কিস্তি-২৭ ::ছাত্রদল ও ছাত্রলীগের পান্ডা ক্যাডাররা অনেক ভালো

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা কতটা দলবাজ হতে পারেন, সেটা নিজের চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা যাবে না। এদের সাথে চামবাজ শব্দটাও জুড়ে দেয়া জরুরী। নানাভাগে বিভক্ত শিক্ষক রাজনীতি। বামরা গোলাপী, আওয়ামী লীগ নীল, জামায়াত বিএনপি সমর্থকরা সাদা। 
আসলে রঙ্গের আড়ালে সবাই ধান্ধাবাজ। পদ পদবি ভাগানো আর শিক্ষক তকমা গায়ে মাখিয়ে কন্সালটেন্সি করাই এদের কাজ। কীভাবে আগেভাগে বাসা- প্রমোশন পাওয়া যাবে তার ধান্ধা ফিকির। 
যাকগে সে কথা। যারা জানে না তাদের জন্য এখানকার রাজনীতির একটা ধারণা লাগবে। এখানে দল মত নির্বিশেষে একটা আছে এমাজ গ্রুপ। এটা সাদা দলের সাবেক ভিসি অধ্যাপক ড. এমাজউদ্দিন আহমদের গ্রুপ। আরেকটা নোয়াখালী গ্রুপ। এখানে দল মত নির্বিশেষ আছে। এর বাইরে সাদা দলে জামায়াত পন্থীরা এক ভাগ। আর তাদের বিপরীতের আরেকভাগ। 
জামায়পন্থীদের নেতা ছিলেন আমিনুর রহমান মজুমদার। বিএনপি পন্থীদের নেতা ওয়াকিল আহমদ। 
নীলদলের নেতা মেসবাহউদ্দিন স্যার থাকলেও সামনের সারিতে অনেককে দেখা গেছে। গোলাপী দল নিরীহ টাইপ ভাব নিয়ে বসে থাকে। নীতি কথা বলে। সুবিধা পেলে আলাপ বাদ দিয়ে টিচার্স লাউঞ্জে পত্রিকা পড়ে। 
শামসুন্নাহার হলের ঘটনার পর সাদা দলের একাংশ নিজেদের ধোয়া তুলসি পাতা প্রমাণের চেষ্টা করছিলেন। তবে শেষ রক্ষা হয়নি কারো। 
নীল দলে সবাই একাট্টা। শিক্ষক সমিতির একদিনের মিটিংয়ের কথা বলি। ক্লাবে মিটিং হচ্ছে। আমরা ক'জন এটি ফলো করছি। দেখলাম রাত ৮ টার দিকে মিটিং থেকে অধ্যাপক এ কে আজাদ চৌধুরী বেরিয়ে আসলেন। পাশের টেনিস কোর্টে একজনের সাথে মোবাইলফোনে কথা বলছেন। বার বার আপা আপা বলছেন। বুঝতে পারলাম আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর সাথে আলাপ হচ্ছে তার। কী কর্মসূচী নেয়া যায়, সমিতির তরফে তা নিয়ে আলোচনা করছিলেন তিনি। 
আমি খুবই অবাক হলাম, তার মত একজন প্রাজ্ঞ টিচার নেত্রীর কথার ওপর শিক্ষক সমিতির কর্মসূচী নির্ধারণের চেষ্টা করছেন দেখে। তবে নীল দলে অনেক নেতা ছিলেন , যারা অতটা দলবাজ ছিলেন না। তাদের মধ্যে অধ্যাপক শরিফ উল্লাহ ভূইয়া কিংবা নাসরিন ম্যাডামের কথা বলা যায়। নাসরিন ম্যাডাম বিএনপি জামায়াত জোট সরকারের সময় ফজিলাতুননেসা মুজিব হলের প্রথম প্রভোস্ট হয়েছিলেন। সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো ভিসি হয়েছেন। তাকে অতটা দলবাজি করতে দেখিনি। যতটা করেছেন অধ্যাপক একে আজাদ, আখতার হোসেন কিংবা সিরাজুল ইসলামরা।মুখোশের আড়ালে থাকতেন আরেফিন স্যার। এখন অবশ্য সে মুখোশ খুলে গেছে। 
শিক্ষক সমিতির মিটিংয় প্রায় কয়েকমাস নিবীড় ভাবে ফলো করার সুযোগ হযেছিল, সেখানে শিক্ষরা নিজের দলের পক্ষ নিয়ে আরেকজনের দিকে তেড়ে যেতেও দেখেছি। তবে এ ক্ষেত্রে বাম ঘরাণার শিক্ষকরা ব্যাতিক্রম। তারা সব সময় ধরি মাছ না ছুই পানি। 
নীল ও সাদার মধ্যে বরাবরই আগ্রাসী মনোভাব।। বরং এদের তুলনায় মধূর ক্যান্টিনে ছাত্র দল ও ছাত্রলীগের পান্ডা ক্যাডাররা অনেক ভালো। এ কথা আমি না কেবল, সবাই স্বীকার করবেন। 

ছাত্র নেতাদের নারী শিকার নিয়ে পরের পর্ব

১৭ ই এপ্রিল, ২০১৩ বিকাল ৪:৩৭

কোন মন্তব্য নেই: