হাঁসের পালের নেমে যাওয়ার দিকে তাকিয়ে ছুটবে কিশোরী

এক আলো ঝলমলে সকাল
কথা ছিল
কথা ছিল হাঁসের পালের নেমে যাওয়ার দিকে তাকিয়ে ছুটবে কিশোরী

এক নিরালা বিকাল
কথা ছিল-
কথা ছিল  উড়ে যাওয়া বকের সারি- মুগ্ধতা ছড়াবে

এক নিরালার সন্ধ্যা
কথা ছিল
কথা ছিল; পশ্চিমে ক্রমশ ডুবতে থাকা সূর্যের দিকে তাকিয়ে কাটিয়ে দেবো

রাতটা নামবে; জোছনায় ভিজবো

না ; সে জোছনা হয়ে এলো কাফন, সন্ধ্যাটা ভিজে গেলো রক্তে আর দুপুর হয়ে গেলো খুনের অন্য রকম কেতা!

আহা জীবন তুমি কেনো এমন-
স্বপ্ন গুলো ডুবে যেতে থাকে; হারিয়ে যেতে থাকে প্রতিদিন

 তবুও
আশায় বাঁচি আমরা।  

ফরীদিদের মনে না রাখলে আমরাই হেরে যাবো!



ফরীদিরা হারিয়ে যায়; আলোচনার বাইরে থাকে। এটাই যেনো রীতি। অথচ হুমায়ূন ফরীদি মারা গেলেন মাত্র বছর চার আগে। ২০১২ সালের ফাগুনের প্রথম দিনে।
বাংলা সিনামা, মঞ্চ ও টিভি নাটকে তার যে অবদান; সেটি আমরা মনে করতে চাই না। অথবা চাই কিন্তু সময় পাই না। আমরা কেবল আমাদের শিল্পী, নির্মাতাদের অথর্ব বলে গালি দিই। কিন্তু যা্রা 'থর্ব' কিম্বা গুণি ছিলেন তারা মরে গেলে, বুড়িয়ে গেলে আমরা তাদের ভুলে যাই।
ফরিদী ভাইয়ের সাথে বেশ কয়েকবার দেখা হয়েছিল। কথা হয়েছিল একবার; বেশি কথা বলা চলে। ধানমণ্ডির হারমনি স্পা'তে একটা নাটকের শুটিং ওপেন হবে; সেটা কভার করতে গেছিলাম।
অনেক লোকজন আসবেন; বিশেষ করে শিল্পীরা-যারা ব্যস্ত। ফরিদী ভাই আগেই এসে বসেছিলেন। সে সুবাদে একটু একটু করেআলাপ। একেবারে সাদাসিদে ফরীদি। পায়ে চটি স্যান্ডেল, গায়ে হাফ শার্ট আর নরমাল প্যান্ট চাপিয়ে চলে এসেছেন।
আমিও একই রকম সাজ পছন্দ করি; এ ধরণের সাজের লোকদের সমস্যা-যারা এদের চেনেন না; তারা মনে করে কামলা গোছের কোনো লোক এসে পড়েছেন বুঝি। আর নব্য শহুরে মানুষের কাছে এটা এক ধরণের অসভ্যতাও বটে।
ফরীদি- বাংলাদেশের নাটকের অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যাওয়া মানুষদের একজন। সেলিম আল দীন, আসকার ইবনে শাইখ , আবদুল্লাহ আল মামুনরা যখন স্বাধীনতা উত্তরকারে বাংলাদেশের নাটককে টেনে তুলছিলেন- সে সময় ফরীদিদের আবির্ভাব। অর্থনীতিতে পড়েও নাটকের জন্য - অভিনয়কে তিনি আপন করে নিয়েছিলেন।
হুমায়ূন ফরিদী ---হারমিন স্পা'য় সেদিন আমাকে বলেছিলেন- তুমি যে কাজ করো; সেটাকে ভালো না বাসলে বড় হতে পারবে না।
এখন আমার মনে হচ্ছে আমরা যদি একজন মানুষের ভালোবেসে করে যাওয়া কাজের মূল্যায়ন করতে না পারি; তাহলে সামনের দিনে আরো অনেক ফরীদি হবার কথা থাকলেও হবে না।
উপমহাদেশ থেকে শিল্পী-যন্ত্রী-নাচিয়ে-অভিনেতা-অভিনেত্রী এনে আমাদের চলতে হবে। ফাইভ স্টার হোটেল থেকে জন্মদিনের পার্টিতে যে রকম এখন তারা আসছেন। সামনে তাদের আগমন হয়তো এতটাই হবে যে, আমাদের নিজের বলে আর কিছু থাকবে না।
ফরীদি ভাই- ভালো থাকুন। আপনার আত্মা অনন্ত যাত্রায় শান্তিতে থাকুক।

দেশটারে বিরান কইরা কী লাভ কও

 দেশটারে বিরান কইরা কী লাভ কও


শশ্মান বানায় কি কেউ কিছু পাইবা!
আগুনে পোড়াও, গুলিতে ঝাঁঝরা করো

আবার তোমাদের স্পর্শকাতর মানবিকতা চমকে ওঠে!

 এ কেমন অভিনয় বলো।

মানুষ পিটিয়ে মারো সাপের মত। পুড়িয়ে মারো। গুলিতে ঝাঁঝরা করে মারো।



 বিবেক বর্জিত পেশাজীবীরা- সেটাকে বলো বার-বি-কিউ

 তোমারে মনে কী রোমাঞ্চ। কী রোমান্টিক তোমরা।

মানুষ নিয়ে এত তাচ্ছিল্য;
এত অপমান; মানবতার
তোমরা ক্যামনে করো।


এইবার খান্ত হও।
ক্ষমতার গদি ভিজে যাচ্ছে রক্তে, কান্নার জলে ভরে যাচ্ছে ধূ ধু তিস্তা

সেই রক্তের উপের তোমরা যে-ই আরোহন করো; ক্ষমতার মসনদে
কান্নার জলে ভিজে যাওয়া গদিতে যে-ই থাকো টিকে

জেনো-

 জেদের জলে ভেসে যাচ্ছে- মানব জীবন

 উৎকণ্ঠিত-উদ্বিগ্ন স্বজনের চোখে তাকিয়ে হলেও

খান্ত দেও এবার

এবার থামো; অনেক অনেক হয়েছে; থামো এবার।

পরকীয়া সংলাপ- ৪::'সোনা সে তো খাঁটি হয় পুড়ে গেলে আগুনে'


- আচ্ছা বলো তো পরিণতি কি? স্পর্শিয়া জানতে চায়।
-কার পরিণতি তোমার আমার? অনিকেতের উত্তর।

- ধূর!  খালি মজা করো;  দেশের যে অবস্থা; তাতে এত মজা কোথায় পাও।
- হুমমম।
- পরিণতি আসলে যে কোথায় নির্ধারণ হয়; সেটা বলা মুশকিল। ধর্মমতে চিন্তা করলে আল্লাহ ভালো জানেন।
- তাতো বুঝলাম, কিন্তু এর কিছু অনুঘটকও নিশ্চয় থেকে থাকবেন।

- আছেন  তো!
-কে?
-ওই যে পঙ্কজ বাবু; নাম শুনছো।
-ও পঙ্কজ বাবু, যিনি গুলশানে হাইকমিশন থেকে বের হয়ে রং সাইড দিয়ে গাড়ি নিয়ে রাস্তা পার হতেন।
-ঠিক ধরেছো। তবে ও সব মুখে এনোনা।

-তুমি তার এই অবস্থা দেখলা কবে? তার তো নিয়মের মধ্যেই চলার কথা।
-হুমম। চলার কথা। সেটা -তার সুবিধামত। তারে জব্বর টাওয়ারের সামনে দিয়া উল্টো পথে  সারিন্দা সমেত গাড়ি বহর নিয়ে যেতে দেখছি।

- বাদ দাও ওসব।

- আচ্ছা আমেরিকা খবর জানো?
- জানি; বিবৃতি দেয় তো। বিবৃতি যার পক্ষে দেয়; সে পক্ষ বুক ফুলায়। যার বিপক্ষে যায় সে বলে আইছে!

- হা হা হা
-হাসছো ক্যান।
-তুমি কথা বলার পুরনো ধরণে ফিরে যাচ্ছে।
-ক্যান আমি কি অশুদ্ধ বলি।
-হা হা হা

বাদ দাও পরিণতি কার হাতে-
-ওই যে বল্লাম আল্লাহ, ইশ্বর, ভগবান, গড যে নামেই ডাকো; তার হাতেই।আর অনুঘটকরা তো বিদেশ থাকে।

- তাহলে আমরা জনগণ কি?
- কেন; জনগন হতো তাদের রাজনীতির করার উপকরণ'।


 আচ্ছা এ সব আলাপ রাখো- রাজনীতি; রাজনীতি আর রাজনীতির বাইরে কিছু বলো।

-তাইতো। কত দিন তোমাকে দেখিনা। দখিনের জানালা খুলে রাতের আকাশে চাঁদ; ঠাণ্ডা চাঁদ। আহা ।

-চাঁদ যে ঠাণ্ডা; এটা কে বললো!

-  দেখোনা চাঁদ কেমন ঠান্ডা; আম্রিকা, ইউরোপ, ইনডিয়ার রাজনীতির মত।
-হুমম।
- বুঝছি।


 -আচ্ছা কাল তো পয়লা ফাল্গুন। প্ল্যান কি করছো।
-কোনো প্ল্যান নেই। ছুটির দিন লম্বা একটা ঘুম দিমু।

আহা এত উচ্ছ্বাস; আত আনন্দ তুমি ঘুমাবা। এটা কোনো কথা হলো।

 আসলে আমি হঠাৎ করে কাঁদতে পারিনা। হাসতেও পারি না। তাই বার্ন ইউনিট কিংবা ' বন্ধুকযুদ্ধ' চলমান সময়ে আমার এ সব উৎসব আয়োজন ভালো লাগে না।

আমারো তাই!
তাহলে চলো- দুজনে ঘুম দেই।
-ঘুম যে আসে না।
-ঠিক বলেছো। ঘুম আসে না। গান শুনি চলো

- 'সোনা সে তো খাঁটি হয় পুড়ে গেলে আগুনে'- সুন্দর গান। চলো শুনি দুজনে।


  

পরকীয়া সংলাপ-৩::এত রূঢ় সময়; প্রেম- আসে না মনে


......................................................................................................
পরকীয়া সংলাপের নামকরণ প্রসঙ্গে----
ইনডিয়া -এ দেশটার সাথে আমাদের রাজনৈতিক দলগুলোর সম্পর্ক ও নির্ভরতার পরিমাণটা বেশি। তবে এটা কেউ স্বীকার করেন না। যেমন কেউ পরকীয়া প্রেমের স্বীকার করেন না। তাই গোপন সম্পর্ক আর আঁতাত নিযে আলাপি এ সংলাপের নাম পরকীয়া সংলাপ করা হয়েছে।
দায়মুক্তি: এ সংলাপ একান্ত কাল্পনিক। কারো সাথে মিলে গেলে কাকতালমাত্র!
......................................................................................................

- সব কিছু ঠিক আছে। আবার কিছুই ঠিক নেই। স্পর্শিয়া বলে।
- মানে বুঝলাম না। তুমি সরকারের মত বিক্ষিপ্ত কথা বলছো  কেনো।অনিকেতের উত্তর।

-একটা চূড়ান্ত অনুসিদ্ধান্ত  তো দিবে। বিক্ষিপ্ত কথার সূত্র ধরে তার রসায়ন বের করা মুশকিল। যোগ করে অনিকেত।

- আচ্ছা সব কিছুই তো নিয়ন্ত্রণে; কেবল মানুষের লাশের সংখ্যা বাড়ছে। সেই সাথে কিছু মানুষের ব্যবসা ভালো যাচ্ছে।
-ফটো শ্যুট, ডকুমেন্টারি তৈরি, লবি করা, প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন, লোক সাপ্লাই- কাজগুলো বাড়ছে নাকি।

- মানে কি? কি বলছো
-হুমম।ঠিক বলছি।
 -বাপু ঠিক বলার দরকার নেই। দেয়ালেরও কান আছে।
-এক কান দুই কান করে তারপর -
 তারপর ? না ভাবতে পারছি না।

- অনিকেত তোমার মনে আছে; আমরা এক সময় অবাক হয়ে দেখতাম-খবরে।
- কি দেখতাম; আফগানে যুদ্ধ, বোমা পড়ছে; এর মধ্যে মেহেদী রাঙানো দুধে আলতা পরীর ছবি।
- ঠিক বলেছো; আমরা বিস্মিত হতাম।

-ব্যাখ্যাও থাকতো আমাদের; জীবন থেমে থাকে না।

-হুমম। ঠিক বলেছো।

-তুবে এমন শঙ্কার জীবন কি  মানুষকে সুস্থীর রাখতে পারে?
-খুব কঠিন প্রশ্ন।

- আচ্ছা তুমি কি জানো আমরা অনেক এগিয়েছি।  আমাদের ভার্সিটিতে আগে মনোবিজ্ঞান ডিাপর্টমেন্ট ছিল। এখন ক্লিনিকাল সাইকোলজিও  খুলেছে।
- জানি।
- এখন কিন্তু সাইকলজিক্যাল ট্রমা একটা প্রচলিত শব্দ এবং এর চিকিৎসাও হচ্ছে; জানো?
- জানি।

- আচ্ছা ; যারা মুক্তিযুদ্ধে গেছেন; তারা কী ভেবেছিলেন দেশটা এ রকম সাইকোলজিক্যাল ট্রমার চিকিৎসক সংখ্যা বাড়াবে।

দুজন চুপসে থাকে।

 -অর্থনৈতিক স্বাধীনতা আর  গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই ছিল। লড়াই ছিল অধিকার বুঝে নেবার। অনিকেতের উত্তর।

-বাদ দাও; ও সব ।আলোচনা কঠিন করে ফেলেছো। স্পর্শিয়ার অভিযোগ।
-ঠিক বলেছো; এত রূঢ় সময়; প্রেম- আসে না মনে। -উত্তর অনিকেতের। তাহলে কেনো এত কথা বলো। চুপসে থাকো।

আচ্ছা একটা কৌতুক শুনবে-

হুমম- শোনাতে পারো-

শিক্ষিকা তার ছাত্রদের জিজ্ঞেস করছে তাদের কার অভিভাবক কোন পেশায় আছেন।
ম্যাম-এই নন্টে, তোমার অভিভাবক কে?
- জ্বি ম্যাম ; আমার বাবা।
-তিনি কি করেন- সিভিল সার্ভেন্ট ম্যাম।
-এই ফন্টে : তোমার অভিভাবক।
-ম্যাম আমার মা।
তিনি কি করেন: তিনি সেক্স ওয়ারকার।
কি বললে; বেয়াদব ছেলে। আমি হেড স্যারের কাছে কস্পলেইন করবো-
ক্লাশ শেষে ফন্টের ডাক পড়লো হেড স্যারের রুমে।

ফিরে এলে ম্যাম জিজ্ঞেস করলেন- তা হেড স্যার কি বললো ফন্টে।
ম্যাম স্যার বললেন, কোনো পেশাকেই খাটো করে দেখতে নেই। তা বাবা তোমার বাসার ফোন নম্বর বলো। আমি নম্বর বলেছি। স্যার তা লিখে রেখেছেন। স্যার আমাকে একটা বিস্কুটও খেতে দিয়েছেন।


হো হো হো; হা হা হা । দু'জনেই হাসিতে গড়া গড়ি।

হাসি থামিয়ে স্পর্শিয়া- আসলে সমাজের বেশির ভাগ মানুষই এমন! তারা উপরে ভালো মানুষের ভান করে ভেতরে লালসা-লোভ আর চাতুর্য!


পরকীয়া সংলাপ-২::'স্পর্শের অনুভবে তোমাকে চাই'


'স্পর্শের অনুভবে তোমাকে চাই'- গুন গুন করে গাইছে অনিকেত। ফোনের সংযোগটা মিলছে না। নেটওয়ার্ক প্রবলেম।

-হ্যালো ; কথা বলছো না কেনো। স্পর্শিয়ার

- নিজের মধ্যে ফিরে আসে অনিকেত। রিডায়াল থেকে ফোন কানেক্ট করেছে। আচ্ছা এ রকম কি  রিডায়াল থেকে  রাজনীতিক দলগুলোর মধ্যে ইতিবাচক সংযোগটা লাগতে পারে না।

- হা হা হা হো হো হো
- হাসি থামাও! স্পর্শিয়ার কড়া আদুরে শাসন।

বলো- অনিতেক উত্তর করল।

-তুমি যে গানটা গাইছো এটা কি নিয়ে জানো?
- জানি।
- বলোতো কি নিয়ে?
- কেনো? সিগারেট।

- ঠিক বলেছো- একটা মানুষ সিগারেটের ভেতর তার সুখ খুঁজে নিয়েছে। আর আমাদের দেশে কেউ মানুষ মারার মধ্যে সুখ পায়। বাপু তুমি যদি নিজের জন্য সুখ চাও; তা যে কোনো খানেই সম্ভব।

- সময় খারাপ যাচ্ছে। এ সব আলোচনা রাখো।
-কোনো; আমি আর তুমি তো!
- আরে নাহ! এর মধ্যে আরো কেউ কান পেতে থাকতে পারে।

-কি বলো; বিস্ময় ঝরে পড়ে স্পর্শিয়ার কণ্ঠে।
- হুমম। তাই হচ্ছে।

-তাহলে!  কথা শেষ করতে পারে না স্পর্শিয়া।
-তাহলে আমরা কথা বলবো না।
- কি বললে?
- না কথা বলবো; তবে এ সব আলাপ করা যাবে না।
- আমাদের মাথায় তো এ সব জমে থাকে; কারো সাথে কথা বললে হালকা লাগে।
-পরিস্থিতি হালকা হোক ; তারপর।


দু'জনে  একটু সময় নেয়।

-আজকে একটা খবর পড়ছো- কাগজে। বলে, স্পর্শিয়া
-হুমম পড়েছি। কেজরিওয়াল। অনিকেতের উত্তর।

- ঠিক ধরেছো। দলটা জিতেই গেলো। ফিরলো দিল্লির মসনদে। ভালো খবর।
- মোদি পরাজয় মেনে নিলো সেটাও একটা ভালো খবর।

- আচ্ছা, আমাদের দেশে এমন সংস্কৃতি কবে শুরু হবে?
- হবে। তবে দিণক্ষণ ঠিক করে বলা মুশকিল।

-ঠিক বলেছো।

- বাইরে কিসের আওয়াজ। দরজায় কড়া নাড়ছে কেউ।
-নাহ কড়া নাড়ছে না। বাসায় কেউ নেই। কেউ আসবেও না।
- তাই!
রহস্যময় হাসিতে এগিয়ে যায় আলাপন।

পরকীয়া সংলাপের নামকরণ প্রসঙ্গে 

ইনডিয়া -এ দেশটার সাথে আমাদের রাজনৈতিক দলগুলোর সম্পর্ক ও নির্ভরতার পরিমাণটা বেশি। তবে এটা কেউ স্বীকার করেন না। যেমন কেউ পরকীয়া প্রেমের স্বীকার করেন না। তাই গোপন সম্পর্ক আর আঁতাত নিযে আলাপি এ সংলাপের নাম পরকীয়া সংলাপ করা হয়েছে। 

দায়মুক্তি: এ সংলাপ একান্ত কাল্পনিক। কারো সাথে মিলে গেলে কাকতালমাত্র!

পরকীয়া সংলাপ-১ ::-তাহলে মানুষ কে?



রিং ব্যাক টিউন টা দারুণ; অপেক্ষা করতেই পারতে। হেসে বলে অনিকেত।
স্পর্শিয়ার কাছে এটা ভিন্ন কমপ্লিমেন্ট। রিং ব্যাক টোন নিয়ে অনেকে তাকে খারাপ কথা বলে- অপাকারিতা বোঝায়। অনিকেত সেটি করেনি।
-তুমি কি গান গাইতে পারো? প্রশ্ন অনিকেতের।
উঁহু না। - স্পর্শিয়ার উত্তর।
-কিন্তু ভালো শোনাও। 'তুমি এলে অনেক দিনের পরে'- গানটা তো সুন্দর।
-হুমম।
-হুমম টা কি।
-হুমম মানে বলার কিছু নেই।
-না আমার কাছে হুমম মানে কষ্ট। বুক ভেঙ্গে যাবার উচ্চারণ।
ঠিক বলেছো- অনিকেত উত্তর।
এই যে দেখো এত মানুষ পুড়ে যাচ্ছে আগুনে; এত লোক কাতরাচ্ছে; আর নগরে বসছে মউজের আয়োজন।
- কারা করছে এ সব; ওরা কি মানুষ।
-মানুষ তো বটে। ওদের দুখানা পা আছে। তর্ক করার জন্য গলার জোর আছে।যুক্তি আছে। এরা বার্ণ উইনটে গিয়ে রুমাল চাপা দিযে ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়ে থাকে। আবার মজে থাকে স্টার নাইটসে।
-ঠিক বলেছো ।
-ঠিক তো বটে।
-আচ্ছা একটা প্রশ্ন করি?
-করতে পারো!
-মানুষগুলো এমন কেনো?
-সবাইকে তোমার মানুষ মনে হয়; কেনো?
পাল্টাপাল্টি প্রশ্ন... একটু থেমে স্পর্শিয়া বলে বেল বাজছে দেখে আসবো? না থাক।
মানুষ পুড়ছে; আর মানুষকে ডেকে নিয়ে খুন করছে- দুটার মধ্যে তফাৎ কি।
-তফাৎ? তফাৎ তো আছে।
-যাদের মারা হচ্ছে তারা মানুষ নয়। যারা পুড়ছে তারাও।
-তাহলে মানুষ কে?
-কেনো রাজনীতিকরা।
হুমম-
ঠিক বলেছো।
-বেল বাজছে? দেখে আসবো!
-আসো; ফোন কানে অনিকেতের।
-এভাবে এমন বিকালে তুমি!
-তুমি কে?
- তুমি; তুমি আমার সব। অদেখা ভূবন। স্বামীর কাঁধে হাত রেখে আহ্লাদে গদ গদ স্পর্শিয়া।
ফোনের লাইনটা কেটে যায়। স্পর্শিয়ার জীবনে বাস্তব হয়ে ওঠে আরেকটি মুখ-।
-অনিকেত হাত ঘড়ির দিকে তাকায়। আরেকটু কথা বলা যেতো। আয়নার দিকে তাকিয়ে বলে একই মানুষ- দু'রকম রূপ।
আমি কি রাজনীতিক! হতে পারে!
নাহ হতে পারে না!
পরকীয়া সংলাপের নামকরণ প্রসঙ্গে
ইনডিয়া -এ দেশটার সাথে আমাদের রাজনৈতিক দলগুলোর সম্পর্ক ও নির্ভরতার পরিমাণটা বেশি। তবে এটা কেউ স্বীকার করেন না। যেমন কেউ পরকীয়া প্রেমের স্বীকার করেন না। তাই গোপন সম্পর্ক আর আঁতাত নিযে আলাপি এ সংলাপের নাম পরকীয়া সংলাপ করা হয়েছে।
দায়মুক্তি: এ সংলাপ একান্ত কাল্পনিক। কারো সাথে মিলে গেলে কাকতালমাত্র!

