মোদি বা মনমোহন কেউ-ই আমাদের বন্ধু নন

মনমোহনের জন্য খারাপ লাগছে। আহা বেচারা। ১০ বছরের প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন বাংলাদেশের  অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে যতাটা ভেবেছেন, তার কিছু অংশ নিজের দেশ নিয়া ভাবলে হয়ত, এ  বিপর্যয় তার ও কংগ্রেসের হতো না।

তবে মনমোহন বাবুর পলিটিক্যাল জ্ঞান খুব ভালো।  তিস্তার জল নিয়া যে নাটকটা দাদা বানাইছেন, এটা একেবারেই সুপার হিট। আমির খান পর্যন্ত ফেল মারছে। এ রকম সিনেড্রামা, দ্বিতীয়টা হালনাগাদ তৈয়ার হয়েছে বলে মনে হয় না।

মনমোহন বাবু  নাকি সবজি খায়, আটা খায়। ঢাকায়  সোনারগাঁতে যখন রাত যাপন করেছেন, সে সময় তার সাথে আটার বস্তাও বাংলাদেশ এসেছিল।

আমরা বিয়ে করে নতুন জীবন শুরু করতে  মমনমোহন বাবুর দেশে যাই, আলুর দম, রুমালি রুটি, মাসালা দোসার স্বাদ নিতে।  বিয়ের আগে শপিং করি, শরীররে জং ধরলে তাদের চিকিৎসা কারখানায় যাই।

নির্বাচন মানেই পরিবর্তন।  নিশ্চিতভাবে এটা বলা যায় না।  তবে উপমহাদেশে এমনটাই রেওয়াজ।
মুখোশের আড়ালে কংগ্রেস  ভয়ঙ্কর একটা রাজনৈতিক দল। মোদি ও তার ভারতীয় জনতাপার্ট্রি কম না। তবে কংগ্রেসের জমানো ১০ বছরের পাপ আর  বাসে ট্রামে ধর্ষণ মানুষকে বিষিয়ে তুলেছে ভারতীয়দের। মোদির পাপা গুলো মানুষ ভুলে গেছে।  অনেক সময় তো- তাই হয়েছে। আমরা তো আরো বেশি  তাড়াতাড়ি ভুলে যাই।  আজকে মারলে কালই শেষ!

ভ্যাজিটিরয়ান  মনমোহন বাবুর দণ্ডায়মান হতে সময় লাগে। লাগবেই।  মোদিরও লেগে থাকতে পারে। তবে   বিপর্যয় যে সময় মানে না তার ছোট্ট উদাহরণ হয়ে থাকলো কট্টরপন্থী মোদি।

মুসলমানদের ওপর নিয়মিত  নিপীড়ন ইনডিয়ার কট্টরপন্থী হিন্দুরা করে থাকে। মুসলমানদের সংস্কৃতি, সম্পত্তি এবং জাসিতত্ত্বা সেখানে হুমকির মুখে। কাশ্মীরে ধুঁকে ধুঁকে মরছে মুসলমানরা।  মুসলিম নারীর সম্ভ্রম সেখানে  জলের দামে মিলে। গুজরাটের ফাতেমার গ্যাং র্যাপের প্রমাণ মিললেও শাস্তি হয়নি। ভারতীয় মানবাধিকার কমিশন রিপোর্টের বস্তা বানিয়েছে। কিন্তু আমল করেনি। তাই বোধ করি ধর্ষণ মাত্রা ছাড়িয়েছে, দেশটিতে। মোদি ক্ষমা চাননি তার পাপের জন্য।

কংগ্রেস, বিজেপি কেউ মুসলমানদের বন্ধু নয়। বন্ধু হতে পারে না। তবুও মুসলমানরা যে দেশ থেকে  ব্রিটিশদের তাড়িয়েছে, তাড়ানোর আন্দোলনে রক্ত দিয়েছে, সে দেশটাকে তারা নিজের দেশই মনে করে। অন্তত এক দশকেরো বেশি সময় ধরে ভারতের মানুষ সম্পর্কে যা জানি, তা থেকে  এটা নিশ্চিত।

মুসলমানদের নিরাপত্তা তাদের নিজেদেরই নিশ্চিত করতে হবে। সেটি অভ্যন্তরীন রাজনীতিতে নিজের গুরুত্ব ও সমস্যা সমাধানের য়ৌক্তিক সমাধান  খুঁজে বের করার মাধ্যমটা একটা বিবেচনা হতে পারে।
মুসলমানরা নিপীড়িত জাতি, সেটি যেখানেই হোক। যে দেশেই হোক।

মোদি বা মনমোহন কেউ-ই আসলে আমাদের বন্ধু নন। ভারত কখনোই আমাদের বন্ধু হতে পারে না। এটা কৌশলগত কারণেই হতে পারে না। তাকে নানা রকমের ফন্দি ফিকির করতে হয়। যদি বন্ধু হতো তাহলে স্বাধীনতার পর ৪৪ টি বছরের কোনো একটা সময় আমরা সেটি দেখতে পেতাম। তাহলে তিস্তায় ৪০ কিউসেক পানি গড়াতো না। পদ্মার বুকে ধুধু বালু চর থাকতো না। বাল কাটার ব্লেড আর চুল কাটার খুর, ঘুম পাড়ানোর জল আর পরকীয়ার তরিকা সমেত আফিম-সিরিজ আসতো না।
ভারতের বন্ধুত্বের নমুনা আমি  দেখতে পাইনি, হয়ত আমি কানা। আপনারা যারা দেখতে পেয়েছে, তাদের ভবিষ্যত উজ্জ্বল। ফকফকা।
 

ফুলগুলো এখন রক্ত! মৃত মানুষের মুখ!


ফুলগুলো এখন রক্ত! মৃত মানুষের মুখ!
কৃষ্ণচূড়া, রাধা চূড়ায় ভরে আছে নগর
তির্যক হাসি তার, কি কঠিন, রূঢ়

কার প্রতি এ উপহাস? কাকে তাচ্ছিল্য করছে মৃত মানুষের মুখ!

আগে ফুল দেখলে প্রেম জাগতো মনে!
জুড়িয়ে যেতো চোখ
এখন ভয়।আতঙ্ক।

মাথার পেছনে আঘাত করা মানুষ গুলো ডুবে যেতে থাকে
শীতলক্ষ্যার ঘোলা জলে।
সেই সাথে রাষ্ট্র!

মানবাধিকার ভেসে থাকে কথায়-
কমিশন চেয়ারম্যান ড.মিজান-
 নিজের শরীর সামলাতে
প্যান্টের সাথে দড়ি টানা দিয়েছেন কাঁধে!

অনেক মানুষের মস্তক-
শরীর পঁচে গেছে-
ডোবায়, নালায়, ডাস্টবিনে,বাগাড়ে

লোবান জ্বলেনি তার জন্য
সুগন্ধি ছিটায়নি কেউ!
মার্কিন কাপড় পরার সুযোগ হয়নি।
হবার কথাও নয়।
বেঁচে থাকাটাই এখন একটা মিরাকল।

ক্ষমতার যৌনতা কীভাবে চুষে নেয় নৈতিকতা !

সমাজের দু চিত্র। একটা ইতিবাচক। আরেকটা নেতিবাচক। তেমিন মানুষেরও দুটো রূপ। মুখোশ খুলে আমরা নতুন আরেকজনকে আবিষ্কার করতে পারি!

ধারণা করি এ কারণেই বাংলার প্রথম সবাক সিনেমার নাম হয়েছিল 'মুখ ও মুখোশ'। আসলেই তো আমরা সবাই মুখোশ পরে থাকি। আড়ালের ছবিটা আমরা লুকাই। ভীষনভাবে লুকাই।

দেশে যে হারে মানুষ গুম ,খুন, নিখোঁজ  হচ্ছে সেটা হালাল করার নানা রকমের বিষয়াদি আমরা হাজির করছি। অভিযুক্তরা এ সব স্বীকার করছেন না। উল্টো তাদের ক্ষমতা আর বল প্রয়োগে সাধারণ মানুষ চিড়ে চিপ্টে।

তাতে কারো কিচ্ছু যায় আসে বলে মনে হয় না।  কারণ নানা আবরণে মানুষকে ঢেকে দিয়ে হত্যাকে এক রকম জায়েজ করে দিযেছি।  এটা কোনো ভাবেই কাম্য হতে পারে না।

যাদের বলা হয় 'সিভিল সার্ভেন্ট' তারা এ শব্দটা পাল্টে 'পলিটিক্যাল সার্ভেন্টে' রূপান্তরিত হয়েছেন। কিছু ব্যাতিক্রম অবশ্যই আছে!

সময় কীভােব বদলে যায়, অবাক লাগে। একটা সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে দেশের  প্রতিটি ঘটনার প্রতিক্রিয়া হতো। আজ হয় না। কেনো হয়না সেটি আমি জানি, অনেকেই জানেন। তবে সবচেয়ে ভালো যারা জানেন তারা সে সময়কার প্রতিক্রিয়া দেখানো লোকেরাও।

সে সময় মনে হতো তারা আসলেই কত মহান। এ রকম খারাব কাজের প্রতিবাদ করছেন। আজ মনে হচ্ছে কেবল দলীয় সঙ্কীর্ণতায় সে সব  ছিল লোক দেখানো।

একটা ঘটনা বলি- ২০০৩ সালের দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ইভনিং শিফটে বাড়তি টাকা নিয়ে কোর্স চালু করার একটা প্রবণতা দেখা দিলে সবাই মিলে এটা রোধ করেন।  দুএকটি ব্যাতিক্রম ছাড়া অন্য ডিপার্টমেনট বাধ্য হয়, আন্দোলনের কাছে মাথা নত করতে!

কিন্তু এখন প্রায় সব ডিপার্টমেন্টরই এ রকম একটা বাণিজ্য আছে। আরো অবাক করা বিষয় হলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে টিভি ও ফিল্ম নিয়ে একটা ডিপার্টমেন্ট খুলেছে, দিনে পড়ায়, তবুও যেখানে মাস্টার্স পড়তে হলে প্রায় দেড়লাখ টাকা গুনতে হচ্ছে। এ রকম নৈরাজ্যের সময় কাউকে প্রতিবাদি হতে চোখে পড়ছে না।

আনোয়ার স্যার, আরেফিন স্যার, মেসবাহউদ্দিন স্যার, সুলতানা ম্যাডাম, নাসরিন ম্যাডামরা এখন কই। কত রকমের ব্যাখ্যা নিয়েই না তারা হাজির হতেন।  রাজনীতিকে আমি রাজনীতির নিক্তিতে মাপি। কিন্তু আমার প্রিয় ক্যাম্পাসের কিছু মানুষের রাজনীতিকে আমি সেই নিক্তিতে মাপতে চাইনি।

 তবুও মনে হচ্ছে ক্ষমতার বাইরের রূপ মুখোশ। ভেতরেরটা মুখ-বা আসল রূপ! 

আবার ভিন্নভাবে দেখুন না।  সদরুল স্যাররা কি রকমের আপসকামী। ভয়ে মিইয়ে আছেন। কোনো প্রতিবাদ নেই।  ওবায়দুল স্যারকে বাধ্যতামূলক ছুটি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়। কিছুই হয়নি। তিন্তু ২০০২-২০০৩ সালের দিকে শফিক স্যারের ছুটি নিয়ে কী ক্যালেঙ্কারিই না হয়েছিল। ভাবছি, আর উন্মোচন করছি ক্ষমতার যৌনতা কীভাবে চুষে নেয় নৈতিকতা।

আতঙ্ক, ভয়!



জোছনা বিছিয়ে দিলো শ্বেত-শুভ্র চাদর
ঝিঁ ঝিঁ ডাকছে। ধানের ক্ষেতজুড়ে সবুজের সমারোহ
অদ্ভূত সেই রাত; আমুদে।
দখিনা বাতাসে উড়ছে তোমার চুল।

মনে পড়ে প্রিয়তমা। সেই সব দিন।

বয়স তখন কত আমার?
১৭ কিম্বা ১৮ !
তোমারও  কাছাকাছি।
চিন্তাহীন, আতঙ্কমুক্ত সময়
হারিয়ে যাওয়ার ভয় নেই! কী দারুণ না ছিল সেই সময়টা ?

এখন আমি ৩৪। মায়াবী গ্রাম ছেড়ে নগরে!
তবুও  আতঙ্ক, ভয়!
গুম, অপহরণ, খুন- শব্দগুলো তীরের মত বিঁধছে।
নদীতে, ডোবায়, নর্দমায়, ডাস্টবিনে বনি আদমের লাশ

কী যে এক আতঙ্ক প্রিয়তমা!
এই বুঝি তুলে নিবে সাদা মাইক্রোবাস, কালো গ্লাসটা উঠে যাবে
চমশা সরিয়ে কেউ একজন বলে উঠবে, 'অনেক বেড়েছিস!'

আসলেই তো তাই?

আগে বাবা ডাকতাম, এখন আমাকেও কেউ ডাকে!
এই ডাকটা আবার কারো অসহ্য লাগতে পারে!
তবুও সন্তানের জন্য নিরাপদ একটা রাষ্ট্র কি আমি চাইতে পারি না? পারি।
কারন এই দেশ আমারো।

কার কাছে চাইবো সেটি-
কেউ কি বলতে পারেন?

