সুখের আয়না লাগিয়েছি ফেসবুকে!

সুখের আয়না লাগিয়েছি ফেসবুকে!
অসুখের ব্যারাম সে তো সিগ্রেটের মত পুড়ে যায়
আওয়াজ তোলে না, হুুঁকোর মত... গর গর গর
শব্দ হয় না, কেবল ব্যারাম বাড়ে।

বাড়ে জীবিকার তাগিদ, হারানোর ভয়
টিকে থাকার লড়াইটা জিইয়ে থাকে কৈ মাছের মত !
দ্রোহ প্রেমহীন প্রতিটি দিন
কেবল স্ট্রেচ, স্ট্রেচ এবং স্ট্রেচের রাত বিরাত-
প্রেমহীন, প্রীতিহীন!
একেকটা দিন।

ক্ষমা করবেন, নূর জাহান বেগম!



বেগমের সাথে আমার পরিচয় অষ্টম শ্রেণি পড়ার সময়। বেগম পত্রিকার একটা ঈদ সংখ্যা খরিদ করেছিলাম, সোনাইমুড়ি বাজারের পশ্চিম মাথার পত্রিকার স্টল থেকে। সে সংখ্যায় ঝর্ণাদাশ পুরকায়রেস্থর একটা গল্প খুব ভালো লেগেছিল। সেই সাথে অসংখ্য নারী লেখককে এক মলাটে পেয়েছিলাম।। 

বেগম পত্রিকার প্রতি সেই প্রথম প্রেম। নূর জাহান বেগম দক্ষ সম্পাদকই নন, ব্যক্তি জীবনে অত্যন্ত পরিশীলিত এবং ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন মানুষ দ্বিতীয় জন এই বঙ্গে আমার নজরে পড়েনি।

নূর জাহান বেগমের সাথে সম্বাদিকতার খাতিরে একবার দেখা হয়েছিল। সম্ভবত ২০০০ সালে। বেগমের কোনো একটা সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে। অত্যন্ত মার্জিত ও বিনয়ী নূর জাহান আপার আন্তরিক অভ্যর্থনা এবং সমাজ ভাবনায় মুগ্ধ হয়েছিলাম। 

তাঁর প্রতি আমার বিশেষ শ্রদ্ধার জায়গা হলো, বাংলা সাহিত্যে নারীর বিশেষ অবস্থান তৈরিতে তিনি অনন্য, যিনি তাঁর পিতার অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত-সমৃদ্ধ করেছেন। 

নূরজাহান বেগমের জন্ম ১৯২৫ সালে এখনকার চাঁদপুর জেলায়। ১৯৪২ সালে বেগম রোকেয়া প্রতিষ্ঠিত কলকাতার সাখাওয়াত মেমোরিয়াল হাইস্কুল থেকে তিনি মেট্রিকুলেশন পাশ করেন। এরপর ১৯৪৬ সাল পর্যন্ত কলকাতার লেডি ব্রেবোর্ন কলেজে পড়াশুনা করে বি এ পাশ করেন নূরজাহান বেগম।

বেগমের সম্পদাক নূর জাহান বেগম গতকাল সোমবার রাজধানীর একটি হসপিটালে ইন্তেকাল করেন। পরে তাঁকে মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে তাঁকে সমাহিত করা হয়েছে। বাংলা ভাষা, সাহিত্য, নারী জাগরণ, নারীদের শিল্প-সাহিত্য-নন্দনতত্ত্ব চর্চার জগতে অনন্য বেগম বেঁচে থাকবেন সবার মনে। তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি। 

সেই সাথে আমাদের দীনতার জন্য তার প্রতি ক্ষমা চাই। রাষ্ট্রের স্বাধীনতা পদক তাঁর হাতে ওঠেনি। না বিম্পির আমলে না আম্লীগের আমলে। রাষ্ট্রের এ পদক কারা পান, কারা এর জন্য নির্বাচন করেন, এ প্রশ্নটা রাখলাম। আগে কখনো করিনি। আজ করলাম। 

তাঁর মৃত্যুর পর সবার মরাকান্না দেখছি, জীবিত থাকতে তাঁর মত মানুষকে স্বীকৃতি দিতে পারিনি। নাগরিক হিসাবে রাষ্ট্রের প্রতি আমাদের জিজ্ঞাসা --- দলদাস না হলে কি বাপু রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি-সম্মান মিলবে না!

কে নেবে পাহাড়ের নিরাপত্তার দায়িত্ব?


ব্যক্তিভাবে আমি সব-মত-পথ-রাজনৈতিক-অরাজনৈতিক-সম্প্রদায়গত নিপীড়নের বিপক্ষে। সেটি যে কোনো বাহিনীরই। কিন্তু দেশের সামরিক নীতি,  নিরাপত্তা আয়োজনকে প্রশ্ন করতে পারি না। কিছু বিষয় তো এমন যেটা সরলীকরণ করা যায় না। আবেগ দিয়ে বিচার করা যায় না।  সব যদি আবেগের ওপর ছেড়ে দেয়া হয়, তাহলে বহু কিছু আমাদের হারিয়ে যেতে বাধ্য!

স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষার দায়িত্ব  প্রতিরক্ষা বাহিনীর।  সে জন্য কোথায় ঘাঁটি গাঁড়তে হবে, সেটি নির্ধারণ করার দায়িত্বটা  রাজনৈতিকের চেয়ে সামরক নীতির অংশ বলেই মানি। সে হিসাবে পার্বত্য চট্টগ্রামে সেনাবাহিনীর ক্যাম্প থাকবে কিনা--- সে সিদ্ধান্তটা আসলে সামরিক কৌশল ঠিক করা লোকদের উপরই ছেড়ে দেওয়া উচিৎ।

কিন্তু যারা প্রতিনিয়মত পাহাড়ে সেনা নিয়ে উসখুশ করেন, তারা আসলে কী বোঝাতে চান--- সেটি পরিষ্কার নয়।

দুর্গম পাহাড়ি জনপদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে  সরকার যে কোনো ধরণের বাহিনীর  সহায়তা নিতে পারে এবং সেটিই যৌক্তিক। কিন্তু  পাহাড়ে সেনা উপস্থতি  কেন থাকবে না!  এর যৌক্তিক ব্যাখ্যা কি?

সেনা সদস্যরা পাহাড়ে কী করেন--- তাদের না থাকার কারণ কি হতে পারে? এ সব প্রশ্ন  সেখানকার সাধারণ পাহাড়িদের নেই বললেই চলে।  তবে এটা নিয়ে বেশি সোচ্চার বেদিশেী ফান্ড প্রাপ্তরা। বিশেষত বেসরকারি সংস্থা ও নামকাওয়াস্তে গবেষক--- যাদের বেশির ভাগই একটা ইস্যু ধরে রেখে আলোচনায় থাকতে চান।

এক কল্পনা চাকমা অপহরণ অভিযোগ বাদে  উল্লেখ করার মত গুরুতর অভিযোগও সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে নেই!  বরং সম্প্রীতি রক্ষা, অবকাঠামোগত উন্নয়ন আর  অপরাধ দমনে তারা সেখানে  বহু বছর ধরেই কাজ করছেন;  এটা সবারই জানান।  অপহরিত বহুমানুষকে উদ্ধারে সেনাবাহিনী সফল হয়েছে।

পাহাড়ি নেতাদের কারো কারো অভিযোগ--- সেনা বাহিনী পাহাড়ে বাঙালিদের  সহায়তা করে! এ অভিযোগ যারা করেন, তাদের নিয়ে বাঙালিদের মনবেতর জীবন যাপন পরিদর্শন করলে-- এ অভিযোগ টিকবেনা ; আমি নিশ্চত করেই এটা বলছি। ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকেই বলছি।

পাহাড়ি জনপদ আর সমতলের মধ্যে তফাৎটা কারো অজানা নয়। মায়নমারের সাথে আমাদের কয়েক দফা সীমান্ত সঙ্ঘাত হয়ে গেছে। দিন দিন সে ঝুঁকি বাড়ছে। সেভেন সিস্টারের সাথে আমারে সীমান্ত আছে। খাগড়াছড়িতে অর্ধশতাধিক কিলোমিটার সীমান্ত অরক্ষিত।এ রকম প্রেক্ষাপটে পাহাড়ে সেনা উপস্থিতি না থাকা রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার জন্য প্রচণ্ড হুমকি।

তারপরেও চুক্তি মেনে ১৯৯৭ সালের পর থেকে নিয়মতই অস্থায়ী সেনা ক্যাম্প প্রত্যাহার করা হচ্ছে। এটি রাষ্ট্র বেশ ঝুঁকি নিয়েই করছে; এতেও পাহাড়ি মানুষ নিয়ে ব্যবসা করা লোকরা অসন্তুষ্ট! এ অসন্তুষ্টি হয়তো তাদের ব্যক্তিগত সুবিধা হচ্ছে; সেটি দেশর নিরাপত্তাকে হুমকি রেখে---

পাহাড়ি ও বাঙালি দু'টো জাতি সত্ত্বা আলাদা হলেও জাতীয়তা অভিন্ন। রাজনৈতিকভাবেই দু'টো জাতি সত্ত্বার সঙ্কট নিয়ে আলোচনা  অব্যাহত রেখে, আস্থার সম্পর্ক তৈরির মাধ্যমে সমস্যার  সমাধান করতে হবে।  বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন, সেনা বিরোধীতা আর বাঙালি-পাহাড়ি বিরোধ জিইয়ে রেখে এ সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়!

খবরের কাগজে ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ জানলাম---পার্বত্য চুক্তির অংশ হিসাবে  ইতোমধ্যে ২৩২টি অস্থায়ী সেনা ক্যাম্প থেকে  ১১৯টি ক্যাম্প প্রত্যাহার করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ১০ ফেব্রুয়ারি সংসদকে জানিয়েছেন, শান্তি চুক্তির আলোকে মোতায়েনরত সেনাবাহিনীর সব অস্থায়ী ক্যাম্প প্রত্যাহারের মাধ্যমে নির্দিষ্ট ছয়টি গ্যারিসন--- দীঘিনালা, খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি, বান্দরবান, রুমা ও আলীকদমে প্রত্যাবর্তনের বিধান রয়েছে।

তিনি জানিয়েছেন, গ্যারিসনের প্রয়োজনীয় অবকাঠামোগত উন্নয়নও চলমান।  রুমা গ্যারিসনের ৯৯৭ একর ভূমি অধিগ্রহণের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। গ্যারিসনসমূহের অবকাঠামোগত উন্নয়ন সম্পন্ন করে সময়োচিতভাবে অস্থায়ী ক্যাম্প প্রত্যাহারের মাধ্যমে মোতায়েনরত সেনাবাহিনীকে নির্দিষ্ট গ্যারিসনসমূহে প্রত্যাবর্তনের পরিকল্পনা রয়েছে।

আর ৮ মে বেইলি রোডে অফিসার্স ক্লাবের পাশে দুই একর জমির ওপর পার্বত্য চট্টগ্রাম কমপ্লেক্স নির্মাণের ভিত্তিফলক উন্মোচন অনুষ্ঠানে সেনা ক্যাম্পগুলো অধিকাংশই তুলে নেয়া হয়েছে জানিয়ে  প্রধানমন্ত্রী  বলেন, 'যা সামান্য কিছু আছে- চারটি জায়গায় কেবল ৪টি ব্রিগেড থাকবে। বাকিগুলো সব সরিয়ে নেয়া হবে। যে জন্য রামুতে আমরা একটা সেনানিবাস করেছি।'

পার্বত্য চট্টগ্রাম আইন-২০০১ এর কতিপয় সংশোধনীর বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'এ বিষয়ে পর্যালোচনা চলছে এবং দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব এবং সাংবিধানিক কাঠামোর মধ্যে সম্ভব সবকিছু করতেই সরকার প্রস্তুত রয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রামের অধিবাসীরাও বাংলাদেশের নাগরিক। সুতরাং সরকার ওই অঞ্চলের সড়ক যোগাযোগ, বিদ্যুৎখাত এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির উন্নয়নে ব্যাপক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।'

পাহাড়ে বাংলাভাষি নাগরিকরা এর প্রতিবাদ করছেন। হরতাল অবরোধ করবেন বলে হুমকির খবরও আমরা দেখছি। এটা কতটা দরকার সেটাও ভাববার দরকার। একই সাথে সেনা তুলে নেবার পর সেখানকার নিরাপত্তা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করাটাও জরুরী। সেনা উপস্থিতির মধ্যেই সেখানে অহরহ গোলাগুলি আর খুনের ঘটনা ঘটছে। সেনা তুলে নিলে সেখানকার নিরাপত্তা ঝুঁকি কাটাতে সরকার সেখানে অন্য কোনো নিরাপত্তা বাহিনীর উপস্থিতি বাড়াবে? কে নেবে নিরাপত্তার দায়িত্ব?  এমন প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে!

কিস্তি ৪৩: রমণী জগতে

ক্যাম্পাসে নারী জগতে আমার সমধিক খ্যাতি ছিল। ইহা অস্বীকার করিবার মত ইচ্ছে আমার নেই। তবে ইহাও সঠিক যে আমি কাহারো কোনো অনিষ্ট করি নাই, করিবার ইচ্ছেও করিনি। এতেই হয়তবা এখনো আমার পুরনো নারী বন্ধুদের সাথে যোগাযোগ রাখার সুযোগ থাকছে। আছেও বটে। ইহা শুনিয়া অনেকে আশ্বস্ত হইবেন। আশা করি। 

আমার বন্ধূ আসমাউল হুসনা লাকীর মতে ‌আমার মত ‌'বেক্কল' কে কেন নারীরা পছন্দ করতেন , তাহার কোনো কারণ অনুসন্ধান করিয়া আবিষ্কার করিতে পারি নাই। কাহারো জানা থাকিলে জানাইবেন। নিজের কীর্তি নিয়া আমি মহা বিরক্ত। 
ক্যাম্পাসে আমার সবচেয়ে কাছের বন্ধু কে? এর উত্তরে অনেকের নাম বলতে হবে। তবে রিফাত, ফজিলাতুননেসা মুজিব হলে থাকতো। আমি ও শামীম (বর্তমানে রেডিও টুডেতে আছে) দুজনেই প্রায় আড্ডা দিতে তার হলে হাজির হইতাম। রিফাতও এসএম হল, সাংবাদিক সমিতি এবং বঙ্গবন্ধু হলে আসিত। আমাদের মধ্যকার সম্পর্ক খুবই ভালো ছিল। 

ক্লাশে আমার বেশ কয়েকজন বন্ধু ছিল। এর মধ্যে তাপসী রাবেয়া, যাকে আমি অতসী বলে ডাকতাম। সানজিদা, যাকে আমি ডাকসু কাফেতে সেকেন্ড ইয়ারের সময় বলেছিলাম , আমাকে যেহেতু তোর এত পছণ্দ তাইলে চল কাঁটাবন কাজি অফিসে গিয়া বিয়া কইরা ফালাই। ও তো পুরাই বেক্কল হইয়া আমার দিকে তাকাইয়া থাকিল, বুঝিতে পারিল না- বেকুব কে? আমি না ও। 

আমার ক্লাশের মাহফুজা খানম রিফাত, শিউলীর সাথেও আমার ভালো সম্পর্ক ছিল। আশার কথা ভোলা যাবে না। তবে ও আমাদের যে মেয়ে ক্লাশমেটের সাথে ঘুরতো, তাকে আমার পছন্দ ছিল না। পরে অবশ্য পারভেজের সাথে ওর সম্পর্ক হওয়ায়া অন্য সবার চেয়ে আমি একটু বেশি খুশি হয়েছিলাম, ও অন্তত নটি গার্লের পাল্লা থেকে রক্ষা পেলো। 
আমার ক্লাশের অন্য বন্ধুদের মধ্যে পিপি, সাথী, হ্যাপি আরো অনেকের সাথে আমার ভালো সম্পর্ক ছিল। কিন্তু আমাদের শিক্ষাজীবনে বিশেষ কোনো আনন্দ আয়োজন না থাকায় আমরা আরো ঘনিষ্ঠভাবে মিশিবার সুযোগ পাই নাই। তার ওপর আমার মত একজন সম্বাদিকের সাথে আড্ডা মারিবার জন্য যে সময় দেয়া প্রয়োজন, সেটি আমি দিতে পারি নাই বলিয়াও নানান সমস্যা ছিল। 
কয়েকজন রাজনৈতিক কর্মী আমাকে বেশ পছন্দ করিতেন বলিয়া জানি, কিন্তু তাহারা পদ ও পদবির জন্য তাহাদের দলের নেতাদের মনোরজ্ঞন করিয়াছেন, জানিবার পর তাহাদের সাথে আমি আর সহজ হইতে পারি নাই। 
শামসুন্নাহার হলের এক নেত্রী আমার প্রায় প্রেমেই পড়ে গেছিলেন। শেষ পর্যন্ত আল্লাহ রক্ষা আমি বেঁচে গেছি। উনি এখন বিসিএস কর্মকর্তা। বড়ই ভাগ্যবান। আমি নগরের কেরানী। তবে খারাপ না ভালো আছি। 
আমার একজন সিনিয়র বন্ধুর না কথা না বললে এটি অপূর্ণ থেকে যাবে, সে হলো বনানী। বনানী মল্লিক। খুবই হাসিখুশী । তবে আমার রুমমেট মাসুদ ভাই বলতেন মাথায় হাল্কা ডিস্টার্ব। বনানী এই লেখা পড়লে আমার মাথা ফাটাবে। মাসুদ ভাই আরো জানিয়েছেন সাংবাদিক সমিতির সদস্য সাবু ভাই তাকে পছন্দ করতেন, তবে শেষ পর্যন্ত ব্যাটে বলে হয়নি। যাক গে সে কথা। বনানী মানবজমিনে জয়েন করার পর গোপাল দা-র চেশ্বারে সাবু ভাই আমাকে তার সাথে পরিচয় করিয়ে দেন। ওর সাথে আমার ক্যাম্পাসের অনেক আড্ডা, দুষ্টুমি, শেয়ারিং। ভালোই ছিল। ২০০২ সালের দিকে আমার ছোটবোন অসুস্থ হয়ে ঢাকার একটি প্রাইভেট হাসপাতালে ভর্তি হলে ও দেখতে গেছিল। আমার মায়ের ধারণা ছিল আমি ওকে পছন্দ করি। মা খুব খুশী মনে তার খবর নিয়েছিলেন। পরে অবশ্য মা বুঝতে পারেন উচি যেটা অনুমান করেছেন সেটি ভুল ছিল। 
আমার আরেকজন বন্ধূর নাম বলিতে হইবে। সে হইলো তিতলি। ব্ল্যাকবেল্ট পাওয়া, আমার দেখা একমাত্র কন্যা। সেনা কর্মকর্তার কন্যাকে আমার বেশ ভালো লাগিত। আমার বন্ধূ বাবকু ও মাহমুদ বলিত, তুই যদি তিতলিকে বিয়ে করিতে চাস, তাইলে তারে প্লাস্টিক সার্জারি কারানোর ব্যবস্থা করা হইবে। মানে কন্যা বর্ণে কৃষ্ণ। ইহা নিয়া আমার কোনো আপত্তি না থাকিলেও আমার বন্ধুদের ছিল। আমি বলিলাম, বিয়া করিবাবার কোনো ইচ্ছা এখন নাই। যখনই হইবে তখন কণ্রা খু*ঃঁজিয়া বাইর করিলে চলিবে। ফরে অবশ্য আমি সে সুযোগ কাউকে দেই না। নিজের পাত্রী নিজেই বাহির করিয়া ছিলাম। 

নারী বিষয়ক ক্যাম্পাসে যে সব বিশেষজ্ঞের কাছে আমি হার মানি তাদের মধ্যে আমার গুরু আজাদ বস, মাসুদ ভাই ও সাইমুম ভাই। এসএম হল ও বঙ্গবন্ধু হলের আমাদের বহুত জোছনা ভরা রাত কেটেছে এ সব আড্ডায়। ফোনে অনেকের সাথে পরিচয় কথা বার্তা হতো, সে সব নিয়ে নিজেদের আড্ডাও জমত বেশ। একাই নারীর সাথে আজাদ বস, সাইমুম ভাই ফোনে আলাপ করতেন, ভিন্ন ভিন্ন ভাবে আমি তাদের কাছ থেকে তা জেনেছি। নম্বর মিলিয়ে দেখেছ ঘটনা সত্য। আজাদ বস. সাইমুম ভাই , মাসুদ চৌধুরী এদের নিয়ে একটা আলাদা পর্ব না লিখলে অবিচার করা হবে। তাই সামনের কোনো এক পর্বে এ নিয়ে বিস্তারিত লিখবো। 
যারা আমার নারী বিষয়ক গল্প শুনতে চেয়েছিলেন, তাদের জন্য এই পর্বখানা উৎসসর্গ করিলাম, বিশেষ করে তানভী। যে মনে করে আমি রয়ে সয়ে সব বলছি, তার জন্য। 

কিস্তি ৪২: মজা লন

সাংবাদিক সমিতির নেতৃত্ব নিয়া নানা কিসিমের গণ্ডগোল ছিল। যেমন নোয়াখাইল্যা, বরিশাইল্যা বিভাজন। মজার ব্যাপার বরিশ্যাইল্যাদের নেতা আবার যশোর আর চাঁদপুরের। নোয়াখাইল্যাদের নেতা নোয়াখাল্যাই ছিল। এর ভেতর আবার অনেকে অন্য অনেক এলাকার ছিলেন। সব মিলিয়ে ভালোই চলছিল। আমি যে গ্রুপে ছিলাম সে গ্রুপ লিডার প্রথম দিকে ছিলেন বরিশাইল্যা মামুন ভাই। পরের লিডার ময়মনসিংহের কবির ভাই। আমি ডেপুটি লিডার ছিলাম। নেয়াখাইল্যা। 

সাংবাদিক সমিতির রাজনীতিটা মোটা দাগে দুভাগে বিভক্ত। একথা আমি আগেও বলেছি। ছাত্রলীগ সমর্থক গ্রুপ এবং তাদের এন্টি গ্রুপ। মজার ব্যাপার হলো ছাত্রলীগ সমর্থক গ্রুপে লোক বেশি, ভোটার কম। ভোটার কম মানে ভোটে দাঁড়াইলে আমরা ভোট পাইতাম কম। দু চাইরটা ভোট নাই। সেকি অবস্থা। বলেন দেখি। 
এখান থেকে কবির ভাই কয়েকবার ইলেকশন করেও সভাপতি হইতে পারেন নাই। আমি নিজেও সেক্রেটারি খারায়া ডিপিট মারছি। হে হে হে। তবে ন্যাড়া একবারই বেল তলায় যায়। আমি একবারই গেছি। দ্বিতীয়বার ইলেকশন করতে চেয়েছিলাম কিন্তু গ্রুপের ভোটেও এগিয়ে ছিলমা, কিন্তু শেষ পর্যন্ত তুষার ভাই জিতবেন বলে নিশ্চিত করাই ছেড়ে দিয়েছিলাম। উনি কথা রেখেছেন, উনি জিতেছেন। তবে কবির ভাই ডিপিট খাইছেন। 

এন্টি ছাত্রলীগ সমর্থকদের অনেকে শিবির ঘরাণার। এক দুজন ছাত্রদলের ছিলেন। আমি তাই ও পথে ছিলাম না। তবে অনেক প্রগতিশীল, এখন জামাত শিবিরের গুষ্টি উদ্ধার কইরা টিভি চ্যানেল আর পত্রিকায় মজা লন, এ রকম অনেকে তলে তলে , আবার অনেকে সরাসরি শিবির ঘারনার গ্রুপে ছিলেন। শিবিরের নুন খাইয়া নিজের নাম সাংবাদিক সমিতির প্রেসিডেন্ট সভাপতির লিস্টে তুলেছেন। কিন্তু উনাদের নাম নেয়া যাবে না। নিলে উনারা মাইন্ড করবেন। উনাদের একটা ইজ্জত আছে না। এ ক্ষেত্রে একজনের নাম তবুও লইতে হয়। উনি সম্রাট ভাই। শিবির সমর্থক গ্রুপ থেকে উনি সভাপতি হইছেন। 

এ রকম আরো অনেকে আছেন। শিবিরের দয়ায় সাংবাদিক সমিতির বোর্ডে নাম তুলছেন । তবে এ ক্ষেত্রে কবির ভাই ব্যাতিক্রম। তাকে তার অনেক বন্ধু অপছন্দ করে। আমি তাদের বিরোধীতা করি। কারণ কবির ভাই আর যাই হোক চূড়ান্তভাবে তার গ্রুপের বিরুদ্ধে গিয়ে সমিতির বোর্ডে নিজের নাম তুলিবার চেষ্টা করেন নাই। সবাইকে সাংবাদিক সমিতির সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদক হইতে হইবে এমন কোনো কথা নেই। আমি তাকে এ জন্য অভিনন্দন জানাই। 

যেখানে একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান এবং মুক্তিযোদ্ধার সমর্থক হিসাবে নিজেকে পরিচয় দিয়ে রাতের আঁধারে আঁতাত করে নিজের যোগ্যতা না থাকার পরেও শিবিরের দয়ায় সভাপতি ছিলেন। কিন্তু উনার মুখে বাইরে কেবল শিবির বিরোধি কথা বার্তা। 

সাংবাদিক সমিতির রাজনীতি করে আমার অভিজ্ঞতা হইলো যারা শিবিরের সবচেয়ে বেশি বিরোধী তারা সবাই শিবিরের কোনো না কোনো ভাবে সুবিধাভোগি। এবং খুব ভালো রকমের সুবিধা হাসিল করেছেন। তাদের বিরুদ্ধে কিচ্ছু বলা যাবে না। অনেকটা ভাসুরের নাম নেয়া যাবে না টাইপের অবস্থা। 

এ লেখাটার জন্য অনেকে ক্ষেপবেন জেনেও নতুন প্রজন্মের বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টারদের দিকে তাকিয়ে এটি লিখলাম। যে কাউকে তার নিশ্চিত পরিচয় জেনে সমর্থন দেয়া উচিৎ বলেই আমি মনে করি। এখনো বিশ্বাস করি সাংবাদিক সমিতির মুখোশের আড়ালে লুকনোর রাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসা উচিৎ।


৩০ শে মে, ২০১৩ বিকাল ৩:৩৬

কিস্তি-৪১: এত রাতে কে রে?

সাংবাদিক সমিতিটা ছিল অন্য রকম এক আনন্দ আড্ডার জায়গা। বিকাল বেলায় ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে যুগল আড্ডা দেখতে দেখতে আমরা সাংবাদিক সমিতির অফিসে ঢুকতাম। নিজেদের প্রিয়জন বেলা ডোবার আগেই হলে কিংবা বাসায়। তাতে কারো আফসোস ছিল না। কারণ রিপোর্টারদের জীবনটা এমনই। 

আমাদের সময় বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার হিসাবে কোনো নারী ছিলেন না। পরে ছিলেন বিডি নিউজের তানভী, এখন ইনডেপেনডেন্ট টিভিতে ও নিউ এজের একজন। আগে ছিলেন ফারজানা রূপা। সে সময় মাতৃভূমিতে কাজ করতেন। 

তবে নারী মুক্ত এ সাংবাদিক সমিতিতে কম মজা হতো না। আমাদের মধ্যে সবচেয়ে মজার পাবলিক ছিলেন মঈনুল হক চৌধুরী সাহেব। উনি সে সময় অর্থনীতি পত্রিকার বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার ছিলেন। ছোট বড় সবাইকে আপনি করে বলেন। চাটগাঁর ছেলে মইনুল রসে ভরা। সে রকম রসালো সব কথা তার। আমার তাকে বেশি ভালো লাগতো। কারণ হলো মঈনুল ভাই সব সময় হাসি মুখে থাকতেন। এটা তার ভালো গুণ। সবচেয়ে বড় গুণ হলো কারো ওপর রাগ না করা । এক কথায় এ ক্ষেত্রে অসাধারণ। আমাদের মধ্যে যারা এডাল্ট জোকস বলে সবাইকে মাতিয়ে রাখতেন, মঈনুল ভাই তাদের একজন। অন্যজন আবুল কালাম আজাদ। চুটকি আজাদ নামে তার সমধিক খ্যাতি ছিল। সে সময় মুজাদ্দেদ পত্রিকায় কাজ করতো। মজার লোক আজাদ আমাদের ভালো বন্ধুও বটে। প্রেম ট্রেমের ধারে কাছে নেই, ক্লাশ পরীক্ষা আর অফিস নিয়ে মতোয়ারা। 

রাতে ফিরে সবাই সাংবাদিক সমিতির চ্যানেল বদল নিয়ে হাতাহাতি, ঝগড়া আবার যাবার বেলায় সব মিটমাট। সে সময় আমরা হিন্দি রিমিক্স গানগুলো বেশি দেখা হতো। সেই রকম সব রগ রগে দৃশ্য। যেহেতু কোনো তরুণী এখানটায় রাতের বেলা ঢু মারতেন না। তাই এখানে সেন্সর করে টিভি দেখার প্রয়োজন ছিল না। সে সময় সোনিয়া গানটা খুব জনপ্রিয় ছিল । আমরা সবাই মিলে উপভোগ করতাম। 

আমাদের মধ্যে আরেকজন ছিল মজা করতে পছণ্দ করতেন তিনি শঙ্কর দা। বাইরে থেকে দেখে বেশ রাশভারি মনে হলেও তার মনের ভেথর যে এত অফুরান আনন্দ আছে সেটি অনেকে টের না পলেও আমরা জানতাম। সব মিলিয়ে সাংবাদিক সমিতির বিকাল গুলো ভরে উঠতো আনন্দ আড্ডা আর নিউজ শেয়ারিংয়ে। কাজের ফাঁকে ফাঁকে চলতে কৌতুক, হাসি ঠাট্টা। শেষের দিকে আমাদের এই নটি কৌতুক আসরে যুক্ত হয়েছিল শামীম। সে ডেইলি ইনডেপেনডেন্টে ছিল। বর্তমানে রেডিও টুডেতে। তবে সেলিম ও ইশতিয়াক ওরা দুজনেই এখন নিউজ রুম বস। ওরা এ ধরণের কৌতুকে আগ্রহ দেখাতো না। ইশতিয়াক এখন বাংলা নিউজের চিফ অব করসেপনডেন্ট এবং সেলিম হেড অব নিউজ, রেডিও টুডে। আমার দেখা দুজন অসম্ভভ ভালো ছেলে। ওদের নিয়ে পরে কোনো একটা আলাদা কিস্তি লিখতে হবে। 

অনেকে আমাকে কৌতুকের জণ্য চাপাচাপি করতেন। আমি একটাই এডাল্ট কৌতুক জানতাম। সেটি শোনানো যাচ্চেছ না। তবে সে সমসয় বন্ধুরা সবাই বলত‌ 'এত রাতে বুকের ওপর কে রে? মাসিমা আমি অমল ... ‌বাবা অমল... এ যে পাপ... এ যে অধর্ম'। এটা নিশ্চয় প্রথম আলোর মোশতাক, বাংলা নিউজের ইশতিয়াক, রেডিও টুডের শামীম, বিডি নিউজের মঈনুল ভাই , সরকারি চাকুরে আজাদ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক যাকারিয়া ভাই, ডেইলি স্টারের তুষারসহ অনেকে বুঝতে পারছেন। এ কৌতুকটা মাসিমার সাথে ভাগ্নের ফিজিক্যাল রিলেশন নিয়ে !
২৯ শে মে, ২০১৩ রাত ৮:৩৭

কিস্তি ৪০ ::সম্পূরক প্রেম

৩৯ তম কিস্তিতে কয়েকজনের নাম বাদ পড়েছে। তাদের মধ্যে আমাদের বহুমাত্রিক প্রেমিক ডেইলি স্টারের হাসান জাহিদ তুষার অন্যতম। এখন সংসার করছেন। ভালো আছেন। তার বাইকের পেছনে কাউকে না কাউকে দেখা যেতো। এখন রিপোর্টিং ও সংসার নিয়ে ব্যস্ত। তবে তার যে সব বন্ধুদের সাথে সম্পর্ক ছিল তাদের কোনো একজনের সাথে সংসার করা হয়নি। 

একই অবস্থান তাদেরই বন্ধু ও এক সময়কার বিএসএস-'র রিপোর্টার নুরুল করিম ভাইয়ের। পুরো দস্তুর কর্মমুখর জীবনে গিয়ে তার যে বিয়ে করা, সেটিও অবশ্য প্রেমের। 
ইত্তেফাকের সাহাবুল হকের প্রেম বিষয়ক গল্প শোনা গেছে। তবে তাকে কারো সাথে পাওয়া যায়নি। ক্যাম্পাস রিপোর্টিংয়ে থাকার শেষের দিকে সুজন মেহেদী প্রেম করতো লাকীর সাথে। এর ইতিবাচক গতিও ছিল। ওরা এখন সংসার করছে। এক কন্যা সন্তান নিয়ে ভালোই আছে সুজন। 

মাসুম আল জাকী সে সময় ছিল অবজারভারে। ওর বউ মুক্তা থাকত মৈত্রী হলে। ও আসত সাংবাদিক সমিতে। প্রায় আমাদের সবার সাথে আলাপ হতো। অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে জাকি ও মুক্তা এখন সংসার করছে। এটাও কোনো অংশে কম আনন্দের খবর না। 
যুগান্তরের মুসতাক পুরনো ঢাকায় এক তরুণীকে পছন্দ করতো বলে জানতাম। তবে তারও সেই একই কপাল তাকে তার বিয়ে করা হয়নি। তবে তার বিয়েটা প্রেমের কিনা সেটি আমি জানার চেষ্টা করিনি।

শিপু যে প্রেম করতো, সেটা আমার জানা ছিল না। শিপু হলো আমার দেখা অসাধারণ একটা ছেলে। আমি ওকে খুব পছন্দ করি। এর সবচেয়ে বড় কারণ হলো আমার প্রতি ওর অনুরাগ। শিপুর প্রেমের খবর জেনেছি, ওর বিয়ের বছর খানেক আগে। ওকে আমার নিজের ছোট ভাইয়ের মত দেখি বলে, আমার কাছে ও বড় হয়নি কখনো। এখনো না। তাই ওর এ দিকটার খবর বেমালুম ভুলে ছিলাম। 

নিজের কথা আমি বলতি চাইছলাম না। কিন্তু এত বেশি ফোন পেয়েছি যে তা না বললেই নয়। আমার প্রেম বিষয়ক বড় কোনো গল্প নেই। এর সবচেয়ে বড় কারণ আমি স্ট্রেইট কাট কথা বলি্ । পুতু পুতু টাইপের আলাপের ধারে কাছে যাই না। তবুও এর ভেতর দিয়ে বেশ কয়েকজন তরুণী আমাকে পছন্দ করতেন। তাদের মধ্য থেকে একজন নিয়ে আমি সংসারী। দু সন্তানের জন্ক হিসাবে ভালোই তো আছি। 

আমার প্রেম ছিল মূলত লেদার কলেজে। আমার অনুজ শিপু যেটাকে চামড়া পট্টি বলতে পছন্দ করে। তাতে আমার কোনো আপত্তি নেই। তবে আমার সে সময়কার প্রিয় মানুষটিকে সময় দেয়া হতো কম। এখনো এমনটা ঘটে। ও আসত সাংবাদিক সমিতিতে। অথবা মধুতে। আমরা এর বাইরে ক্যাম্পাসের কোনায় কানায় চিপায় চাপায় আড্ডায় অভ্যস্ত ছিলাম না। কারণ এটাকে আমি বরাবরই এড়িয়ে চলার চেষ্টা করেছি। 

লীনার সাথে আমার প্রেমের বয়স কম। আমরা অল্প সময়ের মধ্যে বিয়ে করেছিলাম। অনেকটা ইঁচড়ে পাকা টাইপের ব্যাপার। তবে আমার আসলে প্রেম করার মত সময় ছির না। সারাদিন নিজেকে ব্যস্ত রাখটা আমার একটা স্বভাব। যদিও কোনো মেয়ের এমন ছেলে পছন্দ হবার কথা নয়। কিন্তু আমাকে তারপরেও কিছু তরুণী তাদের মনে কোনায় জায়গা দিযেছেন। তাদের কাছে আমার কৃতজ্ঞতা প্রকাশের সীমা নেই। 

২৭ শে মে, ২০১৩ বিকাল ৩:৪৯

কিস্তি ৩৯: নারীর কোমল হাতের স্পর্শ

নারীর কোমল হাতের স্পর্শ সবারই প্রত্যাশা। কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে যারা রিপোর্টিং করেন, তাদের এ ভাগ্যটা খুবই কম হয়। বলা হয়ে থাকে সাংবাদিকদের নারীরা পছন্দ করেন না। তাই সাংবাদিকরা একটু নারী বিদ্বেষীও বটে। কিন্তু এটা যে সর্বাংশে সত্য নয় সেটি প্রমাণ করে দেয়াটাই ছিল আমার মূল লক্ষ্য। 

সাংবাদিক সমিতির অনেক সিনিয়র সদস্য প্রেম পীরিতিতে জড়িয়ে ছিলেন। তাদের মধ্যে সে সময়কার ইউএনবির সাজু ভাই, ইনপেডপেনডেন্টের খাদেমুল ইসলাম হৃদয় ভাই, ইনকিলাবের যাকারিয়া ভাই, প্রথম আলোর সম্রাট ভাই অন্যতম। তবে এদর মধ্যে কেবল সম্রাট ভাই-ই ক্যাম্পাসে ডেটিংয়ে ব্যস্ত থাকতেন বলে সবাই এ জুটির খবর রাখতেন। বাকিদের কথা্ জানা গেছে পরে। তারা লুকিয়ে চুকিয়ে কাটাতেন সময়।

সে যাই হোক মুখর ক্যাম্পাসে আমি প্রথম মেয়ে বন্ধুদের সামনে নিযে আসার উদ্যোগ নিলাম। এমনকি সাংবাদিক সমিতিতেও আসতেন আমাদের বান্ধবীরা। প্রথম দিকে এটা নিয়ে অনেকে জ্ঞান দেয়ার চেষ্টা করলেও পরে হালে পাননি। কারণ তারাও কিন্তু ক্যাম্পাসের বাইরে বন্ধবীদের সাথে আড্ডা দিতে যেতেন। 

আমাদের মধ্যে অনেকেই নিজের পছন্দে পরে বিয়ে করেছেন। অনেকের প্রেম টিকেনি। এর মধ্যে অন্যতম সম্রাট ভাই। ক্যাম্পাস লাইফে যার সাথে তার সম্পর্ক ছিল, স্থায়ী জীবনে তার পাওয়া হয়নি। একই অবস্থা সে সময়কার আজকের কাগজের রিপোর্টার কবীর ভাইয়েরও। হয়নি আমাদের বন্ধু শামীমেরও। একই অবস্থা অনুজ সুজন মেহেদীর। 

তবে আমাদের অনুজ মিজান শেষ পর্যন্ত সম্প্রতি সফল হয়েছে। দীপার সাথে সংসার শুরু করেছে। অনেক আগে থেকে তাদের সম্পর্ক ছিল। ধারণা করা হচ্ছিল তাদের বিয়েটা হবে না। কিন্তু শেষ পর্যন্ত হয়েছে এতেই প্রশান্তি। 

আমাদের কয়েকজন বন্ধু বাইরে প্রেম করতেন। এর মধ্যে সে সময়কার জনকণ্ঠের রিপোর্টার মোশতাক চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে। ভোরের কাগজের রিপোর্টার অভি প্রেম করতো গোপালগঞ্জে। আমাদের সিনিয়র ও ডেইলি স্টারের শামীম ভাই প্রেম করতে কুমিল্লায়। এখন জার্নালিজমের টিচার শামীম মাহমুদ পরে তাকে বিয়ে করতে সমর্থ হন। মোবাইলফোনেই ভাবির সাথে তার পরিচয়। সেই ২০০১-২০০২ সালের দিকে এটা এক্সপেনসিভ প্রেম! তবে সফলতার জন্য আমরা তাকে অভিনন্দন জানাই।

তবে এ সব প্রেম, বন্ধুত্ব বা আড্ডায় সময় কম দেয়া হতো রিপোর্টারদের। কারণ পড়াশোনার সাথে সাথে চাকুরী করার এ সব তরুণকে সারাক্ষনই ব্যস্ত থাকতে হয়। যারা তাদের সাথে সম্পর্ক করেছেন তারা এটি মেনেই নিয়েছেন। তাই সুবিধে হয়েছিল।

২৬ শে মে, ২০১৩ দুপুর ২:৫০

কিস্তি-৩৮:শেষ পর্যন্ত তালা খোলা হলো

২০০২ সালের শুরুর দিকের ঘটনা।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয সাংবাদিক সমিতিতে তালা। বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টাররা গাছতলা, হাটতলা আর ক্যান্টিন- ফ্যান্টিনে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। এ নিয়ে কারো কোনো কথা নেই। আমি বিষয়টি নিয়ে সিনিয়রদের সাথে কথা বলি, জানাই একটা উদ্যোগ জরুরী। সমিতি খোলা থাকাটা খুবই দরকার। সবাই একমত। কিন্তু কাজটা করবে কে? 

সাংবাদিক সমিতি তখন মোটা দাগে দুভাগে বিভক্ত। দপক্ষই ছাত্রলীগ সমর্থক। এক গ্রুপের নেতা মামুন ভাই। জনকণ্ঠের রিপোর্টার ছিলেন। এখন নিই ইয়র্কে বাংলাদেশের প্রেস সেক্রেটারি। আরেক গ্রুপ খোকন ভাইয়ের। উনিও আমেরিকা থাকেন। সেখানে চ্যানেল আইয়ের প্রতিনিধি। 

কিন্তু দুপক্ষের সহযোদ্ধারা সমিতি অফিস খুলতে চাইলেও পারছিলেন না। শেষে সমিতির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য খায়রুল আনোয়ার মুকুল ভাইয়ের হস্তক্ষেপে অফিসের তালা খোলা হলো। সবার মাঝে প্রাণ ফিরে এলো। সারা দিন ক্লাশ, অ্যাসাইনমেন্ট, সোর্স ম্যান্টেইন শেষে সবাই বিকাল বেলা সাংবাদিক সমিতির দপ্তরে আসতেন। বেশ আড্ডা জমতো। সিনিয়র জুনিয়র সবাই মিলে আ্ড্ডায় মশগুল হতেন । গ্রুপিংয়ের নোংরা দিকটা আস্তে আস্তে আড়াল হতে থাকলো। মুকুল ভাই সে সময় জনকেণ্ঠ ছিলেন। এখন এনটিভির চিফ নিউজ এডিটর। 

সাংবাদিক সমিতির সেই সময়কার এই গ্রুপিং সঙ্কট পরে আরো প্রকট হয়েছিল। বলা হয়ে থাকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির ৩১ সদস্য হলে গ্রুপ ৩২ টা। আসলেই তাই। এখানে সবাই সবাইকে খুব 'বুঝদার' মনে করেন। এর সাথে অন্য কেউ একমত হতে পারেন। আবার নাও হতে পারেন। 

এই গ্রুপিং যন্ত্রণার ভেতরেও সবাই সবার সাথে সদ্ভাব বজায় রাখার চেষ্টা করছেন। আমাদের আগে সমিতির গ্রুপিং নিয়ে একে অন্যকে অপমান করার ঘটনাও ঘটেছে বলে শুনেছি্। পরে অবশ্য আমাদের এ সব দেখতে হয়নি। সে জন্য শুকরিয়া আদায় করছি।

আমি বরাবরই গ্রুপিং রাজনীতিতে ছিলাম, তবে সব গ্রুপের রিপোর্টারদের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখার চেষ্টা আমার ছিল। এখনো আমি সেটি অব্যাহত রাখার চেষ্টা করি। যদিও সাংবাদিক সমিতির আমি কোনো বড় কর্তা হিসাবে নির্বাচিত হইনি, তবে সব সময় আলোচনায় ছিলাম। এখনো অনেকে আমাকে চেনেন এতেই আমার তৃপ্তি। 

২৫ শে মে, ২০১৩ দুপুর ১:৩৫

কিস্তি-৩৭: ঘটনার পেছনের ঘটনা

বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার হিসাবে আমার ওপেন হওয়ার কয়েকদিন পরে মধুর ক্যান্টিন, গোপাল দা'র দপ্তর এবং আশরাফ ভাইয়ের চেম্বারে যাতায়াত শুরু করলাম।
বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টারদের প্রায় সবাই ছিলেন অচেনা। আমি আস্তে আস্তে চেনার কাজ শুরু করেছি। ডাকসুর সামনে গাছের সাথে হেলান দিয়ে দাঁড়ানো ফরিদ আহমেদ সাজু ভাই। সে সময় উনি কাজ করতেন ইউএনবি -তে। এখন বিসিসিতে আছেন।
আমার পছন্দের সাংবাদিকদের একজন। সাজু ভাই নামেই আমরা তাকে চিনি। সাজু ভাই যে কোনো ঘটনার পেছনের ঘটনা খুঁজে বের করতে অসাধারণ প্রতিভাধর। তার কাছে অনেক কিছুই শেখার আছে। হালকা পাতলা মানুষ সাজু ভাই হালাকা বিড়ি বুড়ি খান। সাথে পানীয়ও। আমি ও তার সহযোগি ছিলাম।
ভালো লাগতো সাজু ভাইকে, তার সবচেয়ে বড় কারণ উনার একজন ভালো রিপোর্টার।
আমি তাকে সালাম দিয়ে পরিচয় জানতে চাইলে বললেন, রূপালীতে কাজ করেন। আমি তাই সত্য ধরে নিই। পরে অবশ্য অন্যদের সাথে আলাপে জানি উনি ইউএনবিতে কাজ করেন।
সাজু ভাই পরে খুব ফ্রেন্ডলি। আমার সাথে তার সম্পর্ক এখনো চমৎকার। আমাকে পছন্দ করেন বলেই জানি। এখনো যোগাযোগ আছে।
সাজু ভাইয়েরা সে সময় বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টিংয়ের শেষ পর্যায়ে ছিলেন। এ রকম যে ক'জনই ছিলেন তাদের মধ্যে সাজু ভাই খুবই শার্প রিপোর্টার।
সাজু ভাই ছাড়াও অন্য আরো অনেকের সাথে অল্প সময়ে সখ্যতা গড়ে উঠেছিল। সে সুবাধে বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টিং এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের আনাচে কানাচের খবরের উৎস গুলো দ্রুত রপ্ত করে নেয়র সুযোগ হয়েছিল আমার। এ কারণেই হয়ত সবার আগে অনেক খবর পেতে শুরু করলাম। অনেকে মনে মনে ঈর্ষা করতেন। তাতে কিচ্ছু যায় আসে না। তার ওপর সাংবাদিক সমিতির রাজনীতি। আমি কোন দলে ভিড়ব, কোন দলের সাথে থাকবো তা নিয়ে সংশয় চলছিল। আমি খুঁজলাম কারা আমার সাথে চলতে পছন্দ করতেন তাদের, সিদ্ধান্ত ছিল যে গ্রুপেই থাকিনা কেন, সবার সাথে সমান সম্পর্ক। একই সাথে সবার সাথে সবার একটা সৌহার্দপূর্ণ সম্পর্ক সৃষ্টিরও ইচ্ছে ছিল। যেটি পরে আমার বিপরীত গ্রুপের বন্ধু শামীম কন্টিনিউ করেছিল।
পরের কিস্তি সাংবাদিক সমিতির তালা খোলা নিয়ে

১৯ শে মে, ২০১৩ দুপুর ১২:৪২

কিস্তি -৩৬ :শত চাপ উপেক্ষা করেও তিনি অবিরাম লিখে যাচ্ছেন!

মতি ভাই, মানে মতিউর রহমান চৌধুরী। আপাদমস্তক একজন পেশাদার সাংবাদিক। বিএনপির প্রতি তার সফট কর্ণার আছে। কিন্তু রিপোর্ট যদি সত্য ও সঠিক হয়, তথ্য যদি ঠিক থাকে সে রিপোর্ট আটকায় না। অন্তত মানবজমিনে আমার তিন বছরের কর্মকালে আমি এমনটা দেখিনি। আমি নিজেও মতি ভাইয়ের মতাদর্শে বিশ্বাসী।

বাংলাদেশে যে ক'জন সাংবাদিককে শ্রদ্ধার সাথে বিবেচনায় আনি মতি ভাই নাম্বার ওয়ান। শত চাপ উপেক্ষা করেও তিনি অবিরাম লিখে যাচ্ছেন। তার লেখার একজন ভক্ত আমি। ছোট বেলা থেকে আমার স্বভাব- যে কারো লেখা হাতের কাছেই পেলে পড়ে ফেলা। এ ক্ষেত্রে আমি কোনো চয়েস রাখি না। কারণ হলো, একজন খারাপ লেখকও একটা ভালো লেখা উপহার দিতে পারেন।আর না পড়ে কারো বিষয়ে মন্তব্য করাটা আমার পছন্দ নয়। আমি যে ক'জন মানুষের লেখা অনুসরণ করি তাদের মধ্যে মতি ভাই অন্যতম। তার লেখা শুরু করলে শেষ না করে ওঠা যাবে না।উনি নামে লিখুন, আরি বেনামে লিখুন পড়তে বসলে লেখার স্টাইল দেখে আমি বুঝতে পারি। তবে মতি ভাই ভালো লেখেন, আমি সে কথা তার কাগজে চাকুরি করার সময় কোনো দিনই বলিনি। কারণ কিছু নয়, আমার আসলে কাউকে সরাসরি প্রশংসা করতে ভালো লাগে না। অন্যের কাছে বলি, অন্যকে পড়তে উৎসাহিত করি। তবে ইদানিং পাবলিক রিলেশনের কাজ করতে গিয়ে অনেকের অনেক প্রশংসা সামনে করতে হয়। কারণ এত অনেকে বেশ খুশীই হন। আবার অনেকে বেজার হওয়ার ভান করলেও খুশী যে হন সেটি আমার বুঝতে অসুবিধে হয় না। প্রশংষা পেলে কে না খুশী হয়, আমি নিজেও হই! হা হা হা। 
মতি ভাই মানবমজিনের প্রধান সম্পাদক ছাড়াও ভয়েস অব আমেরিকা রিপোর্টার। মানবজমিনে বিশ্ববিদ্যালয রিপোর্টার থাকার সুবাধে ভয়েস অব আমেরিকার রিপোর্ট করার ক্ষেত্রে তাকে সহযোগিতা কারার সুযোগ আমার হয়েছে। তিনি অত্যন্ত সহযোগি একজন মানুষ। আমার অনেক রিপোর্ট তিনি দেখে দিতেন। আমি খুবই কৃতজ্ঞ যে তার মত একজন মানুষ এখনো আমার মত অতিশয় ছোট একজন রিপোর্টারকে মনে রেখেছেন। 
মতি ভাই সাহসী মানুষ। বয়স তাকে হার মানাতে পারেনি, পারার কথাও নয়, নিউজই তার নেশা। তাকে রাজনীতির সুতোয় বাঁধা যাবে না। দেশের স্বার্থে তাকে আমি সব সময় আপস হীন দেখেছি।মানব জমিনে মতি ভাই রিপোর্টারদের এক বসায় অন্তত ৫০ টা আইডিয়া দিতে পারতেন। এবং সে সব রিপোর্ট ছিল পড়ার মত। আমার সাংবাদিকতা জীবনে পরম সৌভাগ্য তার মত একজনের সাতে কাজ করতে পেরেছি। মতি ভাই এখনো বলেন, যে কোনো সময় তার কাগজে আমার জন্য পথ খোলা। সেটি উনি না বললেও আমি জানি। আমি একটা পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সেখান থেকে চলে এসেছিলাম। এখনো আমার মন মানবজমিনে পড়ে থাকে। এর সব চেয়ে বড় কারণ আমাকে সাংবাদিক হিসাবে যারা চিনেন তার পুরো কৃতিত্বটাই মানবজমিনের। ২০০১ থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত অনেক আলোচিত রিপোর্ট করার সুযোগ আমার হয়েছে। সব ধরণের রিপোর্ট করে রিপোর্টিং শেখার একটা অনন্য সুযোগ আমি এখানে পেয়েছি। তাই এখানকার কথা একটু বেশি করেই বলতে হবে, কারণ আমার ক্যারিয়ারের টার্নিং পয়েন্টে ছিল মানবজমিন। 
ব্রডশিট কাগজে আমি এর আগে কাজ করেছিলাম, সেটি প্রথম আলোতে। সেখানেও আমার আলোচিত রিপোর্ট ছিল। বিশেষ করে বেগম বাজার শাহী জামে মসজিদের জায়গা দখল করেছিলেন সে সময়কার লালবাগ এলাকার আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য হাজি সেলিম। সে জমি এখনো উদ্ধার হয়নি। সেখানকার দখলদারিত্ব নিয়ে আমি একটি প্রতিবেদন করার পর কোটি টাকার মানহানির হুমকি দিয়েছিলেন এমপি সাহেব। কিন্তু আমার কাছে সব ডকুমেন্ট থাকায় শেষ পর্যন্ত এমপি সাহেব হালে পানি পাননি। তবে প্রথম আলো তার একটা বক্তব্য পরে প্রতিবাদ আকারে ছাপিয়েছে। এতে আমার কোনো ক্ষোভ বিক্ষোভ নেই। তবে প্রথম আলোর ঢাকায় থাকি পাতাটা বন্ধ না হলে আমার মানবজমিনে আসা হতো না। মানব জমিনে আসার গল্পটা আপনাদের আগেই শুনিয়েছি।

সামনের কয়েক পর্বে ঢাকা বিশ্বববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির রাজনীতি নিয়ে কথা হবে , আশা করি।

১৬ ই মে, ২০১৩ দুপুর ১:৩৭

দুঃখিত!

সোশ্যাল মিডিয়ার ওয়ালে কান ধইরা খারায়া থাকনের কোনো মাহাত্ম আমি খুইজ্জা পাইলাম না। দুঃখিত। 
হয়ত রইদ, বৃষ্টিতে ভিজ্জা প্রতিবাদ-গুম কিম্বা লাঠিপেটা খাওনের হাত থেকে বাঁচনের সহজীয়া উপায় এইডা। 
এর মর্ম উপলব্ধি কইরতে ব্যর্থতার জন্য আবারো দুঃখিত।

রাজনীতির দাঁড়ি টেনে শিক্ষক অপমান সইবেন না! প্লিজ



একজন লেখকের নাম মনে পড়ছে, যার কাছে শুনেছিলাম হিন্দু ছাত্র ছিল বলে হোস্টেলে তারা গরু গোশত খেতেন না। তিনি 'জিবরাঈলের ডানা'র গল্পকার শাহেদ আলী।

আমরা মোছলমানরা অন্য ধর্মের লোকদের প্রতি অধিক সহানুভূতিশীল। খেয়াল করবেন, আমি কিন্তু মোছলমানের কথা বলেছি, আমি  অসাম্প্রদায়িক প্রগতিশীলদের কথা বলছি না, যারা  ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করেন এবং আমি  মৌলবাদী রাজনীতিকদের কথাও বলছি না যারা মানুষের মাঝে ভাগ করেন।

ভাটি বাংলায় মানুষের বিভেদটা আমরা বহু আগেই করেছি।  শিক্ষকদের কটাক্ষ আমাদের নেতৃস্থানীয়রাই করছেন। আমরা সুযোগ বুঝে, পক্ষ থেকে প্রতিবাদ করি। এ একটা জিনিস  মানতে পারি না। শিক্ষকদের হেলা, অবহেলা কোনোভাবেই গ্রহণ যোগ্য হতে পারে না।

আমি বলছি না, জগতের সব শিক্ষক মহান হবেন, সব দল মত  শিক্ষকদের  একই রকমের শ্রদ্ধা পাবেন , রাষ্ট্র একই ভাবে মূল্যায়ন করবে। এটা কেন বলছি, কারণ এখানে রাজনীতিই মুখ্য। ধর্ম নিয়ে ব্যবসার রাজনীতি, নোংরামি এখানে প্রচণ্ড রকমের। আসলে মনে যদি কেউ  পরধর্ম সহিষ্ণু না হন, লো্ক দেখানো ভাব নিয়ে বেশি দিন চলা ভারি মুশখিল। অভিনয় সব সময় করা যায়, তবে সব সময় একই রকম  মুখোশ লাগিয়ে থাকা যায় না।

সেলিম ওসমান  যে কাণ্ডটা ঘটিয়েছেন, যে অজুহাতে তিনি এর দায় থেকে নিজেকে মুক্ত মনে করছেন---তাতে  আমরা সবাই অত্যন্ত  আহত বোধ করছি।  একজন রাজনীতিক, জনরোষকে সামলানোর জন্য একজন শিক্ষককে  কান ধরে ওঠবোস করানোই সমর্থন দেবেন এটা কোনো  বিচারেই  গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। যদি জনরোষ সামলাতে তিনি অক্ষম হন, তাহলে তিনি রাজনীতিক নন, তিনি রাজনীতিক হতে পারেন না।

শিক্ষক পরিবারে জন্ম নেয়া সন্তান হিসাবে  শ্যামল কান্তি ভক্তের অপমানের ব্যথা, কষ্ট এবং অসহনীয় যন্ত্রণা আমাকেও কুরে কুরে খাচ্ছে, প্রতি মুহুর্তে। চোখরে সামনে ভাসছে একজন নিরীহ অসহায় মানুষের মুখ, যার কানে হাত! কম বেশি সবার জানা রাজধানীসহ সারা দেশে ৯৯.৯৯ শতাংশ স্কুল কলেজ ও মাদরাসার শিক্ষকরা স্থানীয় রাজনীতিকদের কাছে জিম্মি।

বিশেষ করে বেসরকারি শিক্ষকদের  নিয়ন্ত্রণ পুরোপুরিই তাদের হাতে । পছন্দ না হলে তাকে নিয়ে কু রাজনীতির চর্চা বহু আগে থেকেই আমার সরাসরি দেখা। তাই শিক্ষকদের রাজনৈতিক হয়রানি কবল থেকে রক্ষা উপযোগি  শিক্ষাও শিক্ষার্থীদের দেওয়া দরকার।  শিক্ষার্থীদের কেউ না কেউ বড় হয়ে নেতা, সন্ত্রাসী, ধনবান হচ্ছেন, যারা শিক্ষকদের জনরোষ থেকে বাঁচানোর জন্য কান ধরে ওঠ বস করাচ্ছেন!

 ক'দিন আগে মওলানা আবদুল লতিফ নেজামী অভিযোগ করেছেন,  সিলেবাস থেকে কাজী কাদের নেওয়াজের 'শিক্ষাগুরুর মর্যাদা' মর্যাদা কবিতাটি তুলে দেওয়া হয়েছে। ড. কাজি দীন মুহম্মদের বিনয় নম্রতা উঠে গেছে আরো বহু বছর আগে। তাহলে সুশিক্ষা ! মিলবে কোথায়!

দেশে শিক্ষক নিপীড়নের ঘটনা এটাই প্রথম, তা কিন্তু নয়। খেয়াল করবেন, আমরা গত কয়েক বছরে বহু শিক্ষক হামলার  শিকার হয়েছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক মাহবুবউল্লাহকে মারধর করে, জামা কাপড় ছিঁড়ে অর্ধনগ্ন করা হয়েছিল দেশের সর্বোচ্চ আদালত প্রাঙ্গণে।

আমরা এও দেখেছি প্রজন্ম লীগ আমাদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের পিটেয়েছে সঙ্ঘাত ঘটাতে পারে, এমন আশঙ্কায়। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ দেখিনি, কেন দেখিনি, তা হলো এর বিরোধী মতের শিক্ষক।

আবার জাফর ইকবালের মতো  জনপ্রিয় শিক্ষককেও আমরা সিলেট বিশ্ববিদ্যালয়ে  অপমানিত হতে দেখিছি।  বয়োজ্যাষ্ঠ রাষ্ট্রবিজ্ঞানীয় ড. এমাজ হুমকি পেয়েছেন, তার বাসার সামনে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনাও আমরা খবরে পড়েছি।

আমরা মূল কথার জায়গাটা--- আমরা হুজুগে মাতি আবার একটা ঘটনা ঘটে আমরা সেটাকে নিয়ে ব্যস্ত হই। অত্যন্ত বেদনার বিষয় হলো শিক্ষক নিপীড়নের, হুমকির  কোনো বিচার হয় না।

 ক'দিন আগেই তো রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রেজাউল করিমকে খুন করা হয়েছে।  এর আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের বাসায় ঢুকে অধ্যাপক আফতাব আহমদকে খুন করা হয়েছে। ড. হুমায়ূন আজাদ স্যারকে কুপিয়ে আহত করা হয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসেই!

 আমরা এ সব খুন, অপমান সহজে মেনে নিচ্ছি। এ মেনে নিতে আর রাজনৈতিক বিভাজন টানতে টানতে আক্রান্ত হচ্ছি নিজেরাই!

শ্যামল স্যার কিম্বা  মাহবুব উল্লাহ স্যার, যে যখনই আক্রান্ত হন তাদের প্রতি দল মত নির্বিশেষে সহানুভূতি সবারই থাকা উচিৎ। রাষ্ট্র এ সব হামলা, অপমান আর অন্যায্য আচরণের বিচার করবে আমরা এটা আমরা আশা করি। যদিও বিচার হয় না! তবুও হবে এ আশাটাও কম কিসে!!

ধর্মকে ব্যবহার করে এর আগেও বহু নিপীড়নের ঘটনা ঘটেছে।  রামু কাণ্ড থেকে শ্যামল স্যার তার একটা উদাহরণ মাত্র। এ সব উদাহরণ সমূলে উৎপাটন করতে না পারলে আমরা 'মানুষ' হয়ে উঠবো না, এটা নিশ্চিত!
   

কিস্তি-৩৫ ::পরের কন্যা বড় ভাইদের সম্প্রদান

অফিস থেকে মতি ভাই অ্যাসাইন করলেন, ইডেন কলেজ নিয়া রিপোর্ট করতে। মানবজমিনের বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার মানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সীমাবদ্ধ থাকলে চলবে না, সে কথাও জানিয়ে রাখলেন। সে হিসাবে বুয়েট, ঢাকা মেডিকেল কলেজ, ইডেন, ঢাকা ও জগন্নাথ কলেজ আমার কাজের পরিধির মধ্যে পড়ে। 
ইডেন নিয়া রিপোর্ট করতে গিয়া পুরা সমস্যায় পড়লাম, আমার চেনা জানা কেউ নেই। দ্বারস্থ হলাম আমিরুল ইসলাম কান আলিম ভাইয়ের। ছাত্রদলের এ নেতা পরে কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক হয়েছিলেন। উনার এলাকার এক নেত্রী ছিলেন- নাম রুমা। কাতল মাছের মতো চেপ্টা বডি। প্রচণ্ড শক্তিমান নেত্রী। দলবলেও ভারি। তাকে ফোন দেয়ার পর সে হোস্টেলে থাকে এমন কিছু ছাত্রী নিয়ে মধুতে দেখা করতে এলেন। 
তাদের কাছে ইডেনের ছাত্রীদের বিভিন্ন সমসন্যা শুনে এবং পরে দুদিন ইডেন গিয়ে, শিক্ষক ও অধ্যক্ষের সাথে কথা বলে একটা রিপোর্ট করলাম। রিপোর্টটা চলনসই হয়েছে বলে জানালেন মতি ভাই। 
মতি বললেন, সেখানে অনেক চমকপ্রদ খবর হয়, সে দিকে নজর দেবার জন্য। পরে অবশ্য ঠিকই জেনেছিলাম সেখানকার অনেক চমকপ্রদ খবর, তবে সে সব লিখতে পারিনি। পারিনি বলে হয়ত বছর দুয়েক আগে সেখাকনার ছাত্রলীগ নেত্রীদের বিরুদ্ধে ছাত্রনেতাদের কাছে সাধারণ ছাত্রীদের মনোরঞ্জনের জন্য চালান করার খবর প্রকাশ হয়। 
তবে সে সময়ও এটা ছিল। ছাত্রদলের কিছু নেতা ছাড়াও সরকারের মন্ত্রীদের কারো কারো জন্য গণিমত যেত ইডেন থেকে। যারা এ সব সাপ্লাই করতেন তাদের প্রভাব ছিল সে রকম। মন্ত্রীরা তাদের কল পাওয়া মাত্রই রিসিভ করেন। না পারলে পরে ব্যাক করেন। সে সব নিজের চক্ষে দেখা। যেখানে ছাত্রদলের বা ছাত্রলীগের একজন কেন্দ্রীয় পুরুষ নেতা মন্ত্রীর দেখা পেতে কাঠখড় পোড়াতে হয়, সেখানে ছাত্রী নেত্রীদের জন্য সদর দরজা উন্মুক্ত। আহা কি শান্তি। সে সুবাধে ছাত্রী নেত্রীদের অনেকে ব্যাপক তদবির করে মাল কি ভালাই করছেন। এটা সব আমলেই ছিল, এখনো আছে। 
তবে ইডেনের নেত্রীদের সবচেয়ে বড় সমস্যা গ্রুপিং। এখানে চরম গ্রুপিংয়ের সাথে নোংরামিও চলে বেশ। চরিত্র হনন যাকে বললেন, খোলাসা করে বলা হবে। কে কার বাসায় যায়, কে কার বাসায় কাকে পাঠায় এমনকি সাংবাদিকদের জন্য কে কাকে সরবরাহ করা হয় সে খবরও পাচ্ছিলাম।
২০০২ থেকে ২০০৪ সালের দিকে ইডেনে ছাত্রদলের তিনটি প্রধান গ্রুপ ছাড়াও আরো দুটো উপ গ্রুপ ছিল।
তবে এ নেত্রীদের কাজকর্ম খুব একটা পছন্দনীয় নয়। তাতে কি তাদের তো আর বড় ভাইয়ের অভাব নেই। পরের কন্যা বড় ভাইদের সম্প্রদান করে ইডেন ছাত্রলীগ ও ছাত্রদল নেত্রীরা রাজনীতিতে ভালো অবস্থানেই আছেন। 
তবে ছাত্র নেত্রীদের প্রায় সবাইকে স্বার্থপর বলতে হবে, কারণ এরা প্রয়োজন ফুরালে কেটে পড়বে। এবং কেটে পড়েও। দু একজন ব্যাতিক্রম ছাড়া। তবে আমার সাথে সবার সমান খাতির ছিল। যদিও আমি অলমোস্ট সবার বিরুদ্ধে দুচারবার করে রিপোর্ট করেছিলাম। তারা ক্ষিপ্ত হযেছে কেউ। কেউ আমার জন্য কিছু সরবরাহ করতে চেয়েছেন, যাতে পরে আরো রিপোর্ট তার বিরুদ্ধে না হয়, বা না করি। যেহেতু সরবরাহ গ্রহণ করতে আমি অক্ষম তাই তারা পরে বিব্রত হয়েছেন। তবে এখনো আমার সাথে ভালো মোয়ামেলাত আছে নিশিতার সাথে। নিশিতা আপার অনেক বদনাম আছে, কিন্তু মানুষ হিসাবে উনি ভালো বলেই আমি জানি। এখনো তিনি খোঁজ খবর রাখেন। আমিও রাখি। ছাত্রদলের নতুন কেন্দ্রীয় কমিটির এই নেত্রীর দুরদর্শিতা আমাকে মুগ্ধ করে। তাই বোধ হয় ইডেনের অনেক নেত্রী সময়ের স্রোতে হারিয়ে গেলেও নিশিতা টিকে আছেন।


কিস্তি-৩৪ ::রিসিভারটা কানে তুলতেই নারী কণ্ঠ

তারেক আপনার ফোন। একজন সহকর্মী ফোনটা এগিয়ে দিলেন। রিসিভারটা কানে তুলতেই নারী কণ্ঠ। আমাকে কোনো নারীর অফিসে ফোন করার কথা নয়। 
ওপাশ থেকে জিজ্ঞেস করলেন, আপনি কি, তারেক মোরতাজা? হ্যাঁ, বললাম। উত্তরে বললেন, আপনার সাথে আমি দেখা করতে চাই। বললাম, চলে আসেন। তার আগে আপনার পরিচয়টা জানা দরকার। বললেন, আমার নাম সীমা। ঠিক আছে, আসেন। বললেন, কোথায় আসবেন। জানালাম সারাদিন আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকি। বিশ্ববিদ্যালয়েই আসতে পারেন। বিকালে হলে অফিসে। 
যথারীতি এক সকালে সীমা আসলো বিশ্ববিদ্যালয়ে। আমি টিএসটিতে ছিলাম। সেখানেই ওর সাথে দেখা। জানালেন ইডেনে পড়ে সে। রোকনের সিডি সম্পর্কে জানতেই তার আসা। সেখানে রোকনের সহযোগি হিসাবে একজনের নাম মানবজমিনে ছাপা হয়। ওই ছেলের সাথে সীমার অ্যাফেয়ার জাতীয় কিছু একটা ছিল। আমি খুবই আহত হলাম, আমার রিপোর্টের কারণে তার বয়ফ্রেন্ডের সাথে বিয়োগান্তক ঘটনা ঘটলো বলে। 
তবে রোকনের যে সে সহযোগি এবং তারা প্রায় একসাথে চলাফেরা করতো, সেটি আমি নিশ্চিত হয়েই লিখেছি। ও এসেছিল মূলত এটি নিশ্চিত হতে। আমি আমার সোর্সকেও তার সাথে পরিচয় করিয়ে দিলাম। এতে করে তার যে ভুল ধারণা ছিল, সেটা থেকে মুক্তি মিলল। 
বয়ফ্রেন্ডের সাথে ওর বিচ্ছেদ হলো। 
আমার সাথে এখনো ওর যোগাযোগ আছে। সীমা অদ্ভূত মেয়ে। হুমায়ূন আহমেদের বিভিন্ন বই পড়ে সে। সে সাথে বইয়ের বিভিন্ন চরিত্র ওর ওপর প্রভাব পেলে। একবার ও উপন্যাস লিখবে বলে ঠিক করল। চেষ্টাও করেছিল। সেটি দেখার জন্য আমাকে দিয়েছিল। হয়নি সেভাবে। সোজা জানিয়ে দিলাম। 
সীমা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাঝে মধ্যে আসত, আমার সাথে ওর একটা বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ছিল। চিঠি লিখতেও পছন্দ করতো। আমিও লিখতাম। তবে সবখানে ওর একটা হতাশা ছিল। যদিও নিজেকে শক্ত মনোবলের অধিকারী বলে পরিচয় দিত। কিন্তু আসলে সে হতাশা তা চেপে রাখতে পারত না। 
তবে সীমার যে দিকটা আমাকে মুগ্ধ করতো, সেটি হলো- কেউ কি পছন্দ করে, সেটি সে নিজে থেকে করতো। হয়ত প্রথম দিকে এটা কারো চোখে পড়ছে না, পরে পড়তো। পড়তেই হবে। আমি সাধারণত ইডেন কলেজের মেয়েদের এড়িয়ে চলতাম। 
আমার সাথে যে সব তরুণীর পরিচয় আলাপ বা বন্ধুত্ব ছিল তার বেশিরভাগই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের। এর বাইরে বুয়েট ও ঢাকা মেডিকেল এবং সাহাবুদ্দিন মেডকেলের দু চারজনের সাথে আলাপ ছিল। ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বলতে লাকী ছিল আমার একমাত্র ফ্রেন্ড। এখন একটি বিদেশি ব্যাংকে আছে। 
সীমা ইডেনে পড়াটা ছেড়ে দিয়েছিল। আমার ধারণা আমি ইডেন পছন্দ করছি না বলে এমনটা করেছে। এ ধারণা ভুলও্ হতে পারে। তবে এটাকে সত্য ধরে নিয়ে আমার মনে হয়েছিল, ও প্রেমে পড়েছে্। কিন্তু না, সে ধারণা ভুল ছিল। বরাবরই আমরা ভালো বন্ধু ছিলাম। সব সময়। এখনো আছি। তবে এখন যোগাযোগটা কম হয়। 
তবুও সীমা আমার ভালো বন্ধুদের একজন।

২৪ শে এপ্রিল, ২০১৩ বিকাল ৪:১২

কিস্তি-৩৩ ::লাশ রাস্তায় পড়ে থাকবে কুত্তাও ছোঁবে না

ক্যাম্পাসে হুল্লোড় পড়ে গেলা একটা সিডি নিয়ে। জগন্নাথ হলে এর সূচনা। তলে তলে এ খবর বঙ্গবন্ধু হলে চলে এলা। সবাই সিডি দেখছে, খুব মজা করে। কিন্তু এটা কোনো খবর না। আসল খবর হলো ২০০২ সালে বাংলাদেশী যুগলের এ রকম একটি সিডি । আরো জানা গেলো এ সিডির নায়ক ছাত্রলীগের বঙ্গবন্ধু হলের নেতা রোকন। 
প্রথম দুদিন খবরটা পাত্তা দিলাম না। তৃতীয় দিন ছাত্রলীগের এক নেতা আমাকে সিডির সন্ধান দিলেন । জানালেন ছাত্রলীগ নেতা রোকন তার প্রেমিকার সাথে শারিরীক সম্পর্ক করে তার ভিডিও করেছেন। সেটি লিকেজ হয়েছে। 
আমি এ খবরটি মতি ভাইকে জানালাম। মতি ভাই বললেন, নিউজ করেন, সাথে একটা সিডি যোগাড় করেন। আমি নিউজটা দিয়ে সন্ধ্যায় বের হলাম সিডির জন্য। এত দিন শুনছি সবার কাছেই আছে। আমি চাইতেই সবাই চুপসে গেলো। 
অবশেষে নিউ মার্কেটের উল্টো দিকে রাফিন প্লাজার একটি দোকান থেকে সিডি সংগ্রহ করে রাতে মানবজমিন অফিসে গেলাম। সেখান থেকে একটি স্ক্রিণশর্ট বের করে ছাপানো হলো। খবরটি প্রথম পৃষ্ঠার নিচের দিকে গেলো। পরের দিন মতি ভাই বললেন, ভালো করে ফলোআপ করেন। আমি যথারীতি কাজে নেমে পড়লাম। রোকনের সব খবর সংগ্রহ করতে লাগলাম, আর সেটি প্রকাশ শুরু হলো। আমার জানা ছিল না সে সময় বিরোধী দলে থাকা আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগ বিএনপি সরকারের সময় একটি ধর্ষণ বিরোধী সমাবেশের ডাক দিয়েছে। কাকতালীয়ভাবে সমাবেশের চার/ পাঁচ দিন আগে এ রিপোর্ট মানবজমিন ছাপা শুরু করলো। 
আমার সবচেয়ে বড় সুবিধা ছিল রোকন বঙ্গবন্ধু হলের স্টুডেন্ট ছিল। সে সুবাধে আমার তথ্য পেতে সমস্যা হলো না। রোকনের এক সময়কার সহযোগিরা আমাকে সবচেয়ে বেশি হেল্প করেছেন। আমি খবরের পর খবর করে যাচ্ছি। সর্বশেষে সিডির একটি পোস্টমর্টেমও করা হয়েছিল, সেটি আমি ও মাসুদুল আলম তুষার ভাই দুজনে মিলে করেছিলাম। এটি যেদিন লেখা হচ্ছিল সেদিন ছাত্রলীগের সভাপতি বাহাদুর বেপারী আমাকে ফোন করলেন। মতি ভাই, আমি, ফারাবী ভাই, সারোয়ার ভা্ই, জাহেদ ভাই সবাই এক টেবিলে বসে এ রিপোর্ট নিযে আলাপ করছিলাম। এ সময় ফোনটা করেন বাহাদুর ভাই। তিনি খুবই ক্ষিপ্ত হলেন। এবং সাধারণত তার এ রকম ব্যবহার হয় না, তিনি যে রকম ব্যবহার আমার সাথে করলেন। হুমকি দিলেন আমাকে। বললেন, লাশ রাস্তায় পড়ে থাকবে কুত্তাও ছোঁবে না। আমি এতে ভয় পাই না। কারণ সাংবাদিকতা করতে এসে ভয় পেলে চলবে না। আমি শুধু বললাম, ভাই মিথ্যা কিছু লিখছি কিনা বলেন। মতি ভাই সহ সবাই অবাক। বাহাদুর ভাইয়ের সুনাম সবার কাছে প্রায় করতাম। তাই তারা বললেন, এ কি হলো। মতি ভাই উঠে গেলেন। কিছুক্ষন পরে ফিরে এলেন। বললেন, নিউজ করেন। পরে মতি ভাই নিজেই নিউজটা লিখতে বললেন, তুষার ভাইকে। সে খবরটি প্রথম পৃষ্ঠায় ছাপাও হলো। 
পরের দিন ওই খবর দেখে সম্রাট ভাই বললেন, তাকে কেন জানানো হলো না। এ খবর ঠিক না। উনি বাহাদুর ভাইয়ের পক্ষ নিয়ে আরো কিছু কথা বললেন। যেখানে আমার সম্পাদক সাক্ষী। তার সামনে লাউড স্পিকারে এ হুমকি শোনা গেছে, এটাকে সম্রাট ভাই (বর্তমানে এটিএন নিউজে) বিশ্বাস করতে চাইলেন না। তাতে আমার কিচ্ছু যায় আসে না। 
তবে এখানে জানিয়ে রাখি, হুমকি দেয়ার ঘন্টাখানেকের মাথায় বাহাদুর ভাই আমাকে আবার ফোন করলেন। বললেন, সরি। মাথা ঠিক নাই। ধর্ষণ বিরোধী একটা সমাবেশ ডাক দিছিলাম। তোমার রিপোর্টের কারণে এটা হইতেছে না। তাই মাথা ঠিক ছিল না। এ জন্য মাথার গরম ছিল, কি বলতে কি বলেছি, কিছু মনে করো না। 
বাহাদুর ভাই এভাবে বললে, আর রেগে থাকা যায় না। পরে জানলাম সে সময়কার ছাত্র বিষয়ক দায়িত্বে থাকা ওবায়দুল কাদের ভাইকে মতিভাই ফোন করেছিলেন। কাদের ভাই সম্ভবত বাহাদুর ভাইকে সরি বলতে বলেছিলেন। সে যাই হোক।
বাহাদুর ভাইয়ের সাথে আমার সম্পর্ক বরাবরই ভালো ছিল। ছাত্রদলের বিরুদ্ধে আমার অব্যাহত রিপোর্টিং এর কারণে তারা সব সময় আমাকে উৎসাহ যুগিয়েছেন। ছাত্রলীগে আমার কাছের লোকজন আমাকে এ রিপোর্টের জন্য বাহবা দিয়েছেন। ছাত্রলীগ পরে অবশ্য রোকনের বিচার দাবি করে বিবৃতি দিতে বাধ্য হয়। তবে তার কোনো বিচার হয়নি। হবেও না। এটাই নিশ্চিত। 
টিকা:১: রোকনের রিপোর্ট করতে গিয়ে তার ছবি সংগ্রহ করতে গিয়ে বঙ্গবন্ধু হলে সমস্যায় পড়ে ছিলাম। পরে আমার বন্ধু ও হলের স্টাফদের সহায়তায় তা উদ্ধার করি। সে সময় হলের প্রভোস্ট ছিলেন নীল দলের জার্নালিজমের অধ্যাপক ড. গোলাম রহমান। তার কাছে ছবিটি নেয়ার জন্য অনুমতি চাইলে তিনি ছবিটি আমাকে যেন না দেয়া হয় তার সব ব্যবস্থা করলেন। তবে শেষ পর্যন্ত ছবিটি উদ্ধার করতে পেরেছিলাম, সেটি ছাপাও হয়েছিল।

২৩ শে এপ্রিল, ২০১৩ দুপুর ১২:২০

কিস্তি-৩২ ::এখনো চাই হলে হলে সহ অবস্থান এবং ছাত্রনেতাদের নিষ্পেষণ থেকে সাধারণ ছাত্রদের মুক্তি

হলের রাজনীতিতে গ্রুপিং থাকে, এখনো আছে। বঙ্গবন্ধু হল এর ব্যাতিক্রম ছিল না। আমাদের সময় এ গ্রুপিং খুব একটা চাঙ্গা না হলেও ভালাই ছিল। সোহেলের গ্রুপটা শক্তিশালী ছিল। এটা দু'টি কারণে প্রথমত ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সভাপতি আলিম ভাইয়ের সাথে ছিল। দ্বিতীয়ত সোহেল মানুষ হিসাবে দিলখোলা। আমার বন্ধু বলে বলছি না, আসলে সত্যি ঘটনা।
আকরাম ভাইও মানুষ ভালো। নামজুল ভাইও। তবে নাজমুল ভাই কোন গ্রুপে আছেন সেটা খোলাসা ছিল না অনেকের কাছে। আমরা যারা তার কাছের তারা জানতাম।
আকরাম ভাই হলের প্রেসিডেন্ট। উনি মূলত মনির ভাইয়ের গ্রুপের। মনির ভাই রাজনীতি থেকে দূরে সরে যাওয়ার পর সফিউল বারি বাবু গ্রুপ করতেন। 
নোয়াখালীর লোকের গ্রুপ করলেও নোয়াখালীর ছাত্রদের প্রতি তার খুব একটা সহানুভূতি ছিল বলে আমার জানা নেই। আকরাম ভাই নিজেকে একটু প্রগতিশীল ধাঁচের বলে প্রমাণ করতে চাইতেন, তাই অনেকটা ধরি মাছ না ছুই পানি টাইপের ছিলেন । 
সব মিলিয়ে সাধারন ছাত্রদের মধ্যে সোহেলের জনপ্রিয়তা ছিল। বিশ্বাসের জায়গায় আকরাম ভাই, নাজমুল ভাই এবং সোহেল তিন জনই ছাত্রদলের। এটা বলছি কারণ হলো ছাত্রদলের তিনটা ধারা। এক ধারা ছাত্রলীগ পন্থী, আরেক ধারা শিবির প্রশ্রয়ী, আরেক ধারা ছাত্রদলের। এ তিন ধারা মিলে ছাত্রদল। তবে ছাত্রদলের চেয়ে ছাত্রলীগের কমিটিতে ব্যাপক ভিত্তিক ছাত্র শিবির অবস্থান করে, যদিও ছাত্রলীগ সব সময় শিবির বিরোধী। কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিবির সবচেয়ে বেশি প্রশ্রয় পায় ছাত্রলীগের কাছ থেকে। সে কথা থাক। 
হলেই ফিরি। আমাদের হলে ছাত্রলীগের সহ অবস্থানের কথা আসলে হল ছাত্রদল এটা মেনে নেয়। সে সুবাধে হল ছাত্রলীগ হল সেক্রেটারি ফজলু ভাই হলে উঠলেন। আরো অনেককে হলে থাকতে আমি সহায়তা করেছি্। এর মধ্যে বন্ধু মোশাররফ, ১১৭ নম্বর রুমে থাকতো আমার রুমমেট তারেক সিকদার, আমাদের আরেক বন্ধু জিল্লু। 
এ রকম ছাত্রলীগের অনেকেই হলে থাকতো। তারা যেনো কোনো সমস্যায় না পড়ে সেটি আমি সব সময় খেয়াল রাখতাম, এতে অনেকে মনে করতো আমি ছাত্রলীগ করি। আসলে ঘটনা, তা না। আমি গ্রাম থেকে ঢাকায় এসেছি, আমি জানি গ্রামীন নিম্ন মধ্য বিত্ত পরিবারের এ সব ছেলেদের হলের বাইরে থেকে পড়াশোনা করা খুবই কঠিন। তাই তাদের হলে থাকার ব্যাপারে আমি সব সময় সোচ্চার ছিলাম। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, ছাত্রনেতা সবাইকে আমি এ ক্ষেত্রে সব সময় উৎসাহ যোগাতাম। 
আমার হলের নেতারা এ বিষয়ে আন্তরিক ছিলেন। কিন্তু এ আন্তরিক নেতারা মহাজোট সরকারের আমলে ক্যাম্পাসে মিছিল করতে পারেন না, হলে থাকতে পারেন না। এটা আমাকে কষ্ট দেয়। কিন্তু ওরা খারাপ করছে বলে ফের বিএনপি ক্ষমতায় এলে এরা তা করুক আমি চাই না। ছাত্রলীগের অনেক নেতাই ভালো চান, কিন্তু পারেন না। কারণ গ্রুপিং। বরিশাল, শরিয়তপুর মাদারীপুর আর ভেতরে আরো কত রকমের গ্রুপিং ছিল তখণ, এখনো আছে। এ কারণে সব সময় চাইলেও অনেকে অনেক কিছু করতে পারেন না। আমি এখনো চাই হলে হলে সহ অবস্থান এবং ছাত্রনেতাদের নিষ্পেষণ থেকে সাধারণ ছাত্রদের মুক্তি। জানি এটা কেবলই স্বপ্ন। তবে স্বপ্ন দেখতে বাধা নেই, কোনো একদিন এমন হবেই আমি এটা নিশ্চিত করে বিশ্বাস করি।

২২ শে এপ্রিল, ২০১৩ দুপুর ১:০০

কিস্তি-৩১ ::আমার অজ্ঞতা

হলের গল্পে ফিরি। সেকেন্ড ইয়ার শেষের দিকে আমাকে তিন তলায় উঠিয়ে দিলো ছাত্রদল নেতারা। তারেক ভাই ৩১৪ নম্বর রুমে আমার জন্য একটা সিট ফাঁকা করলেন। আমার লেপ তোষক নেয়া হলো। গিয়ে দেখি মাসুদ ভাইকে হটিয়ে আমার জন্য জায়গা করা হযেছে্ ।ওই রুমে ছাত্রদলের আরো ক'জন থাকতেন। কর্মী, নেতা না। তারা আমাকে ওঠানোর বিরোধীতা করেছিলেন, কিন্তু তা শোনা হয়নি। তাই তাদের মন খারাপ। এই মন খারাপের মধ্যে আমার একটু খারাপ লাগছিলো উঠতে। কিন্তু রুমের সব সদস্য আমাকে উঠতে বললেন, নইলে তাদের সমস্যা হবে। তাই আমি একান্ত নিরুপায় হয়ে উঠলাম। সকালে আমার বেডিং পত্র ১১৭ থেকে ৩১৪ নম্বর রুমে গেলেও আমি উঠেছি রাতে। 
সবার সাথে আলাপ হলো। 
আমি এ রুমে অসুবিধা নয়, সুবিধা হতে পারি সেটি বোঝানোর চেষ্টা করলাম। দরজার পাশের সিটটি আমার জন্য বরাদ্দ হলো। এতে আমার আপত্তি নেই।
এখানে বলে রাখি ২০০০ সালেই হলে আকমার সিট হয়ছিল। সে সময় ছাত্রলীগের আধিপত্য। আমার জন্য ৩১৬ নম্বর রুম বরাদ্দ করা হলো। সেটা করেছেন চামবাজ নীল দলের সদস্য বায়তুল্লাহ কাদেরী। সে আমাকে জিজ্ঞেস করলো, কোন রুমে উঠতে চাই। আমি যেহেতু নতুন এবং নিয়ম মাফিক হলে উঠার জন্য আবেদন করেছি তাই এ সব ঝামেলা সম্পর্কে জানতাম না। আমরা অজ্ঞতার সুযোগ নিয়ে বায়তুল্লাহ কাদেরী ওরফে চামবাজ কাদেরী বলল, ওকে ৩১৬ নম্বর রুমে এলট দেন। অন্য শিক্ষকরা তাই করলেন। পরে জানলাম ওই রুম আর্মস ক্যাডারদের দখলে। ওরা সেখানে রাতভর হল পাহারা দেয়। বাধ্য হয়ে আমার হলে নিয়ম মাফিক ওঠা হয়নি। পরে ছাত্রলীগ নেতাদের মারফত হলে উঠে নেমে পড়ার গল্প আগেই বলেছি।
মিস্টার কাদেরী বাংলার টিচার। সব সরকারের আমলের সুবিধাভোগি।হাউস টিউটর হলেও ছাত্রদের কল্যাণে এ জ্ঞান পাপীকে পাওয়া যায় না। 
হলের ৩১৪ নম্বর রুমের একটি বেডে আমি সিঙ্গেল থাকছি। আমার ৩১৪ নম্বর রুমে ওঠাটাকে অনেকে অনেক ভাবে দেখেছেন। কিন্তু মাস খানেকের মধ্যে পুরো ব্লকের সবাইকে জয় করে নিয়েছিলাম। একই ব্লকে আমরা তিন সাংবাদিক- আমি ছাড়াও যাকারিয়া এবং সুজন মেহেদী (এখন ইনডিপেনডেন্ট টিভিতে) থাকতাম। তাছাড়া আরো অনেকে ছিলেন। সুজনের রুমে থাকতে শরীফ ভাই। ডিবেটর। যাকারিয়ার রুমে গাঙ্গুলি জাহিদ (বর্তমানে জার্মান প্রবাসী) এদের সবার সাথেই আমার ভালো সম্পর্ক। ব্লক জুড়েই আমরা হৈ হুল্লোড় করি, আনন্দ করি। 
ভালেই কাটছিল হল লাইফ। তবে হলের খাবার নিয়ে সমস্যা হতো। ক্যান্টিনের খাবার খেতে খেতে অসহ্য হয়ে উঠছিলাম। সন্ত্রাসী ছাত্রদল নেতারা হল ত্যাগের পর মেধাবীদের একাংশ নতুন কমিটির অপেক্ষায়। কমিটি গঠনের পর আমি হলের ছাত্র হিসাবে সাধারণ ছাত্রদের সমস্যার দিকে কমিটির নজর দিতে বললাম।যদিও কাজটি আমার নয়। খাবারের মানোন্নয়নের জন্য কিছু পদক্ষেপ নিছিলাম। সেটি নেপথ্যে থেকে। সামনে ছিল হল ছাত্রদলের সভাপতি আকরাম, সেক্রেটারি নাজমুল ও সাংগঠনিক সোহেল। সবাই মিলে বসে আমরা হলের ক্যান্টিনের খাবারের মানোন্নয়ন এবং মেসের খাবার আরো ভালো করার উদ্যোগ নিলাম। সে সময় হলের খাবারের সুনাম ছিল। মাঝে মধ্যে যে সমস্যা হতো না তা কিন্তু নয়। তবে তুলনামূলক বঙ্গবন্ধু হলের খাবার ভালো ছিল। ফাও খাওয়াটা বাকিতে রূপান্তর হলওে তা উল্লেখ করার মত না। বঙ্গবন্ধু হলের ভাগ্যটা ভালো বলতে হবে। এখানে ছাত্রলীগের আমলে আজিম ভাই থাকতেন। অত্যন্ত সৎ ও সজ্জন মানুষ। তার সময়ও হলের খাবারের মান ভালো রাখার চেষ্টা ছিল। হল মেসের জন্য সে সময় তিনি একটি ফ্রিজেরও ব্যবস্থা করেছিলেন। আজিম ভাই সে সময়কার ছাত্রলীগের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। গড়পড়তা ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে বেমানান আজিম ভাই রাজনীতিতে অনেক দিন নিষ্ক্রিয় ছিলেন। এখনো ততটা সক্রিয় নন, লুটপাটে তিনি কোনো ধারে কাছে নেই। আমার দেখা সৎ রাজনীতিকদের একজন আজিম ভাই। আমি তাকে তাই সম্মান করি। একজন বড় ভাই হিসাবে তাকে আমার সব সময় ভালো লাগে, দেখা হলেই ছুটে যাই। উনিও আসেন। ভালো লাগে।

২১ শে এপ্রিল, ২০১৩ বিকাল ৩:৫৩

কিস্তি-৩০ ::বাকির টাকা শোধ না করেও অনেকে মন্ত্রী প্রতিমন্ত্রী এমপি হয়ে আছেন। তাতে তার কোনো আফসোস নেই।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যারা রিপোর্ট করেন, তারা সবাই মাঠে থাকেন, এমনটা কম হয়। একটু সিনিয়র হলে বাইরে আড্ডায় অভ্যস্ত হয়ে ওঠেন কেউ কেউ। আমি এ বৃত্তের বাইরে ছিলাম। 
প্রতিদদিন সকালে ক্যাম্পাসে বের হয়ে রাতেই হলে ফিরতাম। এর মধ্যে ক্লাশ, পরীক্ষা এবং রিপোর্ট সংগ্রহ সবই চলতো। আমার কাছে এখনো এ দিকটা উপভোগ্য মনে হয়। ঘটনা স্থলে হাজির থাকলে যে কোনো বিষয়ে ভালো রিপোর্ট হয়্। এটি আমি আমার সাংবাদিকতা জীবনে সব সময় মেনে চলি। এখনো অবশ্য সেভাবে হয় না। তবুও চেষ্টা থাকে। 
বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের চারজন মানুষের সাথে আমার দিনে একবার হলেও দেখা হতো। কদাচিৎ তাদের দেখা না দিয়ে থাকতাম। তারা চারজনই আমার কাছে ভিন্ন ভিন্ন কারণে অসাধারন মানুষ। 
সবচেয়ে প্রিয় মানুষ আশরাফ ভাই। তার দপ্তরে ঢুঁ না মারলেই নয়্। বিশ্ববিদ্যালয়ের পাবলিক রিলেশনের ডিরেক্টর তিনি। এত হাস্যোজ্জ্বল ও দু:শ্চিন্তামুক্ত ভালো মানুষ ক্যাম্পাসে দ্বিতীয়টি দেখিনি। আমার বিশ্ববিদ্যালয রিপোর্টিং জীবনে এত সৎ এবং সাহসী মানুষ দেখা হয়েছে কম। 
আশরাফ ভাই বয়সে আমার বাবার সমান বা তারো বেশি হবেন, কিন্তু তার অফিসে গেলে যেভাবে গ্রহণ করতেন, আমি সব সময় তার কাছে এ জন্য কৃতজ্ঞ। আমার মত একজন ছোট সাংবাদিকদক তিনি যেভাবে সঙ্গ দিতেন, সহযোগিতা করতেন তা ভোলার নয়। 
আমরা বন্ধুরা অনেকে তার অফিস থেকে ফোন করতাম। কখনো বিরক্ত হতেন না। কারণ রিপোর্টের প্রয়োজনে প্রতিদিনই আমাদের অনেক ফোন করতে হতো। সব ফোন মোবাইল থেকে করা সম্ভব হতো না, কারণ সে সময় মিনিট প্রতি মোবাইল বিলি ছিল ৬ টাকা ৯০ পয়সা। বলছি ২০০১, ২০০২, ২০০৩ সালের দিকের কথা।
আশরাফ ভাই কখনো ব্যাক্তিগত কোনো বিষয় নিয়ে আবদার করেননি। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভালো চান সব সময়, সব ভিসির সময়্য়। তার কাছে বিশ্ববিদ্যালযের সুনাম আগলে রাখাটাই মুখ্য।তাই নেগেটিভ কোনো তথ্য তার কাছ থেকে কখনোই পাওয়া যায়নি।বিশ্বিবিদ্যালয়কে তিনি খুবই ভালোবাসেন। মানুষ হিসাবে এক কথায় অসাধারণ আশরাফ ভাই। 

দ্বিতীয় যে মানুষটিকে আমার ভালো লাগতো এবং আমি যার দপ্তরে প্রায়ই যেতোম তিনি আলমগীর ভাই। টিএসসির পরিচালক। আমার সব সময়কার কাজের সহযোগি ছিলেন। আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে রিপোর্টার ছাড়া্ও ঢাকা ইউনিভার্সিটি টুরিস্ট সোসাইটির প্রেসিডেন্ট ছিলাম, যে কোনো সময় তার কাছে গেছি, হাসি দিয়ে আপন করে নিয়েছেন, প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করেছেন। সব সময় কাজের উৎসাহ দিযেয়েছন। টিএসরি দিলশাদ ম্যাডামও হেল্প করতেন। ভালো লাগতো তাকে। 
বিশ্ববিদ্যালয়ে যারা আসেন বা না আসেন, যারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে জানেন তারা মধুর ক্যান্টিনও চিনেন বা এ নাম শুনে থাকবেন। এটি এখন পরিচালনা করছে অরুণ দা। উনি কোন দলের সমর্থক সেটি আবিষ্কার করার রীতিমত গবেষণার বিষয়। তার কাছে সব দলের নেতারা আশ্রয় পান, বাকি খান। সে বাকির টাকা শোধ না করেও অনেকে মন্ত্রী প্রতিমন্ত্রী এমপি হয়ে আছেন। তাতে তার কোনো আফসোস নেই। অরুণ দা বাকির খাতাটা লুকিয়ে রাখেন। 
একবার আমাকে অ্যাসাইন করা হলো মধুর ক্যান্টিনের বাকির হিসাব নিয়ে একটা রিপোর্ট করতে। আমি ক্যাম্পাসের অনেক সিনিয়র রিপোর্টারের সাথে আলাপ করলাম। সবাই বললেন, এটা অসম্ভব। 
অসম্ভবকে সম্ভব করাটাই আমার কাজ। তাই চেষ্টা চালিযে যাচ্ছি। কিন্তু অরুণ দা ধরা দেন না। পরে বললাম একটা সিলিং বলেন। শেষ পর্য়ন্ত তাকে সিলিংয়ে রাজি করাতে পেরেছিলাম। এবং এ রিপোর্ট মানবজমিন লিড করেছিল্। ব্যাপক সাড়া পেযেছিলাম। 
এ রিপোর্ট প্রকাশের পরের বছর মধু দা'র মৃত্যুবার্ষিকী অনুষ্ঠানে এসে অনেক সাবেক ছাত্র নেতা এ প্রসঙ্গ টেনেছিলেন। ভালো লেগেছে এত বড় বড় নেতাদের চোখে পড়েছে এই রিপোর্ট, সে জন্য। 
তবে বাকির টাকা নিয়ে কোনো মাথা ব্যথা নেই অরুণ দা'র। আমি নিজেও বাকির একজন তালিকাভুক্ত। মধুর ক্যান্টিনের মিষ্টি ও বাটার ব্রেড খেতাম বেশি। অরুণ দা দেখা হলেই এগিয়ে আসতেন, দাদা কি খবর? দেখি না কেন? অথচ দুদিন আগেও তার সাথে দেখা হতো। প্রতিদিন একবার অন্তত মধুতে যাওয়া হত। সব সময় উনি থাকতেন না বলে দেখা হতো না। মানুষকে আপন করে নেসয়ার একটা অদ্ভূত ক্ষমতা আছে তার।

চতুর্থ জন গোপাল দা। ডাকসু সংগ্রহ শালার দায়িত্বে আছেন। ভালো মানুষ্। তবে আপনি কোন দল করেন, বা করতে পারেন, বা সাপোর্ট করতে পারেন সেটি বুঝে কথা বলেন। অনেকটা ঝোপ বুঝে কোপ মারার মত। আবার আপনি কোন পত্রিকার সাংবাদিক, সে হিসাবে তার কথা বা আলোচনা চলবে। তবে আদতে ভালো মানুষ গোপাল দা। সব সময় স্মৃতি ধরে রাখবার জন্য ছবি তোলেন। 
বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক পুরনো ও ভালো স্মৃতি আছে তার কাছে। তার দপ্তরে প্রায় যেতাম। তবে মানবজমিনে থাকতে এক রকমের খাতির ছিল, পরে খাতিরের পরিমাণটা বদলে গেছে। তবুও দেখলে চিনেন, এগিয়ে এসে কথা বলেন, এটাইবা কম কিসে। ধন্যবাদ গোপাল দা।

২০ শে এপ্রিল, ২০১৩ দুপুর ১২:৩৮

কিস্তি ২৯ ::জবরদস্তিমূলকভাবে অনেক শিক্ষক নারী সঙ্গ উপভোগ করতে চান

শিক্ষকরা পিতৃ তুল্য। এ কথা আমরা ছোটবেলায় শুনে এসেছি। তবে কিছু শিক্ষক তাদের সে সম্মান ধরে রাখতে পারেননি। এটা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আঙ্গিনায় এসে দেখলাম। নারীর শরীরের ভাগ সবাই চান, কেউ পান, কেউ পান না বলে আফসোসস করেন। কিন্তু জবরদস্তিমূলকভাবে অনেকে সে সঙ্গ উপভোগ করতে চান। আর সেখানে আমার আপত্তি। 
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালযের সমাজ বিজ্ঞানের একজন সাবেক শিক্ষক, যিনি সুদর্শনও বটে, তার হাতে অনেক ছাত্রী নিপীড়নের ঘটনা ঘটেছে। এ নিয়ে তদন্তও হয়েছে। তবে সব কথার শেষ কথা পুরুষতান্ত্রিক সমাজে নারীর প্রতি লোভ করা , কিংবা তাকে নিষ্পেষণ করার একটা অলিখিত অধিকারের কথা আমরা মেনে নেই। সে জন্য এর বিচার হলেও তা সাময়িক। 
সমাজ বিজ্ঞানের ওই শিক্ষকের তেমন উল্লেখযোগ্য কোনো শাস্তি হয়নি। এ নিয়ে এখনো বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যাপক আলোচনা আছে। বলছি ২০০০ সালের দিকের কথা।
২০০২ ও ২০০৩ সালের দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের অনেক যৌনাচার সম্পর্কে জানার সুযোগ হয়েছে। মেঘলা দিনের এক দুপুরে জার্নালিজম ডিপার্টমেন্টের এক অধ্যাপক ছাত্রীকে জড়িয়ে ধরে চুমু খেয়েছেন। আরো কিছু করার চেষ্টা করেছেন। মেয়েটি লিখিতভাবে সে সময় এটা ভিসি স্যারকে জানান। এ রিপোর্ট লিখতে বসলে ওই ছাত্রীর সহপাঠি আমার বন্ধু ও সে সময়কার তুখোড় সাংবাদিক ইশতিয়াক(বর্তমানে বাংলানিউজরে স্পেশাল করেসপনডেন্ট) ও মোশতাক (এখন প্রথম আলোতে ) বলেছিল, মেয়েটিরও সমস্যা আছে। পরে সাংবাদিক সমিতির সদস্য হওয়ো একজন সদস্যের সাথেও তার সম্পর্কের কথা জানা যায়। 
তাই প্রথম দিন আমি রিপোর্টটি দুপক্ষকে দায়ি করে করি। কারণ আমার বন্ধু সাংবাদিকরা বলেছির, নম্বরের জন্য এমনটা ঘটতে পারে। ঘটতে পারে মানে ঘটে। অনেক ছাত্রীদের না শুলে নম্বর বের হয়না স্যারের হাত থেকে। এমন অনেক স্যার সে সময় যেমন ছিলেন, এখনো আছেন। 
কিন্তু পরের দিন ওই অধ্যাপক নিজেই এর প্রতিবাদ করেন। তিনি নিজেকে নির্দোষ দাবি করে একটা ষড়যন্ত্র হিসাবে উল্লেখ করেন। পরে আমি নিপীড়িত ছাত্রীটির পরিবারের সাথে কথা বলি এবং ভিসি স্যারের দপ্তরে জমা হওয়া অভিযোগের একখানা কপি হাতে পাই। সেটি দিয়ে রিপোর্ট করা শুরু করি। 
মানবজমিন থেকে আমাকে সাযযাদ কাদির ভাই বললেন, এ ঘটনার পেছনে লেগে থাকতে হবে। শেষ দেখা চাই। আমারো মনে হযেছে একটা ঘটনার দৃষ্টান্তশূলক শাস্তি হলে অন্য শিক্ষকরা এখান থেকে সরে আসবেন। সে সময় এ ঘটনার তদন্ত করছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক সৈয়দ রাশিদুল হাসান। 
দল মত নির্বিশেষে সবার কাছে তার গ্রহণযোগ্যতা ভালো। 
আমি নিবিড়ভাবে এ নিউজ ফলো করছি। শেষ পর্যন্ত জার্নালিজমের ওই অধ্যাপকের শাস্তি হয়েছে। কিন্তু সেটি উল্লেখ করারর মত নয়। কারণ এখানেও পুরুষতান্ত্রকি দৃষ্টিভঙ্গি। যদিও জার্নালিজম ডিপার্টমেন্টে নারীবাদী অনেক শিক্ষক রয়েছেন, কাউকে এ নিয়ে তেমন কথা বলতে দেখলাম না। 
সে সময় যেটুকু সহযোগিতা করেছিলেন, তা আহাদুজ্জামান মোহাম্মদ আলী স্যার। 
জার্নালিজম ডিপার্টমেন্টে ১ জন বাদে সবাই আওয়ামী লীগ মনা টিচার। একজন যার কথা বলছি তিনি মান্নান স্যার, ধরে নেয়া হয় তিনি সাদা দল। মানে বিএনপি। আসলে উনি কি, তা নিজেই জানতেন না। 
তবে নীল দলের এ ডিপার্টমেন্টে শিক্ষকরা আবার দুভাগে বিভক্ত। তাতে কিছু যায় আসে না। তবে এখানে যৌনাচারে লিপ্ত ছিলেন আরো দু একজন শিক্ষক। তাদের একজন ক্ষুদ্র জাতি সত্ত্বা নিয়ে কাজ করেন। পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের একজন নেতা তার নাম উল্লেখ করে বলেছিলেন, তিনি নাকি তাদের নারীদের ভোগ করেন। একই অভিযোগ তিনি করেছেন একই বিষয়ে কাজ করা ইতিহাসের এক অধ্যাপকের বিরুদ্ধে। এস অদ্যাক্ষরের ওই ক্ষুদ্র জাতি সত্ত্বার বৃহত নেতা আমাকে বলেছিলেন, 'এরা গবেষণার নামে ভণ্ডামি করে, কচি মাল খাওয়ার ধান্ধা।' ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ থেকে পাস করে যাওয়া ওই নেতা কতটা কষ্টে এ কথা বলেছেন, সেটি উপলব্ধি করতে আমাকে আরো সময় নিতে হয়েছে। 
ছাত্রীদের প্রতি আরো অনেক শিক্ষকের সমস্যা ছিল। তবে অনেকে এখন 'মরহুম'। তাই তাদের বিষয়ে বলাটা ঠিক হবে না। প্রাণী বিদ্যা ডিপার্টমেন্টর একজন অধ্যাপক তার এক ছাত্রীকে জড়িয়ে ধরে ব্যাপক ঝামেলা পাকিয়েছিলেন। ওই ছাত্রী লিখিতভাবে বিশ্ববিদ্যালয কর্তৃপক্ষকে জানালে আমি খবর পাই। চিঠির একটি কপিও পেয়েছিলাম। তাতে যে বর্ণণা দেয়া তা শুনলে শিক্ষকদের প্রতি কারো আর আস্থা থাকবে না। 
ছাত্রীদের সাথে যৌনাচরণ বা নিপীড়নের তালিকাতে ফার্সি ডিপার্টমেন্টও ছিল। অতি অপরিচিত এ ডিপার্টমেন্টের এক অধ্যাপকের বৌ তার স্বামীর বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। কিন্তু এ সব ঘটনার সঠিক সুরাহা হয়নি। 
বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে শিক্ষকরা এ ধরণের আচরণে জড়িয়ে পড়েছেন, এর প্রমাণ অনেকের কাছেই আছে।
বিশ্বববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা জ্ঞানী মানুষ তাই প্রতিভার বিকৃতি হিসাবে এ সব ক্ষমা করে দেয়া হয়। কিন্তু এ সব ক্ষমা কিংবা বিচার ছাড়া দায় মুক্তির কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ে এ ঘটনা বাড়ছে বৈ কমছে না। বিস্তারিত আর কিছু বলতে চাই না। এ পর্বটি লিখতাম না। কিন্তু অনেকেই বলেছেন, ছাত্রদের টা লিখলে, শিক্ষকরা বাদ যাবে কেন? তাইতো। বাদ যাবে কেন? তাই স্বল্প পরিসরে কিছু লিখলাম। পৃথিবী বড়ই বিচিত্র, অভিজ্ঞতা আরো বিচিত্র এবং নির্মম। 
সামনের পর্বে অন্য গল্প। আপাতত শরীর বিষয়ক গদ্য বাদ। 


১৯ শে এপ্রিল, ২০১৩ বিকাল ৪:৫১