-'এ দেশে শ্যামল রং রমণীর সুনাম শুনেছি'

ম্যাডাম জিয়া অবরুদ্ধ কিম্বা তিনি স্বেচ্ছায় গুলশানের  কার্যালয়ে অবস্থান করছেন- সে যে কোনোটাই হতে পারে। কিন্তু এ কার্যালয় ঘিরে গত ২৫ কিম্বা ৩০ দিন ধইরা দেশে বৈদেশে যে আলাপ আলোচনা চলছে- তাতে মনে হইচ্ছে- বঙ্গদেশের রঙ্গশালার যাবতীয় সব উপাদান এইখানে ফয়দা অয়।

সাধারণত বিম্পিকে  নিয়ে যখন আম্লীগ কতা বলে, তখন পিপঁড়ার মর্যাদাও তারা দেয় না। সময় সময় এমুন কতা বলেন, যে বিম্পি করাটা একটা অপরাধ; এ সব অপরাধীদের বিম্পি সরকারেরই নিজ হস্তে প্রতিষ্ঠিত নিরাপত্তা রক্ষীদের দ্বারা 'বন্দুকযুদ্ধ' মঞ্চায়ন করে মেরে ফেলাটা অতিব উত্তম, জরুরি এবং সওয়াবের কাম।

কবি ওমর আলীর একটা কাব্য গ্রন্থ আছে-'এ দেশে শ্যামল রং রমণীর সুনাম শুনেছি'। সে হিসাবে বঙ্গ দেশে 'শ্যামল' রমণী আলোচনায় স্থান করে থাকবার কথা থাকলেও এখানে 'গোলাপী' বেশ আলোচিত , মুখরোচক, রাজনীতির শীর্ষ বিন্দুতে জমানো তিন্দুর জলের মতই লোভনীয় শব্দ। 


একজন স্বামী হারা, সাবেক প্রধানমন্ত্রী, স্বৈরশাসক হিসাবে সবাই কবুল করে নেয়া প্রেমিক-বৎস এরশাদ বিরোধি আন্দোলনে রাজপথ কাঁপানো নেত্রী তিনি। তার নেতৃত্ব, মেধা, যোগ্যতা নতুন করে প্রমাণ করার কিছু নাই। 

কিন্তু কিছু লোক তার 'শিক্ষাগত' যোগ্যতা লইয়া প্রশ্ন তুলে হেনস্তা করবার চেষ্টা করে; যদিও বাস্তবে তারা নিজেদেরই হেনস্তা করে এবং সেটি বুঝবার মত সক্ষমতা তাদের নাই। 


এ সব লোকদের অনেকে সাবেক বাম-রাম কিম্বা সাবেক আঁতেল-যাদের কাণ্ড জ্ঞানের বিস্তৃতি আজিজ মাক্কেট ঘিরে; সেই সব লোক আরজ আলি মতুব্বরে দর্শন লইয়া অনেক বাৎ চিৎ করে থাকেন। সেই একই লোক সকল ক্যামনে বঙ্গদেশের তিনবারে প্রধানমন্ত্রীর প্রথাগত সনদি যোগ্যতা লইয়া কোশ্চেন করেন, এটা ভাববার বিষয়।


পরোক্ষভাবে এরা নিজেদের হীনমন্যতাকেই সবার সামনে তুলে ধরেন। হরিপদ কপালিরা  উদ্ভাবনী মেধার স্বাক্ষর রেখেছেন বলে ইরি বিরি গবেষকরা তাকে তাচ্ছিল্য করবেন- এটা যেমন ঠিক না। তেমনি এটাও ঠিক না  কিছু দণ্ড বিহীন মেরুদ্ধণ্ড বহনকারীরা একটি রাজনৈতিক দলের প্রধানের জীবন আচরণ, প্রথাগত শিক্ষা লইয়া কতা কইবেন। এটা রুচিকর বলে আমার মনে হয় না।

যে কথা বলার জন্য লিখছি- এখানে আমরা সবাই মনে করি একেকজন বিশেষজ্ঞ। আমি যদি আপনাদের বলি একটু পেছনে ফিরে তাকাতে। ২০০১ সালে ক্ষমতা হারানোর পর আমাদের শিক্ষামুন্ত্রীর বয়ান সমৃদ্ধ লেখাগুলো প্রথম আলো ছেপেছিল। সেগুলো পিআইবির আকাইভে আছে। পাবলিক লাইব্রেরিতেও পাওযা যাবে। 
সে সময় তিনি যে জ্ঞান গর্ভ পরামর্শ দিয়েছেন; তার কোনোটা কি তিনি বাস্তবায়ন কইরা দেখাইতে পারছেন? পারেন নাই। 

২৪ তম বিসিএস পরীক্ষার  প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনা ঘটেছিল বিম্পির আমলে। পরীক্ষা বাতিল করে ; পিএসসি চেয়ারম্যানকে সরিয়ে দিয়েছিল বিম্পি। আর এখন প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়নি - এটাই যেনো একটা আশ্চর্য। 

তারপরেও নাহিদ দাদু সফল মুন্ত্রী। জিপিএ ফাইভের বন্যায় ভেসে যাচ্ছে শিক্ষার্থীরা। আহা সে কি শান্তি। এ জিপিএ ফাইভ কি আমাদের শিক্ষার মানে পরিচায়ক। কারো কারো কাছে হতে পারে-। 

সেনাঠেস লইয়া গেলো তত্বাবধায়ক সরকারের সময়দ্রব্যমূল্য উর্ধ্বগতিতে রুদ্ধশ্বাসে ছুটতে থাকলে মতিয়া আফা কইছিলেন রাজনৈতিক সরকার থাকলে এমনটা হতো না। সরকার চাইলে তারা সমাধানে পরামর্শ দিবেন। কিন্তু সরকারের আসার পর উনারা কি করেছেন। জানবার মুনচায়। 

 এ সব কেচ্ছা বর্ননা করবার জন্য এ লেখা নয়। এ লেখার  উদ্ধেশ্য একটা দেশের ক্ষমতার দেউলিয়াত্বকে মনে করে; যে একজন নারী এবং যিনি দেশ পরিচালনায় যুক্ত ছিলেন- তাকে অফিসে অবরুদ্ধ করে রাখা থেকে শুরু করে এখন ইউটিলিটি সার্ভিস বন্ধ করে দেবার মত যে উত্তম মানসিকতা ক্ষমতাধররা করেছেন এটা কেবল নিন্দনীয় নয়। জঘন্য রকমরে অমনাববিক -অপরাধ। 

যারা জ্যান্ডার ইক্যুইটি; জেন্ডার 
 ভায়োল্যান্স; নারীর প্রতি সহিংসতা লইয়া যারা কাজ করেন; তারা মুখে মিশিন লইয়া চুষতাছেন। সে মেশিনে আবর্জনা ছাড়া আর কিছুই আসছে না। 

বিদ্যুৎ কেটে নেবার পর তা চালু হয়েছে। এখন ইন্টারনেট নাই। মোবাইলফোনে কতা বলা যায় না। বিটিআরসির মোবাইলফোন অপারেটরদের চিঠি দিয়ে বলেছে ওই এলাকায় নেটওয়ার্ক বন্ধ করতে । করা হযেছে। কিন্তু ওই এলাকায় শুধু খালেদা জিয়ার অবস্থান নয়; বহু সরকার পন্থীও থাকেন। সবাই এখন খাবি খাচ্ছেন। 

খেতেই পারেন। তবে সরকার সব সময় সংবিধানের কথা বলেন; তাদের অনুসারীরা আরো জোরছে বলেন। এ ধরণের পদক্ষেপ নিশ্চিতভাবে সংবিধান চর্চারই অংশ হবে হয়ত- সে জণ্য চুপচাপ থাকাটাই উত্তম। নইলে মধ্যম খেতে হবে। তাই চুপসে আছি-কিন্তু কতক্ষণ! 

মাটি- সোঁদা মাটি; আমার প্রিয় মাটি প্রিয় স্বদেশ-ভালোবাসি



 কাদা থক থক, গন্ধ আকুল মনটা ভরে যায়

 সাহিত্যে এটাকে সোঁদা মাটি বলে

 এ মাটির প্রতি লোভ অনেকের; কেউ দখল নিতে চায়<
কেউ ঘর বাড়িয়ে বানিয়ে মাথা গুঁজতে চায়

 কেউ চায় নিয়ন্ত্রণ

 আছিরনের সে রকম কোনো আশা নেই

 মাটির গন্ধ নিয়ে তার সাথে আলাপ বিলাসিতা

 তাই তারে কবিরুল জিগায়- কেমুন আছো্

 আছিরন হাসে; গরিব মাইনষে ক্যামুন


আসলে তো গরিব মাইনষে ক্যামন থাকে

 দেশ এগিয়ে যাচ্ছে

সেখানে কিছু পিছিয়ে পড়া মাইনষের এ উত্তর তো কবিরুলের  অজানা


ঢাকার চেহারা দেইখা তো  কালনি নদীর ধারে মাথা গোঁজা
..............আছিরনের কথা বোঝা মুশকিল

 সেকেন্ড লন্ডন বইলা খ্যাত শ্রীহট্টেও এমুন মানুষ আছে

 কবিরুল হাসে-খালা দেশের মানুষ তো বালাই

 আছিরন আবারো হাসে-

 বলে আমগো বাঁচন আর মরণ

 তোমরা বাঁচলেই অইলো। বাইঁচা থাকো বাবা

 সেই বেঁচে থাকনের জন্য কবিরুলরা ঘোরে; মেকি হাসি ঝুলিয়ে থাকে ঠোঁটের কোনায়
 ফেসবুকায়; ব্লগায়; আর নানা কতা কয়

আবার ভয়ে চুপসে আসে।
সাদা ?-
মনের শান্তি উধাও। তারচে আছিরনই বালা। এত্ত ভাবনা নাই।

 কোন জীবনটা চাইবে কবিরুল-
আছিরণের মত।

নাকি আছিরন কবিরুলের মত হোক তা চাইবে সে

 সমাজ বিজ্ঞানীদের ব্যাখ্যা জানবার মুনচায় কবিরুলের
... এত গবেষণা কঠিন
 গুগলে গোত্তা মাইরা কিছু পাওয়া যায় না ভাবে কবিরুল-
তাহলে হতো বিদ্যা জাহির ।

 পেটের ক্ষিদা; মাথা গোজার ঠাঁই কি মিলবে; মিলবে কি নিরাপত্তা

সে প্রশ্ন মাথায় ঘোরে

 মাটি- সোঁদা মাটি; আমার প্রিয় মাটি প্রিয় স্বদেশ-ভালোবাসি   

হল টিকাতে হিন্দি সিনামা লাগবে। আহা কি দারুণ খেলা!


ওরা ১১ জন কিম্বা জীবন যেখানে যেমনের মত সিনামা দিয়ে স্বাধীনতা উত্তরকালে যে বঙ্গ সিনামার উত্থান,সে সিনামা ব্যবসা হারাতে শুরু করলো এবং এখন দেউলিয়া আখ্যা দিয়া হল ঘরে জলসা জমাতে উর্দু-হিন্দি সিনামার দ্বারস্থ হতে হলো;  সেটা কিন্তু একদিনে হয়নি।

ব্যাক্তিগতভাবে আমার সিনামা দেখার অভিজ্ঞতা 'গরম হাওয়া' দিয়ে। এটা সম্ভবত ১৯৯৩ সালের ঘটনা। সিনামায় নকল, অবিকল কিম্বা সেমিনকল হবার ঘটনা পুরনো; সে ক্ষেত্রে বাংলা সিনামা এ দোষে যুক্ত; এটা নিয়ে দ্বিমত নেই।

কিন্তু এ নকল বা অনুকরণ  করাকে একটা বাড়াবাড়ি রকমের নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সেটি আসলেই অগ্রহণযোগ্য ছিল।  এর কারণ কি ছিল তা নিয়ে অনেক মত রয়েছে। তবে একটা দীর্ঘ সময় ধরে ধীরে ধীরে বঙ্গ সিনামা হাল খ্রাপ হতে হতে এখন আর বলার মত কিছু নাই বলে কারো কারো দাবি-এ দাবির সাথে আমি একমত মত নই। 

 এখানে সিনামায় অশ্লীলতার গল্পটা বলতেই লিখছি-

বাংলাদেশের মত একটি অতি উদার-রক্ষণশীল সমাজে ইউভার্সেলই একমাত্র সেন্সর রেটিং। এর বাইরে আর কোনো রেটিংয়ে সিনামা মুক্তি পায় না।

সত্তুরের দশকের শেষের দিকে 'গোপন কথা' নামে যে সিনামাটি এডাল্ট রেটিং দাবি করেছিল এটি হাল আমলে যে কোনো সুশীল সিনামার চেয়েও সুশীলতর বলে  ২০০৬ সালের দিকে সেন্সর বোর্ডে গল্পচ্ছলে একজন সদস্য জানিয়েছিলেন। 

১৯৯৬ সালের দিকে বাংলা সিনেমায়  অশ্লীলতার মহামারি আকারে আসে।  এ সময় সিনামায় এতটা অশ্লীলতা প্রবণ হয়ে ওঠে যে মোহাম্মদ হোসেন পরিচালিত ‘ফায়ার’ সিনেমাটি এডাল্ট রেটিংয়ের সেন্সর সনদের আবেদন করেছিল। তবে এটি তারা পায়নি।

এ সিনামায় নায়িকা পলির শরীর দেখানোর কসরতে কোনো রকমের কমতি ছিলনা মোহাম্মদ হোসেনের।

 থাইল্যান্ডে এর শুটিং হয়েছিল এবং  তাতে থাই নাইট ক্লাব সংস্কৃতির চিত্রও  তুলে ধরেন হোসেন।

১৯৯৭ সালের দিকে বাংলা সিনেমায় অশ্লীলতার পরিমাণ আরো বাড়ে।  সে সাথে  ভারতীয় নায়িকাদের এনেও এতে ভিন্ন মাত্রা দেবার চেষ্টা করা হয়।

মোহাম্মদ হোসেন ভারতের নায়িকা ঋতুপর্ণাকে দিয়ে নিমাণ করেন ‘রাঙাবউ’ সিনেমাটি। এতে সিনেমাতে বেশ কিছু অশ্লীল দৃশ্য ছিল।

এরপর  সে সময়কার সেন্সর বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান কবি রবীন্দ্র গোপের সহায়তায় অশ্লীলতার বিস্তার ঘটতে থাকে। তার উপন্যাস থেকে সিনামা বানানোর ঘোষণা দিয়ে এয়াতে করিম বেশ কয়েকটা অশ্লীল সিনামায় বানিয়ে সেন্সর সনদ নিয়ে যান।

ডিপজল, দীপু, আজাদ খানের মত আরো বহু লোকজন অশ্লীল বাংলা সিনেমা তৈরী বানাতে থাকেন।  এটি ভয়াবহ রূপ ধারণ করে ‘ভয়াবহ’ সিনেমার মধ্য দিয়ে। ওই সিনেমায় এক সাথে চারটি ধর্ষণ দৃশ্য সংযুক্ত করা হয়। এরপর বাংলা সিনেমায় অশ্লীলতা বন্ধ করা যায়নি। এটি দিনের পর দিন বাড়তে থাকে, সে সাথে অশ্লীলতার মাত্রা এতটাই ছড়িয়ে পড়ে যে, মধ্য বিত্ত হল থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে শুরু করেন।

নায়িকাদের পোশাক ছোট হতে হতে এবং বেড সিন যোগ হতে হতে সেটি বাড়াবাড়ি রকমের হয়ে ওঠে। শেষে দেখানোর আর কিছু থকে না,ম বাথরুম, সুইমংপুল হয়ে সিনামার শরীর দেখানোটা তুঙ্গে ওঠে। গল্পের বদলে চলে আসে শরীর-বৃত্তি। 

২০০১ সালের সরকারে পরিবর্তন, ১/১১এর প তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ও একই হাল ছিল।

‘মহিলা হোস্টেল’, ‘মডেল গার্ল’ ও ‘নষ্টা মেয়ে’র মত সিনেমা নিয়ে যখন তুমুল সমালোচনা হচ্ছিল, সে সময় এ সব সিনেমার সাময়িক লাগাম টেনে ধরার জন্য সেন্সর সনদ সাময়িকভাবে বাতিল করে।

নির্মাতারা পরে আবার আদালত থেকে ছাড়পত্র নিয়ে সিনেমাগুলো ছাড় করতে শুরু করেন।

২০১০ সালে এসে সিনামায় কাটপিসের সংখ্যা বহু গুণে বেড়ে যায়। আগে সিনামায় কাটপিস থাকতো চার ৫ টি। কিম্বা ৫ থেকে ১০ মিনিট। এবার সেটি ৪০ থেকে ১ ঘন্টা পর্যন্ত ছাড়িয়ে যায়।

এ রকম পরিস্থিতিতেও দেশে ভালো সিনামা হয়েছে। গেরিলা, ব্যাচেলর, সার্চ দ্যা খোঁজ, কাবুলিঅলা, আমার আছে জল কিম্বা  ঘেটুপুত্র কমলাকে কেউ কি অস্বীকার করতে পারেন ? পারেন না। 

বাংলাদেশের  সিনেমার এমন দুর্দিনকে সামনে রেখে ভারতের সিনেমা আমদানি করা হচ্ছে এমন কথা বলছেন প্রদর্শকরা। তারা এও বলছেন, সিনেমাহল বাঁচাতে হলো ভালো সিনেমা লাগবে, যেটি বাংলাদেশে হচ্ছে না।  

২০১১ সালের জুলাই মাসে ভারত থেকে আসে বাংলা সিনেমা ‘জোর, ‘বদলা’ ও ‘সংগ্রাম’। চলতি মাসে মুক্তি পেলো ওয়ানটেড।

সিনামা হল অলারা বলছেন এ দেমে ভালো সিনামা হয় না, নাই তাই আমদানি করে হল বাঁচাইতে চাই। কিন্তু তা কি ঠিক?


কাটপিস দেখানোর গুরু হলো ঢাকার বাইরের হলগুলো। আামরা প্রথম কাটপিস দেখেছিলাম আদমজীনগরের মুনলাইট সিনামা হলে।  হঠাৎ করে কাটপিস এসে পড়ায় বন্ধুরা সবাই বিব্রত। এরপর মুনলাইট সিনামা হল এ ভিড়; মেরেও লোক সরানো যায় না।  একই রকম অবস্থা ছির বন্ধু, লাভলী, রাজমহল সিনামা হলেও। ঢাকার বাইরে এমন কোনো হল ছিল না যেখানে কাটপিস  দেখানো হতো না।

 এ সব কাটপিস মিলতো গুলিস্তান মার্কেটে। সিনামার রোলের সাথে এ সব কাপিট কিনে নিতেন হল মালিকরা।  প্রশা্সনকে ম্যানেজ করেই পরিবেশন করতেন এ সব। এ নিয়ে প্রতিবাদও হয়েছিল। নায়িকা ববিতা এর প্রতিবাদ করে সেন্সর বোর্ড ত্যাগে বাধ্য হয়েছিলেন। তাকে খ্রাপ ভাষায় গালিগালাজ করেছিল নির্মাতারা।

তবে স্রোতে গা না ভাসিয়ে অনেকেই ভালো সিনামা নির্মাণের চেষ্টা করেছেন। তাতে হল মালিকরা জুড়ে দিয়েছিলেন অশ্লীল দৃশ্য। যেমন ধরুণ খায়রুন সুন্দরী সিনামার কথা। নায়িকা মৌসুমীর এ সিনামাতেও কাটপিস জুড়েছিল  নারায়ণগঞ্জের হীরা সিনামা হল।


 বহু হলে গিয়ে দেখেছি সিনামার অভিনেতা অভিনেত্রীর নাম ধামে বা পরিচালকের নাম ধাম নাই আছে অচেনা মেয়েদের গা গোলা ছবি। এ সব প্রিন্টও হতো ঢাকায়। সরবরাহ হতো হলে এবং এভাবেই হল মালিকরা অসাধু পরিবেশকদের সহায়তা টেনে নামালেন বাংলা সিনামা। এখন বললেন হল টিকাতে হিন্দি সিনামা লাগবে। আহা কি দারুণ খেলা!





পেট্রোল বোমায় মানুষ পোড়ানো :১৯৯৬ থেকে ২০১৫


আমার খুব জানার ইচ্ছা, কারা পেট্রোল বোমা বানায়, মারে; তারা ধরা পড়ে না। আইনের আওতায় আসে না। তার মানে কি ! তারা অতিমানব। অতি ক্ষমতাবান এবং অতি শক্তিমান।    

১৯৯৬ থেকে ২০১৫ পর্যন্ত যতগুলো  পেট্রোল বোমা, গাড পাউডার দিয়ে বাসভর্তি মানুষ পুড়িয়ে মারা হয়েছে; সে সব ঘটনাগুলো যারা প্রত্যক্ষ করেছেন, তাদেরও নিশ্চয় এ প্রশ্নটা মনে জাগে। কিন্তু দলদাস বা দলান্ধ হবার কারণে সময় সময় কৌশলে এরা এ সব নিয়ে কথা বলেন। 

আমি সব সময় সব সরকারের সময় সব ধরণের মৃত্যু, হত্যা, গুপ্ত হত্যার বিরোধী। - এ মৃত্যুখেলা বন্ধ করুন। 

২০০৪ সালের ৪ জুন তৎকালীন শেরাটন হোটেলের (রূপসী বাংলা) উল্টো দিকে বিআরটিসির একটি দোতলা বাসে আগুন দিয়ে ১১ জনকে পুড়িয়ে মারা হয়। তখন ক্ষমতায় ছিল বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় সরকার। ৪ জুন হরতাল ডেকেছিল তৎকালীন বিরোধী দল আওয়ামী লীগ।(সূত্র প্রথম আলো)

১৯৯৬ সালের  ১৭ মার্চ অসহযোগ আন্দোলনের ৯ম দিনে রাজধানীতে বাসে পেট্রোল বোমায় ২ জন নিহত, চট্টগ্রাম ও সিরাজগঞ্জে আরো ২ জন নিহত হয়েছে বলে সে সময়কার পত্রিকার খবর।

তার মানে পেট্রোল বোমা হঠাৎ আবিষ্কৃত হয়নি। ক্ষমতা টিকিয়ে রাখা কিম্বা আরোহনের এটা একটা বড় অস্ত্র। মানুষের রক্ত মাংস পুড়িয়ে ক্ষমতা- আহা জীবন; নিয়মিত। 

২০১৩ , ২০১৪ এবং ২০১৫ এর শুরুতেই যে পরিমাণ মানুষ পেট্রোল বোমায় দগ্ধ হয়ে কাতরাচ্ছেন, জীবন দিচ্ছেন; তাদের প্রতি সহানুভূতি। তাদের পরিবারের ব্যাথা অনুভব করার মত সক্ষমতা সরকার কিম্বা বিরোধী দলের নেই। 

তাই পেট্রোল বোমবাজদের ধরেই একইভাবে তাদেরও পুড়িয়ে মারা পক্ষে আমার ন্যায় বিচারের পূর্ব দাবি আবারো থাকছে।  

ঘটনা হলো- এত পুরনো একটা সঙ্কট কাটাতে  কোনো রাজনৈতিক দলই সক্ষমতা প্রমাণ করতে পারলেন না।  সত্যিক অবাক লাগছে। 

বড় কষ্ট লাগে। 

কারণ আমি, আপনি যে কেউ যে কোনো সময় এ ধরণের বোমার শিকার হতে পারি। আল্লাহ আমাদের সবাইকে দলমত নির্বিশেষে- অপমৃত্যু-অনাকাঙ্খিত হত্যাকাণ্ড থেকে রক্ষা করুণ। 



সৌদি বাশ্শার জন্য আইজকা শোক

 frown emoticon
রাজনীতিকদের নষ্টামীর কবলে পড়ে দেশের এত মানুষ-মরে,পুড়ে,গুম,নিঁখোজ হয়ে শশ্মান- কব্বর হয়ে গেলো; তার জন্য শোক নাই।
ক্ষমতা আকডে থাকা আর আরোহনের জন্য মানুষের রক্ত চুষে নেবার লড়াইয়ে কোনো মানব সন্তানের প্রতি রাজনীতিকদের সহানুভূমি দেখানোর ফুরস নাই। সেখানে সৌদি বাশ্শার জন্য শোক। আহারে পীরিত।
সৌদি বাশ্শার জন্য আইজকা শোক। একটা দেশের সরকার সে দেশের মানুষকে কতটা মানবিক ভাবে বিবেচনা করে তা বোঝার জন্য আর কোনা উদাহরণের দরকার পডেনা।
আমাদের বঙ্গ সন্তানদের জীবন যে মুল্যহীন; তা এতটা আঙুল দিয়ে না দেখালেও হতো।

শেষ পর্যন্ত মুক্তি পা্ইছে হিন্দি ফিলিম ওয়ানটেড!


শেষ পর্যন্ত মেদহীন নায়িকার বাঁকানো শরীরের উপ্রে সেন্সর বোর্ডের ছাপ্পর মারা পোস্টারে পোস্টারে নগরি রঙিন করে আজ ২৩ জানুয়ারী শুক্কুরবার মুক্তি পা্ইছে হিন্দি ফিলিম ওয়ানটেড।

আর ৭ দিন বাদে আসছে আমাদের ভাষার মাস । একুশে ফেব্রুয়ারি পালন করবো আমরা। সে জন্য প্রস্তুতি চলছে। বক্তৃতার খই ফুটবে, সংস্কৃতি মুন্ত্রীর বয়ানও শোনা যাবে। আমরা  গাইবো-'আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি আমি কি ভুলিতে পারি।'
শেষে ছুটে যাবো পূর্ণিমা, মধূমিতা, আনন্দ সিনামা হলের কোনো একটাতে। একটা হিন্দি কিম্বা উর্দু  ফিলিম দেখে সব ভুলে যাবো। আহা।

বয়সের ভারে মোট কাঁচের চশমা সরিয়ে তিনি আবেগে কাইন্দা ফালায়া টিভি ক্যামেরার সামনে চোখ মুছবেন- আর বলবেন, বরকত, সালাম , জব্বর তাদের রক্তের বিনিময়ে আমরা মায়ের ভাষায় কথা বলতে পারছি।

আহা জীবন-অভিনয় কীভাবে একটা রাষ্ট্র ব্যবস্থার ভিত্রে ঢুইকা পড়ছে ভাবলে কষ্ট লাগে। বাণিজ্য যদি চূড়া্ন্ত লক্ষ্য হয় তাহলে সব কিছুরই তো বাণিজ্যিকীকরণ হতে পারে।  যদি বাংলাদেশের সিনামা দিয়া সিনামা হল ব্যবসা টিকায়া রাখা মুশকিল বলে  উর্দু-হিন্দি সিনামা মুক্তি দেওন যায়; তাহলে নষ্ট রাজনীতির কবলে পড়ে বিপন্ন মানুষের জীবন বাঁচাতে তো আমরা রাজনীতিক, আমলা, নিরাপত্তা রক্ষীও আমদানি করতে পারি।

এ যুক্তিটা একেবারেই শিশুসুলভ জানি; তবুও দিলাম।

স্বাধীনতার ৪৩ বর্ষপূর্তির মাথায়  বাংলাদেশের রাজধাণী ঢাকায় আজকে মুক্তি পেলো প্রভুদেবার সিনামা ওয়ানটেড। ঢাকার বাইরেও মুক্তি পেয়েছে। সব মিলিয়ে ৬০ টি হলে।

আজকের এ দিনটাকে কেউ কালো বললেন, কেউ সাদা বলবেন।রাজনৈতিক , ব্যবসায়িক এবং কূটনৈতিকভাবে অনেকের কাছে অনেক ব্যাখ্যা থাকবে; সে সব মেনে নিয়েই বলছি এমন বাংলাদেশের জন্য তিরিশ লাখ মানুষ তার অমুল্য জীবন বিলিয়ে দেননি।

বঙ্গবন্ধু, জেনারেল জিয়া, সি আর দত্ত কিম্বা জেনারেল ওসমানীরা লড়াই করেননি। ভাসানী তার জীবনটা উৎসর্গ করেননি ভিনদেশি  বাণিজ্য প্রসারের জন্য।   নিজের যা আছে তা ঘিরে বিস্তৃত হবার লড়াই ছিলো তাদের। আমাদের হাতে সেটিই তারা তুলে দিয়ে গেছেন।  বঙ্গবন্ধুর বক্তৃতাতেই আছে অর্থনৈতিক মুক্তির কথা। কিন্তু সে মুক্তির বদলে আমরা ভিনদেশের অর্থণৈতিক গোলামে রূপান্তর হবার জন্য প্রস্তুত হয়ে আছি।

হাল আমলে  গিনিজ বুকে নাম তোলার যে হিড়িক পড়েছে তাকে আমলে নিয়ে বলছি বাণিজ্য প্রসারে  হিন্দি সিনামার এমন মুক্তি যদি আমরা মেনে নেই তবে তা গিনিস বুকে উঠতে পারে। যে জাতি একটি ভাষা, রাষ্ট্র, সংস্কৃতি এবং টিকে থাকার লড়াইয়ে জয়ী হযেছিল, কেবল রবীন্দ্র সঙ্গীতের অবহেলার প্রতিবাদে পয়লা বৈশাখের মত জাতীয় আয়োজন করে দশকের পর দশক তা ধরে রাখতে পেরেছে;; সে জাতি তার সিনামা শিল্পকে ধ্বসিয়ে দেবার আয়োজন প্রত্যক্ষ করলো আনন্দে; সেটিই  সেলুকাস!

 অনেকেই বলছেন- টিকে থাকতে হবে প্রতিযোগিতা করে। বলি বাপু , তোমার কথা শুনলাম, কিন্তু তুমি টিকতে পারছো। তোমাদের কাউকে কাউকে তো এখনো চাকুরী, পড়াশোনায় টিকিয়ে রাখার জন্য মহান সংসদে কোটা নিয়ে আলাপ করতে হয়।  তা নিয়ে আমার আপত্তি নাই। পিছিয়ে পড়া মানুষকে সামনে এগিয়ে দিতে এটা লাগে। কিন্তু নিজের সংস্কৃতির ভিত তৈরির জন্য তুমি সে সবের কিছু করেছো, নাকি রাস্তার বেশ্যাদের মত কাপড় খুলে বসে আছো;)

মজার ব্যাপার হলো- একজনের হাতের বন্দুক থেকে  গুলি বের হয়। আরেকজনের বন্দুক থেকে কেবল আওয়াজ।  গুলি আর আওয়াজঅলা বন্দুক যোদ্ধা যদি প্রতিযোগিতায় নামে তাহলে কে টিকবে?  সে উত্তর সবার জানা।


একজন বললেন, বাংলা সিনামা ৪৩ বছরেও পারেনি; সামনেও পারবে না। হতে পারে। আবার নাও হতে পারে। কিন্তু বলিউড যে পরিমাণ মেধা, শ্রম,প্রযুক্তি ও অর্থের উপ্রে দাঁড়িয়ে আছে বাংলদেশে কি তা ছিল, আছে কিম্বা হবে।  সে প্রশ্নের উত্তর নেই।


 তবুও এ দেশে ভারতীয় সিনামা এসেছে। বাল কাটার ব্লেড থেকে, পিরিয়ডের রক্ত চোষার ত্যানা, ডিম ভাজার পেঁয়াজ থেকে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকের ডিগ্রি সবই আমরা্উপমহাদেশ থেকে আমদানি করি। তাতে কি তাদের ভালোটা আমরা নিতে পারি না; সেইটা বললে আবার উন্রারা  উপরের দিকে চাইয়া থাকেন বড় ভাই, সাহেবরা কি বলেন, সে অপেক্ষা আর কি!


বিম্পির এককালের তথ্য মুন্ত্রী নাজমুল হুদা আকাশ ওপেন করে ভারতীয়  পণ্যের বাজার তৈরি করে গেছেন। আম্লীগের মুন্ত্রী স্পর্শ পেয়ে বলেছেন ধন্যি বাবা, চলো হিন্দি সিনামা দেখাই। যারা এ বিরোধীতা করে তারা মুক্তবাজার অর্থনীতি বোঝেনা, শিল্প বোঝেনা, সংস্কৃতি বোঝে না।

এ দেশে কিছু বলতে গেলে 'রাজাকার', 'তুই অযোগ্য', 'তুই পারিস না; তাই বলে আমি খাবো না', '--- এ সব টাইপের কথা শুনতে শুনতে অনেকেই চুপসে থাকেন।


তবুও আশাহীন নই আমি। সক্কার বাহাদুরের নিশ্চিতভাবে সুমতি হবে। সে আশায় আছি। শোকে আছি। আনন্দ আসবে।

নির্মম-দুর্ভাগা এ দেশের সিনামা শিল্প

যখন প্রণোদনায় টিকে থাকা গার্মেন্ট ব্যবসা খ্রাপ করে; তখন সক্কার বাহাদুরের মন খ্রাপ হয়। সুশীলরা বলে সমাজে বেশ্যা; হতাশাগ্রস্থ মানুষ আর চুরি;ছিনতাই বাড়বে।

কিন্তু প্রণোদনার টাকার ভাগ গার্মেন্ট কর্মীরা পায় না। পায় মালিকরা। যারা  ফরেন বায়ারের সাথে ডিল করার নামে থাই কন্যাদের সাথে মউজে মজতে  ব্যাংকক-পাতায়া আর ফুকেটের স্টার; থ্রিস্টার-ফাইভ স্টার হোটেলের কক্ষ গরম করে তোলেন।

বিচের  আধো উষ্ণবালিতে পা ঠেকান।  জানালা খুলে দিয়ে থাই কন্যার উড়ন্ত চুলের ভিত্রে খুঁজেন ব্যবসা পাকা করার সন্ধি।  আহারে দুইন্নাই।

সেই দেশের একই সক্কার যারা প্রণোদনাহীণ  সিনামা শিল্প কে হত্যা করার চেষ্টা করছে। একবারো ভাবছে না  সিনামা শিল্প ধ্বসে পড়েছে; এখন কব্বর হয়ে গেলে গুটি কতক লোক ছাড়া বাকি সবার কি হাল হবে? তাদের জীবন-জীবিকা-সংসার কীভাবে চলবে।

কীভাবে নির্মিত হবে আগামীর বিনুদন শিল্প।নিজের সংস্কৃতি-পরিবারের টানাপড়েনের চিত্রায়ান কি করে সম্ভব।  কি করে গড়ে উঠবে সংস্কৃতির ভিত।

কেবল সাময়িক লাভ আর উত্তেজনার আফিস বিক্রি কি দীর্ঘ মেয়াদি সমাধান। হতে পারে না। তবুও হতে যাচ্ছে।  শুক্কুরবার মুক্তি পাচ্ছে বঙ্গ দেশে হিন্দি সিনামা।

বড়ই নির্মম-দুর্ভাগা এ দেশের সিনামা শিল্প! আহা সিনামা।

বাংলা সিনেমা যখন ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য চেষ্টা করছে সে সময় ঠাডা পড়লো


বাংলা সিনেমা যখন ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য চেষ্টা করছে সে সময় ঠাডা পড়লো-বাংলাদেশের হলে মুক্তি পাইতে যাচ্ছে হিন্দি সিনামা। মনে বড় কষ্ট নিয়ে এ লেখা লিখছি।-

বাংলা সিনেমার প্রতি আমার প্রচণ্ড টান ছিল এবং এখনো আছে; এটা কারো কাছে হাস্য রসের বিষয় হতে পারে; কারণ তাদের মত হিন্দি ও ইংরাজি সিনেমা দেখে জাতে ওঠার ভাবনা আমার কোনো কালেই ছিল না। এখনো নাই।

বাংলাদেশের সিনেমার প্রতি আমার এ ভীষণ রকমের টানের বড় কারণ আমাদের পরিচালকরা আমাদের সময়কার ঘটনা এবং ভাবনার পরিধি নিয়ে কাজ করেন।

 নিম্ন আয়ের দেশ হিসাবে আমাদের চাওয়া দু মুঠো ভাত, মোটা নারী, আর  বৈকালিক বিনুদন হিসাবে চা সিগারেট কিম্বা ছোলাই মদ। আর আমার নিজের চেয়ে খারাপ অবস্থায় থাকা মানুষকে ফাঁপর দেয়া। এ সবই সিনেমার অনুষঙ্গ।

তাই এখানে যখন নায়ক মান্না ওই খামোস বলে হাত মুঠো করেন; তার ভয়ে  গডফাদার চুপসে যায়; তখন করতালিতে মুখর হয়ে ওঠে  সিনেমা হলঘর।

 অথবা চটুলগানের সাথে যখন পপি তার বিশলাকায় রানের দুলুনি তে সনিমোর পর্দা কাঁপিয়ে তোলেন তখন সবাই হিসহাস করেন।


 সেই সিনেমা হলে নিশ্চিতভাবেই কখনো কখনো ময়ুরীর উদোম রানের  গোশতের থর থর কাঁপন, মুনমুনের মধ্যম আকৃতির বুকের দুলুনি, স্লো মোশনে খল নায়িকা নাগমার  ফুলে ওঠা বুকের ওপর অ্যাকশন কারো কারো কাছে অশ্লীল-চোখ বন্ধ হয়ে আসে।

কারো কাছে  বমির ভাব হয় আজাদ খানের সিনেমা দেখলে। কারো সোহেল-শাপলা  শারিরীক বিত্তবলয় খ্রাপ লাগে। আমি অস্বীকার করছি না।

ভালো সিনামাও  এ বঙ্গে হয়েছে; হয়ে আসছে এবং সামনেও হবে। হয়ত আমাদের  ধুম থ্রি'র মত সিনেমা বানানো কিম্বা  গুণ্ডের মত তর্ক সৃষ্টি করে টিকে থাকার মত শক্তি এ দেশের নির্মাতাদের নেই।

তবে এ টুকু তো আছে যে গেরিলা,  ব্যাচেলর কিম্বা অগ্নির মত সিনেমার জয় হয়েছে। ওরা ১১ জনের মত সিনেমা কেবল আমাদের ইতিহাসকে সমৃদ্ধ করেনি চলচ্চিত্র ইিতিহাসে বিষয় বৈচিত্রে এক অনন্য সংযোজন নিয়ে এসেছে।

বেদের মেয়ে জোছনা কিম্বা হাঙর নদীর গ্রেনেড, অথবা মাটির ময়না কি আমাদের সম্মান বাড়ায় নি।

সিনেমা হলগুলোতে আমরা খুবই খ্রাপ পরিস্থিতির কথা বলি। বলি ভালো সিনেমা হচ্ছে না। ইনডিয়ার ভালো সিনামা বানায়; আমি দ্বিমত করি না।  আবার পুরোপুরি একমতও হই না।

কারণ ইনডিয়ার বহু সিনেমা আছে যে গুলো হলিউডের  সিনেমার কাহিনী নকল। আমরা নকল করি হিন্দি সিনামা কিন্তু মৌলিক কাহিনী চলমান  সঙ্কট নিয়ে সিনামা হচ্ছে। সবশেষে পিপড়াবিদ্যার কথাই ধরুন। নাটক কিম্বা সিনামা হয়েছে কিনা তা নিয়ে তর্ক হতে পারে; কিন্তু সিনামার গল্পটা একেবারেই সমসাময়িক এবং প্রাসঙ্গিক।

ইনডিয়া সিনামার বাণিজ্যিক প্রসারে যে পরিমাণ বিনিয়োগ ও প্রচার যন্ত্র ব্যবহার করে বাংলাদেশে তা হয় না। বাংরাদেশের প্রচার মাধ্যমের সাপ্তাহিক দু পৃষ্ঠার এক পৃষ্ঠা ইনডিয়ার জন্য বরাদ্দ থাকে।

ডিজিটাল সরকারের ৭ বছরেও ডিজিটাল ইকুইপমেন্ট আসেনি এফডিসিতে। হলফ করে বলছি আমরা এখানে সিনামা শিল্পকে গলা টিপে হত্যা করতে চাই। সে জন্য আজকের এ হাল।

এখানে সসিনেমা নিয়ে পড়াশোনা করার জন্য  ইন্সটিটিউট ও ইউনিভার্সিটির ডিপার্টমেন্ট খোলা শুরু হয়েছে; মাত্র। এখানকার পরিচালকরা অন্যের সহকারি থেকে শিখেছে। কয়েকজন ইনডিয়া ও আম্রিকা থেকে পড়ে এসেছেন।

নায়ক-নায়িকারা তাদের সুরত ভাল- সেটি কাজে লাগিয়ে সিনেমায় নেমেছেন।

এত সব প্রতিকূলতায়  দেশে অন্তত ২০/২৫ টি ভালো সিনেমা হয়, সে জন্য  নির্মাতাদের  সম্মান জানানো  উচিৎ।


আমাদের নায়িকারা যখন সিনেমায় পা রাখেন-তখন প্রযোজকরা তাকে বেডে ডাকেন, নায়ক তার জন্য উতলা থাকেন।  এটা হয়তো সবখানেই হয়। হতে পারে; তাতে কি।  কিন্তু  সানি লিওনের মত পর্ন স্টারকেও  ইনডিয়া বাজারজাত করতে পেরেছে। ক্যাটরিনা, দীপিকা কিম্বা রানীর কথা ভাবুন না। ঐশ্বরিয়ার কথা বাদই দিলাম।  তাকে নিয়ে আমাদের  তরুণদের আগ্রহ নিশ্চিতভাবেই সবই বুঝতে পারে না।

 এমনকি ভারতীয় নায়ক শাহরুখ, সালমান, জন, ইমরান, হৃতিক- বা আরো যারা আছেন।  তাতেদর জন্য আমাদের অনেতক তরুণীর জীবন যায় যৌবন ভেসে যায়। এ জন্য আমি আমাদের তরুণ-তরুণীদের দোষ দিই না; কারণ আমরা আমাদের চেনাতে পারিনি।


 ববিতার মত নায়িক এ দেশের পর্দা কাঁপাননি  বিশ্ব দরবারে বাংলা সিনামার সমৃদ্ধির কথা জানিয়ে দিয়েছেন। সে  সব নায়িকাকেও এ দেশের ক্ষমতাবানদের হুমকির মুখে পড়তে হয়েছিল।


 সিনামা কি কেবলই বাণিজ্য? মনে হয় না। কিন্তু বাংলাদেশের ব্যবসায়িকভাবে সফলতা অর্জনের জণ্য লড়াইটা বেশি। কারণ এখাতে সরকারের সহযোগিতা কিছু আর্ট ফিলিফেমের জন্য। বাণিজ্যিক সিনেমায় সরকার পৃষ্ঠপোষকতা করে না। উল্টো সুন্দরী নায়িকার ডাক পড়ে সেন্সর বোর্ড সদস্যের বেড রুমে-এ গুলো ওপেন সিক্রেট।

একটা বড় রকমের গুণ্ডামি ঘিরে রেখেছে সিনামা। সেই সুযোগটা নিয়েছে প্রদর্শকরা। যে সব প্রদর্শক তাদের হলগুলোতে  অশ্লীল কাটপিস দেখিয়ে পরিবেশ নষ্ট করেছেন, সিনেমা দেখার জন্য সঙ্গীনীর সহায়তার নামে বেশ্যার বাজার তৈরি করেছেন; ধীর লয়ে তারাই বলছেন হল টিকিয়ে রাখতে হলে এখন হিন্দি সিনেমার বিকল্প নেই।


বড় আফসোস-বঙ্গবন্দূ কন্যা এখন ক্ষমতায়। অথচ বঙ্গবন্ধু নিজ হাতেই এ দেশে  উপমহাদেশীয় সিনেমা আমদানি প্রদর্শণ নিষিদ্ধ করেছিলন। সেটি রক্ষা হলো না। শুক্কুরবার হিন্দি সিনামা ওয়াটডেট মুক্তি পাচ্ছে।

যারা আমাদের সংস্কৃতি থেকে দূরে সরে গিয়ে ভারতীয় বাণিজ্যিক অশ্লীলতাকে শিল্প বলে চালাতে চান তাদের সাথে বাৎচিৎ করার মত ইচ্ছে আমার নেই।

তবে দেশের সনেমা শিল্পকে টিকিয়ে রাখার  স্বার্থে একসাথে একমত  হয়ে একই আওয়াজ তুলতে হবে। সময় এখন নিজের সিনেমাকে প্রটেক্ট করার।  জয় হোক সবার। জয় হোক বাংলাদেশের সিনেমার।  

নারকীয় তাণ্ডবকারীদের একইভাবে গাড়িতে ভরে আগুন ধরিয়ে দেয়াটাই-ন্যায় বিচার


কথাটা গত বছরও বলেছিলাম; এত্ত কিছু উন্রা বের করতে পারেন; গান পাউডার ;প্রেট্রোল ঢেলে যারা গাড়িতে আগুন দিয়ে মানুষ হত্যা করে; সে সব কিট পতঙ্গকে খুঁজে বের করতে পারেন না। এটা বিশ্বাস করতে পারি না। তবুও তাদের সীমাবদ্ধতার প্রতি শ্রদ্ধা রেখে মনে করি- ওই নারকীয় তাণ্ডবের পতঙ্গদের ধরে একই রকমভাবে গাড়িতে ভরে গান পাউডার দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়াটাই আমার কাছে-ন্যায় বিচার।
সরকার বাহাদুর কি কাজটা করবেন? আশায় আছি।
নোট: ১:
রংপুরে মঙ্গলবার রাতে বাসে যারা আগুন দিছে- তাদের ধরে শাস্তি নিশ্চিত করার অপেক্ষায় রইলাম। যদিও গান পাউডার অলারা সব সময় শাস্তির বাইরে থাকে।
নোট:২: সম্ভবত ২০০৪ সালে শেরাটন মোড়ে সাকুরা বারের সামনে বিটিআরটিসি'র দোতলা বাসে গান পাউডার দিয়ে আগুন দেয়া হয়েছিল। সে সময়কার সরকার বলেছিল এটা বিরোধী দলমানে আম্লীগ করেছে। নানাকসহ আরো অনেক যুবলীগ কর্মীকে অভিযুক্ত করে মামলাও করেছিল নিরাপত্তারক্ষীরা। কিন্তু আম্লীগ বলেছিলে সরকার এ কাজ করে তাদের উপ্রে দোষ চাপিয়েছিল।
নোট :৩: ক্ষমতায় আসার পর আসল অপরাধীদের খুঁজে বের করেনি আম্লীগ। গোড়ায় হাত দিলে আমাদের মত পাবলিককে পুড়িয়ে মারা ষণ্ডাদের রুখে দেয়ার ক্ষেত্রে আমরা সম্পূর্ণ না হলেও অনেকটা সফলতা আসতো।

চেংরা বন্ধুয়ারে / এত গোস্সা বন্ধু তোমার অন্তরে'।


তোমার শইলডা গরম ক্যা?
কত দিন পরে আইলা, মাচানের ঘরটা উইড়া যাওনের পর আমার আর কিচ্ছু আছিলো না

গতর ঢাকনের মত কিছু না; এ শহরে কত মাইনষের উন্নতি অইছে;
বস্তির কালো ছোকরা করিম হেও এখন লাল গাড়ি চালায়;


বিয়া করবো কইছিলো; কত রাত শুয়েছি তার লগে;
পলায়া পলায়া কত দিন; চুটিয়ে ভিজেছি দুইজনে ; কামরসে


শেষ পর্যন্ত হেও আমার পর অইলো!

এখন মেম সাহেব আনছে ঘরে; আমার ঘর নাই
মাথার উপর থেইকা উইড়া গেছে ঘর।


গেলো মাসে বসতি দখল, সেই কি কান্ডরে বাপ; পুলিশ, কেরেন, লাটিসোঁটা; মাস্তান

কত কিচু দেইখলাম; এর মইধ্যে আমার গতরে হাত দিলো একজন; নচ্ছর বান্দা

কিন্তু ঘেন্নায় থুতু দিলাম; তাই বলে কি লোভ কমেছে কারো

 না;
সুযোগ পাইলে এই লোক ওই লোক গায়ে হাত দেয়। ঘরে অগো এত সোন্দর বউ-ফুলের মত। তয় একটা কামের না!

গার্মেসে কাম লইলাম; লাইনম্যানে লাইন লাগায়;
বাসা বাড়ির কাম রইলাম বড় সাহেব ছোট সাহেব কত সাহেব যে সামলাইতে অয়।
ফিরা আইলাম আবার বস্তি। এইহানেও একই বেরাম; সবারই একই রোগ !

এত নিয্যাতন ;তারপরেও প্রত্যেক দিন; তোমার জন্য বইসা থাকি; এটারে নাকি অপেক্ষা কয়।


 কত দিন পরে আইলা! কতা কও; কতা কওনা কেন। তোমার শইলডা বালা!

কতা কও;তুমিই তো আছিলা সব;
তারপর যে কি অইলো- গ্রাম ছাইড়া এই শহরে আইলাম;
শহর ভাত দিছে; ইজ্জত নিছে

শহর আবার ছুইড়া ফালাইছে;
এখন রাস্তায় থাকি- রাস্তায় বসত-তুমি আইছো;
চান্নি রাইত আইজ- চলো দুইজনে বইসা কতা কই


 কত মইনষে কত কতা কয়। কত কতা; কিসের এত কতা

আমারো কইতে ইচ্ছা করে; ছলো না; আমার সই।
গান হুনবা-' চেংরা বন্ধুয়ারে / এত গোস্সা বন্ধু তোমার অন্তরে'।   

বালিহাস, হাওরের জল, জলদাসের ছুটোছুটির সকাল


বালি হাঁস উড়ে যাচ্ছে;ছায়া পড়ছে হাওরের জলে
ঠান্ডা বাতাস-মাটি, কাদাময়  সকাল

আকশে সূর্য উঁকি দেয়; নৌকা ছোটে
জলদাস নামে-জলে।  মাছ, মাছ আর মাছে ভরতে চায় 'খলে'


সময়টা বদলে যেতে থাকে;
শাপলা ফুলের মত তোমার গালে এখন  মধ্য দুপুর
গনগনে তেজ; কঠিন-রূঢ়

জীবনের নির্দয় সময়; কত কিছুই না বদলে দেয়

বাইক্কার বিল, বিলের পথ-ঘাসে ঢাকা
নৌকা ছইয়ে বসে থাকা বিকাল

সবই হয়ে যায় হাওয়া।

নগরে নিশ্চুপ প্রতিদিন
বুকে ভেতর জমা হচ্ছে  কালো ধোঁয়ার আস্তরণ
শ্বাসকষ্ট; ইনহেলারে রিলিফ

বালিহাস, হাওরের জল, জলদাসের ছুটোছুটির সকাল
তবুও আমার লাগবে। পারবে ফেরৎ দিতে ?


পারবে না জেনেও চাই।
চাই তোমার সাথে বাইক্কার বিলের শীতের সকালটাও। 

কিস্তি::৯১ জোছনা দর্শন ও একজন হুমায়ূন আহমেদ

জোছনায় ভেসে যাচ্ছে সেন্টমার্টিন।  উত্তরপাড়ায় বসে আছি।  হোটেল ফেরার কোনো ভাবনা নেই। সমুদ্রের উতল হাওয়া আমাকে টানছে; ইচ্ছে করছে ছুট দেই নীলাভ জলের অন্তহীন জলে!

সেন্টমার্টিনে কখনো জোছনাকে মনে করে যাইনি। সেবার জোছনা পেয়েছিলাম কাকতালীয়ভাবে। আমার সাথি ছিল বাবু।  বছর চৌদ্দ আগের রাত।  পড়ি সেকেন্ড ইয়ারে।

ট্যুরের প্রতি ছিল প্রচণ্ড টান। সুযোগ পেলেই ছুট দিতাম।  প্রবালের ওপর বসে  সমুদ্রের বুকে চোখ রেখে সমুদ্র দেখার অসাধারণ অভিজ্ঞতা; এ সব কাব্য কবিতা করে বোঝানো ভারি মুশকিল।

সেন্টমার্টিন সে সময় এত গিঞ্জি ছিল না। মানুষ কম ছিল, পর্যটক তারচে কম।  আমার জীবনে জোছনা উপভোগের সবচেয়ে আনন্দময় একটা রাত সেটি। সাথে সেই গান... এক জোনাকী দুই জোনাকী!

দ্বিতীয় জোছনা উপভোগ করেছিলাম সুন্দরবনে।  ফেব্রুয়ারি মাসের দিকের ঘটনা। সালটা ২০০৪।  সাথি ছিল মীর মামুন, মিটি, সাদিয়া, লিপি, সামিউল হক  এবং মঙ্গা আমানত।

জাহাজটা ভিড়েছিল হরিণটানায়। সুনসান নীরবতা।  বাতাস বয়ে যাচ্ছে। সমুদ্রের নোনা জলের ওপর জোছনাটা যেনো আমার ছেলেদের মুখ। এত উজ্জ্বল। জোছনা রাতে আমি নিজেকে ধরে রাখতে পারতাম না। জোছনা প্রীতি আমার কীভাবে যে জন্মালো তা নিয়ে নিশ্চিত  কোনো ইতিহাস নেই।

হরিণটানায় জাহাজের ছাদে বসে গল্প করছি, শুনছি সেখান থেকে বাঘের মানুষ নিয়ে যাবার গল্প। তবুও এমন একটা ঘোরলাগা জোছনা ভেজা রাতে আমরা নামবো না সেখানে ; হতে পারে না।

 জাহাজের চৌকাঠ ডিঙ্গিয়ে নামলাম হরিণটানায়।  ফরেস্টের লোকদের থাকার ক'টা ঘর। তারপর ঘোর বন। যে বনের ভেতর তাকে  বাঘ; সাপ আর আর কত রকমের জীব। সুন্দরবনে আমার কাছে সবচেয়ে আকষর্ণীয়  হলো  বন। এত বৈচিত্রময় সবুজ বন আমার চোখে লেগে থাকে।

 সে বনের মধ্যে দাঁড়িয়ে জোছনা দেখার অনুভূতি  আসলে অব্যক্ত। এটা কেবল অনুভব করা যায়। শীতের শেষ দিক, তবুও  গরম কাপড় ছিল।  বনের কাছে শীত একটাু বেশিই বটে। আমরা কাঁপছিলাম। কিন্তু ফিরতে চাইলাম না। হরিণটানার ফরেস্ট বাংলোর সামনে কাঠের   টুলে বসে আড্ডা  চলছিলো। আর ফরেস্টের একজন রক্ষি শোনাচ্ছিলেন- কবে  এখান থেকে কাকে  বাঘ ধরে নিয়ে গেছে; তাদের হাঁড়গোড় উদ্ধারের কাহিনী। কিন্তু ঘোরলাগা বনে মায়াবী জোছনার কাছে এ জীবন তুচ্ছ!

জোছনার রাতে নদীর  ঢেউ আর সেই  সাথে অনবদ্য রাত।  এত আনন্দময় রাত জীবনে আরেকটা আসতে পারে না।

তৃতীয় জোছনা দেখার ঘটনা এসএম হলে। যদিও আমি বঙ্গবন্ধু হলে থাকতাম কিন্তু শামীমের সুবাদে; সেখানেও আমার থাকা পড়তো। আমাদের আড্ডার সাথি ছিল সাইমুম ভাই।  এক  শীতের একটা  জোছনা রাত আমরা আড্ডা দিয়ে এসএম হলের মাঠেই কাটিয়ে দিলাম; সেটি সম্ভবত ২০০৫ এর ঘটনা।

ছোটবেলায় আমার জোছনা দেখার সাথী ছিল ফারুক। সম্পর্কে আমার চাচা। কিন্তু বড় হয়েছি একসাথে। আমার  অন্তরঙ্গ বন্ধুদের একজন। আমরা একসাথে হুমায়ুন আহমেদের বই পড়তাম। এর কাছ থেকে ওর  কাছ থেকে ধার এনে পড়া হতো। আবার নিজেদের কেনা বইও ধার দেয়া হতো । এভাবেই । এ সব বইয়ের যথেষ্ট প্রভাব ছিল; জোছনা প্রীতির পেছনে।

ফরুক আর আমি বের হলাম জোছনা দেখতে।  বর্ষার রাত।  মেঠো পথ ধরে হাঁটছি। তখনো আমাদের গ্রামে কারেন্ট আসেনি।   কেরোসিনের বাতি জ্বলছে।  তখনো সেটি গ্রাম; দূরে দূরে কিছু বাড়ি।   উত্তর দিকে হাঁটলে সেখানে একটা পাইপ ; যেটি রাস্তার দু’পাশের পানি সরানোর কাজ করতো। সেখানেই  আমাদের অনেক আড্ডায় কেটে যেতো সময়। সে রাতেও আড্ডা হলো।  চাষ দেয়া জমির ঘোলা জলে আমরা উপভোগ করলাম অনবদ্য এক জোছনা।

এখন সময় পাল্টে গেছে। জোছনা দেখার মত সুযোগ হয় না। কবে যে জোছনা সেটাই দেখা হয় না।  সময় এমন কেনো?

জানি না।  তবে এ দেশে জোছনা কে যিনি জনপ্রিয় করেছেন; তিনি হুমায়ূন আহমেদ। প্রকৃতির এ অসাধারণ রূপটি তিনি সবার সামনে নিয়ে এসেছেন। তাকে কৃতজ্ঞতা। আগামীকাল সে মানুষটির জন্মদিন।  শুভ কামনা তাঁর  জন্য।



বাঁধন থেকে ভাগ্নি; শিক্ষা শান্তি প্রগতির কদর্য রূপ




নারী জাতির প্রতি তাদের অপরিসীম  শ্রদ্ধা।  শিক্ষা-শান্তি-প্রগতি তাদের মূল নীতি। কিন্তু দুটো ঘটনা আমাকে খুব আহত করেছে। আমার মত একটা লোকের আহত হওয়া বড় কোনো ঘটনা না; কারণ এ সমাজের  সাদা মাইক্রো বাস দেখলে যাদের বুক ধুকফুক ধুকফুক করে তাদের মধ্যে আমি নাই। আবার আছিও। কারণ মানুষ হাওয়া হওনের জন্য কোনো কারণ লাগে না।  তবুও ঘটনাটা আমার প্রিয় ক্যাম্পাসের বলে  লিখছি-


২০০০ সালের ঘটনা।  আমার তখন সেকেন্ড ইয়ারে।  বর্ষ বিদায়  নিয়ে টিএসসি সরগরম।  ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মানেই উৎসব-উচ্ছ্বাস-বাধ ভাঙ্গা আনন্দে  মেতে ওঠা। সেই মেতে ওঠার কিছু দিনে অনেকেই আসেন। যাদের আমরা ' বহিরাগত' হিসাবে চিহ্নিত করছি এখন।  আবার অনেককে আমরা নিয়ে আসি, আমাদের প্রয়োজনে। সেই প্রয়োজন ব্যাক্তিগত, রাজনৈতিক, জৈবিক কিম্বা শ্রদ্ধাবোধের।

নারী- শব্দ আমাদের কাছে সব সময় শ্রদ্ধার বাইরে কিছু শব্দ-ঘ্রান নিয়ে আসে। যেখানে শিক্ষা-শান্তি- প্রগতির বাইরের  বাংলাদেশ- জিন্দবাদঅলারও আছেন।  যেহেতু জিন্দাবাদ একটি পাকি শব্দ সেহেতু আমরা তাদের পাকি বর্বরদের  সাথে মিলিয়ে নিয়ে সে আলোচনা বাদ দিতে পারি।

কিন্তু যারা খাঁটি  বাংলা শব্দ ও প্রগতির ধারক তাদের কিছু  বিষয় আমরা চোখ বন্ধ করে এড়িয়ে গেলেও  দু একটা বিষয় একেবারেই এড়াতে পারি না।

 খুব লজ্জা নিয়ে বলছি, ২০০০ সালে বাঁধনের কাপড় খুলে নেবার পর ২০১৪ সালে  আরেকজন নারীর সালোয়ার কামিজ ছিঁড়ে ফেরার মত যে দুবৃত্তপনা  শিক্ষা-শান্তি- প্রগতির লোকেরা করেছে বলে প্রমাণিত হলো সেটি খুবই কষ্টের।


 পিছিয়ে পড়া দেশকে এগিয়ে নেয়া, ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার পেছনে যারা কাজ করছেন; যাদের কাজের মধ্যে শিবির ঢুকে কিছুটা ব্যাঘাত ঘটাচ্ছে বলে তাদের সাংগঠনিক নেত্রী অভিযোগ করছেন; তারা খুবই সুশীল এবং প্রগতিশীল  তারা এমনটা  কেনো করলেন বুঝতে পারি না।


জৈবিক তাড়না সবারই আছে।  ক্যাম্পাসে নিজর ক্ষমতা দেখানোরও অনেক জায়গা  আছে। সেটি না করে এ রকম নিরীহ নারীর ওপর ওপর তারা কেনো হামলে পড়েন, তা জানি না।


২০০০ সালে বাঁধনের কাপড় টেনে নেয়া এবং নিষ্পেষণ করে তাকে অসুস্থ করে ফেলারা শিক্ষা-শান্তি- প্রগতির দলের লোক বলে সে সময় খবরের কাগজে পড়েছিলাম।  এখনো সেই একই লোক। সে সময়ও আম্লীগ সরকার ক্ষমতায় ছিল। এখনো তাই। সে সময় আজাদ চৌধুরী স্যার ভিসি ছিলেন, এখন আরেফিন স্যার। দুজনই ক্যাম্পাসে অতিব সুন্দর কথা বলে মানুষকে মুগ্ধ করার অসাধারণ ক্ষমতাবান।


 তাহলে এমন হয় ক্যানো, কোন শিক্ষা এরা লাভ করেছেন যার জন্য ক্যাম্পাসের পবিত্র ভূমি অপবিত্র হয়,  নারীর শরীরে হাত ওঠে। একেবারেই ব্যাক্তিগত কারণে।

এটা কোন প্রগতি, যে প্রগতি নারীর শরীরের কাপড় টেনে নেয়। হামলে পড়ে হায়েনার মত। তারপরও এ প্রগতিশীলদের পক্ষে কথা বলার  লোকের অভাব থাকে না। তারা যখন কোনো সাধারণ শিক্ষার্থীর আন্দোলনে হামলা করে আমরা তখন বলি- যারা আন্দোলনে ঠেঙ্গানোতে জগতের সব  পুণ্য। তাই আসো। ঠেঙ্গাই।


 আবার তারা যখন বিরোধি দলে থাকে, তখন কথার  ধরণ বদলে যায়, সহ অবস্থান, ছাত্রদের অধিকার, সামনে এগিয়ে যাবার নানা প্রেরণা ময় বক্তব্য দেয়। এ সব শুনে শুনে দেড় দশক পার করেছি। লেখা একবারেই ব্যাক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে লেখা।

অনুসিদ্ধান্ত: এটা  সবাই বলেন, আমিও বলছি ২০০০ সালে বাঁধনের ওপর হামলার বিচার হলে  ২০১৪ সালের এমন ঘটনা ঘটতো। ২০০০ সালের হামলাকারীওরা কার্জন হল এলাকার ছিল; এবারের হামলাকারীরাও। ঘটনাস্থ কেবল ভিন্ন- ২০০০ সালে টিএসটির রাজু স্মৃতি ভাস্কার্যের সামনে; ২০১৪ সাল কার্জন হল পুকুর পাড়।