তাহলে প্রেস কাউন্সিলের দরকার কি?
তাহলে প্রেস কাউন্সিলের দরকার কি? আইন শৃঙ্খলা্ রক্ষাকারী বাহিনী বিভিন্ন আইনের ধারা উপধারা এবং নির্দেশ ধারায় সম্বাদিকদের তুলে নিতে পারলে, আমরা হাত তালিই দেই! দেবই তো, শালা- বাড় বেড়েছে-সাইজ করবো! সাইজ করার একটা মোক্ষম সুযোগ মিলেছে-- তাহলে সবাই মিলে দু চার ঘা মেরে দিই! এটাই এখানে রেওয়াজ।
আমি একজন পর্যটন কর্মী। বেড়াতে, বেড়ানোর উৎসাহ দিতে এবং বেড়ানোর আয়োজন করতে ভালোবাসি।
কিস্তি ৭২: কিছু অসাধারণ স্মৃতি ও বিভ্রাট।
কিছু অসাধারণ স্মৃতি মানুষকে সব সময় জাগিয়ে রাখে, আনন্দে রাখে, এ সব স্মৃতি হাতড়ে মানুষ সুখ পায়। আমার সে রকম মনে রাখার স্মৃতি শ্রীঙ্গল ট্যুরটি। আমার সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব নেয়ার পর প্রথম লং ট্যুর ছিল সেটি। সেই ট্যুরে যারা গেছে তাদের সবার কাছে এটি এখনো ভালো একটা স্মৃতি হয়ে আছে বলেই মনে করি। শ্রীমঙ্গলের সেই ট্যুরটা ছিল প্রচণ্ড শীতের মধ্যে।
রাত ন’টার মধ্যে বাস আসার কথা। বাস আসছে না, টেনশন। সবাই রেডি, কখন আসবে বাস? বাপ্পী ফোনে কার সাথে কথা বলছে। এসে বলল, ভাই যে বাসটা আমাদের দেয়ার কথা, সেটা অ্যাকসিডেন্ট করেছে। নতুন একটা পাঠাচ্ছে। অনেক্ষণ পর বাস এলো। সেই বাসের পেছনের দিকের কাঁচ ভাঙ্গা। বাবু ও আমার মধ্যে যত বিবাদই থাক আমরা কখনোই প্রকাশ করি না। এ ক্ষেত্রেও তাই হলো। আমরা দুজনেই আসলে একজন অন্যজনকে সম্ভবত খুব বেশি ভালো জানি। আবার খুব বেশি খারাপ জানি।
এখানে সে সব বলা উদ্দশ্য নয়, অনেকে বলতো আমরা মানিক জোড়। হবে হয়তো। আমি ও বাবু দুজনে সিদ্ধান্ত নিলাম সিনিয়র হিসাবে বাসের সামনে আসন গেড়ে বসার বদলে আমরা সব ট্যুরে পেছণে গিয়ে বসব। প্রথম ট্যুরেই সেটার বাস্তবায়ন করা হলো। আমরা দু’জনেই বাসের শেষ সিটে গিয়ে বসলাম। প্রচণ্ড ঠান্ডায় জমে যাবার মত অবস্থা। গাড়ি ছুটছে শ্রীমঙ্গল। মধ্যরাতে আমরা বিরতি দিলাম উজান ভাটিতে। সেখান থেকে বাবু আর আমি দুইখান মাফলার কিনলাম। সেই রকম গরম মাফলার। এটা প্রচণ্ড ঠাণ্ডা ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না। ভোরের একটু আগে এসে শ্রীমঙ্গলের লাউয়াছড়ার একটু আগে ডিএফআইডির বাংলোর সামনের টিলায় ওঠার একটা মোড়ে আটকা পড়লাম। তখনো ভালো মত ভোর হয়নি। গাড়ির নাকি লিভার ফেইল। তাই এই আটকে পড়া। অনেক চেষ্টা চরিত্তর করে সেটি ঠিক করা গেলো না। তাই সবাইকে বললাম, বাস থেকে নেমে এসো। চা বাগানে ভোর দেখার অপার সুযোগটা আমরা সবাই নিলাম। সেই ট্যুরে আমাদের সাথে যারা ছিলো তাদের অনেকেই পরে আমার খুব ঘনিষ্ঠ হয়ে উঠেছিল।
মৌ, গ্লোরিয়া, লিপি, সাদিয়া, পুনম, সাম্য, মীর মামুন, বাপ্পাী, শাশীম, সাংবাদিক সমিতির থেকে আসা আমার বন্ধু সেলিম, শামীম, ছোট ভাই ইব্রাহিম ও আশিকসহ আরো অনেকে। সবার নাম এ মুহুর্তে মনে পড়ছে না।
সবাই বের হয়ে চা বাগানে ঘোরাঘুরির পর পর জানা গেলো গাড়ি ঠিক হবে না। তাই লোকাল একটা বাস পেয়ে ওই বাসেই আমরা সবাই গেলাম হীডের বাংলাতে। সেখানে পৌছে রুম ভাগ করে দেয়ার পর সবাই ফ্রেশ হয়ে সকালের নাশতা সেরে নিল। জানালাম সবাই রেস্ট নিক। আমি ও বাবু মিলে একটা লোকাল বাস ঠিক করলাম। সেই বাসে করে আমরা শ্রীমঙ্গলে চা বাগান, লাউয়াছড়া রেইন ফরেস্ট, খাসিয়া পুঞ্জিসহ বিভিন্ন স্থানে ঘুরে সেদিন দুপুরের মত ট্যুর শেষ করলাম।
বিকালে আমরা গেলাম একটা চা কারখানায়। সেখানে বাগান থেকে তোলা পাতা প্রসেস করা হচ্ছে। আমি ও বাবু সকালেই অনুমতি নিয়ে এলাম। বিকালে সেখানে সবাই ভিন্ন রকমের একটা আনন্দ পেলো। সাধারণত কারখানায় এত লোক অ্যালাউ করা হয়না, কিন্তু সে দিন কীভাবে যেনো আমাদের লাক ফেভার করে গেলো জানি না। সন্ধ্যার দিকে বাংলোয় ফেরা হলো। সবাই কান্ত। বাংলোয় এসে রেস্ট নিচ্ছে। পরের দিন সকালে আমাদের যাওয়ার কথা মাধকুণ্ড জলপ্রপাত দেখতে। সেই ঝর্ণা শ্রীমঙ্গল থেকে তিন ঘণ্টার জার্ণি।
রাতেই বাসের মিস্ত্রি এসে বাস ঠিক করলো। সকালে বাস দেখলাম বাংলোর সামনে। খুব ভালো লাগায় মনটা ভরে গেলো। আগের রাতটাকে এনজয় করার জন্য আমি ও বাবু প্ল্যান করলাম। সে প্ল্যান হলো বার বি কিউ হবে। কিন্তু শ্রীমঙ্গলের কমলগঞ্জে জঙ্গলের মধ্যে বার বি কিউ করার মত অভিজ্ঞ লোক বা সরঞ্জাম দুটোর কিছুই পেলাম না। আমি আর বাবু দুজনে গেলাম ভানুগাছ চৌরাস্তা বাজারে। সেখান থেকে ব্রয়লার মুরগি কেনা হলো। সাইকেলের শিক পাওয়া গেলো। শিক চোখা করে আনলাম। বাংলোর বাবুর্চিকে বললাম মুরগি ধুয়ে ভালো করে মশলা পাতি মাখিয়ে দিতে। কি কি মশলা লাগবে তাও এনে বুঝিয়ে দিলাম। বাবুর্চি তাই করলো। রাতে প্রচণ্ড ঠাণ্ডার ভেতর টিলার ওপর বাংলোর পাশে আমরা বার বি কিউ করলাম। মুরগি পোড়াচ্ছি আমি আর বাবু। সবাই একটু একটু করে টেনে টুনে খেয়ে ফেলছে। সেই বনে পোড়ানো মুরগির যে কী স্বাদ, সেটি কেবল খাদকরা (!) বুঝতে পেরেছিলেন। আমরা অনেক ক্ষণ আনন্দ করলাম বার বি কিউ নিয়ে।
তার পরের রাতে আরো মজা হয়েছিল। আমরা সন্ধ্যার পরে ঘণ্টা খানেক ব্রেক দিয়ে রিয়ালিটি শো করলাম। ফান রিয়ালিটি । এ আইডিয়াটা আমি নিজেই তৈরী করেছিলাম। আগে যখন ট্যুরে যেতাম, দেখতাম খালি বক্স পাসিং খেলা হয়। কয়েক মিনিটে শেষ। আমি ভাবলাম বিকল্প দরকার। তাই বিভিন্ন বিষয় লিখে একটা বক্সে রাখা হবে, যে যেটা পায় সেটি পারফর্ম করবে। দারুণ একটা খেলা। দারুন বললাম এ কারণে সেখানে যে সব সাবজেক্ট অ্যাড করা হলো সেগুলো ছিল মজার। চলমান সময়ের বাংলা সিনেমার বিভিন্ন সংলাপ, সিনেমার নাম ও গান সহ বিভিন্ন বিষয় সেটাকে অন্তর্ভূক্ত ছিল । এভাবেই পরের রাতটি আনন্দ ঘন হয়ে উঠলো। বিশেষ করে ডিপজলের ডায়ালগগুলো বেশ চলছিল। বলে রাখি বাংলা সিনেমার প্রতি আমার ও বাবুর বিশেষ দূর্বলতা রয়েছে। আমরা দুজনেই সময় পেলে অশ্লীল (!) বাংলা সিনেমা দেখতাম। সময় না পেলে জোর করে সময় বের করেও দেখতাম।
হিডের বাংলোয় দুদিনের খাবার ও থাকাটা এখনো নিশ্চয় অনেকের স্মরণে আছে। অনেকে আমাকে এখনো এ ট্যুরটার কথা বলেন। সম্ভবত আমার বিবেচনায় শ্রীমঙ্গল ট্যুরটি ছিল সবচেয়ে বেশি নির্মল আনন্দদায়ক ও মনে রাখার মত ট্যুর। তবে আমার যামানায় একটা ট্যুর খারাপও হয়েছিল। সে কথাও আমি জানাবো, পরের কোনো একটা পর্বে।
আমি একজন পর্যটন কর্মী। বেড়াতে, বেড়ানোর উৎসাহ দিতে এবং বেড়ানোর আয়োজন করতে ভালোবাসি।
শাফিন আপনি একা নন; আমরা আছি! জেগে আছি!!
বন্য হাতিটি দুর্বল হয়ে পড়ছে বলে বিবিসির খবর! আর বন্য হাতি যেখানে দুর্বল সেখানে সবল বঙ্গবাসী নিশ্চয় প্রমোদে ব্যস্ত? কি বলেন, ভাইসব! আমি অন্তত তাই মনে করি!
আমরা অবশ্য বন্যা নিয়া কথা কইতে পারুম না। কারণ হৈলো- এ জলটা নেমে এসেছে দীপিকা, সানি লিয়ন, ক্যাটরিনা আফা আর খান সাবদের তল থেকে। সে তলের জলে অতলে হারাইলেও আমাদের কইতে হবে-- যে -- বন্যা এক উপকারি জিনিস। এর মাধ্যমে প্রচুর পলি আসে। সেই পলিতে জমি ভরে উব্বর হয়। সেই উব্বর জমিতে ভারতীয় শিল্পীরা প্রতি মাসে কনসার্ট করতে আসে।
তো, তা যাই হোক। ইনডিয়ার যৌনতার পাপি জলের চলে তলিয়ে যাওয়া উত্তরবঙ্গ আর ছলনার জলে ডুবতে যাওয়া সুন্দরবন নিয়ে ভাবনার ভ্রিত্রে আরেক ঘটনা!
মাইলস ব্যান্ডের সাথে 'ফসিলস' ব্যান্ড গাইবে না। পড়তি জনপ্রিয়তার গানের দলটা রাজনৈতিক-বাণিজ্য কৌশল নিলো। তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে কলকাতায় আজাদি কনসার্টে মাইলসের সাথে এক মঞ্চে উঠবে না বলে ঘোষনা করলো। আয়োজকদের কাপড় খুলে গেলো। মাইলস বলে দিলো-- এ ক্যাচাল করে তারা সেখানে গাইতে যাবে না। (খবর বিবিসি বাংলা'র)
তাদের বহু মত-দাস আছে বঙ্গে। স্বেচ্ছায় বিবেক বন্ধক রেখে বঙ্গে ইনডিয়া পাকিস্তানের দালালি করা লোকের অভাব নেই।
কথায় আছে -- ভাত ছিটালে কাউয়ার অভাব হয় না। বিষয়টা এ পর্যন্ত ভালো ছিল।
কিন্তু সানি লিওন আর ক্যাটরিনা থাকলে ইনডিয়ান-সমর্থক তরুণ প্রজন্মের অভাব হয় না। এটা এখন প্রমাণিত সত্য!
হায় আল্লাহ আমার কি হবে! যদি ইনডিয়া পাশে না থাকে। চুদির ভাই টাইটের এ রকম কিউট নুলা কথা শুনবেন আপনি। আমিও শুনি। পাকিস্তান গত হইছে। ইনডিয়ার আগ্রাসন চলতাছে। আমাদের এ সব মানতে বাধ্য করছে, অনেকে। স্বজ্ঞানে।
শাফিনকে কাঠগড়ায় খারা করানো হইছে, তার ইনডিয়া বিদ্বেষের অভিযোগে। আমি তন্ন তন্ন করে তার ফেসবুক পেজটা খুঁজে দেখলাম, কিন্তু ইনডিয়া বিদ্বেষ , ইনডিয়াকে আক্রমণ করে তার কোন বক্তব্য পেলাম না। আমি অবশ্য চর্মচক্ষে দেখেছি, যারা অন্তরচক্ষু দিয়ে মাথার চুল দেখে নুনুর বাল গুণে থাকেন, তাদের কথা আলাদা।
আন্দাজ করি-- বেগম জিয়ার সাথে শাফিনের দেখা করাটাই কাল হয়েছে। এর আগে ন্যান্সিও একই রকম সমস্যায় পড়েছিলেন। খালেদা জিয়ার বক্তব্য সমর্থন করে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়া, সে কী হয়রানি তার! পুলিশি তাকে হয়রানি করেছিল। আর সকরারি দল পারলে তাকে চৌরাস্তায় এনে ন্যাংটো করে অবস্থা। অবশ্য তার চরিত্র নিয়ে ব্যাপক যন্তর মন্তর করেছিল, তারা।
ভিন্ন মত, ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গিকে সহ্য করার মত এক দমন দিল আমাদের আল্লায় দেয় নাই। তাই ছ্যাঁত করে উঠি সবাই। বাংলাদেশের পক্ষে কথা বললে- এটা কারো না কারো বিপক্ষে যাবে । তিরিশ লাখ বা তারো বেশি মানুষ যদি ভাবতো-- আমাদের মত-- আমার কি হবে? তালে এ দেশ স্বাধীন হতো না।
তাই তাদের রক্তের সাথে ঈমানের সাথে থাকতে চাইলে, তাকে ভারত বিদ্বেষি, পাকিস্তান বিদ্বেষি, আম্রিকা বিদ্বেষি, ইসরাইল বিদ্বেষি, রাশিয়া বিদ্বেষি, তুরস্ক বিদ্বেষি--- এ রকম নানা তকমা সইতে হবে। শাফিন সেটি সইছেন।
কথা একটা- শাফিন আপনি একা নন। আমরা আছি!! জেগে আছি। জলবন্টন নিয়ে বছরের পর প্রতারণা সয়ে যাচ্ছি, সীমান্তে হত্যা সইছি, জঙ্গিবাদের অভিশাপ সইছি, মাদকের বাজার সইছি, শিল্পী বিনিময়ের নামে নিজের সংস্কৃতি বিসর্জন দিছি-- বাকি কিছু নাই। তবুও আপনারা যারা আছেন, মাথা উঁচা কইরা কথা কইবেন। আছি। পাশে আছি।
আমি একজন পর্যটন কর্মী। বেড়াতে, বেড়ানোর উৎসাহ দিতে এবং বেড়ানোর আয়োজন করতে ভালোবাসি।
এই চাটা রাজনৈতিক প্রজন্ম লইয়া জাতি কি করিবে?
ইন্ডিয়ান দিদিদের খসানো জল চাটারা কই! উত্তর বঙ্গে জলে ডুবাই দিছে ইনডিয়া । অগো জল যৌবনের পাপ আমাদের গরিব, নিরীহ মানুষের উপর ছাইরা দিয়ে মজা দোখতাছে!
অগো দৈত্য সুলভ, সব চারখার করে দেয়া মানসিকতার প্রতিক বুনো হাতি বাঁচাতে বিশেষজ্ঞ আসছে বলে, বিবিসি বাংলার গতকালের খবর ।
তা মানুষ যে ডুবে আছে, তাদের উদ্ধার কেমনে হবে ? সে বিষয়ে কোন বিশেষজ্ঞ আসছে, শুনি ।
শুকনো মওসুমে জল আটকে উত্তরবঙ্গ মরুভূমি করে রাখা সব ক'টা গেট খুলে দিয়ে আমাদের উদ্ধার করছে , ইনডিয়া, তাই না! আসেন তালিয়া বাজাই । সানি লিওন লিখে গুগল করি । যৌবল জ্বালান তো বড় জ্বালা । মানুষ থাকলেই কি, আর না থাকলে কি !
ইন্ডিয়ান আধিপত্যবাদ , বঙ্গীয় মানুষের উপর জলজ অনাচার, মাদক, জঙ্গি, পণ্য আর সীমান্তে মানুষ খুন করে- তারা আমাদের সৎ প্রতিবেশী! তাদের মন খারাপ করলে আপনি ব্যান ! এই আমাদের চাটা রাজনীতি ।
এ চাটা রাজনৈতিক প্রজন্ম লইয়া জাতি কি করিবে?
অগো দৈত্য সুলভ, সব চারখার করে দেয়া মানসিকতার প্রতিক বুনো হাতি বাঁচাতে বিশেষজ্ঞ আসছে বলে, বিবিসি বাংলার গতকালের খবর ।
তা মানুষ যে ডুবে আছে, তাদের উদ্ধার কেমনে হবে ? সে বিষয়ে কোন বিশেষজ্ঞ আসছে, শুনি ।
শুকনো মওসুমে জল আটকে উত্তরবঙ্গ মরুভূমি করে রাখা সব ক'টা গেট খুলে দিয়ে আমাদের উদ্ধার করছে , ইনডিয়া, তাই না! আসেন তালিয়া বাজাই । সানি লিওন লিখে গুগল করি । যৌবল জ্বালান তো বড় জ্বালা । মানুষ থাকলেই কি, আর না থাকলে কি !
ইন্ডিয়ান আধিপত্যবাদ , বঙ্গীয় মানুষের উপর জলজ অনাচার, মাদক, জঙ্গি, পণ্য আর সীমান্তে মানুষ খুন করে- তারা আমাদের সৎ প্রতিবেশী! তাদের মন খারাপ করলে আপনি ব্যান ! এই আমাদের চাটা রাজনীতি ।
এ চাটা রাজনৈতিক প্রজন্ম লইয়া জাতি কি করিবে?
আমি একজন পর্যটন কর্মী। বেড়াতে, বেড়ানোর উৎসাহ দিতে এবং বেড়ানোর আয়োজন করতে ভালোবাসি।
জল থামাতে জলের আয়োজন!
পাঞ্জাবী ট্রডিশনাল ড্রিংকস! সবাই জলের মত খায়!
প্রতিদিনকার খাবার, তবে একটু আয়েশি। খাবারের সাথে ঘি, ভাজা জিরা, কাঁচা মরিচ আর পেঁয়াজের টুকরো সামনে আনলে জিভে জল না আসে পারে। সে জল থামানোর জন্য আবার জলের আয়োজন। ছাতু আর লাচ্ছি। হেলদি লাচ্ছি, অল্প মিষ্টিতে ঘুঁটে দেয়া হবে আপনার সামনে। কাঁচামরিচের চায়ের মত কাঁচা মরিচ ডোবানো ছাতু। এ সব পাঞ্জাবী খাবারে আলাপ।
ভারতের পাঞ্জাব নগরের রমণীদের সুনাম আছে। শেষ বিকালে অস্তমায়ন সূর্যের রঙ নাকি ছুঁয়ে থাকে কিশোরী-তরুণীর মুখ। সে নগরের খাবারের সুনাম ছড়িয়েছে ইনডিয়ায়। বিশেষত সাউথ ইনডিয়াজুড়েই তো এর সুনাম। বঙ্গেও এর সুনাম আছে। পর্যটক হিসাবে আমরা যারা সিমলায়-মানালী ঢুকি, তাদের একবার পাঞ্জাব থামতে হয়। ডাল মাখানিতে নান ডুবিয়ে খেতে খেতে অনেকেরই মনে হয়েছে- আহা! অমৃত!
সে খবার এবার রাজধানি ঢাকায়ও আসলো। তবে সায়েবি কায়দায়। লা মেরিডিয়ানে গেছিলাম, সোমবার। লিফটের ১৬ নম্বর বোতাম টিপলে চোখের সামনে একটা পাঞ্জাবী যুগল-ট্রাকের উপর! সেটা থেকে একটু সামনে এগোলে সাদা কুর্তা আর লাল ট্রাউজার পরা, মাথায় পাগড়ি দেয়া তরুণ, এগিয়ে ধরে কাঁচা মরিচ চুবানো মাঠা জাতীয় পানীয়ের গ্লাস।
পানীয় পরিবেশন প্রস্তুতি!
হাঁটতে হাঁটতে চোখে পড়ছিলো সাজানো সব পাঞ্জাবী খাবার। তবে এত খাবার পাঞ্জাবে একসাথে দেখিনি। রেস্টুরেন্টে আমার মত কাল্লুর কাছে খাবারের অর্ডার নিতে ২০০২ সালে বিকালে যে তরুণি এসেছিল, চোখ কচলে তাকে দেখেছি আগে! তারপর খাবারের অর্ডার করে একগ্লাস পানি খেলাম!
সেই খাবার অনেকদিন পর আবার খেলাম পাঁচতারকা হোটেলের রেস্টুরেন্টে!
খাবারের টেবিলটা সাজানো- একটা বাটিতে চামচ তিন ঘি, তিন পিস পোড়ানো মুরগি, একবাটি ভেড়ার খুরার সুপ! এক বাটি ডাল মাখানি। দু চামচের মত পোড়ানো জিরা গুঁড়া, পেঁয়াজ, লেবু আর কাঁচামরিচ জমা করা একটা বাটি। আনা হলো- তিন পদের রুটি।
খাবার সাজানো হলো টেবিলে!
জিভের জল সামলানো কঠিন।
সে কঠিনকে আরো কঠিন করে দিলে ফুডলাউঞ্জে গুর্দে কাপুরি নাল কিমা কলিজা। সে রকম খাবার। গরুর কলিজার সাথে গুর্দার কিমা মিক্সড করে রান্না করা খাবারের সাথে নান- আহ! কত দিনপর গালে পুরলাম।
নাল কিমা কলিজা, জল আটকাতে পারছি না!
খাবারের ফাঁকে ইনডিয়ান শেফ শমসের সাথে কথা। বললেন, মুরগি, ভেড়ার খুরার সুপ, রুটি আর ঘি মাখিয়ে খেযে নেওয়ায় তাদের রেওয়াজ।
ভেড়ার খুরার সুপটাকে তার অর্গানিক বলে। কারণ এর সাথে দেয়া সব কিছুই লোকাল।
একটা রেসিপিও জেনে নেয়া গেলো তার কাছ থেকে--KHARODEY DA RAS (এটার উচ্চারণ কি হবে? খারুদি দা রাস!) সে নাম যাই হোক খাবারটা সিরাম!
ল্যাম্ব ট্রটার্স নিয়ে সিদ্ধ করে পানির সাথে আদা, রসুন, ধইন্নার গোটা, কুচি করে কাটা পেঁয়াজ দিয়ে রান্না শুরু করে দিলেই হলো।
এটার নিয়ম নাকি এ রকম---একটি পাতিলে তেল দিয়ে পেঁয়াজ কুচি লাল হওয়া পর্যন্ত আগুনে পোড়াতে হবে। ভেড়ার পা এবং আদা রসুন বাটা দই ঝাঁটা এবং পেঁয়াজ পেস্ট ভেড়ার গোশতের সাথে যোগ করতে হবে। লিগানের সাথে শুকনো মসলা মিশিয়ে রান্না চলাকালেই ভেড়ার গোশত ঢেকে দিতে হবে। রান্না হয়ে গেলে সস মিশিয়ে আদার কুচি দিয়ে পরিবেশন।
ঢোকার আগেই!!
আমি একজন পর্যটন কর্মী। বেড়াতে, বেড়ানোর উৎসাহ দিতে এবং বেড়ানোর আয়োজন করতে ভালোবাসি।
উত্তরবঙ্গে গিয়ে তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র বানান না!
পারলে উত্তর বঙ্গে গিয়ে তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র বানান না! ফারাক্কা বাঁধ আর গজল ডোবায় তিস্তার পানি আটকে রেখে তো পুরা উত্তরবঙ্গ মরুভূমি বানিয়ে ফেলেছেন। তো সেখানে বিদ্যুৎ কেন্দ্র হতে পারে না; তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র। হতে পারে না। কারণ হলো নদীর সব পানি আটকে নদী মেরে দিয়েছেন মনমহন, শন মহন আর মোডি কাকুরা। তা কাঁচামাল নেবেন কেমনে। রাস্তারও তেরটা বেজে আছে।
তো রামপাল।
ফারাক্কার প্রভাবে এমনিতেই সুন্দরবনের শিরা উপশিরার নদী গুলোর পানি নোনতা হয়ে আছে। বাড়তে আছে নোনতার আধিপত্য। তার ওপর এখানে ট্রলার চলবে, কাঁচামাল আসবে, ছাই উড়বে আর সুন্দরবন ধীরে ধীরে আক্রান্ত হবে ক্যান্সারে। মরে যাবে চোখের সামনে। কিছু নরাধম সে জমি দখল করে ঘের বানাবে।
পরিবেশবাদিদের প্রতিবাদের মুখে সরকারের অধিদপ্তর ---ইনভায়রনমেন্টাল ইমপ্যাক্ট অ্যাসেসমেন্ট (ইআইএ) প্রতিবেদন দিয়েছে। সে অনুযায়ী ১৩২০ মেগাওয়াটের এ প্রকল্পের জন্য বছরে ৪৭ লাখ ২০ হাজার টন কয়লা পোড়ানো হবে।
যেখানে ১ টন কয়লা পুড়লে ২ দশমিক ৮৬ টন কার্বন ডাই-অক্সাইড তৈরি হয়। সেই হিসাবে এই প্রকল্প ৮০ শতাংশ লোড ফ্যাক্টরে উৎপাদন করলেও বছরে ১ কোটি ৮ লাখ টন কার্বন ডাই-অক্সাইড উৎপন্ন হবে। যদিও সরকারের প্রতিবেদনে সুপার ক্রিটিক্যাল পদ্ধতি ব্যবহার করায় উদ্যোক্তাদের হিসাব মতেই, ৭৯ লাখ টন কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্যাস উৎপন্ন করে বাকি কার্বন ফ্লাই অ্যাশে যোগ হবে বলে ধারণা দেয়া হয়েছে।
উদ্যোক্তাদের হিসাব সঠিক বলে ধরে নেয়া হলেও প্রশ্ন থা্কছে--- ৭৯ লাখ টন কার্বন ডাই-অক্সাইড কী কম ক্ষতিকর! যত উঁচু চিমনিই ব্যবহার করা হোক না কেন বাতাসের চেয়ে ভারী এই গ্যাস তো এই দেশেই ফিরে আসবে, ফিরে আসবে সুন্দরবনের বুকে।
বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে প্রতিদিন প্রায় ১৪২ টন বিষাক্ত সালফার ডাই-অক্সাইড (বছরে ৫১ হাজার ৮৩০ টন) ও ৮৫ টন বিষাক্ত নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইড (বছরে ৩১ হাজার ২৫ টন) নির্গত হবে। বিপুল পরিমাণ বিষাক্ত গ্যাস সুন্দরবনের বাতাসে সালফার ডাই-অক্সাইড ও নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইডের ঘনত্ব বর্তমান ঘনত্বের তুলনায় কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিয়ে গোটা সুন্দরবন ধ্বংস করবে--- তারপরেও সন্দেহ জাগে!
তো রামপাল।
ফারাক্কার প্রভাবে এমনিতেই সুন্দরবনের শিরা উপশিরার নদী গুলোর পানি নোনতা হয়ে আছে। বাড়তে আছে নোনতার আধিপত্য। তার ওপর এখানে ট্রলার চলবে, কাঁচামাল আসবে, ছাই উড়বে আর সুন্দরবন ধীরে ধীরে আক্রান্ত হবে ক্যান্সারে। মরে যাবে চোখের সামনে। কিছু নরাধম সে জমি দখল করে ঘের বানাবে।
পরিবেশবাদিদের প্রতিবাদের মুখে সরকারের অধিদপ্তর ---ইনভায়রনমেন্টাল ইমপ্যাক্ট অ্যাসেসমেন্ট (ইআইএ) প্রতিবেদন দিয়েছে। সে অনুযায়ী ১৩২০ মেগাওয়াটের এ প্রকল্পের জন্য বছরে ৪৭ লাখ ২০ হাজার টন কয়লা পোড়ানো হবে।
যেখানে ১ টন কয়লা পুড়লে ২ দশমিক ৮৬ টন কার্বন ডাই-অক্সাইড তৈরি হয়। সেই হিসাবে এই প্রকল্প ৮০ শতাংশ লোড ফ্যাক্টরে উৎপাদন করলেও বছরে ১ কোটি ৮ লাখ টন কার্বন ডাই-অক্সাইড উৎপন্ন হবে। যদিও সরকারের প্রতিবেদনে সুপার ক্রিটিক্যাল পদ্ধতি ব্যবহার করায় উদ্যোক্তাদের হিসাব মতেই, ৭৯ লাখ টন কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্যাস উৎপন্ন করে বাকি কার্বন ফ্লাই অ্যাশে যোগ হবে বলে ধারণা দেয়া হয়েছে।
উদ্যোক্তাদের হিসাব সঠিক বলে ধরে নেয়া হলেও প্রশ্ন থা্কছে--- ৭৯ লাখ টন কার্বন ডাই-অক্সাইড কী কম ক্ষতিকর! যত উঁচু চিমনিই ব্যবহার করা হোক না কেন বাতাসের চেয়ে ভারী এই গ্যাস তো এই দেশেই ফিরে আসবে, ফিরে আসবে সুন্দরবনের বুকে।
বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে প্রতিদিন প্রায় ১৪২ টন বিষাক্ত সালফার ডাই-অক্সাইড (বছরে ৫১ হাজার ৮৩০ টন) ও ৮৫ টন বিষাক্ত নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইড (বছরে ৩১ হাজার ২৫ টন) নির্গত হবে। বিপুল পরিমাণ বিষাক্ত গ্যাস সুন্দরবনের বাতাসে সালফার ডাই-অক্সাইড ও নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইডের ঘনত্ব বর্তমান ঘনত্বের তুলনায় কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিয়ে গোটা সুন্দরবন ধ্বংস করবে--- তারপরেও সন্দেহ জাগে!
আমি একজন পর্যটন কর্মী। বেড়াতে, বেড়ানোর উৎসাহ দিতে এবং বেড়ানোর আয়োজন করতে ভালোবাসি।
রাষ্ট্রের নীতি নির্ধারকদের প্রতি একজন দলিত জনতার আর্জি
রাষ্ট্রের নীতি নির্ধারকদের প্রতি একজন দলিত জনতার আর্জি
জনাব
সাধারণ ডায়েরি যে থানায় কোনো গুরুত্ব পায় না, এটা নিশ্চিতভাবেই আপনারা এখন উপলব্ধি করছেন। নইলে এত দিন ধরে নিখোঁজ তরুণরা 'জঙ্গি' হিসাবে আত্ম-প্রকাশ করছে। অথচ পুলিশের কাছে কোন তথ্য নেই। গোয়েন্দারা কানামাছি খেলছেন। এটা কীভাবে বিশ্বাস করি। বিডিআর বিদ্রোহের মত এক স্পর্শকাতর ঘটনার পরও গোয়েন্দাদের সামর্থ বাড়েনি । এটা বাড়ানোর জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ দরকার ছিল। তা করা হয়নি। সময় এখনো শেষ হয়নি, এখনো করা যেতে পারে।
নিখোঁজ বাংলাদেশে এক নৈমেত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। সরকার ও বিরোধীদল দু'পক্ষ একে অন্যকে দোষারোপ করে যাচ্ছেন। কিন্তু একটি গুম, একটি নিখোঁজ, একটি খুন, একটি অপমৃত্যু-একটি পরিবারের জন্য কী দুঃসহ সময় নিয়ে আসে! মানবিক হৃদয় দিয়ে তা অনুভব করুন। মানুষকে মানুষ হিসাবে ভাবুন। মানুষকে হয়রানির করার কোনো অধিকার কারো আছে বলে আমি ব্যক্তিগতভাবেই মনে করি না।
জনাব
এ দেশে হয়রানি একটি উদ্ভাবনী বাণিজ্য। কোনো কিছু আরোপ করে এখানে মানুষ খুন করা একটা সাধারণ ঘটনা। এখানে সোশ্যাল মিডিয়ার পারদ উঁচুতে। গল্পবাজারে ছেড়েই আপনি মজা দেখতে পারবেন। বিচিমুক্ত লোকে দেশ ভরে গেছে। প্রজনন ক্ষমতা হ্রাস পাচ্ছে। তাই অপাত্রে বীর্যস্খলন ঘটাচ্ছে বহুন তরুণ-তরুণী। তাদের কাছে জ্ঞানের ভাণ্ডার নেই। ইতিহাসের নির্মোহ শিক্ষা নেই। দলীয় সংকর্ণীতা, পুঁজিবাদী সমাজব্যবস্থার বিকার আর মুহুর্তে চোখ উল্টানো স্বভাবের নাম ওরা দিয়েছে 'কর্পোরেট'। এখান থেকে বের হওয়ার উপায় আছে। তবে সে জন্য আগে আমাদেরই ঠিক হতে হবে, আমরা কি হতে চাই। আমরা কি একটি মানবিক রাষ্ট্র হতে চাই। নাকি একটি অমানবিক।
জনাব
ধর্ম নিয়ে শঙ্কায় থাকি। বক্তিগতভাবে আমি একজন পাপি মানুষ। কিন্তু প্রতিপালকের ওপর অবিচল আস্থা আমার আছে। তবে ধর্মকর্ম নিয়ে বিস্তর পড়াশোনার ইচ্ছা অনেকের। ভয়ে পড়তে পারেন না। কারণ রাষ্ট্রের নিরাপত্তা বাহিনী ক'দিন পর পর 'জিহাদি' বই উদ্ধার করে মানুষকে হয়রানি করে। খোঁজ নিয়ে দেখলাম, 'জিহাদি' বইয়ের সংজ্ঞা, নামধাম, তালিকা কোনোটাই আপনারা করেন নি। তাহলে 'জিহাদি' বই মানে কি দাঁড়ায়। জঙ্গি বানানোর উপকরণ। দয়া করে জিহাদি বইকে সংজ্ঞায়িত করুণ। একই সাথে তালিকা প্রকাশ করে ওই সব বই বাজেয়াপ্ত করুন এবং এর জন্য দণ্ড ঠিক করুন।তাহলে নিরীহ মানুষ দুুঃশ্চিন্তা মুক্ত থাকরার সুযোগ পাবে।
জনাব
আমি জানি, আপনাদের আবেগ আছে। প্রেম প্রীতি-ভালোবাসা আছে। আমরা তার আবেগ অনুভূতি ও ভালোবাসার প্রকাশটা দেখতে চাই। আশা করছি আপনাদের প্রীতি সব ধরণের শঙ্কা উড়িয়ে নতুন এক দিগন্তের সূচনা করবে।
আমি একজন পর্যটন কর্মী। বেড়াতে, বেড়ানোর উৎসাহ দিতে এবং বেড়ানোর আয়োজন করতে ভালোবাসি।
সন্তান নিয়ন্ত্রণ করতে না পারা মা বাবাকে জ্ঞান দেয়ার আগে- আরেকবার ভাবুন
আইএস ইসুতে ব্যাপক হারে মা বাবাকে জ্ঞান দিচ্ছেন অনেকে। বলি জনাব, জনাবা- নিজের চরকায় তেল দেন ।
মা বাবার ব্যস্ততা বা সন্তানদের সময় দিতে না পারার কারণ একটাই, পুঁজিবাদী সমাজ ব্যবস্থা। ভোগ প্রতিযোগিতাই এখানে মুখ্য । তো ভোগ করতে হলে তো ব্যস্ত থাকতেই হবে ।
মা বাবার ব্যস্ততা বা সন্তানদের সময় দিতে না পারার কারণ একটাই, পুঁজিবাদী সমাজ ব্যবস্থা। ভোগ প্রতিযোগিতাই এখানে মুখ্য । তো ভোগ করতে হলে তো ব্যস্ত থাকতেই হবে ।
স্কুল ফিসের উপর ভ্যাট বসাবেন , দ্রব্যমুল্য নিয়ন্ত্রণহীন থাকবে, কৃষক তার ফসলের সঠিক মুল্য পাবেন না, সিনেমা হল তুলে দেবেন, মসজিদে-মন্দিরে-গির্জায় গেলে তাচ্ছিল্য করবেন, খেলার মাঠ দখল করে রাজনীতি করবেন, স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে দলীয় ক্যাডার নিয়োগ দিবেন, বাস-রেলের ভাড়া বাড়বেন, বিদেশি নায়িকা এনে নাচাবেন, গ্যাস, পানি, কারেন্টের দাম বাড়াবেন ---
আর মা বাবাদের তুলে কথা বলবেন, তা ত চলতে পারে না ।
আমি একজন পর্যটন কর্মী। বেড়াতে, বেড়ানোর উৎসাহ দিতে এবং বেড়ানোর আয়োজন করতে ভালোবাসি।
সুখ অসুখের গল্প ৮ : কিছু সতর্কতা আপনার চিকিৎসাকে সহজ করবে।
সুখ অসুখের গল্প ৮ : কিছু সতর্কতা আপনার চিকিৎসাকে সহজ করবে।
ইনডিয়া মানে সব ভালো ডাক্তার তা কিন্তু নয়। আপনাকে সেখানে যাওয়ার আগে সতর্কতার সাথে ডাক্তার এবং হসপিটাল সিলেক্ট করতে হবে। কলকাতা অনেকটা দালার ঠাঁসা। আর হেলথ টুরিজমের নামে আপনাকে অনেক সেবা দেওয়ার চেষ্টা করবেন। এবং এ সব ক্ষেত্রে শুরুতেই বলবে, স্যার আমরা আপনাকে ফ্রি কন্সালটেশন দিচ্ছি। পরে বলবে, স্যার আপনাকে সেবা দেওয়ার জন্য ১০০ ডলার ফি দিতে হবে। তাও বলবে ঘটনার শেষে!
সুতরাং আপনি যদি কোন ইনডিয়ান এজেন্টের সাথে জানতে কথা বলে থাকেন, তাহলে আগেই সার্ভিস ফি'র বিষয়টি জেনে নিন। তারপর আলাপ করুণ। আমি নিজে ইনটেক্সরে সাথে কথা বলেছিলাম। তারা প্রথমে জানালো আমাকে কোন টাকা গুনতে হবে না। পরে ্তাদের আরেকজন আলাপকালে বললো, স্যার সার্ভিস শেষে আপনাকে ১শ ডলার পে করতে হবে! তারপর আমি আর ও মুখো হইনি!
তবে আপনি একটু চোখকান খোলা রাখলে নিজেই নিজের কাজটি করে ফেলতে পারেন। এখন অনলাইনের যুগ, আপনি চাইলে সব কিছুই দেশে বসেই সেরে নিতে পারেন।
আপনি যদি শখে শখে ডাক্তার দেখাতে না চান, তাহলে আপনার বাংলাদেশের ডাক্তারের ব্যবস্থাপত্র থাকার কথা। এবং টেস্টের রিপোর্টও। আপনি টেস্টের রিপোর্ট পাঠাতে পারেন, হসপিটালে। কর্পোরেট হসপিটাল, মানে টাকা পয়সা কামাই করার হসপিটালে বিদেশিদের সার্ভিস দেওয়ার জন্য আলাদা ডিপার্টমেন্টই আছে। এর নাম ইন্টারন্যশনাল পেশেন্ট ম্যানেজম্যান্ট, বা কারো লাউঞ্জ কারো সার্ভিস এ সব নামে থাকে। আপনি যে হসপিটালে যাচ্ছেন, তার ওয়েবসাইটে গেলেই এর লিঙ্ক পাবেন। লাইভ চ্যাট অপশনও আছে। সেখানে মেইল করুণ। তবে এটা ইংরেজিতেই করতে হবে।
নিজে ইংরেজি না জানলে, পরিচিত কারো সহায়তা নিতে পারেন। মেইল করলে আপনি সবচে দ্রুত রেসপন্স পাবেন এ্পলো, রিলায়েন্স, আম্বানি , লীলাবতি হসপিটালের। তবে পাবলিক বা দাতব্য হসপিটালের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সহায়ক সিএমসি ভেলর। এখানকার খরচও কম। হসপিটালটি আপনার মেইলের ভিত্তিতে খরচ এর হিসাবসহ জানিয়ে দিবে। আপনি আপনার মেডিকেল রিপোর্ট পাঠিয়ে দিলে তারা রিভিউ করে ট্রিটমেন্টপ্ল্যান মেইল করে দিবে।
এ জন্য অবশ্যই আপনাদের নির্দিষ্ট ডাক্তার বা ডিপার্টমেন্টে মেইল পাঠাতে হবে। যেমন নিউরো লজির জন্য নিউরো ওয়ান বা নিউরো টুতে আপনি আপনার সমস্যা অনুযায়ী ডকুমেন্ট পাঠালে তারা আপনাকে ডিটেইল জানাবে। সেখানে চিকিৎসার জন্য কেমন সময় লাগবে তাও জানিয়ে দেবে।
দিল্লি এইমস হসপিটাল ইনডিয়ার নম্বর ওয়ান হসপিটাল। সেখানেও এখন বিদেশি রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তবে প্রাইভেটের মত ঝটপট চাওয়া মাত্র সেবা পাওয়া যাবে না। কিছুটা সময় নিতে হবে। সেখানে চাইলে আপনি কেবিনও নিতে পারবেন। ইনডিয়ার দ্বিতীয় বেস্ট হসপিটাল চণ্ডিগড় পোস্ট গ্রাজুয়েট হসপিটাল। সেখানে আপনাকে সরাসরি গিয়ে তারপর ডাক্তারের সিরিয়াল দিতে হবে। তবে দিল্লি এইমসে আপনি ইনডিয়া পৌছেই সিরিয়াল দিতে পারবেন। সে জন্য আপনার একটিভ ইনডিয়ান মোবাইল সংযোগ লাগবে।
সিএমসি ভেলোরে ডাক্তার দেখানোর জন্য প্রাইভেট ও নরমাল দু রকম সিস্টেমই আছে। প্রাইভেটে দেখাতে ৬০০ রুপি লাগে। পাবলিকে ২০০ রুপি। আরো কমেও আউটডোরে দেখানো সম্ভব।
আর এপোলো টাইপের হসপিটালে দেখাতে ডাক্তার ভেদে ১০০০ থেকে ১২০০ রুপি খচর করতে হবে। তবে মনে রাখবেন এপোলো টাইপের হসপিটালে টেস্টের খরচ বেশি। এ ক্ষেত্রে আপনি চাইলে আপনার কি কি টেস্টের প্রয়োজন হতে পারে তা একজন ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করে আইসিডিডিআরবি'র মহাখালী থেকে টেস্টগুলো করিয়ে নিতে পারেন। রাখবেন, তারা বঙ্গীয় ব্রাক্ষণ ডাক্তার নন যে, যেখানে তার কমিশন আছে সেখান থেকে টেস্ট করা হবে। আপনার টেস্ট থাকলেই হলো! তবে কিছু টেস্ট আপনাকে হয়ত নতুন করে করাতে হতে পারে।
জেনে রাখুন, বড় হসপিটালগুলো অপ্রয়োজনীয় টেস্ট করানো হার খুবই কম! এটা তারা খুব ভালো মানুষ বলে নয়, এটা ইনডিয়ার আর্থ সামাজিক অবস্থা বিবেচনা করে। কারণ ইনডিয়ানরা খরচের ব্যাপারে খুবই সতর্ক। তাই মন চাইলো আর টেস্ট দিলো, সেটা করে ডাক্তারের চেম্বারে হুমড়ি খেয়ে পড়বে এমনটা নয়।
মাস তিনেক ধরে ইনডিয়ার হসপিটাল গুলোর খবর নিছিলাম। সে অভিজ্ঞতা থেকে বলি, আপনি যদি কেবল চেক আপ এবং ডাক্তার দেখাতে চান , সে ক্ষেত্রে আপনার জন্য দিল্লি এপোলো বেস্ট অপশন। কম টাকায় প্রাইভেট চিকিৎসার জন্য সিএমসি। এর বাইরে মুম্বাইয়ের আম্বানি হসপিটাল ভালো। ব্যাঙ্গালোরের দেবীশেঠির হসপিটালরের কথা সবাই জানেন । কিন্তু মিস্টার শেঠিকে আপনি কলকাকতায়ও দেখাতে পারেন। কারণে তার হসপিটালের যাত্রা কিন্তু কলকাতায়। এবং রবীন্দ্র নাথের নামে একটা ট্রাস্ট এটি পরিচালনা করে থাকে বলে শুনেছি।
কোন রকমের দ্বিধা- না করে যে কোন বিষয়ে ডাক্তারের সাথেই কথা বলুন। কোন রকমের সমস্যা হবে না। এটা বঙ্গীয় ডাক্তার নয় যে, বিরক্ত হবেন। তার সিরিয়াল দেয়া লোকটা দেখিয়ে বলরেন, ওর সাথে আলাপ করুন।ডোক্তাররা মেইলের পাশপাশি হোয়াটসঅ্যাপে খুব স্বচ্ছন্দবোধ করেন!
ইনডিয়ার হসপিটালে গেলে আপনার এক বাংলাভাষি গাইড দরকার হতে পারে। কর্পোরেট হসপিটালে আপনি বিনাপয়সায় এ সেবা পাবেন। পাবলিক হসপিটালের জন্য কিছু টাকা দিলে আপনি এ রকম কাউকে পেয়ে যেতে পারে। সেটা টাকা ২০০ থেকে ৩০০ রুপির বেশি নয়।
আমি বলছি না তারা তাদের দেশের রোগীদের সাথে তারা এ রকম অনন্য ব্যবহার করেন। তবে বাইরের রোগীদের তারা বিশেষ যত্ন নিয়ে দেখেন। কারণ তারা চান দেশটাকে রেমিটেন্স আসুক এবং তাদের সুনাম ছড়িয়ে যাক। তাদের সুনামের কারণে কিন্তু এখন ঢাকায় এপোলো, স্কয়ারে বেশ কয়েকজন ইনডিয়ান ডাক্তার নিয়মিত রোগী দেখছেন। আমরা যাচ্ছিও।
আমি একজন পর্যটন কর্মী। বেড়াতে, বেড়ানোর উৎসাহ দিতে এবং বেড়ানোর আয়োজন করতে ভালোবাসি।
সুখ অসুখের গল্প ৭ :: আমাদেরও রোগীবান্ধব ডাক্তার আছেন!
সুখ অসুখের গল্প ৭ :: আমাদেরও রোগীবান্ধব ডাক্তার আছেন!
নিশ্চিত করে বলছি, আমাদের অত্যন্ত মেধাবী এবং রোগী বান্ধব ডাক্তার আছেন। খেয়াল করলেই দেখতে পাবেন। তবে তাঁদের পর্যন্ত পৌছানো অনেক দুরহ হয়, কখনো কখনো। নিউরোলজির জন্য ডাক্তার কাজী দীন মোহাম্মদের কথা বলতে হবে। তাঁর কাছে পৌছাতে তিন মাসের মত সময় লাগে। তবে তাঁর রোগী দেখে দ্রুততার সাথে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ভালো পরামর্শ দিতে পারেন।
আমি যখন উচচ রক্তচাপ নিয়ে বিপাকে ছিলাম, তার শরণাপন্ন হলাম। তিনি আমাকে কোনো রকমের টেস্ট ছাড়াই ওষুধের দিলেন। এর আগে বেশ কয়েকমাস ধরেই আমি হাইব্লডাপ্রেসার নিয়ে বিপদে ছিলাম। এই, হুটহাট প্রেসার বেড়ে যাওয়ার একটা ভয়ঙ্কার ব্যাপার ছিল।
দীন মোহাম্মদ স্যারের অধীনে আমি বছর দু চিকিৎসা নেয়ার পর তার সাথে ঢাকা মেডিকেলের আউটডোরে তার সাথে দেখা করা কঠিন হয়ে গেলে, আব্বার ডাক্তার বরেণ চক্রবর্তীর শরণাপ্ন্ হলাম।
বরেণ দা, আমার দেখা অসাধারণ ডাক্তার। তিনি মনযোগ দিয়ে রোগীর কথা শোনেন। পায়ে হাত দিয়ে অন্তত পালসটা দেখেন। যেটা অন্য ডাক্তারদের অনেকেই করতে চান না।
ইন্টারনাল মেডিসিনের ডাক্তার বরেণ চক্রবর্তী, ওষুধও রয়ে সয়ে লিখেন। এবং রোগীদের তিনি ফোনেও সময় দেন। দরকার হলে ওষুধ পরিবর্তন করেও দেন। গত চার বছরে আমাকে দুবার কিছু টেস্ট করতে দিয়েছেন।
বরেণ দা এক সময় দিনে ১৫ জন রোগী দেখতেন। এখন কর্পোরেট হসপিটালে বসার কারণে এ সংখা চারগুণ হয়েছে। তবে তার একটা গুণ হলো- অত্যন্ত যত্ন করে রোগী দেখেন। আমি এবার আব্বার সাথে ইনডিয়ায় যাওয়ার পর তাঁর চিকিৎসার কাগজপত্র এপোলোর অমিত মিত্তালকে দেখালাম। তিনি বরেণ দা'র চিকিৎসাটা ঠিক রাখলেন। তবে দুটো টেস্ট দিয়ে বল্লেন, টেস্টের রিপোর্টটা যেন বরেণ দাকে দেখাই এবং চাইলে অমিতকেও আমি এটা পাঠাতে পারি।
ডাক্তার মুরতুজা খায়েরও রোগীবান্ধব। রেসপেরেটরি মেডিসিনের এ চিকিৎসক মূলত বসেন একটি বড় কর্পোরেট হসপিটালে। রোগী দেখেন নির্ভারভাবে। তার সবচে যে বিষয়টা ভালো, সেটি হলো তিনি রোগীর কথা শোনেন এবং ওষুধগুলো তিনি কেন দিচ্ছেন, জানতে চাইলে ব্রিফ করেন। আরেকটা বিষয় হলো, তিনি ওষুধের জেনেরিক নাম লিখে থাকেন। এতে করে আপনি যেখানেই যান, আপনার ওষুধ কিনতে কোন সমস্যা হবে না।
যেহেতু বক্ষব্যাধি একটা ক্রনিক ডিজিস, এর ওষুধ যে কোন সময় কেনার দরকার পড়তে পারে। মিস্টার খায়েরের এন্টিবায়োটিক বাতিক নেই। তবে তার বিদেশি ওষুধের প্রতি দূর্বলতা আছে। আমি গ্রিন উইচে একবার এক বিলেতি চিকিৎসককে তাঁর প্রেসক্রিপনি দেখিয়েছিলাম, তিনি দেখে বললেন, ভালো ডায়গনসিস করেছে। ওষুধও ঠিক আছে।
রেসপেরেটরি মেডিসিনের আরেকজন চিকিৎসক আলি আহসানও বেশ ভালো। তার চিকিৎসাও প্রশংসা করার মত। আমি শুরুর দিকে তার রোগী ছিলাম। তবে তার চেম্বার ভয়াবহ ভিড়ের কারণে এখন যাই না। ফুসফুসের একটি টেস্ট তিনি ১৬০০ টাকায় চেম্বার একজন জুনিয়র ডাক্তারের সহায়তায় করিয়ে নেন। এ্কই টেস্ট বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে শ তিনেক টাকার মধ্যে করা সম্ভব। আমি এখন তাই করি।
রিউম্যাটিক ফিভারে অসাধারণ ডাক্তার নজরুল ইসলাম। একজন চিকিৎসক কতটা ভরসা দিতে পারেন, তা জানতে একবার তার দপ্তরে যেতে হবে। টেস্ট ? ,দরকার না হলে কখনোই না। আমার ছোট বোনের একবার রিউমিটিক ফিভারের কথা জানালো স্থানীয় ডাক্তার। পরে তার দপ্তরে হাজির হলাম। ওষুধ তো দিলেনই না। কোনো টেস্টই নয়। দিলেন কেবল দু'টা ব্যায়াম। এটা কেবল দেশের বাইরে দেখেছি।
মেডিসিনের ডাক্তার মধ্যে আমাদের পরিবারের সবারই পছন্দ ডাক্তার আইয়ুব আলী চৌধুরী। ভদ্রলোক বদলেছেন, এখন অনেক। ২০০২ সালে আব্বার ডেঙ্গু হয়েছিল। নোয়াখালীর ডাক্তাররা ধরতে পারেননি। ঢাকা থেকে হৃদরোগ ইন্সটিটিউটের একজন সহকারি অধ্যাপক নোয়াখালীর প্রাইমে যেতেন, তাঁর কাছে নিলে বললেন, ম্যাসিভ হার্ট অ্যাটাক হয়েছে। এখনই হসপিটাইলাইজ করুন।
পরে ঢাকায় আনার পর তাঁর ডেঙ্গু ধরা পড়লো। চারদিনের ট্রিটমেন্ট করলেন ডাক্তার আইয়ুব আলী চৌধুরী । মিস্টার চৌধুরী সে সময়কার চিকিৎসা আর এখনকার মধ্যে ফারাক আছে। এখন তিনি দিনে ৬০ জন রোগী দেখেন চেম্বারে। হসপিটাল তো আছেই! তবুও আমরা এখনো মেডিসিন বলতে তাঁকে বুঝি। তার একটা বড় কারণ তিনি ওষুধের পরিমাণ টা কম দেন। এন্টিবায়যোটিক এবং ভিটামিন ওষুধ প্রীতি তার নেই। অপ্রায়োজনীয় টেস্টও না।
গাইনোকলজির জন্য বস ডাক্তার জাকিউর রহমান। তাঁর ডাক্তারি দেশি ডাক্তারদের সাথে যায় না। মিস্টার রহমান রোগীকে কমপক্ষে ১৫ মিনিট সময় দেন। এবং মানবিক ডাক্তার বলতে যা বোঝায়, তিনি তাই! তার কাছে ওষুধের চেয়ে বিকল্প পদ্ধতি- ব্যায়াম, ডায়েটই উপযুক্ত ওষুধ।
শিশু ডাক্তারদের মধ্যে অধ্যাপক আজাদ চৌধুরী। তাঁকে দেখছি অন্তত ৭ বছর ধরে। রোগীর মায়েদের অভিযোগ তিনি সময় দিয়ে রোগী দেখেন না। তার ওষুধ কাজ করতে বেশ সময় লাগে। কিন্তু আমার তা মনে হয়নি। যদিও তার হিস্টরি লিখেন একজন। আর তিনি ফাইনাল দেখেন। তবে তার রোগ নির্ণয় ও ওষুধ নির্বাচন খুবই চমৎকার। এন্টিবায়োটিক তিনি একটা শিশুর উপর কখন প্রয়োগ করবেন, সেটা ভালো বোঝেন। আর সাধারণ ওষুধের বদলে আর্য়ুবেদিক ওষুধেই তিনি যথেষ্ট গুরুত্ব দেন। সাথে ওষুধ না খাইয়ে কীভাকে রোগ সরানো যায় তাও বলে দেন। এ রকম শিশু ডাক্তার আমার চোখে কম পড়েছে। মায়েরা গুঁড়ো দুধ খাওয়ার জন্য জানতে চাইলে, বেশ বিরক্ত হন।
সার্জারি ডাক্তার ফিরোজ কাদিরকে মনে পড়ছে। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ছোটভাই নুরুল ইসলাম আকাশের টানা ৮ ঘণ্টা অপারেশন করেছিলেন তিনি। ঢাকা মেডিকেলের অপারেশন থিয়েটার পুরো একটা নির্ঘুম রাত কাটানোর পরেও তার মুখে হাসি ছিল, বলছিলেন, অপারেশন ভালোভাবে করতে পেরেছি। চার্জ? ওটা না শুনলেও চলবে।
সার্জারি ডাক্তারদের এ রকম, অসাধারণ দেখার সুযোগ সবার হয় না। তবে ছোটভাই আকাশ বাঁচেনি। আইনসইউতে থাকার সময় তার জণ্ডিস ধরা পড়ে এবং মারা যায় ছেলেটি।
ডাক্তার মোবিন খান। লিভারের জন্য বস । রোগীকে দেখেন দেড় থেকে দু মিনিট। কিন্তু তার স্মৃতিশক্তি কতটা প্রখর তার একটা বর্ণণা দিই। একজন রোগীকে আমি ২০০৩ সালে তার চেম্বারে নিয়ে গেছিলাম। ২০০৭ সালে ওই রোগীকে আবার নিয়ে গেলে,তিনি মুখস্তই বলে দিলেন তাকে কি চিকিৎসা দেওয়া হয়েছির এবং এখন কি দিতে হবে। আমার একটা বিজনেস কার্ড এগিয়ে দিতে বললেন, আপনারা একটা কার্ড আমার কাছে আছে। এবং সেটি যে আছে তা রোগীর রেফারেন্স বুক উল্টে দেখালেন। বললেন, লং টার্ম চিকিৎসা লাগবে রোগীর। ভালো হয়ে যাবে।
রোগীকে তিনি যা ঘটনা তা বলে দিতে পছন্দ করেন। যদিও খারাপ অবস্থা সম্পর্কে রোগীকে বলা ঠিক নয় বলে আমরা মনে করি। তার কথা ভিন্ন, রোগীর অবস্থা তার জানা উচিৎ।
ইউরোলজি ডাক্তারদের মধ্যে ডাক্তার সালামকে এক নম্বর ধরা হয়। এবং আসলে বেটা এক নম্বর। আপনি যার প্রেসক্রিপশনই নিয়ে যান না কেন, তিনি সে চিকিৎসকে সম্মান দিয়ে কথা বলেন। তবে টেস্টের ব্যাপারে তার সমস্যা আছে। আব্বাকে নিয়ে গেছিলাম। ১ দিন আগে স্কয়ারে টেস্ট করা হযেছিল। বললেন, আবার করেন। কমফোর্টেই করেন। করলাম। রেজাল্ট একই। পরে বললেন, ওষুধ লাগবে না। চারমাস পর আবার চেক করানোর নির্দেশনা দিলেন। একই রকম কথা অবশ্য ইনডিয়ান ডাক্তারও বলেছেন।
ডাক্তার জাহিদ সম্ভবত একমাত্র ডাক্তার যিনি রোগীর সঙ্গ উপভোগ করেন। আব্বাকে নিয়ে তার চেম্বারে যতবারই গেছি, কমপেক্ষ তিরিশ মিনিট সময় দিয়েছেন। পরে জানলাম, অন্য রোগীদেরও তিনি একই রকম সময় দিয়ে থাকেন।
সাইফুল ইসলাম অত্যন্ত দক্ষ ডেন্টাল সার্জন। রোগ ণির্ণয় করতে পারেন সহজে। তারচে সহজে তিনি বড় অপারেশন করেন, হাসি মুখে। খরচও অত্যন্ত কম। ইসলামি ব্যাংক হসপিটালের শাহজাহান পুর ব্রাঞ্চে বসেন তিনি। ভিসিট তিনশ টাকার কম। রিপোর্ট দেখাতে টাকা লাগে না। একমাসের মধ্যে আবার সাক্ষাৎ দেখানোও মাগনা।
আম্মার দাঁতের ইনফেকশন হলো ২০০২ সালে। বঙ্গবন্ধু হাসপাতালের ডেন্টাল বিভাগে আমার ডিপার্টমেন্টের ম্যাডামের হাজব্যান্ড বিভাগীয় প্রধান। নিয়ে গেলে অত্যন্ত যত্ন করে দেখলেন। কিন্তু মূল সমস্যা বার করতে পারেননি। পরে নিয়ে গেলাম, সাইফুল ইসলামের কাছে। তুলনা রহিত চিকিৎসা।
দাঁতের আরেকজন ডাক্তারে কথা মনে পড়ছে। নোয়াখলীতে বসেন। ডাক্তার বিএল নাগ। তার চেম্বারে ৯৩ সালে গেছিলাম। আমার দাঁত ভেঙ্গে গেছিল। তিনি বললেন, দাঁত ফিলআপ করতে টাকা লাগবে ৪০০। আমার কাছে তখন শ দুশ টাকা ছিল। আমি বললাম, তাহলে পরে আসবো। কিন্তু তিনি চিকিৎসা করলেন, বাকিতে। পরে যখন টাকা ফেরৎ দিতে গেলাম, যেন-আসমান থেকে পড়লেন। খুশী হয়ে আমার মাড়ির দুটো দাঁত মাগনা ফিলআপ করে দিলেন। আমার সামনের মেরামত করা দাঁড় ৯৩ সাল থেকে আজ পর্যন্ত ভালো আছে। কৃতজ্ঞতা, বিএল নাগ।
বাংলাদেশের আউটডোরেও অসাধারণ কিছু চিকিৎসকের দেখা মিলবে। তবে এটা দেখবেন খুব কম। তবে আছে। বঙ্গবন্ধুর আউটডোরে বসেন ডাক্তার নাহিদ। মেডিসিনের ডাক্তার। অত্যন্ত বিনয়ী এবং অল্টারনেটিভি মেডিসিন এবং ব্যায়ামেই তিনি রোগীকে ভরসা দিতে চান।
বঙ্গবন্ধুতে চর্মরোগ ডিপার্টমেন্টটাও দারুণ। আউটডোরের ডাক্তাররা চর্মরোগ ভালোভাবেই বিচার করে ওষুধ দিতে জানেন। এটা আমার ও আমাদেে বন্ধুদের অনেকেই পরিক্ষীত।
আমাদের এ রকম বহু চিকিৎসক আছেন। কিন্তু কিছু শঠ, তঞ্চক,ভণ্ড, লোভী চিকিৎসকের কারণে সে সব আলোতে আসে না। কারণ চিকিৎসকরা এখন আর মানুষরে সাথে যে ব্যবহার করেন , কতাঁদের যে আচরণ এবং মানুষ ঠকানোর প্রবণতা তা ভালো চিকিৎসকদের সফলতাকেও ঢেকে দেয়।
নিশ্চিত করে বলছি, আমাদের অত্যন্ত মেধাবী এবং রোগী বান্ধব ডাক্তার আছেন। খেয়াল করলেই দেখতে পাবেন। তবে তাঁদের পর্যন্ত পৌছানো অনেক দুরহ হয়, কখনো কখনো। নিউরোলজির জন্য ডাক্তার কাজী দীন মোহাম্মদের কথা বলতে হবে। তাঁর কাছে পৌছাতে তিন মাসের মত সময় লাগে। তবে তাঁর রোগী দেখে দ্রুততার সাথে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ভালো পরামর্শ দিতে পারেন।
আমি যখন উচচ রক্তচাপ নিয়ে বিপাকে ছিলাম, তার শরণাপন্ন হলাম। তিনি আমাকে কোনো রকমের টেস্ট ছাড়াই ওষুধের দিলেন। এর আগে বেশ কয়েকমাস ধরেই আমি হাইব্লডাপ্রেসার নিয়ে বিপদে ছিলাম। এই, হুটহাট প্রেসার বেড়ে যাওয়ার একটা ভয়ঙ্কার ব্যাপার ছিল।
দীন মোহাম্মদ স্যারের অধীনে আমি বছর দু চিকিৎসা নেয়ার পর তার সাথে ঢাকা মেডিকেলের আউটডোরে তার সাথে দেখা করা কঠিন হয়ে গেলে, আব্বার ডাক্তার বরেণ চক্রবর্তীর শরণাপ্ন্ হলাম।
বরেণ দা, আমার দেখা অসাধারণ ডাক্তার। তিনি মনযোগ দিয়ে রোগীর কথা শোনেন। পায়ে হাত দিয়ে অন্তত পালসটা দেখেন। যেটা অন্য ডাক্তারদের অনেকেই করতে চান না।
ইন্টারনাল মেডিসিনের ডাক্তার বরেণ চক্রবর্তী, ওষুধও রয়ে সয়ে লিখেন। এবং রোগীদের তিনি ফোনেও সময় দেন। দরকার হলে ওষুধ পরিবর্তন করেও দেন। গত চার বছরে আমাকে দুবার কিছু টেস্ট করতে দিয়েছেন।
বরেণ দা এক সময় দিনে ১৫ জন রোগী দেখতেন। এখন কর্পোরেট হসপিটালে বসার কারণে এ সংখা চারগুণ হয়েছে। তবে তার একটা গুণ হলো- অত্যন্ত যত্ন করে রোগী দেখেন। আমি এবার আব্বার সাথে ইনডিয়ায় যাওয়ার পর তাঁর চিকিৎসার কাগজপত্র এপোলোর অমিত মিত্তালকে দেখালাম। তিনি বরেণ দা'র চিকিৎসাটা ঠিক রাখলেন। তবে দুটো টেস্ট দিয়ে বল্লেন, টেস্টের রিপোর্টটা যেন বরেণ দাকে দেখাই এবং চাইলে অমিতকেও আমি এটা পাঠাতে পারি।
ডাক্তার মুরতুজা খায়েরও রোগীবান্ধব। রেসপেরেটরি মেডিসিনের এ চিকিৎসক মূলত বসেন একটি বড় কর্পোরেট হসপিটালে। রোগী দেখেন নির্ভারভাবে। তার সবচে যে বিষয়টা ভালো, সেটি হলো তিনি রোগীর কথা শোনেন এবং ওষুধগুলো তিনি কেন দিচ্ছেন, জানতে চাইলে ব্রিফ করেন। আরেকটা বিষয় হলো, তিনি ওষুধের জেনেরিক নাম লিখে থাকেন। এতে করে আপনি যেখানেই যান, আপনার ওষুধ কিনতে কোন সমস্যা হবে না।
যেহেতু বক্ষব্যাধি একটা ক্রনিক ডিজিস, এর ওষুধ যে কোন সময় কেনার দরকার পড়তে পারে। মিস্টার খায়েরের এন্টিবায়োটিক বাতিক নেই। তবে তার বিদেশি ওষুধের প্রতি দূর্বলতা আছে। আমি গ্রিন উইচে একবার এক বিলেতি চিকিৎসককে তাঁর প্রেসক্রিপনি দেখিয়েছিলাম, তিনি দেখে বললেন, ভালো ডায়গনসিস করেছে। ওষুধও ঠিক আছে।
রেসপেরেটরি মেডিসিনের আরেকজন চিকিৎসক আলি আহসানও বেশ ভালো। তার চিকিৎসাও প্রশংসা করার মত। আমি শুরুর দিকে তার রোগী ছিলাম। তবে তার চেম্বার ভয়াবহ ভিড়ের কারণে এখন যাই না। ফুসফুসের একটি টেস্ট তিনি ১৬০০ টাকায় চেম্বার একজন জুনিয়র ডাক্তারের সহায়তায় করিয়ে নেন। এ্কই টেস্ট বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে শ তিনেক টাকার মধ্যে করা সম্ভব। আমি এখন তাই করি।
রিউম্যাটিক ফিভারে অসাধারণ ডাক্তার নজরুল ইসলাম। একজন চিকিৎসক কতটা ভরসা দিতে পারেন, তা জানতে একবার তার দপ্তরে যেতে হবে। টেস্ট ? ,দরকার না হলে কখনোই না। আমার ছোট বোনের একবার রিউমিটিক ফিভারের কথা জানালো স্থানীয় ডাক্তার। পরে তার দপ্তরে হাজির হলাম। ওষুধ তো দিলেনই না। কোনো টেস্টই নয়। দিলেন কেবল দু'টা ব্যায়াম। এটা কেবল দেশের বাইরে দেখেছি।
মেডিসিনের ডাক্তার মধ্যে আমাদের পরিবারের সবারই পছন্দ ডাক্তার আইয়ুব আলী চৌধুরী। ভদ্রলোক বদলেছেন, এখন অনেক। ২০০২ সালে আব্বার ডেঙ্গু হয়েছিল। নোয়াখালীর ডাক্তাররা ধরতে পারেননি। ঢাকা থেকে হৃদরোগ ইন্সটিটিউটের একজন সহকারি অধ্যাপক নোয়াখালীর প্রাইমে যেতেন, তাঁর কাছে নিলে বললেন, ম্যাসিভ হার্ট অ্যাটাক হয়েছে। এখনই হসপিটাইলাইজ করুন।
পরে ঢাকায় আনার পর তাঁর ডেঙ্গু ধরা পড়লো। চারদিনের ট্রিটমেন্ট করলেন ডাক্তার আইয়ুব আলী চৌধুরী । মিস্টার চৌধুরী সে সময়কার চিকিৎসা আর এখনকার মধ্যে ফারাক আছে। এখন তিনি দিনে ৬০ জন রোগী দেখেন চেম্বারে। হসপিটাল তো আছেই! তবুও আমরা এখনো মেডিসিন বলতে তাঁকে বুঝি। তার একটা বড় কারণ তিনি ওষুধের পরিমাণ টা কম দেন। এন্টিবায়যোটিক এবং ভিটামিন ওষুধ প্রীতি তার নেই। অপ্রায়োজনীয় টেস্টও না।
গাইনোকলজির জন্য বস ডাক্তার জাকিউর রহমান। তাঁর ডাক্তারি দেশি ডাক্তারদের সাথে যায় না। মিস্টার রহমান রোগীকে কমপক্ষে ১৫ মিনিট সময় দেন। এবং মানবিক ডাক্তার বলতে যা বোঝায়, তিনি তাই! তার কাছে ওষুধের চেয়ে বিকল্প পদ্ধতি- ব্যায়াম, ডায়েটই উপযুক্ত ওষুধ।
শিশু ডাক্তারদের মধ্যে অধ্যাপক আজাদ চৌধুরী। তাঁকে দেখছি অন্তত ৭ বছর ধরে। রোগীর মায়েদের অভিযোগ তিনি সময় দিয়ে রোগী দেখেন না। তার ওষুধ কাজ করতে বেশ সময় লাগে। কিন্তু আমার তা মনে হয়নি। যদিও তার হিস্টরি লিখেন একজন। আর তিনি ফাইনাল দেখেন। তবে তার রোগ নির্ণয় ও ওষুধ নির্বাচন খুবই চমৎকার। এন্টিবায়োটিক তিনি একটা শিশুর উপর কখন প্রয়োগ করবেন, সেটা ভালো বোঝেন। আর সাধারণ ওষুধের বদলে আর্য়ুবেদিক ওষুধেই তিনি যথেষ্ট গুরুত্ব দেন। সাথে ওষুধ না খাইয়ে কীভাকে রোগ সরানো যায় তাও বলে দেন। এ রকম শিশু ডাক্তার আমার চোখে কম পড়েছে। মায়েরা গুঁড়ো দুধ খাওয়ার জন্য জানতে চাইলে, বেশ বিরক্ত হন।
সার্জারি ডাক্তার ফিরোজ কাদিরকে মনে পড়ছে। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ছোটভাই নুরুল ইসলাম আকাশের টানা ৮ ঘণ্টা অপারেশন করেছিলেন তিনি। ঢাকা মেডিকেলের অপারেশন থিয়েটার পুরো একটা নির্ঘুম রাত কাটানোর পরেও তার মুখে হাসি ছিল, বলছিলেন, অপারেশন ভালোভাবে করতে পেরেছি। চার্জ? ওটা না শুনলেও চলবে।
সার্জারি ডাক্তারদের এ রকম, অসাধারণ দেখার সুযোগ সবার হয় না। তবে ছোটভাই আকাশ বাঁচেনি। আইনসইউতে থাকার সময় তার জণ্ডিস ধরা পড়ে এবং মারা যায় ছেলেটি।
ডাক্তার মোবিন খান। লিভারের জন্য বস । রোগীকে দেখেন দেড় থেকে দু মিনিট। কিন্তু তার স্মৃতিশক্তি কতটা প্রখর তার একটা বর্ণণা দিই। একজন রোগীকে আমি ২০০৩ সালে তার চেম্বারে নিয়ে গেছিলাম। ২০০৭ সালে ওই রোগীকে আবার নিয়ে গেলে,তিনি মুখস্তই বলে দিলেন তাকে কি চিকিৎসা দেওয়া হয়েছির এবং এখন কি দিতে হবে। আমার একটা বিজনেস কার্ড এগিয়ে দিতে বললেন, আপনারা একটা কার্ড আমার কাছে আছে। এবং সেটি যে আছে তা রোগীর রেফারেন্স বুক উল্টে দেখালেন। বললেন, লং টার্ম চিকিৎসা লাগবে রোগীর। ভালো হয়ে যাবে।
রোগীকে তিনি যা ঘটনা তা বলে দিতে পছন্দ করেন। যদিও খারাপ অবস্থা সম্পর্কে রোগীকে বলা ঠিক নয় বলে আমরা মনে করি। তার কথা ভিন্ন, রোগীর অবস্থা তার জানা উচিৎ।
ইউরোলজি ডাক্তারদের মধ্যে ডাক্তার সালামকে এক নম্বর ধরা হয়। এবং আসলে বেটা এক নম্বর। আপনি যার প্রেসক্রিপশনই নিয়ে যান না কেন, তিনি সে চিকিৎসকে সম্মান দিয়ে কথা বলেন। তবে টেস্টের ব্যাপারে তার সমস্যা আছে। আব্বাকে নিয়ে গেছিলাম। ১ দিন আগে স্কয়ারে টেস্ট করা হযেছিল। বললেন, আবার করেন। কমফোর্টেই করেন। করলাম। রেজাল্ট একই। পরে বললেন, ওষুধ লাগবে না। চারমাস পর আবার চেক করানোর নির্দেশনা দিলেন। একই রকম কথা অবশ্য ইনডিয়ান ডাক্তারও বলেছেন।
ডাক্তার জাহিদ সম্ভবত একমাত্র ডাক্তার যিনি রোগীর সঙ্গ উপভোগ করেন। আব্বাকে নিয়ে তার চেম্বারে যতবারই গেছি, কমপেক্ষ তিরিশ মিনিট সময় দিয়েছেন। পরে জানলাম, অন্য রোগীদেরও তিনি একই রকম সময় দিয়ে থাকেন।
সাইফুল ইসলাম অত্যন্ত দক্ষ ডেন্টাল সার্জন। রোগ ণির্ণয় করতে পারেন সহজে। তারচে সহজে তিনি বড় অপারেশন করেন, হাসি মুখে। খরচও অত্যন্ত কম। ইসলামি ব্যাংক হসপিটালের শাহজাহান পুর ব্রাঞ্চে বসেন তিনি। ভিসিট তিনশ টাকার কম। রিপোর্ট দেখাতে টাকা লাগে না। একমাসের মধ্যে আবার সাক্ষাৎ দেখানোও মাগনা।
আম্মার দাঁতের ইনফেকশন হলো ২০০২ সালে। বঙ্গবন্ধু হাসপাতালের ডেন্টাল বিভাগে আমার ডিপার্টমেন্টের ম্যাডামের হাজব্যান্ড বিভাগীয় প্রধান। নিয়ে গেলে অত্যন্ত যত্ন করে দেখলেন। কিন্তু মূল সমস্যা বার করতে পারেননি। পরে নিয়ে গেলাম, সাইফুল ইসলামের কাছে। তুলনা রহিত চিকিৎসা।
দাঁতের আরেকজন ডাক্তারে কথা মনে পড়ছে। নোয়াখলীতে বসেন। ডাক্তার বিএল নাগ। তার চেম্বারে ৯৩ সালে গেছিলাম। আমার দাঁত ভেঙ্গে গেছিল। তিনি বললেন, দাঁত ফিলআপ করতে টাকা লাগবে ৪০০। আমার কাছে তখন শ দুশ টাকা ছিল। আমি বললাম, তাহলে পরে আসবো। কিন্তু তিনি চিকিৎসা করলেন, বাকিতে। পরে যখন টাকা ফেরৎ দিতে গেলাম, যেন-আসমান থেকে পড়লেন। খুশী হয়ে আমার মাড়ির দুটো দাঁত মাগনা ফিলআপ করে দিলেন। আমার সামনের মেরামত করা দাঁড় ৯৩ সাল থেকে আজ পর্যন্ত ভালো আছে। কৃতজ্ঞতা, বিএল নাগ।
বাংলাদেশের আউটডোরেও অসাধারণ কিছু চিকিৎসকের দেখা মিলবে। তবে এটা দেখবেন খুব কম। তবে আছে। বঙ্গবন্ধুর আউটডোরে বসেন ডাক্তার নাহিদ। মেডিসিনের ডাক্তার। অত্যন্ত বিনয়ী এবং অল্টারনেটিভি মেডিসিন এবং ব্যায়ামেই তিনি রোগীকে ভরসা দিতে চান।
বঙ্গবন্ধুতে চর্মরোগ ডিপার্টমেন্টটাও দারুণ। আউটডোরের ডাক্তাররা চর্মরোগ ভালোভাবেই বিচার করে ওষুধ দিতে জানেন। এটা আমার ও আমাদেে বন্ধুদের অনেকেই পরিক্ষীত।
আমাদের এ রকম বহু চিকিৎসক আছেন। কিন্তু কিছু শঠ, তঞ্চক,ভণ্ড, লোভী চিকিৎসকের কারণে সে সব আলোতে আসে না। কারণ চিকিৎসকরা এখন আর মানুষরে সাথে যে ব্যবহার করেন , কতাঁদের যে আচরণ এবং মানুষ ঠকানোর প্রবণতা তা ভালো চিকিৎসকদের সফলতাকেও ঢেকে দেয়।
আমি একজন পর্যটন কর্মী। বেড়াতে, বেড়ানোর উৎসাহ দিতে এবং বেড়ানোর আয়োজন করতে ভালোবাসি।
সুখ অসুখের গল্প-৬: ডাক্তার বাবু বনাম স্যার!
বঙ্গে ডাক্তার মহোদয়কে 'স্যার' 'স্যার' বলে ফেনা তোলার পরেও তাঁদের দিলে হয় না। তবুও রোগী বলে কথা, মানুষ্য যন্ত্রের বিকলতা সারাতে আমরা সরাই কারখানায় যাই। ডাক্তার মহোদয়রা যা ইচ্ছা তা বলে বিদায় করেন, অনেকটা পুরনো জমিদারি আমলের মত, যাও বাবা যাও! এত কথা বলো কেন, ৫/৭ শ টাকা গুণে এত (!) বলাটা যেন, অপরাধ!
তাই আমরা রোগীরাও কাঁচুমাচু করে ফিরে আসি। আসার পর মনে হয়, আমার তো আরেকটা সমস্যা ছিল বলা হয়নি! বলা হবে কেমনে, ডাক্তার স্যার যেভাবে দ্রুততার সাথে রোগীর মনের সব খবর 'কপি' করে নিয়ে প্রেসক্রিপশন লিখে ফেলেছেন, তাতে আমার মনে হয়েও বা লাভ কি?
ইনডিয়াতে এসে দেখলাম, ব্যতিক্রম। টাকাটা উনারা হালাল করে নেন। বের হবার আগেও আবার জিগেশ করেন, 'স্যার' আর কিছু বলবেন! বলতে পারেন। আমি শুনতে চাই। এত দূর থেকে এসেছেন, বলুন না।
বিস্মিত হবার কারণ নেই, ডাক্তার সাহেব রোগীকে স্যারই বলবেন, এটাই কর্পোরেট হসপিটালের নিয়ম।
তো বঙ্গেও করপোরেট হসপিটাল আছে? ইনডিয়া্নরা ত এখানেও আসেন, কই তা তো বলেন না! বঙ্গে আসলে সবাই তো সে জমিদারি পেয়ে বসেন জনাব! তাই হয় ত তারা রোগীকে সম্মান করতে চান না!
আব্বাকে নিয়ে ডাক্তার অমিত মিত্তালের চেম্বারের সামনে বসে আছি। তার প্রাইভেট সেক্রেটারি এগিয়ে বললেন, স্যার আসুন। আমরা একটু ইতস্তত করে জিগেশ করলাম, আমাদের বলছেন? ভদ্রলোক আরেকটু বিনয়ের সাথে বললেন, 'ইয়েস স্যার'!
দরজা ঠেলে ভেতরে ঢুকতেই ডাক্তার মিত্তাল উঠে দাঁড়ালেন। হাত বাড়িয়ে মোলাকাত করলেন। চেয়ারটা টেনে দিয়ে বললেণন, প্লিস বসুন।
আব্বা এবং আমি বসলাম।
আব্বার কাছে প্রথমেই জানতে চাইলেন, কখন এসেছেন। এখানে কোন অসুবিধা হচ্ছে কিনা।
আব্বা বলছেন, তিনি প্রশ্নের পর প্রশ্ন করছেন। উর্দুতেই বাৎচিৎ চলছে। টেস্ট দিলেন। সাথে সাথে করার ব্যবস্থাও করে দিলেন। কিউটা একটু বেশি, তাই ক্ষমা চাইলেন, কয়েকবার।
রিপোর্ট দেখার জন্য ডাক্তার মিত্তাল অপেক্ষা করছিলেন, কিন্তু তার নির্ধারিত চেম্বারের সময়েরও পরেও তা হয়নি। উনি আগামীকাল রিপোর্ট দেখবেন বলে জানালেন। যাওয়ার সময় নিজে এসে ওয়েটিং রুমে বলে গেলেন, আমরা যেন তার সিনিয়র ডাক্তার মোহন্তীকে একবার দেখিয়ে যাই।
রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর বিকাল তিনটার দিকে ডাক্তার মোহন্তীর রুমে ঢুকতেই ডাক্তার হেসে বললেন, আসুন প্লিজ। বসুন। রিপোর্ট দেখলেন। বাংলাদেশ থেকে গিয়েছি শুনে, বাংলায় কথা বলছেন মোহন্তী। চেন্নাইয়ের সিএমসিতে হার্টের অধ্যাপক ছিলেন। এখন এপোলোর হার্ট সেন্টারের প্রধান। রিপোর্ট দেখে, তিনি আব্বাকে তার সমস্যা নেই বলে জানালেন। সমস্যা নেই, এটি তিনি কীভাবে নিশ্চিত হলেন, সেটিও ব্রিফ করলেন।
ওষুধ লিখে বললেন, আপনি দিন কয়েক খেয়ে ওষুধ ম্যাচ হয়েছে কিনা আমাকে জানিয়ে যাবেন। ওঠার পর মোহন্তী তার চেম্বারের দরজা পর্যন্ত আব্বাকে এগিয়ে দিতে দিতে বললেন, বহু লোকের উচ্চ রক্তচাপ আছে! কিন্তু এর কারণ নির্ণয় হয়নি, তাই আমরা এটাকে বংশগত বলে আপনাদের বলি!
একদিন পর আব্বা বলছেন, রিপোর্ট করতে দিয়েছে, ডাক্তার মিত্তাল। তাকে একবার দেখানোে গেলে ভালো হতো। আমি ইন্টারন্যাশনাল পেশেন্ট লাউঞ্জে সুনিতাকে বললে, সে হেসে বলল, আপনি যত বার ইচ্ছা দেখাতে পারেন। এ জন্য কোন ফিও লাগবে না।
মিত্তালের চেম্বারে বসে আছি। তিনি রাউন্ডে গেছেন। তাঁর প্রাইভেট সেক্রেটারি জানালেন, ডাক্তার আসতে মিনিট ১৫ সময় লাগবে। আমরা জোহরের নামাজ পড়ে এসে দেখলাম, ডাক্তার অপেক্ষা করছেন। রিপোর্ট দেখে তিনি ডাক্তার মোহন্তীর লেখা একটা ওষুধ বাদ দিলেন।
বললেন, ঠিক হয়ে যাবে! প্রেসারের ওষুধ সব সময় খেতে হবে। আর কোলেস্টরের ওষুধ তিন মাস। বঙ্গের ডাক্তারের দেয়া কোলেস্টরের কয়েক বছর ধরে জারি রেখা ওষুধ বদলে দিলেন। বললেন, ওষুধ খেতে নেই। যত পারেন , কম ওষুধ খান। ওষুধ কম খেলে বেশি দিন বাঁচবেন।
আব্বার প্রেসার চেক করতে চান। মিত্তাল উঠে এসে প্রেসার মাপলেন। বললেন, আপনি ভালো আছেন।
ওষুধ এবং দেশে আসার পর আমাদের করণীয়ও ঠিক করে দিলেন তিনি। বললেন, সমস্যা হলে যেন তাঁকে মেইল করি। তাঁর ব্যক্তিগত মোবাইলফোন নম্বর এবং ই মেইল আইডি দিলেন।
উঠে আসার সময় বললেন, টেনশন নিবেন না। সুস্থ্য হয়ে যাবেন।
ফেরার দিন ডাক্তার মোহন্তী হোম প্ল্যান করে দিলেন। বলে দিলেন, মিত্তাল অথবা তাঁকে যেন সমস্যা হলেই জানানো হয়। ব্যস্ততার ভেতর ফোন ধরবেন কি না, সেটাও জানতে চাইলেন আব্বা। বললেন, স্যার রোগীর সেবা করাটাই আমার কাজ। ফোন ধরবো!
দু'জন ডাক্তারকে ৪ বাজার দেখালাম, সাকুল্যে ১০০০ রুপি ভিসিট দিলাম!
আব্বার মূল সমস্যা ছিল স্পাইনের। এর জণ্য ডাক্তার সুধীর তিয়াগি দেখলেন। আব্বার বস বলছিলেন , আমরা যেন ভিপি সিংয়ের দপ্তরেও একবার যাই। ভিপি সিংও নিউরো এন্ড স্পাইন সার্জন।
রিপোর্ট দেখলেন। সুধীর বাবুর প্রেসক্রিপশনও দেখলেন। কোনো রকমের পাণ্ডিত্য না ফলিয়ে বললেন, সুধীর বাবুর ট্রিটমেন্টই চলবে।
তবে এ রোগের জন্য ওষুধের চে ব্যায়মা্টা খুব কাজে দিবে। সেটিও বললেন।
ভাবছিলাম, সুধীর বাবুকে দেখোনো অপরাধ হিসাবে গণ্য করবেন মিস্টার ভিপি সিং। বরং উল্টো ! অথচ এপ্রিল মাসে আমার ছোট বোনের শাশুড়িকে স্কয়ারে রেসপেরেটরি মেডিসিনের ডাক্তার দেখানোর পর ময়মনসিং মেডিকেলের মেডিসিনের প্রধান ডাক্তার জহির চেম্বার গেলে' কুত্তার' মত 'ঘেউ' করে ওঠে। 'শুয়র'টা থাপড়াইতে ইচ্ছে করছিল। কিন্তু বোনের শাশুড়ি সামনে বলে সামলে এসেছি।
এখানকার ডাক্তার সহনশীলতা দেখে মনে হলো, কেন ১২১ টি দেশ থেকে এপেলোতে এত রোগী আসে। আর আমাদের দেশ থেকে আমরা কেন অপমান সয়ে ভিসা নিয়ে ইনডিয়া, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া আর সিঙ্গাপুরে যেতে বাধ্য হই!
আমি একজন পর্যটন কর্মী। বেড়াতে, বেড়ানোর উৎসাহ দিতে এবং বেড়ানোর আয়োজন করতে ভালোবাসি।
সুখ অসুখের গল্প:: ৫:: হলি সাইট, ধর্মীয় পর্যটন।
সুখ অসুখের গল্প:: ৫:: হলি সাইট, ধর্মীয় পর্যটন।
প্রচণ্ড গরম। জুম্মার নামাজ পড়ার জন্য দিল্লি জুমা্ মসজিদে যাচ্ছি। আমরা যদিও বড় মসজিদকে জামে মসজিদ বলি, এখানে দিল্লির সবচে বড় মসজিদের নাম জুমা মসজিদ। কয়েকশ বছরের পুরনো মসজিদ। যে সময় মসজিদ তৈরি হয়, সে সময় বিদ্যুতের এত অগ্রগতি ছিল না। তাই সহজেই যে প্রকৃতির আলো বাতাস আসা যাওযা করতে পারে, সে ভাবেই তৈরি করা। এর নিমাণ শৈলিও মোগল স্থাপত্য নকশায়।
জুম্মার দিন মসজিদের তিন গেট দিয়ে কয়েজ হাজার মুসল্লী নামাজে সমবেত হন।
আমরা নামজ পড়ার পর মেহরাবের কাছে পৌঁছালাম। আব্বা বলছিলেন, যেখানে ইমাম সাহেব দাঁড়ান, তার ঠিক পেছেন মোগল সম্রাটরা নামাজ পড়তেন। এ মসজিদ তৈরির সময় মোগল সম্রাটের ঘোষণা ছিল- যিনি আছর নামাজের সুন্নত কাজা করেননি এমন লোক মসজিদের ভিত্তি স্থাপন করবেন।
এ রকম অনেক অজানা তথ্য জানতে জানতে মসজিদ ঘুরে দেখছিলাম। মসজিদের উন্মুক্ত স্থানে ওজু করার জন্য একটি পুকুর। এর চারপাশে ওজু করার ব্যবস্থা। প্রচণ্ড রোদ থেকে মুসল্লিদের স্বস্তির জন্য টাঙ্গানো হয় সামিয়ানা।
দিল্লি জামে মসজিদে আমরা বেশ কিছুটা সময় কাটালাম। গরমে পুড়তে পুড়তে তিনটি গেটই ঘুরে এসে বের হওয়ার সময় জানলাম শাহ ওয়ালী মুহাদ্দেসে দেহলভীর সমাধি মসজিদের কাছে। মিনিট কুড়ির পথ। আব্বা আর আমি দুজনে একটা অটোতে চড়লাম, পৌঁচালাম পাঞ্চ পীর মসজিদে। মসজিদটি খুঁজে পেতে বেশ বেগ পেতে হয়েছে। কারণ পাঞ্চ পীর মসজিদের কোনো নিশানা নেই।
এটা অনেকটা কলোনীর মত জায়গার পাশে একটা কবরস্থানের মত এলাকা্। এখানেই ওলামায়ে জমিয়তে হিন্দের অফিস। সেটি পার হয়ে গেলে একটি কওমী মাদরাসা। তারপর একটা মসজিদ। মসজিদের পাশে একটা ঘরে শাহ ওয়ালীউল্লাহ মুহাদ্দেসে দেহলভীর সমাধি। সাথে তার পীর ও তার সন্তানের সমাধিও সেখানে। ইনডিয়াতে ইংরেজ তা্ড়ানোর আন্দোলনে তিনি অগ্র সেনানী ছিলেন।
আব্বার জীবনের একটি সুপ্ত ইচ্ছা ছিল শাহ ওয়ালীউল্লাহর সমাধিতে আসা। সে ইচ্ছা পূরণ ও শাহ ওয়ালীউল্লাহ রহ: কবর জেয়ারতের পর এমনটাই জানালেন।
জেয়ারতের পর আমরা বের হচ্ছি, তার সমাধিতে খুব কম লোকের আনা গোনা। তবে যারা আসছেন, অনেকক্ষণ ধরে থাকছেন।
বের হতে হতে আব্বার কাছে শাহ ওয়ালীউল্লাহর জীবন থেকে না রকমের কথা শুনছিলাম, তার মেধা,জীবন এবং ইসলামী সংস্কৃতির বিকাশে তাঁর ভূমিকা্ সম্পর্কে।
রোদের উত্তাপ বাড়ছে। আমাদের গন্তব্য কুতুব মিনার। পাঞ্চপীর মসজিদ থেকে এর দূরত্ব ২২ কিলোমিটার। আমরা অটোতে আসলাম। কুতুব মিনারে এস আব্বা অস্থির। হাঁপিয়ে গেলেন। এত লম্বা জার্ণি শেষে আমরা মিনারের অভ্যন্তরে ঢুকতে যাবো, দেখি টিকেট লাগে।
টিকেট কাটতে গিয়ে দেখি ইনডিয়াদের জন্য ৩০ রুপি আর ফরেনারদের জন্য ৫০০ রুপি। কাউন্টারে টাকা দিলে আমাকে তিরিশ রুপির দুটা টিকিট দিলো। ভাবলাম, ফরেনার পরিচয় দিয়ে ৫০০ রুপি খরচ করব, পরে মনে হলো--- আমি তো পরিচয় লুকাইনি, তাহলে বাড়তি টাকা গুনতে যাব কোন দুঃখে। ২০০৬-০৭ এ একবার সিদ্ধান্ত হলো ইনডিয়া তার দেশের পর্যটন স্পটের জন্য সার্কের আলাদা ফিস ঠিক করবে। তবে সেটির আর চূড়ান্ত করেনি। বঙ্গীয় মোছলমানদের থেকে যতটাকা চুষে নেয়া যায়, ততই লাভ!
কারণ পরিসংখ্যান বলছে, ইনডিয়ার রেমিটেন্স আহরণের দ্বিতীয় বৃহত্তম দেশ বাংলাদেশ। অথচ তারা সৌদি বাশশার সাথে সমীহ করে কখা বলে। আর আমাদের বঙ্গীয় মুসলমানদের হয়রানি করে। গরীব বলে হয়ত। কিন্তু আমরা গরীব হলেও তাদের জিডিপিতে বড় ধরণের অবদান রাখছি, সেটা তারা ভুলে যায়।
সে যাক কুতুব মিনারের অভ্যন্তরে ইমাম হামজার সমাধি ও আ'লাই দরজা পরিদর্শন, মিনার এলাকা ঘুরে মোঘল মসজিদে আছরের নামাজ পড়লাম। কিছুটা সময় বসে আব্বা আর আমি বের হলাম। প্রচণ্ড ক্লান্ত আব্বা। ফের একটা অটো ধরে চলে এলাম হোটেলে। সে সাথে ইনডিয়ান হলি সাইট ভ্রমণের সমাপ্তি!
আমি একজন পর্যটন কর্মী। বেড়াতে, বেড়ানোর উৎসাহ দিতে এবং বেড়ানোর আয়োজন করতে ভালোবাসি।
সুখ অসুখের গল্প : ৪:: নিজামউদ্দিন আউলিয়া আর মির্যা গালিবের মাজারে একদিন।
সুখ অসুখের গল্প : ৪:: নিজামউদ্দিন আউলিয়া আর মির্যা গালিবের মাজারে একদিন।
ডাক্তারের কাছ থেকে 'অপারেশন লাগবে না'- সিদ্ধান্তের পর হাতে অনেকটা সময় পাওয়া গেলো। এ সময়টা আব্বার তার শিক্ষাজীবনের প্রিয় কিছু নায়কের কবর জিয়ারতে যেতে চান। আমাকে এমনটা্ই বললেন।
আমি দিল্লি বেশ কয়েকবার আসলেও দিল্লি জামে মসজিদ আর কারিম'স রেস্টুরেন্ট ছাড়া অন্য ধর্মীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থানে যাওয়া হয়নি। তাই চিনতে বেশ সমস্যা হচ্ছিলো।
দিল্লি এপোলোর পেশেন্ট লাউঞ্জের পশ্চিম মাথায় একটা নামাজের জায়গা আছে। সেখানকার ইমামকে আব্বা খুঁজে বের করলেন। তাঁর কাছেই তিনি শাহ ওয়ালী উল্লাহ মুহাদ্দেসে দেহলভী, মির্যা গালিব আর নিজামউদ্দিন আউলিয়ার সমাধি সম্পর্কে জানতে চান? এমন প্রশ্ন করতে ইমাম সাহেব কিছুটা বিস্ময় নিয়ে তাকালেন। পরে আব্বার পরিচয় জানতে পেরে তিনি সব কিছুর সঠিক ঠিকানা সংগ্রহ করে দিলেন।
প্রথম দিন ১৬ জুন, আব্বার ফিজিওথেরাপি শেষ করে ইমাম সাহেবের ঠিক করে দেওয়া টেক্সি করে গেলাম নিজাম উদ্দিন রহ: এর সমাধি ও খিলজি মসজিদে। সারিতা বিহার থেকে মাত্র ৫ কিলোমিটার। গাড়ি থেকে নেমে অনেক দূর হেঁটে আমরা পৌছালাম নিজামউদ্দিন আউলিয়ার সমাধিতে!
পথে পথে মাজারে দেয়ার জন্য ফুল, ক্যালিগ্রাফি সমেত সবুজ কাপড় আর লোবান-মোমবাতি বিক্রি হচ্ছিলো। যেমনটা হিন্দি সিনামায় দেখা মেলে। বহু পুণ্যার্খী সেখানে এসেছেন। ধর্ম-বর্ণ-বিচার নেই।
আব্বার সাথে যাওয়ার পর আমার গাইডের দরকার পড়লো না। নিজামউদ্দিন আউলিয়ার মা'রেফাতের বিষয়ে বিস্তারিত শুনছিলাম আর অবাক হচ্ছিলাম, এটা জেনে যে, আধ্যাত্মিক শক্তিও মোগল সম্রাজের বিকাশে বড় ভূমিকা রেখেছিল।
ভেতরে ঢুকলে মানুষের কিছু আচরণকে যে কারো খারাপ লাগবে। আব্বা বিরক্তি প্রকাশ করছেন। কিন্তু এটা তো সত্য যে, এখানে আমাদের কিছু করণীয় নেই।
তার মতে, এখানে যারা পুণার্থী তাঁদের প্রায় সবাই ধর্ম অবমাননা করছেন। নিজামউদ্দিন আউলিয়ারা যে জন্য ধর্ম ও মুসলামনের সম্রাজ্য বিস্তারে পরিশ্রম করেছেন, তারা তার বিপরীতে চলছেন।
তবে এটাও সত্য যে নিজাম উদ্দিন আউলিয়ার মাজারে বঙ্গীয় মাজারের মত সিজদায় পড়ে থাকার সুযোগ নেই। নামাজ পড়ার জন্য মো্গল আমলের খিলজি মসজিদ আছে।
নিজাম উদ্দিন আ্উলিয়ার মাজারের পুরো আঙ্গিনা আমরা ঘুরে দেখলাম, খিলজি মসজিদেও যাওয়া হলো। মোগল আমলে অন্য সব মসজিদের মতই লাল ইটের গাঁথুনি অনন্য এক মসজিদ। অসাধারণ স্থাপত্য নকশা যে কাউকে মুগ্ধ করবে।
সমাধিতে ফুল আর সবুজ কাপড় বিছানো এখানে যেন অত্যাবশ্যকীয় হয়ে পড়েছে। আমাদের খালি হাত আর ঘুরতে দেখে অনেকে বিস্ময়ে বিস্ফোরিত চোখে তাকাচ্ছেন।
নিজাম উদ্দিন আউলিয়ার সমাধি জিয়ারতের পর আমরা বেরিয়ে আসলাম।
বাইরে প্রচণ্ড রোদ্দুর। গেটের বাইরে আসতে তাবলীগ জমাতের মারকাজ। তার একটু আগেই মির্যা গালিব একাডেমি। আব্বার চোখ পড়তেই এগিয়ে গেলেন। গালিবের সমাধি কোথায়? জানতে চাইতে দেখিয়ে দিলেন, সেখানকার একজন । সমাধধি প্রাসঙ্গে উন্মুক্ত মঞ্চ। মঞ্চের সামনে খোলা মাঠ। সেখানে কিশোররা ক্রিকেট খেলছে। তাদের কাছ থেকে সমাধির ঠিকানা জানতে চাইলে তারা সিকিউরিটি গার্ডকে দেখিয়ে দিল। গার্ড তালা খুলে আমাদের নিয়ে গেলেন সমাধিতে।
আব্বা বলছিলেন, মির্যা গালিব কেবল মুসলিম জাগরণের কবিই নন, তিনি একজন দার্শনিকও। তার বহু কবিতা আব্বা জানেন। সেখান থেকেও কিছু কবিতার পটভূমি আমাকে জানালেন। এটা একেবারেই আমার প্রথমবার জানা।
আব্বা কিছুটা আক্ষেপ করেই বললেন, মির্যা গালিব সম্পর্কে আমাদের অনেকেই জানেন না। আর আমরা যেহেতু উর্দু জানি না, তাই মির্যা গালিবের কবিতা বোঝা মুশকিল।
আমি ব্যক্তিগতভাবে ভূপেন হাজারিকার গান 'আমি এক যাযাবর' এ প্রথম মির্যা গালিবের নাম শুনেছি। এ টুকুই!
মির্যা গালিবের মাজার এলাকা খুবই সুরক্ষিত এবং পরিচ্ছন্ন। আব্বা মির্যা গালিবের সমাধি জেয়ারত করলেন। বললেন, জীবনে আর কখনো হয়ত আসা হবে না। তাই দেখে গেলাম।
আমরা বেরিয়ে আসছি। পরে গালিব একাডেমি থেকে আব্বা একটা কবিতা সঙ্কলন কিনলেন। স্মৃতি হিসাবে সংরক্ষিত থাকরেব। কারণ আব্বা ছাড়া আমরা কেউ উর্দু পড়তে পারি না! সুতরাং এটি স্মৃতিতে চলে যাবে!। তবে গালিবের কিছু কবিতা ইংরেজি ভাষায় রয়েছে। এর একটা সংকলন পাওয়া যাবে। সেটি থেকে কিছু কবিতা পাঠ করার চেষ্টা করছি।
একটি অনন্য অভিজ্ঞতা আর অসাধারণ দিন কাটলো আমাদের। আব্বা মাজার ও মাজার ঘিরে মানুষের যে সব কর্মকাণ্ড এ সবের প্রচণ্ড বিরোধী হবার কারণে, একজন পর্যটনকর্মী হিসাবেও আমি যখনই যে নগরে গেছি খুব বিখ্যাত কোন মাজার না হলে সেখানে আমরা যাওয়া হয়নি।
তবে নিজামউদ্দিন আউলিয়ার মাজারের যাবার পর মনে হযেছে, সব মাজারে যাওয়া উচিৎ এবং এখানেও মানুষের আচরণ -অসহায়ত্ব দেখার একটা সুযোগ আছে। যেহেতু আমি মানুষ ও তাদের আচরণ দেখতে পছন্দ করি এবং সেটি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করে থাকি,তাই এ সব জায়গায় না যাওয়াটা আমার একটা ভুল ছিল।
কেউ কেউ মাজারে যাওয়াকে শিরক মনে করেন। অন্য শিরক করছে, আপনি বা আমি যাচ্ছি কেন? আমি ব্যক্তিগতভাবে মাজারে যাওয়ার বিরোধি নই। এবং ছোট ভাই হিরো আমাকে এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণের পর আমি যে টুকু পড়েছি, তাতে মা্জারে যেতে বাধা আছে এমন কোন তথ্য ধর্মীয় বিধি নিষেধ পাইনি। বরং আমার মনে হয়েছে, আমরা এ সব জায়গা এড়িযে যাবার কারণে, কিছু ভণ্ড, ধান্ধাবাজ আর ভয়ঙ্কর রকমের অপরাধীরা মাজারকে তাদের দখলে নিয়ে অপকর্ম করছে। এ সব অপকর্ম থেকে মনিষীদের মাজারকে মুক্ত করার জন্য আমাদের মাজার পূজারীদের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে হবে।
আর এটা তো সত্য মৃত ব্যক্তি অসহায়। তাঁর কারো জন্য কিছু করার থাকে না।
আমি একজন পর্যটন কর্মী। বেড়াতে, বেড়ানোর উৎসাহ দিতে এবং বেড়ানোর আয়োজন করতে ভালোবাসি।
সুখ অসুখের গল্প-৩ : কুখ্যাত ডাকাত বনাম-ডাক্তার!
ইনডিয়া যাওয়ার জন্য প্রয়োজনে অর্থনৈতিক প্রস্তুতি আগেই ছিল। আব্বা নিজেই নিজের চিকিৎসার সব ব্যয়ভার আমার একাউন্টে জমা করিয়েছেন। তবুও আমি কিছু হাতে রাখলাম।
ওড়ার জন্য প্রস্তুতির ফাঁকে কয়েকটা এয়ারলাইন্সে খোঁজ নেয়া হলো, জানা গেলে জেট-ই বেস্ট। অনটাইম ফ্লাইট। ওয়াকার ভাই জানালেন, গুগলের একটা সাইট থেকে টিকিট কেনা যাচ্ছে, সাশ্রয়ী মূল্যে।
তবে শেষ পর্যন্ত সেখানে না গিয়ে আমার পুরনো সুহৃদ সুমন ভাইয়ের কাছ থেকেই টিকিট নিলাশ। কারণ আব্বার টাইম আর হসপিটালিটির ব্যাপারে সেনসেটিভ !
আল্লাহর নামে বাপ বেটা উড়াল দিলাম রোজার শুরুর দিকে সকাল ১০ টা ১০ এর ফ্লাইটে।
ভাবছিলাম, উড়ালের সাথে সাথে ভিসা বিষয়ক জেরা সমাপ্ত!
না ঠিক তা হলো না! একটা হুজুর মানুষ এয়ারে চড়ে দিল্লি ঢোকে কেমনে? তাকে সহজে ঢুকতে দেওয়া ঠিক হবে না ধরে নিয়ে জেরা করার জরুরী মনে হলো ইমগ্রেশন কর্মকর্তার।
সাড়ে ১২ টায় দিল্লি এয়ারপোর্টে নামার পর ইমিগ্রেশন কর্মকর্তার কোশ্চেন! ভিসার জন্য ৩ বার এপ্লাই করছিলেন ক্যান? অসহায় ভাবে তাকিয়ে থাকার ইচ্ছে ছিল, কিন্তু পারলাম না।
জন্মগতভাবে মাথা গরম! আপনাদের এম্বাসি তো কইছিলো ৪ বার পর্যন্ত এপ্লাই করা জায়েজ!
কর্তা ব্যক্তি উঠে পড়লেন, বড় কর্তাকে ডেকে আনলেন। তিনি ভিসা দেখে বললেন, ঠিক আছে ছেড়ে দেন। লোক কইলকাতার। তাই বাংলায় কথা কইলো।
এ ফাঁকে আরেকজন বাংলােদেীশ একই রকম কোশ্চৈন শেষ পরে ওপারে গিয়েছেন, তিনি উকি দিয়ে বললেন, দাড়ি টুপি দেখলেই উনাদের সমস্যা! এটা একটা ফাউজলামি।
আমি মৃদু হেসে উনার বক্তব্যকে সমর্থন করলাম।
এ দিকে হসপিটাল থেকে আমাদের রিসিভ করতে আসা যুবরাজ বিরক্তি নিয়ে ঘুরছে। বলল, ইমিগ্রেশন ব্যাটারা এমনই! লাগেজ টেনে এনে হসপিটালের ভাড়া করা গাড়ি করে সরাসরি চলে এলাম ইন্টারন্যাশনাল পেশেন্ট লাউঞ্জে (আইপিএল)।
ডাক্তার আগে থেকে ওরা সেট করে রেখেছে। নাম সুধীর কুমার তেয়াগি। ওরা উচ্চারণ করে 'ছুদির তেয়াগি'। দিল্লি এপোলোর ব্যস্ত নিউরো ও স্পাইন সার্জন। তার সাথে অপারেশন থিয়োটারের পাশের চেম্বার মোলাকাত হলো।
আব্বার এমআরআই রিপোর্টটা রট লাইটের ওপরে ফালাইয়া দেখলেন। বললেন, মাথায় কোনো সমস্যা নাই। মেরুদণ্ডে সমস্যা আছে।
'অপারেশন দরকার নাই!'- ঘোষণাও দিলেন সুধীর। বললেন, তবে ফিজিও থেরাপি লাগবে। ৫ দিনের ওষুধ ও ৫ দিনের ফিজিও থেরাপি পরামর্শ দিলেন।
বল্লাম, আরেকবার টেস্ট করে দেখন যাইবো! বললেন, না, শুধু শুধু টাকা খরচ করবেন কেন?
আব্বা খুব খুশী, কারণ ডাক্তার তাকে পুরো বিষয়টা ব্রিফ করলেন, বললেন, আপনার সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে।
আর এ রিপোর্ট দেখে, ইবনে সিনার কুখ্যাত নিউরোলজিস্ট ডাকাত আবদুল হাই প্রেসক্রিপশনে লিখেছেন তাকে ইমিডিয়েটলি হসপিটালে ভর্তি করার জন্য। তার নাকি ম্যাসিভ স্ট্রোক হয়েছে! আল্লাহ তার প্রিয় বান্দাহকে এ রকম এক কুখ্যাত জানোয়ারের হাত থেকে রক্ষা করেছেন-আমীন।
আর ল্যাব এইডের আরেক কুখ্যাত ডাকাত সিরাজুল হক বলেছিলেন, স্পাইনের ডিস্কের মাঝখান থেকে জেল বেরিয়ে যাচ্ছে! তাই ব্যথা হচ্ছে।
তাও ঠিক নয়।
আর আজহারুল হক ওরফে রংপুরীয় বলদ নিউরোলজিস্টরে কথা আর কি বলবো!
তবে আজহার ও সিরাজুল হককে আব্বা অনেক বড় ডাকাত বলেই জানলেন। সুধীর বাবুর ওষুধ খাওয়ার পর আব্বাকে বল্লাম, দেশের এত বড় বড় ডাক্তার দেখাইলেন, তারা তো বড় সমস্যা কইছে। চলেন , ডাক্তার ভিপি সিং-কে দেখাই।
ভিপি সিংও এপালোর নিউরো সার্জন। সুধীর বাবুর চে বয়সে বড়ো। অভিজ।ঞাতায়ও। বাংলাদেশেও দু চারবার এসেছেন নিউরোসার্জারি জ্ঞান বিতরণ করতে!
আইপিএল এ সনিতাকে বিষয়টা জানালাম। হেসে ও বলল, ফাও টাকা খরচ করবা কেন? বল্লাম, আব্বার সন্তুষ্টি!
পরে ভিপি সিংয়ের দরবারে গেলাম ৪র্থ দিন। তিনি আব্বার বসের পরিচিত। ভালো করে দেখে বললেন, সুধীর বাবু ভালো দেখেছেন। তিনি যা বলেছেন, তাই। আপনাকে ব্যায়াম করতে হবে। এটাই চিকিৎসা!
সে চিকিৎসা নিয়ে আমরা ফিরতে চাইলাম।
সুধীর বাবুকে আব্বার প্রোস্টেট সংক্রান্ত সমস্যার কথা জানালে, তিনি ডাক্তার অংশুমান আগারওয়ালকে দেখাতে বললেন। সুধীর বাবুর রেফারেন্স তাই খুব যত্ন করে দেখে জানালেন, ' আপনার আর টেস্ট করার কাজ নেই। ভালো আছেন। ৪ মাস পরে টেস্ট করে মেইল করে দিয়েন। আমি আবার দেখে দেব।'
আমরা তবুও বললাম বাংলাদেশে ইনফেকশনের একটা রিপোর্ট আছে। সুতরাং আরেকবার চেক করা দরকার। আমাদের অনুরোধেই পুরনো রিপোর্ট থেকে ৪ টি করতে দিলেন। বললেন, আমি জানি সব ঠিক আছে। আপনারা চাইছেন বলে টেস্ট দিলাম। এটার জন্য টেস্টের দরকার ছিল না!
তবুও আমরা টেস্ট করলাম। রেজাল্ট-- সব ঠিক আছে।
বাংলাদেশে ই্ওরোলজির ডাক্তার সালাম ,ডাক্তার জাহিদ ও ডাক্তার নিনান চাকোর পরামর্শই অংশুমান ঠিক রাখলেন। কোনো ওষুধ নয়। অবজারভেশন!
আমি একজন পর্যটন কর্মী। বেড়াতে, বেড়ানোর উৎসাহ দিতে এবং বেড়ানোর আয়োজন করতে ভালোবাসি।
সুখ অসুখের গল্প -২ :: ভিসা তেলেসমাতি!
ভিসা পাওয়ার উপায় নিয়ে ভাবছিলাম। জীবনে এতবার ইনডিয়া গেছি, কখনো ভিসা নিয়ে ভাবিনি। এবারই ভাবনা। কারণ একজন ভিসা এজেন্ট আমাদের জানালেন , ভিসাপ্রার্থীর দাঁড়ি আর সৌদি আরবের ভিসা থাকাটা মহাপাপ। গো হত্যার চেও বড় পাপ। বিষয়টা মাথায় ধরলো না।
মোডি কাকু ও মনমোহন দাদার মুখেও কিন্তু দাড়ি আছে। মোডি কাকুর দাড়ি আবার বঙ্গীয় হুজুরদের স্টাইলে। তাহলে সমস্যা হবে কেন? প্রথমে বিষয়টাকে মনে হয়েছে ভিসা এজেন্টের চালাকি। কিন্তু বাস্তবে এর প্রমাণও মিলল। শঙ্করে একজন ভিসা এজেন্টকে ফরম পূরণ করে সব কাগজপত্র সমেত প্রদা্ন করলাম। সময় নিয়েছে ৫ দিন। টাকা নিবে দুটি ভিসার জন্য ১২ হাজার ৫০০ টাকা। কিন্তু মিস্টার বলদ তিন তিন ঘুরিয়ে বললেন, আপনাকেই জমা দিতে হবে, আপনি পাসপোর্ট ও ফরম জমা দিয়ে আমাদের ডেলিভারি স্লিপ দিলে আমরা ভিসা করিয়ে দেব।
আমার মনে হলো কাজটা যদি আমি নিজেই করি তাহলে এজেন্ট কেন?
প্রথম দিন আমাদের অফিস সহকারি শাহ আলমকে বললাম, তোমার বাসা যেহেতু বাড্ডা , সকাল সকাল এসে লাইনে খাড়াও। আমি এসে জয়েন দেবো। শাহ আলম একজন সিরিয়াল ভাড়াটের নাম্বার দিলো। ৫০০ টাকা দিয়ে সিরিয়াল দিয়ে প্রবেশ করলাম। ভেতরে গিয়ে একজন বললেন, শুধু আমার পাসপোর্টে ডলার এনডোরস করলে হবে না। আব্বারটাও করতে হবে। ভেতরেই স্টেট ব্যাংক অব ইনডিয়ার একজন লোক বসেন। তিনি বাংলাদেশে মোডি কাকুর প্রতিনিধি। তার সাথে দেখা করতে গেলে সবাইকে তাড়িয়ে দিচ্ছেন।
আমাকে এনডোরসমেন্টের কথা শুনে বসতে বললেন। এর মধ্যে ভিসা না হওয়া দু একজন আসছেন। একজন বয়ষ্ক লোক আসলেন। তাঁকেও ধেই ধেই করে তাড়ালেন। যেন কুকুর তাড়াচ্ছেন। তবুও...
জানালাম আমার পাসপোর্টে বহু ডলার এনডোরস করা আছে, ব্যাংক স্টেম্যান্টও আছে। তারপরেও আব্বার পাসপোর্টে এনডোরস করতে হবে? বললেন, হবে। একটা ফরম পূরণ করতে হবে। বললাম, আব্বার সই তো আমি দিতে পারবো। তিনি আমাকে একটা সাদা কাগজ আর কলম দিলেন, প্রাকটিস করার জন্য। অপরাগতা প্রকাশ করায় বিরক্ত হয়ে বললেন, আপনার যতি ক্রেডিট কার্ড থাকে তাহলে সেটি নিজের জন্য, আর ব্যাংক স্ট্যাটম্যান্ট আব্বার পাসপোর্টের সাথে জমা দিতে । তাই দিতে গেলাম।
এবার ফরম চেক করা 'মহারাজ' ভুল বের করলেন। প্রিভিয়াস ন্যাশনালিটি লিখিনি। এটা কি করবেন? বললাম, কি করতে হবে বলুন। বললেন, প্রতি ফরমে ৩০০ টাকা করে জরিমানা দিয়ে জমা দিন। তা্ই করলাম। বেরিয়ে এসে ভাবছিলাম ভিসাটা হয়ে যাবে। ফি দিলাম আবার জরিমানাও। কিন্তু ৭২ ঘণ্টা পরে এম্বাসির দরজায় গিয়ে দেখলাম ভিসা হয়নি।
কেন হয়নি? কারণ দেখাতে চান না।
আবার সেই স্টেট ব্যাংক অব ইনডিয়ার কর্মকর্তার কাছে গেলাম, কারণ জানতে। তিনি শুধালেন, ওহে বঙ্গীয় মফিজ, চারবার পর্যন্ত ফেরৎ যাইতে পারে! ব্যাপার না। আবার জমা দাও।
দ্বিতীয়বার আবার জমা করলাম। এবার আবাবার পাসপোর্টেও এনপে=ডারস করলাম ব্যাঙ্ক অব ষিলন থেকে। সে কাগজ সমেত জমা দিলাম।
আবারো ফেরৎ। এবার জানতে পারলাম আব্বার দাড়ি আর আমার সৌদি আরবের ভিসাই সমস্যা! কস কি মমিন অবস্থা। মধ্যপ্রাচ্যে শেখদের '...চুষে' চলা ইনডিয়ানদের কাছে সৌ্দির ভিসা সমস্যা!
মেনে নিলাম। আব্বাকে বল্লাম সিঙ্গাপুর নয়, থাইল্যান্ড! কিন্তু ইনডিয়া না হলে আব্বা যাবেন না।
আব্বার শরীর খারাপ হতে শুরু করেছে। তাই আবার ঢাকায় নিউরোলজীর ডাক্তার আজহারুল হক সরকারকে দেখানো হলাে। সাকুল্যে ১১ খান ওষুধ লিখেছেন জনাব। সে ওষুধ আব্বা খাওয়াও শুরু করলেন। আব্বাকে ঢাকায় বসিয়ে রেখে এক দালালের শরণাপন্ন হলাম। ১৩ হাজার ২০০ টাকা রফা। সেও ফেল। টাকা নিয়ে পালালো। এ সবের মধ্যে অগ্রজ সম্বাদিক মুজিব ভাই বললেন, জমা দিয়ে মাসুদ ভাইকে জানাতে। তিনি সহযোগিতার হাত বাড়ালেন।
তৃতীয়বারের মত পাসপোর্ট জমা দিয়ে ভিসা হাতে পেলাম জুনের প্রথম সপ্তহে। মাসুদ ভাইকে অসীম কৃতজ্ঞতা। আমরা মানবজমিনের বড় ভাই। বহু পুরনো কূটনৈতিক রিপোর্টার।
ভিসা পাওয়ার পর আব্বাকে জানালাম, বললেন ঈদের পরে যাবেন। তবে আব্বার শরীর খারাপ হতে থাকলে রোজার মধ্যে আমরা উড়েছি।
আমি একজন পর্যটন কর্মী। বেড়াতে, বেড়ানোর উৎসাহ দিতে এবং বেড়ানোর আয়োজন করতে ভালোবাসি।
সুখ অসুখের গল্প-১ :: বঙ্গীয় চিকিৎসকরা সবাই সুলতান সুলেমান!
' আব্বাকে চিকৎিসার জন্য ইনডিয়া নিতে চাই, কই নিমু?'
এমন প্রশ্ন বহুজনকে করেছি। ইন্টারনেটে গেঁটে অনেক তথ্য হাসিল করেছি। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে সহায়তা করেছে দিল্লি এপোলো। তাদের চিকিৎসকের ডেটাবেস এবং সহযোগিতা আমাকে সেখানে যেতে উদ্বুদ্ধ করেছে।
এপোলোর উপরে আস্থাহীন ছিলাম আমি। তবে চেন্নাই এপোলোর একটা মেইল আমার ধারণা বদলে দিলো। তারা আব্বার এমআরআই রিপোর্ট দেখে জানালো, এ চিকিৎসার জন্য এ মুহুর্তে তাদের ডাক্তার নেই। সত্যি অভিভুত হলাম। এ রকম রিপ্লে আর কোথা থেকে পাইনি।
সিঙ্গাপুরের ন্যাশনাল মেডিকেল, থাইল্যান্ডের মিশনারি হসপিটালেও মেইল করেছিলাম। রিপ্লে ভালো ছিল। চেন্নাই এপোলো গিয়েছিলেন সহকর্মী সৌরভ দা' তার কিছু পরামর্শও পেলাম। আব্বা সিঙ্গাপুর বা থাইল্যান্ড যেতে অনিচ্ছুক। তাই বাধ্য হয়ে ইনডিয়া যাওয়ার আয়োজন।
চিকিৎসার ব্যাপারে আব্বা একটু ভিন্ন। তার সমস্যা, কেন তিনি এ সব ওষুধ খাবেন তা তাঁকে জানতে হবে। বাংলাদেশের ডাক্তাররা এতে প্রচণ্ড রকমের বিরক্ত হন। ল্যাব এইডের নিউরোলজির ডাক্তার সিরাজুল হক এ বিষয়ে জানতে চাইলে, তার সিরিয়ার দেয়া 'মফিজ'রকে দেখিয়ে দিলেন।
আব্বা এতে প্রচণ্ড বিরক্ত হয়েছেন।
মার্চ মাসে তাই সিদ্ধান্ত , আব্বা চিকিৎসার জন্য ভারত যাবেন। দু কারণে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হযেছে। এক. তাঁর দুজন চিকিৎসক একই এমআরআই রিপোর্ট দেখে দু রকম পরামর্শ দিয়েছেন। দুই. চিকিৎসকরা সবাই সুলতান সুলেমান। তাদের কাজকর্ম করতে হয় আর্দালিদের। এটা আব্বা পছন্দ করেননি।
তাই খোঁজ খবর নিচ্ছিলাম। সবাই সিএমসি, ভ্যালোরের পরামর্শ দিলেন। ইন্টারনেটে খোঁজ খবর, এসি নেইলসনের জরিপ এসব দেখে আমরা সিমএসিকে পছন্দও করলাম। কিন্তু সিএমসি আমাদের রিপ্লে করলো কমপক্ষে তিন সপ্তাহ সময় নিয়ে যেতে হবে। এত সময় আব্বার পক্ষে দেওয়া অসম্ভব। আমারো একই হাল।
সুতরাং এপোলো বেস্ট অপশন।
প্রক্রিয়া শুরুর আগে সেখানে মেইল পাঠানো হলো। তারা রিপোর্ট দেখে জানালেন, ৫ থেকে ৭ দিনের জন্য যেতে হবে। তবে আমরা হাতে আরো ২ দিন বেশি সময় নিয়ে ৯ দিনের জন্য উড়বো বলে প্রস্তুতি শুরু করলাম।
আব্বার পাসপোর্ট করতে দাঁড়ালেন ফেব্রুয়ারিতে। হাতে পেলেন মার্চে। এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে ভিসার জন্য সব রেডি করেছি, দেখি আমার পাসপোর্টের মেয়াদ ৬ মাসের চেয়ে দিন দশেক কম আছে। এবার নিজের পাসপোর্ট রিনিউ করতে দৌড়ালাম। ৬ হাজার টাক সাথে ১৫ শতাংশ আবুল মাল দিয়ে পাসপোর্ট রিনিউ করে আবেদন করতে যাবো, তখন বিভ্রান্তি শুরু।
আমি একজন পর্যটন কর্মী। বেড়াতে, বেড়ানোর উৎসাহ দিতে এবং বেড়ানোর আয়োজন করতে ভালোবাসি।
ফেসবুক ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট একসেপ্ট ও পোস্ট প্রাইভেসি নির্ধারণে সতর্ক থাকুন।
একটা অপহরণ চক্র সম্পর্কে আমার এক বন্ধু জানালো। বঙ্গবন্ধুর আদর্শের এ সৈনিক অপহৃত হয়েছিল বছর খানেক আগে। যারা তাকে অপহরণ করেছে, তার কাছে পণ আদায় করেছে, তাকে হেনস্তা করেছে, তাদের কয়েকজনের লিঙ্ক আমাকে পাঠালো ইনবক্সে।
অপহরণকারী চক্রের কয়েকজনের প্রোফাইলে গিয়ে দেখলাম-- আমার বড়ভাই, বন্ধু ও অনুজদের অনেকেই তাদের মিউচুয়াল ফ্রেন্ড। এ সব মিউচুয়াল ফ্রেন্ডের অনেকেই আমার ক্যাম্পাস রিপোর্টিংয়ের সময়কার বিরোধীদল, বর্তমানে সরকার দলের; আর সে সময়কার সরকারি দল বর্তমানের বিরোধী দলের সুহৃদ।
আঁতকে উঠলাম। আমি নিশ্চিত এঁরা তাদের চেনেন না। না চিনেই এরা তাদের ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট একসেপ্ট করেছেন। কারণ এদের ওয়ালে অনেক অমৃত বচন-পোস্ট আছে।
প্রিয় সুহৃদ
দয়া করে অচেনা-অজানা কারো ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট একসেপ্ট করবেন না। ছবি পোস্টে প্রাইভেসি ঠিক করে নিন। সতর্ক থাকুন। রাস্তাঘাটে সময় বাঁচানোর জন্য প্রাইভেট বা মাইক্রোবাসে উঠে পড়বেন না। পথ চলতে চলতে ফোন টিপাটিপির জন্য নিরিবিলি জায়গায় যাবেন না্। সতর্ক থাকুন, নিরাপদে থাকুন। শুভ কাকমনা।
আমি একজন পর্যটন কর্মী। বেড়াতে, বেড়ানোর উৎসাহ দিতে এবং বেড়ানোর আয়োজন করতে ভালোবাসি।
অন্তরে ঠাঁই নিয়েছ পপ গুরু
পপ গুরু আজম খান ছাড়া পপ জগতের ৫ বছর কেটে যাচ্ছে আজ ৫ জুন। আজো কানে বাজে তার--'ওরে সালেকা ওরে মালেকা ওরে ফুলবানু '। অদ্ভূত আবেগে, উচ্ছ্বাসে ভেসে যাওয়া একটা মধ্য দুপুর চেয়েছি, কনসার্টের সন্ধ্যা। তাঁর কণ্ঠের দরদে ভেসে যেতে চেয়েছি আরো কতগুলো বছর। তাঁর গানে গানে খুঁজতে চেয়েছি প্রিয় সন্তানকে...' আলাল কই, দুলাল কই'। এখন সব কিছুর উর্ধে পপ গুরু। ২০১১ সালের এ দিনেই আমরা তাঁকে হারিয়েছি।
২১ বছর বয়সে তার যুদ্ধে গেছেন আজম খান। ছিনিয়ে এনেছেন স্বাধীনতা। বাংলাদেশের পপ সঙ্গীতের ধারাকে করেছেন প্রাণবন্ত। এগিয়ে নিয়েছেন , ধীরে ধীরে। যেখানে মানুষ এ ধরণের গানের সাথে পরিচিত নন, তাদের এর সাথে পরিচিত করার যে চেষ্টা তিনি করেছেন, তার হাত ধরে এখন দেশে পপ ধারা সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় সঙ্গীত মাধ্যম।
এখন যারা গাইছেন, আয় করছেন পপ গান করে, তারা আজম খানের কথা ভুলে আছেন, হয়ত তাঁকে মনে রাখার দরকারো মনে করছেন না। তবুও আজম খান বেঁচে থাকবেন, শ্রোতাদের অন্তরে। গুরু সালাম। তোমার গান বেঁচে থাকবে , তুমি তোমার গানের মতই শ্রোতাদের অন্তরে ঠাঁই নিয়েছো।
আমি একজন পর্যটন কর্মী। বেড়াতে, বেড়ানোর উৎসাহ দিতে এবং বেড়ানোর আয়োজন করতে ভালোবাসি।
এতে সদস্যতা:
পোস্টগুলি (Atom)