সঙ্ঘবদ্ধ ভ্রমণ চক্র:: আহা কী দারুণ

ধরে নিয়েছিলাম আগে আগে পৌঁছে ঘুমাবো। তারপর সকালে বের হবো ঘুরতে। কিন্তু আমাদের কাডির ভাইয়ের রাস্তার অবস্থা বলে সময় নষ্ট না করে বরং মমতাজের গান হুনি--- বুকটা ফাইট্টা যায়!
তার উপ্রে কামাল ভাইয়ের ডিপারমেন্ট খুবই সফলভাবে যানজট দীর্ঘায়িত করতে সক্ষম--- এ সব দেখতে দেখতে শ্রী মঙ্গল পৌছানোর নির্ধারিত সময়ের চেয়ে ঘণ্টা তিনেকের বেশি হয়ে গেলো।
ফাঁকে উজান ভাটির দোতলায় বসে আছি খাবারের জন্য। গরুর গোশত, মাসকলাইয়ের ডাল সাথে একটা সবজি দিয়ে রাতের আহার শেষান্তে আমরা আমরা রমেশ কাগুর শ্যামলী পরিবহনে চেপে বসলাম--- ড্রাইভার খুবই ভদ্রোচিতভাবেই গাড়ি চালিয়েছেন---তার জন্য ধণ্যবাদ দেবার চে আমাদের দেরী হয়ে যাওয়া নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছিলাম।
রাত দু'টার কিছু পরে সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টায় ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা বাসটা থামলো--- মৌলভীবাজার রোড়ে। একটা সিএনজির দেখা মিলল--- ভাড়া ৫ শটাকা। দিবসে এর ভাড়া ১২৫ টাকা। কিন্তু জঙ্গলের ভিত্রে দিয়ে নিরাপত্তা সঙ্কটের কারণে রিস্ক লইয়া যাইতে হপে বলে ভাড়া বেশি দিতে হবে; এক কথায় কবুল।
ঠান্ডা বাতাস বইছে, চা বাগানের ভেতর দিয়ে সিএনজি ছুটছে; লাউয়াছড়ার সীমানায় মেছো বাঘ, দু চারটা বানর দেখতে দেখতে পৌছে গেলাম হিডের বাঙলোয়। রাত তখন তিনটা ২০ ।
উত্তম দা লোক বসিয়ে রেখেছেন; সিএনজি থামার আগেই টর্চ লাইটের আলো এসে পড়লো--- আমরা নেমে, সোজা গেলাম ঘুমুতে। বাঙলোর আগের মত থেকেছে ঠিকই তবে এখন এসি লেগেছে।
ঠাণ্ডায় জমে যাবার জোগাড়; তাই এসি বন্ধ করে লেপ জড়িয়ে ঘুমুতে গেলাম। সকাল বেলা এসে পৌছানোর কথা--- বৃষ্টি এসে ভিজিয়ে যাচ্ছে মে মাসের প্রথম দিনের সকাল।
রীতি সাড়ে ১০ টার মধ্যে দুখান ছাতা হাতে পৌছালো বাঙলোয়। বাইরে বারান্দায় বসে সিদ্ধ রুটি, আলু ভাজি আর ডিম পোস দিয়ে সকালের নাশতা করতে করতে পিঙ্ক কলারে পুরনো আমলের একখানা জিপ এসে হাজির।
শিপু জানালো এ ধরণের জিপ কাগু এরশাদরে সময় দেশে আনা হয়েছিল। আমরা সাকুল্যে ৮ জন। তার মধ্যে আমার দুই পুত্র আছে। তারা সাধারণত শান্ত থাকার বিষয়টা মাথায় রাখতে পারে না।
ঝুম বৃষ্টি নেমে এলেও আমাদের পিঙ্ক কালারের জিপ গাড়িটা ছুটে চলে ভানু গাছ থেকে কমলগঞ্জের ন্যাশনাল টি গার্ডেনের দিকে। বছর ৭-৮ আগে আমরা (লিনা এবং আমি) যখন সেখানে যেতাম--- পুরই সুনসান নীরবতা ছিল। রাস্ত ছিল কাদামাখামাখি।
এখন সায়েবি সুবিধা নিশ্চিত করা হয়েছে। বিটুমিনের ছোঁয়া পেয়েছে ব্রিটিশ আমলে গজানো চায়ের বাগান। এর মধ্যে আমাদের গাইড হবার আগ্রহ নিয়ে এগিয়ে আসলো শঙ্কর।
ঠিক আছে চলো---
এগিয়ে যেতে যেতে শঙ্কর একটা পাতা বের করে আনলো--- থাই সুপের সাথে আমারা এ ঘাসের সাক্ষাৎ পাই। সেটা রীতির হাতে দিয়ে আমরা হাঁটছি।
এক পশলা বৃষ্টি হয়ে গেলো। তারপর কড়কড়ে রোদ্দুর। শাপলপাতা বিছিয়ে থাকা মাধবপুর লেকের উপ্রে নীল রঙের শাপলা ফুল। দৃশ্যটা অসাধারণ। সবুজের আল পথে, টিলার উপর চা বাগানের ফাঁকে দাঁড়িয়ে থেকে আমরা লেকের রূপ সৌন্দর্য উপভোগ করতে করতে ছবি তোলার কাজটাও সেরে নিচ্ছিলাম।
ইশতিয়াক আর শিপুর হাতেই ছবি তোলার দায়িত্ব অর্পন করে আমরা পোস দিয়ে যাচ্ছি।
ঘন্টা দুয়েকের ভ্রমণের ফাঁকে সবাই একবার করে বলে নিলো লেকটা আসলেই সুন্দর।
বড়শি পেতে বসে থাকা কিশোরের গা ঘেঁষে লেক এলাকা ছেড়ে আসার পর ন্যাশনাল টি গার্ডেনের নিজস্ব চা পাতায় বানানো গাঢ় লিকারের চা খেয়ে ফিরছি।
অবশ্য চায়ে মন নেই রিংকির। ঠাণ্ডা কিছুর জন্য অপেক্ষা করছে লিনাও। ইশতিয়াক বরাফাচ্ছাদিত এক বোটল পানি নিয়ে আসলো!
দুপুরের খাবারের পর পিঙ্ক কালারের গাড়িতে বসার জন্য অস্থির নাকিবের ডাকে সাড়া দিয়ে আমরা ছুটলাম লাউয়াছড়া রেইন ফরেস্ট। টিকিট কাটার পর হাঁটা--- রেললাইনে এসেই ইশতিয়াক স্ত্রীর ছব্বি খিঁচা শুরু করলো। আমাদের ছবিব খিঁচার দায়িত্বটা শিপুর হাতেই ছিল।
বিকালের পড়ন্ত সূর্য়ের আলোয় লাউয়াছড়া রেইন ফরেস্ট এক কথায় অসাধারণ। রেল লাইন ধরে হাঁটা আর ছবি তোলার ফাঁকে একটা ট্রেন ছুটে এলা--- হিশ ঞিশ শব্দ তুলে বনের ভেতর ছুটে চলা ট্রেনের দৃশ্যটা বিজ্ঞাপন চিত্রে দেখাও হলেও এবারই প্রথম আমরা সবাই এক সাতৈ তা দেখলাম।
সন্ধ্যার একটু আগে আমরা চলে এলাম টি রিসার্চ ইন্সটিটিউটের কাছের টি গার্ডেনে।
সেখানে এসে আবিষ্কার হলো জোঁক চুষে নিয়েছে শিপুর রক্ত। এর ফাঁকেও আমরা ছবি তুলে, চা বাগানে খানিক সময় কাটিয়ে ছড়ার ছুটন্ত পানির শন শন আওয়াজ কানে তুলে শ্রীমঙ্গল শহরের আসলাম।
উদ্দেশ্য বৈকালিক নাশতা!
পাশে 'শশুর বাড়ি' নামীয় যে রেস্টুরেন্ট যাত্রা করেছে--- সেটা জানতাম। এর দ্বিতল ভবনের নিচে ফরেনারের সাথে দেখা। তারা নিচে বসলেন আমরা ছেলেপুলে নিয়ে দোতলায় উঠলাম--- লাচ্ছিটা দারুন, অন্থনও ছিল। দই দুটো নাজিব নাকিবের জন্য আনা হলেও একটা নষ্ট করে রেখে দিয়েছে ওরা।
সন্ধ্যার কিছু সময় পর আমরা ফের বাঙলো। একটু রেস্ট; একটু আড্ডা রাতের খাবার--- তারপর আবার ঘুমুতে যাওয়া। রাতে বৃষ্টি নেমেছিল। ভোরে ঘূম ভাঙার পর সে বৃষ্টি উপভোগের গল্প শুনলাম রিংকির কাছে।
পরিকল্পনা অনুযায়ী পরের দিন মাধবকুণ্ড যাবার কথা। সেটা রদ করে আমরা সিলেটই ফিরতে চাইলাম। লক্ষ্য রাতার গুল।
ঘুমের পর সকালে নাশতার আয়োজন। সেই রুটি , ডাল আর ডিম ভাজি। চা সেরে নিয়ে আমরা গুছিয়ে বেরুতে চাইলাম। সিএনজি ভাড়া করা হলো। যথারীতি আমরা শ্রীমঙ্গল শহরে।
হবিগঞ্জ সিলেট এক্সপ্রেস আমাদের বয়ে নিচ্ছে-- বিরতিহীন এ সার্ভিসে আমরা সিলেট শহরে এসে দাঁড়ানোর পর হেরিটেজ হোটেল আমাদের গন্তব্য!
তার আগে পানসি রেস্টুরেন্টে দুপুরের খাবার--- যদিও তখণ চার টা পার হয়ে গেছে। তাতে কি লাঞ্চ তো লাঞ্চই! চিংড়ির কারি, মুরগির রোস্ট , মাছ, ভাজি ভর্তার সমাহারে খাবার শেষে হোটেলে ফিরে ফ্রেশ হবার পর আমরা সন্ধ্যার দিকে গেলাম সার্কিট হাউসে।
রীতির সিলেটি বন্ধূদের সাথে আড্ডা হলো ঘণ্টা দুয়েক। এর মধ্যে নাকিবের রেড কালারের আমব্রেলা লাগবে--- যাবার পথে রীতি টুক করে নেমে সেটিও কিনে হাতে তুলে দিলো।
পানসি--- সেই রক্কম ভিড়। সেই ভিড় ঠেলে রাতের খাবারের সাথে সাথে হাছন রাজার যাদুঘরের দ্যাখা মিলল--- বাইরে থেকে। রাতের হোটেল ফিরে লম্বা ঘুম।
সকালে কালো মাইক্রোবাসে আমরা চড়ে বসলাম--- গন্তব্য বিছানাকান্দি। গোয়াইনঘাট--- হাদার পাড় হয়ে নৗকায় চেপে বসলাম। পানি আর নাজিব দুটোরই বন্ধুত্ব পুরনো।
নাজিব বিছানাকান্দির পথে ভিজে নেয়ে একাকার। পাহাড়ের ছায়ায় নদীর জলে পাথরের সাথে জমছে আমাদের ভ্রমণ যাত্রা।
বিছানাকন্দি পৌছে নাজিবকে একবার নামানোর পর তুলে আনাটা ছিল চ্যালেঞ্জ। ঘণ্টাখানেক ভেজার পর আমরা উঠতে চাইলাম। পাহাড়ের ওপর থেকে নেমে আসা ঠাণ্ডা জলের ধারা মিশে যাচ্ছে নদীর জলে। জলের তলে জমে থাকা পাথর তুলে নিচ্ছে ব্যবসায়ীরা। সৌন্দর্য হানি হচ্ছে --- এ নিয়ে হা পিত্যেশও করলাম।
এখানে সরকার বাহাদুরের নজর পড়লে ভালো আয় ইনকাম করাও সহজ হতো্ বলে মত দিলাম।
কিন্তু এটা তো সত্যি এ রকম একটা ছোটখাটো বিছানাকান্দি নিয়া ভাবনার মত সময় সরকারের নেই। তবে বেসরকারি উদ্যোক্তারা ভাবতে পারে। ট্যাকা থাকলে নিজেই ভাবতাম!
ফিরছি--- ফিরে যেতে হয় বলে।
সন্ধ্যায় হোটেলে এসে হতে- পা ছড়িয়ে একটু বিশ্রাম নেবার পর রাত্রিকালীন দাওয়াতে আমরা।
রীতিদের বাসায় রাতের খাবারের নেমতন্ন। সাতকড়ায় পাকানো গরুর গোশত, ছোট মাছের বড়া, গোশতের কোপ্তা, মুরগির রোস্ট, মাছ ভাজি, বড়ইর আচার--- মতিচুরের লাড্ডু, মিষ্টি --- খাদ্য গ্রহণ শেষ করে উঠে দাঁড়ানো কষ্টকর হলেও উঠতে হলো।
বাস সাড়ে ১১ টা। কিন ব্রিজের উপর দিয়ে আমরা সিএনজি করে চলে এলাম শ্যামলী বাসের কাউন্টারে। ---- ছুটলো বাস উল্কার বেগে। এটাই যেন নিয়ম--- জীবন নিয়ে জুয়া।
আনন্দঘন সময়গুলো দ্রুত ফুরিয়ে যেতে থাকে--- স্মৃতির পাতায় জমতে থাকে প্রতিটি ভ্রমণ আর বয়স ড়তে থাকে। আমরা বুড়িয়ে যেতে থাকি! কী দারুন আহা কী দারুণ । আহা কী দারুণ জীবন!

নির্বাচন করে রাষ্ট্রীয় অর্থ অপচয়ের কোনো মানে হয় না

ভাই সব
আম্লীগ অত্যন্ত গণতন্ত্র-বান্ধব দল। আপনাদের ভোটের অধিকার আদায়ের জন্যতারা এতগুলোর বছর ব্যয় করেছে--- নিশ্চয় আপনাদের সেটা মনে রাখতে হবে। 
ভাই সব ---দেশের উন্নয়ন -নেতৃত্ব দেবার জন্য আমরা তাদের বেছে নিয়েছি।
তাই তাদের দলের পেশি শক্তির ব্যবহার; ক্ষমতার অপপ্রয়োগ সহ যে সব কথা-লেখা তাদের বিরুদ্ধে যায়---এমন আলোকপাত গণতন্ত্র, দেশের স্থিতি -উন্নয়ন বিরোধী । মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিনাশী।

তাই আসেন---নিজের চরকায় তেল দিই।

তারপরেও সরকার যেহেতু এখনো নাগরিকত্ব রেখেছে---তার দাবি নিয়ে বলছি---এ সব ফালতু নির্বাচন করে রাষ্ট্রীয় অর্থ অপচয়ের কোনো মানে হয় না।

যে যেখানে থাকুন নিরাপদে থাকুন। স্রষ্টার দরবারে দুর্বলের এ আকুতি থাকলো।

আম্লীগের রাজনীতির কাছে তুমরা দুগ্ধপোষ্য অপুষ্ট শিশু



কিছু আবুল আছে ঢোলের দুই পিঠে পিটায়। আহা তুমার এত মাথা ব্যথা ক্যান। বিম্পি ৫ জানুয়ারীর নিব্বাচনে যায় নাই--- এটা চ্রম ভুল ছিল।  কানে কানে তুমরাই তো কইছো।  বিশ্বাসও করছো--- ইসি কি বাল ছিঁড়তো--- নির্বাচনে গেলে ক্ষমতায় যেতো বিম্পি।  এ সব তো তোমগো ইন্টারনাল বয়ান।
আম্লীগের রাজনীতির কাছে যে তুমরা দুগ্ধপোষ্য অপুষ্ট শিশু সেইটা বোঝনের ক্ষমতা তোমাগো নাই। একবার ক্ষমতার স্বাদ পাইছিলা--- তাই ভাবছ ক্ষমতা কী মোহনীয়--- ! খালি উপভোগ করবা। ত্যাগ করতে শিখো। ত্যাগ ছাড়া আম্লীগও এত দূর আসতে পারতো না। বহু বছর ক্ষমতার বাইরে ছিল দলটি। সেইটাও ভাবো---

নগর নির্বাচনে বিম্পিকে তাড়িয়ে নেবার জন্য একজন রাষ্ট্রবিজ্ঞানীকে দোষ দ্যায় কেউ। কেউ ডিহবাহির চরম পরম আলোচিত নেতার সমালোচনা করে। বলে সরকারের বাইরে থেকেও লোকটা সরকারেই আছে।  আরেকজন বিম্পি অফিসে বসে আম্লীগের কাজ কর্ম করে বলে অভিযোগ।

আরে ভাই তোমরা কই আছিলা। তারা এ সব জায়গায় যদি যাইতে পারে--- তুমি পারো নাই ক্যান।

আম্লীগের টোপটা বোঝ নাই ক্যান। ঢাকা ও চট্টগ্রামের বাইরের সিটি নির্বাচনের  ফল তোমাগো পক্ষে না দিলেও তারা পারত। কেন দিয়েছে--- দিয়েছে বড় ফলটা তারা খাবে। সংসদ নির্বাচনটা নিজেদের অধীনে দেয়াটা জায়েজ করবার জন্য। অকাট্য প্রমাণ তখন সবার সামনে-- তাজা।
এ সব বোঝার মত তোমাদের মাথায় মালের অভাব। তাই তোমরা ফাঁদে পা দিছো।

খরবদার জণগণকে জিম্মি কইরা আর রাজনীতির  নোংরা খেলা খেলবা না। তোমরা আগে নিজেরা ঠিক হও; রাজনীাত বোঝো; দলের ভিত্রের দালাল মুক্ত করো--- আদর্শের জন্য রাজনীতি করো--- তারপর আলাপে আইসো।

 যারা আমার এ  আওয়াজে কষ্ট পাইছেন--- তারা আমারে ত্যাগ করেন। মনে রাখা ভালো--- আমি কারো সাতেও নাই পাঁচেও নাই। শান্তি চাই। তোমরা তোমাদের  রাজনৈতিক দুরদর্শিতার অভাবে--- কৌ্শল নির্ধারণে ব্যর্থ হয়ে জণগণকে জিম্মি করবা--- তা হবে না।  তা তুমি বাবা আম্লীগ হও; বিম্পি হও, জমাত -জাতীয়পার্টি--- বাম রাম যাই--- হও!

শান্তি চাই।

আমি রকিব হবো না--- মইন--ফখর হবো না

জানি প্রিয়তমা
বন্দুকের নলের সামনে টিকে থাকা মুশকিল
চেষ্টা করতে দোষ কি বলো
মৃত্যু হবেই ; তাই বলে মওদুদের মত বাঁচবো!
সব সময় সরকারি দলে থাকা তো সম্ভব না

এ ভাবে আর কত লেয়াঁজো করে চলবো--- খোকার মত।
কতবার আমি নিজের ঘাটের টাকা খরচ করে গ্রেপ্তার হয়ে
আন্দোলন থেকে দূরে থাকবো বলো!

তার চেয়ে এই ভালো-- সব মেনে নিয়ে
আমি এমাজ--রিজভী--আইভি-- জুনায়েদ সাকী হবো

অমি কখনো অস্বীকার করবো না আমার অপরাধ
কখনোই আমি মুজাহিদ হবো না। নিজামীর মত বলবো না সব মিডিয়ার সৃষ্টি


জানি প্রিয়তমা
আনিসুলের মত আমার ভাই নেই
তার সম্মোহনী ক্ষমতা আমাকে রাতারাতি নির্বাচনি টিকিট এনে দেবে!

মাহির মত আমার পেছনে--- প্রেসিডেন্ট বাবা নেই।
রাজনৈতিক পরিবার নাই।
তাবিথের মত আমার বিত্তবান পিতা নাই---
নাই আমার মেয়র হবার বাসনা


তবে আমি সাঈদ খোকনের মত সততা নিয়ে চলতে চাই
মির্জা আব্বাসের মত স্ত্রীকেও বের করে আনতে চাই চার দেয়ালের বাইরে


হাল ছেডেনো
পোষা কুকুর হতে পারিনি বলে আমি হেরে যাবো ।
হতে পারে না; মানুষ কখনো হারে না

নির্বাচন কমিশনের দুয়ারে যাবো না
আমি রকিব হবো না---  মইন--ফখর হবো না

 মাসুদ হবো না--- রেস্টুরেন্ট খুলবো না কখনোই

মানুষ হতে এসেছি। মানুষ হবার চেষ্টা করে যাচ্ছি---
মানুষের মনের কথা শুনতে এসেছি--- মানুষের কথা শুনে মিলিয়ে যাবো

জানি বন্দুকের নলের অনেক শক্তি--- তারচে বেশি শক্তি প্রকৃতির।
খেয়াল দেখো--- ধবসে গেছে দরবার হল
টিকে আছে মানবতা--- এ মানবতা জাগ্রত করতে কোনো পয়সা খরচ হয়নি।
উঁচু করতে হয়নি বন্দুক!

জয় হোক মানুষের। জয় হোক মানবতার। জয় হোক বোধ-চিন্তা-মানবিকতার!

যৌন হয়রানির জন্য সরকার ঠেইলা ফালায়া দিবেন !

আরে ভাই আপনারা কি যৌন হয়রানির জন্য সরকার ঠেইলা ফালায়া দিবেন নাকি।   অফ যান; নইলে ---যৌন হয়রানি এ ক্যাম্পাসে নতুন না।

তবে এবারের দলিলটা  শক্ত---ছাত্র ইউনিয়নের লিটন নন্দী ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী। প্রভাবশালী পত্রিকায় খবর হয়েছে---তাই এ সবার কাছে বিশ্বাসযোগ্য মনে হয়েছে-- ঘটনা আমলে নিয়েছে পুলিশ ।

২০১০ সালে রাজু স্মৃতি ভাস্কর্যের সামনে কুড়ি জনের মত নারী চরমভাবে লাঞ্ছিত ও আরো অনেকে যৌন হয়রানির  ঘটনার পর খবরটি একামাত্র দৈনিক নয়া দিগন্ত---প্রকাশ করেছিল। সম্ভবত বিপরীত মতের পত্রিকার খবরটির উদ্দেশ্য ধরে নেয়া হয়েছিল---' নারীরা যাতে বৈশাখের উৎসবে না বের হন; তার একটা চক্রান্ত।' হিসাবে।

এবার সোস্যাল মিডিয়া, ছাত্র সংগঠনের অংশগ্রহণ এবং প্রভাবশালী মিডিয়ার নজরে আসায় বিচারের দাবিতে সোচ্চার--- আমরা সবাই । সাধারণত এ সব ঘটনা  এড়িয়ে  যেতে এবং নারীদের ওপর দোষ চাপিয়ে বিকৃত আনন্দ পেতে পছন্দ বেশির ভাগ লোকের!  তবে এবারের এ প্রতিবাদমুখরতা--- কোনো অর্থেই কম প্রাপ্তি নয়।

তবে ২০০০, ২০১০ সালের ঘটনাকে আমলে নিলে এবারের বিপর্যয় এড়ানো যেতো বলে  মনে করি।

 যে কোনো ঘটনার পর পরই তা নিয়ে তদন্ত হওয়া উচিৎ। যদি সে খবর ভিত্তিহীন হয় তাহলে সেই গণমাধ্যমকে  অভিযুক্ত করে শাস্তিও দেয়া যেতে পারে।

 কিন্তু খবর এড়িয়ে যেতে যেতে একব সময় যখন  নিজের ঘাঁড়ে এসে পড়ে তদ্দিনে ক্যান্সার আর নিয়ন্ত্রণে থাকে না।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বহিরাগত তরুণরা ডেট করে নামে যে যৌনতায় জড়িয়ে ক্যাম্পাসে সুনাম হানি করছিল--- ছাত্রীরা বিব্রত হচ্ছিল--- তারা এ নিয়ে হল প্রভোস্টদের কাছে অভিযোগ করার পর একাডেমিক কমিটি ও সিন্ডিকেট বৈঠকে আলোচনার পর একটা সিদ্ধান্তে আসে--- ক্যাম্পাসে বহিরাগত যুগলদের দেখা গেলে তুলে দেয়া হবে। এর একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিও দেয় কর্তৃপক্ষ--- সেটি  সে সময়  মানব জমিন রিপোর্ট করে। এর কাউন্টারে বিবিবি বাংলা রিপোর্ট করেছিল--- একজন ছাত্রীর মুখ দিয়ে বলিয়েছিল--- এটা মাদ্রসা না।

আসলে তো তাই এটা মাদ্রাসা না। আবার এটাও তো ঠিক এটা বহিরাগতদের  ডেটিং স্পট না। ক্যাম্পাস  তার নিজস্ব জনগোষ্ঠীর জন্য। বহিরাগতরা এখানে কেনো আড্ডা জমাবেন--- এমন আড্ডা  যা তার পরিবারও পছন্দ করছে না।

ভালো কথা--- কিন্তু স্বেচ্ছা যৌন সুখ  এবং জবর দস্তিমূলক হয়রানির মধ্যে আকাশ পাতাল তফাৎ রয়েছে--- সেটি আমরা জানি।

তাহলে আমরা কি এ যৌন হয়রানির বিরুদ্ধে কঠোর অ্যাকশনের শুরুটা ২০০০ সালের শতাব্দী বরণ উৎসবে বাঁধনের কাপড় খুলে নেবার পর করতে পারতাম না। পারতাম--- আমরা করিনি। কারণ  আমরা ধরে নিয়েছি--- একটা মেয়ে রাত ১২ টার পরে টিএসসিতে আসবে কেনো--- তাই এ পরিণতি গ্রহণযোগ্য।

তার উপর এর অভিযোগের তীর ছিল সরকার দলীয় ছাত্র সংঘটনের বিরুদ্ধে। সে সময়কার পত্রিকার খবর অনুযায়ী  এটি আমাদের বিজ্ঞানের ছাত্ররা থাকেন-- সে সব হলের ছাত্রদের কাণ্ড!

২০০০ সালের সেই রাতের প্রত্যক্ষদর্শী  আমরা কয়েক বন্ধু। আমার এখনো মনে আছে নিউ ইয়ারের এ সব আয়োজনে নারী দেখলে শুকুনের মত কিভাবে  'প্রগতিশীল' পুরুষেরা হামলে পড়ে---আমরা বন্ধুরা মিলে রোকেয়া হলের এক ছাত্রীকে উদ্ধার করতে গিয়ে সেটা টের পেয়েছিলাম।

রাত সাড়ে আটটার দিকে রিকশায় করে এক ছাত্রী ক্যাম্পাসে ফিরছিলো--- উৎসব উচ্ছ্বাস সবে জমতে শুরু করেছে। মেয়েটির পেছনে ছুটছে অনেকে। রিকশার উপর দাঁড়িয়ে মেয়েটি সাহসের সাথে বলল-- 'কেউ গায়ে হাত দিবি না। আমি এ ক্যঅম্পাসের মেয়ে। আমি  রোকেয়া হলে থাকি।' ততক্ষণে তার ওড়না উড়ে গেছে।
 তার পরেও কে কার কথা শোনে--- আমরা চেলা কাঠ নিয়ে রিকশা আটকানো যুবকদের পিটাচ্ছিলাম। আমাদের সাথে আরো কয়েকজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী যোগ দিয়েছিলেন-- বলে সেই ছাত্রীর রক্ষা।

এরপর আজাদ চৌধূরী স্যার বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সব ধরণের নারীর  ইংরেজি বর্ষবরণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলেন।  সে রেওয়াজ এখনো আছে। নারীরা রাতে ক্যাম্পাসে বের হতে পারে না। অথচ এর বছর দুয়েকের মাথায় বিশ্ববিদ্যালয় উইমেন স্টাডিজ ডিাপর্টমেসন্ট খুললো--- নারী নিয়ে পড়ার জন্য।


 জেন্ডার নামে একটা কোর্স সোস্যাল সায়েন্স ফ্যাকালটির সবগুলো ডিপার্টমেন্টে পড়ায়--- তারপরেও এ হাল!

২০০২ সাল থেকে ক্যাম্পাসের বাইরের কেউ  ইংরেজি নববর্ষে ঢুকতে পারে না।

২০০১ সালের নারী মুক্ত থাকা ক্যাম্পাসে থার্টি ফাস্টে আমরা আড্ডা দিচ্ছি। অনেক বন্ধু মিলে। সোহরাওয়ার্দীউদ্যানের গেটে হঠাৎ মোটর বাইকে এক তরুণের দেখা মিলল--- তার লম্বা চুল- জুটি। শীত কাল মুখ ঢাকা । ছেলেরা মনে করলো---  মেয়ে। টেনে নামানো হলো। ছেলেটা চিক্কুর মেরে কইলো ভাই আমি ছেলে!

বিশ্বাস হচ্ছিলোনা বলে তার সুয়াটার টেনে খোলা হলো--- পুলিশ হাসছিল এখনো মনে আছে।

২০০২ সালে  ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে  ব্যাপক পুলিশ--- তখন আমি ক্যাম্পাস রিপোর্টার।  স্বোপার্জিত স্বাধীনতা চত্বরের সামনে বসে আড্ডা দিচ্ছি।

রাত বারেটার দিকে জনা বিশেক নারী এসে দাঁড়ালেন স্বোপার্জিত স্বাধীনতা চত্বরের উল্টো দিকে-- টিএসসির সামনে।

 হুড় মুড় করে ছেলেরা ছুটে আসলো--- ছেলে পুলিশ তাদের আগলে ধরে জানালো এরাও পুলিশ--- মহিলা পুলিশ। সিভিল ড্রেসে বলে চিন্তে অসুবিধা হচ্ছিলো।

মহিলা পুলশেরা পরে এসেছিল ট্র্যাকশূট।  আমরা হেসে গড়াগড়ি--- পরে মানবজমিনে এর একটা নাতিদীর্ঘ রচনা লিখেছিলাম।

দেখুন--- ২০০০ সালে নির্মম ঘটনা এবং পরের বছর সরকার বদল হবার পরেও নারীর প্রতি কোনো রকমের হয়রানির আগ্রহ কমেনি।

 পরের বছরগুলোতে আর এমন ঘটনা দেখিনি--- পয়লা বৈশাখ উৎসবটা সব সময় নারীদের ঘিরের ধরে কিছু তরুণ--- তবে বৈশাখি কনসার্টগুলোতে যৌন হয়রানির কিছু ঘটনা পরবর্তী বছরগুলোতেও ছিল; তবে সেটা সংখ্যায় কম।

২০১০ সালে এটা বড় আকারে হবার পর  বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা এর প্রতিরোধ করেছিলন--- তাই এটা কেউ  আমলে নেয়নি। না পলিটিক্যাল পার্টি; না বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন--- না সরকার-- মিডিয়া!

 আমরা সাধারণত শক্তির পুজা করি--- ভালো কাজ বড় কাজ বড়রা করবে ধরে নিই। তাই এবার অন্তত সবাই নড়ে উঠেছেন--- এটাই শান্তি।

রাষ্ট্রবিজ্ঞানে পড়েছিলাম-- ক্ষমতা, ক্ষমতার কাছাকাছি এবং ক্ষমতাবানদের কাছাকাছি থাকতে সবাই পছন্দ করে। এটা চরম সত্য!

আপনারা যারা মাঠে-- ফেসবুকে--- ঘরে বসে---- এর প্রতিবাদ করছেন--- সবার প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই বলছি---

সাময়িক উত্তেজিত না হয়ে--- ঘটনার বিচারে সরকারকে যদি বাধ্য করতে পারেন তাহলেই সামনে এ ধরণের ঘটনা  কমবে। যারা এ সব করে তারা  সুস্থ্য হবার সুযোগ পাবে।

যৌন হয়রানির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলুন--- ঢাবি ক্যাম্পাস তুলে কথা শুনতে চাই না

বিস্ময়ের সাথে দেখছি- কিছু লোক সুযোগ বুঝে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে আক্রমণ করছে--- তাদের আসলে হিংসা-কষ্ট-না পাওয়ার বেদনার প্রকাশ বলে আমি এটাকে ক্ষমা করতে চাই।
এ ক্যাম্পাসে যৌন হয়রানি নতুন কোনো ঘটনা নয়; এ বিশ্ববিদ্যালয় সমাজের বিচ্ছিন্ন কোনো  কিছু নয়। সমাজের ক্রমহ্রাসমান ক্ষয়িষ্ণু সঙ্কট এখানে এসেও লাগে- এতে আমি কারো দ্বিমত আছে বলে মনে করি না।

পরিবার-অভিভাবক- সমাজ-সরকার, প্রশাসন এবং বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালকদের দায়িত্ব  সমাজের অনাচর বইবার ক্ষমতা কমিয়ে আনার মত নৈতিক শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলা।

 এমসিসিআইয়ের ১১০ বছর পূর্তি উপলক্ষে  ঢাকায় এসেছিলেন ভারতীয় সাবেক প্রেসিডেন্ট আবদুল কালাম। তার বক্তৃতায় শুনেছিলাম আগামীর বিশ্বের সামনে নৈতিক শিক্ষা একটা বড় চ্যালঞ্জে। আমি নিজেও তা মনে করি।

যারা না বুঝে, সাময়িক উত্তেজনার কবলে পড়ে পুরো বিশ্ববিদ্যালয় তলে কথা বলছেন- - - তাদের বলছি এবার অফ যান। অনেক হয়েছে। যৌন হয়রানির বিচারে সরকারকে বাধ্য করেন--- সেটা না করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এ সব হয়, চিপায়, কানায় কোনায় এ সব আগেও ছিল বলে; যারা বৈশাখি উৎসবে  নারীদের  শরীর খামছে ধরাকে জায়েজ করার চেষ্টা করছেন--- তাদের মানসিকতা কোনোভাবে সুস্থ্য এ কথা আমি বিশ্বাস করতে পারছি না।

 বিশ্বাস করেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কেনো আজ এ অবস্থা--- সেটিও আপনাদের রিয়ালাইজ করতে হবে। আপনাদের রাজনীতি, ক্ষমতার নোংরা বাসনা আর দাপুটে জীবনের জন্য আপনার অল্প দামে এখানে নিয়ে এসেছেন অস্ত্র, মাদক আর  বহু ভাষা বৈচিত্রের ভেতর বেড়ে ওঠা মানব সন্তানদের ভেতর জাগিয়ে তুলছেন আদিমতা পশুত্ব।

হিন্দি সিনামা, ইংরেজি নীল সিনোমা, রসময়গুপ্ত সিরিজ, কিম্বা সবিতাভাবি কমিক  সিরিজ দিয়ে তাদের উস্কাচ্ছেন। গুলিস্তান থেকে নীলক্ষেত , ফার্মগেট থেকে টঙ্গী, গাবতলী থেকে সায়েদাবাদ সবখানে এর প্রকাশ্য পসরা।

সামনে বলছেন--- অপরাধ। পেছনে বলছেন-- গেলো কেন। কোন ফ্যামিলি মেয়ে রে বাবা।  আপনারা মুখোশের আড়ালে পশুত্ব লালন করেন।  আপনারা সুবিধা মত সব কিছু পেতে চান--- জানবেন অনেক ত্যাগ আর জীবনের বিনিময়ে বিশ্বজুড়ে মানবিকতার আহবান।

 অনেক সম্ভ্রমের বিনিময়ে এই বাংলাদেশ।  এ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা  এই বাংলাভাষার প্রতিষ্ঠার জন্য একটা বিশ্ববিদ্যালয় একাই লড়াই করেছে--- সেটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

 আফসোস রাজনৈতিক গৃহপালিত  পশুত্বের কারণে আজ আমার প্রিয় ক্যাম্পাস আক্রান্ত।

  যে যেই দলই করুন না কেনো--- যে আদর্শই হোক না কেন--- নারীর প্রতি সহিংসতা রোধ করা আপনার আমার সবারই কাজ।

 তাই নারীকে অসম্মান করে আবার আস্ফালন করা জঘন্য। আর এটাকে উপলক্ষ্য করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে আক্রমণের স্পর্ধা যারা দেখান --- তারা নিজের সাথেই প্রতারণা করেন।

 আমি আমরা সবাই জানি--- এ সমাজ রাষ্ট্র জানে--- পঁচন সমাজের সব স্তরেই ছিল। এখন বেড়েছে। সামনে হয়ত আবার বাড়বে। সে পঁচন রোধেরও তরিকা আসবে--- সেটিও এ ক্যাম্পাস থেকে।

 আসেন আমরা অপরাধীদের শনাক্ত  করে শাস্তির আওয়াজ তুলি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসকে ঘিরে যারা নোংরা কথা বলছেন--- ধরে নিলাম তারা আসলে অবুঝ---উত্তেজিত। তাই ক্ষমা করি এবং নারীর সম্ভ্রম রক্ষা ও নৈতিক শিক্ষায় আপনার সন্তানকে ছোট বেলা থেকে শেকান--- তাহলে সামনে আর এ রকম  নোংরামি দেখতে হবে।

 হোন আপনি বিম্পি, আম্লীগ, জমাত, জাতীয় পার্টি, বাম-রাম-মুসলিম-হিন্দু-খ্রিস্টান-বৌদ্ধ। সব কিছু চাপিয়ে আপনি-আমি যৌক্তিক মানুষ হই। সে প্রার্থনা।

যৌন হয়রানির ক্যাম্পাসটি আমার!

এ আমার ক্যাম্পাস! তব্দ হয়ে গেলাম। নিঃস্ব হয়ে গেলাম। এ ক্যাম্পাসে নোংরা মনোবৃত্তির লোকরা আসে; নির্বিঘ্নে কুকর্ম করে সরে যায়। কখনোই তারা বিচারের আওতায় আসে না।
এর দোষ--- ওর দোষ করে শেষ পর্যন্ত শুয়রের বাচ্চাগুলোর চেহারা সিনহা বাবুর এজলাসে ওঠে না। আফসোস আরেফিস স্যার- - এখন এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি।
এ আমার বিশ্ববিদ্যালয়- এ আমার অহঙ্কারের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়!
আরেফিন স্যারের আমলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দু’টো নোংরা ঘটনা বিশালাকারে হয়েছে। ২০১০ রাজু স্মৃতি ভাস্কর্যের সামনে লাঞ্ছিত হয়েছিলেন কুড়িজন নারী। ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে এর অভিযোগও উঠেছিল- কিন্তু আরেফিন স্যার এখানেও ব্যর্থ। ক্ষমতা আঁকড়ে থাকতে এক সময়কার নৈতিকভাবে স্ট্রং শিক্ষককে দেখলাম--- কেমন যেনো মিইয়ে যাচ্ছেন।লুটিয়ে পড়ছেন ক্ষমতার পদতলে। ক্ষমতা তুমি এত মোহনীয় কেনো!
চূড়ান্তভাবে ব্যর্থ আরেফিন স্যার যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে কাণ্ডারি; তখন ২০১৫ সালের বৈশাখেও সেই একই কলঙ্ক। সেই একই স্থানে ঘটলো- নারীর প্রতি সহিংসতা। ঠেকাতে গিয়ে আহত ছাত্রইউনিয়ন নেতা লিটন। কুড়ি জন নারী আবারো লাঞ্ছিত হলে পশুত্বের আদিমতার নোংরা উল্লাসের কাছে।
অথচ ক্যাম্পাসে রেকর্ড পরিমান নারীর প্রতি সহিংসতার পরেও প্রগতিশীলতার দাবিদার কিছু শিক্ষক আরেফিন স্যারের রেফারেন্স লাগিয়ে সিভি বানিয়ে নারীর প্রতি সহিংসতার মন্ত্র বেচেন, এখানে ও খানে কতখানে সেমিনারে গিয়ে আলাপ করেন; টেকি দুনিয়াতেও তাদের ব্যাপক দেখা মেলে- কিন্তু নিজের ক্যাম্পাসে নারীর সুরক্ষায় এদের কোনো ভূমিকা নেই।
এরা আসলে মানুষ নয়; পা দুটো ঠিকই আছে। জবানও আছে। বাট এ সব বিক্রি হয়ে গ্যাছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নারীর প্রতি সহিংসতার খবর নতুন নয়। যৌন হয়রানি এখানে নিত্যকার ঘটনা।
ভাবলেই ঘেন্ন লাগে। কিন্তু সেই ঘেণ্নার কথা কাউকে বলতে পারি না। এতো আমারই ক্যাম্পাস। আমার রক্তে শিরা উপশিরায় এ ক্যাম্পাসের অনুভূতি। তাই এটাকে আমি অস্বীকার করতে পারি না। আমি এটা স্বীকার করে নিয়েই বলছি এ সব শুয়রের বাচ্চাদের বিচারের আওতায় আনতে হবে--- যারা নারী দেখলেই হামলে পড়ে তাদের পক্ষে কারো অবস্থান থাকতে পারে না।
নিজেকে খুব অসহায় মনে হয়--- এখানে নারীর পণ্য হিসাবে ভোগের সামগ্র বিবেচনা করে কিছু মানুষ নামের পশূ তাদের পশূত্ব ক্ষমতাকে উপভোগ করছে। আবার তারায় নাকি নারী স্বাধীনতা ঘোষণা করেছে। তবে একটা প্রশ্ন মনে আসে এ রকম ভোগের জন্যই কি এমন স্বাধীনতার ঘোষনা।
তাহলে আমি সেই স্বাধীনতার বিরোধী।
আমার দেখা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয ক্যাম্পাসে প্রথম নারী নিপীড়নের প্রকাশ্য ঘটনা--- টিএসটি চত্বরে। একুশ শতক বরণ করে নেবার প্রথম প্রহরে বাধনকে ন্যাংটা করা হলো। কারা করেছে---স সেটা নিশ্চয় কারো অজানা নয়।
বিচার?
হয়নি। হবেও না। এটা তামাদি। সে সময়কার ভিসি আজাদ চৌধূরী স্যার এখন মঞ্জুরী কমিশনের চেয়ারম্যান।
বিম্পির আমলে শামসুন্নাহার হলে পুলিশ ঢুকেছে- সে ঘটনায় শাস্তি হয়েছে । তবে সেটা আমার মনে হয়- আরো বেশি হতে পারতো। ভিসি, প্রক্টরের বিদায় নয়--- তাদের আরো দণ্ড দেয়া উচিৎ ছিল। কিন্তু মামলা হয়নি; তাই ট্রায়ালাও হয়নি। শাস্তি বলতে বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজস্ব যে গণ্ডি --- সেটুকু।
সেনা সমর্থিত মইন ফখরের সময়ও ক্যাম্পাসে যৌন হয়রানি হয়েছে।
তবে আম্লীগের আমলে এটা এতটা বেড়েছে- বলে বোঝানোর উপায় নেই। আম্লীগের সহযোগি সংগঠন ছাত্রলীগের একজন নেত্রী নিজেও নিপীড়নের স্বীকার হয়েছিলেন বলে খবরে পড়েছি।
বিবিসি বাংলা গত বছরের রিপোর্ট
এক বছরে অন্তত ২০ জন নারী ক্যাম্পাসে যৌন হয়রানির স্বীকার হয়েছেন।
২০১৫ সালের বৈশাখেও একই হাল।
এ সব যৌনে হয়রানি 'অপরাধ' হতো যদি বিপরীত মতের সরকার ক্ষমতায় থাকতো। যেহেতু এখন সমমনা সরকার ক্ষমতায় তাই তা অপরাধ নয়। এটা নিশ্চিতভাবে বিশ্বাস করি।

আসলে আমরা নিজেরা আক্রান্ত হবার আগ পর্য ন্ত বুঝিনা কত খ্রাপ অবস্থা।
এ লেখা কারো সংশোধনের জন্য নয়--। কয়লা ধুইলে যায় না ময়লা। এটা একজন বিক্ষুব্ধ মানুষের আওয়াজ মাত্র!

গুন্টার গ্রাসের জন্য শোক-শ্রদ্ধা



'আমার দেশ অপরাধী– কাঠগড়ায় দাঁড়িয়েছে সে
বহু বহুবার– অপরাধ তার তুলনাবিহীন।
আর আজ ভাগ্যের ফেরে– হয়তো নিছক ব্যবসাজ্ঞানে
অথচ মুখে বলছে ক্ষতিপূরণ হিসাবে– ঘোষণা করেছে
ইসরায়েলকে আরো এক ডুবোজাহাজ বেচবে সে
দুনিয়া ধ্বংস করতে পারে এমন ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া যায়
জাহাজ থেকে, ছোড়া যাবে সে দেশপানে
যে দেশে প্রমাণ নাই পরমাণু বোমা আছে
শুদ্ধ আছে ভয় আর ভয়ই তো অকাট্য প্রমাণ।
তাই আমাকে বলতে হবে যে কথা না বললেই নয়।'

 গুন্টার গ্রাসের কবিতা --- যে কথা না বললেই নয়

তরজমা--সলিমুল্লাহ খান


জার্মানির বিশিষ্ট ঔপন্যাসিক গুন্টার গ্রাস জার্মানির উত্তরাঞ্চলের শহর লুইবেকের এক হাসপাতালে আজ মারা গেছেন। তার বয়স হয়েছিল ৮৭ বছর।
সাহিত্যে বিশেষ অবদানের জন্য ১৯৯৯ সালে তাকে নোবেল পুরস্কার দেয়া হয়।
যুদ্ধ-পরবর্তী জার্মানিতে নীত-আদর্শের প্রশ্নে তার অবস্থানকে অনুসরনযোগ্য বলে ব্যাপকভাবে গ্রহণ করা হতো।
অন্যান্য সৃষ্টির মতোই তার অমর উপন্যাস ডি ব্লেশট্রোমেল (টিনের ঢোল) লেখা হয়েছিল পোল্যান্ডে তার ছেলেবেলার শহর ড্যানসিগকে ঘিরে।
এই উপন্যাসটি পরে যে ছায়াছবিতে রূপান্তর করা হয় সেটি অস্কার এবং পাম ড'অর পুরস্কার জিতেছিল।
তবে সর্বস্প্রতি তাকে নিয়ে বেশ বিতর্ক দেখা যায় যখন তিনি এই কথা বলে সবাইকে চমকে দিয়েছিলেন যে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় তিনি নাৎসী বাফেন এসএস বাহিনীর সদস্য ছিলেন।


সূত্র বিবিসি। 

হায় হোসেন; হায় হোসেন

বিম্পি - জমাতের সব্বাই যে এখন হায় হোসেন; হায় হোসেন করতেছেন তাদের এর ভিত্তি নিয়ে ভাবতে হবে।  এভাবে বিম্পি-জমাত জোটের ক্ষমতার বাইরে থাকা, ৫ শতাংশ ভোট পাওয়ার পরেও আম্লীগের ক্ষমতায় টিকে থাকা  এবং তাদের বন্দনা করা লোকের সংখ্যা কম না।

তাই একলা নব প্রজন্মকে  দোষারোপ করে, ব্লগারদের নাস্তিক ঘোষনা করে আর  আম্লীগকে দোষ দিলে চলবে না।

সময় অনেক বদলেছে- কিন্তু বিএনপি আর সহ রাজনৈতিক জোট সঙ্গী জামায়াত  জগদ্দল পাথরের মত ভাবনা নিয়ে বসে আছে ।  সময়ের সাথে যে অগ্রসর হবার দরকার আছে সেটা হয়ত তাদের ভাবনায় আছে--- কিন্তু তার জন্য যে পড়াশোনা এবং  বাস্তবায়নের করণীয় ঠিক করা দরকার- সেটি তারা করেননি।

তাই এক তরফাভাবে কাউরে দোষারোপ বিবেচনা প্রসূত নয়।

নিয়তই আমরা শুনি এবং অনলাইনের কল্যাণে জমাতের নেতাদের সাথে আম্লীগ নেতাদের ছবিও এর প্রমান করে- আম্লীগ জামাত সখ্যতা।

 কিন্তু সময় বুঝে তারা সে কাদা মুছে ফেলে সাফ সুতরো হতে পেরেছে।সেটাও একটা রাজনীতির দুরদর্শিতা। আপনারা কি তা করতে পেরেছেন বা করার চেষ্টা করেছেন।

ভেবে দেখুন এবং এর জবাব দিন। আত্ম সমালোচনা করুণ- উপকার পাবেন।

সময়ের সাথে মানুষের ভাবনা -আবেগ জাগিয়ে রাজনীতির চূড়ান্ত ফায়দা তুলে নিতে পেরেছে আম্লীগ। বিম্পি তা পারেনি। পারার কথাও নয়। কারণ জগদ্দল পাথরের মত বিম্পির বুকে উপ্রে চেপে থাকা  কিছু স্থবির চিন্তার মানুষ- ।

তাদের অগ্রসর চিন্তা করতে পারেন না। তারা কোনো কিছুকেই আমলে নেন না। সুবিধাবাদী, ধান্ধবাজরা দলের ভিত্রে বাইরে ঘুরছে--- আর তাদের হাত ধরেই সরকার হটানোর দুঃস্বপ্ন দেখেন তারা। এ দুঃস্বপ্ন সফল হবার কথা নয়। সব কিছুই এটা সিস্টেমে চলে-- সেই সিস্টেম ব্রেক করার মত সাহস লাগে। আম্লীগের সে সাহস ছিল বলে ৯৬ সালে বিম্পিকে তারা টেনে নামিয়েছে। সঙ্গী ছিল জমাত।

বিম্পি ভেবেছিল- তারা আম্লীগের জোট সঙ্গীকে জমাতকে নিয়ে--- সরকার হটাবে। এ হটানো শব্দটা অবৈধ। আম্লীগ একটা অবৈধ কাজ করেছিল বলে বিম্পিও তা করবে তা হতে পারে না। তবে খালেদা জিয়ার কথাটা ঠিক- একটা যৌক্তিক পরিণতি দরকার। আর এ রকম ভাবনার মানুষ দলটি হাল ধরে আছে বলে এখনো এ দলটি টিকে আছে।

জিয়াউর রহমান এ রকম দলের জন্য জীবন দিয়ে যাননি। তার ১৯ দফা আরেকবার পড়েন। ভাবেন এবং দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবার কারিশমা সমেত নেতৃত্ব নির্বাচন করেন। তারপর কাউরে দোষারোপ কইরেন।

আল মাহমুদ :: অনলাইন এক্টিভিজম এবং তার জৈবিক চাহিদা!


এনিমেলিটি ও রেশনালিটি মিলেই মানুষ বলে পড়েছিলাম এনথনেসিটি কোর্সে- এতদিন পরে এসে এর উদহারণ দেখছি ।

রাষ্ট্রবিজ্ঞানে আমাদের এ কোর্সটি পড়াতেন - আফতাব স্যার; অধ্যাপক আফতাব আহমদ।  যিনি নানা কারণে তর্কে- বিতর্কে ছিলেন । পরে তাকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে গুলি করে হত্যা করা হয়।

আর যাকে ঘিরে এ লেখার সূত্রপাত তিনি কবি আল মাহমুদ। তিনিও তর্কে বিতর্কে আছেন।

আফতাব স্যার আর আল মাহমুদ দু'জনেই স্বাধীনতা উত্তরকালে গণকণ্ঠের সে সময়কার আলোচিত মানূষ যাদের সম্পাদনায় কাগজটি বের হতো।

এরা দু'জনেই বামপন্থি রাজনীতির সাথে যুক্ত ছিলেন- পরে তারা ডান  এবং কেউ কেউ তারে মূল পরিচয় ঢেকে তাদের জামায়াতের রুকন হিসাবে আলোচনা করে থাকেন।

 তবে আফতাব স্যার এবং আল মাহমুদ দু'জনই রাজনৈতিক দল হিসাবে জাায়াতের সাথে জড়িত থাকার বিষয়টি সরাসরি নাকচ করে দিয়েছেন।

 সেটিরও সম্ভবত যুক্তি আছে-

আল মাহমুদকে  জামায়াতি লেখক হিসাবে পরিচয় করিয়ে দেয়ার পর তিনি সাপ্তাহিক  যায়া যায় দিনের ভালবাসা দিবস সংখ্যায়-- আদম হাওয়া-- কবিতা লিখে ব্যাপক কথিতক ইসলঅমিস্টদের রোষে পড়েছিলেন। তার লেখায় শরীর, রমন-রমণীর প্রথাগত জৈবিক দিকের তুমুল আলোচনা ও শৈল্পিক বর্ণণা  সাহিত্যের  সমঝদারদের মুগ্ধ করেছে। সাধারণ পাঠককেও আলোড়িত করেছে।

 জামায়াতি লেখক হিসাবে তাকে পরিচয় করিয়ে দেবার পরেও--কাবিলের বোন--- উপন্যাসে আল মাহমুদ  বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে ব্যাপক ভিত্তিক আলোচনা করেছেন; যেটাকে তিনি বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর প্রতি দায় শোধের চেষ্টা হিসাবে।

 তবুও তিনি জামায়াতি লেখক-
 কারণ লোকটা দাড়ি রেখেছে, নমাজ পড়ে আর  স্রষ্টা সান্নিধ্য লাভের অভিপ্রায় জানায়। তাই তিনি জমায়াত।  সেটাও  তর্কের খাতিরে মেনে নিলাম!

 কিন্তু তার সাহিত্য ক্ষমতাকে অস্বীকার হয়তো এখনই করা সম্ভব- তবে দীর্ঘ মেয়াদে সেটি করা সম্ভব হবে বলে মনে হয় না।
 দেখার বিষয় হলো প্রগতিশীল নামে কিছু লোক এবং জামায়াতিদের মধ্যে বিশেষ কোনো তফাৎ নেই। যেমন জামায়াতিরা সমম্বরে চিক্কুর মেরে বলে আহমদ শরিফ নাস্তিক। তার লেখা সমাজের কোনো কাজে আসেনি।  আবার প্রগতিশীল নামের কিছু পতঙ্গ আল মাহমুদকে চিক্কুর মেরে বলে জমায়াত। তাই তার লেখার মূল্য নেই।

তবে এ সব পতঙ্গ সূর্যের রশ্মীর নিচে পুড়ে ক্ষয়ে যাবে---আল মাহমুদরাই টিকে থাকবেন; কালের বিচারে। সাহিত্যের গুণে।

সেটিও বলা আমার উদ্দেশ্য নয়--- আমার ভ্রিতে অফুরান কৌতুহল  আল মাহমুদের বিয়ে দিয়ে--  ফেসবুকে ব্লগে আলোড়ন তোলা সে সব নিম্নমানের দায়িত্বজ্ঞানহীন প্রচারকদের  পরবর্তী কার্যক্রমের প্রতি---

যেমন আল মাহমুদের নেতিয়ে পড়া দণ্ড খাড়া করার জণ্য তিনি কি বদি ভাইয়ের  সরবরাহ করা ইয়াবা, নাকি হুমো এরশাদের পছন্দের ভায়াগ্রা নাকি হামদরদের  উত্তেজক হালুয়া সেবন করছেন-- সে সব জানানোও তাদের দায়িত্ব।

অথবা তিনি কোন  কোন ব্রান্ডের কনডম ব্যবহার করছেন; তাও জানানো তাদের কর্তব্য। যাতের করে দেশের তাবৎ 'প্রগতিশীল' সেই ব্রান্ড এড়িয়ে চলেন।

ব্যয় সাশ্রয়ের জন্য আল মাহমুদ  সরকারি রাজা কনডম ব্যবহার করছেন কিনা সে সব তথ্য জানা দরকার। তার মত একটা জামায়াতি লোক কেন সরকারের রাষ্ট্রীয় সাবসিডিতে আনা কনডম ব্যাবহার করবেন-- তা হতে পারে না। এ  বিষয়ে অনলাইন এক্টিভিস্টদের রুখে দাঁড়াতে হবে।

 যে ফেসবুকের মহান প্রচারকরা আপনারা নিশ্চয় সামনে  আল মাহমুদের বীর্যের শুক্রের উপস্থিতি, আশি বছরের একজন লোকের  দণ্ডের স্থায়ীত্ব সম্পর্কে জানাবেন।

 জাতি জানতে চায়। জাতি নাহলে আমরা আল মাহমুদের সাহিত্যের ভক্তকুল জানতে চাই!

 শুরুতেই যেটা বলেছিলাম- আফতাব স্যার ক্লাসে পড়িয়েছেন এথনেসিটি -- সেখানে রেফারেন্স জার্নালে পড়েছিলাম--- এনেমিলিটি ও রেশনালিটি মিলে মানূষ।  পশূত্ব জয় এখনো করতে পারেনি অনেক মানুষ- বহু মানূষ এবং স্বঘোষিত জাতির বিবেক--- ।  

Team Abhijatrik excels with BD-71

BD-71, a car developed by Team Abhijatrik of Bangladesh, competed with 129 teams from 16 countries. The competition was held in Manila, Philippines, during February 26 to March 1. The teams that went all the way to the finals, could book their berth only after overcoming steep hurdles in the qualification rounds throughout the year.
Though Bangladesh took part in this competition for the first time, BD-71 managed to secure seventh position in the gasoline category, which is highly commendable for a maiden participant from a developing country.




http://www.eindependentbd.com/home/displaypage/news_2015-04-12_9_14_b

‌ঢাকায় সব স্যাটেলার ইলেকশন করতাছে :(


‌'আদিবাসী' আন্দোলন ও আর গবেষণার নামে হরিলুটের মহাজনরা কই। ঢাকায় সব স্যাটেলার ইলেকশন করতাছে। একসেপ্ট সাঈদ খোকন। খালি পাহাড়ে গেলে বাঙালি স্যাটেলার অয়। ঢাকায় অয় না।

ঢাকার আদিবাসী বাসিন্দাদের আলাদা ভাষা-সংস্কৃতি-উৎসব-খাদ্য-পরিবহন-- সবই ছিল। স্যাটেলাররা সে সব ধ্বংশ করেছে। কোনো চুদির বাই গবেষক এইডা লইয়া কতা কয় না। খালি নগরে চাপ বাড়াও। আর স্যাটেলার  পুনর্বাসন করো। সব শালা ধান্ধাবাজ।

এইখানে ইউএনডিপির ফাইনান্স নাই, অ্যাকশন এইড মাথা নিচু করে থাকে। অক্সফামের গলা বন্ধ। আইএলও ১৬৯ অনুচ্ছেদ বাতিল। মানবাধিকার কশিন চেয়ারম্যান কিচ্ছু খুঁইজা পাইতাছে না।

কারণ একটাই এখানে কোনো ধান্ধা, ফিকির প্রভুদের এজন্ডা নাই। শালার গবেষণা। থু। 

ইহারা রাজনীতি করেন!

অফিস খোলার আনন্দেই বিম্পি যে হারে লম্পঝম্প মারতাছে। তাতে মনে লয় দেশোদ্ধার অইয়া গ্যালো। সালাউদ্দিন, ইলিয়াসরা যে নিখোঁজ সেইটা ভাবনের সময়ও নাই। পেট্রোল বোমার পুরা অভিযোগ যে তাদের ঘাঁড়ে সেইডাও ভুইলা গ্যাছে। দলের নিখোঁজ, ক্রসফায়ার, 'দুর্ঘটনা'য়  নিহত স্বজনের মূখ তাদের চোখের সামনে নাই।  আফসোসস। ইহারা রাজনীতি  করেন। 

ঝরণার জলে শীতল চোতমাস



মধ্য দুপুরে খাঁখাঁ রোদ্দুরে চান্দের গাড়িটা থামলো- এশা দেওয়ানের দোকান ঘেঁষে। ভারতের আগরতলায় পড়ে মেয়েটা। বান্দরবানের ফারুক পাড়ায় তাদের বাড়ি- ২০০২ সালে আমরা যখন  ফারুক পাড়ায় বিকালে এমটিভি শো দেখে বিব্রত - সে সময় এশার অনেক ছোট্ট। ফুটফুটে একটা মেয়ে। মানিক বাবুর ডেরায় বসে চা পান করতে করতে আমি আর শামীম এশার সাথে কথা বলছিলাম। এখন সে কলেজে পড়ে।

ভেতরে প্রায় মাইলখানে পথ পাড়ি  দিয়ে নেমে আসা ঝরণাটার নাম শৈল প্রপাত। এখানকার  একটা বৈশিস্ট্য হলো ১২ মাস পানি মিলে। ফারুক পাড়া ও এর আশপাশের মানুষ এখানে জড়ো হন। তখনো আমাদের নাফাখুম যাওয়া হয়নি- যাওয়া হয়নি বলতে সাহসে কুলায়নি। তাই শৈল প্রপাতেই বসে কাটাতাম বিকাল- দুপ্পুন কিম্বা সকাল।


 পাহাড়ে আমার বর্ষাকালেই বেশি ভালো লাগে। ছুটে চলা দুরন্ত কিশোরীর মতই চঞ্চল থাকে জলের ধারা। কৈশোরে স্কুল পালানোর কিশোরের মতই  নেমে যাওয়া জলের সাথেই ভরতে থাকে খাল- সেখান থেকে ছুটে যায় দূর গ্রাম বেয়ে নদীতে। সাধারণত কিছু পাহাড়ি ঝরণা বরষায় ঘোলা জলে মোহ ভাঙ্গে। শৈল প্রপাত তার ব্যাতিক্রম।

২০০৫ সালের চোত মাসের এক দুপুরের আমরা সেখানে। অররা ক'জন। খাঁ খাঁ রোদ্দুরেও শৈলপ্রাতের  ঠান্ডা জলে ভিজে যাচ্ছিলাম- পুরোটা দুপুর। জলে ভেজা,  জল গড়িয়ে পড়ার স্থান ধরে নিচে নেমে  ফারুক পাড়ার মাথা পর্যন্ত ঘুরে এসে ক্লান্ত আমরা। পাহাড়ি কলা- আর পেপে খেয়ে সবাই এনার্জির  ফিরে পেতে শুর হলো কেনাকাটা। সে সময় বাঁশের বানানো ব্যবহার্য জিনিসপত্র বিক্রি হতো সেখানে- বান্দরবান শহরে এর দাম ছিল বেশি। শৈল প্রাতের পাশে মালিক দেওয়ানের বাড়ির আঙিনায় বেশ কয়েকটি দোকানে এর দাম তুলনামূলক কম। এশার মায়ের সাথে চা খাচ্ছি। মানিক বাবু বিশাল এক শূকুরের মাথা নিয়ে আসলেন- চর্বি চক চক করছে।  বললেন- 'তারক দা' আজকে কিন্তু খেয়ে যেতে হবে।  আমি হেসে বল্লাম চান্দের গাড়ি টাইম শেষ। আমরা ছুটবো।
চা বিস্কুট খেয়েই ফিরছি। চান্দের গাড়ি চোত মাসের রোদে পুড়ে চলা পাহাড়ের খাঁজে কিম্বা ভাজে ঘুরছে।  বিকালের দিকে শহরের এসে মনে হলো- একটু রিস্ট চাই। আবার চাই না। তাই দু মুঠো পেটে দিয়ে সবাই গেলাম স্বর্ণ মন্দির।  তখনো এর নির্মান কাজ চলছিল।  মন্দিরে উপরে একটা বিশাল ঘণ্টি- সে ঘণ্টি বাজিয়ে দিলো আমাদের একজন। ভান্তে ছুটে আসেন- 'আরে তারেক ভাই পোলপাইন সামলান।' ভান্তেরা সাধারণত খিটখিটে মেজাজের হন। তবে অজানা কোনো এক কারণে স্বর্ণ মন্দিরে ভান্তে অধম বান্দাকে পছন্দ করেন জানি না।

নিজেদের সামলে নেমে এসে দেবতার পুকুরে বসে আছি। সন্ধ্যা নেমে এল পাহােড়েরর চূড়া থেকে নামতে নামতে হলো- এ জীবন পূর্ণ হলো- এ জীবন ধন্য হলো এ জীবন অনন্ত আনন্দ জড়িয়ে নিলো-

এখন সে সব স্মৃতি! ব্যস্ততা কেড়ে নিয়েছে সময়- আর রাজনীতি কেড়ে নিয়েছে নিরাপত্তা।


কতবার তোমার মূল্য নির্ধারণি সভা হবে নারী


তোমার মেদ মুক্ত শরীর
কিম্বা
উন্নত বক্ষের উপর কাপড়ের আস্তরণ
নেশাতুর চাহনির উপর ক্যামেরার ফ্ল্যাশ

যেটাকে আমরা নাম দিয়েছি মডেলিং- রেম্প

বহু দিন স্টমাক স্ট্পাল করে তুমি চিকনাই কমিয়েছো
গ্রিণ টি চুবিয়ে খেয়েছো গরম জলে,
চিনির স্বাদ বিসর্জন দেবার পর

তোমার বাজর দর উঠেছে মধু মূল্যে

৬০ টাকার চিনির বদলে তোমার মূল্য ৬০০ টাকার মধু

 পিপঁড়ারারা তোমার পিছু

নানা নামে গজিয়েছে কিছু স্টুডিও
মেকওভার সেলন- নগরে তোমরা এনেছো অর্থণীতির মৌলবাদ
বাজার বাড়াতে হলে লাগে এ - সব আরো কত্ত কি


চাষাবাদ চলছে নারী

পণ্য হিসাবে তুমি আর কতু দূর গেলে আমাদের নারীবাদীরা বলবেন
বেশ হয়েছো, এবার থামো- আর না

অথবা আর কতবার তোমার মূল্য নির্ধারণি সভা হবে
তোমাকে বলা হবে নারী-
তোমার ছোট বক্ষ যুগল আরেকটু উন্নত করে মেলে ধরো
কিম্বা তুমি
তোমার কোমারের উপর ছড়িয়ে দাও চুল বেনি করা লাগবে না

নিতম্বের উপর শিপন জর্জেট গড়িয়ে যাবে রোদ্দুরে বিকালে

বয়সি পুরুষের কাছে তুমি লোভনীয় আরো
অল্প বয়সীর কাছে রোমান্সের সাথী

 তোমার চোখের সামনে অগুনতি স্বপ্ন- তুমি স্টার হবে; তারকা

রাতের আকাশের তারার মত মানুষের বুকে জলবে,
চোখের তারায় কামের আগুনে পুড়ে রচিত হবে নতুন এক পৃথিবী

ক্ষোভ; কষ্ট বেদনা সব মিশে যাবে তামাকের ধোঁয়ায়

সামনে তাকালে অনিন্দ্য সুন্দর পাহাড়ের চূড়া, মেঘ আটকে যাচ্ছে
নিচে বসে আছি তুমি আমি-

কামাগুন জলে যাচ্ছে নগর; বাণিজ্যের বেসাতিতে তোমরা উদোম করেছো ইনোসেন্ট মেয়েদের শরীর
 কী দারণ!

আমরা এগিয়ে যাচ্ছি
যাচ্ছি অনেক দূরে-

তবে  দূরের ঠিকানা নেই!

শার্টের ভাঁজে; রমণীর চোখে বাণিজ্য

বহু নক্ষত্রের মরে যাবার পর আমিও
বলেছি

টিকবেনা কিছুই
চটকল বন্ধ
প্লাস্টিক !

সেটিও হয়তো টিকবে কিছু কাল!
তারপর আবার নিমপাতা ভেজানো জলে
গা ধুতে হবে তোমার। আমারো

জমে যাওয়া জমে থাকা আবর্জনা সরাতে
এগিয়ে আসতে হবে তোমাকে। আমাকে।

ইস্ট ইন্ডিয়া তাডিয়েছো; হে পুর্ব পুরুষ
রক্তের ভেতর ঠিকই রেখে গেছো গোলামি

কেবল ধরণটা বদলেছে। তবু সভ্য হাসি ঠোঁটে
শার্টের ভাঁজে; রমণীর চোখে বাণিজ্য

ভাবনা একটাই
কীভাবে ভালো থাকা যায়
ভালো রাখার ভাবনা; সে তো সুদুরে

পর্যটন নয়; বঙ্গ লুটছে দস্যু।
সেই লুটেরাদের পক্ষে নেমেছে
রাষ্ট্র... রাম বাম সেকুলার জাতীয়তাবাদী-
মুসলিম হিন্দু বৌদ্ধ ক্রিশ্চান- আস্তিক নাস্তিক
সব

তবুও কিছু মানুষ চাইছে প্রিয় স্বদেশ ।

এক ফোঁটা বৃষ্টি জমে গেলো তোমার ঠোঁটে; চোখের পাতায়

এক ফোঁটা বৃষ্টি
জমে গেলো তোমার ঠোঁটে; চোখের পাতায়
ধুয়ে নিলো কাজল

এক ফোঁটা বৃষ্টি জানিয়ে গেলো-
মেঘ করে যাওয়া আকাশের; বাঁধ ভেঙ্গেছে
অসুখ করবে; শিশু-বৃদ্ধার


এক ফোঁটা বৃষ্টি
নিমিষেই মিলিয়ে গেলো
রিছংয়ের স্রোতে

এক ফোঁটা বৃষ্টি
হুট করেই নামলো শান্ত দিঘীর জলে
জানিয়ে গেলো- এসেছিল সে

এক ফোঁটা বৃষ্টি
জমে থাকলো বাটফুলে
মিশে গেলো পাহাড়ের চূড়ায়।

এক ফোঁটা বৃষ্টি
জমে থাকলো
তােমার নাকের ডগায়
ফাল্গুনী দুপুরে-একাকী।

অনিকেত-স্পর্শিয়ার আলাপ-৬: মাঠের আবার হাল কি? খেলাধূলা



- 'ওগো বৃষ্টি  তুমি... চোখের পাতা ছুঁয়ো না' ... গুন গুন করে গাইছে স্পর্শিয়া।
- সকাল থেকে বৃষ্টি। বারান্দায় দাঁড়ালে বৃষ্টি ধরা যায়, স্পর্শিয়া ধরবে ভাবে। তবে ধরা হয় না। আলসেমি; উঠতে ইচ্ছে করছে না। শূয়ে শুয়ে গুন গুনিয়ে গাইছে। কেউ শুনলে পাগল বলবে! নিশ্চিত!

- ফোনটা বাজছে- কার ফোন!

ঘুম ঘুম চোখে ফোনের দিকে তাকায়
-ও, অনিকেত! কেমন আছো। অনেকদিন পর- মনে পড়লো।
- না এম্নি। মন ভালো নেই, তাই। ঝামেলাও যাচ্ছে।

-আচ্ছা বাইরে কি বৃষ্টি?
- হুমম বৃষ্টিই তো।
-বাইরে কি অবস্থা। কিসের কি?
- না আলিয়া মাদরাসা মাঠের মঞ্চের কি হাল।
-মাঠের আবার হাল কি? খেলাধূলা
-মানে? কিসের খেলাধূলা।
-মাঠে কি হয়। হয় অনুষ্ঠান;  না হয় খেলাধূলা। নগরে যে হারে  খেলার জায়গা কমে যাচ্ছে; সেখানে দু'একটা যা মাঠ আছে- সেখানে তো খেলাধূলা হওয়ার কথা।
-আরে গাধু , সেটা না। বলছি  খালেদা জিয়া কি গেছে।

- ও, সেখানে একটা কোর্ট চলে।
-তাই তো।

- দেখি নিউজ সাইটে
কম্পুটারে উঁকি মেরে অনিকেত বলল-না যায়নি।

হুমমম।


 আচ্ছা  তুমি কেমন আছে।
-আছি ভালো।
-ব্লগার অভিজিৎকে খুন করছে কে? বলতে পারো।
-ফেসবুকে পড়েছি ধর্মান্ধ, ধর্ম ব্যবসায়ীরা খুন করেছে।
- কি বলো। ধর্মান্ধরা এত শক্তিশালী। আম্লীগ না  মৌলবাদী ও জঙ্গি বিনাশে কাজ করছে। সেই ১৯৯৬ থেকে ২০১৫। এর পরেও।
-মজার ব্যাপার কি জানো জঙ্গি ফাঁসি হয়েছে ২০০৭ এ। তাদের ধরেছে বিম্পি-জমাত সরকার। যে দলের নেত্রীকে এখন আম্লীগ নেতাদের কেউ কেউ 'জঙ্গি' নেত্রী বলে।

- সব কথা শুনতে হয় না।
-তা ঠিক বটে!
-কালো বিড়ালের ঘটনা জানো না।  সংবিধান যখন বিম্পি মানতে চাইলো; তখন বলতো 'ডকটিন অব নেসেসিটি'। আর এখন এটা 'বাইবেল'। গণতন্ত্র  রক্ষা করতে হাঙ্গামা।

তা ঠিক।

-ক্ষমতা তো এমনই; স্লিম ফিগারের তরুণীর মত!
-অনিকেত; দুষ্টুমি করছো। আমার ওজন কিন্তু বেশি বাড়েনি!
- ওহ নো! আমি তো তোমার কথা বলিনি।
- না; কম ওজনের তরুণী লোভনীয় সে কথা তো বলেছো।

হা  হা হা হাসবে না।

- শোনো প্রিয় ডট কমে দেখলাম, মোটা নারী বেডে আর চিকন নারী মঞ্চে ভালো।


হা হা হা

- আচ্ছা অভিজিৎ হত্যার ঘটনায়  চৈনিক ও রাশায়নিক কোনো বাম মন্ত্রীর প্রতিরোধমূলক বক্তব্য দেখলাম না।
-চৈনিকটা না হয় বুঝলাম- চীন, রাশায়নিকটা কি
- আরে রাশিয়ান আর কি!
- দেখবা কেমনে। অভিজিৎ তো আমরিকান।
-এইটা কে বললো। কেনো ওয়াশিংটন পোস্ট ও গার্ডিয়ানের নিউজ দেখো নাই।  ওরা হেড লাইন করছে আমেরিকান ব্লগার অভিজিৎ খুন।
- এইটা দেইখাই উনাদের প্রগতির গতি আটকায়া গেছে।
-হুমমম
-উনারা সময় সময় গতি পায়, আবার সময় সময় পায় না।

তা ঠিক।

 -স্পর্শ রাখি
-কেনো। না একটা মিটিংয়ে ঢুকবো।
-ঠিক আছে। দুষ্টু বাবু রাখ্খাে। ভোলো থেকো।

এখন অভিজিৎ!

হত্যা- যে কোনো বিচারেই অগ্রহণযোগ্য এবং এর বিচার হবার কথা। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখ ভারক্রান্ত হৃদয়ে আমরা এর কোনো বিচার দেখিনা। খুব ব্যাতিক্রম ছাড়া।

এটা আমি আম্লীগ সরকারকে ধরে বলছি না। সব সরকারের সময়ই একই কথা।

কয়টা উদাহরণ দেই বাংলাদেশে সবচেয়ে  আলোচিত হত্যাকাণ্ডের তালিকায় যে সব লোকের নাম আসে তাদের চেয়েও আলোচিত অনেক ব্যাক্তি খুন হয়েছেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অধ্যাপক আফতাব আহমদ খুন হয়েছেন। তার হত্যার বিচার কি হয়েছে?

বিএনপি ক্ষমতায় থাকার সময় তার দলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুল ইসলাম মামুন খুন হয়েছে? তার কি বিচার হয়েছে?

খুলনায় সাংবাদিক মানিক, বালূ ,যশোরের সাংবাদিক শামসুর রহমান এবং রানা'র  সম্পাদক খুন হয়েছে- বিচার কি হয়েছে?

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু বকর খুন হয়েছে, সে মামলার কি কোনো অগ্রগতি আছে?

সম্বাদিক দম্পত্তি সাগর রুনি এই নগরে খুন হয়েছেন? বিচার কি হয়েছে।

'দ্বিতীয় প্রজন্মের মুক্তিযোদ্ধা' থাবা বাবা ওরপে রাজিব খুন হয়েছেন, বিচার কি হয়েছে?

চ্যানেল আইয়ের ইসলামিক অনুষ্ঠান হজ্ব কাফেলা অনুষ্ঠানের উপস্থাপক কাজী ফারুকীকে খুন হয়েছে। বিচারের কি হাল?

কেউ কেউ বলবেন- বিচার চলমান! আমিও জানি। তবে আর কতকাল চলবে - সেটা আল্লাহ মালুম।


এখন অভিজিৎ!



যে খুন হলো বা যারা খুন করেছে, তাদের মত পথ বিশ্বাসের  ভিন্নতা থাকতে পারে- কিন্তু আইনের রং  একটাই হওয়ার কথা। সেটি আমরা দেখিনা। একই সাথে গণমাধ্যমের ভূমিকাও দায়িত্বশীল হবার কথাও সেটিও এখন লুপ্তপ্রায়।


আর কিছু শব্দ- ধর্মান্ধ, ধর্ম ব্যবসায়ী, চেতনা, মুক্তমত, সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী, মুক্ত চিন্তা; এখন এতটাই ব্যবহৃতও ও প্রচলিত যে- যে কোনো ঘটনার অপরাধীরা ধরা ছোঁয়ার বাইরে থেকে যায়!

আগে পুলিশ আসামী ধরলে - পুলিশ বলতেন; আমরা দেখছি। তদন্তের স্বার্থে এখন কিছু বলা যাচ্ছে না। আসলে তদন্ত ফদন্ত কিছুই না।  একটা জিনিসের সাময়িক উত্তেজনা প্রশমনের চেষ্টা।

এখন পুলিশ কোনো একটা দিকে আঙুল তোলে, তারপর তদন্ত করার নামে তাই প্রতিষ্ঠত করার চেষ্টা করে- যদিও চূড়ান্ত বিচারে  সব সময় তা সত্য হয় না। তবুও 'চাকুরী রক্ষা'  বলে একটা সহজ  ফর্মুলা প্রয়োগ করে তার টিকে যাওয়া।


কিন্তু মিডিয়ার দায়!  সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না। এখন মিডিয়া কোনো একটা ঘটনা প্রবাহ কোনদিকে নেবে তা বিশেষ বিশেষ জায়গা থেকে আরোপনের আলোকেই করা হয় বলে অনেকে আন্দাজ করেন। তবে এ সব আন্দাজ সব সময় সঠিক সেটাও আমি বলতে চাচ্ছি না।

ফেসবুক ব্লগের আবেগি কারখানায় তো পুরো তদন্ত রিপোর্ট ঘটনার সাথে সাথেই প্রকাশ হয়ে যায়। মনে হয় এ টা নিয়ে আগে থেকেই রিসার্চ ফাইন্ডিংস ছিল- জাস্ট আপলোড মারা আর কি!

মজার ব্যাপার হলো  ঘটনার সাথে দিন গড়ায়; সেই দিন গড়ানোর সাথে সাথে সবাই এ সব ভুলে যেতে থাকে। এবং এ সব ঘটনার কোনো বিচার হয় না।

আর ফেসবুক ব্লগ কাঁপানো লোকেরা হলুদ বসন্ত, রক্তিম ভালোবাসার গোলাপের ছবি নিয়ে আলাপ জোড়েন এবং কখনো তারা  কোনো ঘটনা টানা ফলোআপে রাখার মত ধৈর্যশীল নন।  এটা আমার ব্যাক্তিগত  উপলব্ধি!

এ ধৈর্য্য আমরা দেখেছি- গণমাধ্যমের। ক্রমাগত ফালোআপের কারণে নারী নির্যাতক মনি'র ফাঁসি হয়েছিল, এ বাংলাদেশেই।  কুখ্যাত এরশাদ শিকদারের  ফাঁসিও হয়েছিল,  এ দেশেই। জঙ্গি শায়খ রহমান, বাংলা ভাইয়ের ফাঁসিও হয়েছিল এ দেশে।   এ জন্য ধৈর্য্যটা খুব জরুরী।


নোট: আমার কাছে প্রতিটি মানুষের জীবন আমার নিজের জীবনের মতই গুরুত্বপূর্ণ। আমি সে জন্য সব ধরণের হত্যা, হত্যার উস্কানি, গুম, খুন, অপহরণের বিপক্ষে ছিলাম, আছি এবং সামনেও থাকবো। এ কথা শত বার বলছি, কারণ যতদিন হত্যা চলবে- ততদিন আমি এর বিপক্ষে বলবোই! 

বাংলা সিনামার নাবালক সমালোচকরা জিরো ডিগ্রি দ্যাখো




'বাংলাদেশে ভালো সিনামা হয় না'- বলে যে সব সমালোচক এখনো নাবালক হিসাবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করেছেন- তাদের কাছে সবিনয়ে অনুরোধ সময় করে একবার 'জিরো ডিগ্রি' দেখবেন।

আপনাদের নাবালকত্ব যাবে না; নিশ্চিত! তবে সাবালক চিন্তার ক্ষেত্রে উৎসাহ পাবেন।  অনিমেষ আইচ মূলত হুমায়ূন আহমেদ স্যারের কিছু কাজ করতে বলে জানতাম। কিন্তু সে যে এত ভালো সিনামা বানাবে সেটা হয়তো অনেকেই ভাবতে পারেন নি।

হিচককের সিনামা তার প্রেরণা। কোনো একটা অনুষ্ঠানে শুনেছি বলে মনে পড়ে।

বাংলা সিনামাকে যারা গাজাখুরি গল্প আর আটাকন্যাদের দাপাদাপির ভেতর মাখামাখি করে আলোচনা করে বিদেশি সিনামা আনার স্বপ্ন দেখছেন- তারা নিশ্চিত মন খারাপ করবেন- সিনামাটি দেখার পর।

সাম্প্রতিক সময়ে দুইডা সিনামা আমারে পুরাই মন ভালো কইরা দিছে। একটা জিরো ডিগ্রি। আরেকটা পিপঁড়া বিদ্যা।

সমসায়কি কাহিনী চিত্র আর মেজাজেও ভিন্ন।

মানুষের অসততার অনেক রকম পথ থাকে; কেবল ঘুষ না খেলে কিম্বা অন্যেকে ঠেক না দিলেই যে সৎ- সেটিও চূড়ান্ত বিচারে টিকে না।

 মানসিকতা; চিন্তা; চৈতন্য- এ সব সততা অনেক বেশি জরুরী।

 সামাজিক যোগাযোগের  সাইটের কল্যাণে, স্মার্ট ফোনের সুবিধা নিয়ে আমাদের ভেতরকার বিকৃত বাসনার যে অভিব্যাক্তি সেই সাথে বহু সময় ধরে; যুগ ধরে যে ধরণের সামাজিক অনাচার চলে আসছে- তারই একটা টুকরো চিত্রায়ন জিরো ডিগ্রি সিনামাটি।

কাহিনী বর্ণনা আমি করতে চাইনা; অনেকেই সিনামাটি দেখেছেন; এটি তাদের কাছে বাহুল্য মনে হবে।
মানুষের ভণ্ডামি, নিচু আর নিজের সাথে নিজের প্রতারণায় ঠকে  যাওয়া এক প্রেম পরকীয়া ও খুনের  গল্প এটি। যেটাকে অনিমেষ বলছেন, 'এক অবিশ্বাস্য কাহিনী।' কিন্তু চূড়ান্ত বিচারে এটি বিশ্বাস্য! আমাদের আশপাশের কাহিনীই মনে হয়েছে।

যে প্রেম পরকীয়, অন্যায়ভাবে  যৌন সংসর্গ উপভোগের চেষ্টা থেকে মানবিক বৈকল্য এবং প্রতিশোধের নেশা খুন কীভাবে বদলে দিতে পারে মানুষকে; সেটি জিরো ডিগ্রি বলতে পেরেছে। খুব ভালো করেই বলতে পেরেছে।

 যেখানে প্রতিদিনকার ব্যস্ততায় মগ্ন পরিবারের দুজনের গল্প আছে; আবার অলস সময় পার করা মানুষের গল্পও। জুয়াড়ি; তাসের সংসার - কাব্য কবিতার ফাঁদ পেতে নারীকে পর পুরুষের ভোগের জন্য তুলে দেবার অনাচারী চিত্রায়নে সমাজের চলমান ঘটনা চিত্রায়িত হয়েছে। নিপাট নিটোল ভাঁজে লুকিয়ে থাকা চিত্রায়ন কখনোই বাহুল্য; ঘটনার অতিরক্ত বর্ণনা, দীর্ঘায়ন সিনামাটির কোথাও দেখিনি।

 রঙের ব্যবহার, আবহের অসাধারণত্ব, লোকেশন আর ক্যামেরার কাজও প্রশংসার যোগ্য। এমন সিনামা সম সাময়িককালে হয়েছে বলে মনে পড়ে না।  মুগ্ধতা নিয়ে আমার দেখা সর্বশেষ বাংলা সিনামা ঘেটুপত্র কমলা। এরপরেও অনেক সিনামা দেখেছি। কিন্তু এ রকম টানা আনন্দ নিয়ে খুব কম সিনামায়ই দেখা হয়।

অনিমেষ আইচ জিরো ডিগ্রি সিনামাটি বানিয়েছেন দারুণভাবে।  একটা উপভোগ্য কাজ এটি। আমার মনে হয়েছে বাংলা সিনামা যে উঠে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে- সেই চেষ্টায় অনিশেষরা পৃষ্ঠপোষকতা পেলে আরো অনেক দূর যাওয়া সম্ভব।

তখন আর  মধুমিতার মালিকদের  বাইরের সিনামা আমদারি কথা মনে আসবে না। ব্লকবাস্টার সিনামা সিনেপ্লেক্সে দেখানোর দরকার হবে না। সেটার স্বপ্ন আমরা দেখতেই পারি!


মাহফুজ ও রুহির সংসার আলো করা সন্তান আর দুজনের দুরকম চাকুরীর কারেণ যে টানাপড়েনের গল্প দিয়ে শুরু, সেখানে রাতজেগে ফেসবুকে আড্ডা, পর পুরুষের টানে সন্তান রেখে রুহির বিদেশ চলে যাওয়া এবং তাদের একমাত্র সন্তানের রোড অ্যাকসিডেন্টে মারা যাওয়ার পর মাহফুজের  বদলে যাওয়ার চিত্রগুলো- এ সমাজ থেকেই নেয়া।

 একই ভাবে জয়া আহসানের বাবা তারিক আনামের কু-চরিত্র - বিনোদনহীন গ্রামের জমিদারি  ঘরাণার আরেক অন্ধকার দিক- গলা টিপে নারী হত্যা চিত্রায়ন এবং যুবতী নারীর  শরীর পশুদের কীভাবে  টেনে নিয়েছে; যেখানে  নাচের বয়োজ্যাষ্ঠ ওস্তাদ থেকে শুরু করে  গার্মেন্টসের মালিক, কিম্বা চতুর কবি থেকে শুরু করে পয়সা খরচে করে যৌনতা ভোগ করা মানুষ- সবাই একই ফ্রেমে ধরা পড়েছে।


আমাদের নাবালক সমালোচকরা 'জিরো ডিগ্রি' নিয়ে খুব একটা বাৎচিত করেননি।  কেনো করেন নি তা বলা মুশকিল। সম্ভবত তারা 'জাতে' থাকতে চান। বাঙালির কাতারে আসতে চান না বলে!

সম সাময়িক সিনামাগুলোর মধ্যে প্রথমবারের মত কবিতার ব্যবহারও মোহনীয়।  গানে গানে কথায়, উষ্ণতায় সমাজের যে চিত্র জিরো ডিগ্রি এঁকেছে- এ রকম আরো সিনামা হোক সেটাই আমরা চাই।

একই কথা পিপড়াবিদ্যার জন্যও।  তবে পিপড়া বিদ্যায় এবার আলোর প্রক্ষেপনে মুন্সয়ানা ছিল না।  ক্যামেরার কাজও ফারুকিলীর ছবি'র  মানের হয়নি; যদিও আমি আলোক বিশেষজ্ঞ নই -তবুও দর্শক হিসাবে এটা আমার ব্যাক্তিগত মত। তবে গল্প বলার ধরণ; একটা সাইকো হিস্ট্রি কীভাবে একটা মানুষের প্রতিটা মুহুর্তকে বিপন্ন করে এবং নারীর সংসর্গ ও টাকার লোভ কীভাবে মানুষকে অমানুষ বানায়- সেখান থেকে পতনে ক্যামন সঙ্কট তৈরি হয়- সেটি এ সিনামায় দারুণভাবে তুলে এনছেন ফারুকী।


নিশ্চিত করে বলছি- ওহে বাংলা সিনামার নাবালক সমালোচকরা- এবার একটু বোঝো; বাংলা সিনামায় এখন আর তোমাদের ঘেন্নার বস্তুর মত নেই। মাথা তুলে দাঁড়াও, সম্মান করেনা ; সম্মান পাবে। পরধনে মত্ত হয়ে তোমারা আর যা-ই পাও - সম্মান পাবে না। নিশ্চিত করে বলছি- পাবেনা।




হাঁসের পালের নেমে যাওয়ার দিকে তাকিয়ে ছুটবে কিশোরী

এক আলো ঝলমলে সকাল
কথা ছিল
কথা ছিল হাঁসের পালের নেমে যাওয়ার দিকে তাকিয়ে ছুটবে কিশোরী

এক নিরালা বিকাল
কথা ছিল-
কথা ছিল  উড়ে যাওয়া বকের সারি- মুগ্ধতা ছড়াবে

এক নিরালার সন্ধ্যা
কথা ছিল
কথা ছিল; পশ্চিমে ক্রমশ ডুবতে থাকা সূর্যের দিকে তাকিয়ে কাটিয়ে দেবো

রাতটা নামবে; জোছনায় ভিজবো

না ; সে জোছনা হয়ে এলো কাফন, সন্ধ্যাটা ভিজে গেলো রক্তে আর দুপুর হয়ে গেলো খুনের অন্য রকম কেতা!

আহা জীবন তুমি কেনো এমন-
স্বপ্ন গুলো ডুবে যেতে থাকে; হারিয়ে যেতে থাকে প্রতিদিন

 তবুও
আশায় বাঁচি আমরা।  

ফরীদিদের মনে না রাখলে আমরাই হেরে যাবো!



ফরীদিরা হারিয়ে যায়; আলোচনার বাইরে থাকে। এটাই যেনো রীতি। অথচ হুমায়ূন ফরীদি মারা গেলেন মাত্র বছর চার আগে। ২০১২ সালের ফাগুনের প্রথম দিনে।
বাংলা সিনামা, মঞ্চ ও টিভি নাটকে তার যে অবদান; সেটি আমরা মনে করতে চাই না। অথবা চাই কিন্তু সময় পাই না। আমরা কেবল আমাদের শিল্পী, নির্মাতাদের অথর্ব বলে গালি দিই। কিন্তু যা্রা 'থর্ব' কিম্বা গুণি ছিলেন তারা মরে গেলে, বুড়িয়ে গেলে আমরা তাদের ভুলে যাই।
ফরিদী ভাইয়ের সাথে বেশ কয়েকবার দেখা হয়েছিল। কথা হয়েছিল একবার; বেশি কথা বলা চলে। ধানমণ্ডির হারমনি স্পা'তে একটা নাটকের শুটিং ওপেন হবে; সেটা কভার করতে গেছিলাম।
অনেক লোকজন আসবেন; বিশেষ করে শিল্পীরা-যারা ব্যস্ত। ফরিদী ভাই আগেই এসে বসেছিলেন। সে সুবাদে একটু একটু করেআলাপ। একেবারে সাদাসিদে ফরীদি। পায়ে চটি স্যান্ডেল, গায়ে হাফ শার্ট আর নরমাল প্যান্ট চাপিয়ে চলে এসেছেন।
আমিও একই রকম সাজ পছন্দ করি; এ ধরণের সাজের লোকদের সমস্যা-যারা এদের চেনেন না; তারা মনে করে কামলা গোছের কোনো লোক এসে পড়েছেন বুঝি। আর নব্য শহুরে মানুষের কাছে এটা এক ধরণের অসভ্যতাও বটে।
ফরীদি- বাংলাদেশের নাটকের অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যাওয়া মানুষদের একজন। সেলিম আল দীন, আসকার ইবনে শাইখ , আবদুল্লাহ আল মামুনরা যখন স্বাধীনতা উত্তরকারে বাংলাদেশের নাটককে টেনে তুলছিলেন- সে সময় ফরীদিদের আবির্ভাব। অর্থনীতিতে পড়েও নাটকের জন্য - অভিনয়কে তিনি আপন করে নিয়েছিলেন।
হুমায়ূন ফরিদী ---হারমিন স্পা'য় সেদিন আমাকে বলেছিলেন- তুমি যে কাজ করো; সেটাকে ভালো না বাসলে বড় হতে পারবে না।
এখন আমার মনে হচ্ছে আমরা যদি একজন মানুষের ভালোবেসে করে যাওয়া কাজের মূল্যায়ন করতে না পারি; তাহলে সামনের দিনে আরো অনেক ফরীদি হবার কথা থাকলেও হবে না।
উপমহাদেশ থেকে শিল্পী-যন্ত্রী-নাচিয়ে-অভিনেতা-অভিনেত্রী এনে আমাদের চলতে হবে। ফাইভ স্টার হোটেল থেকে জন্মদিনের পার্টিতে যে রকম এখন তারা আসছেন। সামনে তাদের আগমন হয়তো এতটাই হবে যে, আমাদের নিজের বলে আর কিছু থাকবে না।
ফরীদি ভাই- ভালো থাকুন। আপনার আত্মা অনন্ত যাত্রায় শান্তিতে থাকুক।

দেশটারে বিরান কইরা কী লাভ কও

 দেশটারে বিরান কইরা কী লাভ কও


শশ্মান বানায় কি কেউ কিছু পাইবা!
আগুনে পোড়াও, গুলিতে ঝাঁঝরা করো

আবার তোমাদের স্পর্শকাতর মানবিকতা চমকে ওঠে!

 এ কেমন অভিনয় বলো।

মানুষ পিটিয়ে মারো সাপের মত। পুড়িয়ে মারো। গুলিতে ঝাঁঝরা করে মারো।



 বিবেক বর্জিত পেশাজীবীরা- সেটাকে বলো বার-বি-কিউ

 তোমারে মনে কী রোমাঞ্চ। কী রোমান্টিক তোমরা।

মানুষ নিয়ে এত তাচ্ছিল্য;
এত অপমান; মানবতার
তোমরা ক্যামনে করো।


এইবার খান্ত হও।
ক্ষমতার গদি ভিজে যাচ্ছে রক্তে, কান্নার জলে ভরে যাচ্ছে ধূ ধু তিস্তা

সেই রক্তের উপের তোমরা যে-ই আরোহন করো; ক্ষমতার মসনদে
কান্নার জলে ভিজে যাওয়া গদিতে যে-ই থাকো টিকে

জেনো-

 জেদের জলে ভেসে যাচ্ছে- মানব জীবন

 উৎকণ্ঠিত-উদ্বিগ্ন স্বজনের চোখে তাকিয়ে হলেও

খান্ত দেও এবার

এবার থামো; অনেক অনেক হয়েছে; থামো এবার।

পরকীয়া সংলাপ- ৪::'সোনা সে তো খাঁটি হয় পুড়ে গেলে আগুনে'


- আচ্ছা বলো তো পরিণতি কি? স্পর্শিয়া জানতে চায়।
-কার পরিণতি তোমার আমার? অনিকেতের উত্তর।

- ধূর!  খালি মজা করো;  দেশের যে অবস্থা; তাতে এত মজা কোথায় পাও।
- হুমমম।
- পরিণতি আসলে যে কোথায় নির্ধারণ হয়; সেটা বলা মুশকিল। ধর্মমতে চিন্তা করলে আল্লাহ ভালো জানেন।
- তাতো বুঝলাম, কিন্তু এর কিছু অনুঘটকও নিশ্চয় থেকে থাকবেন।

- আছেন  তো!
-কে?
-ওই যে পঙ্কজ বাবু; নাম শুনছো।
-ও পঙ্কজ বাবু, যিনি গুলশানে হাইকমিশন থেকে বের হয়ে রং সাইড দিয়ে গাড়ি নিয়ে রাস্তা পার হতেন।
-ঠিক ধরেছো। তবে ও সব মুখে এনোনা।

-তুমি তার এই অবস্থা দেখলা কবে? তার তো নিয়মের মধ্যেই চলার কথা।
-হুমম। চলার কথা। সেটা -তার সুবিধামত। তারে জব্বর টাওয়ারের সামনে দিয়া উল্টো পথে  সারিন্দা সমেত গাড়ি বহর নিয়ে যেতে দেখছি।

- বাদ দাও ওসব।

- আচ্ছা আমেরিকা খবর জানো?
- জানি; বিবৃতি দেয় তো। বিবৃতি যার পক্ষে দেয়; সে পক্ষ বুক ফুলায়। যার বিপক্ষে যায় সে বলে আইছে!

- হা হা হা
-হাসছো ক্যান।
-তুমি কথা বলার পুরনো ধরণে ফিরে যাচ্ছে।
-ক্যান আমি কি অশুদ্ধ বলি।
-হা হা হা

বাদ দাও পরিণতি কার হাতে-
-ওই যে বল্লাম আল্লাহ, ইশ্বর, ভগবান, গড যে নামেই ডাকো; তার হাতেই।আর অনুঘটকরা তো বিদেশ থাকে।

- তাহলে আমরা জনগণ কি?
- কেন; জনগন হতো তাদের রাজনীতির করার উপকরণ'।


 আচ্ছা এ সব আলাপ রাখো- রাজনীতি; রাজনীতি আর রাজনীতির বাইরে কিছু বলো।

-তাইতো। কত দিন তোমাকে দেখিনা। দখিনের জানালা খুলে রাতের আকাশে চাঁদ; ঠাণ্ডা চাঁদ। আহা ।

-চাঁদ যে ঠাণ্ডা; এটা কে বললো!

-  দেখোনা চাঁদ কেমন ঠান্ডা; আম্রিকা, ইউরোপ, ইনডিয়ার রাজনীতির মত।
-হুমম।
- বুঝছি।


 -আচ্ছা কাল তো পয়লা ফাল্গুন। প্ল্যান কি করছো।
-কোনো প্ল্যান নেই। ছুটির দিন লম্বা একটা ঘুম দিমু।

আহা এত উচ্ছ্বাস; আত আনন্দ তুমি ঘুমাবা। এটা কোনো কথা হলো।

 আসলে আমি হঠাৎ করে কাঁদতে পারিনা। হাসতেও পারি না। তাই বার্ন ইউনিট কিংবা ' বন্ধুকযুদ্ধ' চলমান সময়ে আমার এ সব উৎসব আয়োজন ভালো লাগে না।

আমারো তাই!
তাহলে চলো- দুজনে ঘুম দেই।
-ঘুম যে আসে না।
-ঠিক বলেছো। ঘুম আসে না। গান শুনি চলো

- 'সোনা সে তো খাঁটি হয় পুড়ে গেলে আগুনে'- সুন্দর গান। চলো শুনি দুজনে।


  

পরকীয়া সংলাপ-৩::এত রূঢ় সময়; প্রেম- আসে না মনে


......................................................................................................
পরকীয়া সংলাপের নামকরণ প্রসঙ্গে----
ইনডিয়া -এ দেশটার সাথে আমাদের রাজনৈতিক দলগুলোর সম্পর্ক ও নির্ভরতার পরিমাণটা বেশি। তবে এটা কেউ স্বীকার করেন না। যেমন কেউ পরকীয়া প্রেমের স্বীকার করেন না। তাই গোপন সম্পর্ক আর আঁতাত নিযে আলাপি এ সংলাপের নাম পরকীয়া সংলাপ করা হয়েছে।
দায়মুক্তি: এ সংলাপ একান্ত কাল্পনিক। কারো সাথে মিলে গেলে কাকতালমাত্র!
......................................................................................................

- সব কিছু ঠিক আছে। আবার কিছুই ঠিক নেই। স্পর্শিয়া বলে।
- মানে বুঝলাম না। তুমি সরকারের মত বিক্ষিপ্ত কথা বলছো  কেনো।অনিকেতের উত্তর।

-একটা চূড়ান্ত অনুসিদ্ধান্ত  তো দিবে। বিক্ষিপ্ত কথার সূত্র ধরে তার রসায়ন বের করা মুশকিল। যোগ করে অনিকেত।

- আচ্ছা সব কিছুই তো নিয়ন্ত্রণে; কেবল মানুষের লাশের সংখ্যা বাড়ছে। সেই সাথে কিছু মানুষের ব্যবসা ভালো যাচ্ছে।
-ফটো শ্যুট, ডকুমেন্টারি তৈরি, লবি করা, প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন, লোক সাপ্লাই- কাজগুলো বাড়ছে নাকি।

- মানে কি? কি বলছো
-হুমম।ঠিক বলছি।
 -বাপু ঠিক বলার দরকার নেই। দেয়ালেরও কান আছে।
-এক কান দুই কান করে তারপর -
 তারপর ? না ভাবতে পারছি না।

- অনিকেত তোমার মনে আছে; আমরা এক সময় অবাক হয়ে দেখতাম-খবরে।
- কি দেখতাম; আফগানে যুদ্ধ, বোমা পড়ছে; এর মধ্যে মেহেদী রাঙানো দুধে আলতা পরীর ছবি।
- ঠিক বলেছো; আমরা বিস্মিত হতাম।

-ব্যাখ্যাও থাকতো আমাদের; জীবন থেমে থাকে না।

-হুমম। ঠিক বলেছো।

-তুবে এমন শঙ্কার জীবন কি  মানুষকে সুস্থীর রাখতে পারে?
-খুব কঠিন প্রশ্ন।

- আচ্ছা তুমি কি জানো আমরা অনেক এগিয়েছি।  আমাদের ভার্সিটিতে আগে মনোবিজ্ঞান ডিাপর্টমেন্ট ছিল। এখন ক্লিনিকাল সাইকোলজিও  খুলেছে।
- জানি।
- এখন কিন্তু সাইকলজিক্যাল ট্রমা একটা প্রচলিত শব্দ এবং এর চিকিৎসাও হচ্ছে; জানো?
- জানি।

- আচ্ছা ; যারা মুক্তিযুদ্ধে গেছেন; তারা কী ভেবেছিলেন দেশটা এ রকম সাইকোলজিক্যাল ট্রমার চিকিৎসক সংখ্যা বাড়াবে।

দুজন চুপসে থাকে।

 -অর্থনৈতিক স্বাধীনতা আর  গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই ছিল। লড়াই ছিল অধিকার বুঝে নেবার। অনিকেতের উত্তর।

-বাদ দাও; ও সব ।আলোচনা কঠিন করে ফেলেছো। স্পর্শিয়ার অভিযোগ।
-ঠিক বলেছো; এত রূঢ় সময়; প্রেম- আসে না মনে। -উত্তর অনিকেতের। তাহলে কেনো এত কথা বলো। চুপসে থাকো।

আচ্ছা একটা কৌতুক শুনবে-

হুমম- শোনাতে পারো-

শিক্ষিকা তার ছাত্রদের জিজ্ঞেস করছে তাদের কার অভিভাবক কোন পেশায় আছেন।
ম্যাম-এই নন্টে, তোমার অভিভাবক কে?
- জ্বি ম্যাম ; আমার বাবা।
-তিনি কি করেন- সিভিল সার্ভেন্ট ম্যাম।
-এই ফন্টে : তোমার অভিভাবক।
-ম্যাম আমার মা।
তিনি কি করেন: তিনি সেক্স ওয়ারকার।
কি বললে; বেয়াদব ছেলে। আমি হেড স্যারের কাছে কস্পলেইন করবো-
ক্লাশ শেষে ফন্টের ডাক পড়লো হেড স্যারের রুমে।

ফিরে এলে ম্যাম জিজ্ঞেস করলেন- তা হেড স্যার কি বললো ফন্টে।
ম্যাম স্যার বললেন, কোনো পেশাকেই খাটো করে দেখতে নেই। তা বাবা তোমার বাসার ফোন নম্বর বলো। আমি নম্বর বলেছি। স্যার তা লিখে রেখেছেন। স্যার আমাকে একটা বিস্কুটও খেতে দিয়েছেন।


হো হো হো; হা হা হা । দু'জনেই হাসিতে গড়া গড়ি।

হাসি থামিয়ে স্পর্শিয়া- আসলে সমাজের বেশির ভাগ মানুষই এমন! তারা উপরে ভালো মানুষের ভান করে ভেতরে লালসা-লোভ আর চাতুর্য!


পরকীয়া সংলাপ-২::'স্পর্শের অনুভবে তোমাকে চাই'


'স্পর্শের অনুভবে তোমাকে চাই'- গুন গুন করে গাইছে অনিকেত। ফোনের সংযোগটা মিলছে না। নেটওয়ার্ক প্রবলেম।

-হ্যালো ; কথা বলছো না কেনো। স্পর্শিয়ার

- নিজের মধ্যে ফিরে আসে অনিকেত। রিডায়াল থেকে ফোন কানেক্ট করেছে। আচ্ছা এ রকম কি  রিডায়াল থেকে  রাজনীতিক দলগুলোর মধ্যে ইতিবাচক সংযোগটা লাগতে পারে না।

- হা হা হা হো হো হো
- হাসি থামাও! স্পর্শিয়ার কড়া আদুরে শাসন।

বলো- অনিতেক উত্তর করল।

-তুমি যে গানটা গাইছো এটা কি নিয়ে জানো?
- জানি।
- বলোতো কি নিয়ে?
- কেনো? সিগারেট।

- ঠিক বলেছো- একটা মানুষ সিগারেটের ভেতর তার সুখ খুঁজে নিয়েছে। আর আমাদের দেশে কেউ মানুষ মারার মধ্যে সুখ পায়। বাপু তুমি যদি নিজের জন্য সুখ চাও; তা যে কোনো খানেই সম্ভব।

- সময় খারাপ যাচ্ছে। এ সব আলোচনা রাখো।
-কোনো; আমি আর তুমি তো!
- আরে নাহ! এর মধ্যে আরো কেউ কান পেতে থাকতে পারে।

-কি বলো; বিস্ময় ঝরে পড়ে স্পর্শিয়ার কণ্ঠে।
- হুমম। তাই হচ্ছে।

-তাহলে!  কথা শেষ করতে পারে না স্পর্শিয়া।
-তাহলে আমরা কথা বলবো না।
- কি বললে?
- না কথা বলবো; তবে এ সব আলাপ করা যাবে না।
- আমাদের মাথায় তো এ সব জমে থাকে; কারো সাথে কথা বললে হালকা লাগে।
-পরিস্থিতি হালকা হোক ; তারপর।


দু'জনে  একটু সময় নেয়।

-আজকে একটা খবর পড়ছো- কাগজে। বলে, স্পর্শিয়া
-হুমম পড়েছি। কেজরিওয়াল। অনিকেতের উত্তর।

- ঠিক ধরেছো। দলটা জিতেই গেলো। ফিরলো দিল্লির মসনদে। ভালো খবর।
- মোদি পরাজয় মেনে নিলো সেটাও একটা ভালো খবর।

- আচ্ছা, আমাদের দেশে এমন সংস্কৃতি কবে শুরু হবে?
- হবে। তবে দিণক্ষণ ঠিক করে বলা মুশকিল।

-ঠিক বলেছো।

- বাইরে কিসের আওয়াজ। দরজায় কড়া নাড়ছে কেউ।
-নাহ কড়া নাড়ছে না। বাসায় কেউ নেই। কেউ আসবেও না।
- তাই!
রহস্যময় হাসিতে এগিয়ে যায় আলাপন।

পরকীয়া সংলাপের নামকরণ প্রসঙ্গে 

ইনডিয়া -এ দেশটার সাথে আমাদের রাজনৈতিক দলগুলোর সম্পর্ক ও নির্ভরতার পরিমাণটা বেশি। তবে এটা কেউ স্বীকার করেন না। যেমন কেউ পরকীয়া প্রেমের স্বীকার করেন না। তাই গোপন সম্পর্ক আর আঁতাত নিযে আলাপি এ সংলাপের নাম পরকীয়া সংলাপ করা হয়েছে। 

দায়মুক্তি: এ সংলাপ একান্ত কাল্পনিক। কারো সাথে মিলে গেলে কাকতালমাত্র!

পরকীয়া সংলাপ-১ ::-তাহলে মানুষ কে?



রিং ব্যাক টিউন টা দারুণ; অপেক্ষা করতেই পারতে। হেসে বলে অনিকেত।
স্পর্শিয়ার কাছে এটা ভিন্ন কমপ্লিমেন্ট। রিং ব্যাক টোন নিয়ে অনেকে তাকে খারাপ কথা বলে- অপাকারিতা বোঝায়। অনিকেত সেটি করেনি।
-তুমি কি গান গাইতে পারো? প্রশ্ন অনিকেতের।
উঁহু না। - স্পর্শিয়ার উত্তর।
-কিন্তু ভালো শোনাও। 'তুমি এলে অনেক দিনের পরে'- গানটা তো সুন্দর।
-হুমম।
-হুমম টা কি।
-হুমম মানে বলার কিছু নেই।
-না আমার কাছে হুমম মানে কষ্ট। বুক ভেঙ্গে যাবার উচ্চারণ।
ঠিক বলেছো- অনিকেত উত্তর।
এই যে দেখো এত মানুষ পুড়ে যাচ্ছে আগুনে; এত লোক কাতরাচ্ছে; আর নগরে বসছে মউজের আয়োজন।
- কারা করছে এ সব; ওরা কি মানুষ।
-মানুষ তো বটে। ওদের দুখানা পা আছে। তর্ক করার জন্য গলার জোর আছে।যুক্তি আছে। এরা বার্ণ উইনটে গিয়ে রুমাল চাপা দিযে ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়ে থাকে। আবার মজে থাকে স্টার নাইটসে।
-ঠিক বলেছো ।
-ঠিক তো বটে।
-আচ্ছা একটা প্রশ্ন করি?
-করতে পারো!
-মানুষগুলো এমন কেনো?
-সবাইকে তোমার মানুষ মনে হয়; কেনো?
পাল্টাপাল্টি প্রশ্ন... একটু থেমে স্পর্শিয়া বলে বেল বাজছে দেখে আসবো? না থাক।
মানুষ পুড়ছে; আর মানুষকে ডেকে নিয়ে খুন করছে- দুটার মধ্যে তফাৎ কি।
-তফাৎ? তফাৎ তো আছে।
-যাদের মারা হচ্ছে তারা মানুষ নয়। যারা পুড়ছে তারাও।
-তাহলে মানুষ কে?
-কেনো রাজনীতিকরা।
হুমম-
ঠিক বলেছো।
-বেল বাজছে? দেখে আসবো!
-আসো; ফোন কানে অনিকেতের।
-এভাবে এমন বিকালে তুমি!
-তুমি কে?
- তুমি; তুমি আমার সব। অদেখা ভূবন। স্বামীর কাঁধে হাত রেখে আহ্লাদে গদ গদ স্পর্শিয়া।
ফোনের লাইনটা কেটে যায়। স্পর্শিয়ার জীবনে বাস্তব হয়ে ওঠে আরেকটি মুখ-।
-অনিকেত হাত ঘড়ির দিকে তাকায়। আরেকটু কথা বলা যেতো। আয়নার দিকে তাকিয়ে বলে একই মানুষ- দু'রকম রূপ।
আমি কি রাজনীতিক! হতে পারে!
নাহ হতে পারে না!
পরকীয়া সংলাপের নামকরণ প্রসঙ্গে
ইনডিয়া -এ দেশটার সাথে আমাদের রাজনৈতিক দলগুলোর সম্পর্ক ও নির্ভরতার পরিমাণটা বেশি। তবে এটা কেউ স্বীকার করেন না। যেমন কেউ পরকীয়া প্রেমের স্বীকার করেন না। তাই গোপন সম্পর্ক আর আঁতাত নিযে আলাপি এ সংলাপের নাম পরকীয়া সংলাপ করা হয়েছে।
দায়মুক্তি: এ সংলাপ একান্ত কাল্পনিক। কারো সাথে মিলে গেলে কাকতালমাত্র!

-'এ দেশে শ্যামল রং রমণীর সুনাম শুনেছি'

ম্যাডাম জিয়া অবরুদ্ধ কিম্বা তিনি স্বেচ্ছায় গুলশানের  কার্যালয়ে অবস্থান করছেন- সে যে কোনোটাই হতে পারে। কিন্তু এ কার্যালয় ঘিরে গত ২৫ কিম্বা ৩০ দিন ধইরা দেশে বৈদেশে যে আলাপ আলোচনা চলছে- তাতে মনে হইচ্ছে- বঙ্গদেশের রঙ্গশালার যাবতীয় সব উপাদান এইখানে ফয়দা অয়।

সাধারণত বিম্পিকে  নিয়ে যখন আম্লীগ কতা বলে, তখন পিপঁড়ার মর্যাদাও তারা দেয় না। সময় সময় এমুন কতা বলেন, যে বিম্পি করাটা একটা অপরাধ; এ সব অপরাধীদের বিম্পি সরকারেরই নিজ হস্তে প্রতিষ্ঠিত নিরাপত্তা রক্ষীদের দ্বারা 'বন্দুকযুদ্ধ' মঞ্চায়ন করে মেরে ফেলাটা অতিব উত্তম, জরুরি এবং সওয়াবের কাম।

কবি ওমর আলীর একটা কাব্য গ্রন্থ আছে-'এ দেশে শ্যামল রং রমণীর সুনাম শুনেছি'। সে হিসাবে বঙ্গ দেশে 'শ্যামল' রমণী আলোচনায় স্থান করে থাকবার কথা থাকলেও এখানে 'গোলাপী' বেশ আলোচিত , মুখরোচক, রাজনীতির শীর্ষ বিন্দুতে জমানো তিন্দুর জলের মতই লোভনীয় শব্দ। 


একজন স্বামী হারা, সাবেক প্রধানমন্ত্রী, স্বৈরশাসক হিসাবে সবাই কবুল করে নেয়া প্রেমিক-বৎস এরশাদ বিরোধি আন্দোলনে রাজপথ কাঁপানো নেত্রী তিনি। তার নেতৃত্ব, মেধা, যোগ্যতা নতুন করে প্রমাণ করার কিছু নাই। 

কিন্তু কিছু লোক তার 'শিক্ষাগত' যোগ্যতা লইয়া প্রশ্ন তুলে হেনস্তা করবার চেষ্টা করে; যদিও বাস্তবে তারা নিজেদেরই হেনস্তা করে এবং সেটি বুঝবার মত সক্ষমতা তাদের নাই। 


এ সব লোকদের অনেকে সাবেক বাম-রাম কিম্বা সাবেক আঁতেল-যাদের কাণ্ড জ্ঞানের বিস্তৃতি আজিজ মাক্কেট ঘিরে; সেই সব লোক আরজ আলি মতুব্বরে দর্শন লইয়া অনেক বাৎ চিৎ করে থাকেন। সেই একই লোক সকল ক্যামনে বঙ্গদেশের তিনবারে প্রধানমন্ত্রীর প্রথাগত সনদি যোগ্যতা লইয়া কোশ্চেন করেন, এটা ভাববার বিষয়।


পরোক্ষভাবে এরা নিজেদের হীনমন্যতাকেই সবার সামনে তুলে ধরেন। হরিপদ কপালিরা  উদ্ভাবনী মেধার স্বাক্ষর রেখেছেন বলে ইরি বিরি গবেষকরা তাকে তাচ্ছিল্য করবেন- এটা যেমন ঠিক না। তেমনি এটাও ঠিক না  কিছু দণ্ড বিহীন মেরুদ্ধণ্ড বহনকারীরা একটি রাজনৈতিক দলের প্রধানের জীবন আচরণ, প্রথাগত শিক্ষা লইয়া কতা কইবেন। এটা রুচিকর বলে আমার মনে হয় না।

যে কথা বলার জন্য লিখছি- এখানে আমরা সবাই মনে করি একেকজন বিশেষজ্ঞ। আমি যদি আপনাদের বলি একটু পেছনে ফিরে তাকাতে। ২০০১ সালে ক্ষমতা হারানোর পর আমাদের শিক্ষামুন্ত্রীর বয়ান সমৃদ্ধ লেখাগুলো প্রথম আলো ছেপেছিল। সেগুলো পিআইবির আকাইভে আছে। পাবলিক লাইব্রেরিতেও পাওযা যাবে। 
সে সময় তিনি যে জ্ঞান গর্ভ পরামর্শ দিয়েছেন; তার কোনোটা কি তিনি বাস্তবায়ন কইরা দেখাইতে পারছেন? পারেন নাই। 

২৪ তম বিসিএস পরীক্ষার  প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনা ঘটেছিল বিম্পির আমলে। পরীক্ষা বাতিল করে ; পিএসসি চেয়ারম্যানকে সরিয়ে দিয়েছিল বিম্পি। আর এখন প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়নি - এটাই যেনো একটা আশ্চর্য। 

তারপরেও নাহিদ দাদু সফল মুন্ত্রী। জিপিএ ফাইভের বন্যায় ভেসে যাচ্ছে শিক্ষার্থীরা। আহা সে কি শান্তি। এ জিপিএ ফাইভ কি আমাদের শিক্ষার মানে পরিচায়ক। কারো কারো কাছে হতে পারে-। 

সেনাঠেস লইয়া গেলো তত্বাবধায়ক সরকারের সময়দ্রব্যমূল্য উর্ধ্বগতিতে রুদ্ধশ্বাসে ছুটতে থাকলে মতিয়া আফা কইছিলেন রাজনৈতিক সরকার থাকলে এমনটা হতো না। সরকার চাইলে তারা সমাধানে পরামর্শ দিবেন। কিন্তু সরকারের আসার পর উনারা কি করেছেন। জানবার মুনচায়। 

 এ সব কেচ্ছা বর্ননা করবার জন্য এ লেখা নয়। এ লেখার  উদ্ধেশ্য একটা দেশের ক্ষমতার দেউলিয়াত্বকে মনে করে; যে একজন নারী এবং যিনি দেশ পরিচালনায় যুক্ত ছিলেন- তাকে অফিসে অবরুদ্ধ করে রাখা থেকে শুরু করে এখন ইউটিলিটি সার্ভিস বন্ধ করে দেবার মত যে উত্তম মানসিকতা ক্ষমতাধররা করেছেন এটা কেবল নিন্দনীয় নয়। জঘন্য রকমরে অমনাববিক -অপরাধ। 

যারা জ্যান্ডার ইক্যুইটি; জেন্ডার 
 ভায়োল্যান্স; নারীর প্রতি সহিংসতা লইয়া যারা কাজ করেন; তারা মুখে মিশিন লইয়া চুষতাছেন। সে মেশিনে আবর্জনা ছাড়া আর কিছুই আসছে না। 

বিদ্যুৎ কেটে নেবার পর তা চালু হয়েছে। এখন ইন্টারনেট নাই। মোবাইলফোনে কতা বলা যায় না। বিটিআরসির মোবাইলফোন অপারেটরদের চিঠি দিয়ে বলেছে ওই এলাকায় নেটওয়ার্ক বন্ধ করতে । করা হযেছে। কিন্তু ওই এলাকায় শুধু খালেদা জিয়ার অবস্থান নয়; বহু সরকার পন্থীও থাকেন। সবাই এখন খাবি খাচ্ছেন। 

খেতেই পারেন। তবে সরকার সব সময় সংবিধানের কথা বলেন; তাদের অনুসারীরা আরো জোরছে বলেন। এ ধরণের পদক্ষেপ নিশ্চিতভাবে সংবিধান চর্চারই অংশ হবে হয়ত- সে জণ্য চুপচাপ থাকাটাই উত্তম। নইলে মধ্যম খেতে হবে। তাই চুপসে আছি-কিন্তু কতক্ষণ! 

মাটি- সোঁদা মাটি; আমার প্রিয় মাটি প্রিয় স্বদেশ-ভালোবাসি



 কাদা থক থক, গন্ধ আকুল মনটা ভরে যায়

 সাহিত্যে এটাকে সোঁদা মাটি বলে

 এ মাটির প্রতি লোভ অনেকের; কেউ দখল নিতে চায়<
কেউ ঘর বাড়িয়ে বানিয়ে মাথা গুঁজতে চায়

 কেউ চায় নিয়ন্ত্রণ

 আছিরনের সে রকম কোনো আশা নেই

 মাটির গন্ধ নিয়ে তার সাথে আলাপ বিলাসিতা

 তাই তারে কবিরুল জিগায়- কেমুন আছো্

 আছিরন হাসে; গরিব মাইনষে ক্যামুন


আসলে তো গরিব মাইনষে ক্যামন থাকে

 দেশ এগিয়ে যাচ্ছে

সেখানে কিছু পিছিয়ে পড়া মাইনষের এ উত্তর তো কবিরুলের  অজানা


ঢাকার চেহারা দেইখা তো  কালনি নদীর ধারে মাথা গোঁজা
..............আছিরনের কথা বোঝা মুশকিল

 সেকেন্ড লন্ডন বইলা খ্যাত শ্রীহট্টেও এমুন মানুষ আছে

 কবিরুল হাসে-খালা দেশের মানুষ তো বালাই

 আছিরন আবারো হাসে-

 বলে আমগো বাঁচন আর মরণ

 তোমরা বাঁচলেই অইলো। বাইঁচা থাকো বাবা

 সেই বেঁচে থাকনের জন্য কবিরুলরা ঘোরে; মেকি হাসি ঝুলিয়ে থাকে ঠোঁটের কোনায়
 ফেসবুকায়; ব্লগায়; আর নানা কতা কয়

আবার ভয়ে চুপসে আসে।
সাদা ?-
মনের শান্তি উধাও। তারচে আছিরনই বালা। এত্ত ভাবনা নাই।

 কোন জীবনটা চাইবে কবিরুল-
আছিরণের মত।

নাকি আছিরন কবিরুলের মত হোক তা চাইবে সে

 সমাজ বিজ্ঞানীদের ব্যাখ্যা জানবার মুনচায় কবিরুলের
... এত গবেষণা কঠিন
 গুগলে গোত্তা মাইরা কিছু পাওয়া যায় না ভাবে কবিরুল-
তাহলে হতো বিদ্যা জাহির ।

 পেটের ক্ষিদা; মাথা গোজার ঠাঁই কি মিলবে; মিলবে কি নিরাপত্তা

সে প্রশ্ন মাথায় ঘোরে

 মাটি- সোঁদা মাটি; আমার প্রিয় মাটি প্রিয় স্বদেশ-ভালোবাসি   

হল টিকাতে হিন্দি সিনামা লাগবে। আহা কি দারুণ খেলা!


ওরা ১১ জন কিম্বা জীবন যেখানে যেমনের মত সিনামা দিয়ে স্বাধীনতা উত্তরকালে যে বঙ্গ সিনামার উত্থান,সে সিনামা ব্যবসা হারাতে শুরু করলো এবং এখন দেউলিয়া আখ্যা দিয়া হল ঘরে জলসা জমাতে উর্দু-হিন্দি সিনামার দ্বারস্থ হতে হলো;  সেটা কিন্তু একদিনে হয়নি।

ব্যাক্তিগতভাবে আমার সিনামা দেখার অভিজ্ঞতা 'গরম হাওয়া' দিয়ে। এটা সম্ভবত ১৯৯৩ সালের ঘটনা। সিনামায় নকল, অবিকল কিম্বা সেমিনকল হবার ঘটনা পুরনো; সে ক্ষেত্রে বাংলা সিনামা এ দোষে যুক্ত; এটা নিয়ে দ্বিমত নেই।

কিন্তু এ নকল বা অনুকরণ  করাকে একটা বাড়াবাড়ি রকমের নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সেটি আসলেই অগ্রহণযোগ্য ছিল।  এর কারণ কি ছিল তা নিয়ে অনেক মত রয়েছে। তবে একটা দীর্ঘ সময় ধরে ধীরে ধীরে বঙ্গ সিনামা হাল খ্রাপ হতে হতে এখন আর বলার মত কিছু নাই বলে কারো কারো দাবি-এ দাবির সাথে আমি একমত মত নই। 

 এখানে সিনামায় অশ্লীলতার গল্পটা বলতেই লিখছি-

বাংলাদেশের মত একটি অতি উদার-রক্ষণশীল সমাজে ইউভার্সেলই একমাত্র সেন্সর রেটিং। এর বাইরে আর কোনো রেটিংয়ে সিনামা মুক্তি পায় না।

সত্তুরের দশকের শেষের দিকে 'গোপন কথা' নামে যে সিনামাটি এডাল্ট রেটিং দাবি করেছিল এটি হাল আমলে যে কোনো সুশীল সিনামার চেয়েও সুশীলতর বলে  ২০০৬ সালের দিকে সেন্সর বোর্ডে গল্পচ্ছলে একজন সদস্য জানিয়েছিলেন। 

১৯৯৬ সালের দিকে বাংলা সিনেমায়  অশ্লীলতার মহামারি আকারে আসে।  এ সময় সিনামায় এতটা অশ্লীলতা প্রবণ হয়ে ওঠে যে মোহাম্মদ হোসেন পরিচালিত ‘ফায়ার’ সিনেমাটি এডাল্ট রেটিংয়ের সেন্সর সনদের আবেদন করেছিল। তবে এটি তারা পায়নি।

এ সিনামায় নায়িকা পলির শরীর দেখানোর কসরতে কোনো রকমের কমতি ছিলনা মোহাম্মদ হোসেনের।

 থাইল্যান্ডে এর শুটিং হয়েছিল এবং  তাতে থাই নাইট ক্লাব সংস্কৃতির চিত্রও  তুলে ধরেন হোসেন।

১৯৯৭ সালের দিকে বাংলা সিনেমায় অশ্লীলতার পরিমাণ আরো বাড়ে।  সে সাথে  ভারতীয় নায়িকাদের এনেও এতে ভিন্ন মাত্রা দেবার চেষ্টা করা হয়।

মোহাম্মদ হোসেন ভারতের নায়িকা ঋতুপর্ণাকে দিয়ে নিমাণ করেন ‘রাঙাবউ’ সিনেমাটি। এতে সিনেমাতে বেশ কিছু অশ্লীল দৃশ্য ছিল।

এরপর  সে সময়কার সেন্সর বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান কবি রবীন্দ্র গোপের সহায়তায় অশ্লীলতার বিস্তার ঘটতে থাকে। তার উপন্যাস থেকে সিনামা বানানোর ঘোষণা দিয়ে এয়াতে করিম বেশ কয়েকটা অশ্লীল সিনামায় বানিয়ে সেন্সর সনদ নিয়ে যান।

ডিপজল, দীপু, আজাদ খানের মত আরো বহু লোকজন অশ্লীল বাংলা সিনেমা তৈরী বানাতে থাকেন।  এটি ভয়াবহ রূপ ধারণ করে ‘ভয়াবহ’ সিনেমার মধ্য দিয়ে। ওই সিনেমায় এক সাথে চারটি ধর্ষণ দৃশ্য সংযুক্ত করা হয়। এরপর বাংলা সিনেমায় অশ্লীলতা বন্ধ করা যায়নি। এটি দিনের পর দিন বাড়তে থাকে, সে সাথে অশ্লীলতার মাত্রা এতটাই ছড়িয়ে পড়ে যে, মধ্য বিত্ত হল থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে শুরু করেন।

নায়িকাদের পোশাক ছোট হতে হতে এবং বেড সিন যোগ হতে হতে সেটি বাড়াবাড়ি রকমের হয়ে ওঠে। শেষে দেখানোর আর কিছু থকে না,ম বাথরুম, সুইমংপুল হয়ে সিনামার শরীর দেখানোটা তুঙ্গে ওঠে। গল্পের বদলে চলে আসে শরীর-বৃত্তি। 

২০০১ সালের সরকারে পরিবর্তন, ১/১১এর প তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ও একই হাল ছিল।

‘মহিলা হোস্টেল’, ‘মডেল গার্ল’ ও ‘নষ্টা মেয়ে’র মত সিনেমা নিয়ে যখন তুমুল সমালোচনা হচ্ছিল, সে সময় এ সব সিনেমার সাময়িক লাগাম টেনে ধরার জন্য সেন্সর সনদ সাময়িকভাবে বাতিল করে।

নির্মাতারা পরে আবার আদালত থেকে ছাড়পত্র নিয়ে সিনেমাগুলো ছাড় করতে শুরু করেন।

২০১০ সালে এসে সিনামায় কাটপিসের সংখ্যা বহু গুণে বেড়ে যায়। আগে সিনামায় কাটপিস থাকতো চার ৫ টি। কিম্বা ৫ থেকে ১০ মিনিট। এবার সেটি ৪০ থেকে ১ ঘন্টা পর্যন্ত ছাড়িয়ে যায়।

এ রকম পরিস্থিতিতেও দেশে ভালো সিনামা হয়েছে। গেরিলা, ব্যাচেলর, সার্চ দ্যা খোঁজ, কাবুলিঅলা, আমার আছে জল কিম্বা  ঘেটুপুত্র কমলাকে কেউ কি অস্বীকার করতে পারেন ? পারেন না। 

বাংলাদেশের  সিনেমার এমন দুর্দিনকে সামনে রেখে ভারতের সিনেমা আমদানি করা হচ্ছে এমন কথা বলছেন প্রদর্শকরা। তারা এও বলছেন, সিনেমাহল বাঁচাতে হলো ভালো সিনেমা লাগবে, যেটি বাংলাদেশে হচ্ছে না।  

২০১১ সালের জুলাই মাসে ভারত থেকে আসে বাংলা সিনেমা ‘জোর, ‘বদলা’ ও ‘সংগ্রাম’। চলতি মাসে মুক্তি পেলো ওয়ানটেড।

সিনামা হল অলারা বলছেন এ দেমে ভালো সিনামা হয় না, নাই তাই আমদানি করে হল বাঁচাইতে চাই। কিন্তু তা কি ঠিক?


কাটপিস দেখানোর গুরু হলো ঢাকার বাইরের হলগুলো। আামরা প্রথম কাটপিস দেখেছিলাম আদমজীনগরের মুনলাইট সিনামা হলে।  হঠাৎ করে কাটপিস এসে পড়ায় বন্ধুরা সবাই বিব্রত। এরপর মুনলাইট সিনামা হল এ ভিড়; মেরেও লোক সরানো যায় না।  একই রকম অবস্থা ছির বন্ধু, লাভলী, রাজমহল সিনামা হলেও। ঢাকার বাইরে এমন কোনো হল ছিল না যেখানে কাটপিস  দেখানো হতো না।

 এ সব কাটপিস মিলতো গুলিস্তান মার্কেটে। সিনামার রোলের সাথে এ সব কাপিট কিনে নিতেন হল মালিকরা।  প্রশা্সনকে ম্যানেজ করেই পরিবেশন করতেন এ সব। এ নিয়ে প্রতিবাদও হয়েছিল। নায়িকা ববিতা এর প্রতিবাদ করে সেন্সর বোর্ড ত্যাগে বাধ্য হয়েছিলেন। তাকে খ্রাপ ভাষায় গালিগালাজ করেছিল নির্মাতারা।

তবে স্রোতে গা না ভাসিয়ে অনেকেই ভালো সিনামা নির্মাণের চেষ্টা করেছেন। তাতে হল মালিকরা জুড়ে দিয়েছিলেন অশ্লীল দৃশ্য। যেমন ধরুণ খায়রুন সুন্দরী সিনামার কথা। নায়িকা মৌসুমীর এ সিনামাতেও কাটপিস জুড়েছিল  নারায়ণগঞ্জের হীরা সিনামা হল।


 বহু হলে গিয়ে দেখেছি সিনামার অভিনেতা অভিনেত্রীর নাম ধামে বা পরিচালকের নাম ধাম নাই আছে অচেনা মেয়েদের গা গোলা ছবি। এ সব প্রিন্টও হতো ঢাকায়। সরবরাহ হতো হলে এবং এভাবেই হল মালিকরা অসাধু পরিবেশকদের সহায়তা টেনে নামালেন বাংলা সিনামা। এখন বললেন হল টিকাতে হিন্দি সিনামা লাগবে। আহা কি দারুণ খেলা!





পেট্রোল বোমায় মানুষ পোড়ানো :১৯৯৬ থেকে ২০১৫


আমার খুব জানার ইচ্ছা, কারা পেট্রোল বোমা বানায়, মারে; তারা ধরা পড়ে না। আইনের আওতায় আসে না। তার মানে কি ! তারা অতিমানব। অতি ক্ষমতাবান এবং অতি শক্তিমান।    

১৯৯৬ থেকে ২০১৫ পর্যন্ত যতগুলো  পেট্রোল বোমা, গাড পাউডার দিয়ে বাসভর্তি মানুষ পুড়িয়ে মারা হয়েছে; সে সব ঘটনাগুলো যারা প্রত্যক্ষ করেছেন, তাদেরও নিশ্চয় এ প্রশ্নটা মনে জাগে। কিন্তু দলদাস বা দলান্ধ হবার কারণে সময় সময় কৌশলে এরা এ সব নিয়ে কথা বলেন। 

আমি সব সময় সব সরকারের সময় সব ধরণের মৃত্যু, হত্যা, গুপ্ত হত্যার বিরোধী। - এ মৃত্যুখেলা বন্ধ করুন। 

২০০৪ সালের ৪ জুন তৎকালীন শেরাটন হোটেলের (রূপসী বাংলা) উল্টো দিকে বিআরটিসির একটি দোতলা বাসে আগুন দিয়ে ১১ জনকে পুড়িয়ে মারা হয়। তখন ক্ষমতায় ছিল বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় সরকার। ৪ জুন হরতাল ডেকেছিল তৎকালীন বিরোধী দল আওয়ামী লীগ।(সূত্র প্রথম আলো)

১৯৯৬ সালের  ১৭ মার্চ অসহযোগ আন্দোলনের ৯ম দিনে রাজধানীতে বাসে পেট্রোল বোমায় ২ জন নিহত, চট্টগ্রাম ও সিরাজগঞ্জে আরো ২ জন নিহত হয়েছে বলে সে সময়কার পত্রিকার খবর।

তার মানে পেট্রোল বোমা হঠাৎ আবিষ্কৃত হয়নি। ক্ষমতা টিকিয়ে রাখা কিম্বা আরোহনের এটা একটা বড় অস্ত্র। মানুষের রক্ত মাংস পুড়িয়ে ক্ষমতা- আহা জীবন; নিয়মিত। 

২০১৩ , ২০১৪ এবং ২০১৫ এর শুরুতেই যে পরিমাণ মানুষ পেট্রোল বোমায় দগ্ধ হয়ে কাতরাচ্ছেন, জীবন দিচ্ছেন; তাদের প্রতি সহানুভূতি। তাদের পরিবারের ব্যাথা অনুভব করার মত সক্ষমতা সরকার কিম্বা বিরোধী দলের নেই। 

তাই পেট্রোল বোমবাজদের ধরেই একইভাবে তাদেরও পুড়িয়ে মারা পক্ষে আমার ন্যায় বিচারের পূর্ব দাবি আবারো থাকছে।  

ঘটনা হলো- এত পুরনো একটা সঙ্কট কাটাতে  কোনো রাজনৈতিক দলই সক্ষমতা প্রমাণ করতে পারলেন না।  সত্যিক অবাক লাগছে। 

বড় কষ্ট লাগে। 

কারণ আমি, আপনি যে কেউ যে কোনো সময় এ ধরণের বোমার শিকার হতে পারি। আল্লাহ আমাদের সবাইকে দলমত নির্বিশেষে- অপমৃত্যু-অনাকাঙ্খিত হত্যাকাণ্ড থেকে রক্ষা করুণ। 



সৌদি বাশ্শার জন্য আইজকা শোক

 frown emoticon
রাজনীতিকদের নষ্টামীর কবলে পড়ে দেশের এত মানুষ-মরে,পুড়ে,গুম,নিঁখোজ হয়ে শশ্মান- কব্বর হয়ে গেলো; তার জন্য শোক নাই।
ক্ষমতা আকডে থাকা আর আরোহনের জন্য মানুষের রক্ত চুষে নেবার লড়াইয়ে কোনো মানব সন্তানের প্রতি রাজনীতিকদের সহানুভূমি দেখানোর ফুরস নাই। সেখানে সৌদি বাশ্শার জন্য শোক। আহারে পীরিত।
সৌদি বাশ্শার জন্য আইজকা শোক। একটা দেশের সরকার সে দেশের মানুষকে কতটা মানবিক ভাবে বিবেচনা করে তা বোঝার জন্য আর কোনা উদাহরণের দরকার পডেনা।
আমাদের বঙ্গ সন্তানদের জীবন যে মুল্যহীন; তা এতটা আঙুল দিয়ে না দেখালেও হতো।

শেষ পর্যন্ত মুক্তি পা্ইছে হিন্দি ফিলিম ওয়ানটেড!


শেষ পর্যন্ত মেদহীন নায়িকার বাঁকানো শরীরের উপ্রে সেন্সর বোর্ডের ছাপ্পর মারা পোস্টারে পোস্টারে নগরি রঙিন করে আজ ২৩ জানুয়ারী শুক্কুরবার মুক্তি পা্ইছে হিন্দি ফিলিম ওয়ানটেড।

আর ৭ দিন বাদে আসছে আমাদের ভাষার মাস । একুশে ফেব্রুয়ারি পালন করবো আমরা। সে জন্য প্রস্তুতি চলছে। বক্তৃতার খই ফুটবে, সংস্কৃতি মুন্ত্রীর বয়ানও শোনা যাবে। আমরা  গাইবো-'আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি আমি কি ভুলিতে পারি।'
শেষে ছুটে যাবো পূর্ণিমা, মধূমিতা, আনন্দ সিনামা হলের কোনো একটাতে। একটা হিন্দি কিম্বা উর্দু  ফিলিম দেখে সব ভুলে যাবো। আহা।

বয়সের ভারে মোট কাঁচের চশমা সরিয়ে তিনি আবেগে কাইন্দা ফালায়া টিভি ক্যামেরার সামনে চোখ মুছবেন- আর বলবেন, বরকত, সালাম , জব্বর তাদের রক্তের বিনিময়ে আমরা মায়ের ভাষায় কথা বলতে পারছি।

আহা জীবন-অভিনয় কীভাবে একটা রাষ্ট্র ব্যবস্থার ভিত্রে ঢুইকা পড়ছে ভাবলে কষ্ট লাগে। বাণিজ্য যদি চূড়া্ন্ত লক্ষ্য হয় তাহলে সব কিছুরই তো বাণিজ্যিকীকরণ হতে পারে।  যদি বাংলাদেশের সিনামা দিয়া সিনামা হল ব্যবসা টিকায়া রাখা মুশকিল বলে  উর্দু-হিন্দি সিনামা মুক্তি দেওন যায়; তাহলে নষ্ট রাজনীতির কবলে পড়ে বিপন্ন মানুষের জীবন বাঁচাতে তো আমরা রাজনীতিক, আমলা, নিরাপত্তা রক্ষীও আমদানি করতে পারি।

এ যুক্তিটা একেবারেই শিশুসুলভ জানি; তবুও দিলাম।

স্বাধীনতার ৪৩ বর্ষপূর্তির মাথায়  বাংলাদেশের রাজধাণী ঢাকায় আজকে মুক্তি পেলো প্রভুদেবার সিনামা ওয়ানটেড। ঢাকার বাইরেও মুক্তি পেয়েছে। সব মিলিয়ে ৬০ টি হলে।

আজকের এ দিনটাকে কেউ কালো বললেন, কেউ সাদা বলবেন।রাজনৈতিক , ব্যবসায়িক এবং কূটনৈতিকভাবে অনেকের কাছে অনেক ব্যাখ্যা থাকবে; সে সব মেনে নিয়েই বলছি এমন বাংলাদেশের জন্য তিরিশ লাখ মানুষ তার অমুল্য জীবন বিলিয়ে দেননি।

বঙ্গবন্ধু, জেনারেল জিয়া, সি আর দত্ত কিম্বা জেনারেল ওসমানীরা লড়াই করেননি। ভাসানী তার জীবনটা উৎসর্গ করেননি ভিনদেশি  বাণিজ্য প্রসারের জন্য।   নিজের যা আছে তা ঘিরে বিস্তৃত হবার লড়াই ছিলো তাদের। আমাদের হাতে সেটিই তারা তুলে দিয়ে গেছেন।  বঙ্গবন্ধুর বক্তৃতাতেই আছে অর্থনৈতিক মুক্তির কথা। কিন্তু সে মুক্তির বদলে আমরা ভিনদেশের অর্থণৈতিক গোলামে রূপান্তর হবার জন্য প্রস্তুত হয়ে আছি।

হাল আমলে  গিনিজ বুকে নাম তোলার যে হিড়িক পড়েছে তাকে আমলে নিয়ে বলছি বাণিজ্য প্রসারে  হিন্দি সিনামার এমন মুক্তি যদি আমরা মেনে নেই তবে তা গিনিস বুকে উঠতে পারে। যে জাতি একটি ভাষা, রাষ্ট্র, সংস্কৃতি এবং টিকে থাকার লড়াইয়ে জয়ী হযেছিল, কেবল রবীন্দ্র সঙ্গীতের অবহেলার প্রতিবাদে পয়লা বৈশাখের মত জাতীয় আয়োজন করে দশকের পর দশক তা ধরে রাখতে পেরেছে;; সে জাতি তার সিনামা শিল্পকে ধ্বসিয়ে দেবার আয়োজন প্রত্যক্ষ করলো আনন্দে; সেটিই  সেলুকাস!

 অনেকেই বলছেন- টিকে থাকতে হবে প্রতিযোগিতা করে। বলি বাপু , তোমার কথা শুনলাম, কিন্তু তুমি টিকতে পারছো। তোমাদের কাউকে কাউকে তো এখনো চাকুরী, পড়াশোনায় টিকিয়ে রাখার জন্য মহান সংসদে কোটা নিয়ে আলাপ করতে হয়।  তা নিয়ে আমার আপত্তি নাই। পিছিয়ে পড়া মানুষকে সামনে এগিয়ে দিতে এটা লাগে। কিন্তু নিজের সংস্কৃতির ভিত তৈরির জন্য তুমি সে সবের কিছু করেছো, নাকি রাস্তার বেশ্যাদের মত কাপড় খুলে বসে আছো;)

মজার ব্যাপার হলো- একজনের হাতের বন্দুক থেকে  গুলি বের হয়। আরেকজনের বন্দুক থেকে কেবল আওয়াজ।  গুলি আর আওয়াজঅলা বন্দুক যোদ্ধা যদি প্রতিযোগিতায় নামে তাহলে কে টিকবে?  সে উত্তর সবার জানা।


একজন বললেন, বাংলা সিনামা ৪৩ বছরেও পারেনি; সামনেও পারবে না। হতে পারে। আবার নাও হতে পারে। কিন্তু বলিউড যে পরিমাণ মেধা, শ্রম,প্রযুক্তি ও অর্থের উপ্রে দাঁড়িয়ে আছে বাংলদেশে কি তা ছিল, আছে কিম্বা হবে।  সে প্রশ্নের উত্তর নেই।


 তবুও এ দেশে ভারতীয় সিনামা এসেছে। বাল কাটার ব্লেড থেকে, পিরিয়ডের রক্ত চোষার ত্যানা, ডিম ভাজার পেঁয়াজ থেকে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকের ডিগ্রি সবই আমরা্উপমহাদেশ থেকে আমদানি করি। তাতে কি তাদের ভালোটা আমরা নিতে পারি না; সেইটা বললে আবার উন্রারা  উপরের দিকে চাইয়া থাকেন বড় ভাই, সাহেবরা কি বলেন, সে অপেক্ষা আর কি!


বিম্পির এককালের তথ্য মুন্ত্রী নাজমুল হুদা আকাশ ওপেন করে ভারতীয়  পণ্যের বাজার তৈরি করে গেছেন। আম্লীগের মুন্ত্রী স্পর্শ পেয়ে বলেছেন ধন্যি বাবা, চলো হিন্দি সিনামা দেখাই। যারা এ বিরোধীতা করে তারা মুক্তবাজার অর্থনীতি বোঝেনা, শিল্প বোঝেনা, সংস্কৃতি বোঝে না।

এ দেশে কিছু বলতে গেলে 'রাজাকার', 'তুই অযোগ্য', 'তুই পারিস না; তাই বলে আমি খাবো না', '--- এ সব টাইপের কথা শুনতে শুনতে অনেকেই চুপসে থাকেন।


তবুও আশাহীন নই আমি। সক্কার বাহাদুরের নিশ্চিতভাবে সুমতি হবে। সে আশায় আছি। শোকে আছি। আনন্দ আসবে।

নির্মম-দুর্ভাগা এ দেশের সিনামা শিল্প

যখন প্রণোদনায় টিকে থাকা গার্মেন্ট ব্যবসা খ্রাপ করে; তখন সক্কার বাহাদুরের মন খ্রাপ হয়। সুশীলরা বলে সমাজে বেশ্যা; হতাশাগ্রস্থ মানুষ আর চুরি;ছিনতাই বাড়বে।

কিন্তু প্রণোদনার টাকার ভাগ গার্মেন্ট কর্মীরা পায় না। পায় মালিকরা। যারা  ফরেন বায়ারের সাথে ডিল করার নামে থাই কন্যাদের সাথে মউজে মজতে  ব্যাংকক-পাতায়া আর ফুকেটের স্টার; থ্রিস্টার-ফাইভ স্টার হোটেলের কক্ষ গরম করে তোলেন।

বিচের  আধো উষ্ণবালিতে পা ঠেকান।  জানালা খুলে দিয়ে থাই কন্যার উড়ন্ত চুলের ভিত্রে খুঁজেন ব্যবসা পাকা করার সন্ধি।  আহারে দুইন্নাই।

সেই দেশের একই সক্কার যারা প্রণোদনাহীণ  সিনামা শিল্প কে হত্যা করার চেষ্টা করছে। একবারো ভাবছে না  সিনামা শিল্প ধ্বসে পড়েছে; এখন কব্বর হয়ে গেলে গুটি কতক লোক ছাড়া বাকি সবার কি হাল হবে? তাদের জীবন-জীবিকা-সংসার কীভাবে চলবে।

কীভাবে নির্মিত হবে আগামীর বিনুদন শিল্প।নিজের সংস্কৃতি-পরিবারের টানাপড়েনের চিত্রায়ান কি করে সম্ভব।  কি করে গড়ে উঠবে সংস্কৃতির ভিত।

কেবল সাময়িক লাভ আর উত্তেজনার আফিস বিক্রি কি দীর্ঘ মেয়াদি সমাধান। হতে পারে না। তবুও হতে যাচ্ছে।  শুক্কুরবার মুক্তি পাচ্ছে বঙ্গ দেশে হিন্দি সিনামা।

বড়ই নির্মম-দুর্ভাগা এ দেশের সিনামা শিল্প! আহা সিনামা।

বাংলা সিনেমা যখন ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য চেষ্টা করছে সে সময় ঠাডা পড়লো


বাংলা সিনেমা যখন ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য চেষ্টা করছে সে সময় ঠাডা পড়লো-বাংলাদেশের হলে মুক্তি পাইতে যাচ্ছে হিন্দি সিনামা। মনে বড় কষ্ট নিয়ে এ লেখা লিখছি।-

বাংলা সিনেমার প্রতি আমার প্রচণ্ড টান ছিল এবং এখনো আছে; এটা কারো কাছে হাস্য রসের বিষয় হতে পারে; কারণ তাদের মত হিন্দি ও ইংরাজি সিনেমা দেখে জাতে ওঠার ভাবনা আমার কোনো কালেই ছিল না। এখনো নাই।

বাংলাদেশের সিনেমার প্রতি আমার এ ভীষণ রকমের টানের বড় কারণ আমাদের পরিচালকরা আমাদের সময়কার ঘটনা এবং ভাবনার পরিধি নিয়ে কাজ করেন।

 নিম্ন আয়ের দেশ হিসাবে আমাদের চাওয়া দু মুঠো ভাত, মোটা নারী, আর  বৈকালিক বিনুদন হিসাবে চা সিগারেট কিম্বা ছোলাই মদ। আর আমার নিজের চেয়ে খারাপ অবস্থায় থাকা মানুষকে ফাঁপর দেয়া। এ সবই সিনেমার অনুষঙ্গ।

তাই এখানে যখন নায়ক মান্না ওই খামোস বলে হাত মুঠো করেন; তার ভয়ে  গডফাদার চুপসে যায়; তখন করতালিতে মুখর হয়ে ওঠে  সিনেমা হলঘর।

 অথবা চটুলগানের সাথে যখন পপি তার বিশলাকায় রানের দুলুনি তে সনিমোর পর্দা কাঁপিয়ে তোলেন তখন সবাই হিসহাস করেন।


 সেই সিনেমা হলে নিশ্চিতভাবেই কখনো কখনো ময়ুরীর উদোম রানের  গোশতের থর থর কাঁপন, মুনমুনের মধ্যম আকৃতির বুকের দুলুনি, স্লো মোশনে খল নায়িকা নাগমার  ফুলে ওঠা বুকের ওপর অ্যাকশন কারো কারো কাছে অশ্লীল-চোখ বন্ধ হয়ে আসে।

কারো কাছে  বমির ভাব হয় আজাদ খানের সিনেমা দেখলে। কারো সোহেল-শাপলা  শারিরীক বিত্তবলয় খ্রাপ লাগে। আমি অস্বীকার করছি না।

ভালো সিনামাও  এ বঙ্গে হয়েছে; হয়ে আসছে এবং সামনেও হবে। হয়ত আমাদের  ধুম থ্রি'র মত সিনেমা বানানো কিম্বা  গুণ্ডের মত তর্ক সৃষ্টি করে টিকে থাকার মত শক্তি এ দেশের নির্মাতাদের নেই।

তবে এ টুকু তো আছে যে গেরিলা,  ব্যাচেলর কিম্বা অগ্নির মত সিনেমার জয় হয়েছে। ওরা ১১ জনের মত সিনেমা কেবল আমাদের ইতিহাসকে সমৃদ্ধ করেনি চলচ্চিত্র ইিতিহাসে বিষয় বৈচিত্রে এক অনন্য সংযোজন নিয়ে এসেছে।

বেদের মেয়ে জোছনা কিম্বা হাঙর নদীর গ্রেনেড, অথবা মাটির ময়না কি আমাদের সম্মান বাড়ায় নি।

সিনেমা হলগুলোতে আমরা খুবই খ্রাপ পরিস্থিতির কথা বলি। বলি ভালো সিনেমা হচ্ছে না। ইনডিয়ার ভালো সিনামা বানায়; আমি দ্বিমত করি না।  আবার পুরোপুরি একমতও হই না।

কারণ ইনডিয়ার বহু সিনেমা আছে যে গুলো হলিউডের  সিনেমার কাহিনী নকল। আমরা নকল করি হিন্দি সিনামা কিন্তু মৌলিক কাহিনী চলমান  সঙ্কট নিয়ে সিনামা হচ্ছে। সবশেষে পিপড়াবিদ্যার কথাই ধরুন। নাটক কিম্বা সিনামা হয়েছে কিনা তা নিয়ে তর্ক হতে পারে; কিন্তু সিনামার গল্পটা একেবারেই সমসাময়িক এবং প্রাসঙ্গিক।

ইনডিয়া সিনামার বাণিজ্যিক প্রসারে যে পরিমাণ বিনিয়োগ ও প্রচার যন্ত্র ব্যবহার করে বাংলাদেশে তা হয় না। বাংরাদেশের প্রচার মাধ্যমের সাপ্তাহিক দু পৃষ্ঠার এক পৃষ্ঠা ইনডিয়ার জন্য বরাদ্দ থাকে।

ডিজিটাল সরকারের ৭ বছরেও ডিজিটাল ইকুইপমেন্ট আসেনি এফডিসিতে। হলফ করে বলছি আমরা এখানে সিনামা শিল্পকে গলা টিপে হত্যা করতে চাই। সে জন্য আজকের এ হাল।

এখানে সসিনেমা নিয়ে পড়াশোনা করার জন্য  ইন্সটিটিউট ও ইউনিভার্সিটির ডিপার্টমেন্ট খোলা শুরু হয়েছে; মাত্র। এখানকার পরিচালকরা অন্যের সহকারি থেকে শিখেছে। কয়েকজন ইনডিয়া ও আম্রিকা থেকে পড়ে এসেছেন।

নায়ক-নায়িকারা তাদের সুরত ভাল- সেটি কাজে লাগিয়ে সিনেমায় নেমেছেন।

এত সব প্রতিকূলতায়  দেশে অন্তত ২০/২৫ টি ভালো সিনেমা হয়, সে জন্য  নির্মাতাদের  সম্মান জানানো  উচিৎ।


আমাদের নায়িকারা যখন সিনেমায় পা রাখেন-তখন প্রযোজকরা তাকে বেডে ডাকেন, নায়ক তার জন্য উতলা থাকেন।  এটা হয়তো সবখানেই হয়। হতে পারে; তাতে কি।  কিন্তু  সানি লিওনের মত পর্ন স্টারকেও  ইনডিয়া বাজারজাত করতে পেরেছে। ক্যাটরিনা, দীপিকা কিম্বা রানীর কথা ভাবুন না। ঐশ্বরিয়ার কথা বাদই দিলাম।  তাকে নিয়ে আমাদের  তরুণদের আগ্রহ নিশ্চিতভাবেই সবই বুঝতে পারে না।

 এমনকি ভারতীয় নায়ক শাহরুখ, সালমান, জন, ইমরান, হৃতিক- বা আরো যারা আছেন।  তাতেদর জন্য আমাদের অনেতক তরুণীর জীবন যায় যৌবন ভেসে যায়। এ জন্য আমি আমাদের তরুণ-তরুণীদের দোষ দিই না; কারণ আমরা আমাদের চেনাতে পারিনি।


 ববিতার মত নায়িক এ দেশের পর্দা কাঁপাননি  বিশ্ব দরবারে বাংলা সিনামার সমৃদ্ধির কথা জানিয়ে দিয়েছেন। সে  সব নায়িকাকেও এ দেশের ক্ষমতাবানদের হুমকির মুখে পড়তে হয়েছিল।


 সিনামা কি কেবলই বাণিজ্য? মনে হয় না। কিন্তু বাংলাদেশের ব্যবসায়িকভাবে সফলতা অর্জনের জণ্য লড়াইটা বেশি। কারণ এখাতে সরকারের সহযোগিতা কিছু আর্ট ফিলিফেমের জন্য। বাণিজ্যিক সিনেমায় সরকার পৃষ্ঠপোষকতা করে না। উল্টো সুন্দরী নায়িকার ডাক পড়ে সেন্সর বোর্ড সদস্যের বেড রুমে-এ গুলো ওপেন সিক্রেট।

একটা বড় রকমের গুণ্ডামি ঘিরে রেখেছে সিনামা। সেই সুযোগটা নিয়েছে প্রদর্শকরা। যে সব প্রদর্শক তাদের হলগুলোতে  অশ্লীল কাটপিস দেখিয়ে পরিবেশ নষ্ট করেছেন, সিনেমা দেখার জন্য সঙ্গীনীর সহায়তার নামে বেশ্যার বাজার তৈরি করেছেন; ধীর লয়ে তারাই বলছেন হল টিকিয়ে রাখতে হলে এখন হিন্দি সিনেমার বিকল্প নেই।


বড় আফসোস-বঙ্গবন্দূ কন্যা এখন ক্ষমতায়। অথচ বঙ্গবন্ধু নিজ হাতেই এ দেশে  উপমহাদেশীয় সিনেমা আমদানি প্রদর্শণ নিষিদ্ধ করেছিলন। সেটি রক্ষা হলো না। শুক্কুরবার হিন্দি সিনামা ওয়াটডেট মুক্তি পাচ্ছে।

যারা আমাদের সংস্কৃতি থেকে দূরে সরে গিয়ে ভারতীয় বাণিজ্যিক অশ্লীলতাকে শিল্প বলে চালাতে চান তাদের সাথে বাৎচিৎ করার মত ইচ্ছে আমার নেই।

তবে দেশের সনেমা শিল্পকে টিকিয়ে রাখার  স্বার্থে একসাথে একমত  হয়ে একই আওয়াজ তুলতে হবে। সময় এখন নিজের সিনেমাকে প্রটেক্ট করার।  জয় হোক সবার। জয় হোক বাংলাদেশের সিনেমার।  

নারকীয় তাণ্ডবকারীদের একইভাবে গাড়িতে ভরে আগুন ধরিয়ে দেয়াটাই-ন্যায় বিচার


কথাটা গত বছরও বলেছিলাম; এত্ত কিছু উন্রা বের করতে পারেন; গান পাউডার ;প্রেট্রোল ঢেলে যারা গাড়িতে আগুন দিয়ে মানুষ হত্যা করে; সে সব কিট পতঙ্গকে খুঁজে বের করতে পারেন না। এটা বিশ্বাস করতে পারি না। তবুও তাদের সীমাবদ্ধতার প্রতি শ্রদ্ধা রেখে মনে করি- ওই নারকীয় তাণ্ডবের পতঙ্গদের ধরে একই রকমভাবে গাড়িতে ভরে গান পাউডার দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়াটাই আমার কাছে-ন্যায় বিচার।
সরকার বাহাদুর কি কাজটা করবেন? আশায় আছি।
নোট: ১:
রংপুরে মঙ্গলবার রাতে বাসে যারা আগুন দিছে- তাদের ধরে শাস্তি নিশ্চিত করার অপেক্ষায় রইলাম। যদিও গান পাউডার অলারা সব সময় শাস্তির বাইরে থাকে।
নোট:২: সম্ভবত ২০০৪ সালে শেরাটন মোড়ে সাকুরা বারের সামনে বিটিআরটিসি'র দোতলা বাসে গান পাউডার দিয়ে আগুন দেয়া হয়েছিল। সে সময়কার সরকার বলেছিল এটা বিরোধী দলমানে আম্লীগ করেছে। নানাকসহ আরো অনেক যুবলীগ কর্মীকে অভিযুক্ত করে মামলাও করেছিল নিরাপত্তারক্ষীরা। কিন্তু আম্লীগ বলেছিলে সরকার এ কাজ করে তাদের উপ্রে দোষ চাপিয়েছিল।
নোট :৩: ক্ষমতায় আসার পর আসল অপরাধীদের খুঁজে বের করেনি আম্লীগ। গোড়ায় হাত দিলে আমাদের মত পাবলিককে পুড়িয়ে মারা ষণ্ডাদের রুখে দেয়ার ক্ষেত্রে আমরা সম্পূর্ণ না হলেও অনেকটা সফলতা আসতো।