কিস্তি-১৫ ::যাকেই ফোন করি সবাই একটু বিজি বিজি ভাব ধরে

বিনোদন সাংবাদিকতা শুরুর পর আমার কাছে মনে হলো চারিদিকে অন্ধকার। আলো কোথায়? কারো কোনো নম্বর নেই। কীভাবে লিখবো, কী প্রশ্ন করবো এ সব নিয়ে কোনো রকমের সহযোগি দেখলাম। ঢাকায় আমার বন্ধুদের মধ্যেও এমন কেউ ছিল না। পত্রিকার নির্বাহি সম্পাদকের কাছেও সবার নম্বর নেই।দু একজনের নম্বর দিয়ে বললেন, যোগাড় করে নেন। তাই করলাম। অনেক কষ্টে বিভিন্ন জনের কাছ থেকে নম্বর যোগাড় করে রিপোর্টিং শুরু করলাম। 
যাকেই ফোন করি সবাই একটু বিজি বিজি ভাব ধরে। আসলে সে সময় এতটা বিজি হবার মত কোনো কারণ ছিল না। আমার ফোনে গলাটা ভারি শোনায়। বয়স্ক বয়স্ক মনে হয়। তাই অনেক সিনিয়র আর্টিস্ট আমাকে ফোনে কথা বলে অ্যাপয়েন্টমেন্ট দিলেও সামনাসামনি দেখে অনেকে আশাহত হন। 
২০০১ সালের ঘটনা। শেখ সাদি খানের বাসায় গেলাম তার ইন্টারভিউ করতে। দরজা খুলে দিয়ে তিনি বললেন, আপনি? বললাম আমি তারেক, প্রিয়মুখের চিফ রিপোর্টার। আমাকে বসতে বলে ভেতরে চলে গেলেন। কিছুক্ষন পর এসে বললেন, আপনার সাতেই কথা হযেছে্ বললাম জ্বি। কিছুক্ষন চুপ করে থেকে বললেন, আপনি প্রশ্নগুলো লিখেন, আমি উত্তর দেবো।
আমি চুপচাপ বসে প্রশ্ন লিখলাম। তিনি ভেতর থেকে ঘুরে এলেন। প্রশ্নগুলো হাতে নিয়ে ফের ভেতরে চলে গেলেন। কিছুক্ষন পর ফিরে এসে, বললেন, প্রশ্ন করো, আমি রেডি। শেস পর্যন্ত তিনি ইন্টারভিউ দিলেন এবং রাস্তা পর্যন্ত এগিয়ে দিয়ে যেতে যেতে বললেন, কিছু মনে করো না। অনেকে বোঝে না, ইন্টারভিউ নিতে চলে আসে, তাই তোমাকে প্রথমে ভুল বুঝে ছিলাম। সে জন্য দু:খিত। তার এমন ব্যাবহারে আমার চোখে পানি চলে আসলো। একজন মহৎ শির্পী যে কত বড় কলিজাঅলা লোক সেদিন বুঝতে পারলাম। আমাকে উনি বললেন, পড়াশোনাটা জারি রেখো। ভালো করতে পারবে। 


০১ লা এপ্রিল, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:২১

কোন মন্তব্য নেই: