কিস্তি-৩৮:শেষ পর্যন্ত তালা খোলা হলো

২০০২ সালের শুরুর দিকের ঘটনা।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয সাংবাদিক সমিতিতে তালা। বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টাররা গাছতলা, হাটতলা আর ক্যান্টিন- ফ্যান্টিনে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। এ নিয়ে কারো কোনো কথা নেই। আমি বিষয়টি নিয়ে সিনিয়রদের সাথে কথা বলি, জানাই একটা উদ্যোগ জরুরী। সমিতি খোলা থাকাটা খুবই দরকার। সবাই একমত। কিন্তু কাজটা করবে কে? 

সাংবাদিক সমিতি তখন মোটা দাগে দুভাগে বিভক্ত। দপক্ষই ছাত্রলীগ সমর্থক। এক গ্রুপের নেতা মামুন ভাই। জনকণ্ঠের রিপোর্টার ছিলেন। এখন নিই ইয়র্কে বাংলাদেশের প্রেস সেক্রেটারি। আরেক গ্রুপ খোকন ভাইয়ের। উনিও আমেরিকা থাকেন। সেখানে চ্যানেল আইয়ের প্রতিনিধি। 

কিন্তু দুপক্ষের সহযোদ্ধারা সমিতি অফিস খুলতে চাইলেও পারছিলেন না। শেষে সমিতির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য খায়রুল আনোয়ার মুকুল ভাইয়ের হস্তক্ষেপে অফিসের তালা খোলা হলো। সবার মাঝে প্রাণ ফিরে এলো। সারা দিন ক্লাশ, অ্যাসাইনমেন্ট, সোর্স ম্যান্টেইন শেষে সবাই বিকাল বেলা সাংবাদিক সমিতির দপ্তরে আসতেন। বেশ আড্ডা জমতো। সিনিয়র জুনিয়র সবাই মিলে আ্ড্ডায় মশগুল হতেন । গ্রুপিংয়ের নোংরা দিকটা আস্তে আস্তে আড়াল হতে থাকলো। মুকুল ভাই সে সময় জনকেণ্ঠ ছিলেন। এখন এনটিভির চিফ নিউজ এডিটর। 

সাংবাদিক সমিতির সেই সময়কার এই গ্রুপিং সঙ্কট পরে আরো প্রকট হয়েছিল। বলা হয়ে থাকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির ৩১ সদস্য হলে গ্রুপ ৩২ টা। আসলেই তাই। এখানে সবাই সবাইকে খুব 'বুঝদার' মনে করেন। এর সাথে অন্য কেউ একমত হতে পারেন। আবার নাও হতে পারেন। 

এই গ্রুপিং যন্ত্রণার ভেতরেও সবাই সবার সাথে সদ্ভাব বজায় রাখার চেষ্টা করছেন। আমাদের আগে সমিতির গ্রুপিং নিয়ে একে অন্যকে অপমান করার ঘটনাও ঘটেছে বলে শুনেছি্। পরে অবশ্য আমাদের এ সব দেখতে হয়নি। সে জন্য শুকরিয়া আদায় করছি।

আমি বরাবরই গ্রুপিং রাজনীতিতে ছিলাম, তবে সব গ্রুপের রিপোর্টারদের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখার চেষ্টা আমার ছিল। এখনো আমি সেটি অব্যাহত রাখার চেষ্টা করি। যদিও সাংবাদিক সমিতির আমি কোনো বড় কর্তা হিসাবে নির্বাচিত হইনি, তবে সব সময় আলোচনায় ছিলাম। এখনো অনেকে আমাকে চেনেন এতেই আমার তৃপ্তি। 

২৫ শে মে, ২০১৩ দুপুর ১:৩৫

কোন মন্তব্য নেই: