সুখ অসুখের গল্প:: ৫:: হলি সাইট, ধর্মীয় পর্যটন।




 সুখ অসুখের গল্প:: ৫:: হলি সাইট, ধর্মীয় পর্যটন।


প্রচণ্ড গরম। জুম্মার নামাজ পড়ার জন্য দিল্লি জুমা্ মসজিদে যাচ্ছি। আমরা যদিও বড় মসজিদকে জামে মসজিদ বলি, এখানে দিল্লির সবচে বড় মসজিদের নাম জুমা মসজিদ।  কয়েকশ বছরের পুরনো মসজিদ।  যে সময় মসজিদ  তৈরি হয়, সে সময়  বিদ্যুতের এত অগ্রগতি ছিল না। তাই সহজেই যে প্রকৃতির আলো বাতাস  আসা যাওযা করতে পারে, সে ভাবেই তৈরি করা। এর নিমাণ শৈলিও মোগল স্থাপত্য নকশায়।

জুম্মার দিন মসজিদের তিন গেট দিয়ে কয়েজ হাজার  মুসল্লী নামাজে সমবেত হন।

আমরা নামজ পড়ার পর মেহরাবের কাছে পৌঁছালাম। আব্বা বলছিলেন,  যেখানে ইমাম সাহেব দাঁড়ান, তার ঠিক পেছেন মোগল সম্রাটরা নামাজ পড়তেন। এ মসজিদ তৈরির সময়  মোগল সম্রাটের ঘোষণা ছিল- যিনি আছর নামাজের সুন্নত কাজা করেননি এমন লোক  মসজিদের ভিত্তি স্থাপন করবেন।

এ রকম অনেক  অজানা তথ্য জানতে জানতে মসজিদ ঘুরে দেখছিলাম। মসজিদের উন্মুক্ত স্থানে ওজু করার জন্য একটি পুকুর। এর চারপাশে ওজু করার ব্যবস্থা। প্রচণ্ড রোদ থেকে মুসল্লিদের স্বস্তির জন্য টাঙ্গানো হয় সামিয়ানা।

 দিল্লি জামে মসজিদে আমরা  বেশ কিছুটা সময় কাটালাম।  গরমে পুড়তে পুড়তে তিনটি গেটই ঘুরে এসে বের হওয়ার সময় জানলাম শাহ ওয়ালী মুহাদ্দেসে দেহলভীর  সমাধি মসজিদের কাছে। মিনিট কুড়ির পথ। আব্বা আর আমি দুজনে একটা অটোতে চড়লাম, পৌঁচালাম  পাঞ্চ পীর মসজিদে। মসজিদটি  খুঁজে পেতে বেশ বেগ পেতে হয়েছে।  কারণ পাঞ্চ পীর মসজিদের কোনো নিশানা নেই।

এটা অনেকটা কলোনীর মত জায়গার পাশে একটা কবরস্থানের মত এলাকা্। এখানেই ওলামায়ে জমিয়তে হিন্দের অফিস। সেটি পার হয়ে গেলে একটি কওমী মাদরাসা। তারপর একটা মসজিদ। মসজিদের পাশে একটা ঘরে শাহ  ওয়ালীউল্লাহ মুহাদ্দেসে দেহলভীর সমাধি। সাথে তার পীর ও তার সন্তানের সমাধিও সেখানে। ইনডিয়াতে ইংরেজ তা্ড়ানোর আন্দোলনে তিনি অগ্র সেনানী ছিলেন।

আব্বার জীবনের একটি  সুপ্ত ইচ্ছা ছিল শাহ ওয়ালীউল্লাহর সমাধিতে আসা। সে ইচ্ছা পূরণ ও শাহ ওয়ালীউল্লাহ রহ: কবর জেয়ারতের পর এমনটাই জানালেন।

জেয়ারতের পর আমরা বের হচ্ছি, তার সমাধিতে খুব কম লোকের আনা গোনা।  তবে যারা আসছেন, অনেকক্ষণ ধরে থাকছেন।

বের হতে হতে আব্বার কাছে শাহ ওয়ালীউল্লাহর  জীবন থেকে না রকমের কথা শুনছিলাম, তার মেধা,জীবন এবং ইসলামী সংস্কৃতির বিকাশে তাঁর ভূমিকা্  সম্পর্কে।

 রোদের উত্তাপ বাড়ছে। আমাদের গন্তব্য কুতুব মিনার। পাঞ্চপীর মসজিদ থেকে এর দূরত্ব ২২ কিলোমিটার। আমরা অটোতে আসলাম। কুতুব মিনারে এস আব্বা অস্থির। হাঁপিয়ে গেলেন। এত লম্বা জার্ণি শেষে আমরা মিনারের অভ্যন্তরে ঢুকতে যাবো, দেখি টিকেট লাগে।

টিকেট কাটতে গিয়ে দেখি ইনডিয়াদের জন্য ৩০ রুপি আর  ফরেনারদের জন্য ৫০০ রুপি।  কাউন্টারে টাকা দিলে আমাকে তিরিশ রুপির দুটা টিকিট দিলো।  ভাবলাম, ফরেনার পরিচয় দিয়ে ৫০০ রুপি খরচ করব, পরে মনে হলো--- আমি তো পরিচয় লুকাইনি, তাহলে  বাড়তি টাকা গুনতে যাব কোন দুঃখে। ২০০৬-০৭ এ একবার সিদ্ধান্ত হলো ইনডিয়া তার দেশের  পর্যটন স্পটের জন্য সার্কের আলাদা ফিস ঠিক করবে।  তবে সেটির আর চূড়ান্ত করেনি। বঙ্গীয় মোছলমানদের থেকে যতটাকা চুষে নেয়া যায়, ততই লাভ!

কারণ পরিসংখ্যান বলছে, ইনডিয়ার  রেমিটেন্স আহরণের দ্বিতীয় বৃহত্তম দেশ বাংলাদেশ। অথচ তারা সৌদি বাশশার সাথে সমীহ করে কখা বলে। আর আমাদের বঙ্গীয় মুসলমানদের হয়রানি করে। গরীব বলে হয়ত। কিন্তু আমরা গরীব হলেও তাদের জিডিপিতে বড় ধরণের অবদান রাখছি, সেটা তারা ভুলে যায়।

সে যাক কুতুব মিনারের অভ্যন্তরে ইমাম হামজার সমাধি ও  আ'লাই দরজা পরিদর্শন, মিনার এলাকা ঘুরে মোঘল মসজিদে আছরের নামাজ পড়লাম।  কিছুটা সময় বসে  আব্বা আর আমি বের হলাম। প্রচণ্ড ক্লান্ত আব্বা। ফের একটা অটো ধরে চলে এলাম হোটেলে। সে সাথে ইনডিয়ান  হলি সাইট ভ্রমণের সমাপ্তি!  

সুখ অসুখের গল্প : ৪:: নিজামউদ্দিন আউলিয়া আর মির্যা গালিবের মাজারে একদিন।




সুখ অসুখের গল্প : ৪:: নিজামউদ্দিন আউলিয়া আর মির্যা গালিবের মাজারে একদিন।

ডাক্তারের কাছ থেকে 'অপারেশন লাগবে না'- সিদ্ধান্তের পর  হাতে অনেকটা সময় পাওয়া গেলো। এ সময়টা আব্বার তার শিক্ষাজীবনের প্রিয় কিছু নায়কের কবর জিয়ারতে যেতে চান। আমাকে এমনটা্ই বললেন।

আমি দিল্লি বেশ কয়েকবার আসলেও দিল্লি জামে মসজিদ আর কারিম'স রেস্টুরেন্ট ছাড়া অন্য  ধর্মীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থানে যাওয়া হয়নি। তাই চিনতে বেশ সমস্যা হচ্ছিলো।

দিল্লি এপোলোর পেশেন্ট লাউঞ্জের পশ্চিম মাথায় একটা  নামাজের জায়গা আছে। সেখানকার ইমামকে আব্বা খুঁজে বের করলেন।  তাঁর কাছেই তিনি শাহ ওয়ালী উল্লাহ মুহাদ্দেসে দেহলভী, মির্যা গালিব আর  নিজামউদ্দিন আউলিয়ার সমাধি সম্পর্কে  জানতে চান? এমন প্রশ্ন করতে ইমাম সাহেব কিছুটা বিস্ময় নিয়ে তাকালেন। পরে আব্বার পরিচয় জানতে পেরে তিনি  সব কিছুর সঠিক ঠিকানা সংগ্রহ করে দিলেন।

প্রথম দিন ১৬ জুন, আব্বার ফিজিওথেরাপি শেষ করে ইমাম সাহেবের  ঠিক করে দেওয়া  টেক্সি করে গেলাম নিজাম উদ্দিন  রহ: এর সমাধি ও খিলজি মসজিদে। সারিতা বিহার থেকে মাত্র ৫ কিলোমিটার। গাড়ি থেকে নেমে অনেক দূর হেঁটে আমরা পৌছালাম  নিজামউদ্দিন আউলিয়ার  সমাধিতে!

পথে পথে মাজারে দেয়ার জন্য ফুল, ক্যালিগ্রাফি সমেত সবুজ কাপড় আর লোবান-মোমবাতি বিক্রি হচ্ছিলো। যেমনটা হিন্দি সিনামায় দেখা মেলে।  বহু পুণ্যার্খী সেখানে এসেছেন। ধর্ম-বর্ণ-বিচার নেই।

আব্বার সাথে যাওয়ার পর আমার গাইডের দরকার পড়লো না। নিজামউদ্দিন আউলিয়ার মা'রেফাতের  বিষয়ে বিস্তারিত শুনছিলাম আর অবাক হচ্ছিলাম, এটা জেনে যে, আধ্যাত্মিক শক্তিও  মোগল সম্রাজের বিকাশে বড় ভূমিকা রেখেছিল।

ভেতরে ঢুকলে  মানুষের কিছু আচরণকে যে কারো  খারাপ লাগবে। আব্বা বিরক্তি প্রকাশ করছেন।  কিন্তু এটা তো সত্য যে, এখানে আমাদের কিছু করণীয় নেই।

 তার মতে, এখানে যারা পুণার্থী তাঁদের প্রায় সবাই ধর্ম অবমাননা করছেন। নিজামউদ্দিন আউলিয়ারা যে জন্য ধর্ম ও মুসলামনের সম্রাজ্য বিস্তারে পরিশ্রম করেছেন, তারা তার বিপরীতে চলছেন।

তবে এটাও সত্য যে নিজাম উদ্দিন আউলিয়ার মাজারে  বঙ্গীয় মাজারের মত সিজদায় পড়ে থাকার সুযোগ নেই।  নামাজ পড়ার জন্য  মো্গল আমলের খিলজি মসজিদ আছে।

নিজাম উদ্দিন আ্উলিয়ার  মাজারের  পুরো আঙ্গিনা আমরা ঘুরে দেখলাম,  খিলজি মসজিদেও যাওয়া হলো। মোগল আমলে অন্য সব মসজিদের মতই লাল ইটের গাঁথুনি অনন্য এক মসজিদ। অসাধারণ স্থাপত্য নকশা যে কাউকে মুগ্ধ করবে।

 সমাধিতে ফুল আর সবুজ কাপড় বিছানো এখানে যেন অত্যাবশ্যকীয় হয়ে পড়েছে। আমাদের খালি হাত আর  ঘুরতে দেখে অনেকে বিস্ময়ে বিস্ফোরিত চোখে তাকাচ্ছেন।

 নিজাম উদ্দিন আউলিয়ার সমাধি জিয়ারতের পর আমরা বেরিয়ে আসলাম।

 বাইরে প্রচণ্ড রোদ্দুর। গেটের বাইরে আসতে তাবলীগ জমাতের মারকাজ।  তার একটু আগেই মির্যা গালিব একাডেমি। আব্বার চোখ পড়তেই এগিয়ে গেলেন। গালিবের   সমাধি কোথায়? জানতে চাইতে দেখিয়ে দিলেন, সেখানকার একজন ।  সমাধধি প্রাসঙ্গে উন্মুক্ত মঞ্চ। মঞ্চের সামনে খোলা মাঠ। সেখানে কিশোররা ক্রিকেট খেলছে।  তাদের  কাছ থেকে  সমাধির ঠিকানা জানতে চাইলে  তারা সিকিউরিটি গার্ডকে দেখিয়ে দিল। গার্ড তালা খুলে আমাদের নিয়ে গেলেন সমাধিতে।

 আব্বা বলছিলেন,  মির্যা গালিব  কেবল মুসলিম জাগরণের কবিই নন, তিনি একজন দার্শনিকও। তার বহু কবিতা আব্বা জানেন। সেখান থেকেও কিছু কবিতার পটভূমি আমাকে জানালেন। এটা একেবারেই আমার প্রথমবার জানা।

 আব্বা কিছুটা আক্ষেপ করেই বললেন, মির্যা গালিব সম্পর্কে আমাদের অনেকেই জানেন না। আর আমরা যেহেতু উর্দু জানি না, তাই মির্যা গালিবের কবিতা বোঝা মুশকিল।

 আমি ব্যক্তিগতভাবে  ভূপেন হাজারিকার গান 'আমি এক যাযাবর' এ প্রথম মির্যা গালিবের  নাম শুনেছি। এ টুকুই!

 মির্যা গালিবের মাজার  এলাকা খুবই সুরক্ষিত এবং পরিচ্ছন্ন। আব্বা  মির্যা গালিবের  সমাধি জেয়ারত করলেন।  বললেন, জীবনে আর কখনো হয়ত আসা হবে না। তাই  দেখে  গেলাম।

আমরা বেরিয়ে আসছি।   পরে গালিব একাডেমি থেকে আব্বা একটা কবিতা সঙ্কলন কিনলেন।  স্মৃতি হিসাবে সংরক্ষিত থাকরেব। কারণ আব্বা ছাড়া আমরা কেউ উর্দু পড়তে পারি না! সুতরাং এটি স্মৃতিতে চলে যাবে!। তবে গালিবের কিছু কবিতা ইংরেজি ভাষায় রয়েছে।  এর একটা সংকলন  পাওয়া যাবে। সেটি থেকে কিছু কবিতা পাঠ করার চেষ্টা করছি।

 একটি অনন্য অভিজ্ঞতা আর অসাধারণ  দিন কাটলো আমাদের। আব্বা মাজার ও মাজার ঘিরে মানুষের যে সব  কর্মকাণ্ড এ সবের প্রচণ্ড বিরোধী হবার কারণে, একজন পর্যটনকর্মী হিসাবেও আমি যখনই যে নগরে গেছি খুব বিখ্যাত কোন মাজার না হলে সেখানে আমরা যাওয়া হয়নি।

তবে নিজামউদ্দিন আউলিয়ার মাজারের যাবার পর মনে হযেছে, সব মাজারে যাওয়া উচিৎ এবং এখানেও মানুষের আচরণ -অসহায়ত্ব দেখার একটা সুযোগ আছে।   যেহেতু আমি মানুষ  ও তাদের আচরণ  দেখতে পছন্দ করি এবং সেটি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করে থাকি,তাই এ সব জায়গায় না যাওয়াটা আমার একটা ভুল ছিল।

কেউ কেউ মাজারে যাওয়াকে শিরক মনে করেন।  অন্য শিরক করছে, আপনি বা আমি যাচ্ছি কেন?  আমি ব্যক্তিগতভাবে  মাজারে যাওয়ার বিরোধি নই। এবং ছোট ভাই হিরো আমাকে এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণের পর আমি যে টুকু পড়েছি, তাতে মা্জারে যেতে বাধা আছে এমন কোন তথ্য ধর্মীয় বিধি নিষেধ পাইনি। বরং আমার মনে হয়েছে, আমরা এ সব জায়গা এড়িযে যাবার কারণে, কিছু ভণ্ড, ধান্ধাবাজ আর ভয়ঙ্কর রকমের অপরাধীরা মাজারকে তাদের দখলে নিয়ে অপকর্ম করছে। এ সব অপকর্ম থেকে মনিষীদের মাজারকে মুক্ত করার জন্য আমাদের মাজার পূজারীদের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে হবে।

 আর এটা তো সত্য মৃত ব্যক্তি  অসহায়। তাঁর কারো জন্য কিছু করার থাকে না। 

সুখ অসুখের গল্প-৩ : কুখ্যাত ডাকাত বনাম-ডাক্তার!


ইনডিয়া যাওয়ার জন্য প্রয়োজনে অর্থনৈতিক প্রস্তুতি আগেই ছিল। আব্বা নিজেই নিজের চিকিৎসার সব ব্যয়ভার আমার একাউন্টে জমা করিয়েছেন। তবুও আমি কিছু হাতে রাখলাম।

ওড়ার জন্য প্রস্তুতির ফাঁকে কয়েকটা এয়ারলাইন্সে খোঁজ নেয়া হলো, জানা গেলে জেট-ই বেস্ট। অনটাইম ফ্লাইট। ওয়াকার ভাই জানালেন, গুগলের একটা সাইট থেকে টিকিট কেনা যাচ্ছে, সাশ্রয়ী মূল্যে।

তবে শেষ পর্যন্ত সেখানে না গিয়ে আমার পুরনো সুহৃদ সুমন ভাইয়ের কাছ থেকেই টিকিট নিলাশ। কারণ আব্বার টাইম আর হসপিটালিটির ব্যাপারে সেনসেটিভ !

আল্লাহর নামে বাপ বেটা উড়াল দিলাম রোজার শুরুর দিকে সকাল ১০ টা ১০ এর ফ্লাইটে।
ভাবছিলাম, উড়ালের সাথে সাথে ভিসা বিষয়ক জেরা সমাপ্ত!

না ঠিক তা হলো না! একটা হুজুর মানুষ এয়ারে চড়ে দিল্লি ঢোকে কেমনে? তাকে সহজে ঢুকতে দেওয়া ঠিক হবে না ধরে নিয়ে জেরা করার জরুরী মনে হলো ইমগ্রেশন কর্মকর্তার।

সাড়ে ১২ টায় দিল্লি এয়ারপোর্টে নামার পর ইমিগ্রেশন কর্মকর্তার কোশ্চেন! ভিসার জন্য ৩ বার এপ্লাই করছিলেন ক্যান? অসহায় ভাবে তাকিয়ে থাকার ইচ্ছে ছিল, কিন্তু পারলাম না।

জন্মগতভাবে মাথা গরম! আপনাদের এম্বাসি তো কইছিলো ৪ বার পর্যন্ত এপ্লাই করা জায়েজ!
কর্তা ব্যক্তি উঠে পড়লেন, বড় কর্তাকে ডেকে আনলেন। তিনি ভিসা দেখে বললেন, ঠিক আছে ছেড়ে দেন। লোক কইলকাতার। তাই বাংলায় কথা কইলো।

এ ফাঁকে আরেকজন বাংলােদেীশ একই রকম কোশ্চৈন শেষ পরে ওপারে গিয়েছেন, তিনি উকি দিয়ে বললেন, দাড়ি টুপি দেখলেই উনাদের সমস্যা! এটা একটা ফাউজলামি।

আমি মৃদু হেসে উনার বক্তব্যকে সমর্থন করলাম।

এ দিকে হসপিটাল থেকে আমাদের রিসিভ করতে আসা যুবরাজ বিরক্তি নিয়ে ঘুরছে। বলল, ইমিগ্রেশন ব্যাটারা এমনই! লাগেজ টেনে এনে হসপিটালের ভাড়া করা গাড়ি করে সরাসরি চলে এলাম ইন্টারন্যাশনাল পেশেন্ট লাউঞ্জে (আইপিএল)।

ডাক্তার আগে থেকে ওরা সেট করে রেখেছে। নাম সুধীর কুমার তেয়াগি। ওরা উচ্চারণ করে 'ছুদির তেয়াগি'। দিল্লি এপোলোর ব্যস্ত নিউরো ও স্পাইন সার্জন। তার সাথে অপারেশন থিয়োটারের পাশের চেম্বার মোলাকাত হলো।

আব্বার এমআরআই রিপোর্টটা রট লাইটের ওপরে ফালাইয়া দেখলেন। বললেন, মাথায় কোনো সমস্যা নাই। মেরুদণ্ডে সমস্যা আছে।

'অপারেশন দরকার নাই!'- ঘোষণাও দিলেন সুধীর। বললেন, তবে ফিজিও থেরাপি লাগবে। ৫ দিনের ওষুধ ও ৫ দিনের ফিজিও থেরাপি পরামর্শ দিলেন।

বল্লাম, আরেকবার টেস্ট করে দেখন যাইবো! বললেন, না, শুধু শুধু টাকা খরচ করবেন কেন?
আব্বা খুব খুশী, কারণ ডাক্তার তাকে পুরো বিষয়টা ব্রিফ করলেন, বললেন, আপনার সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে।

আর এ রিপোর্ট দেখে, ইবনে সিনার কুখ্যাত নিউরোলজিস্ট ডাকাত আবদুল হাই প্রেসক্রিপশনে লিখেছেন তাকে ইমিডিয়েটলি হসপিটালে ভর্তি করার জন্য। তার নাকি ম্যাসিভ স্ট্রোক হয়েছে! আল্লাহ তার প্রিয় বান্দাহকে এ রকম এক কুখ্যাত জানোয়ারের হাত থেকে রক্ষা করেছেন-আমীন।

আর ল্যাব এইডের আরেক কুখ্যাত ডাকাত সিরাজুল হক বলেছিলেন, স্পাইনের ডিস্কের মাঝখান থেকে জেল বেরিয়ে যাচ্ছে! তাই ব্যথা হচ্ছে।

তাও ঠিক নয়।

আর আজহারুল হক ওরফে রংপুরীয় বলদ নিউরোলজিস্টরে কথা আর কি বলবো!

তবে আজহার ও সিরাজুল হককে আব্বা অনেক বড় ডাকাত বলেই জানলেন। সুধীর বাবুর ওষুধ খাওয়ার পর আব্বাকে বল্লাম, দেশের এত বড় বড় ডাক্তার দেখাইলেন, তারা তো বড় সমস্যা কইছে। চলেন , ডাক্তার ভিপি সিং-কে দেখাই।

ভিপি সিংও এপালোর নিউরো সার্জন। সুধীর বাবুর চে বয়সে বড়ো। অভিজ।ঞাতায়ও। বাংলাদেশেও দু চারবার এসেছেন নিউরোসার্জারি জ্ঞান বিতরণ করতে!

আইপিএল এ সনিতাকে বিষয়টা জানালাম। হেসে ও বলল, ফাও টাকা খরচ করবা কেন? বল্লাম, আব্বার সন্তুষ্টি!

পরে ভিপি সিংয়ের দরবারে গেলাম ৪র্থ দিন। তিনি আব্বার বসের পরিচিত। ভালো করে দেখে বললেন, সুধীর বাবু ভালো দেখেছেন। তিনি যা বলেছেন, তাই। আপনাকে ব্যায়াম করতে হবে। এটাই চিকিৎসা!

সে চিকিৎসা নিয়ে আমরা ফিরতে চাইলাম।

সুধীর বাবুকে আব্বার প্রোস্টেট সংক্রান্ত সমস্যার কথা জানালে, তিনি ডাক্তার অংশুমান আগারওয়ালকে দেখাতে বললেন। সুধীর বাবুর রেফারেন্স তাই খুব যত্ন করে দেখে জানালেন, ' আপনার আর টেস্ট করার কাজ নেই। ভালো আছেন। ৪ মাস পরে টেস্ট করে মেইল করে দিয়েন। আমি আবার দেখে দেব।'

আমরা তবুও বললাম বাংলাদেশে ইনফেকশনের একটা রিপোর্ট আছে। সুতরাং আরেকবার চেক করা দরকার। আমাদের অনুরোধেই পুরনো রিপোর্ট থেকে ৪ টি করতে দিলেন। বললেন, আমি জানি সব ঠিক আছে। আপনারা চাইছেন বলে টেস্ট দিলাম। এটার জন্য টেস্টের দরকার ছিল না!

তবুও আমরা টেস্ট করলাম। রেজাল্ট-- সব ঠিক আছে।

বাংলাদেশে ই্ওরোলজির ডাক্তার সালাম ,ডাক্তার জাহিদ ও ডাক্তার নিনান চাকোর পরামর্শই অংশুমান ঠিক রাখলেন। কোনো ওষুধ নয়। অবজারভেশন!

সুখ অসুখের গল্প -২ :: ভিসা তেলেসমাতি!





ভিসা পাওয়ার উপায় নিয়ে ভাবছিলাম। জীবনে এতবার ইনডিয়া গেছি, কখনো ভিসা নিয়ে ভাবিনি। এবারই ভাবনা।  কারণ একজন ভিসা এজেন্ট আমাদের জানালেন , ভিসাপ্রার্থীর দাঁড়ি আর সৌদি আরবের ভিসা থাকাটা মহাপাপ। গো হত্যার চেও বড় পাপ। বিষয়টা মাথায় ধরলো না।

মোডি কাকু ও মনমোহন দাদার মুখেও কিন্তু দাড়ি আছে।  মোডি কাকুর দাড়ি আবার বঙ্গীয় হুজুরদের স্টাইলে। তাহলে সমস্যা হবে কেন? প্রথমে বিষয়টাকে মনে হয়েছে ভিসা এজেন্টের চালাকি। কিন্তু বাস্তবে এর প্রমাণও মিলল।  শঙ্করে একজন ভিসা এজেন্টকে ফরম পূরণ করে সব কাগজপত্র সমেত প্রদা্ন করলাম।  সময় নিয়েছে ৫ দিন। টাকা নিবে দুটি ভিসার জন্য ১২ হাজার ৫০০ টাকা। কিন্তু মিস্টার বলদ তিন তিন ঘুরিয়ে বললেন, আপনাকেই জমা দিতে হবে, আপনি  পাসপোর্ট ও ফরম জমা দিয়ে আমাদের  ডেলিভারি স্লিপ দিলে আমরা ভিসা করিয়ে দেব।

আমার মনে হলো কাজটা যদি আমি নিজেই করি তাহলে এজেন্ট কেন?

 প্রথম দিন আমাদের অফিস সহকারি শাহ আলমকে বললাম, তোমার বাসা যেহেতু  বাড্ডা , সকাল সকাল এসে লাইনে খাড়াও। আমি এসে জয়েন দেবো।  শাহ  আলম একজন সিরিয়াল ভাড়াটের নাম্বার দিলো। ৫০০ টাকা দিয়ে সিরিয়াল দিয়ে প্রবেশ করলাম।  ভেতরে গিয়ে একজন বললেন, শুধু আমার পাসপোর্টে ডলার এনডোরস করলে হবে না। আব্বারটাও করতে হবে। ভেতরেই স্টেট ব্যাংক অব ইনডিয়ার একজন লোক বসেন।  তিনি বাংলাদেশে মোডি কাকুর প্রতিনিধি। তার সাথে দেখা করতে গেলে সবাইকে তাড়িয়ে দিচ্ছেন।

আমাকে এনডোরসমেন্টের কথা শুনে বসতে বললেন। এর মধ্যে ভিসা না হওয়া দু একজন আসছেন। একজন বয়ষ্ক লোক আসলেন। তাঁকেও ধেই ধেই করে তাড়ালেন। যেন কুকুর তাড়াচ্ছেন। তবুও...

জানালাম আমার পাসপোর্টে বহু ডলার এনডোরস করা আছে, ব্যাংক স্টেম্যান্টও আছে। তারপরেও আব্বার পাসপোর্টে এনডোরস করতে হবে? বললেন, হবে। একটা ফরম পূরণ করতে হবে। বললাম,  আব্বার সই তো আমি দিতে পারবো। তিনি আমাকে একটা সাদা কাগজ আর কলম দিলেন, প্রাকটিস করার জন্য।  অপরাগতা প্রকাশ করায় বিরক্ত হয়ে বললেন, আপনার যতি ক্রেডিট কার্ড থাকে তাহলে সেটি নিজের জন্য, আর ব্যাংক স্ট্যাটম্যান্ট আব্বার পাসপোর্টের সাথে জমা দিতে ।  তাই দিতে গেলাম।

এবার ফরম চেক করা 'মহারাজ' ভুল বের করলেন। প্রিভিয়াস ন্যাশনালিটি লিখিনি। এটা কি করবেন? বললাম, কি করতে হবে বলুন। বললেন, প্রতি ফরমে ৩০০ টাকা করে জরিমানা দিয়ে জমা দিন। তা্ই করলাম। বেরিয়ে এসে ভাবছিলাম ভিসাটা হয়ে যাবে। ফি দিলাম আবার  জরিমানাও। কিন্তু ৭২ ঘণ্টা পরে এম্বাসির দরজায় গিয়ে দেখলাম ভিসা হয়নি।


 কেন হয়নি? কারণ দেখাতে চান না।
 আবার সেই স্টেট ব্যাংক অব ইনডিয়ার  কর্মকর্তার কাছে গেলাম, কারণ জানতে। তিনি শুধালেন, ওহে বঙ্গীয় মফিজ, চারবার পর্যন্ত ফেরৎ যাইতে পারে! ব্যাপার না। আবার জমা দাও।


 দ্বিতীয়বার আবার জমা করলাম।  এবার আবাবার পাসপোর্টেও এনপে=ডারস করলাম ব্যাঙ্ক অব ষিলন থেকে।  সে কাগজ সমেত জমা দিলাম।
 আবারো ফেরৎ। এবার জানতে পারলাম আব্বার দাড়ি আর আমার সৌদি আরবের ভিসাই সমস্যা!  কস কি মমিন অবস্থা। মধ্যপ্রাচ্যে শেখদের '...চুষে' চলা ইনডিয়ানদের কাছে সৌ্দির ভিসা সমস্যা!

 মেনে নিলাম। আব্বাকে বল্লাম সিঙ্গাপুর নয়, থাইল্যান্ড! কিন্তু ইনডিয়া না হলে আব্বা যাবেন না।

আব্বার শরীর খারাপ হতে শুরু করেছে।  তাই আবার ঢাকায় নিউরোলজীর ডাক্তার আজহারুল হক সরকারকে দেখানো হলাে। সাকুল্যে ১১ খান ওষুধ লিখেছেন জনাব।  সে ওষুধ আব্বা খাওয়াও শুরু করলেন। আব্বাকে ঢাকায় বসিয়ে রেখে  এক দালালের শরণাপন্ন হলাম। ১৩ হাজার ২০০ টাকা রফা। সেও ফেল। টাকা নিয়ে পালালো। এ সবের মধ্যে অগ্রজ সম্বাদিক মুজিব ভাই বললেন, জমা দিয়ে মাসুদ ভাইকে জানাতে। তিনি  সহযোগিতার হাত বাড়ালেন।

তৃতীয়বারের মত পাসপোর্ট জমা দিয়ে ভিসা হাতে পেলাম জুনের প্রথম সপ্তহে।  মাসুদ ভাইকে অসীম কৃতজ্ঞতা। আমরা মানবজমিনের বড় ভাই। বহু পুরনো কূটনৈতিক রিপোর্টার।

ভিসা পাওয়ার পর আব্বাকে জানালাম, বললেন ঈদের পরে যাবেন।  তবে আব্বার শরীর খারাপ হতে থাকলে রোজার মধ্যে আমরা উড়েছি।









সুখ অসুখের গল্প-১ :: বঙ্গীয় চিকিৎসকরা সবাই সুলতান সুলেমান!




' আব্বাকে চিকৎিসার জন্য ইনডিয়া নিতে চাই, কই নিমু?'
এমন প্রশ্ন বহুজনকে করেছি। ইন্টারনেটে গেঁটে অনেক তথ্য হাসিল করেছি। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে  সহায়তা করেছে দিল্লি এপোলো। তাদের চিকিৎসকের ডেটাবেস এবং  সহযোগিতা আমাকে সেখানে যেতে উদ্বুদ্ধ করেছে।

এপোলোর উপরে আস্থাহীন ছিলাম আমি। তবে চেন্নাই এপোলোর একটা মেইল আমার ধারণা বদলে দিলো। তারা আব্বার এমআরআই রিপোর্ট দেখে জানালো, এ চিকিৎসার জন্য এ মুহুর্তে তাদের ডাক্তার নেই। সত্যি অভিভুত হলাম। এ রকম রিপ্লে আর কোথা থেকে পাইনি।

সিঙ্গাপুরের ন্যাশনাল মেডিকেল,  থাইল্যান্ডের মিশনারি হসপিটালেও মেইল করেছিলাম। রিপ্লে ভালো ছিল। চেন্নাই এপোলো গিয়েছিলেন সহকর্মী সৌরভ দা' তার কিছু পরামর্শও পেলাম।  আব্বা সিঙ্গাপুর বা থাইল্যান্ড যেতে অনিচ্ছুক।  তাই বাধ্য হয়ে ইনডিয়া যাওয়ার আয়োজন।

 চিকিৎসার ব্যাপারে আব্বা একটু ভিন্ন। তার  সমস্যা, কেন তিনি এ সব ওষুধ খাবেন তা তাঁকে জানতে হবে। বাংলাদেশের ডাক্তাররা এতে প্রচণ্ড রকমের বিরক্ত হন। ল্যাব এইডের নিউরোলজির ডাক্তার সিরাজুল হক এ বিষয়ে জানতে চাইলে, তার সিরিয়ার দেয়া  'মফিজ'রকে দেখিয়ে দিলেন।

আব্বা এতে প্রচণ্ড বিরক্ত হয়েছেন।

মার্চ মাসে তাই সিদ্ধান্ত , আব্বা চিকিৎসার জন্য ভারত যাবেন। দু কারণে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হযেছে। এক. তাঁর দুজন চিকিৎসক একই এমআরআই রিপোর্ট দেখে দু রকম পরামর্শ দিয়েছেন। দুই. চিকিৎসকরা সবাই সুলতান সুলেমান।  তাদের কাজকর্ম করতে হয় আর্দালিদের। এটা আব্বা পছন্দ করেননি।

তাই খোঁজ খবর নিচ্ছিলাম। সবাই সিএমসি, ভ্যালোরের পরামর্শ দিলেন।  ইন্টারনেটে খোঁজ খবর, এসি নেইলসনের জরিপ  এসব দেখে আমরা সিমএসিকে পছন্দও করলাম। কিন্তু সিএমসি আমাদের রিপ্লে করলো কমপক্ষে  তিন সপ্তাহ সময় নিয়ে যেতে হবে। এত সময় আব্বার পক্ষে দেওয়া অসম্ভব। আমারো একই হাল।

 সুতরাং এপোলো বেস্ট অপশন।

প্রক্রিয়া শুরুর আগে সেখানে মেইল পাঠানো হলো। তারা  রিপোর্ট দেখে জানালেন, ৫ থেকে ৭ দিনের জন্য যেতে হবে। তবে আমরা হাতে আরো ২ দিন বেশি সময় নিয়ে ৯ দিনের জন্য উড়বো বলে প্রস্তুতি শুরু করলাম।

আব্বার পাসপোর্ট  করতে দাঁড়ালেন ফেব্রুয়ারিতে। হাতে পেলেন মার্চে। এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে ভিসার জন্য সব রেডি করেছি, দেখি আমার পাসপোর্টের মেয়াদ ৬ মাসের চেয়ে দিন দশেক কম আছে।  এবার নিজের পাসপোর্ট রিনিউ করতে দৌড়ালাম। ৬ হাজার  টাক সাথে ১৫ শতাংশ আবুল মাল দিয়ে  পাসপোর্ট রিনিউ করে আবেদন করতে যাবো, তখন বিভ্রান্তি শুরু।


ফেসবুক ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট একসেপ্ট ও পোস্ট প্রাইভেসি নির্ধারণে সতর্ক থাকুন।


একটা অপহরণ চক্র সম্পর্কে আমার এক বন্ধু জানালো। বঙ্গবন্ধুর আদর্শের এ সৈনিক অপহৃত হয়েছিল বছর খানেক আগে। যারা তাকে অপহরণ করেছে, তার কাছে পণ আদায় করেছে, তাকে হেনস্তা করেছে, তাদের কয়েকজনের লিঙ্ক আমাকে পাঠালো ইনবক্সে।

অপহরণকারী চক্রের কয়েকজনের প্রোফাইলে গিয়ে দেখলাম-- আমার বড়ভাই, বন্ধু ও অনুজদের অনেকেই তাদের মিউচুয়াল ফ্রেন্ড। এ সব মিউচুয়াল ফ্রেন্ডের অনেকেই আমার ক্যাম্পাস রিপোর্টিংয়ের সময়কার বিরোধীদল, বর্তমানে সরকার দলের; আর সে সময়কার সরকারি দল বর্তমানের বিরোধী দলের সুহৃদ।

আঁতকে উঠলাম। আমি নিশ্চিত এঁরা তাদের চেনেন না। না চিনেই এরা তাদের ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট একসেপ্ট করেছেন। কারণ এদের ওয়ালে অনেক অমৃত বচন-পোস্ট আছে।

প্রিয় সুহৃদ
দয়া করে অচেনা-অজানা কারো  ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট একসেপ্ট করবেন না। ছবি পোস্টে প্রাইভেসি ঠিক করে নিন। সতর্ক থাকুন।  রাস্তাঘাটে সময় বাঁচানোর জন্য প্রাইভেট বা মাইক্রোবাসে উঠে পড়বেন না।  পথ চলতে চলতে ফোন টিপাটিপির জন্য নিরিবিলি জায়গায় যাবেন না্। সতর্ক থাকুন, নিরাপদে থাকুন। শুভ কাকমনা।

অন্তরে ঠাঁই নিয়েছ পপ গুরু





পপ গুরু আজম খান ছাড়া পপ জগতের ৫ বছর কেটে যাচ্ছে আজ ৫ জুন। আজো কানে বাজে তার--'ওরে সালেকা ওরে মালেকা ওরে ফুলবানু '। অদ্ভূত আবেগে, উচ্ছ্বাসে ভেসে যাওয়া একটা মধ্য দুপুর চেয়েছি, কনসার্টের সন্ধ্যা। তাঁর কণ্ঠের দরদে ভেসে যেতে চেয়েছি আরো কতগুলো বছর। তাঁর গানে গানে খুঁজতে চেয়েছি প্রিয় সন্তানকে...' আলাল কই, দুলাল কই'। এখন সব কিছুর উর্ধে পপ গুরু। ২০১১ সালের এ দিনেই আমরা তাঁকে হারিয়েছি।

২১ বছর বয়সে তার যুদ্ধে গেছেন আজম খান। ছিনিয়ে এনেছেন স্বাধীনতা। বাংলাদেশের পপ সঙ্গীতের ধারাকে করেছেন প্রাণবন্ত। এগিয়ে নিয়েছেন , ধীরে ধীরে। যেখানে মানুষ এ ধরণের গানের সাথে পরিচিত নন, তাদের এর সাথে পরিচিত করার যে চেষ্টা তিনি করেছেন, তার হাত ধরে এখন দেশে পপ ধারা সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় সঙ্গীত মাধ্যম। 

এখন যারা গাইছেন, আয় করছেন পপ গান করে, তারা আজম খানের কথা ভুলে আছেন, হয়ত তাঁকে মনে রাখার দরকারো মনে করছেন না। তবুও আজম খান বেঁচে থাকবেন, শ্রোতাদের অন্তরে। গুরু সালাম। তোমার গান বেঁচে থাকবে , তুমি তোমার গানের মতই শ্রোতাদের অন্তরে ঠাঁই নিয়েছো।

Grameenphone ‘Go Broadband’ illegal

Grameenphone ‘Go Broadband’ illegal


Grameenphone (GP), the largest telecom operator of the country, has violated telecom rules by running ‘Go Broadband’ services, Bangladesh Telecom Regulatory Commission (BTRC) has observed. Grameenphone, in alliance with ADN Telecom and Agni Systems, offers ‘Go Broadband’ services that provide fibre-optic connections ‘by violating BTRC’s Wi-Max policy guidelines’, the telecoms watchdog said.
After a series of scrutiny over the GP explanations regarding the services, the Engineering and Operations Department of the BTRC came up with the observation last week.
In a note, a copy of which has been obtained by The Independent, the BTRC’s Engineering and Operations Department has also recommended that GP should be slapped with a monetary fine for this ‘severe violation’ of the articles 4.7 and 4.8 of the BTRC guidelines on telecom infrastructures.
“The operator cannot share or lease its infrastructure without permission from the regulator. Grameenphone, as a mobile phone operator, cannot provide wire-connectivity. The operator is also providing fibre connectivity, which can only be done by NTTN operators,” a BTRC senior official told The Independent while explaining the nature of the violations by mobile operator Grameenphone.
“It is providing wire technology connectivity to 551 branches of Sonali Bank without obtaining permission from the BTRC. It is also providing modem services what wi-max service providers Qubee and Banglalion do despite obtaining no Wi-Max licence,” he continued.
In the latest, GP has clinched a deal with Sonali Bank, the country’s largest state-owned commercial bank, to provide them with the Go Broadband services.
The BTRC, in its observation, said that by providing services to 551 branches without involving any NTTN operator and by concealing the information to the BTRC, GP has done a severe blunder of violation of rules.
It has been doing the ISP business without obtaining any license for doing this business, BTRC observes.
When asked, Brig Gen Iqbal Ahmed, BTRC director general, told The Independent that they sought the operator’s explanations regarding their findings. “Necessary steps will be taken after getting their reply,” Ahmed added.
After receiving a complaint, the BTRC, in a letter issued on March 30, pointed out six allegations of irregularities and asked Grameenphone, ADN Telecom and Agni Systems to present their explanations by April 13.
Earlier, on February 28, Internet Service Providers Association Bangladesh (ISPAB) submitted the complaint against Grameenphone and its two partners.
When contacted, Sayed Talat Kamal, head of External Communications of GP, said, “Agni Systems Ltd and ADN Telecom Ltd, in partnership with Grameenphone, have been offering Go Broadband services with specific approval from the regulator.”
Past records of GP
GP was fined on two occasions in 2007 and 2008 for offering illegal VoIP services, compelling the company to pay Tk 418 crore to the telecoms regulator. Following the VoIP scam, GP top management had to go through a major reshuffle to retain its licence to operate in Bangladesh.
More allegations pending against GP
(1) According to a 2010 audit report initiated by the BTRC, GP has also not paid Tk 3,034 crore in taxes, and concealed certain information, including the number of its subscribers, to evade tax. The report was contested by the telecoms operator that led to litigation with the High Court. As per observation of the final verdict of the case, the BTRC will now appoint a new audit firm to reassess tax evasion by GP.
(2) According to a report of the Comptroller and Auditor General (CAG) submitted in parliament on September 8 last year, the government has incurred a loss of Tk 19.20 crore over three fiscal years by realising licence fees at a lower rate, instead of the fixed rate, while leasing out Bangladesh Railway (BR) lands to GP. Under the Land Management Policy 2006, licence fees were fixed at Tk 335 and Tk 223 per sft of land respectively in divisional towns, and in district and other town areas. However, BR realised the licence fee from GP at Tk 16, Tk 8 and Tk 6 per sft of railway land in Pakshi area in the western region in the fiscal years 2007–08, 2008–09 and 2009–10. According to the audit report, this caused huge revenue losses — to the tune of Tk 19,20,46,139. Again the GP authorities have filed a writ petition with the High Court, challenging the new enhanced rates of licence fees. The issue is now pending. GP ownership structure GP is a joint venture between Telenor (55.8%), the largest telecommunications service provider in Norway having mobile phone operations in 12 other countries, and Grameen Telecom Corporation (34.2%), a non-profit organisation of Bangladesh. The other 10 per cent shares belong to retail and institutional investors.

সুখের আয়না লাগিয়েছি ফেসবুকে!

সুখের আয়না লাগিয়েছি ফেসবুকে!
অসুখের ব্যারাম সে তো সিগ্রেটের মত পুড়ে যায়
আওয়াজ তোলে না, হুুঁকোর মত... গর গর গর
শব্দ হয় না, কেবল ব্যারাম বাড়ে।

বাড়ে জীবিকার তাগিদ, হারানোর ভয়
টিকে থাকার লড়াইটা জিইয়ে থাকে কৈ মাছের মত !
দ্রোহ প্রেমহীন প্রতিটি দিন
কেবল স্ট্রেচ, স্ট্রেচ এবং স্ট্রেচের রাত বিরাত-
প্রেমহীন, প্রীতিহীন!
একেকটা দিন।

ক্ষমা করবেন, নূর জাহান বেগম!



বেগমের সাথে আমার পরিচয় অষ্টম শ্রেণি পড়ার সময়। বেগম পত্রিকার একটা ঈদ সংখ্যা খরিদ করেছিলাম, সোনাইমুড়ি বাজারের পশ্চিম মাথার পত্রিকার স্টল থেকে। সে সংখ্যায় ঝর্ণাদাশ পুরকায়রেস্থর একটা গল্প খুব ভালো লেগেছিল। সেই সাথে অসংখ্য নারী লেখককে এক মলাটে পেয়েছিলাম।। 

বেগম পত্রিকার প্রতি সেই প্রথম প্রেম। নূর জাহান বেগম দক্ষ সম্পাদকই নন, ব্যক্তি জীবনে অত্যন্ত পরিশীলিত এবং ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন মানুষ দ্বিতীয় জন এই বঙ্গে আমার নজরে পড়েনি।

নূর জাহান বেগমের সাথে সম্বাদিকতার খাতিরে একবার দেখা হয়েছিল। সম্ভবত ২০০০ সালে। বেগমের কোনো একটা সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে। অত্যন্ত মার্জিত ও বিনয়ী নূর জাহান আপার আন্তরিক অভ্যর্থনা এবং সমাজ ভাবনায় মুগ্ধ হয়েছিলাম। 

তাঁর প্রতি আমার বিশেষ শ্রদ্ধার জায়গা হলো, বাংলা সাহিত্যে নারীর বিশেষ অবস্থান তৈরিতে তিনি অনন্য, যিনি তাঁর পিতার অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত-সমৃদ্ধ করেছেন। 

নূরজাহান বেগমের জন্ম ১৯২৫ সালে এখনকার চাঁদপুর জেলায়। ১৯৪২ সালে বেগম রোকেয়া প্রতিষ্ঠিত কলকাতার সাখাওয়াত মেমোরিয়াল হাইস্কুল থেকে তিনি মেট্রিকুলেশন পাশ করেন। এরপর ১৯৪৬ সাল পর্যন্ত কলকাতার লেডি ব্রেবোর্ন কলেজে পড়াশুনা করে বি এ পাশ করেন নূরজাহান বেগম।

বেগমের সম্পদাক নূর জাহান বেগম গতকাল সোমবার রাজধানীর একটি হসপিটালে ইন্তেকাল করেন। পরে তাঁকে মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে তাঁকে সমাহিত করা হয়েছে। বাংলা ভাষা, সাহিত্য, নারী জাগরণ, নারীদের শিল্প-সাহিত্য-নন্দনতত্ত্ব চর্চার জগতে অনন্য বেগম বেঁচে থাকবেন সবার মনে। তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি। 

সেই সাথে আমাদের দীনতার জন্য তার প্রতি ক্ষমা চাই। রাষ্ট্রের স্বাধীনতা পদক তাঁর হাতে ওঠেনি। না বিম্পির আমলে না আম্লীগের আমলে। রাষ্ট্রের এ পদক কারা পান, কারা এর জন্য নির্বাচন করেন, এ প্রশ্নটা রাখলাম। আগে কখনো করিনি। আজ করলাম। 

তাঁর মৃত্যুর পর সবার মরাকান্না দেখছি, জীবিত থাকতে তাঁর মত মানুষকে স্বীকৃতি দিতে পারিনি। নাগরিক হিসাবে রাষ্ট্রের প্রতি আমাদের জিজ্ঞাসা --- দলদাস না হলে কি বাপু রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি-সম্মান মিলবে না!

কে নেবে পাহাড়ের নিরাপত্তার দায়িত্ব?


ব্যক্তিভাবে আমি সব-মত-পথ-রাজনৈতিক-অরাজনৈতিক-সম্প্রদায়গত নিপীড়নের বিপক্ষে। সেটি যে কোনো বাহিনীরই। কিন্তু দেশের সামরিক নীতি,  নিরাপত্তা আয়োজনকে প্রশ্ন করতে পারি না। কিছু বিষয় তো এমন যেটা সরলীকরণ করা যায় না। আবেগ দিয়ে বিচার করা যায় না।  সব যদি আবেগের ওপর ছেড়ে দেয়া হয়, তাহলে বহু কিছু আমাদের হারিয়ে যেতে বাধ্য!

স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষার দায়িত্ব  প্রতিরক্ষা বাহিনীর।  সে জন্য কোথায় ঘাঁটি গাঁড়তে হবে, সেটি নির্ধারণ করার দায়িত্বটা  রাজনৈতিকের চেয়ে সামরক নীতির অংশ বলেই মানি। সে হিসাবে পার্বত্য চট্টগ্রামে সেনাবাহিনীর ক্যাম্প থাকবে কিনা--- সে সিদ্ধান্তটা আসলে সামরিক কৌশল ঠিক করা লোকদের উপরই ছেড়ে দেওয়া উচিৎ।

কিন্তু যারা প্রতিনিয়মত পাহাড়ে সেনা নিয়ে উসখুশ করেন, তারা আসলে কী বোঝাতে চান--- সেটি পরিষ্কার নয়।

দুর্গম পাহাড়ি জনপদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে  সরকার যে কোনো ধরণের বাহিনীর  সহায়তা নিতে পারে এবং সেটিই যৌক্তিক। কিন্তু  পাহাড়ে সেনা উপস্থতি  কেন থাকবে না!  এর যৌক্তিক ব্যাখ্যা কি?

সেনা সদস্যরা পাহাড়ে কী করেন--- তাদের না থাকার কারণ কি হতে পারে? এ সব প্রশ্ন  সেখানকার সাধারণ পাহাড়িদের নেই বললেই চলে।  তবে এটা নিয়ে বেশি সোচ্চার বেদিশেী ফান্ড প্রাপ্তরা। বিশেষত বেসরকারি সংস্থা ও নামকাওয়াস্তে গবেষক--- যাদের বেশির ভাগই একটা ইস্যু ধরে রেখে আলোচনায় থাকতে চান।

এক কল্পনা চাকমা অপহরণ অভিযোগ বাদে  উল্লেখ করার মত গুরুতর অভিযোগও সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে নেই!  বরং সম্প্রীতি রক্ষা, অবকাঠামোগত উন্নয়ন আর  অপরাধ দমনে তারা সেখানে  বহু বছর ধরেই কাজ করছেন;  এটা সবারই জানান।  অপহরিত বহুমানুষকে উদ্ধারে সেনাবাহিনী সফল হয়েছে।

পাহাড়ি নেতাদের কারো কারো অভিযোগ--- সেনা বাহিনী পাহাড়ে বাঙালিদের  সহায়তা করে! এ অভিযোগ যারা করেন, তাদের নিয়ে বাঙালিদের মনবেতর জীবন যাপন পরিদর্শন করলে-- এ অভিযোগ টিকবেনা ; আমি নিশ্চত করেই এটা বলছি। ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকেই বলছি।

পাহাড়ি জনপদ আর সমতলের মধ্যে তফাৎটা কারো অজানা নয়। মায়নমারের সাথে আমাদের কয়েক দফা সীমান্ত সঙ্ঘাত হয়ে গেছে। দিন দিন সে ঝুঁকি বাড়ছে। সেভেন সিস্টারের সাথে আমারে সীমান্ত আছে। খাগড়াছড়িতে অর্ধশতাধিক কিলোমিটার সীমান্ত অরক্ষিত।এ রকম প্রেক্ষাপটে পাহাড়ে সেনা উপস্থিতি না থাকা রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার জন্য প্রচণ্ড হুমকি।

তারপরেও চুক্তি মেনে ১৯৯৭ সালের পর থেকে নিয়মতই অস্থায়ী সেনা ক্যাম্প প্রত্যাহার করা হচ্ছে। এটি রাষ্ট্র বেশ ঝুঁকি নিয়েই করছে; এতেও পাহাড়ি মানুষ নিয়ে ব্যবসা করা লোকরা অসন্তুষ্ট! এ অসন্তুষ্টি হয়তো তাদের ব্যক্তিগত সুবিধা হচ্ছে; সেটি দেশর নিরাপত্তাকে হুমকি রেখে---

পাহাড়ি ও বাঙালি দু'টো জাতি সত্ত্বা আলাদা হলেও জাতীয়তা অভিন্ন। রাজনৈতিকভাবেই দু'টো জাতি সত্ত্বার সঙ্কট নিয়ে আলোচনা  অব্যাহত রেখে, আস্থার সম্পর্ক তৈরির মাধ্যমে সমস্যার  সমাধান করতে হবে।  বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন, সেনা বিরোধীতা আর বাঙালি-পাহাড়ি বিরোধ জিইয়ে রেখে এ সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়!

খবরের কাগজে ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ জানলাম---পার্বত্য চুক্তির অংশ হিসাবে  ইতোমধ্যে ২৩২টি অস্থায়ী সেনা ক্যাম্প থেকে  ১১৯টি ক্যাম্প প্রত্যাহার করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ১০ ফেব্রুয়ারি সংসদকে জানিয়েছেন, শান্তি চুক্তির আলোকে মোতায়েনরত সেনাবাহিনীর সব অস্থায়ী ক্যাম্প প্রত্যাহারের মাধ্যমে নির্দিষ্ট ছয়টি গ্যারিসন--- দীঘিনালা, খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি, বান্দরবান, রুমা ও আলীকদমে প্রত্যাবর্তনের বিধান রয়েছে।

তিনি জানিয়েছেন, গ্যারিসনের প্রয়োজনীয় অবকাঠামোগত উন্নয়নও চলমান।  রুমা গ্যারিসনের ৯৯৭ একর ভূমি অধিগ্রহণের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। গ্যারিসনসমূহের অবকাঠামোগত উন্নয়ন সম্পন্ন করে সময়োচিতভাবে অস্থায়ী ক্যাম্প প্রত্যাহারের মাধ্যমে মোতায়েনরত সেনাবাহিনীকে নির্দিষ্ট গ্যারিসনসমূহে প্রত্যাবর্তনের পরিকল্পনা রয়েছে।

আর ৮ মে বেইলি রোডে অফিসার্স ক্লাবের পাশে দুই একর জমির ওপর পার্বত্য চট্টগ্রাম কমপ্লেক্স নির্মাণের ভিত্তিফলক উন্মোচন অনুষ্ঠানে সেনা ক্যাম্পগুলো অধিকাংশই তুলে নেয়া হয়েছে জানিয়ে  প্রধানমন্ত্রী  বলেন, 'যা সামান্য কিছু আছে- চারটি জায়গায় কেবল ৪টি ব্রিগেড থাকবে। বাকিগুলো সব সরিয়ে নেয়া হবে। যে জন্য রামুতে আমরা একটা সেনানিবাস করেছি।'

পার্বত্য চট্টগ্রাম আইন-২০০১ এর কতিপয় সংশোধনীর বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'এ বিষয়ে পর্যালোচনা চলছে এবং দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব এবং সাংবিধানিক কাঠামোর মধ্যে সম্ভব সবকিছু করতেই সরকার প্রস্তুত রয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রামের অধিবাসীরাও বাংলাদেশের নাগরিক। সুতরাং সরকার ওই অঞ্চলের সড়ক যোগাযোগ, বিদ্যুৎখাত এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির উন্নয়নে ব্যাপক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।'

পাহাড়ে বাংলাভাষি নাগরিকরা এর প্রতিবাদ করছেন। হরতাল অবরোধ করবেন বলে হুমকির খবরও আমরা দেখছি। এটা কতটা দরকার সেটাও ভাববার দরকার। একই সাথে সেনা তুলে নেবার পর সেখানকার নিরাপত্তা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করাটাও জরুরী। সেনা উপস্থিতির মধ্যেই সেখানে অহরহ গোলাগুলি আর খুনের ঘটনা ঘটছে। সেনা তুলে নিলে সেখানকার নিরাপত্তা ঝুঁকি কাটাতে সরকার সেখানে অন্য কোনো নিরাপত্তা বাহিনীর উপস্থিতি বাড়াবে? কে নেবে নিরাপত্তার দায়িত্ব?  এমন প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে!

কিস্তি ৪৩: রমণী জগতে

ক্যাম্পাসে নারী জগতে আমার সমধিক খ্যাতি ছিল। ইহা অস্বীকার করিবার মত ইচ্ছে আমার নেই। তবে ইহাও সঠিক যে আমি কাহারো কোনো অনিষ্ট করি নাই, করিবার ইচ্ছেও করিনি। এতেই হয়তবা এখনো আমার পুরনো নারী বন্ধুদের সাথে যোগাযোগ রাখার সুযোগ থাকছে। আছেও বটে। ইহা শুনিয়া অনেকে আশ্বস্ত হইবেন। আশা করি। 

আমার বন্ধূ আসমাউল হুসনা লাকীর মতে ‌আমার মত ‌'বেক্কল' কে কেন নারীরা পছন্দ করতেন , তাহার কোনো কারণ অনুসন্ধান করিয়া আবিষ্কার করিতে পারি নাই। কাহারো জানা থাকিলে জানাইবেন। নিজের কীর্তি নিয়া আমি মহা বিরক্ত। 
ক্যাম্পাসে আমার সবচেয়ে কাছের বন্ধু কে? এর উত্তরে অনেকের নাম বলতে হবে। তবে রিফাত, ফজিলাতুননেসা মুজিব হলে থাকতো। আমি ও শামীম (বর্তমানে রেডিও টুডেতে আছে) দুজনেই প্রায় আড্ডা দিতে তার হলে হাজির হইতাম। রিফাতও এসএম হল, সাংবাদিক সমিতি এবং বঙ্গবন্ধু হলে আসিত। আমাদের মধ্যকার সম্পর্ক খুবই ভালো ছিল। 

ক্লাশে আমার বেশ কয়েকজন বন্ধু ছিল। এর মধ্যে তাপসী রাবেয়া, যাকে আমি অতসী বলে ডাকতাম। সানজিদা, যাকে আমি ডাকসু কাফেতে সেকেন্ড ইয়ারের সময় বলেছিলাম , আমাকে যেহেতু তোর এত পছণ্দ তাইলে চল কাঁটাবন কাজি অফিসে গিয়া বিয়া কইরা ফালাই। ও তো পুরাই বেক্কল হইয়া আমার দিকে তাকাইয়া থাকিল, বুঝিতে পারিল না- বেকুব কে? আমি না ও। 

আমার ক্লাশের মাহফুজা খানম রিফাত, শিউলীর সাথেও আমার ভালো সম্পর্ক ছিল। আশার কথা ভোলা যাবে না। তবে ও আমাদের যে মেয়ে ক্লাশমেটের সাথে ঘুরতো, তাকে আমার পছন্দ ছিল না। পরে অবশ্য পারভেজের সাথে ওর সম্পর্ক হওয়ায়া অন্য সবার চেয়ে আমি একটু বেশি খুশি হয়েছিলাম, ও অন্তত নটি গার্লের পাল্লা থেকে রক্ষা পেলো। 
আমার ক্লাশের অন্য বন্ধুদের মধ্যে পিপি, সাথী, হ্যাপি আরো অনেকের সাথে আমার ভালো সম্পর্ক ছিল। কিন্তু আমাদের শিক্ষাজীবনে বিশেষ কোনো আনন্দ আয়োজন না থাকায় আমরা আরো ঘনিষ্ঠভাবে মিশিবার সুযোগ পাই নাই। তার ওপর আমার মত একজন সম্বাদিকের সাথে আড্ডা মারিবার জন্য যে সময় দেয়া প্রয়োজন, সেটি আমি দিতে পারি নাই বলিয়াও নানান সমস্যা ছিল। 
কয়েকজন রাজনৈতিক কর্মী আমাকে বেশ পছন্দ করিতেন বলিয়া জানি, কিন্তু তাহারা পদ ও পদবির জন্য তাহাদের দলের নেতাদের মনোরজ্ঞন করিয়াছেন, জানিবার পর তাহাদের সাথে আমি আর সহজ হইতে পারি নাই। 
শামসুন্নাহার হলের এক নেত্রী আমার প্রায় প্রেমেই পড়ে গেছিলেন। শেষ পর্যন্ত আল্লাহ রক্ষা আমি বেঁচে গেছি। উনি এখন বিসিএস কর্মকর্তা। বড়ই ভাগ্যবান। আমি নগরের কেরানী। তবে খারাপ না ভালো আছি। 
আমার একজন সিনিয়র বন্ধুর না কথা না বললে এটি অপূর্ণ থেকে যাবে, সে হলো বনানী। বনানী মল্লিক। খুবই হাসিখুশী । তবে আমার রুমমেট মাসুদ ভাই বলতেন মাথায় হাল্কা ডিস্টার্ব। বনানী এই লেখা পড়লে আমার মাথা ফাটাবে। মাসুদ ভাই আরো জানিয়েছেন সাংবাদিক সমিতির সদস্য সাবু ভাই তাকে পছন্দ করতেন, তবে শেষ পর্যন্ত ব্যাটে বলে হয়নি। যাক গে সে কথা। বনানী মানবজমিনে জয়েন করার পর গোপাল দা-র চেশ্বারে সাবু ভাই আমাকে তার সাথে পরিচয় করিয়ে দেন। ওর সাথে আমার ক্যাম্পাসের অনেক আড্ডা, দুষ্টুমি, শেয়ারিং। ভালোই ছিল। ২০০২ সালের দিকে আমার ছোটবোন অসুস্থ হয়ে ঢাকার একটি প্রাইভেট হাসপাতালে ভর্তি হলে ও দেখতে গেছিল। আমার মায়ের ধারণা ছিল আমি ওকে পছন্দ করি। মা খুব খুশী মনে তার খবর নিয়েছিলেন। পরে অবশ্য মা বুঝতে পারেন উচি যেটা অনুমান করেছেন সেটি ভুল ছিল। 
আমার আরেকজন বন্ধূর নাম বলিতে হইবে। সে হইলো তিতলি। ব্ল্যাকবেল্ট পাওয়া, আমার দেখা একমাত্র কন্যা। সেনা কর্মকর্তার কন্যাকে আমার বেশ ভালো লাগিত। আমার বন্ধূ বাবকু ও মাহমুদ বলিত, তুই যদি তিতলিকে বিয়ে করিতে চাস, তাইলে তারে প্লাস্টিক সার্জারি কারানোর ব্যবস্থা করা হইবে। মানে কন্যা বর্ণে কৃষ্ণ। ইহা নিয়া আমার কোনো আপত্তি না থাকিলেও আমার বন্ধুদের ছিল। আমি বলিলাম, বিয়া করিবাবার কোনো ইচ্ছা এখন নাই। যখনই হইবে তখন কণ্রা খু*ঃঁজিয়া বাইর করিলে চলিবে। ফরে অবশ্য আমি সে সুযোগ কাউকে দেই না। নিজের পাত্রী নিজেই বাহির করিয়া ছিলাম। 

নারী বিষয়ক ক্যাম্পাসে যে সব বিশেষজ্ঞের কাছে আমি হার মানি তাদের মধ্যে আমার গুরু আজাদ বস, মাসুদ ভাই ও সাইমুম ভাই। এসএম হল ও বঙ্গবন্ধু হলের আমাদের বহুত জোছনা ভরা রাত কেটেছে এ সব আড্ডায়। ফোনে অনেকের সাথে পরিচয় কথা বার্তা হতো, সে সব নিয়ে নিজেদের আড্ডাও জমত বেশ। একাই নারীর সাথে আজাদ বস, সাইমুম ভাই ফোনে আলাপ করতেন, ভিন্ন ভিন্ন ভাবে আমি তাদের কাছ থেকে তা জেনেছি। নম্বর মিলিয়ে দেখেছ ঘটনা সত্য। আজাদ বস. সাইমুম ভাই , মাসুদ চৌধুরী এদের নিয়ে একটা আলাদা পর্ব না লিখলে অবিচার করা হবে। তাই সামনের কোনো এক পর্বে এ নিয়ে বিস্তারিত লিখবো। 
যারা আমার নারী বিষয়ক গল্প শুনতে চেয়েছিলেন, তাদের জন্য এই পর্বখানা উৎসসর্গ করিলাম, বিশেষ করে তানভী। যে মনে করে আমি রয়ে সয়ে সব বলছি, তার জন্য। 

কিস্তি ৪২: মজা লন

সাংবাদিক সমিতির নেতৃত্ব নিয়া নানা কিসিমের গণ্ডগোল ছিল। যেমন নোয়াখাইল্যা, বরিশাইল্যা বিভাজন। মজার ব্যাপার বরিশ্যাইল্যাদের নেতা আবার যশোর আর চাঁদপুরের। নোয়াখাইল্যাদের নেতা নোয়াখাল্যাই ছিল। এর ভেতর আবার অনেকে অন্য অনেক এলাকার ছিলেন। সব মিলিয়ে ভালোই চলছিল। আমি যে গ্রুপে ছিলাম সে গ্রুপ লিডার প্রথম দিকে ছিলেন বরিশাইল্যা মামুন ভাই। পরের লিডার ময়মনসিংহের কবির ভাই। আমি ডেপুটি লিডার ছিলাম। নেয়াখাইল্যা। 

সাংবাদিক সমিতির রাজনীতিটা মোটা দাগে দুভাগে বিভক্ত। একথা আমি আগেও বলেছি। ছাত্রলীগ সমর্থক গ্রুপ এবং তাদের এন্টি গ্রুপ। মজার ব্যাপার হলো ছাত্রলীগ সমর্থক গ্রুপে লোক বেশি, ভোটার কম। ভোটার কম মানে ভোটে দাঁড়াইলে আমরা ভোট পাইতাম কম। দু চাইরটা ভোট নাই। সেকি অবস্থা। বলেন দেখি। 
এখান থেকে কবির ভাই কয়েকবার ইলেকশন করেও সভাপতি হইতে পারেন নাই। আমি নিজেও সেক্রেটারি খারায়া ডিপিট মারছি। হে হে হে। তবে ন্যাড়া একবারই বেল তলায় যায়। আমি একবারই গেছি। দ্বিতীয়বার ইলেকশন করতে চেয়েছিলাম কিন্তু গ্রুপের ভোটেও এগিয়ে ছিলমা, কিন্তু শেষ পর্যন্ত তুষার ভাই জিতবেন বলে নিশ্চিত করাই ছেড়ে দিয়েছিলাম। উনি কথা রেখেছেন, উনি জিতেছেন। তবে কবির ভাই ডিপিট খাইছেন। 

এন্টি ছাত্রলীগ সমর্থকদের অনেকে শিবির ঘরাণার। এক দুজন ছাত্রদলের ছিলেন। আমি তাই ও পথে ছিলাম না। তবে অনেক প্রগতিশীল, এখন জামাত শিবিরের গুষ্টি উদ্ধার কইরা টিভি চ্যানেল আর পত্রিকায় মজা লন, এ রকম অনেকে তলে তলে , আবার অনেকে সরাসরি শিবির ঘারনার গ্রুপে ছিলেন। শিবিরের নুন খাইয়া নিজের নাম সাংবাদিক সমিতির প্রেসিডেন্ট সভাপতির লিস্টে তুলেছেন। কিন্তু উনাদের নাম নেয়া যাবে না। নিলে উনারা মাইন্ড করবেন। উনাদের একটা ইজ্জত আছে না। এ ক্ষেত্রে একজনের নাম তবুও লইতে হয়। উনি সম্রাট ভাই। শিবির সমর্থক গ্রুপ থেকে উনি সভাপতি হইছেন। 

এ রকম আরো অনেকে আছেন। শিবিরের দয়ায় সাংবাদিক সমিতির বোর্ডে নাম তুলছেন । তবে এ ক্ষেত্রে কবির ভাই ব্যাতিক্রম। তাকে তার অনেক বন্ধু অপছন্দ করে। আমি তাদের বিরোধীতা করি। কারণ কবির ভাই আর যাই হোক চূড়ান্তভাবে তার গ্রুপের বিরুদ্ধে গিয়ে সমিতির বোর্ডে নিজের নাম তুলিবার চেষ্টা করেন নাই। সবাইকে সাংবাদিক সমিতির সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদক হইতে হইবে এমন কোনো কথা নেই। আমি তাকে এ জন্য অভিনন্দন জানাই। 

যেখানে একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান এবং মুক্তিযোদ্ধার সমর্থক হিসাবে নিজেকে পরিচয় দিয়ে রাতের আঁধারে আঁতাত করে নিজের যোগ্যতা না থাকার পরেও শিবিরের দয়ায় সভাপতি ছিলেন। কিন্তু উনার মুখে বাইরে কেবল শিবির বিরোধি কথা বার্তা। 

সাংবাদিক সমিতির রাজনীতি করে আমার অভিজ্ঞতা হইলো যারা শিবিরের সবচেয়ে বেশি বিরোধী তারা সবাই শিবিরের কোনো না কোনো ভাবে সুবিধাভোগি। এবং খুব ভালো রকমের সুবিধা হাসিল করেছেন। তাদের বিরুদ্ধে কিচ্ছু বলা যাবে না। অনেকটা ভাসুরের নাম নেয়া যাবে না টাইপের অবস্থা। 

এ লেখাটার জন্য অনেকে ক্ষেপবেন জেনেও নতুন প্রজন্মের বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টারদের দিকে তাকিয়ে এটি লিখলাম। যে কাউকে তার নিশ্চিত পরিচয় জেনে সমর্থন দেয়া উচিৎ বলেই আমি মনে করি। এখনো বিশ্বাস করি সাংবাদিক সমিতির মুখোশের আড়ালে লুকনোর রাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসা উচিৎ।


৩০ শে মে, ২০১৩ বিকাল ৩:৩৬

কিস্তি-৪১: এত রাতে কে রে?

সাংবাদিক সমিতিটা ছিল অন্য রকম এক আনন্দ আড্ডার জায়গা। বিকাল বেলায় ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে যুগল আড্ডা দেখতে দেখতে আমরা সাংবাদিক সমিতির অফিসে ঢুকতাম। নিজেদের প্রিয়জন বেলা ডোবার আগেই হলে কিংবা বাসায়। তাতে কারো আফসোস ছিল না। কারণ রিপোর্টারদের জীবনটা এমনই। 

আমাদের সময় বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার হিসাবে কোনো নারী ছিলেন না। পরে ছিলেন বিডি নিউজের তানভী, এখন ইনডেপেনডেন্ট টিভিতে ও নিউ এজের একজন। আগে ছিলেন ফারজানা রূপা। সে সময় মাতৃভূমিতে কাজ করতেন। 

তবে নারী মুক্ত এ সাংবাদিক সমিতিতে কম মজা হতো না। আমাদের মধ্যে সবচেয়ে মজার পাবলিক ছিলেন মঈনুল হক চৌধুরী সাহেব। উনি সে সময় অর্থনীতি পত্রিকার বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার ছিলেন। ছোট বড় সবাইকে আপনি করে বলেন। চাটগাঁর ছেলে মইনুল রসে ভরা। সে রকম রসালো সব কথা তার। আমার তাকে বেশি ভালো লাগতো। কারণ হলো মঈনুল ভাই সব সময় হাসি মুখে থাকতেন। এটা তার ভালো গুণ। সবচেয়ে বড় গুণ হলো কারো ওপর রাগ না করা । এক কথায় এ ক্ষেত্রে অসাধারণ। আমাদের মধ্যে যারা এডাল্ট জোকস বলে সবাইকে মাতিয়ে রাখতেন, মঈনুল ভাই তাদের একজন। অন্যজন আবুল কালাম আজাদ। চুটকি আজাদ নামে তার সমধিক খ্যাতি ছিল। সে সময় মুজাদ্দেদ পত্রিকায় কাজ করতো। মজার লোক আজাদ আমাদের ভালো বন্ধুও বটে। প্রেম ট্রেমের ধারে কাছে নেই, ক্লাশ পরীক্ষা আর অফিস নিয়ে মতোয়ারা। 

রাতে ফিরে সবাই সাংবাদিক সমিতির চ্যানেল বদল নিয়ে হাতাহাতি, ঝগড়া আবার যাবার বেলায় সব মিটমাট। সে সময় আমরা হিন্দি রিমিক্স গানগুলো বেশি দেখা হতো। সেই রকম সব রগ রগে দৃশ্য। যেহেতু কোনো তরুণী এখানটায় রাতের বেলা ঢু মারতেন না। তাই এখানে সেন্সর করে টিভি দেখার প্রয়োজন ছিল না। সে সময় সোনিয়া গানটা খুব জনপ্রিয় ছিল । আমরা সবাই মিলে উপভোগ করতাম। 

আমাদের মধ্যে আরেকজন ছিল মজা করতে পছণ্দ করতেন তিনি শঙ্কর দা। বাইরে থেকে দেখে বেশ রাশভারি মনে হলেও তার মনের ভেথর যে এত অফুরান আনন্দ আছে সেটি অনেকে টের না পলেও আমরা জানতাম। সব মিলিয়ে সাংবাদিক সমিতির বিকাল গুলো ভরে উঠতো আনন্দ আড্ডা আর নিউজ শেয়ারিংয়ে। কাজের ফাঁকে ফাঁকে চলতে কৌতুক, হাসি ঠাট্টা। শেষের দিকে আমাদের এই নটি কৌতুক আসরে যুক্ত হয়েছিল শামীম। সে ডেইলি ইনডেপেনডেন্টে ছিল। বর্তমানে রেডিও টুডেতে। তবে সেলিম ও ইশতিয়াক ওরা দুজনেই এখন নিউজ রুম বস। ওরা এ ধরণের কৌতুকে আগ্রহ দেখাতো না। ইশতিয়াক এখন বাংলা নিউজের চিফ অব করসেপনডেন্ট এবং সেলিম হেড অব নিউজ, রেডিও টুডে। আমার দেখা দুজন অসম্ভভ ভালো ছেলে। ওদের নিয়ে পরে কোনো একটা আলাদা কিস্তি লিখতে হবে। 

অনেকে আমাকে কৌতুকের জণ্য চাপাচাপি করতেন। আমি একটাই এডাল্ট কৌতুক জানতাম। সেটি শোনানো যাচ্চেছ না। তবে সে সমসয় বন্ধুরা সবাই বলত‌ 'এত রাতে বুকের ওপর কে রে? মাসিমা আমি অমল ... ‌বাবা অমল... এ যে পাপ... এ যে অধর্ম'। এটা নিশ্চয় প্রথম আলোর মোশতাক, বাংলা নিউজের ইশতিয়াক, রেডিও টুডের শামীম, বিডি নিউজের মঈনুল ভাই , সরকারি চাকুরে আজাদ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক যাকারিয়া ভাই, ডেইলি স্টারের তুষারসহ অনেকে বুঝতে পারছেন। এ কৌতুকটা মাসিমার সাথে ভাগ্নের ফিজিক্যাল রিলেশন নিয়ে !
২৯ শে মে, ২০১৩ রাত ৮:৩৭

কিস্তি ৪০ ::সম্পূরক প্রেম

৩৯ তম কিস্তিতে কয়েকজনের নাম বাদ পড়েছে। তাদের মধ্যে আমাদের বহুমাত্রিক প্রেমিক ডেইলি স্টারের হাসান জাহিদ তুষার অন্যতম। এখন সংসার করছেন। ভালো আছেন। তার বাইকের পেছনে কাউকে না কাউকে দেখা যেতো। এখন রিপোর্টিং ও সংসার নিয়ে ব্যস্ত। তবে তার যে সব বন্ধুদের সাথে সম্পর্ক ছিল তাদের কোনো একজনের সাথে সংসার করা হয়নি। 

একই অবস্থান তাদেরই বন্ধু ও এক সময়কার বিএসএস-'র রিপোর্টার নুরুল করিম ভাইয়ের। পুরো দস্তুর কর্মমুখর জীবনে গিয়ে তার যে বিয়ে করা, সেটিও অবশ্য প্রেমের। 
ইত্তেফাকের সাহাবুল হকের প্রেম বিষয়ক গল্প শোনা গেছে। তবে তাকে কারো সাথে পাওয়া যায়নি। ক্যাম্পাস রিপোর্টিংয়ে থাকার শেষের দিকে সুজন মেহেদী প্রেম করতো লাকীর সাথে। এর ইতিবাচক গতিও ছিল। ওরা এখন সংসার করছে। এক কন্যা সন্তান নিয়ে ভালোই আছে সুজন। 

মাসুম আল জাকী সে সময় ছিল অবজারভারে। ওর বউ মুক্তা থাকত মৈত্রী হলে। ও আসত সাংবাদিক সমিতে। প্রায় আমাদের সবার সাথে আলাপ হতো। অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে জাকি ও মুক্তা এখন সংসার করছে। এটাও কোনো অংশে কম আনন্দের খবর না। 
যুগান্তরের মুসতাক পুরনো ঢাকায় এক তরুণীকে পছন্দ করতো বলে জানতাম। তবে তারও সেই একই কপাল তাকে তার বিয়ে করা হয়নি। তবে তার বিয়েটা প্রেমের কিনা সেটি আমি জানার চেষ্টা করিনি।

শিপু যে প্রেম করতো, সেটা আমার জানা ছিল না। শিপু হলো আমার দেখা অসাধারণ একটা ছেলে। আমি ওকে খুব পছন্দ করি। এর সবচেয়ে বড় কারণ হলো আমার প্রতি ওর অনুরাগ। শিপুর প্রেমের খবর জেনেছি, ওর বিয়ের বছর খানেক আগে। ওকে আমার নিজের ছোট ভাইয়ের মত দেখি বলে, আমার কাছে ও বড় হয়নি কখনো। এখনো না। তাই ওর এ দিকটার খবর বেমালুম ভুলে ছিলাম। 

নিজের কথা আমি বলতি চাইছলাম না। কিন্তু এত বেশি ফোন পেয়েছি যে তা না বললেই নয়। আমার প্রেম বিষয়ক বড় কোনো গল্প নেই। এর সবচেয়ে বড় কারণ আমি স্ট্রেইট কাট কথা বলি্ । পুতু পুতু টাইপের আলাপের ধারে কাছে যাই না। তবুও এর ভেতর দিয়ে বেশ কয়েকজন তরুণী আমাকে পছন্দ করতেন। তাদের মধ্য থেকে একজন নিয়ে আমি সংসারী। দু সন্তানের জন্ক হিসাবে ভালোই তো আছি। 

আমার প্রেম ছিল মূলত লেদার কলেজে। আমার অনুজ শিপু যেটাকে চামড়া পট্টি বলতে পছন্দ করে। তাতে আমার কোনো আপত্তি নেই। তবে আমার সে সময়কার প্রিয় মানুষটিকে সময় দেয়া হতো কম। এখনো এমনটা ঘটে। ও আসত সাংবাদিক সমিতিতে। অথবা মধুতে। আমরা এর বাইরে ক্যাম্পাসের কোনায় কানায় চিপায় চাপায় আড্ডায় অভ্যস্ত ছিলাম না। কারণ এটাকে আমি বরাবরই এড়িয়ে চলার চেষ্টা করেছি। 

লীনার সাথে আমার প্রেমের বয়স কম। আমরা অল্প সময়ের মধ্যে বিয়ে করেছিলাম। অনেকটা ইঁচড়ে পাকা টাইপের ব্যাপার। তবে আমার আসলে প্রেম করার মত সময় ছির না। সারাদিন নিজেকে ব্যস্ত রাখটা আমার একটা স্বভাব। যদিও কোনো মেয়ের এমন ছেলে পছন্দ হবার কথা নয়। কিন্তু আমাকে তারপরেও কিছু তরুণী তাদের মনে কোনায় জায়গা দিযেছেন। তাদের কাছে আমার কৃতজ্ঞতা প্রকাশের সীমা নেই। 

২৭ শে মে, ২০১৩ বিকাল ৩:৪৯

কিস্তি ৩৯: নারীর কোমল হাতের স্পর্শ

নারীর কোমল হাতের স্পর্শ সবারই প্রত্যাশা। কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে যারা রিপোর্টিং করেন, তাদের এ ভাগ্যটা খুবই কম হয়। বলা হয়ে থাকে সাংবাদিকদের নারীরা পছন্দ করেন না। তাই সাংবাদিকরা একটু নারী বিদ্বেষীও বটে। কিন্তু এটা যে সর্বাংশে সত্য নয় সেটি প্রমাণ করে দেয়াটাই ছিল আমার মূল লক্ষ্য। 

সাংবাদিক সমিতির অনেক সিনিয়র সদস্য প্রেম পীরিতিতে জড়িয়ে ছিলেন। তাদের মধ্যে সে সময়কার ইউএনবির সাজু ভাই, ইনপেডপেনডেন্টের খাদেমুল ইসলাম হৃদয় ভাই, ইনকিলাবের যাকারিয়া ভাই, প্রথম আলোর সম্রাট ভাই অন্যতম। তবে এদর মধ্যে কেবল সম্রাট ভাই-ই ক্যাম্পাসে ডেটিংয়ে ব্যস্ত থাকতেন বলে সবাই এ জুটির খবর রাখতেন। বাকিদের কথা্ জানা গেছে পরে। তারা লুকিয়ে চুকিয়ে কাটাতেন সময়।

সে যাই হোক মুখর ক্যাম্পাসে আমি প্রথম মেয়ে বন্ধুদের সামনে নিযে আসার উদ্যোগ নিলাম। এমনকি সাংবাদিক সমিতিতেও আসতেন আমাদের বান্ধবীরা। প্রথম দিকে এটা নিয়ে অনেকে জ্ঞান দেয়ার চেষ্টা করলেও পরে হালে পাননি। কারণ তারাও কিন্তু ক্যাম্পাসের বাইরে বন্ধবীদের সাথে আড্ডা দিতে যেতেন। 

আমাদের মধ্যে অনেকেই নিজের পছন্দে পরে বিয়ে করেছেন। অনেকের প্রেম টিকেনি। এর মধ্যে অন্যতম সম্রাট ভাই। ক্যাম্পাস লাইফে যার সাথে তার সম্পর্ক ছিল, স্থায়ী জীবনে তার পাওয়া হয়নি। একই অবস্থা সে সময়কার আজকের কাগজের রিপোর্টার কবীর ভাইয়েরও। হয়নি আমাদের বন্ধু শামীমেরও। একই অবস্থা অনুজ সুজন মেহেদীর। 

তবে আমাদের অনুজ মিজান শেষ পর্যন্ত সম্প্রতি সফল হয়েছে। দীপার সাথে সংসার শুরু করেছে। অনেক আগে থেকে তাদের সম্পর্ক ছিল। ধারণা করা হচ্ছিল তাদের বিয়েটা হবে না। কিন্তু শেষ পর্যন্ত হয়েছে এতেই প্রশান্তি। 

আমাদের কয়েকজন বন্ধু বাইরে প্রেম করতেন। এর মধ্যে সে সময়কার জনকণ্ঠের রিপোর্টার মোশতাক চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে। ভোরের কাগজের রিপোর্টার অভি প্রেম করতো গোপালগঞ্জে। আমাদের সিনিয়র ও ডেইলি স্টারের শামীম ভাই প্রেম করতে কুমিল্লায়। এখন জার্নালিজমের টিচার শামীম মাহমুদ পরে তাকে বিয়ে করতে সমর্থ হন। মোবাইলফোনেই ভাবির সাথে তার পরিচয়। সেই ২০০১-২০০২ সালের দিকে এটা এক্সপেনসিভ প্রেম! তবে সফলতার জন্য আমরা তাকে অভিনন্দন জানাই।

তবে এ সব প্রেম, বন্ধুত্ব বা আড্ডায় সময় কম দেয়া হতো রিপোর্টারদের। কারণ পড়াশোনার সাথে সাথে চাকুরী করার এ সব তরুণকে সারাক্ষনই ব্যস্ত থাকতে হয়। যারা তাদের সাথে সম্পর্ক করেছেন তারা এটি মেনেই নিয়েছেন। তাই সুবিধে হয়েছিল।

২৬ শে মে, ২০১৩ দুপুর ২:৫০

কিস্তি-৩৮:শেষ পর্যন্ত তালা খোলা হলো

২০০২ সালের শুরুর দিকের ঘটনা।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয সাংবাদিক সমিতিতে তালা। বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টাররা গাছতলা, হাটতলা আর ক্যান্টিন- ফ্যান্টিনে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। এ নিয়ে কারো কোনো কথা নেই। আমি বিষয়টি নিয়ে সিনিয়রদের সাথে কথা বলি, জানাই একটা উদ্যোগ জরুরী। সমিতি খোলা থাকাটা খুবই দরকার। সবাই একমত। কিন্তু কাজটা করবে কে? 

সাংবাদিক সমিতি তখন মোটা দাগে দুভাগে বিভক্ত। দপক্ষই ছাত্রলীগ সমর্থক। এক গ্রুপের নেতা মামুন ভাই। জনকণ্ঠের রিপোর্টার ছিলেন। এখন নিই ইয়র্কে বাংলাদেশের প্রেস সেক্রেটারি। আরেক গ্রুপ খোকন ভাইয়ের। উনিও আমেরিকা থাকেন। সেখানে চ্যানেল আইয়ের প্রতিনিধি। 

কিন্তু দুপক্ষের সহযোদ্ধারা সমিতি অফিস খুলতে চাইলেও পারছিলেন না। শেষে সমিতির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য খায়রুল আনোয়ার মুকুল ভাইয়ের হস্তক্ষেপে অফিসের তালা খোলা হলো। সবার মাঝে প্রাণ ফিরে এলো। সারা দিন ক্লাশ, অ্যাসাইনমেন্ট, সোর্স ম্যান্টেইন শেষে সবাই বিকাল বেলা সাংবাদিক সমিতির দপ্তরে আসতেন। বেশ আড্ডা জমতো। সিনিয়র জুনিয়র সবাই মিলে আ্ড্ডায় মশগুল হতেন । গ্রুপিংয়ের নোংরা দিকটা আস্তে আস্তে আড়াল হতে থাকলো। মুকুল ভাই সে সময় জনকেণ্ঠ ছিলেন। এখন এনটিভির চিফ নিউজ এডিটর। 

সাংবাদিক সমিতির সেই সময়কার এই গ্রুপিং সঙ্কট পরে আরো প্রকট হয়েছিল। বলা হয়ে থাকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির ৩১ সদস্য হলে গ্রুপ ৩২ টা। আসলেই তাই। এখানে সবাই সবাইকে খুব 'বুঝদার' মনে করেন। এর সাথে অন্য কেউ একমত হতে পারেন। আবার নাও হতে পারেন। 

এই গ্রুপিং যন্ত্রণার ভেতরেও সবাই সবার সাথে সদ্ভাব বজায় রাখার চেষ্টা করছেন। আমাদের আগে সমিতির গ্রুপিং নিয়ে একে অন্যকে অপমান করার ঘটনাও ঘটেছে বলে শুনেছি্। পরে অবশ্য আমাদের এ সব দেখতে হয়নি। সে জন্য শুকরিয়া আদায় করছি।

আমি বরাবরই গ্রুপিং রাজনীতিতে ছিলাম, তবে সব গ্রুপের রিপোর্টারদের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখার চেষ্টা আমার ছিল। এখনো আমি সেটি অব্যাহত রাখার চেষ্টা করি। যদিও সাংবাদিক সমিতির আমি কোনো বড় কর্তা হিসাবে নির্বাচিত হইনি, তবে সব সময় আলোচনায় ছিলাম। এখনো অনেকে আমাকে চেনেন এতেই আমার তৃপ্তি। 

২৫ শে মে, ২০১৩ দুপুর ১:৩৫

কিস্তি-৩৭: ঘটনার পেছনের ঘটনা

বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার হিসাবে আমার ওপেন হওয়ার কয়েকদিন পরে মধুর ক্যান্টিন, গোপাল দা'র দপ্তর এবং আশরাফ ভাইয়ের চেম্বারে যাতায়াত শুরু করলাম।
বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টারদের প্রায় সবাই ছিলেন অচেনা। আমি আস্তে আস্তে চেনার কাজ শুরু করেছি। ডাকসুর সামনে গাছের সাথে হেলান দিয়ে দাঁড়ানো ফরিদ আহমেদ সাজু ভাই। সে সময় উনি কাজ করতেন ইউএনবি -তে। এখন বিসিসিতে আছেন।
আমার পছন্দের সাংবাদিকদের একজন। সাজু ভাই নামেই আমরা তাকে চিনি। সাজু ভাই যে কোনো ঘটনার পেছনের ঘটনা খুঁজে বের করতে অসাধারণ প্রতিভাধর। তার কাছে অনেক কিছুই শেখার আছে। হালকা পাতলা মানুষ সাজু ভাই হালাকা বিড়ি বুড়ি খান। সাথে পানীয়ও। আমি ও তার সহযোগি ছিলাম।
ভালো লাগতো সাজু ভাইকে, তার সবচেয়ে বড় কারণ উনার একজন ভালো রিপোর্টার।
আমি তাকে সালাম দিয়ে পরিচয় জানতে চাইলে বললেন, রূপালীতে কাজ করেন। আমি তাই সত্য ধরে নিই। পরে অবশ্য অন্যদের সাথে আলাপে জানি উনি ইউএনবিতে কাজ করেন।
সাজু ভাই পরে খুব ফ্রেন্ডলি। আমার সাথে তার সম্পর্ক এখনো চমৎকার। আমাকে পছন্দ করেন বলেই জানি। এখনো যোগাযোগ আছে।
সাজু ভাইয়েরা সে সময় বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টিংয়ের শেষ পর্যায়ে ছিলেন। এ রকম যে ক'জনই ছিলেন তাদের মধ্যে সাজু ভাই খুবই শার্প রিপোর্টার।
সাজু ভাই ছাড়াও অন্য আরো অনেকের সাথে অল্প সময়ে সখ্যতা গড়ে উঠেছিল। সে সুবাধে বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টিং এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের আনাচে কানাচের খবরের উৎস গুলো দ্রুত রপ্ত করে নেয়র সুযোগ হয়েছিল আমার। এ কারণেই হয়ত সবার আগে অনেক খবর পেতে শুরু করলাম। অনেকে মনে মনে ঈর্ষা করতেন। তাতে কিচ্ছু যায় আসে না। তার ওপর সাংবাদিক সমিতির রাজনীতি। আমি কোন দলে ভিড়ব, কোন দলের সাথে থাকবো তা নিয়ে সংশয় চলছিল। আমি খুঁজলাম কারা আমার সাথে চলতে পছন্দ করতেন তাদের, সিদ্ধান্ত ছিল যে গ্রুপেই থাকিনা কেন, সবার সাথে সমান সম্পর্ক। একই সাথে সবার সাথে সবার একটা সৌহার্দপূর্ণ সম্পর্ক সৃষ্টিরও ইচ্ছে ছিল। যেটি পরে আমার বিপরীত গ্রুপের বন্ধু শামীম কন্টিনিউ করেছিল।
পরের কিস্তি সাংবাদিক সমিতির তালা খোলা নিয়ে

১৯ শে মে, ২০১৩ দুপুর ১২:৪২

কিস্তি -৩৬ :শত চাপ উপেক্ষা করেও তিনি অবিরাম লিখে যাচ্ছেন!

মতি ভাই, মানে মতিউর রহমান চৌধুরী। আপাদমস্তক একজন পেশাদার সাংবাদিক। বিএনপির প্রতি তার সফট কর্ণার আছে। কিন্তু রিপোর্ট যদি সত্য ও সঠিক হয়, তথ্য যদি ঠিক থাকে সে রিপোর্ট আটকায় না। অন্তত মানবজমিনে আমার তিন বছরের কর্মকালে আমি এমনটা দেখিনি। আমি নিজেও মতি ভাইয়ের মতাদর্শে বিশ্বাসী।

বাংলাদেশে যে ক'জন সাংবাদিককে শ্রদ্ধার সাথে বিবেচনায় আনি মতি ভাই নাম্বার ওয়ান। শত চাপ উপেক্ষা করেও তিনি অবিরাম লিখে যাচ্ছেন। তার লেখার একজন ভক্ত আমি। ছোট বেলা থেকে আমার স্বভাব- যে কারো লেখা হাতের কাছেই পেলে পড়ে ফেলা। এ ক্ষেত্রে আমি কোনো চয়েস রাখি না। কারণ হলো, একজন খারাপ লেখকও একটা ভালো লেখা উপহার দিতে পারেন।আর না পড়ে কারো বিষয়ে মন্তব্য করাটা আমার পছন্দ নয়। আমি যে ক'জন মানুষের লেখা অনুসরণ করি তাদের মধ্যে মতি ভাই অন্যতম। তার লেখা শুরু করলে শেষ না করে ওঠা যাবে না।উনি নামে লিখুন, আরি বেনামে লিখুন পড়তে বসলে লেখার স্টাইল দেখে আমি বুঝতে পারি। তবে মতি ভাই ভালো লেখেন, আমি সে কথা তার কাগজে চাকুরি করার সময় কোনো দিনই বলিনি। কারণ কিছু নয়, আমার আসলে কাউকে সরাসরি প্রশংসা করতে ভালো লাগে না। অন্যের কাছে বলি, অন্যকে পড়তে উৎসাহিত করি। তবে ইদানিং পাবলিক রিলেশনের কাজ করতে গিয়ে অনেকের অনেক প্রশংসা সামনে করতে হয়। কারণ এত অনেকে বেশ খুশীই হন। আবার অনেকে বেজার হওয়ার ভান করলেও খুশী যে হন সেটি আমার বুঝতে অসুবিধে হয় না। প্রশংষা পেলে কে না খুশী হয়, আমি নিজেও হই! হা হা হা। 
মতি ভাই মানবমজিনের প্রধান সম্পাদক ছাড়াও ভয়েস অব আমেরিকা রিপোর্টার। মানবজমিনে বিশ্ববিদ্যালয রিপোর্টার থাকার সুবাধে ভয়েস অব আমেরিকার রিপোর্ট করার ক্ষেত্রে তাকে সহযোগিতা কারার সুযোগ আমার হয়েছে। তিনি অত্যন্ত সহযোগি একজন মানুষ। আমার অনেক রিপোর্ট তিনি দেখে দিতেন। আমি খুবই কৃতজ্ঞ যে তার মত একজন মানুষ এখনো আমার মত অতিশয় ছোট একজন রিপোর্টারকে মনে রেখেছেন। 
মতি ভাই সাহসী মানুষ। বয়স তাকে হার মানাতে পারেনি, পারার কথাও নয়, নিউজই তার নেশা। তাকে রাজনীতির সুতোয় বাঁধা যাবে না। দেশের স্বার্থে তাকে আমি সব সময় আপস হীন দেখেছি।মানব জমিনে মতি ভাই রিপোর্টারদের এক বসায় অন্তত ৫০ টা আইডিয়া দিতে পারতেন। এবং সে সব রিপোর্ট ছিল পড়ার মত। আমার সাংবাদিকতা জীবনে পরম সৌভাগ্য তার মত একজনের সাতে কাজ করতে পেরেছি। মতি ভাই এখনো বলেন, যে কোনো সময় তার কাগজে আমার জন্য পথ খোলা। সেটি উনি না বললেও আমি জানি। আমি একটা পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সেখান থেকে চলে এসেছিলাম। এখনো আমার মন মানবজমিনে পড়ে থাকে। এর সব চেয়ে বড় কারণ আমাকে সাংবাদিক হিসাবে যারা চিনেন তার পুরো কৃতিত্বটাই মানবজমিনের। ২০০১ থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত অনেক আলোচিত রিপোর্ট করার সুযোগ আমার হয়েছে। সব ধরণের রিপোর্ট করে রিপোর্টিং শেখার একটা অনন্য সুযোগ আমি এখানে পেয়েছি। তাই এখানকার কথা একটু বেশি করেই বলতে হবে, কারণ আমার ক্যারিয়ারের টার্নিং পয়েন্টে ছিল মানবজমিন। 
ব্রডশিট কাগজে আমি এর আগে কাজ করেছিলাম, সেটি প্রথম আলোতে। সেখানেও আমার আলোচিত রিপোর্ট ছিল। বিশেষ করে বেগম বাজার শাহী জামে মসজিদের জায়গা দখল করেছিলেন সে সময়কার লালবাগ এলাকার আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য হাজি সেলিম। সে জমি এখনো উদ্ধার হয়নি। সেখানকার দখলদারিত্ব নিয়ে আমি একটি প্রতিবেদন করার পর কোটি টাকার মানহানির হুমকি দিয়েছিলেন এমপি সাহেব। কিন্তু আমার কাছে সব ডকুমেন্ট থাকায় শেষ পর্যন্ত এমপি সাহেব হালে পানি পাননি। তবে প্রথম আলো তার একটা বক্তব্য পরে প্রতিবাদ আকারে ছাপিয়েছে। এতে আমার কোনো ক্ষোভ বিক্ষোভ নেই। তবে প্রথম আলোর ঢাকায় থাকি পাতাটা বন্ধ না হলে আমার মানবজমিনে আসা হতো না। মানব জমিনে আসার গল্পটা আপনাদের আগেই শুনিয়েছি।

সামনের কয়েক পর্বে ঢাকা বিশ্বববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির রাজনীতি নিয়ে কথা হবে , আশা করি।

১৬ ই মে, ২০১৩ দুপুর ১:৩৭

দুঃখিত!

