মাটি- সোঁদা মাটি; আমার প্রিয় মাটি প্রিয় স্বদেশ-ভালোবাসি



 কাদা থক থক, গন্ধ আকুল মনটা ভরে যায়

 সাহিত্যে এটাকে সোঁদা মাটি বলে

 এ মাটির প্রতি লোভ অনেকের; কেউ দখল নিতে চায়<
কেউ ঘর বাড়িয়ে বানিয়ে মাথা গুঁজতে চায়

 কেউ চায় নিয়ন্ত্রণ

 আছিরনের সে রকম কোনো আশা নেই

 মাটির গন্ধ নিয়ে তার সাথে আলাপ বিলাসিতা

 তাই তারে কবিরুল জিগায়- কেমুন আছো্

 আছিরন হাসে; গরিব মাইনষে ক্যামুন


আসলে তো গরিব মাইনষে ক্যামন থাকে

 দেশ এগিয়ে যাচ্ছে

সেখানে কিছু পিছিয়ে পড়া মাইনষের এ উত্তর তো কবিরুলের  অজানা


ঢাকার চেহারা দেইখা তো  কালনি নদীর ধারে মাথা গোঁজা
..............আছিরনের কথা বোঝা মুশকিল

 সেকেন্ড লন্ডন বইলা খ্যাত শ্রীহট্টেও এমুন মানুষ আছে

 কবিরুল হাসে-খালা দেশের মানুষ তো বালাই

 আছিরন আবারো হাসে-

 বলে আমগো বাঁচন আর মরণ

 তোমরা বাঁচলেই অইলো। বাইঁচা থাকো বাবা

 সেই বেঁচে থাকনের জন্য কবিরুলরা ঘোরে; মেকি হাসি ঝুলিয়ে থাকে ঠোঁটের কোনায়
 ফেসবুকায়; ব্লগায়; আর নানা কতা কয়

আবার ভয়ে চুপসে আসে।
সাদা ?-
মনের শান্তি উধাও। তারচে আছিরনই বালা। এত্ত ভাবনা নাই।

 কোন জীবনটা চাইবে কবিরুল-
আছিরণের মত।

নাকি আছিরন কবিরুলের মত হোক তা চাইবে সে

 সমাজ বিজ্ঞানীদের ব্যাখ্যা জানবার মুনচায় কবিরুলের
... এত গবেষণা কঠিন
 গুগলে গোত্তা মাইরা কিছু পাওয়া যায় না ভাবে কবিরুল-
তাহলে হতো বিদ্যা জাহির ।

 পেটের ক্ষিদা; মাথা গোজার ঠাঁই কি মিলবে; মিলবে কি নিরাপত্তা

সে প্রশ্ন মাথায় ঘোরে

 মাটি- সোঁদা মাটি; আমার প্রিয় মাটি প্রিয় স্বদেশ-ভালোবাসি   

হল টিকাতে হিন্দি সিনামা লাগবে। আহা কি দারুণ খেলা!


ওরা ১১ জন কিম্বা জীবন যেখানে যেমনের মত সিনামা দিয়ে স্বাধীনতা উত্তরকালে যে বঙ্গ সিনামার উত্থান,সে সিনামা ব্যবসা হারাতে শুরু করলো এবং এখন দেউলিয়া আখ্যা দিয়া হল ঘরে জলসা জমাতে উর্দু-হিন্দি সিনামার দ্বারস্থ হতে হলো;  সেটা কিন্তু একদিনে হয়নি।

ব্যাক্তিগতভাবে আমার সিনামা দেখার অভিজ্ঞতা 'গরম হাওয়া' দিয়ে। এটা সম্ভবত ১৯৯৩ সালের ঘটনা। সিনামায় নকল, অবিকল কিম্বা সেমিনকল হবার ঘটনা পুরনো; সে ক্ষেত্রে বাংলা সিনামা এ দোষে যুক্ত; এটা নিয়ে দ্বিমত নেই।

কিন্তু এ নকল বা অনুকরণ  করাকে একটা বাড়াবাড়ি রকমের নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সেটি আসলেই অগ্রহণযোগ্য ছিল।  এর কারণ কি ছিল তা নিয়ে অনেক মত রয়েছে। তবে একটা দীর্ঘ সময় ধরে ধীরে ধীরে বঙ্গ সিনামা হাল খ্রাপ হতে হতে এখন আর বলার মত কিছু নাই বলে কারো কারো দাবি-এ দাবির সাথে আমি একমত মত নই। 

 এখানে সিনামায় অশ্লীলতার গল্পটা বলতেই লিখছি-

বাংলাদেশের মত একটি অতি উদার-রক্ষণশীল সমাজে ইউভার্সেলই একমাত্র সেন্সর রেটিং। এর বাইরে আর কোনো রেটিংয়ে সিনামা মুক্তি পায় না।

সত্তুরের দশকের শেষের দিকে 'গোপন কথা' নামে যে সিনামাটি এডাল্ট রেটিং দাবি করেছিল এটি হাল আমলে যে কোনো সুশীল সিনামার চেয়েও সুশীলতর বলে  ২০০৬ সালের দিকে সেন্সর বোর্ডে গল্পচ্ছলে একজন সদস্য জানিয়েছিলেন। 

১৯৯৬ সালের দিকে বাংলা সিনেমায়  অশ্লীলতার মহামারি আকারে আসে।  এ সময় সিনামায় এতটা অশ্লীলতা প্রবণ হয়ে ওঠে যে মোহাম্মদ হোসেন পরিচালিত ‘ফায়ার’ সিনেমাটি এডাল্ট রেটিংয়ের সেন্সর সনদের আবেদন করেছিল। তবে এটি তারা পায়নি।

এ সিনামায় নায়িকা পলির শরীর দেখানোর কসরতে কোনো রকমের কমতি ছিলনা মোহাম্মদ হোসেনের।

 থাইল্যান্ডে এর শুটিং হয়েছিল এবং  তাতে থাই নাইট ক্লাব সংস্কৃতির চিত্রও  তুলে ধরেন হোসেন।

১৯৯৭ সালের দিকে বাংলা সিনেমায় অশ্লীলতার পরিমাণ আরো বাড়ে।  সে সাথে  ভারতীয় নায়িকাদের এনেও এতে ভিন্ন মাত্রা দেবার চেষ্টা করা হয়।

মোহাম্মদ হোসেন ভারতের নায়িকা ঋতুপর্ণাকে দিয়ে নিমাণ করেন ‘রাঙাবউ’ সিনেমাটি। এতে সিনেমাতে বেশ কিছু অশ্লীল দৃশ্য ছিল।

এরপর  সে সময়কার সেন্সর বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান কবি রবীন্দ্র গোপের সহায়তায় অশ্লীলতার বিস্তার ঘটতে থাকে। তার উপন্যাস থেকে সিনামা বানানোর ঘোষণা দিয়ে এয়াতে করিম বেশ কয়েকটা অশ্লীল সিনামায় বানিয়ে সেন্সর সনদ নিয়ে যান।

ডিপজল, দীপু, আজাদ খানের মত আরো বহু লোকজন অশ্লীল বাংলা সিনেমা তৈরী বানাতে থাকেন।  এটি ভয়াবহ রূপ ধারণ করে ‘ভয়াবহ’ সিনেমার মধ্য দিয়ে। ওই সিনেমায় এক সাথে চারটি ধর্ষণ দৃশ্য সংযুক্ত করা হয়। এরপর বাংলা সিনেমায় অশ্লীলতা বন্ধ করা যায়নি। এটি দিনের পর দিন বাড়তে থাকে, সে সাথে অশ্লীলতার মাত্রা এতটাই ছড়িয়ে পড়ে যে, মধ্য বিত্ত হল থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে শুরু করেন।

নায়িকাদের পোশাক ছোট হতে হতে এবং বেড সিন যোগ হতে হতে সেটি বাড়াবাড়ি রকমের হয়ে ওঠে। শেষে দেখানোর আর কিছু থকে না,ম বাথরুম, সুইমংপুল হয়ে সিনামার শরীর দেখানোটা তুঙ্গে ওঠে। গল্পের বদলে চলে আসে শরীর-বৃত্তি। 

২০০১ সালের সরকারে পরিবর্তন, ১/১১এর প তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ও একই হাল ছিল।

‘মহিলা হোস্টেল’, ‘মডেল গার্ল’ ও ‘নষ্টা মেয়ে’র মত সিনেমা নিয়ে যখন তুমুল সমালোচনা হচ্ছিল, সে সময় এ সব সিনেমার সাময়িক লাগাম টেনে ধরার জন্য সেন্সর সনদ সাময়িকভাবে বাতিল করে।

নির্মাতারা পরে আবার আদালত থেকে ছাড়পত্র নিয়ে সিনেমাগুলো ছাড় করতে শুরু করেন।

২০১০ সালে এসে সিনামায় কাটপিসের সংখ্যা বহু গুণে বেড়ে যায়। আগে সিনামায় কাটপিস থাকতো চার ৫ টি। কিম্বা ৫ থেকে ১০ মিনিট। এবার সেটি ৪০ থেকে ১ ঘন্টা পর্যন্ত ছাড়িয়ে যায়।

এ রকম পরিস্থিতিতেও দেশে ভালো সিনামা হয়েছে। গেরিলা, ব্যাচেলর, সার্চ দ্যা খোঁজ, কাবুলিঅলা, আমার আছে জল কিম্বা  ঘেটুপুত্র কমলাকে কেউ কি অস্বীকার করতে পারেন ? পারেন না। 

বাংলাদেশের  সিনেমার এমন দুর্দিনকে সামনে রেখে ভারতের সিনেমা আমদানি করা হচ্ছে এমন কথা বলছেন প্রদর্শকরা। তারা এও বলছেন, সিনেমাহল বাঁচাতে হলো ভালো সিনেমা লাগবে, যেটি বাংলাদেশে হচ্ছে না।  

২০১১ সালের জুলাই মাসে ভারত থেকে আসে বাংলা সিনেমা ‘জোর, ‘বদলা’ ও ‘সংগ্রাম’। চলতি মাসে মুক্তি পেলো ওয়ানটেড।

সিনামা হল অলারা বলছেন এ দেমে ভালো সিনামা হয় না, নাই তাই আমদানি করে হল বাঁচাইতে চাই। কিন্তু তা কি ঠিক?


কাটপিস দেখানোর গুরু হলো ঢাকার বাইরের হলগুলো। আামরা প্রথম কাটপিস দেখেছিলাম আদমজীনগরের মুনলাইট সিনামা হলে।  হঠাৎ করে কাটপিস এসে পড়ায় বন্ধুরা সবাই বিব্রত। এরপর মুনলাইট সিনামা হল এ ভিড়; মেরেও লোক সরানো যায় না।  একই রকম অবস্থা ছির বন্ধু, লাভলী, রাজমহল সিনামা হলেও। ঢাকার বাইরে এমন কোনো হল ছিল না যেখানে কাটপিস  দেখানো হতো না।

 এ সব কাটপিস মিলতো গুলিস্তান মার্কেটে। সিনামার রোলের সাথে এ সব কাপিট কিনে নিতেন হল মালিকরা।  প্রশা্সনকে ম্যানেজ করেই পরিবেশন করতেন এ সব। এ নিয়ে প্রতিবাদও হয়েছিল। নায়িকা ববিতা এর প্রতিবাদ করে সেন্সর বোর্ড ত্যাগে বাধ্য হয়েছিলেন। তাকে খ্রাপ ভাষায় গালিগালাজ করেছিল নির্মাতারা।

তবে স্রোতে গা না ভাসিয়ে অনেকেই ভালো সিনামা নির্মাণের চেষ্টা করেছেন। তাতে হল মালিকরা জুড়ে দিয়েছিলেন অশ্লীল দৃশ্য। যেমন ধরুণ খায়রুন সুন্দরী সিনামার কথা। নায়িকা মৌসুমীর এ সিনামাতেও কাটপিস জুড়েছিল  নারায়ণগঞ্জের হীরা সিনামা হল।


 বহু হলে গিয়ে দেখেছি সিনামার অভিনেতা অভিনেত্রীর নাম ধামে বা পরিচালকের নাম ধাম নাই আছে অচেনা মেয়েদের গা গোলা ছবি। এ সব প্রিন্টও হতো ঢাকায়। সরবরাহ হতো হলে এবং এভাবেই হল মালিকরা অসাধু পরিবেশকদের সহায়তা টেনে নামালেন বাংলা সিনামা। এখন বললেন হল টিকাতে হিন্দি সিনামা লাগবে। আহা কি দারুণ খেলা!





পেট্রোল বোমায় মানুষ পোড়ানো :১৯৯৬ থেকে ২০১৫


আমার খুব জানার ইচ্ছা, কারা পেট্রোল বোমা বানায়, মারে; তারা ধরা পড়ে না। আইনের আওতায় আসে না। তার মানে কি ! তারা অতিমানব। অতি ক্ষমতাবান এবং অতি শক্তিমান।    

১৯৯৬ থেকে ২০১৫ পর্যন্ত যতগুলো  পেট্রোল বোমা, গাড পাউডার দিয়ে বাসভর্তি মানুষ পুড়িয়ে মারা হয়েছে; সে সব ঘটনাগুলো যারা প্রত্যক্ষ করেছেন, তাদেরও নিশ্চয় এ প্রশ্নটা মনে জাগে। কিন্তু দলদাস বা দলান্ধ হবার কারণে সময় সময় কৌশলে এরা এ সব নিয়ে কথা বলেন। 

আমি সব সময় সব সরকারের সময় সব ধরণের মৃত্যু, হত্যা, গুপ্ত হত্যার বিরোধী। - এ মৃত্যুখেলা বন্ধ করুন। 

২০০৪ সালের ৪ জুন তৎকালীন শেরাটন হোটেলের (রূপসী বাংলা) উল্টো দিকে বিআরটিসির একটি দোতলা বাসে আগুন দিয়ে ১১ জনকে পুড়িয়ে মারা হয়। তখন ক্ষমতায় ছিল বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় সরকার। ৪ জুন হরতাল ডেকেছিল তৎকালীন বিরোধী দল আওয়ামী লীগ।(সূত্র প্রথম আলো)

১৯৯৬ সালের  ১৭ মার্চ অসহযোগ আন্দোলনের ৯ম দিনে রাজধানীতে বাসে পেট্রোল বোমায় ২ জন নিহত, চট্টগ্রাম ও সিরাজগঞ্জে আরো ২ জন নিহত হয়েছে বলে সে সময়কার পত্রিকার খবর।

তার মানে পেট্রোল বোমা হঠাৎ আবিষ্কৃত হয়নি। ক্ষমতা টিকিয়ে রাখা কিম্বা আরোহনের এটা একটা বড় অস্ত্র। মানুষের রক্ত মাংস পুড়িয়ে ক্ষমতা- আহা জীবন; নিয়মিত। 

২০১৩ , ২০১৪ এবং ২০১৫ এর শুরুতেই যে পরিমাণ মানুষ পেট্রোল বোমায় দগ্ধ হয়ে কাতরাচ্ছেন, জীবন দিচ্ছেন; তাদের প্রতি সহানুভূতি। তাদের পরিবারের ব্যাথা অনুভব করার মত সক্ষমতা সরকার কিম্বা বিরোধী দলের নেই। 

তাই পেট্রোল বোমবাজদের ধরেই একইভাবে তাদেরও পুড়িয়ে মারা পক্ষে আমার ন্যায় বিচারের পূর্ব দাবি আবারো থাকছে।  

ঘটনা হলো- এত পুরনো একটা সঙ্কট কাটাতে  কোনো রাজনৈতিক দলই সক্ষমতা প্রমাণ করতে পারলেন না।  সত্যিক অবাক লাগছে। 

বড় কষ্ট লাগে। 

কারণ আমি, আপনি যে কেউ যে কোনো সময় এ ধরণের বোমার শিকার হতে পারি। আল্লাহ আমাদের সবাইকে দলমত নির্বিশেষে- অপমৃত্যু-অনাকাঙ্খিত হত্যাকাণ্ড থেকে রক্ষা করুণ। 



সৌদি বাশ্শার জন্য আইজকা শোক

 frown emoticon
রাজনীতিকদের নষ্টামীর কবলে পড়ে দেশের এত মানুষ-মরে,পুড়ে,গুম,নিঁখোজ হয়ে শশ্মান- কব্বর হয়ে গেলো; তার জন্য শোক নাই।
ক্ষমতা আকডে থাকা আর আরোহনের জন্য মানুষের রক্ত চুষে নেবার লড়াইয়ে কোনো মানব সন্তানের প্রতি রাজনীতিকদের সহানুভূমি দেখানোর ফুরস নাই। সেখানে সৌদি বাশ্শার জন্য শোক। আহারে পীরিত।
সৌদি বাশ্শার জন্য আইজকা শোক। একটা দেশের সরকার সে দেশের মানুষকে কতটা মানবিক ভাবে বিবেচনা করে তা বোঝার জন্য আর কোনা উদাহরণের দরকার পডেনা।
আমাদের বঙ্গ সন্তানদের জীবন যে মুল্যহীন; তা এতটা আঙুল দিয়ে না দেখালেও হতো।

শেষ পর্যন্ত মুক্তি পা্ইছে হিন্দি ফিলিম ওয়ানটেড!


শেষ পর্যন্ত মেদহীন নায়িকার বাঁকানো শরীরের উপ্রে সেন্সর বোর্ডের ছাপ্পর মারা পোস্টারে পোস্টারে নগরি রঙিন করে আজ ২৩ জানুয়ারী শুক্কুরবার মুক্তি পা্ইছে হিন্দি ফিলিম ওয়ানটেড।

আর ৭ দিন বাদে আসছে আমাদের ভাষার মাস । একুশে ফেব্রুয়ারি পালন করবো আমরা। সে জন্য প্রস্তুতি চলছে। বক্তৃতার খই ফুটবে, সংস্কৃতি মুন্ত্রীর বয়ানও শোনা যাবে। আমরা  গাইবো-'আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি আমি কি ভুলিতে পারি।'
শেষে ছুটে যাবো পূর্ণিমা, মধূমিতা, আনন্দ সিনামা হলের কোনো একটাতে। একটা হিন্দি কিম্বা উর্দু  ফিলিম দেখে সব ভুলে যাবো। আহা।

বয়সের ভারে মোট কাঁচের চশমা সরিয়ে তিনি আবেগে কাইন্দা ফালায়া টিভি ক্যামেরার সামনে চোখ মুছবেন- আর বলবেন, বরকত, সালাম , জব্বর তাদের রক্তের বিনিময়ে আমরা মায়ের ভাষায় কথা বলতে পারছি।

আহা জীবন-অভিনয় কীভাবে একটা রাষ্ট্র ব্যবস্থার ভিত্রে ঢুইকা পড়ছে ভাবলে কষ্ট লাগে। বাণিজ্য যদি চূড়া্ন্ত লক্ষ্য হয় তাহলে সব কিছুরই তো বাণিজ্যিকীকরণ হতে পারে।  যদি বাংলাদেশের সিনামা দিয়া সিনামা হল ব্যবসা টিকায়া রাখা মুশকিল বলে  উর্দু-হিন্দি সিনামা মুক্তি দেওন যায়; তাহলে নষ্ট রাজনীতির কবলে পড়ে বিপন্ন মানুষের জীবন বাঁচাতে তো আমরা রাজনীতিক, আমলা, নিরাপত্তা রক্ষীও আমদানি করতে পারি।

এ যুক্তিটা একেবারেই শিশুসুলভ জানি; তবুও দিলাম।

স্বাধীনতার ৪৩ বর্ষপূর্তির মাথায়  বাংলাদেশের রাজধাণী ঢাকায় আজকে মুক্তি পেলো প্রভুদেবার সিনামা ওয়ানটেড। ঢাকার বাইরেও মুক্তি পেয়েছে। সব মিলিয়ে ৬০ টি হলে।

আজকের এ দিনটাকে কেউ কালো বললেন, কেউ সাদা বলবেন।রাজনৈতিক , ব্যবসায়িক এবং কূটনৈতিকভাবে অনেকের কাছে অনেক ব্যাখ্যা থাকবে; সে সব মেনে নিয়েই বলছি এমন বাংলাদেশের জন্য তিরিশ লাখ মানুষ তার অমুল্য জীবন বিলিয়ে দেননি।

বঙ্গবন্ধু, জেনারেল জিয়া, সি আর দত্ত কিম্বা জেনারেল ওসমানীরা লড়াই করেননি। ভাসানী তার জীবনটা উৎসর্গ করেননি ভিনদেশি  বাণিজ্য প্রসারের জন্য।   নিজের যা আছে তা ঘিরে বিস্তৃত হবার লড়াই ছিলো তাদের। আমাদের হাতে সেটিই তারা তুলে দিয়ে গেছেন।  বঙ্গবন্ধুর বক্তৃতাতেই আছে অর্থনৈতিক মুক্তির কথা। কিন্তু সে মুক্তির বদলে আমরা ভিনদেশের অর্থণৈতিক গোলামে রূপান্তর হবার জন্য প্রস্তুত হয়ে আছি।

হাল আমলে  গিনিজ বুকে নাম তোলার যে হিড়িক পড়েছে তাকে আমলে নিয়ে বলছি বাণিজ্য প্রসারে  হিন্দি সিনামার এমন মুক্তি যদি আমরা মেনে নেই তবে তা গিনিস বুকে উঠতে পারে। যে জাতি একটি ভাষা, রাষ্ট্র, সংস্কৃতি এবং টিকে থাকার লড়াইয়ে জয়ী হযেছিল, কেবল রবীন্দ্র সঙ্গীতের অবহেলার প্রতিবাদে পয়লা বৈশাখের মত জাতীয় আয়োজন করে দশকের পর দশক তা ধরে রাখতে পেরেছে;; সে জাতি তার সিনামা শিল্পকে ধ্বসিয়ে দেবার আয়োজন প্রত্যক্ষ করলো আনন্দে; সেটিই  সেলুকাস!

 অনেকেই বলছেন- টিকে থাকতে হবে প্রতিযোগিতা করে। বলি বাপু , তোমার কথা শুনলাম, কিন্তু তুমি টিকতে পারছো। তোমাদের কাউকে কাউকে তো এখনো চাকুরী, পড়াশোনায় টিকিয়ে রাখার জন্য মহান সংসদে কোটা নিয়ে আলাপ করতে হয়।  তা নিয়ে আমার আপত্তি নাই। পিছিয়ে পড়া মানুষকে সামনে এগিয়ে দিতে এটা লাগে। কিন্তু নিজের সংস্কৃতির ভিত তৈরির জন্য তুমি সে সবের কিছু করেছো, নাকি রাস্তার বেশ্যাদের মত কাপড় খুলে বসে আছো;)

মজার ব্যাপার হলো- একজনের হাতের বন্দুক থেকে  গুলি বের হয়। আরেকজনের বন্দুক থেকে কেবল আওয়াজ।  গুলি আর আওয়াজঅলা বন্দুক যোদ্ধা যদি প্রতিযোগিতায় নামে তাহলে কে টিকবে?  সে উত্তর সবার জানা।


একজন বললেন, বাংলা সিনামা ৪৩ বছরেও পারেনি; সামনেও পারবে না। হতে পারে। আবার নাও হতে পারে। কিন্তু বলিউড যে পরিমাণ মেধা, শ্রম,প্রযুক্তি ও অর্থের উপ্রে দাঁড়িয়ে আছে বাংলদেশে কি তা ছিল, আছে কিম্বা হবে।  সে প্রশ্নের উত্তর নেই।


 তবুও এ দেশে ভারতীয় সিনামা এসেছে। বাল কাটার ব্লেড থেকে, পিরিয়ডের রক্ত চোষার ত্যানা, ডিম ভাজার পেঁয়াজ থেকে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকের ডিগ্রি সবই আমরা্উপমহাদেশ থেকে আমদানি করি। তাতে কি তাদের ভালোটা আমরা নিতে পারি না; সেইটা বললে আবার উন্রারা  উপরের দিকে চাইয়া থাকেন বড় ভাই, সাহেবরা কি বলেন, সে অপেক্ষা আর কি!


বিম্পির এককালের তথ্য মুন্ত্রী নাজমুল হুদা আকাশ ওপেন করে ভারতীয়  পণ্যের বাজার তৈরি করে গেছেন। আম্লীগের মুন্ত্রী স্পর্শ পেয়ে বলেছেন ধন্যি বাবা, চলো হিন্দি সিনামা দেখাই। যারা এ বিরোধীতা করে তারা মুক্তবাজার অর্থনীতি বোঝেনা, শিল্প বোঝেনা, সংস্কৃতি বোঝে না।

এ দেশে কিছু বলতে গেলে 'রাজাকার', 'তুই অযোগ্য', 'তুই পারিস না; তাই বলে আমি খাবো না', '--- এ সব টাইপের কথা শুনতে শুনতে অনেকেই চুপসে থাকেন।


তবুও আশাহীন নই আমি। সক্কার বাহাদুরের নিশ্চিতভাবে সুমতি হবে। সে আশায় আছি। শোকে আছি। আনন্দ আসবে।

নির্মম-দুর্ভাগা এ দেশের সিনামা শিল্প

যখন প্রণোদনায় টিকে থাকা গার্মেন্ট ব্যবসা খ্রাপ করে; তখন সক্কার বাহাদুরের মন খ্রাপ হয়। সুশীলরা বলে সমাজে বেশ্যা; হতাশাগ্রস্থ মানুষ আর চুরি;ছিনতাই বাড়বে।

কিন্তু প্রণোদনার টাকার ভাগ গার্মেন্ট কর্মীরা পায় না। পায় মালিকরা। যারা  ফরেন বায়ারের সাথে ডিল করার নামে থাই কন্যাদের সাথে মউজে মজতে  ব্যাংকক-পাতায়া আর ফুকেটের স্টার; থ্রিস্টার-ফাইভ স্টার হোটেলের কক্ষ গরম করে তোলেন।

বিচের  আধো উষ্ণবালিতে পা ঠেকান।  জানালা খুলে দিয়ে থাই কন্যার উড়ন্ত চুলের ভিত্রে খুঁজেন ব্যবসা পাকা করার সন্ধি।  আহারে দুইন্নাই।

সেই দেশের একই সক্কার যারা প্রণোদনাহীণ  সিনামা শিল্প কে হত্যা করার চেষ্টা করছে। একবারো ভাবছে না  সিনামা শিল্প ধ্বসে পড়েছে; এখন কব্বর হয়ে গেলে গুটি কতক লোক ছাড়া বাকি সবার কি হাল হবে? তাদের জীবন-জীবিকা-সংসার কীভাবে চলবে।

কীভাবে নির্মিত হবে আগামীর বিনুদন শিল্প।নিজের সংস্কৃতি-পরিবারের টানাপড়েনের চিত্রায়ান কি করে সম্ভব।  কি করে গড়ে উঠবে সংস্কৃতির ভিত।

কেবল সাময়িক লাভ আর উত্তেজনার আফিস বিক্রি কি দীর্ঘ মেয়াদি সমাধান। হতে পারে না। তবুও হতে যাচ্ছে।  শুক্কুরবার মুক্তি পাচ্ছে বঙ্গ দেশে হিন্দি সিনামা।

বড়ই নির্মম-দুর্ভাগা এ দেশের সিনামা শিল্প! আহা সিনামা।

বাংলা সিনেমা যখন ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য চেষ্টা করছে সে সময় ঠাডা পড়লো


বাংলা সিনেমা যখন ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য চেষ্টা করছে সে সময় ঠাডা পড়লো-বাংলাদেশের হলে মুক্তি পাইতে যাচ্ছে হিন্দি সিনামা। মনে বড় কষ্ট নিয়ে এ লেখা লিখছি।-

বাংলা সিনেমার প্রতি আমার প্রচণ্ড টান ছিল এবং এখনো আছে; এটা কারো কাছে হাস্য রসের বিষয় হতে পারে; কারণ তাদের মত হিন্দি ও ইংরাজি সিনেমা দেখে জাতে ওঠার ভাবনা আমার কোনো কালেই ছিল না। এখনো নাই।

বাংলাদেশের সিনেমার প্রতি আমার এ ভীষণ রকমের টানের বড় কারণ আমাদের পরিচালকরা আমাদের সময়কার ঘটনা এবং ভাবনার পরিধি নিয়ে কাজ করেন।

 নিম্ন আয়ের দেশ হিসাবে আমাদের চাওয়া দু মুঠো ভাত, মোটা নারী, আর  বৈকালিক বিনুদন হিসাবে চা সিগারেট কিম্বা ছোলাই মদ। আর আমার নিজের চেয়ে খারাপ অবস্থায় থাকা মানুষকে ফাঁপর দেয়া। এ সবই সিনেমার অনুষঙ্গ।

তাই এখানে যখন নায়ক মান্না ওই খামোস বলে হাত মুঠো করেন; তার ভয়ে  গডফাদার চুপসে যায়; তখন করতালিতে মুখর হয়ে ওঠে  সিনেমা হলঘর।

 অথবা চটুলগানের সাথে যখন পপি তার বিশলাকায় রানের দুলুনি তে সনিমোর পর্দা কাঁপিয়ে তোলেন তখন সবাই হিসহাস করেন।


 সেই সিনেমা হলে নিশ্চিতভাবেই কখনো কখনো ময়ুরীর উদোম রানের  গোশতের থর থর কাঁপন, মুনমুনের মধ্যম আকৃতির বুকের দুলুনি, স্লো মোশনে খল নায়িকা নাগমার  ফুলে ওঠা বুকের ওপর অ্যাকশন কারো কারো কাছে অশ্লীল-চোখ বন্ধ হয়ে আসে।

কারো কাছে  বমির ভাব হয় আজাদ খানের সিনেমা দেখলে। কারো সোহেল-শাপলা  শারিরীক বিত্তবলয় খ্রাপ লাগে। আমি অস্বীকার করছি না।

ভালো সিনামাও  এ বঙ্গে হয়েছে; হয়ে আসছে এবং সামনেও হবে। হয়ত আমাদের  ধুম থ্রি'র মত সিনেমা বানানো কিম্বা  গুণ্ডের মত তর্ক সৃষ্টি করে টিকে থাকার মত শক্তি এ দেশের নির্মাতাদের নেই।

তবে এ টুকু তো আছে যে গেরিলা,  ব্যাচেলর কিম্বা অগ্নির মত সিনেমার জয় হয়েছে। ওরা ১১ জনের মত সিনেমা কেবল আমাদের ইতিহাসকে সমৃদ্ধ করেনি চলচ্চিত্র ইিতিহাসে বিষয় বৈচিত্রে এক অনন্য সংযোজন নিয়ে এসেছে।

বেদের মেয়ে জোছনা কিম্বা হাঙর নদীর গ্রেনেড, অথবা মাটির ময়না কি আমাদের সম্মান বাড়ায় নি।

সিনেমা হলগুলোতে আমরা খুবই খ্রাপ পরিস্থিতির কথা বলি। বলি ভালো সিনেমা হচ্ছে না। ইনডিয়ার ভালো সিনামা বানায়; আমি দ্বিমত করি না।  আবার পুরোপুরি একমতও হই না।

কারণ ইনডিয়ার বহু সিনেমা আছে যে গুলো হলিউডের  সিনেমার কাহিনী নকল। আমরা নকল করি হিন্দি সিনামা কিন্তু মৌলিক কাহিনী চলমান  সঙ্কট নিয়ে সিনামা হচ্ছে। সবশেষে পিপড়াবিদ্যার কথাই ধরুন। নাটক কিম্বা সিনামা হয়েছে কিনা তা নিয়ে তর্ক হতে পারে; কিন্তু সিনামার গল্পটা একেবারেই সমসাময়িক এবং প্রাসঙ্গিক।

ইনডিয়া সিনামার বাণিজ্যিক প্রসারে যে পরিমাণ বিনিয়োগ ও প্রচার যন্ত্র ব্যবহার করে বাংলাদেশে তা হয় না। বাংরাদেশের প্রচার মাধ্যমের সাপ্তাহিক দু পৃষ্ঠার এক পৃষ্ঠা ইনডিয়ার জন্য বরাদ্দ থাকে।

ডিজিটাল সরকারের ৭ বছরেও ডিজিটাল ইকুইপমেন্ট আসেনি এফডিসিতে। হলফ করে বলছি আমরা এখানে সিনামা শিল্পকে গলা টিপে হত্যা করতে চাই। সে জন্য আজকের এ হাল।

এখানে সসিনেমা নিয়ে পড়াশোনা করার জন্য  ইন্সটিটিউট ও ইউনিভার্সিটির ডিপার্টমেন্ট খোলা শুরু হয়েছে; মাত্র। এখানকার পরিচালকরা অন্যের সহকারি থেকে শিখেছে। কয়েকজন ইনডিয়া ও আম্রিকা থেকে পড়ে এসেছেন।

নায়ক-নায়িকারা তাদের সুরত ভাল- সেটি কাজে লাগিয়ে সিনেমায় নেমেছেন।

এত সব প্রতিকূলতায়  দেশে অন্তত ২০/২৫ টি ভালো সিনেমা হয়, সে জন্য  নির্মাতাদের  সম্মান জানানো  উচিৎ।


আমাদের নায়িকারা যখন সিনেমায় পা রাখেন-তখন প্রযোজকরা তাকে বেডে ডাকেন, নায়ক তার জন্য উতলা থাকেন।  এটা হয়তো সবখানেই হয়। হতে পারে; তাতে কি।  কিন্তু  সানি লিওনের মত পর্ন স্টারকেও  ইনডিয়া বাজারজাত করতে পেরেছে। ক্যাটরিনা, দীপিকা কিম্বা রানীর কথা ভাবুন না। ঐশ্বরিয়ার কথা বাদই দিলাম।  তাকে নিয়ে আমাদের  তরুণদের আগ্রহ নিশ্চিতভাবেই সবই বুঝতে পারে না।

 এমনকি ভারতীয় নায়ক শাহরুখ, সালমান, জন, ইমরান, হৃতিক- বা আরো যারা আছেন।  তাতেদর জন্য আমাদের অনেতক তরুণীর জীবন যায় যৌবন ভেসে যায়। এ জন্য আমি আমাদের তরুণ-তরুণীদের দোষ দিই না; কারণ আমরা আমাদের চেনাতে পারিনি।


 ববিতার মত নায়িক এ দেশের পর্দা কাঁপাননি  বিশ্ব দরবারে বাংলা সিনামার সমৃদ্ধির কথা জানিয়ে দিয়েছেন। সে  সব নায়িকাকেও এ দেশের ক্ষমতাবানদের হুমকির মুখে পড়তে হয়েছিল।


 সিনামা কি কেবলই বাণিজ্য? মনে হয় না। কিন্তু বাংলাদেশের ব্যবসায়িকভাবে সফলতা অর্জনের জণ্য লড়াইটা বেশি। কারণ এখাতে সরকারের সহযোগিতা কিছু আর্ট ফিলিফেমের জন্য। বাণিজ্যিক সিনেমায় সরকার পৃষ্ঠপোষকতা করে না। উল্টো সুন্দরী নায়িকার ডাক পড়ে সেন্সর বোর্ড সদস্যের বেড রুমে-এ গুলো ওপেন সিক্রেট।

একটা বড় রকমের গুণ্ডামি ঘিরে রেখেছে সিনামা। সেই সুযোগটা নিয়েছে প্রদর্শকরা। যে সব প্রদর্শক তাদের হলগুলোতে  অশ্লীল কাটপিস দেখিয়ে পরিবেশ নষ্ট করেছেন, সিনেমা দেখার জন্য সঙ্গীনীর সহায়তার নামে বেশ্যার বাজার তৈরি করেছেন; ধীর লয়ে তারাই বলছেন হল টিকিয়ে রাখতে হলে এখন হিন্দি সিনেমার বিকল্প নেই।


বড় আফসোস-বঙ্গবন্দূ কন্যা এখন ক্ষমতায়। অথচ বঙ্গবন্ধু নিজ হাতেই এ দেশে  উপমহাদেশীয় সিনেমা আমদানি প্রদর্শণ নিষিদ্ধ করেছিলন। সেটি রক্ষা হলো না। শুক্কুরবার হিন্দি সিনামা ওয়াটডেট মুক্তি পাচ্ছে।

যারা আমাদের সংস্কৃতি থেকে দূরে সরে গিয়ে ভারতীয় বাণিজ্যিক অশ্লীলতাকে শিল্প বলে চালাতে চান তাদের সাথে বাৎচিৎ করার মত ইচ্ছে আমার নেই।

তবে দেশের সনেমা শিল্পকে টিকিয়ে রাখার  স্বার্থে একসাথে একমত  হয়ে একই আওয়াজ তুলতে হবে। সময় এখন নিজের সিনেমাকে প্রটেক্ট করার।  জয় হোক সবার। জয় হোক বাংলাদেশের সিনেমার।  

নারকীয় তাণ্ডবকারীদের একইভাবে গাড়িতে ভরে আগুন ধরিয়ে দেয়াটাই-ন্যায় বিচার


কথাটা গত বছরও বলেছিলাম; এত্ত কিছু উন্রা বের করতে পারেন; গান পাউডার ;প্রেট্রোল ঢেলে যারা গাড়িতে আগুন দিয়ে মানুষ হত্যা করে; সে সব কিট পতঙ্গকে খুঁজে বের করতে পারেন না। এটা বিশ্বাস করতে পারি না। তবুও তাদের সীমাবদ্ধতার প্রতি শ্রদ্ধা রেখে মনে করি- ওই নারকীয় তাণ্ডবের পতঙ্গদের ধরে একই রকমভাবে গাড়িতে ভরে গান পাউডার দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়াটাই আমার কাছে-ন্যায় বিচার।
সরকার বাহাদুর কি কাজটা করবেন? আশায় আছি।
নোট: ১:
রংপুরে মঙ্গলবার রাতে বাসে যারা আগুন দিছে- তাদের ধরে শাস্তি নিশ্চিত করার অপেক্ষায় রইলাম। যদিও গান পাউডার অলারা সব সময় শাস্তির বাইরে থাকে।
নোট:২: সম্ভবত ২০০৪ সালে শেরাটন মোড়ে সাকুরা বারের সামনে বিটিআরটিসি'র দোতলা বাসে গান পাউডার দিয়ে আগুন দেয়া হয়েছিল। সে সময়কার সরকার বলেছিল এটা বিরোধী দলমানে আম্লীগ করেছে। নানাকসহ আরো অনেক যুবলীগ কর্মীকে অভিযুক্ত করে মামলাও করেছিল নিরাপত্তারক্ষীরা। কিন্তু আম্লীগ বলেছিলে সরকার এ কাজ করে তাদের উপ্রে দোষ চাপিয়েছিল।
নোট :৩: ক্ষমতায় আসার পর আসল অপরাধীদের খুঁজে বের করেনি আম্লীগ। গোড়ায় হাত দিলে আমাদের মত পাবলিককে পুড়িয়ে মারা ষণ্ডাদের রুখে দেয়ার ক্ষেত্রে আমরা সম্পূর্ণ না হলেও অনেকটা সফলতা আসতো।

চেংরা বন্ধুয়ারে / এত গোস্সা বন্ধু তোমার অন্তরে'।


তোমার শইলডা গরম ক্যা?
কত দিন পরে আইলা, মাচানের ঘরটা উইড়া যাওনের পর আমার আর কিচ্ছু আছিলো না

গতর ঢাকনের মত কিছু না; এ শহরে কত মাইনষের উন্নতি অইছে;
বস্তির কালো ছোকরা করিম হেও এখন লাল গাড়ি চালায়;


বিয়া করবো কইছিলো; কত রাত শুয়েছি তার লগে;
পলায়া পলায়া কত দিন; চুটিয়ে ভিজেছি দুইজনে ; কামরসে


শেষ পর্যন্ত হেও আমার পর অইলো!

এখন মেম সাহেব আনছে ঘরে; আমার ঘর নাই
মাথার উপর থেইকা উইড়া গেছে ঘর।


গেলো মাসে বসতি দখল, সেই কি কান্ডরে বাপ; পুলিশ, কেরেন, লাটিসোঁটা; মাস্তান

কত কিচু দেইখলাম; এর মইধ্যে আমার গতরে হাত দিলো একজন; নচ্ছর বান্দা

কিন্তু ঘেন্নায় থুতু দিলাম; তাই বলে কি লোভ কমেছে কারো

 না;
সুযোগ পাইলে এই লোক ওই লোক গায়ে হাত দেয়। ঘরে অগো এত সোন্দর বউ-ফুলের মত। তয় একটা কামের না!

গার্মেসে কাম লইলাম; লাইনম্যানে লাইন লাগায়;
বাসা বাড়ির কাম রইলাম বড় সাহেব ছোট সাহেব কত সাহেব যে সামলাইতে অয়।
ফিরা আইলাম আবার বস্তি। এইহানেও একই বেরাম; সবারই একই রোগ !

এত নিয্যাতন ;তারপরেও প্রত্যেক দিন; তোমার জন্য বইসা থাকি; এটারে নাকি অপেক্ষা কয়।


 কত দিন পরে আইলা! কতা কও; কতা কওনা কেন। তোমার শইলডা বালা!

কতা কও;তুমিই তো আছিলা সব;
তারপর যে কি অইলো- গ্রাম ছাইড়া এই শহরে আইলাম;
শহর ভাত দিছে; ইজ্জত নিছে

শহর আবার ছুইড়া ফালাইছে;
এখন রাস্তায় থাকি- রাস্তায় বসত-তুমি আইছো;
চান্নি রাইত আইজ- চলো দুইজনে বইসা কতা কই


 কত মইনষে কত কতা কয়। কত কতা; কিসের এত কতা

আমারো কইতে ইচ্ছা করে; ছলো না; আমার সই।
গান হুনবা-' চেংরা বন্ধুয়ারে / এত গোস্সা বন্ধু তোমার অন্তরে'।   

বালিহাস, হাওরের জল, জলদাসের ছুটোছুটির সকাল


বালি হাঁস উড়ে যাচ্ছে;ছায়া পড়ছে হাওরের জলে
ঠান্ডা বাতাস-মাটি, কাদাময়  সকাল

আকশে সূর্য উঁকি দেয়; নৌকা ছোটে
জলদাস নামে-জলে।  মাছ, মাছ আর মাছে ভরতে চায় 'খলে'


সময়টা বদলে যেতে থাকে;
শাপলা ফুলের মত তোমার গালে এখন  মধ্য দুপুর
গনগনে তেজ; কঠিন-রূঢ়

জীবনের নির্দয় সময়; কত কিছুই না বদলে দেয়

বাইক্কার বিল, বিলের পথ-ঘাসে ঢাকা
নৌকা ছইয়ে বসে থাকা বিকাল

সবই হয়ে যায় হাওয়া।

নগরে নিশ্চুপ প্রতিদিন
বুকে ভেতর জমা হচ্ছে  কালো ধোঁয়ার আস্তরণ
শ্বাসকষ্ট; ইনহেলারে রিলিফ

বালিহাস, হাওরের জল, জলদাসের ছুটোছুটির সকাল
তবুও আমার লাগবে। পারবে ফেরৎ দিতে ?


পারবে না জেনেও চাই।
চাই তোমার সাথে বাইক্কার বিলের শীতের সকালটাও। 

কিস্তি::৯১ জোছনা দর্শন ও একজন হুমায়ূন আহমেদ

জোছনায় ভেসে যাচ্ছে সেন্টমার্টিন।  উত্তরপাড়ায় বসে আছি।  হোটেল ফেরার কোনো ভাবনা নেই। সমুদ্রের উতল হাওয়া আমাকে টানছে; ইচ্ছে করছে ছুট দেই নীলাভ জলের অন্তহীন জলে!

সেন্টমার্টিনে কখনো জোছনাকে মনে করে যাইনি। সেবার জোছনা পেয়েছিলাম কাকতালীয়ভাবে। আমার সাথি ছিল বাবু।  বছর চৌদ্দ আগের রাত।  পড়ি সেকেন্ড ইয়ারে।

ট্যুরের প্রতি ছিল প্রচণ্ড টান। সুযোগ পেলেই ছুট দিতাম।  প্রবালের ওপর বসে  সমুদ্রের বুকে চোখ রেখে সমুদ্র দেখার অসাধারণ অভিজ্ঞতা; এ সব কাব্য কবিতা করে বোঝানো ভারি মুশকিল।

সেন্টমার্টিন সে সময় এত গিঞ্জি ছিল না। মানুষ কম ছিল, পর্যটক তারচে কম।  আমার জীবনে জোছনা উপভোগের সবচেয়ে আনন্দময় একটা রাত সেটি। সাথে সেই গান... এক জোনাকী দুই জোনাকী!

দ্বিতীয় জোছনা উপভোগ করেছিলাম সুন্দরবনে।  ফেব্রুয়ারি মাসের দিকের ঘটনা। সালটা ২০০৪।  সাথি ছিল মীর মামুন, মিটি, সাদিয়া, লিপি, সামিউল হক  এবং মঙ্গা আমানত।

জাহাজটা ভিড়েছিল হরিণটানায়। সুনসান নীরবতা।  বাতাস বয়ে যাচ্ছে। সমুদ্রের নোনা জলের ওপর জোছনাটা যেনো আমার ছেলেদের মুখ। এত উজ্জ্বল। জোছনা রাতে আমি নিজেকে ধরে রাখতে পারতাম না। জোছনা প্রীতি আমার কীভাবে যে জন্মালো তা নিয়ে নিশ্চিত  কোনো ইতিহাস নেই।

হরিণটানায় জাহাজের ছাদে বসে গল্প করছি, শুনছি সেখান থেকে বাঘের মানুষ নিয়ে যাবার গল্প। তবুও এমন একটা ঘোরলাগা জোছনা ভেজা রাতে আমরা নামবো না সেখানে ; হতে পারে না।

 জাহাজের চৌকাঠ ডিঙ্গিয়ে নামলাম হরিণটানায়।  ফরেস্টের লোকদের থাকার ক'টা ঘর। তারপর ঘোর বন। যে বনের ভেতর তাকে  বাঘ; সাপ আর আর কত রকমের জীব। সুন্দরবনে আমার কাছে সবচেয়ে আকষর্ণীয়  হলো  বন। এত বৈচিত্রময় সবুজ বন আমার চোখে লেগে থাকে।

 সে বনের মধ্যে দাঁড়িয়ে জোছনা দেখার অনুভূতি  আসলে অব্যক্ত। এটা কেবল অনুভব করা যায়। শীতের শেষ দিক, তবুও  গরম কাপড় ছিল।  বনের কাছে শীত একটাু বেশিই বটে। আমরা কাঁপছিলাম। কিন্তু ফিরতে চাইলাম না। হরিণটানার ফরেস্ট বাংলোর সামনে কাঠের   টুলে বসে আড্ডা  চলছিলো। আর ফরেস্টের একজন রক্ষি শোনাচ্ছিলেন- কবে  এখান থেকে কাকে  বাঘ ধরে নিয়ে গেছে; তাদের হাঁড়গোড় উদ্ধারের কাহিনী। কিন্তু ঘোরলাগা বনে মায়াবী জোছনার কাছে এ জীবন তুচ্ছ!

জোছনার রাতে নদীর  ঢেউ আর সেই  সাথে অনবদ্য রাত।  এত আনন্দময় রাত জীবনে আরেকটা আসতে পারে না।

তৃতীয় জোছনা দেখার ঘটনা এসএম হলে। যদিও আমি বঙ্গবন্ধু হলে থাকতাম কিন্তু শামীমের সুবাদে; সেখানেও আমার থাকা পড়তো। আমাদের আড্ডার সাথি ছিল সাইমুম ভাই।  এক  শীতের একটা  জোছনা রাত আমরা আড্ডা দিয়ে এসএম হলের মাঠেই কাটিয়ে দিলাম; সেটি সম্ভবত ২০০৫ এর ঘটনা।

ছোটবেলায় আমার জোছনা দেখার সাথী ছিল ফারুক। সম্পর্কে আমার চাচা। কিন্তু বড় হয়েছি একসাথে। আমার  অন্তরঙ্গ বন্ধুদের একজন। আমরা একসাথে হুমায়ুন আহমেদের বই পড়তাম। এর কাছ থেকে ওর  কাছ থেকে ধার এনে পড়া হতো। আবার নিজেদের কেনা বইও ধার দেয়া হতো । এভাবেই । এ সব বইয়ের যথেষ্ট প্রভাব ছিল; জোছনা প্রীতির পেছনে।

ফরুক আর আমি বের হলাম জোছনা দেখতে।  বর্ষার রাত।  মেঠো পথ ধরে হাঁটছি। তখনো আমাদের গ্রামে কারেন্ট আসেনি।   কেরোসিনের বাতি জ্বলছে।  তখনো সেটি গ্রাম; দূরে দূরে কিছু বাড়ি।   উত্তর দিকে হাঁটলে সেখানে একটা পাইপ ; যেটি রাস্তার দু’পাশের পানি সরানোর কাজ করতো। সেখানেই  আমাদের অনেক আড্ডায় কেটে যেতো সময়। সে রাতেও আড্ডা হলো।  চাষ দেয়া জমির ঘোলা জলে আমরা উপভোগ করলাম অনবদ্য এক জোছনা।

এখন সময় পাল্টে গেছে। জোছনা দেখার মত সুযোগ হয় না। কবে যে জোছনা সেটাই দেখা হয় না।  সময় এমন কেনো?

জানি না।  তবে এ দেশে জোছনা কে যিনি জনপ্রিয় করেছেন; তিনি হুমায়ূন আহমেদ। প্রকৃতির এ অসাধারণ রূপটি তিনি সবার সামনে নিয়ে এসেছেন। তাকে কৃতজ্ঞতা। আগামীকাল সে মানুষটির জন্মদিন।  শুভ কামনা তাঁর  জন্য।



বাঁধন থেকে ভাগ্নি; শিক্ষা শান্তি প্রগতির কদর্য রূপ




নারী জাতির প্রতি তাদের অপরিসীম  শ্রদ্ধা।  শিক্ষা-শান্তি-প্রগতি তাদের মূল নীতি। কিন্তু দুটো ঘটনা আমাকে খুব আহত করেছে। আমার মত একটা লোকের আহত হওয়া বড় কোনো ঘটনা না; কারণ এ সমাজের  সাদা মাইক্রো বাস দেখলে যাদের বুক ধুকফুক ধুকফুক করে তাদের মধ্যে আমি নাই। আবার আছিও। কারণ মানুষ হাওয়া হওনের জন্য কোনো কারণ লাগে না।  তবুও ঘটনাটা আমার প্রিয় ক্যাম্পাসের বলে  লিখছি-


২০০০ সালের ঘটনা।  আমার তখন সেকেন্ড ইয়ারে।  বর্ষ বিদায়  নিয়ে টিএসসি সরগরম।  ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মানেই উৎসব-উচ্ছ্বাস-বাধ ভাঙ্গা আনন্দে  মেতে ওঠা। সেই মেতে ওঠার কিছু দিনে অনেকেই আসেন। যাদের আমরা ' বহিরাগত' হিসাবে চিহ্নিত করছি এখন।  আবার অনেককে আমরা নিয়ে আসি, আমাদের প্রয়োজনে। সেই প্রয়োজন ব্যাক্তিগত, রাজনৈতিক, জৈবিক কিম্বা শ্রদ্ধাবোধের।

নারী- শব্দ আমাদের কাছে সব সময় শ্রদ্ধার বাইরে কিছু শব্দ-ঘ্রান নিয়ে আসে। যেখানে শিক্ষা-শান্তি- প্রগতির বাইরের  বাংলাদেশ- জিন্দবাদঅলারও আছেন।  যেহেতু জিন্দাবাদ একটি পাকি শব্দ সেহেতু আমরা তাদের পাকি বর্বরদের  সাথে মিলিয়ে নিয়ে সে আলোচনা বাদ দিতে পারি।

কিন্তু যারা খাঁটি  বাংলা শব্দ ও প্রগতির ধারক তাদের কিছু  বিষয় আমরা চোখ বন্ধ করে এড়িয়ে গেলেও  দু একটা বিষয় একেবারেই এড়াতে পারি না।

 খুব লজ্জা নিয়ে বলছি, ২০০০ সালে বাঁধনের কাপড় খুলে নেবার পর ২০১৪ সালে  আরেকজন নারীর সালোয়ার কামিজ ছিঁড়ে ফেরার মত যে দুবৃত্তপনা  শিক্ষা-শান্তি- প্রগতির লোকেরা করেছে বলে প্রমাণিত হলো সেটি খুবই কষ্টের।


 পিছিয়ে পড়া দেশকে এগিয়ে নেয়া, ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার পেছনে যারা কাজ করছেন; যাদের কাজের মধ্যে শিবির ঢুকে কিছুটা ব্যাঘাত ঘটাচ্ছে বলে তাদের সাংগঠনিক নেত্রী অভিযোগ করছেন; তারা খুবই সুশীল এবং প্রগতিশীল  তারা এমনটা  কেনো করলেন বুঝতে পারি না।


জৈবিক তাড়না সবারই আছে।  ক্যাম্পাসে নিজর ক্ষমতা দেখানোরও অনেক জায়গা  আছে। সেটি না করে এ রকম নিরীহ নারীর ওপর ওপর তারা কেনো হামলে পড়েন, তা জানি না।


২০০০ সালে বাঁধনের কাপড় টেনে নেয়া এবং নিষ্পেষণ করে তাকে অসুস্থ করে ফেলারা শিক্ষা-শান্তি- প্রগতির দলের লোক বলে সে সময় খবরের কাগজে পড়েছিলাম।  এখনো সেই একই লোক। সে সময়ও আম্লীগ সরকার ক্ষমতায় ছিল। এখনো তাই। সে সময় আজাদ চৌধুরী স্যার ভিসি ছিলেন, এখন আরেফিন স্যার। দুজনই ক্যাম্পাসে অতিব সুন্দর কথা বলে মানুষকে মুগ্ধ করার অসাধারণ ক্ষমতাবান।


 তাহলে এমন হয় ক্যানো, কোন শিক্ষা এরা লাভ করেছেন যার জন্য ক্যাম্পাসের পবিত্র ভূমি অপবিত্র হয়,  নারীর শরীরে হাত ওঠে। একেবারেই ব্যাক্তিগত কারণে।

এটা কোন প্রগতি, যে প্রগতি নারীর শরীরের কাপড় টেনে নেয়। হামলে পড়ে হায়েনার মত। তারপরও এ প্রগতিশীলদের পক্ষে কথা বলার  লোকের অভাব থাকে না। তারা যখন কোনো সাধারণ শিক্ষার্থীর আন্দোলনে হামলা করে আমরা তখন বলি- যারা আন্দোলনে ঠেঙ্গানোতে জগতের সব  পুণ্য। তাই আসো। ঠেঙ্গাই।


 আবার তারা যখন বিরোধি দলে থাকে, তখন কথার  ধরণ বদলে যায়, সহ অবস্থান, ছাত্রদের অধিকার, সামনে এগিয়ে যাবার নানা প্রেরণা ময় বক্তব্য দেয়। এ সব শুনে শুনে দেড় দশক পার করেছি। লেখা একবারেই ব্যাক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে লেখা।

অনুসিদ্ধান্ত: এটা  সবাই বলেন, আমিও বলছি ২০০০ সালে বাঁধনের ওপর হামলার বিচার হলে  ২০১৪ সালের এমন ঘটনা ঘটতো। ২০০০ সালের হামলাকারীওরা কার্জন হল এলাকার ছিল; এবারের হামলাকারীরাও। ঘটনাস্থ কেবল ভিন্ন- ২০০০ সালে টিএসটির রাজু স্মৃতি ভাস্কার্যের সামনে; ২০১৪ সাল কার্জন হল পুকুর পাড়।








   

যে সাবানেরও যৌবন আছে; কাম আছে;




বুড়ো গুলো পাশে তাকায়, মুটিয়ে যাওয়া স্ত্রী
মেদ মুক্তির জন্য কিছু একটা করো-কিম্বা মুটিয়ে যাচ্ছো -খেয়াল আছে সেদিকে!


তার পর  দৃষ্টি মঞ্চে ! আহা যৌবন  তুমি ক্যানো লুপ্ত হও। এত দ্রুত!

চোখে পুরো চশমাটা খুলে  আরেকটা বার মুছে নিয়ে মঞ্চে চোখ রাখেন তারা

কাচুমাচু হয়ে তাকান এ দিক; ওদিক

 এ সব  এখন ক্যানো; কত সময় কেটে গেছে

 কত সময়

আলো ঝলমলে মঞ্চে গান বাজে; নাচ হয়; মন উঁচাটনে

কামরসে ভিজে যাচ্ছে নগর- হলঘর ভর্তি মানুষ ক্যাবল জিহ্বা  ঘোরায়

নিজেই নিজের থুতুর সাথে মিশে যায়;  মনের ভেতর কামাগুন জ্বেলে  তপ্ত শ্বাস ছাড়ে

এত্ত তাড়াতাড়ি ক্যানো ফুরিয়ে যায় সময়. এত দ্রুত

আহা যৌবন- যৌন বিকার-

লাক্স পুরোটাই  রহস্যময়ী সাবান
যে সাবানেরও যৌবন আছে; কাম আছে; কামাগুনে পুড়িবার তরে বছর ৬ জুড়ে আয়োজন!

কী দারুণ, কী নির্মম-রূপালী জগত।

ক্যামন পিপঁড়া বিদ্যা, মধু ঢেলে টেনে আনে.. এ প্রান্ত ও প্রান্তের তরুণীদের

স্বপ্নময় মায়ার জালে কীভাবে আটকে যায় তার জীবন, পণ্য হয়,
পুজিতন্ত্রের চাদরে ঢাকা পড়ে ঘোঙায় নারী স্বাধীনতা।





কি বলেন মিয়া ভাইয়েরা!


ছোট বেলা থেকেই আমার অগ্নি ভীতি। ঢাক্কায় আওনের পর চিকিৎসা করন লাগছে। এখন কিছুটা ভালো। আজ সক্কাল বেলা- স্ত্রী জানাইলো কাওরান বাজারে আগুন লাগছে। বুক ধক কইরা উঠছে; জিগাইলাম কই। জানাইলো- এনটিভি-আরটিভি বিল্ডিং।
এ ভবনটা ঢাকার খোলামেলা মেলা ভবনগুলোর মইধ্যে একটা; বাইরে থেইকা তাই মনে লয়। মজবুত বিল্ডিংও বটে। কিন্তু এইখানে আগুল লাগে ক্যান; বুঝতাছি না। ফখর মইন সরকারের সময় একবার আগুন লেগেছিল; প্রাণহানিও ঘটেছে।
আজ (31 October 2014) আবারও! ঘটনাটা কেমুন ঘোলাটে।
সরকারের মালিকানার এ ভবনটার দিকে সবার নজর; 'শাহবাগে ফ্যাসিবাদের প্রতিধ্বনি'- বাক্য দিয়ে 'স্পিসলেস হেড লাইন' করা ফত্রিকা আমার দেশের অফিস এখানে; কাগজের অপচয় থেকে সরকার তাদের মুক্তি দেয়ার পর যেইডা এখন কেবল ডিজিটাল ভার্সনে প্রকাশ পায়!
এর বাইরে বিম্পি নেতা ফালু'র টিভি নিউজ ও বিনোদন কারখানা এনটিভি এখানে; তেনার সুলভে বিক্রি করা আরটিভি অফিসও।
একটা জুতসই তদন্ত কমিটি কইরা ঘটনা খোলাসা করন দরকার; কি বলেন মিয়া ভাইয়েরা! নইলে শর্ট সার্কিট; জ্বলন্ত সিগ্রেটের লেঞ্জা থেকে আগুনের তত্ত্ব সন্দেহ তৈরি কইরাই যাইবো!

সে আসেনি; সে আসবে না!



যাকে বলেছিলাম; 
তুমি এলে আমি একটা বিকাল কাটিয়ে দেবো তিন্দুর জলে
যাকে বলেছিলাম 
তুমি এলে গাঁয়ের ধান ক্ষেতের ঘোলা জলের ওপর জোছনা দেখে কাটিয়ে দেবো একটা রাত
যাকে বলেছিলাম 
কাদামাখামখির বৃষ্টি মুখর সকালে আমরা দুজন ভিজবো; একান্তে

টিনের চালের ওপর গাছের পাতা পড়ার শব্দও কখনো হবে না
হওয়ার কথাও নয়; এমন রাত্তির আমরা পার করবো নীলাচলের চূড়ায়; টিনের ঘরে

হিম বাতাস বয়ে যাওয়া বিকাল;
সন্ধ্যাটা ঘনিয়ে আসলে শেয়াল এসে বাঙলোর দরজায় কড়া নাড়বে
শ্রীমঙ্গলে এমন গহীন শীতল -মুখর রাত কাটাবো আমরা

সে আসেনি; সে আসবে না। আমি ছিলাম; আছি- একা নিরালায়। 

এমনই অস্থির সময়; সেখানে এমন আনন্দ সময় আসতে পারে না। 

তবুও অপেক্ষা! অপেক্ষা! অপেক্ষা!! 

যাও বাবা মোডি কাকুর দেশে যাও

ইনডিয়ায় অনেক বিশ্ববিদ্যালয় হইছে। পুলাপাইন খালি এহানে ওহানে ঘোরে। ওইখানে গেলে কী অয়। বঙ্গ দেশের সবাইরে তারা তালিম দিতাছে। এডমিন; আর্মি; সীমান্তরক্ষী; রাজনীতিক- সবখানে। 

উঠতি তরুণদের তালিম দেওনেরও সুব্যবস্থা আছে। মোডি কাকুর লগে যোগাযোগ করো। ফিরা আইসা কইবা- শান্তি নিকেতনের মত শান্তি কোথাও নাইরে পাগল। তয় মুম্বাইতে শাইনিং লাইফ। পুনের জীবনটাই অইন্য রকম- বঙ্গ দেশ একটা গার্বেজ। 


তুমরা অফ যাও; ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দুইবার চান্স নেওনের দরকার নাই একবার পইরা আসো ইনডিয়া থেকে। সাথে পাইবা চেতনা সার্টিফিকেট। দুনিয়া ফকফকা। তোমাগো লাইগা স্পেশাল কোটার ব্যবস্থা অইবো। ভাইবোনা- আম্লীগ যদি ক্ষমতা চাইরাও দেয় তোমগো অসুবিধা অইবো না। 

বরং বাড়তি সুবিধা পাইবা। জমাত-জাতীয় পার্টি আইলে পুরাই শীলা কী জওয়ানি! 


যাও বাবা মোডি কাকুর দেশে যাও। এই দেশে তুমার জন্য একবারের বেশি চান্স নাই। সেইখানে আছে। কিঞ্চিত বৃত্তি দিবানে ।

দেহনা বিনাশুল্কে এখন ভারতীয় মাল যাইতাছে বঙ্গদেশের বুড়িয়ে যাওয়া নদীতে। তুমরা পইড়া আইলে কৃতজ্ঞতা স্বরুপ তারা যাই চাইবে তাই আরেকটু সহজ কইরা দেওন যাইবো। যারা চিল্লাইবো তাগোর জন্য বরাদ্দ শীতলক্ষ্যার জল। যদি তদ্দিন তা ব থাকে! 

গুডলাক ;বেস্ট অব লাক বঙ্গ তরুণরা।

পিয়াসের জন্য ড. ইউনূসের শোক এবং একটি ভুল তথ্য ভিত্তিক সমালোচনা!

বাধ্য না হলে মানুষকে আমি খারাপ বলিনা; কারণ আমি নিজেও যে যথেষ্ট ভালো মানুষ-সেটি প্রমাণ করার চেষ্টা করিনি। কিন্তু কিছু মানুষ আমার কাছে খুব নমস্য।
যাদের শ্রদ্ধা করি; দুঃখ পাই যখন তারা কেবলই নিজেদের 'জাতে' তোলার জন্য খ্যাতিমান ব্যাক্তিদের সমালোচনা করেন এবং কদর্যভােবেই করেন। মিথ্যা তথ্য দিয়ে করেন। সে কথাটি মনে রেখেই আমি লেখাটির অবতারণা করলাম।
আমি এটাও বলছিনা- সমালোচনার সত্য কারণ ও তথ্য থাকলে আপনি করবেন না। কিন্তু সেটার নিশ্চয় একটা মাত্রা রয়েছে।
দেশটা এমন যেখানে আমার নিজের দিকে তাকানোর ফুরসৎ নাই; অন্যের সমালোচনা করে নিজেকে অনেক বড় কিছু মনে হয়। অথচ যার সমালোচনা করছি তার ধারে কাছে পৌছানোর জন্য কয়বার জন্মাতে হবে তার হিসাব করি না। এটা আমার ব্যাক্তিগত মত!
সবচেয়ে নোংরা মনোবৃত্তির যে বিস্তৃতি ফেসবুক; ব্লগের কল্যাণে প্রকাশ পাচ্ছে সেটি হলো- নিজের মত করে সব কিছুর প্রত্যাশা। এটা কোনোভাবেই কাম্য হতে পারে না। রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ছাত্রও হিসাবে যেটা জেনেছি ব্যাক্তি স্বাধীনতা তা; যা আপনি অন্যের ক্ষতি ছাড়া উপভোগ করেন। অন্যের চরিত্রে কলঙ্ক লেপন করে সেটি এক ধরণের নোংরা মনোবৃত্তির বিকাশ ছাড়া কিছু নয়।
আমি খুব সাদামাটাভাবেই বলি- আমি ড. ইউনূসের একজন দালাল। তাকে ফলো করি নোবেল পুরস্কার পাওয়ার ঘোষনার দিন থেকে। তার সম্পর্কে অনেক নেতিবাচক ধারণা আমার ছিল; কিন্তু কাজ করতে গিয়ে সে সব ভুল ভেঙ্গেছে। আমি তাকে অনেক বিষয়ে প্রশ্ন করে সে সব জেনেছি এবং তার বিষয়ে খোঁজ নিয়ে নিশ্চিত হয়ে কথাটা বল্লাম।
ঢালাও একটা লোককে হেও করে যে রকম বিকৃত আনন্দ কেউ উপভোগ করেন তাদের বিপক্ষে আমার অবস্থান; যদিও এ সমাজে আমি খড় কুটোরও নিচে; আমার অবস্থান ড. ইউনূসের মত একজন মহৎ প্রাণের কিচ্ছু যায় আসে না। তারপরেও নিজের এ গোপন কথাটা বলে রাখলাম।
তবুও লেখটা লিখছি; কারণ পিয়াস করিমের মৃত্যুতে ড. ইউনূস শোক প্রকাশ করায় অনেকে তাকে নিয়ে স্যাটায়ারধর্মী লেখা লিখেছেন; আমার একজন বড় ভাই তুল্য সম্বাদিকও সেই কাতারে আছেন। সাধারণত ব্লগ-ফেসবুকের আবেগি কারখানায় অনেক কথা অনেকে বলেন; সেটি তথ্য সূত্র হীন। সেই কাতারে একজন অগ্রজ সম্বাদিকের গা ভাসানোকে আমি খুবই দুঃখজনক বিবেচনা করছি।
আরো দুঃখজনক- ড. ইউনূস দেশে আসেন বলে রস করার জন্য। কারণ যে ভারত আমাদের কাছে নমস্য সে দেশের সাবেক প্রেসিডেন্ট এপিজে আবদুল কালামও শনিবার ঢাকায় বলেছেন, বিশ্ব ইউনূস; নজরুল; রবীন্দ্রনাথ ও জগদীসকে দিয়ে বাংলাদেশকে চিনে।
গা ভাসানো লোকেরা নিশ্চয় তাকেও শাহবাগের চেতনাপন্থি বলবেন না- কারণ তিনি দেশেরে স্থপতির নামটাই বলেননি; সন্ত্রাস নিয়ে কথা বলতে গিয়ে বলেছেন অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি হলে তা নেমে যাবে। জঙ্গিবাদ নিয়ে আলোচনা করেননি; মনে লয় জমাত ইসলাম তারে ঘুষ দিছে! বিম্পি লবি করছে।
মুল কথায় আসি- আমি শুধু সত্য তথ্য হিসাবে গোটা তিনেক মেইল তুলে ধরলাম। ড. ইউনূস অনেকের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন। তার দু'টি মেইল তুলে ধরলাম। আশা করি বড় ভাইয়েরা তাদের বুল বুঝতে পারবেন। আর ভুল ধরিয়ে দেবার জন্য আমাকে 'চেতনা ' বিনাশী হিসাবে শনাক্ত করে আক্রমণ করবেন না; যে উনাদের মতাবলম্বী শাহবাগী দেশপ্রেমিকরা করে থাকেন।

মেইল-১::

Lamiya Morshed <.....com>
12/9/12
to bcc: me
Dear Editor,
Please find attached a message of condolence from Professor Muhammad Yunus on the passing
of Professor Khan Sarwar Murshid. Please print the message in your esteemed daily or online publication.
Regards.
Sincerely,
Lamiya Morshed
Executive Director
Yunus Centre
www.yunuscentre.org

মেইল:২

Robayt Khondoker
Jan 12
to bcc: me
Dear Editor:
Greetings!
Please be informed that Nobel Peace LaureateProfessor Muhammad Yunus has expressed deep shock at the passing away of Muhammad Habibur Rahman, a former chief justice and also chief adviser to the 1996 caretaker government. He also prayed for the eternal peace of the departed soul and conveyed deep sympathy to the bereaved family. Please find below a press release on the same.
We would highly appreciate if you print the messagein your highly circulated newspaper/e-paper/ web-portal/news blog.
Thank you in advance.
Md. Robayt Khondoker
Program Associate
Yunus Centre

মেইল:: ৩

Dear Editor,
Please find below message from Nobel Laureate Professor Muhammad Yunus on the passing of Professor Piash Karim earlier today:
"I am shocked to hear the news about Piash Karim's death. This fearless, principled intellectual who won the heart of all Bangladeshis by his dedication to speaking truth to power. His analytical mind and commitment to truth inspired the whole nation. His departure is a great loss. May Allah grant him eternal peace."
We hope you will publish the message in your esteemed publication/newspaper/online platform.
Thank you.
Sincerely,
Lamiya Morshed
Yunus Centre
আসেন এবার সমালোচকরা মেইলের শব্দ সংখ্যা; শব্দের ব্যবহার; বাক্য বিন্যাস নিয়ে আলাপ করে আরেক মতামত দিতে পারেন!

উচ্ছন্নে যাওয়া আমরা; একজন আব্দুল কালাম

যে ক'জন মানুষের বক্তব্য আমাকে মুগ্ধ করেছে তাদের মধ্যে ড. ইউনূস; ফরহাদ মজহার; সলিমুল্লাহ খান; সিরাজুল ইসলাম চৌধূরী এবং অমর্ত্য সেনকে বাদ দিলে ভারতের সাবেক প্রেসিডেন্ট এপিজে আবদুল কালাম নিশ্চিতভাবে ড. ইউনূসের পাশপাশি থাকবেন।
তার বক্তব্য, চিন্তার বিস্তৃতি, দর্শন এবং এগিয়ে থাকার চেতনা আমাকে কেবল মুগ্ধ করেননি; ভাবিয়ে তুলেছে - আমরা আমাদের সন্তানদের জন্য কেমন একটা সমাজ রেখে যাচ্ছি।
শনিবার ঢাকায় এক অনুষ্ঠানেআবদুল কালাম তার বক্তব্যটার শুরুতেই বলছেন, মানুষের বিকাশ তার পরিবার ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। তার বক্তব্যের পরতে পরতে সৃজনশীলতার কথা। উদ্ভাবনের কথা এবং ব্যবস্থাপনার কথা। লক্ষ্য স্থির করার কথা।
বিস্ময় এবং কষ্ট দুটোই আমাকে আচ্ছন্ন করেছে। আরো বেশি আচ্ছন্ন করেছে ব্যর্থতা। কারণ আমরা আসলে পেছনে পড়ে আছি এবং নিয়তই পেছনে যাবার প্রতিযোগিতা করছি।
আবদুল কালাম বলছেন, বিশ্বের মানুষের সবচেয়ে বড় সঙ্কট হবে গুণগন মা্নসম্পন্ন শিক্ষা ও মূল্যাবোধ। এ জন্য বিশ্বজুড়েই একটা ভারসাম্যহীনতা তৈরি হবে।
আমাদের মত গরিব দেশ; বিশেষ করে ভারত দ্বারা শোষিত দেশ কীভাবে কোমর খাড়া করে দাঁড়াবে; সেটা নিয়ে তার স্পেশাল কোনো কথা তার বক্তব্যে না থাকলেও নিজেদের নিজের জন্য পরিকল্পনা করার কথা বলেছেন।
ধরে নিন পাটের কথা। বিশ্বব্যাংক বলেছে আমদজী বন্ধ করো। আমরা বন্ধ করে দিলাম। আরো অনেক চট কল বন্ধ করে দিযেছি। সেখানেই আব্দুল কালাম আমাদের সম্ভবানার কথা বললেন।
তার কথটা খুব মনে ধরেছে; কেউ বললো আপনি এটা বন্ধ করেন; অমনি আপনি তা বন্ধ করে দিবেন। আপনারা পরিকল্পনা কি? প্রশ্নটা তিনিই করলেন। আসলে বঙ্গ দেশের কারো কোনো পরিকল্পনা নেই।
গানেই তো `যেমনে নাচাও তেমনি নাচাও পুতুলের কি দোষ।' আমরা আসলে পুতুলের মতই।
মূল্যবোধ ও গুণতমত মানসম্পন্ন যে শিক্ষার কথা বলেছেন, আবদুল কালাম; সেটি কী আমাদের আছে। আমাদের সন্তানদের সামনে আমরা নিয়ে হাজির হচ্ছি। সে কি হবে? নাকি তার কী হবে ইচ্ছা। আমরা কোনটিকে প্রধান্য দিচ্ছি।
কিন্তু এ ইচ্ছাটা কীভাবে জন্মায়। সে জন্য ক্ষেত্রে কেমন। দ্রাবিড় কিম্বা চণ্ডাল; আশরাফ কিম্বা আতরফ- যে গ্রোত্র ভুক্তই আমরা হই না কেনো; বৈশ্বিক সঙ্কট থেকে মুক্ত আমরা নই।
বাঙালি সমাজের ঐতিহ্য; মুসলামন কিম্বা হিন্দু; কিম্বা বৌদ্ধ কিম্বা খ্রিস্টানের একটা ধারা; আমরা যে ধর্ম বিশ্ববাসীরা বয়ে চলেছি- সে দিকে নজর দেবার সময় কী আমাদের আছে। চূড়ান্ত বিচারে নেই। আমরা ভারতীয় কিম্বা পশ্চিমা সংস্কৃতি দ্বারা সব সময় প্রভাবিত- নিশ্চতভাবেই এ প্রভাব থাকতে পারে; কিন্তু সেটি বাছ বিচারের জন্য যে দরকারি জিনিসটি দরকার; সেটি আমাদের নেই। তা হলো বিবেক দ্বারা তাড়িত হওয়া।
আমরা বিবেক নয়; ভোগ দ্বারা তাড়িত। যেখানে নীতি নৈতিকতার বালাই নেই; আমরা ধর্ম পালন করতে পারি না কিম্বা বাঙালি সংস্কৃতির লালন করতে পারি না- সে জন্য আমাদের লজ্জিত হবার বদলে অহঙ্কার হয়। আর কথা তো সত্যি অহঙ্কার পতুনের মূল। কেবল কেতাবে পড়েছি; বাস্তবে আমল করছি না।
মন খারাপ হচ্ছিলো কালামের বক্তব্যে- একটা উচ্ছন্নে যাওয়া; নানা রকমের বিভক্তির ভেতর দিয়ে বেড়ে উঠছে নতুন প্রজন্ম। যাদের দিয়ে আবদুল কালামের থিওরি মেনে বঙ্গদেশের উন্নয়ন হয় না।
তবুও আশায় বুক বাঁধি। আবদুল কালামের বক্তব্যের কিছুটা যদি উপলব্ধি করতে পারি ; তাহলে আমরা টিকে যাবো। নইলে বিশ কোটি কিম্বা তার কিছু কম বেমি লোকের বাজার ছাড়া আমরা কিছুই হতে পারবো না। এখানেই আফসোস।
আসনেনা মাও জে দং; লেলিন, সেক্যুলারিজম; জমায়াত ইসলাম; বাঙালি জাতীয়তাবাদ কিম্বা বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের তকমা খুলে চোখটা কচলে দেখুন না; কোথায় দাঁড়িযে আছি। কোথায় যাবার কথা ছিল। পথ কোথায়? ভাবনু।
আবদুল কালামের কথায় বলি আপনার ভিমনটা কি তা ঠিক করুণ। আপনার পকিল্পনা আপনি করুন। আপনি যে ক্ষেত্রে থাকুন না কেনো; হতে পারেন আপনি চাকুরীজীবী; হতে পারেন ব্যবসায়ঢী; কৃষক কিম্বা পলিটিশিয়ান। আপনাকেই আপনার গন্তব্য ঠিক করতে হবে। কেউ তা ঠিক করবে না।

মনের আয়নায়


তোমার সাথে আমার দেখা হওয়াটা জরুরী  ছিল না
তবুও হয়েছে; এটা খুব যে ইচ্ছে করে তাও নয়! তবুও হয়েছে।

চিরচেনা এই কাঁশফুলের বাগান;
যেখানে কাশের ডগায় হাত কেটে যাবার ভয়; আবার নরম ছোঁয়া ফুলের!
যেনো আমার ছেলের গাল; এখনো যে সব কিছুতেই 'ত' উচ্চারণ করতে পছন্দ করে

আমি বিস্ময় ভরে মনের আয়নায় দেখি-
সেই সময়; বছর কুড়ি কিম্বা তারো আগে-
ইটের ভাঙাচোরা রাস্তায় যখন ভট ভট শব্দ তুলে ছুটতো  অটোরিক্সা
আর পেছনে ছুটটো গাঁয়ের ছেলে মেয়েরা

এ ছোটাছুটির কোনো মানে নেই; তবুও ছোটায় আনন্দ

ছুটোছুটির যে আনন্দ আমরা পেয়েছি ছোট বেলায়- সে আনন্দ এখন নেই

সব দিকে নষ্ট হবার ভয়! তাই মা হাত চেপে ধরে  নিয়ে যান তার সন্তানকে
হাত চেপে নিয়ে আসেন বাসায়।  পাড়াগাঁর ছেলে ছোকরাদের সাথে মিশলে গোল্লায় যাবে! সে কী ভয়।

নিজেরাই নিজের খাঁচা বন্ধি করছি।

খাবার দবার বলতে কেএফসি'র চিকেন; বিএফসির ফ্রাইড রাইস
সময় পেলে চলো ফ্যান্টাসি; নন্দন

শিক্ষক চোখ রাঙিয়ে বসে থাকেন; মাস শেষে বেতন আসবে ঠিকই; কিন্তু  শিক্ষার্থী হতে হবে ক্লাশে নাম্বার ওয়ান

সবারই একই চেষ্টা -
কিন্তু নাম্বার ওয়ান তো একজনই হয়!

জীবনে কেউ কি নাম্বার ওয়ান হতে চান: চান না।
বলেন জীবন এমনই! হতে পারে।

ভট ভট শব্দ তুলে ছুটে চলা অটোরিক্সার পর সবুজ রঙ্গের সিএনজি এসেছে সবখানে; পাকা হয়ে গেছে রাস্তা।

তবুও বাসের কালো ধোঁয়া; ইমারত নির্মাণের জন্য বালুর ছড়া ছড়ি আর উন্নয়ন কাজে মগ্ন নগরে কেবলই রোগ বালাই

শ্বাসকষ্ট; গিটে ব্যাথা; চোখ কচকচ করে; আরো কত্ত কী

তাতে কি? আমরা সভ্য হয়ে উঠছি দিনে দিনে-

সেই সাথে মরে যাচ্ছে আমাদের মনুষ্যত্ব-সেদিকে খেয়ালের দরকার কি

মোটা অংকের বেতন; এসি গাড়ি আর  মাস্তিই এখন জীবনের লক্ষ্য।

গাঁয়ের রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা বুড়ো পথিক-
থালা হাতে গরিব মানুষটির দিকে এগিয়ে যাওয়া
হোঁচট খেয়ে পড়ে যাওয়া মানুষটির হাত ধরে থাকার মধ্যে এখন আর আনন্দ খুঁজি না আমরা।
 তবুও আছি
এই বেশ আছি; ভালো আছি। ভালোবাসি।

বাতিকগ্রন্থ কিছু লো্ক এবং ছাত্রদলের কমিটি!

ছাত্র রাজনীতিকে সাধারণত 'ঐতিহ্যবাহি' বলা হয়ে থাকে; এটা কেনো বলা হয়- সে সম্পর্কে
আমার ধারণা অস্পষ্ট। কারণ  ছাত্র রাজনীতি ছাত্রদের নিয়ে যতটা না ভাবে; তারচে বেশি ভাবে মাদার পলিটক্যাল পার্টির কর্মসূচী নিয়ে!

তবে ছাত্র নেতা হবার জণ্য যে কদর্য রূপ বিভিন্ন  গোষ্ঠীভূক্ত হয়ে ছাত্র সংগঠনের অভ্যন্তরে চর্চা হয়; যে সব নোংরামি দেড় দশকেরো বেশি সময় ধরে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে  দেখে আসছি- এ কথা নিশ্চিতভাবেই বলতে পারি-  নিজেদের জণ্য ছাড়া ছাত্র রাজনীতি ছাত্রদের জণ্য কিছু করতে পারে না বা করে না। তারপরেও তারা নিজেদের ভেতর ঘৃণা চর্চা করে এবং একে অন্যকে আক্রমনও করে থাকে।

দেশের বৃহত দুই ছাত্র সংগঠনের কমিটি গঠনের সময় এলে নোংরামিটা বেশি দৃশ্যমান হয়- ছাত্রদলের একটা কমিটি হবে; তা নিয়ে এ আলাপের সূত্রপাত। এখানে বিবাহিত; লিভটুগেদার; কন্যা সম্প্রদান সহ নানা বিষয় সাথে বয়স নিয়ে আলোচনা হচ্ছে।

এটা হবেই; হতেই পারে। ছাত্রলীগ ও ছাত্রদল প্যাড সর্বস্ব সংগঠন নয়। একদিনেই এর আমুল পরিবর্তনও সম্ভব নয়। ধীরে সুস্থে তা আনতে হবে; সেটি আনা হচ্ছেও। ছাত্রলীগের   লিয়াকত-বাবু কমিটির পরে যে কমিটি করা হয়েছিল; অনেকেই সেটাকে বাচ্চা পুলাপাইনের কমিটি বলেছিলেন; কিন্তু একথা স্বীকার করতে হবে ছাত্র রাজনীতি ধীরে ধীরে ছাত্রদের কাছে যাবার যে প্রক্রিয়া লিয়াকত-বাবু শুরু করেছিলেন সেটি অভিনন্দনযোগ্য।
ছাত্রদলও একই প্রক্রিয়া জারির চেষ্টা করছে। গেলো কমিটিতে তুলনামূলক কম বয়সীরা স্থান পেয়েছেন। কিন্তু কাজের কাজ কিছু কী হযেছে? হয়নি। কেনো হয় একপক্ষ পদ পেলে আরেক পক্ষ গোস্সা করে;  এমনকি বেগম জিয়ার রোড় ফর ডেমেক্রেসির দিনও ছাত্রদলের শীর্ষ নেতাদের  কাউকে  পল্টনেরর ধারে কাছে চোখে পড়েনি- আমি সেখানে নিজে হাজির থেকে এ কথা জানাচ্ছি।

এখন আবার কমিটি হবে- এ সুযোগে নানা কিসিমের লোক ডিজিটাল মিডিয়াকে ব্যবহার করে নোংরা কথা বলছে। নানা জনের নামে কুৎসা রাটাচ্ছে। নারী শরীর ছাত্ররাজনীতিতে বহুকাল আগে থেকে জড়িয়ে আছে। এটা অনৈতিক; এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু যারা এ সব নোংরা কথা লিখছেন নামে বে নামে আবার যারা এর প্রচার করছেন তারা কী এ থেকে মুক্ত!

আমি বরাবরই এর বিরোধি যে, কোনো ছাত্র নেতা বিয়ে করলে তাকে সংগঠনের শীর্ষ বা গুরুত্বপূর্ণ পদ পদবী দেয়া যাবে না; এটা কোনোভাবেই সঙ্গত হতে পারে না। জৈবিক চাহিদা বৈধভাবে উপভোগের সুযোগ না দিলে যে কেউ তা ভিন্নভাবে উপভোগ করবেন; এবং করছেনও। এখানে দলমত নির্বিশেষে সব ছাত্র সংঘঠনের নেতারা এক!

এগুলো আমরা জানি; আরো জানি ছাত্রনেতারা  চাঁদাবাজি করেন,. টেন্ডার ভাগান। কিন্তু সেটি তারা কেনো করেন? সে প্রশ্নের জবাব কেউ খুঁজেছেন। খোঁজেননি। নেতা হতে গেলে তার গাড়ি লাগে; দামি ফোন লাগে; ট্যাব লাগে; এক দঙ্গল পুলাপাইন পালতে হয়- এ সবের টাকা কোত্থেকে আসবে?

এ যে ভিলেন সুলভ ছাত্ররাজনীতির চর্চা যুগের পর যুগ ধরে হয়ে আসছে; সেটা একতদিনেই মুছে ফেলা যাবে না।

 তাই বলে আমি এটাকে সার্পোট করছি না; বলছি এ সব মুছবে-ধীরে ধীরে। কিছুটা সময় লাগবে। সে সময়টা অন্তত দিতে হবে।

ছাত্রদলে কে নেতা হবেন? কে হবেন না সেটি নির্ধারণ করার জন্য আমরা সব সময় গণতান্ত্রিক  প্রক্রিয়ার কথা বলে আসছি।  লাল্টু - হেলাল কমিটির সময কথাটি বেশি বলেছিলাম। এখন দেখছি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া শুরু করলে রক্ত গঙ্গড়া বয়ে যাবে!  তাই রাজনীতি বিজ্ঞানের ছাত্র হয়েও বলতে হচ্ছে- কখনো কখনো অটোক্রেটিক সিস্টেম ভালো!

যারা নিজ দলের পুরনো; বয়োজ্যাষ্ঠ নেতাকর্র্মীদের  নিয়ে সমালোচনা করছেন; তারা  গঠনমুলক কথা নিয়ে আসেন না কেনো। কেনো বলেন না অমুক এত সালে মেট্রিক পাস করেছে; এখন নতুন যুগের ছেলে মেয়েদের সাথে তার সংযোগ অসম্ভব। না; উনি কয়টা নারী সঙ্গ উপওেভাগ করেছেন; কাকে নিয়ে বসবাস করছেন; স্ত্রী নিয়ে রাতে ঘুমাচ্ছেন; সেটি লক্ষ্য! এ রকম বাতিকগ্রস্থ লোকজন কখনো দলের জণ্য ভালো হতে পারে না।