আমি ভয় পেতে চাইনা, আতঙ্কগ্রস্থ হতে চাইনা।
নিরাতঙ্ক মনে পথ চলতে চাই,
ইচ্ছে হলেই হারিয়ে যেতে চাই
এখানে সেখানে
রূপসী বাংলার এ প্রান্তে ও প্রান্তে-যেখানে আমার ইচ্ছে।

আজ ভাবছি- ভালো আছি! কাল  কি হবে?
আমাকে তো তুলে নেয়নি-
অন্যকে নিয়েছে বলে যারা ঝিম মেরে আছি!
তারা কি নিশ্চিত, কাল আমাকে তুলে নেবে না,
সাদা পোশাকের কোউ লাত্থি মেরে বলবে না 'তুই শেষ!'

এখনই সময় বন্ধু-প্রিয়তম
হাতে  রাখো হাত
গড়ে তোলো প্রতিরোধ! 

খুঁজতাছি বঙ্গদেশে জন্মানো মেধাবী কারা আছিলো-


সামুতে আমার ব্লগে একজন  লেখার নিচে মন্তব্য করেছে- 'ডাক্তাররা মেধাবী। আর সাংবাদিকরা এইট পাস।'

খোঁজ নিয়া জানলাম- ডাক্তাররা যে 'মেধাবী' এই শব্দটা সম্বাদিকরা বানাইছে। এখন অই সম্বাদিকগো ডাক্তাররা ঠেঙ্গাইতাছে। আমরা সবাই মজা পাইতাছি।

ক্যামনে বানাইলো? এক সম্বাদিকরে জিগাইলাম- হে কইলো 'সাধারণ  পারসেপশন' অইলো ডাক্তারি যারা পড়ে তারা মেধাবী!

তাইলে প্রশ্ন অইলো- যারা ডাক্তারি পড়েন নাই তারা মেধাহীন।!!

খুঁজতাছি বঙ্গদেশে জন্মানো মেধাবী কারা আছিলো-

যাদের পাইলাম তাগো নাম দিলাম- এরা কি কেউ ডাক্তার আছিলো? জানলে উত্তর দিয়েন-

১. অধ্যাপক সত্যেন বোস।
২. ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
৩. অধ্যাপক জামাল নজরুল ইসলাম।
৪. জ্ঞানতাপস অধ্যাপক আবদুর রাজ্জাক।
৫. অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সয়ীদ।
৬. সরদার ফজলুল করিম।
৭.শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীন
৮. আহমদ ছফা।
৯.শামসুর রাহমান।
১০. আল মাহমুদ।
১১. ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ।
১২. জহির রায়হান
১৩. রুনা লায়লা
১৪. সাবিনা ইয়াসমীন
১৫. এবিএম মূসা
১৬. অধ্যাপক নুরুদ্দীন
১৭. অধ্যাপক গোবিন্দ চন্দ দেব
১৮. হরিদাস কপালী

 আরো অনেক...

তয় একজন ডাক্তারের সাথে আমার দেখা হয়নি। ডায়াবেটিক সমিতির প্রতিষ্ঠাতা ডা. ইব্রাহিম। তার একটা কতা আমার খুব ভালো লাগে- ' আপনাদের সেবা করার সুযোগ দেয়ায় আমরা কৃতজ্ঞ। ' বারডেম হসপিটালে ঢোকার মুখে লেখাটা চোখে পড়ে।  আমরা  এ রকমই মনে করতাম ডাক্তারদের। কিন্তু এখন সেটি পারছি না বলে- দু:খিত।

ডাক্তর- প্রেম,অপ্রেম এবং অতিপ্রেম!

নোট: ডাক্তর বালিকারা আমার অতি পছন্দের।  আমার তরুণ বয়সে (আমি কি বুইড়া অইয়া গেছি!) কয়েকজন ডাক্তর আমাকে তাদের জীবনে পাইতে চাইছেন। তাদের আবেগের প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই  সত্য কয়টা ঘটনা বলছি।

ঘটনা:
ডাক্তরদের বিষয়ে আমি বছরখানেক আগে একটা লেখা সামুতে দিছিলাম। তারপর ধরেন, আমার গুষ্টি উদ্ধার। তাই বলে চুপ কইরা থাকন যায়। রাজশাহীদের সম্বাদিকগো পিটাইছে ইন্টার্ণি ডাক্তররা। ওগো কাম সম্বাদিক পিটানো! সেই তর্ক না করে কিছু অভিজ্ঞতা শেযার করি।

এর আগে দেখলাম- বারডেমে চিকিৎসকরা এক রোগীর আত্মীর বিরুদ্ধে মামলা ঢুকছে। আর রোগীর স্বজনদের মারধর এখন হসপিটালেণ একটা নৈমিত্তিক ঘটনায় রূপান্তর হয়েছে। আবার বলপ্রয়োগে শান্ত হতেও দেখা যায়।

যেমন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রের ভুল চিকিৎসার দায় শিকার করেছে ল্যাব এইড। ক্ষতিপূরণও দিয়েছে। একজন শিক্ষকের ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটেছে।  

এক.
মাস দুয়েক আগের কতা। বঙ্গবন্ধু হসপিটালে আউটডোরে গেছি, নিজের একটা সমস্যা লইয়া। তিনজন ডাক্তার বসে আছেন। দুইজন স্মার্টফোনে  ব্যস্ত। একজন নারী ডাক্তার বিরক্তির সাথে কইলেন- বলেন-কী সমস্যা। কইলাম। ডাক্তর কি লিখবো- এইডা লইয়া টেনশনে। সিরিয়াল  এন্ট্রি করা এক নার্স বললো আফা দুইডা সিল মাইরা দ্যান, আর কন স্ট্রিম বাথ লইতে!  তাই দিলো।  আমি চইলা আইলাম।

দুই.

২০০৯ সালের কতা। বারডেম হসপিটালে। শাহবাগে। সদ্য পিতা হলাম। ডাক্তর কইলো পুলা পুরাই সুস্থ। ফটো লাইটের তলে কতক্ষন থাকবো, তারপর  লইয়া যাইবো ওয়ার্ডে।  আমি  তখনো পিতা হবার পর ফেসবুকীয় উচ্ছ্বাস উপভোগ করতে পারছিলাম না। মিষ্টি আনা লাগবো- এক নার্স কইলো তারাতারি মিষ্টি আনেন।

ছোট ভাইকে পাঠাইলাম। আমার মা তার প্রথম নাতিকে  কোলে লইয়া বইসা আছেন। আমাকে ডেকে কইলেন- নাতি তো কান্দে আস্তে। একটা সমস্যা আছে। ডাক্তররে ক। আমি একজন ডাক্তরের কাছে যাই। তিনি কইলেন- এইডা ব্যাপার না।

আমার মা মানতে চাইলেন না। পরে ডাক্তর আমগো জোরাজুরি দেইখা কইলো পাশে শিশু ওয়ার্ডে লইয়া যান। দ্রুত নিলাম। ছেলেটার শরীর নীল অইয়া যাইতেছে। ডাক্তর বিপ্লব কইলো এখন লাঞ্চ আওয়ার। পরে আয়েন। আমি অনেক অনুননয় করলাম। কিন্তু ডাক্তরের মন গলাইতে ব্যর্থ। শেষে চিৎকার করলে সিনিয়র একজন এসে কইলেন- এ বাচ্চাকে এখনই আইসিইউতে দাও। তারপর স্কাবুর সামনে ১৯ দিন আমরা কাটিয়েছি।

তিন.
আমার মা অসুস্থ। তার মেয়েলি সমস্যা। আমি এই ডাক্তার ওই ডাক্তার দেখাই সবাই কয় কিচ্ছু অয় নাই।  পরে একটা টেস্টা তিনবার করানোর পর পরমাণুতে ধরা পড়লো তার সমস্যা আছে। তার আগে ল্যাব এইড, পিজি এবং ইবনে সিনায় টেস্ট হইলো। সব ভালো।


চার.
আমার আব্বা অসুস্থ। একটা বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি। তখন মোবাইলটা নতুন আইছে।  ডাক্তারে খুঁইজা পাই তো নার্সরে পাই না অবস্থা।  রাইতের কালে নার্স প্রেমালাপে মগ্ন। আমি খুবই  বিনীতভাবে তার সহায়তা চাইলে- যান, আইতাছি এইসব কইয়া পার করে। পরে আর কি!  উপরের থেকে চাপ দিয়া কাম করাইতে অইলো!

পাঁচ.
আম্মার দাঁতের সমস্যা। পিজি হসপিটালের ডেন্টাল বিভাগের দ্বারস্থ হইলাম। কইলো ফিলিং করলে চলবো। তা করাও হলো। কিন্তু নিয়ম মাননের পরে দুই ঘন্টা পরে ফিলিং হাওয়া। পরে বাইরে এক ডাক্তারকে দেখাইলাম। কইলো অপারেশন লাগবো। আসলে তাই ইনফেকশন হয়ে গেছে, মাড়িতে। অপারেশন করানো হলো। এক দশকেরো বেশি সময় ধ:রে তিনি, আলহামদুলিল্লাহ সুস্থ।

ছয়.
আমার উচ্চ রক্তচাপের বেরাম। ঢাকা মেডিকেল থেকে কইলো হার্টে প্রবলেম। ছুইটা গেলাম হার্ট ফাউন্ডেশনে। সেখানকার ডাক্তাররা টেস্ট কইরা কইলো ঢামেক ভুলি কইছে।

সাত.
আমার এলা্কার এক ভদ্র মহিলা ক্যান্সারে আক্রান্ত । লইয়া গেলাম ক্যান্সার হাসপাতালে। সেখানে ডাক্তার দেখাইতেই দিন শেষ।  পরের দিন কইলো  রেডিও থেরাপি লাগবো- তয় সিরিয়াল  পাইতে পাইলে দুই মাস। ট্যাকা দিলে দ্রুত।

এ রকম ঘটনা লিখতে লিখতে পাতা ভরে যাবে- শেষ হবে না।

এবার কিছু ভালো খবরও বলি-

এক.
 আমাদের এক ছোট ভাই এক্সিডেন্ট কইরা আহত। তারে কুমিল্লা মেডিকেলে নেয়া অইলো। ডাক্তাররা তারে ৬ ঘন্টা অপারেশন করছে। সব ডাক্তরা ছুটোছুটি, মনে অইবো তাগো। আসলেই তো তাই অওনের কতা।
 পরে ঢাকায় তার অপারেশন অইছে- ঢামেকে। ৭ ঘন্টা। ডাক্তার ফিরোজ কাদির করছে। তখন তার মুখের দিকে তাকিয়ে মনে হযেছে ডাক্তররা আসলেই মহান।

 দুই.
আমার  উচ্চ রক্তচাপ লইয়া অনেক ঘাটের পানি খাইবার পর বরেন চক্রবর্তীর দ্বারস্থ অইলাম। তার পরামর্শে ভালো আছি- আলহামদুল্লিাহ। সমস্যা হলে ফোন করা যায়, পরামর্শও দেন। বিরক্ত হন না।

তিন.
আমার এক খালা অসুস্থ। তাকে লইয়া  সলিমুল্লায় গেলাম। সেখানে আমাদের ছোট ভাই হিমু পড়তো। তার সুবাধে চিকিৎসকরা খালার অতি যত্নে অপারেশন করে  দিযেছেন।

আমার নিচের উদাহরণগুলো বেশি করে চাই। উপরের গুলো এড়িয়ে চলতে চাই।সম্বাদিক পিটাইয়া, স্যার বলতে বাইধ্য কইরা  ডাক্তররা আসলে নিজেদের অবস্থান হারাচ্ছেন। আমরা সেটি চাই না।

দল-মত- সামর্থ-ধর্ম-শ্রেণি বিবেচনা করে চিকিৎসা নয়। সবার প্রতি সমান গুরুত্ব দরকার। খুবই দরকার। একজন ডাক্তরের ক্ষণিকের ভুল সিদ্ধান্ত একজন মানুষের দৈহিক মৃত্যু ঘটাতে পারে। সচেতন হলে এটি এড়ানো সম্ভব।

আমাদের সামনে ডাক্তারের অবহেলার অনেক চিত্র আছে। অন্তত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫ থেকে ৭ জন ছাত্র শিক্ষক ডাক্তারের অবহেলায় মারা গেছেন।এমন মৃত্যু অমার্জণীয় অপরাধ হিসাবে গণ্য। টাকা দিয়ে দায় সারলেও একজন মানুষের জীবন থামিয়ে দেয়ার অধিকার কারো নেই।   

স্মৃতিতে বশির আহমেদ!

দরজা খুলে দিয়ে হাত বাড়ালেন তিনি । বললেন- আসো, ভেতরে। 'তুমি' করে বল্লাম, কিছু মনে করলে না তো। হেসে বল্লাম- 'আপনি' বললেই অস্বস্তি হতো। হাসতে হাসতে বললো- ইয়াংম্যান , পড়া শোনা কি চলছে, না শেষ। বল্লাম চলছে।

আন্তরিক ভঙ্গিতে ঘরে ডেকে নিয়ে বসিয়ে সঙ্গীতের আলাপ জুড়লেন। ডাকলে দুই সন্তান  হোমায়রা ও  রাজা বশিরকে। তিনি প্রিয় শিল্পী বশির আহমেদ। আমার  কাঁচা হাতে লেখনীর প্রথম দিকের ঘটনা। ২০০১ সালের শুরুর দিকে।

মোহাম্মদপুরের বাস স্ট্যান্ড থেকে রিকশায় সরাসরি বশির আহমেদের বাসা। সে সময় বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের  সঙ্গীতের আলাপন অনুষ্ঠানে যেতাম। সে কারণে সঙ্গীতের কিছু বেসিক বিষয়ে ধারণা ছিল। তাই আলাপটা জমে উঠছিল।

বশির আহমেদ বললেন, এই যুগেও ঠুমরি, দাদরা নিয়ে কথা- এ শুনে আমার অবাক লাগছে। আজকাল তো সাংবাদিকরা পপুলার  শিল্পীদের নিয়ে কথা বলেন, বেশি।

উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতের কথা তুললে  নাক শিটকায়, সবাই। অথচ এই ভাটি বাংলা কিন্তু সঙ্গীতের অসাধারণ জায়গা। আমাদের অনেক দূর যাবার কথা ছিল। পারিনি। এ জন্য আমরাই দায়ি!

প্রিয়মুখ- বিনোদন পত্রিকাটির রিপোর্টার হিসাবেই আমার তার বাসায় যাওয়া। সে সময় তার সম্পর্কে ব্যাপক ভিত্তিক কোনো ধারণা আমার ছিল না। বাসায় ঢুকলেই এক সঙ্গীতময় পরিবেশ। হারমোনিয়াম, তানপুরা, ঢোল, তবলা, গিটার- অনেক রকমের বাদ্য যন্ত্র।

বাসায় স্ত্রী মিনা বশির ছিলেন না।  ছেলে রাজা ও মেয়ে হোমায়রার সাথে  পরিচয় করিয়ে দিলেন। রাজার ব্যস্তা ছিল, কিছুক্ষন আড্ডা দিয়ে চলে গেলেন।

বশির আহমেদ জানালেন- সন্তানদের আসলে তিনি স্বাধীনতা দিয়েছেন। একদিকে প্রথাগত শিক্ষা আরেক দিকে সঙ্গীত। সঙ্গীতই তাদের জীবিকা নির্বাহের মাধ্যম হবে তা কিন্তু নয়। তারা সঙ্গীত চর্চা করবে-শুদ্ধ সঙ্গীতের ধারা বয়ে বেড়ানোর জন্য।

কলকাতায় বেড়ে ওঠার গল্প শোনালেন। জানালেন ওস্তাদ বড়ে গোলাম আলীর সঙ্গ পাওয়ার কথা।  বললেন সঙ্গীত মনের প্রশান্তি আনে।  জনপ্রিয়তা অর্জনের চেয়ে শুদ্ধ সঙ্গীতের প্রসারে কাজ করেছেন বড়ে গোলাম আলীরা।

বশীর আহমেদ ও  হোমায়রা বশিরের সাথে অনেকক্ষন আড্ডা হলো। বশীর আহমেদের বেড়ে ওঠা, সঙ্গীতের নানা দিক,  রাগ ঘরানার সঙ্গীত চর্চা বিষয়ে  চলমান সময়ের  শিল্পীদের অনীহা, রাতারাতি তারকা হওয়ার ধান্ধা, কম জানা লোকের সঙ্গীত পরিচালনা- এ সব  বিষয়  জানতে পারলাম।

হোমায়রা নামটা সে সময় আমার প্রথম শোনা। তাই দুবার আমাকে এটি কতার বলতে  হয়েছে। নামের অর্থটাও তিনি বলেছিলেন। এখন মনে পড়ছে না। রাজার গল্পও করলেন।

অনেক্ষণ ধরে  আলাপ-আপ্যায়ন। বশির আহমেদ সম্পর্কে হোমায়রার কাছে আরো অনেক জানা হলো। বিশেষ করে 'অনেক সাধের ময়না আমার বাঁধন ছিঁড়ে যায়'- গানটি নিয়ে বশীর আহমেদের উচ্ছ্বাস আমাকে মুগ্ধ করলো। একজন শিল্পীই বলতে পারেন তার কোন গানটি  আসলেই গান হয়ে উঠে। বশীর আহমদে খুবই আত্ম বিশ্বাসী শিল্পী।

হোমায়রা জানালেন ভারতের  খ্যাতিমান শিল্পীরা বশির আহমেদকে প্রচণ্ড শ্রদ্ধা করতেন। ভালোবাসতেন।
পরে  বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের এক আড্ডায় জেনেছিলাম-  'আয় খুকু আয়' গানটি  বাংলা সিনেমার জন্য গেয়েছিলেন হেমন্ত বাবু।

তার কাছে সিনেমার গানটি গাওয়ার অফার নিয়ে গেলে  হেমন্ত বাবু বলেছিলেন, যে দেশে বশির আছে, সে দেশে আমাকে কেনো ডাকছো তোমরা।  তবে শেষ পর্যন্ত হেমন্ত বাবু গানটি গেয়েছিলেন।

 মূলত ব্যান্ড  গানের প্রতি আমার টান ছিল প্রচণ্ড। সে কারণে এ সব গান আমার কানে নতুন মনে হচ্ছিলো।  বাসায় ফিরে পুরনো রেকর্ড নিযে বসেছিলাম। শুনছিলাম তার গান।

সম্ভবত তার বাসা থেকে ফেরার পর সঙ্গীতা বা সাউন্ডটেকের পাটুয়াটুলির হেড অফিস থেকে হোমায়রা ও বশির আহমেদের গানের ক্যাসেট পেয়েছিলাম। সেখান থেকে  অন্য রকম এক বশির আহমেদকে আবিষ্কার করি।

হোমায়রাকে নিয়ে আমার কয়েকটি রিপোর্ট ছিল- প্রিয়মুখে।  একটা ইন্সেটারভিউও ছাপা হয়েছিল।  সব রিপোর্ট তার ভালো লেগেছিল তা কিন্তু নয়।
তবে খারাপ লাগেনি বলে তার 'রহমান রহমান হকে' সিএ কোর্সের সহপাঠি শফিক ভাই মারফত জেনেছিলাম। শফিক ভাই তার বিষয়ে আমাকে বিভিন্ন বিষয় জানাতেন।

অনেক আড্ডার পর ফিরে বশির আমহেদের বাসা থেকে বেরিয়ে এলাম। বশির আহমেদ ও মেয়ে হোমায়রা বশির আমাকে  গেট পর্যন্ত এগিয়ে দিলেন। বললেন, শুধু রিপোর্ট না, এমনিতেই সময় পেলে চলে এসা। আড্ডা হবে। তোমরা তরুণরাই কিন্তু আমাদের সাংস্কৃতিক অগ্রযাত্রাকে এগিয়ে নিবে।  আমি অন্তত তাই মনে করি। ভালো থেকো।

পরে মাঝে মধ্যেই তাকে বাসার ফোনে কল করতাম।

বছর দেড়েক পরে সংস্কৃতি বিষয়ক রিপোর্ট লেখালেখি বন্ধ করে বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার হিসাবে কাজ শুরু করলে যোগাযোগটা থেমে যায়। কিন্তু বশীর আহমেদ- নামটা আমাকে আচ্ছন্ন করে রাখে।

সবচেয়ে বেশি ভালো লাগতো তিনি সব সময় গান নিয়েই আছেন। সংস্কৃতি কর্মীর নামে রাজনীতির জোয়ারে ভাসতেন না। বলতেন সঙ্গীতই তার জীবনের অভীষ্ট।  এটা নিয়েই তার জীবন কাটুক, সেটিই তার প্রত্যাশা।

এর মধ্যে আজ সকালে যখন বশির আহমেদের মৃত্যু সংবাদ পড়লাম-খুব মন খারাপ হলো। খুব। পরকালে আপনি শান্তিতে থাকুন। আপনার সঙ্গীতের সাথে আমাদের বাঁধন থাকবেই।  

'র' কি বঙ্গদেশে নতুন আইলো

এয়ারপোর্টে 'র' দাদাদের কাণ্ড লইয়া লইয়া যেই হারে বাৎচিত অইতাছে তাতে মন লয়, ‌'র' মাত্র বাংলাদেশে ল্যান্ড করলো। আরে ভাই বেরাদাররা 'র'  আমগো  রাজনীতি ও ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণ করে, আমগো বাঁচা মরার সার্টিফিকেট দেয়। যে দলটা সবচে' বেশি  এন্টি ইনডিয়ান বইলা ফালায় সেই বিম্পির ঘরের ভিতরে 'র'।

যে জমাত  ইনডিয়ারে হারাম বইলা জ্ঞান করে, সেই জমাতের মইধ্যেও 'র' । আর আম্লীগের কতা না মাতি। বাম বাবু গো কতা কইয়া টাইম লস করণের কাম নাই। জাতীয় পার্টির বিষয়ে এই আলাপ একেবারেই হুদা।

 আমগো এক বাম নেতা কইছে তিস্তার পানি না আইলে ভারতের সাতে নাকি বন্ধুত্ব ভাটা অইবো। আরে মিয়া ভাই ভারত ক্যামনে আমগো বন্ধু-?
ভারত অইলো আমগো সব কিছুর নিয়ন্ত্রক। ইংরাজিতে কয় রেগুলেটর। তাই বইলা এইডা ইলেট্রিক পাখনার রেগুলেটর না। আমগো ক্ষমতা, রাজনীতির রেগুলেটর।

রেগুলেটর কি বন্ধু অয়। আজাইরা কতা কইয়া  লাভ নাই। হুদাই লাফাইলে কাম অইবো না। ভারতের দাসত্ব, আইএসআইয়ের সাথে তাগো হিশাব নিকাশ এ সব নিকানোর কোনো দরকার নাই। এই দেশে আইসএসআই ও র এ কাজ অইতাছে। এইডা ঠেকানোর ক্ষমতা আমগো নাই।

বেশি কতা কইলে নিখোঁজ অইয়া যামু, আমি আফনি। আরো অনেকে যেই রকম নিখোঁজ অইছে। আমি, আফনি কিন্তু রিজওয়ানা বা তার স্বামীর মত সহানুভূতি পামু না। আমগোরে কত রকমের নিক্তিতে মাপবো। পরে কইবো হালার তো নিখোঁজ অওনের কতা আগেই আছিল, এদ্দিন খোঁজে আছিলো ক্যামেন।

বিপদ সঙ্কুল পর্যটন স্পট : ১: কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত!


দেশের সবচেয়ে বিপদ সঙ্কুল  সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার। এটি বিশ্বের দীর্ঘতম সৈকত, লম্বায় এ সৈকতটি কেবলই বড়ই নয়, আনব্রোকেন হবার কারণে এর ধারে কাছে অন্য কোনো সৈকতের অবস্থান নেই।

তবে এ বিচের কিছু পয়েন্ট রয়েছে খুবই ভয়ঙ্কর। বিশেষ করে ভাটার সময় কক্সবাজার সৈকত কোনো ভাবেই  পর্যটকের  জন্য নিরাপদ  নয়।

কোনো সরকারই এ বিচের নিরাপত্তায় কিচ্ছু করে নাই। তবে সেনা সমর্থক মইন ফখরের সরকারের সময় সেখানে ট্যুরিস্ট পুলিশের ইন্তেজাম করা হয়েছে। এর বাইরে কিচ্ছু না।

আপনাকে এই বিচে ভাটার সময় না নামার জন্য সুগন্ধা ও লাবনী পয়েন্টে লাল পতাকার নির্দেশনা দেখাবে। যেটি দেশের আর কোথাও নেই।

 কক্সবাজার বিচে দু'কারণে দুর্ঘটনা ঘটে-

১.এ বিচে চোরাবালি ফাঁদ রয়েছে।
২. ভাটার টান প্রচণ্ড, যেটি যে কারো শক্তিকে হার মানায়। যদি আপনি সিন্দাবাদ না হন!

চোরাবালি ফাঁদটা কক্সবাজার বিচের যে সব এলাকায় সবচেয়ে বেশি তার মধ্যে সুগন্ধা ও কলাতলি পয়েন্টকে ধরা হয়। তবে আমার অভিজ্ঞতা সাগরের যে সব অংশে  খাল থেকে পানি নামে বা পানি খালে প্রবেশ করে এর আশে পাশে এবং বিচের যে অংশে পাহাড় রয়েছে তার সামনের অংশে  চোরাবালি রয়েছে।


কারণ ওপর থেকে নেমে আসা পানির স্রোত অনেকটা সাগরে ঢেউয়ের সাথে বাড়ি খেয়ে থেমে গিয়ে এক ধরণের গোলাকৃতির গর্ত তৈরি করে, যেখানে জোয়ার ভাটার সাথে সাথে বালিতে ভরাট হয়ে যায়। তবে সেই বালি পানি সহ থাকায় এ গর্তে পড়ে যে কেউ প্রাণ হারাতে পারেন।

সঙ্কটের কথা হলো চোরাবালি প্রবণ এলাকাগুলো নিয়ে সরকার কোনো কাজ করেনি । কোন কোন এলাকায় চোরাবালির খাদ রয়েছে সেটি নির্ণয় করার প্রযুক্তি অনেক আগেই সমুদ্র বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করেছেন। দেশেও সমুদ্র বিজ্ঞান পড়ানো হয়, কিন্তু তারা  তত্বে বসে আছেন, প্রাকটিক্যালে নাই।

 কক্সবাজারের বিচটা হলো খাড়া বিচ। এটি সমুদ্রে বুক থেকে ফেলিন ঢেউ নিয়ে আসে, সেই  সাথে পর্যটককে ভেতরে যেতে হাত ছানি দেয়। ভেতরে গেলে যেটি হয় ঢেউটি খাড়া ভাবে সমুদ্রের খাদে পড়ে যায়। সেই সাথে সলিল সমাধি ঘটে থাকে পর্যটকের।

তাই পর্যটকের করণীয়-
ভাটার সময় পানিতে নামলে সর্বোচ্চ ২ ফিট। এবং জোয়ারের সময় নামলেও সর্বোচ্চ ৪ ফিট পানিতে নামতে পারেন। সমুদ্র সাঁতারের জায়গা পর্যটকের জন্য নয়। এটি  পেশাদার সাঁতারুর জন্য হতে পারে। তাই সাঁতার থেকে বিরত থাকুন।

সাঁতার না জানা থাকলে লাইফ জ্যাকেট পরে নিন। বাচ্চাদের অবশ্যই লাইফ জ্যাকেট ছাড়া সমুদ্রে নামতে দেয়া উচিৎ নয়। সমুদ্রে নামার আগে অবশ্যই আপনার ও পরিবারের নিরাপত্তার কথা ভাবুন।

রোমাঞ্চকর সমুদ্র ভ্রমণ আপনার জন্য নিরাপদ করতে কক্সবাজারের লাবণী, কলাতলী, সুগন্ধা, হিমছড়ি, ইনানীর বাইরে অন্য কোনো পয়েন্টে সমুদ্রে নামা থেকে বিরত থাকুন।

আর সরকারের কাছ আর্জি জানান- অন্তত কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে যেনো  নেটিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়। তাহলে আপনার ভ্রমণ আরো নিরাপদ হবে।

চলমান
পরবর্তী লেখার জন্য খেয়াল রাখুন এবং এই লিঙ্কেও ক্লিকাইতে পারেন- https://www.facebook.com/touristplus.bangladesh

পর্যটনস্পটে দুর্ঘটনা : আতঙ্কিত নয়, সচেতন হন

আতঙ্কিত হবার কোনো কারণ নেই। সতর্কতাই সবচেয়ে বেশি দরকার। পর্যটকদের যে কোনো জায়গায় যাবার আগে কিছু জরুরী বিষয়ে জেনে নেয়া দরকার-
১. লোকাল নিরাপত্তা, ২. পর্যটন স্পটের নিরাপত্তা, ৩. খাবার দাবার, ৪.থাকার ব্যবস্থা, ৫.যানবাহন,৬. পর্যটকের জন্য  স্বাস্থ্য সুিবিধা  ৭. সাইট সিয়িংএর ঝুঁকি এবং ৮. প্রযুক্তি ও সময় সমন্বয়।

এ সব না জেনে হুট করে কোথাও যাওয়াটা ঠিক নয়। আমরা ভ্রমন করি আনন্দের জন্য। রবীন্দ্রনাথ তার শেষের কবিতায় স্বাস্থ্য ঠিক রাখার জন্য হাওয়া বদলের কথা বলেছেন।

 হাওয়া বদল বা ভ্রমণ আমাদের স্বাস্থ্য, প্রতিদিনকার জীবন এবং বন্ধু-বান্ধব-আত্মীয়-স্বজন-পরিবারের সাথে সম্পর্ককে মজবুত করে। একই সাথে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগের মাধ্যমে নিজের মনে প্রাণে অসাধাররণ অনুভূতি ও অভিজ্ঞতা সঞ্চয়ের সুযোগ করে দিয়ে থাকে।

একই সাথে ভিন্ন সংস্কৃতি, লোকজ মেলা-পরিবার ও স্পটের সাথে পরিচয়ের সুযোগ ঘটে থাকে।  

আতঙ্ক দিয়ে লেখাটা শুরু করেছি এ জন্য যে, গত সোমবার  সেন্টমার্টিন দ্বীপে আহসানউল্লাহ ইউনিভার্সিটির  কয়েকজন শিক্ষার্থী মারা গেছেন।  পর্যটন স্পটে মৃত্যু যে কোনো বিবেচনায় অগ্রহণযোগ্য। তবুও এটি ঘটে থাকে।

এর প্রধাণ করাণ আমাদের অসতর্কতা এবং রাষ্ট্রীয়ভাবে আমাদের  সঠিক  সুবিধা নিশ্চিতে ব্যর্থতা। তবে সব কিছুর বিচারে আমাদের অসতর্কতাই দায়ি। কারণ জীবন আমার, আমাকে ভাবতে হবে আমি কেনো এ রকম ঝুঁকি নিবোম যা আমার জীবনকে বিপন্ন করতে পারে।

২০০০ সাল থেকে পর্যটন কর্মী হিসাবে আনুষ্ঠানিকভাবে কাজ করছি। সে অভিজ্ঞতা থেকে উপেরর কয়েকটি বিষয়ের প্রতি নজর দিতে বল্লাম। কে কী বলে দিবে, তা নিয়ে আমাদের বসে থাকলে চলবে না।
মূল কথা হলো এখানে পর্যটন নিয়ে সে রকম কোনো  উদ্যোগ এখনো গড়ে ওঠেনি, যা আপনার জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সহায়তা করবে।

 সেন্টমার্টিনে যে স্পটটিতে অনেকগুলো তরুণ প্রাণ দিযেছে, এটি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ।  এটা অনেকেই জানেন না। এর কারণ আমাদের অসচেতনতা।  সেখানকার হোটেলগুলো থেকেও পর্যটকদের কোনো সতর্কবার্তা দেয়া হয় না।

সেন্টমার্টিনে আগে আসলে সে রকম কোনো সৈকত ছিলনা, যেখানে ভেজা যেতো। ২০০১ সালে আমরা প্রথম সেন্টমার্টিনের প্রাসাদ প্যরাডাইসের বিচটি খুঁজে পাই, যেখানে কোনো প্রবাল নেই। আমাদের আগে দুজন প্রবীন  পর্যটক এর বিচের সন্কিধান পেলেও সে ভাবে এর প্রচার ছিল না।

কিন্তু এ বিচের   পাহাড়ের মত ঢালু অংশে যে কারো নামা উচিৎ নয় সেটি আমরা ২০০২ সাল থেকে প্রচার করে আসছি।

ঢাকা ইউনিভার্সিটি ট্যুরিস্ট সোসাইটি থেকে আমরা   বড় আকারে কাজ করেছি ২০০৪  সাল থেকে ২০০৬ সালে।  এ সময় আমরা সবাইকে বোঝাতে চেয়েছি আবেগের ঝড়ো হাওয়ায়  সমুদ্রে ডুবে মরে যাবার মধ্যে কোনো আনন্দ নেই।  সতর্ক হলেই দুর্ঘটনা এড়ানো যায়।

২০০৫ সালে আমাদের চোখের সামনেই কক্সবাজারে একজন বিদেশি নাগরিক ভেসে যান। ওই বছরই সেন্টমার্টিনে  ঢাকা বিশ্ববিদ্যালযের দুজন শিক্ষার্থী  মারা যান।  এরপর  এ নিয়ে প্রচুর কাজ করেছি আমরা। তবে এতদিন পরে ফের মৃত্যুর ঘটনা আমাদের ব্যাথিত করছে।  

তবে কক্সবাজারে এখন ইয়াসির লাইফ গার্ড আছে, চাইলে হেলিকপ্টারও পাওয়া যায়। কিন্তু দেশের অন্য কোনো বিচে এ সুবিধা নেই। বিচটিতে নেটিং করার বিষয়ে ২০০২ থেকে ২০০৮ পর্যন্ত  চেষ্টা করেছি, কিন্তু পর্যটন করপোরেশনের কাউকে এটি বোঝাতে আমরা সক্ষম হইনি। নেটিং করা গেলে অন্তত দ্রুততম সময়ে ডুবে যাওয়া মানুষটিকে উদ্ধার, একবারে কিচ্ছু না হলেও মৃত মানুষের লাশটি স্বল্প  সময়ে পাওয়া যাবে।

দেশের ঝুঁকি পূর্ণ পর্যটন এলাকা ও সেখানে করণীয় নিয়ে এ লেখার দ্বিতীয় পর্বটি কাল লিখবো। খেয়াল রাখতে পারেন এই লিঙ্কেও। https://www.facebook.com/touristplus.bangladesh

তেতুল: দ্রুত স্খলন এবং রাজনীতি


তেতুল লইয়া অনেক আলাপ অইছে। এখন আর অইবো না। হুজুরের পদতলে এখন জান্নাত দৌড়া দৌড়ি করতাছে। আর সেই জান্নাত লাভের উদ্দেশে আপারা সবাই কাতারবন্দী!

ছোটবেলায় ব্যাপক ওয়াজ মহফিলে যাইতাম। তার কোনো একটাতে শুনেছিলাম তেতুল খাইলে জেহান (মেধা) কইমা যায়।এইডা খুব কমজানা কোনো মওলানার কাছ থেকে শোনা।

আমার দাদী (বাবার মামী) কইতো পুরুষ মাইনষের তেতুল খাইতে নাই।কিন্তু তাদের জন্য তেতুল গাছ থেকে পেড়ে দিতাম। চান্সে দুচারটা গাছে বইসা মাইরা দিতাম।

শহরে আইসা দেখলাম তেতুল সবাই খায়, আমিও খাই। বিশেষ করে রাঙামাটির তেতুল খুব মজা। মিষ্টিও।

বঙ্গবর্ষ 1420 সালে তেতুল লইয়া ব্যাপক আলোচনা ছিল।  শফি হুজুরের তেতুল তত্ব লইয়া ফেসবুক আর ব্লগে লম্বা বয়ান। ফেমিনিস্ট হিসাবে নিজেদের জাহির করবার নানা রকমের তরিকাও দেখলাম। হুজুরের বক্তৃা শর্টকার্ট কইরা সেটি সবাই বিলাইয়া ব্যাপক মজা লইছে।

আমি এ ধরণের টুইস্টিং এর বিরুদ্ধে বলেছি, এখনো বলি। আমার লেখা যারা পড়েন- তারা দেখে থাকবেন তেতুল  এবং মন্ত্রীর বিড়ি ও ক্যাশ লইয়া আমার অবস্থান ভাসমান স্রোতের বিপরীত ছিল।

তেতুল সম্পর্কে আমার একজন চিকিৎসক বন্ধু জানাইছে, এইটা নাকি ‌'বীর্য তরল কইরা ফালায়। দ্রুত স্খলন ঘটায়।'এর সত্যাসত্য যাচাই করন যায় নাই, কারণ এ সব আলাপ সবার সাথে করা মুশকিল। তবে এটাকে সইত্য মনে লইতাছে-কারণ

আমাদের রাজনীতিতেও 'তেতুল চরিত্র' খুবই বাস্তব অইয়া দেখা দিছে।

শফি হুজুর এখন আর 'আদাবত' বলতে আম্লীগ ও তাদের চ্যালা চামুণ্ডাদের বোঝেন না।' আদাবত' শব্দ আমার প্রথম শোনা। এর অর্থ নাকি শত্রুতা। যৌথবাহিনীর অপারেশন শাপলার পরও।

হুজুরের তেতুল লইয়া অনেক রসের আলাপ হইছে, সংসদে ও বাইরে। খালেদা জিয়ার ছবির লগে হুজুরে ছবি জুইড়া দিয়া ফেসবুকে অনেক রঙ্গ অইছে। এইডা লইয়া কইবার কিছু নাই।

কিন্তু তেতুলে যে তরল করে এবং দ্রুত স্খলন ঘটায় সেটি আমরা হেফাজত ও আম্লীগ দুই তরফে দেখলাম।  তলে তলে দুপক্ষ ঠিক অইয়া গেছে। এটা দেইখা পরাণ জুড়াইয়া গেছে।

আহা কী চমৎকার দোস্তি। ভালোই লাগছে। এখন এটাকে হালাল করবার জন্য অনলাইনে আম্লীগ ও হেফাজতিরা নানা রকমের  যুক্তি তর্ক বিলাইবেন। আমরা শুনবো- আর বিম্পি জমাত এখন হায় হোসেন হায় হোসেন করবে- আহা কারবালা। আহা রাজনীতি!

আম্লীগ  ও কওমী মাদ্রসার দোস্তি পুরানা। কওমী মাদরাসার পরিচালনা পর্ষদের প্রায় নব্বুই ভাগ আওয়ামি ঘরানার লোকদের হাতে। তবুও মাঝখানে ক্যান যে তারা নাস্তি ফাস্তিক লইয়া লাফাইলো এটাই একটা বড় প্রশ্ন! মনে লয়, নিজেদের অস্তিত্ব লইয়া সঙ্কটে পড়ছিলো।

ব্যাক্তিগতভাবে আমি কোনো শত্রুতার পক্ষপাতি নই। ক্ষমতার রাজনীতিতে আমি কারো বলি হওয়ার পেছনে যুক্তি খুঁজে পাই না। তাই এখানে এ সব আলাপ বাতুলতা মাত্র। আমি হেফাজতের আদাবত নাই-ঘোষনায় খুবই আনন্দিত।

খালি আমার একটা ভাঙ্গা বাঁশি আছে সেইটা বাজাই- দয়া কইরা নিখোঁজ মানুষের তালিকা খাটো করেন, বন্দুকযুদ্ধ বন্ধ করেন, ক্রসফায়ারের নামে বনি আদমের খুন করা থেকে বিরত থাকেন। এরপর আপ্নেরা আপনাগো কল্লা খান- আমার কিচ্ছু যায় আসে না।

তবে হেফাজত ও গণজাগরণমঞ্চ 'ব্যবহৃত' একটি প্লাটফর্ম।  এটাকে 'ইউজ' কইরা প্রধান দুই দল নিজেদের সব 'পাপ' মোচনের চেষ্টা করেছে। ফাঁকেতালে পড়ে মরেছে কিছু বনি আদম। তাতে কি জনগনের 'বদ রক্ত' উনাদের ক্ষমতা ও রাজনীতিকে পাকা পোক্ত করছে।

এ নিয়ে বিস্তর রাজনীতি অইছে, অইবো। কিন্তু গরিব মাইনষের এতিম পুলাপাইন আর  ঘর ছেড়ে বড় মানুষ অইয়া বাবা মায়ের মুখে হাসি ফুটাইবার জন্য যারা ঢাকায় এসেছেন তাদের  ভিন্ন আবরণে রাজনীতিক ব্যবহার আমি সমর্থন করি না।

     

হেব্বি সেক্সি!


হেব্বি সেক্সি সংসদ- শাড়ি, ব্লাউজ কত্ত কিছু নিয়া আলাপ। ভালোই লাগছে। জানা মতে, যাদের যৌবন লুপ্ত হয়, তারা এ ধরণের আলোচনা করে মজা লুটেন, সংসদে যারা এ নিয়ে আলাপ করছেন তাদের যৌবন সম্পর্কে আমার ধারণা নাই।

চিকিৎসকরা ভালোই কইতে পারবেন।

দেশের একটা শীর্ষ দৈনিকে  একটা খবর পড়েছিলাম- ইয়াবা খাইলে কি হয় তা নিয়ে। আবার একজন ক্রাইম রিপোর্টাররেও জিগাইছলাম- জিনিসটা খাইলে কি অয়।  দুজনেরই উত্তর অইলো  হঠাৎ উত্তেজনা বাড়ে। পরে ঝিমায়।

বদি ভাই, মাশাল্লাহ মায়ানমার থেকে জিনিসটা নিয়া আসছেন, আমরা সেটা চেখে উত্তেজিত। এ লইয়া বিরাট বাণিজ্য। অনেক রিপুর্ট। চূড়ান্ত বিচারে ব্যবসা চলমান।

ইদানিং অবশ্য আরেকটা ব্যাপার হুনতাছি। ছাত্রলীগের এক ছোডো ভাই কইলো পুলিশ নাকি চেকপোস্টে চেক করার  সময় ইয়াবা পকেটে ঢুকায়া দ্যায়।

হে আমারে উপদেশ দিছে- পুলিশ চেকিং করতে আইলে আগে কইবেন ভাই আত দেখান।  তারপর চেক।

 কিন্তু এইডা কি সবার জন্য সম্ভব!

জানি না। তয়, আম জনতারে  সংসদ ভালোই বিনুদন দিতাছে, ভালোই লাগতাছে।

 গ্রেট। তয় একটা কতা- শাড়ি, ব্লাউজে আছেন ভালো। আর ভিতরে হান্দায়েন না। লোল।
  

রাজনীতির খেলা ও গণজাগরণমঞ্চ!

গণ জাগরণ মঞ্চ নিয়ে যা হয়েছে, এখন হচ্ছে এবং সামনে হবে বলে আশঙ্কা- তা নিয়ে  আমার কোনো রকমের মাথা ব্যাথা নাই। কারণ আমার মত কেরানীর গণজাগরণ বা হেফাজত দর্শণ উপলব্ধি করার মত সক্ষমতা পুরোপুরি নাই। 

শুরু থেকেই  গণজাগরণমঞ্চকে স্বাভাবিক ও সাধারণ ঘটনা হিসাবে দেখে আসছি। দুটো কারণে এটা হয়েছে- এক. আমি রাজনীতি বিজ্ঞানের ছাত্র। আর এ বিজ্ঞানের  লোক প্লেটো, এরিস্টল, ম্যাকেয়াভিলি এবং আমার ডিপার্টমেন্টের গুরু জ্ঞানতাপস আবদুর রাজ্জাক স্যারের লেকা আকারে পাওয়া ঘটনাগুলো মন দিয়ে পড়ে যতটুকু বুঝেছি- রাজনীতি মানে হলো মানুষকে বিভ্রান্ত করা এবং এর মধ্য দিয়ে নিজের বা দলের স্বার্থসিদ্ধি লাভ করা। সুতরাং জেনে শুনে আমি কারো রাজনৈতিক খেলার পুতুল হতে চাইনি, আর আমার মত কেরানী সেই সময়ও ছিল না, এখনো নাই। 

'জবাই কর' 'জবাই কর' টাইপের উচ্চারণ,কাউকে বিচার ছাড়া এক ঘরে রাখার সিদ্ধান্ত এবং রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের অস্ত্র হিসাবে গণ জাগরণ মঞ্চের ভূমিকার সাথে আমার দ্বিমত ছিল। এখনো আছে।

তবে আমি  জানি এ ধরণের মোহ।  এক সময় ভেঙ্গে যায়। যার যার ধান্ধা ফুরিয়ে গেলে এটা হয়, আমরা সব সময় এ রকম। আমরা আসলে টানা রেসে থাকতে পারি না। ওয়ানডে বা টি টুয়েন্টি টাইপের খেলা আমাদের তাই টানে বেশি। টেস্ট মেসের খবর রাখি কিন্তু উপভোগ করি না।
এ রকম একটা অনুসিদ্ধান্তে পৌছাতে আমাকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে কাটানো ৮ টি বছর সহায়তা করেছে। মানুষের ভেতরের ও বাইরের দুটো রূপ  এবং রাজনীতির খেলা দেখতে দেখতে  এটা সহজবোধ্য এখন!

শাহবাগে না গেলে রাজাকার- টাইপের ধারণা যারা লালন এবং এটাতে বিশ্বাস  করতেন, বা এখনো করেন তাদের সাথে একমত ছিলাম না। হুজুগে আমরা অনেক কিছু করি, বিবেচনা-ইনসাফ তখন কাজ করে না। কিন্তু চূড়ান্ত বিচারে ইনসাফ জীয় হয়। 

যুদ্ধাপরাধীদের বিচার  অবশ্যই হবে।  এ নিয়ে আমার দ্বিমত নাই। তার জন্য আমাদের চাপও সৃষ্টি করতে হবে, এটা নিয়েওে সন্দেহ নাই। 

তবে গণজাগরণমঞ্চের  আয়োজন ছিল নির্বাচন ঘিরে।  যুদ্ধাপরাধের  ইস্যু তুলে  অনেক রকমের রাজনীতি এ দেশে হয়, রাজনৈতিক আচার আচরণ এবং এ সব চূড়ান্ত ভাবে  'পাবলিক খায়' এমন উপযোগি করার বিষয়ে সরকার মানে ১৪ দল যথেষ্ট সফল হয়েছে- এতে সন্দেহ নাই। অন্তত ডেভিড বার্গম্যানের মত ইয়াহুদি সম্বাদিকও যখন  যুদ্ধাপরাধীদের ফেভার করেন বলে অভিযোগ ওঠে তখন এ নিয়ে আলাপ একান্তই  অনাহুত। 

আর এ রকম স্পর্শকারত ইস্যুতে বিম্পি বরাবরই একটা 'মফিজ'। এ বিষয়ে সন্দেহ নাই। কারণ এটা নিয়ে মোটেও খেলতে পারেনি, বরং একটা অস্বস্তি ছির তাদের মধ্যে। জামায়ত টাকা পয়সা দিয়ে 'ম্যানেজ'  সিস্টেম ফলো করেছে। মাঝখানে আমপাবলিকের অবস্থা বেহাল। 

আমরা এ রকম বক্তব্য সংসদ থেকে  বিটিভি মারফত শুনেছি  'মন পড়ে আছে শাহবাগে।' ফেসবুকের  আপডেট ছিল গণজাগরণ মঞ্চ নিয়ে। পক্ষে বিপক্ষে বেহুদা প্রচারণা ছিল। এখনো আছে।  ফেসবুক-ব্লগ হলো আবেগি কারখানা, এখানে সব প্রডিউস করা যায়।

মঞ্চ নিয়া গত বইমেলায় অনেকগুলো বইও বেরিয়েছে। ৫ জানুয়ারি ঐতিহাসিক ও গিনেস বুকে নাম লেখানোর মত অভূতপূর্ব  ইলেকশ হালাল হিসাবেও স্বীকৃতি পেযেছে। কিন্তু ইলেকশনের পর গণজাগরণ মঞ্চ নিয়ে  সরকারের উৎসাহে ভাটা পড়ে।  ধাক্কাটা লাগে ফেব্রুয়ারিতে বর্ষপূর্তি ঘিরে। কারণ বর্ষপূর্তির আয়োজনে এবং গণজাগরণমঞ্চের সঠিক ইতিহাসায়ন হয়নি বলে সারাসরি  অভিযোগ তোলেন-অনেকে। আমি মনে করি তাদের সেই ন্যায্যতা রয়েছে।

গণজাগরণ মঞ্চের বিপরীতের আল্লামা শফির আন্দোলন- হেফাজত নিয়ে তলে তলে অনেক পানি গড়িয়েছে। ক্র্যাকডাউন হয়েছে। সে উছিলা ধরে টিভি চ্যানেল বন্ধ করা হয় হয়েছে। মানবাধিকার সংস্থা অধিকারকে হেনস্তা করা  হয়েছে।
আমার মনে হয় একটা রাজনৈতিক সরকার- রাজনীতিকভাবে এ সব সফলভাবে মোকাবিলা করেছে! সেখানে প্রতিপক্ষ রাজনীতিকরা পুরাই 'মফিজ'। এ নিয়ে সন্দেহের কোনো সুযোগ নাই। 

সেই সব দিনের কথা ভাবছি- যখন শাহবাগে পুলিশ  পাহারা দেয়, রাস্তা আটকে যানজটে আমাদের ভোগায়, আর  গণজাগরণ মঞ্চের সমালোচনা করলে  তেড়ে আসে যে কেউ। খেযে ফেলবে অবস্থা যাকে বলে।

কিন্তু মোহ তো ভাঙ্গে।  হিস্ট্রি রচনা হয়েছে গণজাগরণ মঞ্চ নিয়ে।  অ্যাক্টিভিস্ট কাম সম্বাদিক একজন  ফেসবুকে  ইমরান এইচ সরকারকে নিয়ে ব্যাঙ্গ করে লিখেলেন। জানালেন- যারা আসলে আন্দোলন শুরু করেছেন, তারা নাই। হতে পারে। 

আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে গণ জাগরণ মঞ্চের সাথে লেয়াজো করতেন তারাও ক্ষিপ্ত।  তাহলে  চূড়ান্ত বিচারে সরকারের সমর্থন উঠে গেছে। তাই এখন  গণজাগরণ মঞ্চের নেতারা আদর্শচ্যুত হিসাবে বিবেচিত।  সেই বিচেনায় এনে তাদের ঠেঙ্গানো হয়েছে। রক্ত মুছা হচ্ছে দেখলাম। পাল্টাপাল্টি মামলাও হয়েছে।

আমার কষ্ট হলো- গরিব মানুষের ছেলে পুলে আমরা, দেশটাকে গড়ার জন্য সবাই একসাথে কাজ করবো। কিন্তু সেটি না করে বুড়ো রাজনৈতিক নেতারা পরিকল্পনা করে ফাঁদ পাতেন আমরা সেই ফাঁদে পা দিয়ে সমাজে বিভক্তি তৈরির  কাজে ব্যবহৃত হই। কেন হই আমি জানি না। আমরা কি ভাবি- আমাদের  খাদ্যের যোগানটা কে দেয়? আম্লীগ, বিম্পি না জামায়াত। তাই বলে আমরা অন্যায়ের প্রতিবাদ করবো না, তা কিন্তু নয়। করবো , অবশ্যই করবো, কিন্তু কারো পাতা ফাঁদে পা দিয়ে নয়।

অটিস্টিক বেবি, অটিস্টিক সরকার এবং আমাদের অসহায়ত্ব!

অটিজম- এখন একটা বাণিজ্যের নাম। দেশে এ রোগের চিকিৎসার   নামে, বেনামে ফান্ড এবং ব্যাঙের ছাতার মত পরামর্শক প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। আর অসহায়- বিপন্ন  মা বাবার সন্তানদের ঘিরে এক ধরণের কুৎসিত নোংরা বাণিজ্য গড়ে উঠেছে। এটা নিয়ে কথা বলাটাও একটা অরুচির পর্যায়ে এখন।

যাদের  অটিস্টিটিক বেবি আছে, তারাই জানেন  সে সন্তান ঘিরে প্রতিদিনকার ব্যস্ততা, দু:শিচ্ন্তা এবং ভারাক্রান্ত মনের জোর খোঁজার চেষ্টা কতটা কঠিন ও দুর্বিসহ।

সেই সব বাবা মায়ের চোখের দিকে তাকালে বোঝা যায় পৃথিবী কতটা নির্মম-কঠিন এবং অন্যায্যাতায়পূর্ণ। তবুও সন্তানের সুস্থ্যতার জন্য বিচ্ছিন্নভাবে সবাই ছোটেন, এখানে সেখানে-সবখানে।

সামর্থ থাকলে দেশের বাইরে যান অনেকে। কিন্তু এর আসলে করণীয় এবং সঠিক শিক্ষা সম্পর্কে আমরা মোটেও অবগত নই।

আমার নিজেরও একটা সন্তান আছে, যার কথাটা বলাটা এখনো স্বত:স্ফূর্ত নয়।  তার প্রশ্ন বা প্রত্যা্শাটা সে বডি ল্যাংয়েজে প্রকাশ করতে চায়। একজন চিকিৎসকের অধীনে তার  ব্যায়াম, থেরাপি চলছে।  একটি স্কুলে তার শিক্ষাজীবনের হাতে খড়ি দেয়া হচ্ছে।

আমরা শুরুটা করেছিলাম তার অল্প বয়সে, দু'বছর তখন ও। শিশু হাসপাতালের শিশু বিকাশ কেন্দ্রে তাকে নিয়ে প্রথম গেলাম, চিকিৎসকরা তার পরীক্ষা নিরীক্ষা করে বললেন, ২ বছর বয়সে তার যতটুকু বিকাশের কথা, ততটুকু হয়নি। দু চারটে ব্যায়ামের নির্দেশনা দিয়ে তারা মুক্তি চাইলেন।

ডা. নায়লা হক নামে যে ভদ্র মহিলা অনেক দয়া করে শিশু বিকাশ প্রকল্পের পরিচালকের ভার গ্রহণ করে বাংলাদেশের অটিজম শিশুদের বাবা মা কে ধন্য করেছেন, তার সাথে দেখা করার দুর্লভ সুযোগ আমি কখনো পাইনি।

শিশু বিকাশ কেন্দ্র থেকে আমাদের বলা হলো বাচ্চাকে একটি স্পেশাল স্কুলে দেবার জন্য।  সে হিসাবে মোহাম্মদপুরের একটি স্কুলে দেয়া হয়। বছর দেড়েক বা দুয়েক ধরে সেখানে ৫ হাজার টাকা মাসিক বেতন এবং তিরিশ হাজার সেশন ফি এবং আরো ভালো করার জন্য স্কুলের শিক্ষিকাকে বাসায় হায়ার করে মাসে আরো ৫ হাজার টাকা গুনে  কোনো ফল পাওয়া গেলো না।

 তবে স্কুল প্রধানের মতে, আমার বাচ্চার অবস্থা ভালো। আলহামদুলিল্লাহ - তাকে দেখে বোঝার উপায় নেই, তার কোনো সমস্যা আছে। আমাদের মূল কনসার্ন সে হাইপার এবং তার ওয়ার্ডিংটা ঠিক নেই। অর্থাৎ তার যা বলার কথা তা না বলে অন্যকথা বার বার বলছে।

তবে পড়াশোনা ও মনে রাখার ব্যাপারে সে খুবই  দক্ষতার পরিচয় দিয়ে আসছে। এর মধ্যে দুবছরের শিক্ষা সমাপন করে তৃতীয় বর্ষে যাবার আগে বঙ্গবন্ধু হসপিটালের একজন চিকিৎসকের সাথে যোগাযোগ হয়। এখন তার অধীনে আছে।

যে অভিজ্ঞতা বলতে এ লেখা, সেটি হলো শহরের মুখোশধারী মানুষগুলো সহানুভূতির আড়ালে অটিজম আক্রান্ত শিশুদের বাবা মায়ের এক ধরণের হয়রানি ও ভুল চিকিৎসা করে থাকেন। এ থেকে মুক্তির কোনো উপায় নেই।

প্রথম দিকে যে ভাবে কথা বলেন, পরে সেটি ঠিক থাকে না। বা ঠিক রাখতে পারেন না। কারণ টাকার কচকচে শব্দ আর  নোংরা গন্ধটা তাদের ঘ্রাণ শক্তিকে আরো তীব্র করে, তাই আরো বেশি টাকার জন্য তারা ছুটোছুটি করতে থাকেন।

চূড়ান্ত বিচারের রাষ্ট্র এখানে বক্তৃতা বিবৃতি দিয়ে কাজটা সারে।  মোহনীয় ছবি দেখা যায় খবরে। মন খারাপ করা ভাব ধরা ছবি। আর ভিজুয়াল মিডয়াতে  অটিস্টিক বাচ্চাদের  সহানুভূতি জাগানিয়া ছবি দিয়ে খবর করা হয়। তারপর দিবসটি চলে গেলে আবার সব আগের মত। আজ সেই দিন- বিশ্ব অটিজম দিবস।


আসলে কেউ কি খবর নিযেছেন- অটিস্টিক বাচ্চাদের বাবা মায়েদের সংগ্রাম সম্পর্কে।

অটিস্টিক বাচ্চাদের জন্য সরকারের করণীয় কি? সরকার কি ভাবছে? তাদের আগামী দিনে কী হবে? তা নিয়ে সরকারে কোনো বিষয়ই খোলাসা নয়।   এখানেও রাষ্ট্র প্রতিবন্ধী। তার চরিত্র অটিস্টিক। তাই একজন অটিস্টিক হয়ে আরেকজন অটিস্টিক বাচ্চার জন্য রাষ্ট্র কিছু করতে পারে না।


সবাই আমরা চাকুার করি, সমাজ সেবা করি- প্রচার, প্রচারণা আর পুরস্কারের জন্য। কিন্তু কাজটা ভালোবাসেন কয় জনে।  প্রশ্নটা এ জন্য করলাম- যে দেশে দেড় লাখেরো বেশি অটিস্টিক বাচ্চা আছে সে দেশের সরকার বা কোনো সামাজিক সংস্থা বা কেউ কি তাদের জন্য কিছু করার উদ্যোগ নিয়েছেন, বা নিচ্ছেন।

অনেকে হয়ত বলবেন, শিশু বিকাশ কেন্দ্র আছে, বঙ্গবন্ধু হসপিটালে অটিজম সেন্টার আছে, সেনাবাহিনীর স্কুল আছে, বেসরকারি অনেক প্রতিষ্ঠান আছে। যারা এ বিষয়ে উপদেশ বিলাইতে চান, তারা দয়া করে এই সব জায়গায় রোগীদের সাথে গিয়ে পরে ফিডব্যাক দিলে ভালো হয়। 

কুৎসিত মনোবৃত্তির একটা লোকের নাম মোবারক অয় ক্যামনে

মানুষের বয়স বাড়লে, অনেক সমস্যা হয়। আবার মস্তিষ্কে অক্সিজেনের সঙ্কট হলেও মানুষ ভিন্ন রকমের শব্দ কয়। ভাবনা করে। সেটা সে দেখতে পায়। হুমায়ূন আহমেদ'র হিমু সিরিজের একটা বই-আঙ্গুলকাটা জগলুতে এইটা পড়েছিলাম।

হিমুকে তার বাবা জল থেরাপি দিচ্ছে, জলের মধ্যে ডুবাইয়া রাখছে, নি:শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে। আর হিমুর মাথা অক্সিজেন কমে যাওয়ায় নানা রকমের অদ্ভূত দৃশ্য আসছে। সেটি তার চোখে ভাসছে।

মোবারকের কি এমন কিছু অইছে।

মোবারকের ইচ্ছা অইছে তিনি  তার মত যত্ত ইচ্ছা কতা কইবো, কাউরে অনুকরণ করবো, কারো লগে হুক্কাহুয়া করবো, এইটা তিনি করতেই পারেন। কিন্তু পাছে তার যে একটা পদ পদবি আছে সেইটা কি সে ভুইলাই গেছে।

'গোলাপী' বেগমরে গাইলাতাছে দেইখা যারা মজা লুটতাছে, তারা কি জানেন এ রকম ভয়ঙ্কর কুৎসিত লোকরা কিন্তু যে কারো জন্য বিপাজ্জনক। কোপালী গোপালীরাও এ রকম লোকের কাছ থেকে রক্ষে পাবেন সেটাও কিন্তু নয়।

তিনি বা তার সহকর্মীরা যে নিব্বাচনের নামে শতাব্দীর কুৎসিত 'গণতান্ত্রিক' খেলা খেলছেন, তা কি আমরা বুঝতে পারছি। ঢাকার শহরে বইসা অবশ্য বিবেক বন্দক দেয়া লোকেরা এইটা উপলব্ধি করতে সক্ষম অইবেন না।

চাটিগার পোয়া মোবারকের কতা বার্তা ও নাকে খত দেয়া নিয়া নান রকমের কতা মনে অইতে পারে।

রূপবান প্রকাশ অইছে মাস দুয়েক আগে। সমকামিদের প্রথম ম্যাগাজিন। সঙ্ঘবদ্ধ সমকামিতার আগে চাঁটিগার  'লাল পোয়া' নিয়ে অনেক রসাত্মক গল্প আছে। আমার কয়েকজন বড় ভাই ও ছোট ভাই চাটিগাঁর তাই এ বিষয়ে আলাপ না করে বিরত থাকলাম।

চাটুকারিতার অতিশয্যে তিনি এ রকম কুতর্ক তৈরি করেছেন, তা খুবই নিন্দনীয়।



এভারেস্টর চূড়ায় ওঠা না ওঠা কি আমাদের জাতীয় সমস্যা!

এভারেস্টর চূড়ায় ওঠা না ওঠা কি আমাদের জাতীয় সমস্যা! আমি জানি না। জানতে চাইও না। তবে নৈতিক বিচারে যারা এটা নিয়ে তর্ক করছেন, তারা মানকি দৈন্যতা প৪্রকাশ করছেন।

মুসা আমার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইয়ারমেট। ওর লগে আমার দহরম মহরম সম্পর্ক ছিল না। হাই হ্যালো দু'চাইবার হইছে। ওরা নিজেরা ঘুরতো, আইইআর থেকে। আমরা সে সময় অভ্যন্তরীন পর্যটন বৃদ্ধির জন্য কাজ করতাম। ট্যুরিস্ট সোসাইটির ব্যানারে।

ওরা পাহাড়ে চড়তো, আমরা শিক্ষার্থীদের বলতাম- তোমরা ঘোরো। শিক্ষকদের বলতাম, স্যার পুলাপাইনরে লইয়া এসকারশনে যান। সব এন্তজাম আমরা মাগনা কইরা দিমু। দিতামও।

সে যাই হোক- মুসা মিয়ার এভারেস্ট জয় নিয়ে তর্কের চেয়ে আমাদের মানসিক দৈন্যতা নিয়ে তর্ক হতে পারে। আমরা একটা বিকারগ্রস্থ।  আমরা সব মাইনা লই, যদি সেইটা আমাদের জন্য বা আমাদের দলের জন্য  সুবিধার হয়।

অন্যরে ঠাটায়া গালি দিই। আরম লাগে। কিন্তু ভুলেই যাই থুতু আসমানের দিকে মারলে নিজের গায়ে পড়ে।

মিডিয়ার একটু সমালোচনা করতেই হয়- এ দেশে মুসা এভারেস্টে গেলে তিনদিন লিড অয়, ইনাম আল হক  উত্তর মেরু এক কলাম নিউজ ছাপা হয়।  নিশাত প্রথম এভারেস্টে উঠেও থার্ড পেজে নিউজ, হয় ওয়াসফিয়া দ্বিতীয় স্থান  অর্জন করেও প্রথম পাতার খবরে আসে। 

কতাটা ক্যান কইলাম- কইলাম পাহাড়ে চড়া নিয়া যে একটা সংগঠন করেছেন ইনাম আল হক। এটাই আমাদের অভিযাত্রীদের বাতিঘর। পরে মুসা ২০০৮ সালে সেখান থেকে বের হয়ে নর্থ আলপাইন ক্লাব করেছে। সেটার সভাপতি  লেখক আনিসুল হক।

খালি যে মাইলেজ পাওন বা  ইনাম আল হকরে 'মফিজ' বানানোর আয়োজন এটা, সেটি নিশ্চয় আমরা বুঝি।

তাই বলে মুসার এভারেস্ট জয় নিয়া  কুতর্কের অর্থ খুঁজে পাই না।

বিকালটা আসলেই অসাধারণ। সিগাল উড়ছে। জাহাজের পেছনে। ঢেউ ভেঙ্গে দিয়ে যাচ্ছে জলদানব। ফেনা উছলে উঠছে।


সন্ধ্যার একটু আগে আমরা সবাই বিচে নেমে এলাম। কালো প্রবালের বিচে আগে নিজে দৌড়ে নেমে যেতাম, এবার নিজের ছেলেকে সামলানোর  পালা। একবারেই স্ববিরোধি কাজটি করতে হয়েছে ছেলের মায়ের জন্য। আমি এ সব  বাধা--ভয় মানতে চাইনি কখনো। এখনো চাইনা।

 সেন্টমার্টিনে ২২ মার্চ, শনি বার বেলা সাড়ে ১২ টায় নামলাম। এ প্রথম কোনো গ্রুপ ছাড়া পরিবার পরিজন  নিয়ে সেন্টমার্টিন গেলাম। আমার দু সন্তান- নাজিব ও নাকিব, প্রথম সেন্টমার্টিন্সে পা রাখলো। সে সাথে আমাদের আরো  তিনজন- নুহা , রীতি ও আসমা।

আগের মত স্যাঁত স্যাঁতে কিম্বা বালিময় রেস্তোরা নেই। এখন নগরে ছোয়া আনার চেষ্টা সবখানে। যাত্রা পথে বড় রকমের বিপত্ত। রমেশের শ্যামলী পরিবহনের এসি নষ্ট হয়ে গেলো কুমিল্লাতে। তারপর এসি ঠিক করার বৃথা চেষ্টার পর পরকীয়া চাচার চাপে আমরা এসি বিহীন গাড়িতে দম আটকানো ভ্রমণে বাধ্য হয়ে  পৌছালাম- দমদমিয়া ঘাটে।

নে টং পাহাড়ের কোলে সুন্দর একটা সকাল। এ রকম এক সকালে -বহু সকালে টেকনাফ হয়ে সেন্টমার্টিন যেতাম আমরা, এখনো যাই। কিন্তু মন ভরে না। একমাসে সেন্টমার্টিন তিনবার যাওয়ার রেকর্ড আমার আছে।  কী যে আনন্দ-তার সীমা নাই।

জাহাজ চালু হবার পরেও বাণিজ্যিক ট্যুর না হলে ট্রলারেই সেন্টমার্টিন আমার যাত্রা। আমারা বন্ধুরা ট্রলার জার্ণিটা দারুন এনজয় করি। মাতাল সমুদ্রের ওপর হেলে দুলে চলা  ট্রলার আর জলের ছলাৎ ছলাৎ শব্দ এবং লোনা বাতাসে উড়িয়ে নিয়ে যাওয়া ক্লান্তি - এক কথায় অসাধারণ ভ্রমণ।

আমাদের জাহাজ ছেড়ে দেবে, উঠে বসার পর দুঘণ্টার জার্ণি। সকালের তেতে ওঠা রোদের ভেতর আমরা যাচ্ছি সেন্টমার্টিন। নামলাম সুরকি-সিমেন্টর ঢালাই করার জেটিতে। আগে ট্রলার থেকে প্যান্ট গুটিয়ে ট্রলার থেকে লাফ দিতাম, তারপর কিনারে ভিড়ো এবং হেঁটে চলো হোটেলে। এখন সেটি করতে হয় না। কারণ ভ্রমন এখন  সায়েবী আরামের পরিণত হয়েছে। টানা ৫ বছর কসরত করে সরকার একটা জেটি বানিয়েছে। সেই জেটিতে অনেক 'পর্যটক' যান সেখানে।  তবে এত বেশি পর্যটক ধারণ ক্ষমতা সেন্টমার্টিনের নেই।

জেটিতে পা রেখে দু সন্তানকে দু হাতে ধরে সামনে এগিয়ে যেতে রঙ্গিন কাপড়ের ঝরকাঅলা ভ্যান গাড়ি। তার দুটোতে আমরা ছয়জন বসে পড়লাম। হোটেল চেক ইন ২ টায়। ভোলা যাওয়া মাত্রই একটা রুম দিলো, বললো-ফ্রেশ অন তারেক ভাই। তারপর  মাছি ভন ভন রেস্তোরায় দুপুরের খাবার- মেন্যু লাল কোরাল, আলুভর্তা, সবজি এবং ডাল।

রুম বুঝে পাওয়ার পর একটু সময় নিতেই হলো। তবে ঘুম শামীম ছাড়া কেউ যায়নি। বিকালে সবাই নেমে এলাম বিচে। অবকাশের বিচে ইদানিং ভিড়টা বেশি। শিপু ও রীতিকে খুঁজে পাওয়া গেলো প্রবালের লম্বা আইলের মাথায়। আমি আর লিনা মাত্র নামলাম। তারপর কোনা পাড়ার দিকে হাঁটা শুরু করলাম, এর মধ্যে আমাদের সাথে যোগ দিযেছে শামীম, আসমা ও তাদের কন্যা নুহা।

মুগ্ধতার আবেশ ছড়িয়ে ধীরে অস্তায়মান সূর্যটা দেখতে দেখতে আমরা তখন কোনপাড়ায়।  নারকেল গাছ, কেওড়া বন আর প্রবাল-সমুদ্র এ সব মিলিয়ে আমাদের বিকাল।  শিপুর টর্চের আলো ফেলছে, আমরা দক্ষিণ পাড়ার নারকেল বাগান থেকে সদ্য নামিয়ে আনা  ডাবের পানি খেয়ে ফিরছি।

কথা ছিল  লাবিবার দ্বিতল রেস্তোরায়  সন্ধ্রার  খাবারটা হবে- সেটি হয়নি। কারণ 'পইযযটক ' কম তাই পূর্ব আদেশ না পেলে রান্না হয় না। মন খারাপ করের ফিরে এলাম আমরা।  তার পর আরো কিছু সময় বিচে কাটানোর পর  মনে হলো মাছ ভাজা খাওন দরকার।  ডুবো তেলে মাছ ভাজি  করার পাঁচক ছিদ্দিক। তার হাসান রেস্তোরায়  ঢুঁ মারতে হবে।  আমরা গেলামও।

 বছর দেড়েক পরে  ছিদ্দিকের সাথে  দেখা, ব্যবসা ভালো যাচ্ছে- সে খবরটাও জানালেন। ফাঁকে  রূপচান্দা, উড়ুক্কু মাছ ফ্রাই করার অর্ডার করা হলো। রীতি মাছ খায় না। কিন্তু এ রকম আয়োজন টা সে মিস করলো না। রাতের খাবারটাও আমরা সেখানে খেয়েছিলাম।

লম্বা একটা ঘুমের পর  আমরা সকালে উঠলাম। নাশতাটা সেরে ছুটছি  প্রাসাদের বিচে। উদ্দেশ্য জলে ভেজা। এ বিচটা এক সময় অচেনাই ছিল। সেন্টমার্টিনে আসলে কেউ বয়ে পানিতে নামতো না।  কোথায় প্রবাল আছে, কোথায় নাই সেটি বোঝা মুশকিল ছির এক সময়। কিন্তু প্রাসাদের বিচ  প্রবাল মুক্ত।  এটা ১৯৯৯ সালের দিকে আমাদের দেশের একজন পর্যটক নিশ্চিত হন। তার কাছ থেকে তথ্য নিয়ে ২০০০ সাল থেকে আমরা এখানেই ভিজতাম। এখনো। তবে এখন অনেক বেশি লোকের সমাগম ঘটে থাকে।

প্রাসাদের বিচে , ঢেউয়ের সাথে, অনেকক্ষণ মিতালী শেষে আমরা ফিরছি হোটেলে। বিকালে ছেড়াদ্বীপ যাওয়ার ভাবনা ছিল। কিন্তু আকাশের মন খারাপ।  বাচ্চা কাচ্চা নিয়া  'সাহস' করতে পারলাম না।  বিকালটাও তাই কাটলো বিচে।

দুপুরেন সেই মাছি ভন ভন রেস্তোরায় খাবার। তবে মাছিটা একটু পরিমান বেশি হয়ে গেছে। তবুও খেলুম।

সন্ধ্যায় রীতির সৌজন্যে  মৎস্য ফ্রাই ভক্ষণ পর্ব সমাপ্ত এবং নাজিবকে সামলাতে  শিপু  ও রীতির প্রণান্ত চেষ্টায় আমি একটু হাওয়া খেলাম, সাথে তিন কাপ চা!

রাত করেই আমরা ফিরলাম। তবে এরকটা পর্ব বাকি ছিল। বার বি কিউ। লাল কোরাল, কালো চাঁন্দা মাছ আর মুরগি- তিনটা আইটেমের বার বি কিউ অর্ডার করা হয়েছে। আমাদের সাথে আরো দু চারটে দম্পতির আয়োজনও ছিল।

তবে বার বি কিউটা নিরামিষ। অনেকটা কর্পোরেটের মতন। কারণ এখানে গান বাজনা বা  জলপানের কোনো আয়োজন ছিল না। মারাত্মক ব্যাপার... তবুও আমরা মজটা করেই  বার বি কিউ ডিনারটা সেমরে নিলাম গোল ঘরে বসেই।

রাতটা কেটে গেলো ভালোই । সকালে হালকা স্বাস্থ্যগত সমস্যা-পেইন! তাই ছেড়াদ্বীপ যাত্রা বাতিল। তাতে কি। আবার আসবো- তখন যাবো, জানালো রীতি। কিন্তু আমি শামীম কিম্বা শিপু যারা ছেড়াদ্বীপ গেছি, তাদের কাছে বরাবরই মনে হচ্ছিলো- মিস করছি ছেড়াদ্বীপ তোমাকে। তোমার জন্য কলজে ছিঁড়ে যাচ্ছে।

 ফিরবো ঢাকায়, সিদ্ধান্ত হলো সাড়ে ২৪ মার্চ বেলা ১২ টার দিকে। আমার কেনাকাটা করার মত কিচ্ছু নাই। কিন্তু লিনার শুটকি লাগবে।  শিপু ও শামীম  শুটকি কিনবে। শেষ পর্যন্ত হুমায়ূন আহমেদের কাছে জমি বিক্রেতা ফজলুর পোলা  আয়াজের কাছ থেকে শুটকি কেনা হলো।  বাকি পর্যন্ত দিতে চায়, পোলাটা- বলে শুটকি ভালো হলে টাকা দিয়েন।

আমরা নগদেই কিনলাম। দুপুর ২ টা রুম ছেড়ে ভ্যানে। এর মধ্যে কেনা হয়ে গেলো বার্মিজ ক্যালশিয়াম,  বাসার দারোয়ানের জন্য গেঞ্জি। নুহার ক্যাপ। আরো কিছু হয়ত কেনা হয়েছে- সবটা আমি জানি না!! 

জাহাজ ছাড়বে- আমরা চেপে বসলাম। বিকাল আসলেই অসাধারণ। সিগাল উড়ছে। জাহাজের পেছনে। ঢেউ ভেঙ্গে দিয়ে যাচ্ছে জলদানব। ফেনা উছলে উঠছে। আমরা সামনের দিকে যাচ্ছি। সিগালগুলো পেছণে ঝাঁকে ঝাঁকে। কী এক অপূর্ব দৃশ্য। মনে রাখার মত একটা বিকাল।

সন্ধ্যার একটু আগে আমরা তখন দমদমিয়া ঘাটে। কাঠের জেটি হয়ে উপরে উঠে এলাম। বাসের জন্য অপেক্ষা। তিনদিনের ভ্রমন পর্ব সাঙ্গ হবার আগে  আবারো কেনাকটায় ওরা তিনজন-। বাসে চেপে বসতে বসতে সুপার ভাইজার রাসেল হাত মেলালো। বল ভাই সরি, সেদিন হালকা প্রবলেম এর কারণে এসিটা চালাতে পারিনি।

গাড়ি ছুটছে, আমরা ঢাকা ফিরছি।  ইয়াবা সম্রাট বদি ভাইয়ের এলাকা থেকে ফিরছি, তার কিছু ছিঁড়তে অক্ষম নিরাপত্তা রক্ষীরা যাত্রিবাহি বাসে চেক করছে। চেকিং । ঢাকার কাছে মেঘণাঘাটের কাছে শেষ চেকপোস্টে একজনকে পুলিশ নামিয়ে রেখে দিলো। জানা গেলো এ রকম ঘটনা হামেশাই হয়।

তাই বিকার হীন আমরা ফিরে এলাম। বাস থেকে নেমেই নগরে পোড়া আলোর ঝলকানি। সকাল তখন ৯ টা। আরাম বাগ থেকে আমরা ফিরছি বাসায়। শামীম অবশ্য চট্টগ্রাম থেকে গেছে। রাতে। ফিরেছে পর দিন রাতে।

আমরা ফিরে যাচ্ছি বাসায়। ইচ্ছে ছিল ২৫ মার্চ দুপুরে অফিসে বসেই  সেন্টমার্টিন অভিযান নিযে লিখবো। এর মধ্যে জানলাম আমাদের সাবেক ইয়ারমেট ও হালের ব্যাংকার কবি মারা গেছে।  যাবার সময় শুনেছিলাম, ও আইসিইউতে।  মনটা খুব খারাপ ছিল বলে দুদিন পরে লিখলাম।








২৫ মার্চ, মানব হত্যা এবং পাকি ও ইনডিয়া প্রেম!


