরে থাকুন

কিছু লোক আছে নেড়ি কুত্তার মত। কোনো কাম কাজ নাই। এখানে ওখানে গন্ধ শোঁকে। আর বিভেদ তৈরি করে।  জোড়া লাগাতে পারে কিছুই। এ সব নেড়ি কুত্তা থেকে একশ হাত দূরে থাকুন। আশপাশেই এমন নেড়ি কুত্তার দ্যাখা পাবেন। এ সব কুত্তা অবশ্য অলওয়েজ পোষ মানে।

আপনি চাইলে একপিস কলা, সিগ্রেটের শেষাংশ এবং এক কাপ চা দিয়ে তার গন্ধ শক্তি থামিয়ে দিতে পারেন। বড় করুণা জাগে মনে তাদের জন্য। আহা বেচারা।

এভাবে জীবনের স্বর্ণ সময় অন্যের গন্ধ না শুঁকে নিজেরটা শুঁকলে জীবনটা স্বার্থক না হোক চলনসই করতে পারতো। 

পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের দায়িত্ব বিএসএফ'র হাতে তুলে দিলেই হয়!

বাংলাদেশের পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের  দায়িত্ব বিএসএফ এর হাতে আনুষ্ঠানিকভাবে তুলে দিলেই তো হয়। অনানুষ্ঠানিক দায়িত্ব পালন করে তারা খুব প্রশ্নের মুখে পড়ে। যেমন ধরেন আজকেও বিএসএফ লালমনিরহাটের আদিতমারীতে গুলি করে এক বাংলাদেশিকে মেরেছে।

নিহত আবু সায়েম জাম্বুর বয়স ৩৫। আজ  বৃহস্পতিবার ভোর ৪টার দিকে উপজেলার লোহাকুঁচি সীমান্ত সংলগ্ন ১১৯/৭ নম্বর খুঁটির কাছে গুলির ঘটনা বলে আদিতমারী থানার এসআই মো. আতিক জানান। (সূত্র: বিডি নিউজ)।

 ৩৫ বয়সী জাম্বু  বেঁচে থাকলে আরো সন্তান ফয়দার 'আশঙ্কা' ছিল।  এত সন্তান ফয়দা করে মধ্যম আয়ের দ্যাশ হইবার পথে বাধা সৃষ্টি করতো জাম্বু! সে 'আশঙ্কা'  চিরতরে নির্মূল করে দিয়েছে বিএসএফ।

এ রকম বছরে তারা বহু ঘটনায় ঘটায় শুমার করে সেটা শত পার হয়ে যায়। কখনো তারো বেশি। তাদের এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে পরিবার পরিকল্পনা দপ্তরটার নিয়ন্ত্রণ এবং কর্মসূচী বাস্তবায়ন বিএসএফ থেকে আউট সোর্সিং করলে দেশ উপকৃত হবে।

উত্তেজিত আগাচৌ !!!

'অবমাননা'  শব্দটি এড়িয়ে চলি। তবে 'বিভ্রান্তি' তৈরিকে  কবুল করি। সাধারণত ধর্ম নিয়ে কুতর্ক অনেকের কাছে লোভনীয়।  আবার কিছু লোক কুতর্ক করে নিজেকে খবর করতে চান।  আগাচৌ তাদেরই একজন বলে আমার ধারণা ছিল। আজ বিডি নিউজে তার আত্মপক্ষ সমর্থন করে বক্তব্য প্রকাশের পর ধারণা সত্য হলো--- মাদরাসা শিক্ষাকে ব্রিটিশরা যে কানা বানিয়েছে এবং পাকিস্তান ও বাংলাদেশের সরকার গুলো সেটাকে অন্ধ বানিয়ে ফেলেছে--- তার একটা উজ্জ্বল উদাহরণ আগোচৌ।

ইহুদি জাতির প্রতি হেদায়াত অথবা ধ্বংশ কোনো একটার ফয়সালা চেয়ে হজের সময় হাজি সাহেবরা  আল্লাহর দরবারে সম্মিলিত মোনাজাত করতেন। সৌ্দি সরকার সেটি নিষিদ্ধ করেছে । বাংলাদেশ, ইনডিয়া ও পাকিস্তানে মাদরাসা শিক্ষা ব্যবস্থা চালু আছে।  আগাচৌরা তাদেরই শাগরেদ ছিলেন। 

এতে তারা এক ধরণের হীনমন্যতায় ভুগে থাকবেন হয়ত। অথবা অল্প কিছু পড়ে অনেক কিছু জানার ভান করবেন এটা অস্বাভাবিক নয়।  মওদুদীর শিষ্য বলেন আর হাটহাজারী শিষ্য বলেন, দেওবন্দী বলেই সবই একই ঘরাণার। কেউ রাজনীতি নিয়ে বলে, কারো ফোকাস ধর্মকে পুজি করে ধর্মশিক্ষা নিজেদের জন্য নাজায়েজ করার লোকদের ভয়ে রাখা আবার কারো কাছে ধর্ম পূর্ণ জীবনব্যবস্থা।

সবচেয়ে খারাপ খবর হলো, কেউ ইসলাম ধর্মকে গালি দিলে তাকে আমরা প্রগতিশীল , মুক্তমনা আরো কিছু অতি উত্তম উপাধি প্রদান করি।  আর এর বিরোধেদের আমরা মওদুদীর অনুসারীদের সাথে ভিড়িয়ে দিই। এটা হলো একটা কৌশল। অথচ উপমহাদেশ থেকে ব্রিটিশ তাড়ানোর আন্দোলনের মুসলিম নেতাদের প্রায় সবাই মাদরাসায় পড়েছিলেন। 

আগোচৌ  তার বক্তব্যটা খুবই পরিষ্কার  এবং তার যুক্তিতে সেটা সঙ্গত।  কিন্তু আমার মত ক্ষুদ্রাতি ক্ষুদ্র  মানুষের কাছে মনে হয়েছে আগোচৌ কিছু বিষয়ে আরো সুন্দর ব্যাখ্যা দিতে পারতেন। তার বক্তব্যের ব্যাখ্যটা আরো ভালো হতে পারত।

নিশ্চিতভাবে আমি একমত আরবী একটা ভাষা --- এই ভাষায় অনেক খারাপ কথা লেখা ও বলা হয়। সাধারণত নবী ও রাসূল সা: গণ সেখানেই এসছেন যেখানকার মানুষ সবচেয়ে বেশি খারাপ ছিল। এটা আমরা জানি। 

“এখন যেটাকে আরবি ভাষা বলা হচ্ছে, সেই ভাষাতে কাফেররাও কথা বলত। আজকে আরবি ভাষার যে সমস্ত শব্দ আমরা ব্যবহার করি, সবই কাফেরদের ব্যবহৃত ভাষা।'' (আগাচৌ'র বক্তব্য: সূত্র বিডি নিউজ)

 আল্লাহ তো বলেছেন, সব ভাষাই তার সৃষ্টি।  তারপরেও প্রশ্ন থাকে--- আরবের সব লোক কি কাফের ছিল? আরবে এর আগে যারা এসেছিলেন --- নবী রাসূল সা: হিসাবে তাদের ভাষাও কিন্তু আরবী ছিল। শুধু কাফেরদের ভাষা বলে তিনি কি নবী ইবরাহীম আ: এবং নবী ইসমাইল আ: সহ অন্য সব নবীদেরও একই কাতারে নিতে চাইছেন। বিষয়টা পরিষ্কার হলো না। 

উনি নবীজী আব্বা আবদুল্লাহ সম্পর্কে  বলেছেন। আবদুল্লাহ কোরায়েশ বংশের লোক ছিলেন। কিন্তু তিনি মুর্তি পুজারী ছিলেন না। এটা সম্ভবত আগচৌর'র অজানা নয়। আর  সঠিক পথ যেটা  সেরাতুল মুস্তাকিম বলা হয় সেটি আদম হাওয়ার সৃষ্টির পর থেকেই। আল্লাহ'র বিধান হাজার হাজার বছর আগ থেকেই আছে। 

এখানে 'আল্লাহ'  কা'বা শরীফের প্রধান মূর্তির নাম ছিল এর তথ্যসূত্র উল্লেখ করলে ভাল হতো। যতটা জেনেছি এটা ঠিক নয়।  লাত, মানাত ও উজ্জাত এ তিনটা হলো কাফেরদের কাছে প্রধানতম মূর্তির নাম।

তার বক্তব্য ভিডিওটা দেখেছিলাম--- তিনি বলছিলেন  ''আবু হুরায়রা মানে বিড়ালের বাপ । আবু বকর মানে ছাগলের বাপ। এ রকম আরো ছাগলে বাপ গরুর বাপ আছেন।'' এ সময় তিনি হাসছিলেন।  খুব কৌতুকপূর্ণ ভাবেই তিনি কথাগুলো বলছিলেন। 

 অথচ আবু হুরায়রা কিন্তু ওই সাহাবীর উপাধি। আবু বকরও তাই।  নাম পরিবর্তন না করার যে কথা আগাচৌ বলেছেন তাও ঠিক নয়। আবু হুরায়রার নাম ছিল আব্দে শামস  বা আবদুল ওজ্জা। রাসূল এটি পরিবর্তন করে রেখেছেন আবদুর রহমান। 

“এমনকি হজও ইসলামের হজ নয়, এটাও সেই দুই হাজার-তিন হাজার বছর আগের কাফেরদের দ্বারা প্রবর্তিত হজ, উনি সেখানে এক ঈশ্বর বার্তাটি যুক্ত করেছেন।'' (আগাচৌর প্রতিবাদ: সূত্র বিডি নিউজ)

হজ সম্পর্কে এটি একটি স্পর্শকাতর মন্তব্য। হজ  চালু হয়েছিল নবী ইবরাহীম আ: এর সময়। তিনি কা'বা শরীফের পুণঃ নির্মাণ শেষ করার পর হজের বিধান চালু হয়। এটা কাফের দ্বারা প্রবর্তিত এ  তথ্য তার কোত্থেকে  আবিষ্কার করা সেটাও পরিষ্কার করা গেলে ভালো হতো।

সম্ভবত মুসলমানদের সহনশীলতা পরীক্ষার জন্য  আগাচৌ সুড়ড়ুড়ি দিয়েছেন। এতে উত্তেজিত হওনের কিছু নাই।  নাস্তিক মুরতাদ বলে গালি দেওনর কিছু নাই। আবার তার স্বপক্ষীয়রা এটাকে পাকিস্তানের সাথে মিলিয়ে পার পাওয়ার যে নোংরা ও কদর্যভাবনা মাথায় আনেন তাদের জন্যও খুব মায়া হয়--- পাকিস্তান, মওদুদী,জঙ্গী এ সব বাল ছাল বেইচা আর কয় দিন। তাদের  বহু বুজর্গ রাইতের আন্ধারে  ওই সব লোকদের কাছে গিয়ে নেতিয়ে পড়ে। খবরও নিশ্চয় মাঝে মইধ্যে দেখেন।  যাউক গা।

শাহবাগের পীরসাহেব নিশ্চয় শােলাকিয়ায় যোগাযোগ করছেন-- সেখান থেকে একটা ফতোয়ার অপেক্ষায় থাকলাম। আর আগাচৌ--- তার বয়স হয়েছে। তার সব কথায় কান দিয়ে সময় নষ্ট করার কী দরকার। 

তিন যুগ যাত্রায় আত্মপক্ষ

লিখি কেনো?  সেটি আমি এর আগেও বলেছি।---স্বভাবত সরকারে যারা থাকেন, তাদের সমর্থক-দলান্ধরা ধরে নেন--- আমি তার সরকারের  বিপক্ষে। বাস্তবতা ভিন্ন। সত্যকে আশ্রয় করে আমার বেড়ে ওঠা।

২০০০ সালে যখন আনুষ্ঠানিকভাবে লিখতাম--- সে সময় আম্লীগ ক্ষমতায়।  আমার রিপোর্টিং এরিয়া ছিল--লালবাগ ও হাজারিবাগ। সেখানকার পেশিবান লোকেরা  পার্ক, মসজিদের জমি এমনকি স্কুল আঙ্গিনা দখল করেছিল। সে গুলো আজো উদ্ধার হয়নি। রিপোর্ট করেছি। যেহেতু সেগুলো ক্যাম্পাসের বাইরের; তাই সেটা নিয়ে রাজনৈতিক রঙ্গের ঘেরটোপে পড়িনি।

পড়েছি ২০০১ এর শেষভাগে ক্যাম্পাস রিপোর্টি করতে এসে। ছাত্রদল  প্রতাপের সাথে ক্যাম্পাস চালাচ্ছে। আজকে যারা অনেক বড় বড় বয়ান করেন, সে সব বয়ানঅলা সম্বাদিকরা  দৌড়ের উপরে। কারণ ছাত্রলীগের  তল্পিবহন করে নিজেকে এখন অপরাধী করেছেন। সে সব লোক  তখন ছাত্রদল নেতাদের আস্থাভাজন হতে চান।

 সেটি হতে আমি চাইনি। ছাত্রদলের বিরুদ্ধে সবচেয়ে রূঢ়, কঠিন এবং প্রচণ্ড আক্রমণাত্মক অনুসন্ধানী রিপোর্ট আমি করেছি। পিআইবি'র আর্কাইভে খুঁজলে--- মিলবে সে সব। সে সময় ছাত্রদলের বিপক্ষে আমার টানা রিপোর্টের কারণে আমার সম্পাদক মতি ভাই (মতিউর রহমান চৌধুরীর) কানে দেয়া হলো আমি ছাত্রলীগ। তাই ছাত্রদলকে হেনস্তা করছি। মতি ভাই জাত সম্বাদিক। ও সব কথায় কান দেননি। সাড়ে তিন বছর টানা লিখে গেছি। এর মধ্যে ছাত্রলীগের ক্যালেঙ্কারিও ছিল।  তবে সীমিত।

২০০৪ সালে কর্মস্থল বদলে রাজনৈতিক রিপোর্টিয়ের বিত্তের বাইরে এসে দাঁড়ালাম।  টেলিকম, টুরিজম ও পার্বত্য অঞ্চল নিয়ে লিখি।  এখানে এসে  পার্বত্য চট্টগ্রাম ইস্যুতে সরকারের অবস্থানের সাথে অনেকটা মিল থাকায় কাগজে লিখে সমালোচিত হইনি। টুরিজম সম্পর্কে আমির কিছুটা জ্ঞান আছে  বলে সমীহ পেতাম। টেলিকমটা আমি শিখছি।

তবে ডিজিটাল মিডিয়ার পত্তনের পর ফেসবুকে প্রথম দিকে ছবি টবি শেয়ার করতাম। এখানে যাচ্ছি; ওখানে আছি টাইপ স্ট্যাটাস দিতাম। কিন্তু একটা সময় মনে হলো খবরের কাগজের বিকল্প এ মিডিয়ায় তো আমার  বিবেচনা বোধের থেকে কিছু লিখতে পারি।
সেই ভাবনা থেকে আমি লিখছি---বহুবার ভেবেছি লিখবো না। কিন্তু  ফেসবুক ও ব্লগের জগতে বহু লোক  ঢালাও মিথ্যা কথা লিখে যাচ্ছে।

নিজেকে অনেক বড় চেতনাধারী হিসাবে প্রচার করে যাচ্ছেন--- যাদের অতীতটা আমি ভালো করে জানি। তাদের চোষণ তোষণ সম্পর্কে সমস সাময়িকরাও ভালো জানেন। তারা যখন 'চোরের মার বড় গলা' টাইপে উচ্চ স্বরে চেঁচামেচি করেন এবং সেখানে আমার মত একজন অর্ন্তমুখী মানুষকে টেনে আনেন তখন--- নিশ্চিতভাবে আমাকে সত্যটা বলতে হয়।

আমার সব লেখা সিরিয়াস না।  আবার সিরিয়াস। মাথায় কিছু হঠাৎ করে আসলে আমি ফেসবুকের পাতায় সেটি লিখে রাখি। এটা পড়তে কাউকে আমি বাধ্য করি না।   ট্যাগ করি না। যার ভালো লাগে পড়েন। যার লাগে না; পড়েন না।

কিন্তু এ সব লেখা থেকে বহুজন আমার উপর রুষ্ট। জানি সেটি---  কেবল এটুকু বলি---  সরকার বদলালেও আমার অবস্থান আগের মতই অভিন্ন থাকবে। যে রকম আগের সরকারের সময় ছিল।  কারো পক্ষে নয়--- সত্য  বলা বা লেখা থেকে  নিজেকে দূরে রাখতে পারবো না।

আমার ব্যাক্তি স্বার্থ-প্রত্যাশা ছিল না। এখনো নেই। সামনেও থাকবে না।  ক্যাম্পাস জীবন থেকে ছাত্র রাজনীতির শীর্ষ কর্তাদের সাথে সম্পর্ক ছিল--- কেউ একজন  বলতে পারবেন না  'বৈধ' কিম্বা 'অবৈধ' সুবিধা আমি বা আমার পরিবার বা আমার কোনো আত্মীয় স্বজনের জন্য চেয়েছি।  এখানেই আমার সন্তুষ্টি।

 ৩৫ বছরের জীবনে এ আমার বড় প্রাপ্তি।

 বহু ছাত্র রাজনীতিকের দুঃসময়ে পাশে ছিলাম। এক কাপ চা, একটা সিগারেট ভাগ করে খেয়েছি। প্রতিপক্ষের হামলার আশঙ্কা ছিল  এগিয়ে এসেছি।  হলে হলে সহ অবস্থান আর নিপীড়নের বিপক্ষে ছিলাম এখনো আছি।

একটা সময় সব এনালগ ছিল বলে অনেকের নজরে পড়েনি। এখন হয়তো পড়ে। সেখান থেকে কেউ কেউ আমাকে প্রতিপক্ষ বিবেচনা করতে পারেন। করুন না।  তবে আমার অবস্থান পরিষ্কার--- অন্যায়, অনাচার , অবিচারের বিপক্ষে ছিলাম, আছি এবং থাকবো। প্রত্যেক মানবজীবনের কোনো না কোনো উদ্দেশ্য থাকে। আমার উদ্দেশ্য বিপন্ন মানুষের পাশে থাকা। সে জন্য বহু রক্ষ চক্ষু উপেক্ষা করার মত হিম্মত আমার আছে।

কারো তাবেদার নই। তাই ভয় নেই। নিশ্চয় পালনকর্তা আমার  ভাবনা সম্পর্কে অবগত।  ভালো থাকুন। তিন যুগ যাত্রায় আপনারা যারা বন্ধু,শত্রু, সমালোচক--- সবাই ছিলেন বলে আমি এখনো আছি। ভালোবাসি।

বিচারিক কায়দায় ষণ্ডা বিএসএফকে দায় মুক্তি!


ফালানী হত্যার দায় মুক্তি পেয়েছে বিএসএফ'র ঠাণ্ডা মাথার খুনী দু'পায়ে অমানুষ অমীয় ঘোষ। ভারতীয় আদালত তাকে দায় মুক্তি দিয়েছে। তারপরেও আমাদের যাবার আরো জায়গা আছে, কিন্তু ক্যান যাইবো। আমারা প্রতিবেশীর সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতে চাই। আমরা তাদের পিরীতের খ্যাঁতার তলে দল মত নির্বিশেষে লুকাইয়া আরাম পাইতে চাই। সেইখানে ফালানি ক্যাডা। এরকম দু'চাইরটা মানুষ মরে গ্যালে কি!

ফালানীর বাপ অমীয় ঘোষের অব্যাহতির বিপক্ষে নালিশ করার পর এবার এমন ভাবে থাপ্পড় মারলো ইনডিয়া যে এ নালিশের কারণে এখন ফালানীর বাপের বিচার হওনের অবস্থা।  পুরা বিচারিক কায়দায় ইনডিয়া  তার ষণ্ডা বিএসএফকে দায় মুক্তি দিলো। সেই সাথে বছর বছর শ শ মানুষ খুন করাও বৈধ তা জেনে নিলো। এখন গরু বেপারী  আরো অনেক বেপারী কেবল ফেন্সি বেপারী ছাড়া  যে কোনো নামে বঙ্গ সন্তানদের খুন করা আইনগতভাবে জায়জ হয়ে গেলো।

২০১১ সালের জানুয়ারী মাসটা ছিল প্রচণ্ড শীতের। কুয়াশায় ঢাকা কুড়িগ্রাম জেলার  সীমান্তবর্তী এলাকা ফুলবাড়ি। ৭ জানুয়ারী ফালানী খুন হবার ২/৩ দিন পর ঘটনা স্থলে গিয়েছিলাম । এখনো সেই স্মৃতি চোখে ভাসছে। ভাঙা  চোরা ঘরে ছড়ানো ছিটানো মেয়েটার স্মৃতি।  নতুন জীবন শুরু করার জন্য বাবার সাথে ফিরছিলো দেশে। প্রিয়তম হবু স্বামী জন্য বুনছিলো  রুমাল। সেখানে লিখেছিল ভালোবাসার কথা। স্বপ্ন অধরাই থেকে গেলো। মৃত্যুর সময় মুখে জুটলোনা এক ফোঁটা পানি।  ফালানীর গুলিবদ্ধ হওয়া ক্ষত স্থানের ছবিও তোলা হয়েছিল। লাল শাড়ি পরার প্রস্তুতি নেয়া পরিবার তাকে সাদা কাফনে জড়িয়ে ফুলবাড়িতেই কবর দিয়েছে। সেই কবরে, ফালানীর বাড়ি এবং ঘটনাস্থলের লোকেরা বলেছিল--- ভোররাতে গুলি আওয়াজ, পানি বলে চিক্কুর শুনেছিল তারা। আধ ঘন্টার বেশি সময় ঝুলে থাকার পর বিএসএসএফ'র দুপায়ে অমানুষরা ঝুলিয়ে নিয়ে গেছে  ফালানীর লাশ। তার পর বহু তদ্বির করে তার লাশ পাওয়া গেছে ৩০ ঘণ্টারো বেশি সময় পরে।

 জীবনের দাম কম একটা আমরা জানি। বিশ্বজুড়েই স্বীকৃত এটা। কিন্তু গরিব মানুষের জীবন যেনো পাপ। অসুখ--- ক্যান্সার। কেটে ফেললে--- ছেঁটে ফেললেই মুক্তি। ফালানীর লাশ-রক্ত আর কষ্ট নিয়ে অনেক কথা হয়েছে। একজন মানুষ তার কন্যাকে হারালেন। তারা কষ্ট পেলেন। বহু রথি মহারথী তার কাছে গেলেন-- তিনি তার সন্তান হত্যার বিচার পেলেন না।

 অথচ  দ্যাখেন সর্বশেষ বঙ্গীয় একটি দৈনিকের ফান ম্যাগাজিনে প্রকাশিত একটা ফানি বিজ্ঞাপন, একটা খেলা, একটা চুদির ভাই নাটকে ক্যামন বিপর্যস্ত বাংলাদেশ। সারা বিশ্বজুড়েই খবরের কাগজে সমালোচনার ঝড় ওঠালো সানি লিওনের দেশ ইনডিয়া। ইনডিয়ার চাবুকে কাতর এক দেশের নাগরিক আমরা। যারা বলার আগে শুয়ে পড়ি তারপরেও সঠিক আসন না নেয়ায় আমরা নিজেরাও বিব্রত হই। লজ্জিত হই। পুরো সেটিসফেকশন দিতে পারিনি; বলে নুইয়ে পড়ি! রাজনীতি মানুষের জীবন বিপন্ন করার রাজনীতি।

দায়মুক্তির খবরের বিবরণী বিবিসি বাংলা থেকে,' ২০১৩ সালের ৬ সেপ্টেম্বর জি এস এফ সি রায় দিয়েছিল যে অভিযুক্ত বি এস এফ প্রহরী নির্দোষ। সেই রায় যথার্থ মনে না হওয়ায় তার পুনর্বিবেচনার আদেশ দিয়েছিলেন বাহিনীর মহাপরিচালক। পুনর্বিবেচনার কাজ শুরু করতে প্রায় একবছর লেগেছিল, আর তা তিনবার নানা কারণে স্থগিত হয়ে গিয়েছিল। রায় পুনর্বিবেচনার কাজ শুরু হয়েছিল গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে। কিন্তু পাঁচদিন পরে সেই প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে যায়। নভেম্বরে আবারও পুনর্বিবেচনার প্রক্রিয়া শুরু হয় ১৭ নভেম্বর। কিন্তু ২১ নভেম্বর আদালতেই অভিযুক্ত অমিয় ঘোষ জ্ঞান হারানোর কারণে চার মাস পিছিয়ে গিয়েছিল প্রক্রিয়া। তাঁর রক্তচাপ বেড়ে গিয়েছিল আর তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছিল। তার আগে মি. ঘোষের কিডনির সমস্যা দেখা দেয়, যার ফলে নিয়মিত ডায়ালিসিস করতে হয়েছিল।যদিও পুনর্বিবেচনার সময়ে নতুন করে কারও সাক্ষ্য নেওয়ার নিয়ম নেই, তবুও ফেলানির বাবার সাক্ষ্য নতুন করে নথিভুক্ত করা হয় তখন। আবার মার্চ মাসে বিচারকেরা সকলেই হাজির হলেও বি এস এফের সরকারী আইনজীবী বা প্রসিকিউটর সেদিন কোচবিহারে পৌঁছতে পারেন নি অসুস্থতার কারণে। তাই আদালত বসলেও কাজ শুরু করা যায় নি। ৩০ শে জুন সর্বশেষ শুনানি শুরু হয়।'

ইনডিয়ান জার্নালিজম সানি লিওনের মত ভার্জিন!

মিথ্যা চুদির বাই নাটককে সত্যতে পরিণত করলো ইনডিয়া। ইওলাে জার্নালিজম কি?  ইনডিয়ান জার্নালিজম সানি লিওনের মত ভার্জিন! তবে এটাকে সানি লিওনের মত পেশাদার জার্নালিজম বললে ভালো।

সেই সাথে আমাদের কিছু লোক আছে না--- লজ্জায় লজ্জাবতী পাতার মত মিইয়ে যায়। ঘটনার সত্যাসত্য জানার আগেই ---আহা চুদির বাইকে আমরা মার দিয়েছি-- নো নো নো--- । ওরা খ্রাপ বলে আমরা খ্রাপ অইবো।

শালা ---- লজ্জাবতীর একটা ওষুধি গুণ আছে--- আমগো লজ্জাবান ও বতীদের সেটাও নাই। এ সব মাল লইয়া  জাতি কি করিবে।  যে সব মাল বুঝিলো না পাপিস্তান ও রেন্ডিয়া কখনো আমাদের ভালো চায় না--- কিন্তু কিছু লোক মনে করে উন্রা আমগো দেবতা।

প্রথম আলো'র  ব্যাঙ্গাত্মক সাময়িকী রস আলো'র একটা ফানি কার্টুনকে লইয়া শোর তুললো ইনডিয়া। তামাম দুনিয়ায় গলা ফাটাইয়া চিল্লাইলো। আর আমরা অথর্বরা কিছুই করতে পারলাম না। যুক্তরাইজ্যের মেইল কাগজ কৈতাছে প্রথম আলো কার্টুনটার জন্য ক্ষমা চাইছে।  তা চাউক গা। প্রথম আলো কার্টুন আঁইকা এর আগেও ক্ষমা চাইছে।

আমগো যে মিডিয়া পাওয়ার হাউস তৈরি অয় নাই, সেইটা আমরা জানি। কিন্তু সেইটার ভিত্তিও যে তৈয়ারের কাজ শুরু অয় নাই সেইটা জানা অইলো। যদি অইতো তাইলে আমরা কাউন্টার কিছু ছিঁড়তে পারতাম। তা যখন পাইরলাম না তখন নিজেরা নিজেরা প্রথম আলো খুব ভুল কৈরছে---এটা করণ উচিৎ অয় নাই এটা লইয়া আলাপ জুড়তে পারি ।

যা পারি না; তা লইয়া বাতচিৎ বাতুলতা মাত্র। আমগো সম্বাদিক, কলামিস্ট, বিশ্লেষক--- সবাই মাথা বেইচা বইসা আছে। হাসিনা খালেদার কাপড় ধুইবার জন্য লাইন দিছে। তাইলে জায়গা মতন যাইবো ক্যামনে। ইনডিয়া পাকিস্তান আমগো যা ইচ্ছা কৈইবো। আর আমরা বলবো--- খেরায় ই তো। এত সিরিয়াস অওনের কি আছে।  আমরা সব সইয়া বাইত্তে আইসা কাঁচা মাইরা নিজেরো নিজেরা মারা মারি করমু। আবেগি কাইন্দা দিমু।

 বালোর আলাপ।  কথায় কথায় কমু ইনডিয়ানরা যোগ্য। পাকিস্তানিরা ভালা। আমরা বাল। সব শালা। চুতিয়া।  নিজেরা বইসা... মারামারি করো--- আর উপ্রে উঠনের স্বপ্ন দ্যাকো।  বাংলাদেশ থেকে আম্রিকা সব গণমাধ্যমে ইনডিয়ার লুক আছে। ডিসিশন ম্যাকিংয়ের জায়গায় আছে। আমরা বাঙালিরা খালি ফুটানি মারমু।


 ডেইলি মেইলের লিঙ্ক http://www.dailymail.co.uk/indiahome/indianews/article-3146440/Bangladesh-not-handling-recent-cricket-success-dignity.html

বিত্ত যেখানেই ঘুরে ঘুরুক

বিত্ত যেখানেই ঘুরে ঘুরুক-- নিম্ন কিম্বা মধ্যম। আমার বিত্ত আটকে আছে একই ঘরে-- চলছে জীবন- শ্রাদ্ধ। কত মানুষ না খেয়ে রয়, কত লোকের ঘুম নেই।  এ সব কিসে? ক্যামনে কষো হিশাব - আমরা এখন মধ্যম আয়ের বিশ্ব।  হে বিশ্ব ব্যাঙ্ক ভাই- বলো-- তোমোর হশেব কিসে করো।  আবুলের খরচপাতি, ঘুষের টাকা, পদ্মা সেতুর যোগান ,  চিকনাই জমা সরকার দলীয় লোক আর নিরাপত্তা রক্ষীর চেহারা।  জানবার বড় মুনচায়।

ফান ফাটো স্টোরি 'মোস্তাফিজ কার্টার' লইয়া ইনডিয়ার পেরেশানি

ফান ফাটো স্টোরি 'মোস্তাফিজ কার্টার' লইয়া ইনডিয়ার পেরেশানিতে মজা পাইলাম। তার চে বেশি মজা পাইলাম চুদির বাই নাটক সত্য হিসাবে বার বার বলায়।  এঙ্কর কোশ্চেন করছেন ইনডিয়া ভক্তকে পিটিয়েছে। অথচ কথিত নাটুকে ভক্ত কইছে তাকে পিটায়নি। তারপরেও মিথ্য কথা বার বার বলে যাচ্ছে টিভি চ্যানেলটি। আর  প্রথম আলোর ফান পোস্ট নিয়ে টক শো জুড়ে দিয়েছে।
https://www.facebook.com/tarunore/videos/vb.1593317440882664/1625774590970282/?type=2&theater

বাঙালি গ্রামীণ নিম্ন মধ্যবিত্তের চে বড় যাযাবর আর কে হতে পারে!

রাংলাই ম্রোর সাথে আলাপ হচ্ছিল- ২০০৯ সালে এমন বর্ষায় । ঝাকডা চুল থাকে ম্রো ছেলেদের । মেয়েরা পরে লম্বা থামি। অথবা খাটো । কাঁধ ছড়িয়ে যাওয়া চুল ছুটে চলে পাহাড়ি এলো বুনোলতার মত।
রাংলাই বলছিলেন, এখন সে সব অতীত হচ্ছে। বাস্তব থেকে যাচ্ছে যাযাবর জীবন । ম্রো বা মুরং রা যাযাবর ।
কিন্তু গতকাল মঙ্গলবার  সকাল থেকে বাসা বদল করতে করতে ভাবছি আমরা কি ? আমরা কী স্থায়ী নিবাস গডি! না। আমরাও যাযাবর । এ জন্য বোধ হয় ভুপেনের সেই গান আমার খুব খুব প্রিয়---' আমি এক যাযাবর ' ।
যাযাবর মোরতাজা এখন খুঁটি গেডেছে কলাবাগান । এই নগরে মীর হাজিরবাগ থেকে আজিমপুর ললিত মোহন দাস লেন হয়ে বঙ্গবন্ধু হলের দিনগুলো ছিল একক।
যুগল জীবনের সূচনা হয়েছিল মিরপুর ১২ নম্বরের ডি ব্লকে। সেখান থেকে তেজকুনী পাড়া হয়ে নাখালপাডা ছাপডা মসজিদ। নাখালপাডা রেল গেট হয়ে ধানমণ্ডিতে এক মাসের জীবন ।
তারপর মোহম্মদপুর ৩ নম্বর রোড থেকে ১ নম্বর রোড। আবার ফিরলাম শহরের মুল ভূখণ্ডে-- ফ্রি স্কুল স্ট্রিট । এবার দু বাচ্চার স্কুলের পাশে যাযাবরের নতুন আস্তানা।
আসলে বাঙালি গ্রামীণ নিম্ন মধ্যবিত্তের চে বড় যাযাবর আর কে হতে পারে!