সোশ্যাল মিডিয়ার ওয়ালে কান ধইরা খারায়া থাকনের কোনো মাহাত্ম আমি খুইজ্জা পাইলাম না। দুঃখিত। 
হয়ত রইদ, বৃষ্টিতে ভিজ্জা প্রতিবাদ-গুম কিম্বা লাঠিপেটা খাওনের হাত থেকে বাঁচনের সহজীয়া উপায় এইডা। 
এর মর্ম উপলব্ধি কইরতে ব্যর্থতার জন্য আবারো দুঃখিত।

রাজনীতির দাঁড়ি টেনে শিক্ষক অপমান সইবেন না! প্লিজ



একজন লেখকের নাম মনে পড়ছে, যার কাছে শুনেছিলাম হিন্দু ছাত্র ছিল বলে হোস্টেলে তারা গরু গোশত খেতেন না। তিনি 'জিবরাঈলের ডানা'র গল্পকার শাহেদ আলী।

আমরা মোছলমানরা অন্য ধর্মের লোকদের প্রতি অধিক সহানুভূতিশীল। খেয়াল করবেন, আমি কিন্তু মোছলমানের কথা বলেছি, আমি  অসাম্প্রদায়িক প্রগতিশীলদের কথা বলছি না, যারা  ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করেন এবং আমি  মৌলবাদী রাজনীতিকদের কথাও বলছি না যারা মানুষের মাঝে ভাগ করেন।

ভাটি বাংলায় মানুষের বিভেদটা আমরা বহু আগেই করেছি।  শিক্ষকদের কটাক্ষ আমাদের নেতৃস্থানীয়রাই করছেন। আমরা সুযোগ বুঝে, পক্ষ থেকে প্রতিবাদ করি। এ একটা জিনিস  মানতে পারি না। শিক্ষকদের হেলা, অবহেলা কোনোভাবেই গ্রহণ যোগ্য হতে পারে না।

আমি বলছি না, জগতের সব শিক্ষক মহান হবেন, সব দল মত  শিক্ষকদের  একই রকমের শ্রদ্ধা পাবেন , রাষ্ট্র একই ভাবে মূল্যায়ন করবে। এটা কেন বলছি, কারণ এখানে রাজনীতিই মুখ্য। ধর্ম নিয়ে ব্যবসার রাজনীতি, নোংরামি এখানে প্রচণ্ড রকমের। আসলে মনে যদি কেউ  পরধর্ম সহিষ্ণু না হন, লো্ক দেখানো ভাব নিয়ে বেশি দিন চলা ভারি মুশখিল। অভিনয় সব সময় করা যায়, তবে সব সময় একই রকম  মুখোশ লাগিয়ে থাকা যায় না।

সেলিম ওসমান  যে কাণ্ডটা ঘটিয়েছেন, যে অজুহাতে তিনি এর দায় থেকে নিজেকে মুক্ত মনে করছেন---তাতে  আমরা সবাই অত্যন্ত  আহত বোধ করছি।  একজন রাজনীতিক, জনরোষকে সামলানোর জন্য একজন শিক্ষককে  কান ধরে ওঠবোস করানোই সমর্থন দেবেন এটা কোনো  বিচারেই  গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। যদি জনরোষ সামলাতে তিনি অক্ষম হন, তাহলে তিনি রাজনীতিক নন, তিনি রাজনীতিক হতে পারেন না।

শিক্ষক পরিবারে জন্ম নেয়া সন্তান হিসাবে  শ্যামল কান্তি ভক্তের অপমানের ব্যথা, কষ্ট এবং অসহনীয় যন্ত্রণা আমাকেও কুরে কুরে খাচ্ছে, প্রতি মুহুর্তে। চোখরে সামনে ভাসছে একজন নিরীহ অসহায় মানুষের মুখ, যার কানে হাত! কম বেশি সবার জানা রাজধানীসহ সারা দেশে ৯৯.৯৯ শতাংশ স্কুল কলেজ ও মাদরাসার শিক্ষকরা স্থানীয় রাজনীতিকদের কাছে জিম্মি।

বিশেষ করে বেসরকারি শিক্ষকদের  নিয়ন্ত্রণ পুরোপুরিই তাদের হাতে । পছন্দ না হলে তাকে নিয়ে কু রাজনীতির চর্চা বহু আগে থেকেই আমার সরাসরি দেখা। তাই শিক্ষকদের রাজনৈতিক হয়রানি কবল থেকে রক্ষা উপযোগি  শিক্ষাও শিক্ষার্থীদের দেওয়া দরকার।  শিক্ষার্থীদের কেউ না কেউ বড় হয়ে নেতা, সন্ত্রাসী, ধনবান হচ্ছেন, যারা শিক্ষকদের জনরোষ থেকে বাঁচানোর জন্য কান ধরে ওঠ বস করাচ্ছেন!

 ক'দিন আগে মওলানা আবদুল লতিফ নেজামী অভিযোগ করেছেন,  সিলেবাস থেকে কাজী কাদের নেওয়াজের 'শিক্ষাগুরুর মর্যাদা' মর্যাদা কবিতাটি তুলে দেওয়া হয়েছে। ড. কাজি দীন মুহম্মদের বিনয় নম্রতা উঠে গেছে আরো বহু বছর আগে। তাহলে সুশিক্ষা ! মিলবে কোথায়!

দেশে শিক্ষক নিপীড়নের ঘটনা এটাই প্রথম, তা কিন্তু নয়। খেয়াল করবেন, আমরা গত কয়েক বছরে বহু শিক্ষক হামলার  শিকার হয়েছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক মাহবুবউল্লাহকে মারধর করে, জামা কাপড় ছিঁড়ে অর্ধনগ্ন করা হয়েছিল দেশের সর্বোচ্চ আদালত প্রাঙ্গণে।

আমরা এও দেখেছি প্রজন্ম লীগ আমাদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের পিটেয়েছে সঙ্ঘাত ঘটাতে পারে, এমন আশঙ্কায়। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ দেখিনি, কেন দেখিনি, তা হলো এর বিরোধী মতের শিক্ষক।

আবার জাফর ইকবালের মতো  জনপ্রিয় শিক্ষককেও আমরা সিলেট বিশ্ববিদ্যালয়ে  অপমানিত হতে দেখিছি।  বয়োজ্যাষ্ঠ রাষ্ট্রবিজ্ঞানীয় ড. এমাজ হুমকি পেয়েছেন, তার বাসার সামনে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনাও আমরা খবরে পড়েছি।

আমরা মূল কথার জায়গাটা--- আমরা হুজুগে মাতি আবার একটা ঘটনা ঘটে আমরা সেটাকে নিয়ে ব্যস্ত হই। অত্যন্ত বেদনার বিষয় হলো শিক্ষক নিপীড়নের, হুমকির  কোনো বিচার হয় না।

 ক'দিন আগেই তো রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রেজাউল করিমকে খুন করা হয়েছে।  এর আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের বাসায় ঢুকে অধ্যাপক আফতাব আহমদকে খুন করা হয়েছে। ড. হুমায়ূন আজাদ স্যারকে কুপিয়ে আহত করা হয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসেই!

 আমরা এ সব খুন, অপমান সহজে মেনে নিচ্ছি। এ মেনে নিতে আর রাজনৈতিক বিভাজন টানতে টানতে আক্রান্ত হচ্ছি নিজেরাই!

শ্যামল স্যার কিম্বা  মাহবুব উল্লাহ স্যার, যে যখনই আক্রান্ত হন তাদের প্রতি দল মত নির্বিশেষে সহানুভূতি সবারই থাকা উচিৎ। রাষ্ট্র এ সব হামলা, অপমান আর অন্যায্য আচরণের বিচার করবে আমরা এটা আমরা আশা করি। যদিও বিচার হয় না! তবুও হবে এ আশাটাও কম কিসে!!

ধর্মকে ব্যবহার করে এর আগেও বহু নিপীড়নের ঘটনা ঘটেছে।  রামু কাণ্ড থেকে শ্যামল স্যার তার একটা উদাহরণ মাত্র। এ সব উদাহরণ সমূলে উৎপাটন করতে না পারলে আমরা 'মানুষ' হয়ে উঠবো না, এটা নিশ্চিত!
   

কিস্তি-৩৫ ::পরের কন্যা বড় ভাইদের সম্প্রদান

অফিস থেকে মতি ভাই অ্যাসাইন করলেন, ইডেন কলেজ নিয়া রিপোর্ট করতে। মানবজমিনের বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার মানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সীমাবদ্ধ থাকলে চলবে না, সে কথাও জানিয়ে রাখলেন। সে হিসাবে বুয়েট, ঢাকা মেডিকেল কলেজ, ইডেন, ঢাকা ও জগন্নাথ কলেজ আমার কাজের পরিধির মধ্যে পড়ে। 
ইডেন নিয়া রিপোর্ট করতে গিয়া পুরা সমস্যায় পড়লাম, আমার চেনা জানা কেউ নেই। দ্বারস্থ হলাম আমিরুল ইসলাম কান আলিম ভাইয়ের। ছাত্রদলের এ নেতা পরে কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক হয়েছিলেন। উনার এলাকার এক নেত্রী ছিলেন- নাম রুমা। কাতল মাছের মতো চেপ্টা বডি। প্রচণ্ড শক্তিমান নেত্রী। দলবলেও ভারি। তাকে ফোন দেয়ার পর সে হোস্টেলে থাকে এমন কিছু ছাত্রী নিয়ে মধুতে দেখা করতে এলেন। 
তাদের কাছে ইডেনের ছাত্রীদের বিভিন্ন সমসন্যা শুনে এবং পরে দুদিন ইডেন গিয়ে, শিক্ষক ও অধ্যক্ষের সাথে কথা বলে একটা রিপোর্ট করলাম। রিপোর্টটা চলনসই হয়েছে বলে জানালেন মতি ভাই। 
মতি বললেন, সেখানে অনেক চমকপ্রদ খবর হয়, সে দিকে নজর দেবার জন্য। পরে অবশ্য ঠিকই জেনেছিলাম সেখানকার অনেক চমকপ্রদ খবর, তবে সে সব লিখতে পারিনি। পারিনি বলে হয়ত বছর দুয়েক আগে সেখাকনার ছাত্রলীগ নেত্রীদের বিরুদ্ধে ছাত্রনেতাদের কাছে সাধারণ ছাত্রীদের মনোরঞ্জনের জন্য চালান করার খবর প্রকাশ হয়। 
তবে সে সময়ও এটা ছিল। ছাত্রদলের কিছু নেতা ছাড়াও সরকারের মন্ত্রীদের কারো কারো জন্য গণিমত যেত ইডেন থেকে। যারা এ সব সাপ্লাই করতেন তাদের প্রভাব ছিল সে রকম। মন্ত্রীরা তাদের কল পাওয়া মাত্রই রিসিভ করেন। না পারলে পরে ব্যাক করেন। সে সব নিজের চক্ষে দেখা। যেখানে ছাত্রদলের বা ছাত্রলীগের একজন কেন্দ্রীয় পুরুষ নেতা মন্ত্রীর দেখা পেতে কাঠখড় পোড়াতে হয়, সেখানে ছাত্রী নেত্রীদের জন্য সদর দরজা উন্মুক্ত। আহা কি শান্তি। সে সুবাধে ছাত্রী নেত্রীদের অনেকে ব্যাপক তদবির করে মাল কি ভালাই করছেন। এটা সব আমলেই ছিল, এখনো আছে। 
তবে ইডেনের নেত্রীদের সবচেয়ে বড় সমস্যা গ্রুপিং। এখানে চরম গ্রুপিংয়ের সাথে নোংরামিও চলে বেশ। চরিত্র হনন যাকে বললেন, খোলাসা করে বলা হবে। কে কার বাসায় যায়, কে কার বাসায় কাকে পাঠায় এমনকি সাংবাদিকদের জন্য কে কাকে সরবরাহ করা হয় সে খবরও পাচ্ছিলাম।
২০০২ থেকে ২০০৪ সালের দিকে ইডেনে ছাত্রদলের তিনটি প্রধান গ্রুপ ছাড়াও আরো দুটো উপ গ্রুপ ছিল।
তবে এ নেত্রীদের কাজকর্ম খুব একটা পছন্দনীয় নয়। তাতে কি তাদের তো আর বড় ভাইয়ের অভাব নেই। পরের কন্যা বড় ভাইদের সম্প্রদান করে ইডেন ছাত্রলীগ ও ছাত্রদল নেত্রীরা রাজনীতিতে ভালো অবস্থানেই আছেন। 
তবে ছাত্র নেত্রীদের প্রায় সবাইকে স্বার্থপর বলতে হবে, কারণ এরা প্রয়োজন ফুরালে কেটে পড়বে। এবং কেটে পড়েও। দু একজন ব্যাতিক্রম ছাড়া। তবে আমার সাথে সবার সমান খাতির ছিল। যদিও আমি অলমোস্ট সবার বিরুদ্ধে দুচারবার করে রিপোর্ট করেছিলাম। তারা ক্ষিপ্ত হযেছে কেউ। কেউ আমার জন্য কিছু সরবরাহ করতে চেয়েছেন, যাতে পরে আরো রিপোর্ট তার বিরুদ্ধে না হয়, বা না করি। যেহেতু সরবরাহ গ্রহণ করতে আমি অক্ষম তাই তারা পরে বিব্রত হয়েছেন। তবে এখনো আমার সাথে ভালো মোয়ামেলাত আছে নিশিতার সাথে। নিশিতা আপার অনেক বদনাম আছে, কিন্তু মানুষ হিসাবে উনি ভালো বলেই আমি জানি। এখনো তিনি খোঁজ খবর রাখেন। আমিও রাখি। ছাত্রদলের নতুন কেন্দ্রীয় কমিটির এই নেত্রীর দুরদর্শিতা আমাকে মুগ্ধ করে। তাই বোধ হয় ইডেনের অনেক নেত্রী সময়ের স্রোতে হারিয়ে গেলেও নিশিতা টিকে আছেন।