কোনো যুক্তিতে আমি পাকিদের বাঙালি নিধনকে মেনে নেবার মত শক্তি খুঁজে পাই না। তবুও যারা রাজনীতি করেন, মানুষ মারাকে জায়েজ করার নানা রকমের ফতোয়ার কারবারি তারা এ সব জায়েজ করতে চান।

কখনো কেউ ইসলাম ও মুসলমানিত্ব রক্ষার নামে, কেউ চেতনা রক্ষার স্লোগানে- মানুষ হত্যাকে জায়েজ করে নেন নিজেদের মতানুসারে।
আমি এর কেবল বিরোধী নই, নিজের যে শক্তি আছে, সেটি নিয়ে লড়ছি। সামনেও লড়বো।

একাত্তুরের  ২৫ মার্চের অন্ধকার রাতে যে হামলা চালালো পাকি কুত্তারা, সে বর্বরতার পরেও  মুসলমানিত্ব রক্ষার ইজারাদাররা তাদের পক্ষ লইলো! তারা কেন মানব হত্যার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ালো না- এটা এক অপার বিস্ময় এবং মানব সভ্যতা নিয়ে একটা জিজ্ঞাসার  সৃষ্টি করেছে। কীভাবে একজন  সুস্থ্য মানুষ এটা মেনে নেয়, আমি  ভাবতে পারিনা কখনোই। ইসলাম ধর্ম তো বলে মানব হত্যা সবচেয়ে জঘন্য পাপ। হত্যার বদলা বদলা হত্যা- ধর্মে যেটাকে বলে কিসাস।

আমি জন্মগতভাবে ইনডিয়া ও পাকিস্তানের বিরোধী। পাকিস্তানিরা আমাদের রক্ত চুষে নিয়েছে, বেয়নেটের খোঁচায় জীবন নিয়েছে, নারীদের ধর্ষণ করেছে। আর ইনডিয়ানরা আমাদের দিনের পর  পর শোষন করে চলেছে, আমাদের নদীতে বাঁধ দিয়ে আমরা দেশের শিরা উপশিরা বন্ধ করে দিচ্ছে।

আগ্রাসনের মাধ্যমে আমাদের সর্বশেষ টিকে থাকা সংস্কৃতির ওপর প্রলয় বইয়ে দিচ্ছে। আর মাদক, মরণ নেশা এবং সীমান্ত হত্যার ভেতর দিয়ে আমরা ৪৩ বছর পার করছি। ধর্ষণের ঘটনা আমরা চেপে যাই। তবুও যদি তারা আমাদের জীবনটা রক্ষে করে!

নিজেকে বাংলাদেশের দালাল হিসাবে পরিচয় দিতে অহঙ্কার বোধ করি। আমার কোনো ব্যাক্তিগত  ধান্ধা ফিকির নাই। তাই রাজনৈতিক গন্ধ নিয়ে ভাবনায় থাকি না।  আমরা ধীরে ধীরে ব্যাক্তিগত ধান্ধা ফিকির মুক্ত ব্যাক্তি থেকে পরিবার, সমাজ হয়ে রাষ্ট্রে পরিণত হতে চাই।  সবাই সবার তরে কাজ করতে চাই। এ প্রত্যয়ের প্রত্যাশা!

সম্বাদিকের বাড়িতে যৌথ বাহিনী!


দলীয় নিক্তিতে সম্বাদিকতাকে মাপাটাকে আমি কখনই সমীচীন মনে করিনি, এখনো করি না। সামনেও করবো না। এ আস্থা ও বিশ্বাস আমার ওপর আছে।

আম্লীগ সরকারন গঠনের পর সম্বাদিকদের গ্রেপ্তার করার বিষয়ঠা কঠিন করে একটা আইন করা হয়েছে বকলে প্রচার আছে। এতে খুশিতে পা চাটা নেতারা লাফাইয়া উঠলো- দেখছো আম্লীগের কি দয়া! 

 এখন ওরা কই

মাহমুদুর রহমান না হয় অসাংবাদিক সম্পাদক। কিন্তু আবু সালেহ আকন!   ক্যাম্পাস লাইফ থেকে সাংবাদিকতা করছেন। তার ওপর ক্রাইম রিপোর্টার। পড়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের  জার্নালিজমে।  ক্রাইম রিপোর্টারদের সংগঠন ক্র্যাবের  সাধারণ সম্পাদক। নয়া দিগন্তের স্পেশাল করেসপনডেন্ট।

বরিশালে তার গ্রামের বাড়িতে যৌথবাহিনী সন্ত্রাসমী খুঁজতে গেছে।- কী নির্মম  প্রতিশোধ পরায়ণ যৌথ বাহিনী। বিরোধি মতের পত্রিকায় কাজ করে বলে তাকেও দলীয় বিবেচনায় এনেছে  যৌথ বাহিনী। এ রকম বিবেচনা কেবল কাপুরোষিতই নয়, আত্মঘাতিও বটে।

আমি ভাবছি-  কাল যে আমার বাড়িতে হানা দেবে না- যৌথ বাহিনী!  তার নিশ্চয়তা কই। নিজের চেয়ে পডিরবারের জণ্য বেশি অনিশ্চয়তা বোধ করছি। সম্বাদিকরা যেখানে হয়রানির শিকার সেখানে আমার মত কেরানী পাবলিকের কী অবস্থা! 

যারা  চোখ বন্ধ করলে প্রলয় বন্ধ বলে ধরে নিয়ে এখন যৌথ বাহিনীর  অভিযানের পক্ষে প্রত্যক্ষ পরোক্ষভাবে দাঁড়াবেন- তারা  যে নিরাপদ সেটাও মনে হয় না। কারণ  প্রলয়  কখনো ভালো মন্দের বিচার করে না। এ এক অশুভ অসুর!

আমরা শুনে আসছি যৌথ বাহিনী নিষ্পাপ- নিষ্কলঙ্ক। কিন্তু নদীর জলে মানুষের ফুলে ওঠা লাশ, কচুরি ফেনার নিচে বনি আদমের লুকায়িত শরীর, আর সাংবাদিকের বাসায় হানার পর তাদের পক্ষে আর ওকালতি করা যায় না।

অবশ্য ক্ষমতার লোভে- অনেকেই তা করবেন। করুণ না। তাদের জন্য পেটে পড়লে পিঠে সয়। কিন্তু সম্বাদিকগো তো  সে ধান্ধা নাই।  তাই সম্বাদিক ও তাদের পরিবারের সুরক্ষায় সরকার কি করে সেটি দেখার অপেক্ষায় আছি!

লাভ ইউ সেন্টমার্টিন্স, লাভ ইউ অল

সাগরের গর্জন, আঁধার ভেদ করে ফসফরাসের ঝলকনি, জোনাকি জ্বলে ওঠা মধ্যরাত-প্রচণ্ড রকমের উপভোগ্য আমার কাছে সেন্টমার্টিন্স আইসল্যান্ড।

সেই ২০০০ সাল থেকে এখনো। বয়স হয়েছে, আগের মত ট্রলারে ছুট দেই না ঠিকই, তবুও যাই। বেড়াতে কিম্বা বাণিজিক্য ভ্রমণে। বছওের ৬ থেকে ৭ বার। তবুও মন ভরে না।

এবারের আয়োজনটা ভিন্ন। আমার দুই পুত্র নাজিব ও নাকিবকে নিয়ে সেন্টমার্টিন্স যাচ্ছি। সব ঠিকঠাক থাকলে আজ শুক্কুরবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টায় গাড়ি ছাড়বে।

এটা একটা ভিন্ন রকমের অনুভূতি- নাজিব এর আগে কক্সবাজার গেছে। সেন্টমার্টিনে তার প্রথম যাত্রা। দেশে এই একটি দ্বীপ আমার কাছে অপার বিস্ময় এবং ভালোলাগার।

যে সময় ঢাকা ইউনিভার্সিটি ট্যুরস্ট সোসাইটিতে ছিলাম, ট্যুরের দায়িত্বে থাকতাম, সে সময় দল বেঁধে যেতাম,  ঘোরঘুরিতে আমি একলা দুই চারজন নিয়া আনন্দ পাই কম, খুবই কম।  আমার  বন্ধু ও শত্রু বাবু আমার  এক সময়কার ভ্রমণসঙ্গী। সেন্টমার্টিন্সে আমি আর ও একসাথে গেছিলাম।

 তার পর বার বার অনেক বার। এ দ্বীপে যেতে আমার কখনো খারাপ লাগে না। মনে হলেই ছুটে যাই, সে রকম এক আনন্দময় এক দ্বীপ-সেন্টমার্টিন্স। পুরনো নাম নারকেল জিঞ্জিরা, দারুচিনি দ্বীপও বলা হয়্। আগে আরব্য  ব্যবসায়ীরা এ দ্বীপে বিশ্রাম করতেন, দক্ষিণ পাড়ায় অনেক নারকেল গাছ।  এক সময় কেবল নারকেলে জলপান নয়, মুখ ধোয়ার কাজেও ব্যবহার করতাম। এখন সেটা স্বপ্ন।
সেন্টমার্টিন্সের ডাবের চাহিদা মেটাতে মায়ানমার হাল ধরেছে!

সেন্টমার্টিন্সের নেক ঘটনার মধ্যে নেক স্মৃতি আছে- প্রথম আমরা যখন দল বেঁধে গেলাম, সেবার জোছনা রাত। সেকেন্ড ইয়ারে পড়ি। হুমায়ূন আহমেদের বই পড়তাম- জোছনা মানে আমার কাছে অন্য রকম একটা ব্যাপার।

এক রাতে আমরা পুরো দ্বীপ চক্কর মারলাম। সমুদ্রের মাঝখানে একটা রূপময়  দ্বীপ ভেসে থাকলো, সন্ধ্যার পরে ছেড়াদ্বীপ থেকে ফিরতে ফিরতে  আমাদের এ জোছনা দর্শন।  মানুষ আমরা গোটা চল্লিশেক। সে সময় ছেড়দ্বীপ যাবার  বাহন ছিল পা।

 ফেরার পথে  পানি বেড়ে গেছে, মানে জোয়ার। আমরা সে জোয়ারে হাবুডুবু খেয়ে ফিরছিলাম! তবুও আনন্দ, সীমাহীন সেই আনন্দ ছাড়াও সেন্টমার্টিনসের  দক্ষিণ পাড়ার যাবার পথে অনেকগুলো প্রবাল পড়ে, সেখানে এক সন্ধ্যায়  পা ডুবিয়ে সূর্যাস্ত দেখেছি, এমন মুগ্ধ আমাকে আর কিছুই করতে পারেনি, আমার ছেলেদের হাসি ছাড়া।

সেন্টমার্টিন্সের প্রেমে আমি মজনু। থাকতেও চা্ই। আজকে যখন   গোত্তা মেরে জলের  ভেতর আঁচড়ে পড়ে জাহাজের  নোঙর, মনে হয় আমার বুকটা ফেটে যাচ্ছে। লঞ্চের খট খট শব্দ, সিগালের ওড়াওড়ি দেখতে দেখতে  নৌকার নাচন আর মাঝির ভিজ্ঞতা শুনতে শুনতে যে সেন্টমার্টিনস যাত্রা করতাম, সেই আমেজ পাই না।

 তবুও

আজ যখন যাবো  তখন অনেক স্মৃতি ভিড় করছে।  আমরা যখন ট্যুর আয়োজন করতাম, ট্যুরের আগে সকালে আমি আর বাবু কেনাকটা করতে যেতাম বঙ্গবাজারে। ফিরতাম হলে, ফ্রেশ হয়ে ট্যুরিস্ট সোসাইটি অফিসে বসতাম। সবাই আসতো, গল্পে আড্ডায় আমরা ছুটতাম।

আজকের ভ্রমনটা একেবারই ভিন্ন। টিকিট করা গাড়ি একজন বয়সী-তরুণ উঠবে পরিবার পরিজন নিয়ে। সাথে ছোট ভাই, সেও বউ নিয়ে এবং বন্ধু সেও বউ-কন্যা নিয়ে। সময়ের স্রোতে কি দারুণ এক বদল।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চায়ের কাপে চুমুক দিতে দিতে, মধুর ক্যান্টিনের বাটার টোস্ট খেয়ে, মিস্টির রস চুষে নিয়ে আনোয়ারের সিগারেটে ফুঁ দেয়া ছেলেপুলো সব বড় হয়ে গেছে!

তবে এ অবকাশ যাপান আমরা কাছে একটা অনন্য ও অসাধারণ ঘটনা। আমার দুটো ছেলেই সাথে যাচ্ছে। সাথে তাদের মা। পিতা হিসাবে  নিজেকে স্বার্থক মনে হচ্ছে। ওরা যখন বড় হবে, বার বার যাবে, নিজে যাবে, বান্ধবী-বউ নিয়ে যাবে।  বুড়ো বাবা মাকেও নিয়ে যেতে পারে, যদি ততদিন তারা বেঁচে থাকে।

নাজিবের মুখের দিকে তাকালে আমার মনে হয়, পৃথিবীতে এর চেয়ে বেশি কিছু আমি চাইনি। বয়স ওর ৫ । বুদ্ধিভিত্তিক কিছু জটিলতা আছে। তবুও  এ ছেলেটার কারণে আমি আজ  অন্যরকম এক মানুষ। নাকিবকেও রাখতে হবে সে দলে, গুট গুট করে হাঁটে, টুক টুক করে কথা বলে। এত মায়াবী দুইখান পুত্র আমার।  সাথে যাচ্ছে বন্ধু শামীম ও তার কন্যা এবং স্ত্রী আসমা এবং ছোটভাই শিপু ও তার স্ত্রী রীতি।  আমাদের প্রিয় ক্যাম্পাসে আমরা একসাথে বেড়ে উঠেছি।

তবুও আমি এখানে কারো শূণ্যতা খুব  অনুভব করি, সামনেও করবো- মীর মামুন, বাবু, মাহমুদ, সাদিয়া , লিপি, মিটি, নিম্মি, খালিদ, দিলরুবা, গ্লোরিয়া- আরো অনেকে। মিস ইউ মাই ডিয়ার ফ্রেন্ডস, এনিমিজ, সিস্টারস অ্যান্ড ব্রাদারস।

 লাভ ইউ সেন্টমার্টিন্স, লাভ ইউ অল।